15.09.2025
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
বাবা তোমাদের কর্ম - অকর্ম এবং বিকর্মের গুহ্য গতি শোনাতে এসেছেন, আত্মা আর শরীর,
যখন দুইই পবিত্র থাকে, তখন কর্ম অকর্ম হয়, পতিত হলে বিকর্ম হয়"
প্রশ্নঃ -
আত্মায় জং
ধরার কারণ কি? জং যে লেগেছে, তার প্রমাণ কি?
উত্তরঃ
জং ধরার কারণ
হলো - বিকার । পতিত হওয়ার কারণেই আত্মায় জং ধরে । এখনো পর্যন্ত যদি জং লেগে থাকে
তাহলে তাদের পুরানো দুনিয়ার প্রতি আকর্ষণ হতে থাকবে । ক্রিমিনাল বুদ্ধি আকর্ষণ করবে
। তারা স্মরণে থাকতে পারবে না ।
ওম্ শান্তি ।
বাচ্চারা এর
অর্থ তো বুঝেই গেছে । ওম্ শান্তি বললেই এই নিশ্চয় এসে যায় যে, আমরা আত্মারা
এখানকার অধিবাসী নয় । আমরা তো শান্তিধামের অধিবাসী । যখন ঘরে থাকি, তখন আমাদের
স্বধর্ম হলো শান্ত, তারপর এখানে এসে অভিনয় করি, কেননা শরীরের সঙ্গে সঙ্গে কর্ম করতে
হয় । কর্ম করা হয় - এক হলো ভালো আর এক মন্দ । মন্দ কর্ম হয় রাবণ রাজ্যে । রাবণ
রাজ্যে সকলের কর্মই বিকর্ম হয়ে গেছে । একজন মানুষও নেই যার বিকর্ম হয় না । মানুষ
তো মনে করে সাধু - সন্ন্যাসী আদির দ্বারা বিকর্ম হতে পারে না, কেননা তারা সব পবিত্র
থাকে । তাঁরা সন্ন্যাস ধর্ম গ্রহণ করে । বাস্তবে পবিত্র কাকে বলা হয়, একথা একদমই
জানে না । বলেও থাকে যে, আমরা পতিত । পতিত পাবনকে ডাকতে থাকে । যতক্ষণ না তিনি আসেন,
ততক্ষণ দুনিয়া পবিত্র হতে পারে না । এখানে এ হলো পতিত পুরানো দুনিয়া, তাই পবিত্র
দুনিয়াকে স্মরণ করতে থাকে । পবিত্র দুনিয়াতে যখন যাবে তখন পতিত দুনিয়াকে স্মরণ করবে
না । ওই দুনিয়াই হলো আলাদা । প্রতিটি জিনিসই প্রথমে নতুন, তারপর পুরানো হয়, তাই না
। নতুন দুনিয়াতে একজনও পতিত থাকতে পারে না । নতুন দুনিয়ার রচয়িতা হলেন পরমপিতা
পরমাত্মা, তিনিই হলেন পতিত পাবন, তাই তাঁর রচনাও অবশ্যই পবিত্র হওয়া উচিত । পতিত
থেকে পবিত্র, পবিত্র থেকে পতিত, এই কথা দুনিয়ার কারোর বুদ্ধিতেই বসতে পারে না ।
কল্পে - কল্পে বাবা এসেই তা বোঝান । বাচ্চারা, তোমাদের মধ্যেও কেউ কেউ নিশ্চয়বুদ্ধি
হয়েও আবার সংশয় বুদ্ধির হয়ে যায় । মায়া একদম গিলে ফেলে । তোমরা তো মহারথী, তাই না
। মহারথীদেরই ভাষণ দেওয়ার জন্য ডাকা হয় । মহারাজাদেরও বোঝাতে হবে । তোমরাই প্রথমে
পবিত্র, পূজ্য ছিলে, এখন তো এ হলোই পতিত দুনিয়া । পবিত্র দুনিয়াতে ভারতবাসীরাই ছিলো
। তোমরা ভারতবাসীরা আদি সনাতন দেবী - দেবতা ধর্মের ডবল মুকুটধারী, সম্পূর্ণ
নির্বিকারী ছিলে । মহারথীদের তো এইভাবেই বোঝাতে হবে, তাই না । এই নেশার সঙ্গেই
বোঝাতে হবে । ভগবানুবাচ - কাম চিতায় বসে মানুষ কালো হয়ে যায়, তারপর জ্ঞান চিতায়
বসলে সুন্দর হবে । এখন যারা বোঝায়, তারা তো আর কাম চিতায় বসতে পারে না, কিন্তু এমনও
আছে যারা অন্যদের বোঝাতে বোঝাতে কাম চিতায় বসে যায় । আজ এরা বোঝায়, কাল বিকারে চলে
যায় । মায়া খুবই প্রবল, তা আর জিজ্ঞেস করো না । অন্যদের যারা বোঝায় তারা নিজেরাই
কাম চিতায় বসে যায় । তারপর অনুতাপ করে যে - এ কি হলো ! এ তো মল্লযুদ্ধ, তাই না ।
নারীকে দেখলো, আকৃষ্ট হলো, মুখ কালো করে ফেলল । মায়া খুবই শক্তিশালী । প্রতিজ্ঞা করে
না রাখতে পারলে কতো গুণ দণ্ড ভোগ করতে হয় । সে তো যেন শূদ্র সম পতিত হয়ে গেলো ।
গয়নও আছে যে - অমৃত পান করে আবার বাইরে গিয়ে অন্যদেরও বিরক্ত করতো, তাদেরও নোংরা
করতো । তালি তো দুই হাতেই বাজে । এক হাতে তো আর বাজতে পারে না । দুইই খারাপ হয়ে
যায় । তখন কেউ জানায়, কেউ আবার লজ্জার কারণে জানায়ও না । তারা মনে করে, ব্রাহ্মণ
কুলের নাম না বদনাম করে ফেলি । যুদ্ধতে কেউ হেরে গেলে তখন হাহাকার লেগে যায় । আরে
এতো বড় পালোয়ানকেও হারিয়ে দিলো ! এমন অনেক দুর্ঘটনা হয় । মায়া থাপ্পড় মারে, এ তো
অনেক বড় লক্ষ্য, তাই না ।
বাচ্চারা, এখন তোমরা
বোঝাও যে, যারা সতোপ্রধান সুন্দর ছিলো, তারাই কাম চিতায় বসে কালো, তমোপ্রধান হয়ে
গেছে । রামকেও কালো বানানো হয় । চিত্র তো অনেকেরই কালো বানানো হয়, কিন্তু মুখ্য
কথা এখানে বোঝানো হয় । এখানেও রামচন্দ্রের কালো চিত্র রয়েছে, তাদেরকে জিজ্ঞাসা করা
উচিত - কালো কেন বানানো হয়েছে? ওরা বলবে যে - এ তো ঈশ্বরেরই ভাবনা । এই তো চলে আসছে
। কেন হয় বা কি হয় - এ কিছুই জানে না । বাবা এখন তোমাদের বোঝাচ্ছেন - কাম চিতায়
বসলে পতিত, মূল্যহীন হয়ে যায় । সে হলো নির্বিকারী দুনিয়া । এ হলো বিকারী দুনিয়া ।
তাই এইভাবে বোঝানো উচিত । এ হলো সূর্যবংশী, ওটি হলো চন্দ্রবংশী, তারপর বৈশ্যবংশী
হতেই হবে । বামমার্গে এলে তখন তাকে দেবতা বলা হবে না । জগন্নাথের মন্দিরে উপরে
দেবতাদের কুল দেখানো হয় । তাঁদের দেবতাদের পোশাক কিন্তু আচরণ খুবই নোংরা । বাবা
তোমাদের যেইদিকে মনোযোগ দেওয়াতে চান, সেইদিকে তোমাদের নজর দেওয়া উচিত । মন্দিরে
অনেক সেবা করা যেতে পারে । শ্রীনাথ দ্বারে গিয়েও বোঝানো যেতে পারে । জিজ্ঞেস করা
উচিত - এনাকে কেন কালো বানানো হয়েছে? একথা বোঝানো তো খুবই ভালো । সে হলো স্বর্ণ
যুগ আর এ হলো লৌহ যুগ । জং ধরে যায়, তাই না । এখন তোমাদের সেই জং দূর হচ্ছে যারা
স্মরণই করে না, তাদের জংও দূর হয় না । যাদের অনেক জং ধরে থাকে, তারা পুরানো দুনিয়ার
প্রতি আকৃষ্ট হতে থাকবে । সবথেকে বেশী জং ধরে বিকারের দ্বারা । এর ফলেই পতিত হয় ।
তোমাদের নিজেকে পর্যবেক্ষণ করতে হবে - আমাদের বুদ্ধি তো ক্রিমিনালের প্রতি আকৃষ্ট
হয় না? খুব ভালো - ভালো এক নম্বর বাচ্চারাও ফেল করে যায় । বাচ্চারা, এখন তোমরা এই
জ্ঞান পেয়েছো । মুখ্য বিষয়ই হলো পবিত্রতার । শুরু থেকে এই বিষয়ের উপরই চাপান উতোর
চলে আসছে । বাবাই এই যুক্তি রচনা করেছেন যে -- সবাইকে বলো আমরা জ্ঞান অমৃত পান করতে
যাই । জ্ঞান অমৃত জ্ঞানের সাগরের কাছেই আছে । শাস্ত্র পড়লে তো কেউ পতিত থেকে পবিত্র
হতে পারবে না । পবিত্র হয়েই পবিত্র দুনিয়াতে যেতে হবে । এখানে পবিত্র হয়ে তারপর
কোথায় যাবে ? মানুষ মনেও করে, অমুকে মোক্ষ লাভ করেছে । তারা কি জানে, যদি মোক্ষ লাভ
করে তাহলে তার ক্রিয়াকর্ম আদিও করতে পারবে না । এখানে আলোর জ্যোতি ইত্যাদি জ্বালানো
হয় যাতে তার কোনো কষ্ট না হয় । অন্ধকারে ধাক্কা না খায় । আত্মা তো এক শরীর ছেড়ে
অন্য শরীর ধারণ করে, এ তো এক সেকেণ্ডের কথা । অন্ধকার তাহলে কোথা থেকে এলো? এই নিয়ম
চলে আসছে, তোমরাও করতে, এখন কিছুই করো না । তোমরা জানো যে, এই শরীর মাটি হয়ে যাবে
। ওখানে এমন প্রথা বা নিয়ম থাকে না । আজকাল ঋদ্ধি - সিদ্ধিতে কিছুই নেই । মনে করো,
কেউ ডানা পেলো আর উড়তে শুরু করলো - এরপর কি, এতে কি লাভ হবে? বাবা তো বলেন, আমাকে
স্মরণ করো তাহলে বিকর্ম বিনাশ হবে । এ হলো যোগ অগ্নি, যাতে পতিত থেকে পবিত্র হতে
পারবে । জ্ঞান থেকে ধন প্রাপ্ত হয় । যোগের দ্বারা এভার হেলদি, পবিত্র, জ্ঞানের
দ্বারা এভার ওয়েলদি, ধনবান হয় । যোগীর আয়ু সর্বদা বেশী হয় । ভোগীর কম । কৃষ্ণকে
যোগেশ্বর বলা হয় । ঈশ্বরের স্মরণে কৃষ্ণ হয়েছে, তাঁকে স্বর্গে যোগেশ্বর বলা হবে
না । তিনি তো সেখানে প্রিন্স । পূর্ব জন্মে এমন কর্ম করেছেন, তাই এমন জন্ম পেয়েছেন
। কর্ম - অকর্ম এবং বিকর্মের গতিও বাবাই বুঝিয়েছেন । অর্ধেক কল্প হলো রাম রাজ্য, আর
অর্ধেক কল্প হলো রাবণ রাজ্য । বিকারে যাওয়া - এ হলো সবথেকে বড় পাপ । সবাই তো ভাই -
বোন, তাই না । আত্মারা সকলেই ভাই - ভাই । ভগবানের সন্তান হয়ে কিভাবে ক্রিমিনাল কাজ
করতে পারে ! আমরা বি.কেরা বিকারে যেতে পারি না । এই যুক্তিতেই পবিত্র থাকতে পারে ।
তোমরা জানো যে, এখন রাবণ রাজ্য শেষ হয়ে যাবে তারপর প্রতিটি আত্মা পবিত্র হয়ে যাবে
। একেই বলা হয় - ঘরে ঘরে আলো (প্রকাশ) । তোমাদের জ্যোতি এখন জাগ্রত হয়েছে । তোমরা
এখন জ্ঞানের তৃতীয় নয়ন পেয়েছো । সত্যযুগে সবাই পবিত্র থাকে । এও তোমরা এখনই বুঝতে
পারো । অন্যদের বোঝানোর জন্য বাচ্চাদের মধ্যে নম্বর অনুসারে শক্তি থাকে । নম্বর
অনুসারে তারা স্মরণে থাকে । রাজধানী কিভাবে স্থাপন হয়, কারোর বুদ্ধিতেই একথা থাকে
না । তোমরা তো সেনা, তাই না । তোমরা জানো যে, আমরা স্মরণের শক্তিতে পবিত্র হয়ে রাজা
- রানী তৈরী হচ্ছি । এরপরের জন্মে সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্ম হবে । যারা বড়
পরীক্ষায় পাস করে তারা পদও বড় পায় । তফাৎ তো হয়ই, তাই না, যতো পড়া তত সুখ । এ তো
ভগবান পড়ান । এই নেশা চড়ে থাকা উচিত । তোমরা এখন মুখের পুষ্টিকর ভোজন পাচ্ছো ।
ভগবান ছাড়া তোমাদের এমন ভগবান - ভগবতী কে বানাবেন ? তোমরা এখন পতিত থেকে পবিত্র
হচ্ছো, তারপর জন্ম - জন্মান্তরের জন্য সুখী হয়ে যাবে । তোমরা উচ্চ পদ পাবে । পড়তে
পড়তে আবার খারাপ হয়ে যায় । দেহ অভিমানে আসার কারণে আবার জ্ঞানের তৃতীয় নেত্র বন্ধ
হয়ে যায় । মায়া অনেক শক্তিশালী । বাবা নিজেই বলেন, এ হল অনেক পরিশ্রমের । আমিও
ব্রহ্মার শরীরে এসে কতো পরিশ্রম করি, কিন্তু বুঝেও আবার বলে দেয়, এমন হতে পারে কি,
শিববাবা এসে পড়ান -- আমরা মানি না । এ হলো চালাকি । এমনও অনেকে বলে দেয় । রাজত্ব
তো স্থাপন হয়েই যাবে । বলা হয় না - সত্যের নৌকা হেলবে দুলবে তবুও ডুববে না ! এতে
কতো বিঘ্ন উপস্থিত হয় । আচ্ছা ।
মিষ্টি - মিষ্টি
হারানিধি, নয়নের মণি, শ্যাম থেকে সুন্দর হওয়া আত্মাদের প্রতি মাতা - পিতা, বাপদাদার
হৃদয়, মন আর স্মরণের স্নেহ-সুমন আর আর সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মারূপী
বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
যোগের অগ্নির দ্বারা বিকারের জং দূর করতে হবে । নিজের পর্যবেক্ষণ করতে হবে যে,
আমাদের বুদ্ধি ক্রিমিনালের দিকে যাচ্ছে না তো?
২ ) নিশ্চয়বুদ্ধি
হওয়ার পরে আবার কখনো কোনো বিষয়ে সংশয় আনবে না । বিকর্ম থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য যে
কোনো কর্ম নিজের স্বধর্মে স্থিত হয়ে বাবার স্মরণে করতে হবে ।
বরদান:-
শ্রেষ্ঠ পালনার বিধির দ্বারা বৃদ্ধি ঘটিয়ে সকলের অভিনন্দনের পাত্র ভব
সঙ্গমযুগ হলো
অভিনন্দনের দ্বারাই বৃদ্ধি পাওয়ার যুগ। বাবার, পরিবারের অভিনন্দনের দ্বারাই তোমরা
বাচ্চারা পালিত হচ্ছ। অভিনন্দনের দ্বারাই নাচ্ছো, গাইছো, লালিত পালিত হচ্ছো, উড়তে
থাকছো। এই পালনাই হলো ওয়ান্ডারফুল পালনা। তো তোমরা বাচ্চারাও বড় হৃদয় দিয়ে, দয়ার
ভাবনা দ্বারা, দাতা হয়ে প্রত্যেক মুহুর্ত একে অপরকে খুব ভালো,খুব ভালো - বলে
অভিনন্দন দিতে থাকো, এটাই হলো পালনার শ্রেষ্ঠ বিধি। এই বিধি দ্বারা সবাইকে পালনা
দিতে থাকো, তাহলে অভিনন্দনের পাত্র হয়ে যাবে।
স্লোগান:-
নিজের
স্ব-ভাব সরল বানিয়ে নাও - এটাই হলো সমাধান স্বরূপ হওয়ার সহজ বিধি।
মাতেশ্বরী জীর অমূল্য
মহাবাক্য :-
“পুরুষার্থ আর
প্রালব্ধের দ্বারা বানানো অনাদি ড্রামা”
মাতেশ্বরী :
পুরুষার্থ আর প্রলব্ধ দুটি জিনিস, পুরুষার্থের দ্বারা প্রালব্ধ তৈরী হয় । এই অনাদি
সৃষ্টির চক্র ঘুরতে থাকে, যেই আদি সনাতন ভারতবাসী পূজ্য ছিলো, তারাই আবার পূজারী
হয়েছে, তারপর সেই পূজারীই পুরুষার্থ করে পূজ্য হবে, এই উত্তরণ এব্ং অবতরণ অনাদি
ড্রামার খেলা তৈরী রয়েছে ।
জিজ্ঞাসু : -
মাতেশ্বরী, আমার মনে এই প্রশ্ন উদয় হয়েছে যে, এই ড্রামা যখন এমন বানানো হয়েছে
তাহলে উপরে উঠতে হলে নিজে থেকেই উঠবে, তাহলে পুরুষার্থ করার লাভ কি হলো? যে উঠবে,
সে আবার নামবে তাহলে এতো পুরুষার্থ কেন করবো? মাতেশ্বরী, আপনি বলছেন যে, এই ড্রামা
হুবহু রিপিট হয়, তাহলে সর্বশক্তিমান পরমাত্মা সদা এমন খেলা দেখে নিজে পরিশ্রান্ত
হন না? চার ঋতুতে যেমন শীত, গরম আদির তফাৎ হয়, তাহলে এই খেলাতে কি কোনো ফারাক হবে
না?
মাতেশ্বরী : - ব্যস্,
এটাই তো এই ড্রামার বিশেষত্ব, এ হুবহু রিপিট হয় আর এই ড্রামার আরো বিশেষত্ব হলো,
যা রিপিট হওয়া সত্ত্বেও নিত্যনতুন মনে হয় । প্রথমে তো আমারও এই শিক্ষা ছিলো না,
কিন্তু যখন জ্ঞান পেয়েছি, তখন যা সেকেণ্ড প্রতি সেকেণ্ড চলছে, যদিও তা পূর্ব কল্পের
মতোই চলছে, কিন্তু তা যখন সাক্ষী হয়ে দেখি, তখন নিত্যনতুন মনে হয় । এখন সুখ -
দুঃখ দুইয়েরই পরিচয় পেয়ে গেছো, তাই এমন মনে ক'রো না যে, যদি ফেলই হতে হয় তাহলে পড়বো
কেন? তা নয়, তাহলে তো এমনও মনে করতে পারি যে, যদি খাবার পাওয়ার থাকে, তাহলে তা নিজে
থেকেই পাবো, তাহলে এতো পরিশ্রম করে উপার্জন করো কেন? এমনিতে আমিও এখন দেখছি যে, এখন
চড়তি কলার সময় এসেছে, সেই দেবতা বংশের স্থাপন হচ্ছে, তাহলে কেন না এখনই সেই সুখ
গ্রহণ করি । যেমন দেখো, কেউ যদি জজ হতে চায়, তাহলে যখন পুরুষার্থ করবে, তখন সেই
ডিগ্রি প্রাপ্ত করবে, তাই না । যদি তাতে ফেল করে যায়, তাহলে সেই পরিশ্রমও বৃথা হয়ে
যায়, কিন্তু এই অবিনাশী জ্ঞানে এমন হয় না, এই অবিনাশী জ্ঞানের সামান্যতমও বিনাশ
হয় না । এতো পুরুষার্থ না করতে পারলে যদি দৈবী বংশে না ও আসো, কিন্তু কম
পুরুষার্থও যদি করো তাহলে সেই সত্যযুগী দৈবী প্রজাতে আসতে পারবে । পুরুষার্থ করা
কিন্তু আবশ্যক, কেননা এই পুরুষার্থের দ্বারাই প্রালব্ধ তৈরী হবে, এই পুরুষার্থেরই
অনেক মহিমা করা হয়েছে ।
"এই ঈশ্বরীয় জ্ঞান
সর্ব মনুষ্য আত্মার জন্য"
সর্বপ্রথমে তো নিজের
এক মুখ্য পয়েন্ট অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে, এই মনুষ্য সৃষ্টি বৃক্ষের বীজ রূপ যখন
পরমাত্মা, তাই সেই পরমাত্মার কাছে যে জ্ঞান প্রাপ্ত করছি, সে সবই মানুষের জন্য জরুরী
। সমস্ত ধর্মের মানুষেরই এই জ্ঞান প্রাপ্ত করার অধিকার আছে । যদিও প্রত্যেক ধর্মের
জ্ঞান তাদের নিজের - নিজের, প্রত্যেকেরই শাস্ত্র আলাদা - আলাদা, প্রত্যেকেরই মত
আলাদা - আলাদা, প্রত্যেকেরই সংস্কার তাদের নিজের, কিন্তু এই জ্ঞান সকলের জন্য । যদি
তারা এই জ্ঞান ধারণও করতে না পারে, আমাদের পরিবারে যদি নাও আসে, তবুও সকলের পিতা
হওয়ার কারণে, তাঁর সঙ্গে যোগযুক্ত হলে অবশ্যই পবিত্র হবে । আর এই পবিত্রতার কারণে
নিজেদের বিভাগে অবশ্যই উচ্চ পদ প্রাপ্ত করবে। কেননা যোগকে তো সমস্ত মানুষই স্বীকার
করে, অনেক মানুষই এমন বলে যে, আমাদের মুক্তি চাই, কিন্তু সাজা থেকে মুক্ত হয়ে
মুক্তি পাওয়ার শক্তিও এই যোগের দ্বারা প্রাপ্ত হতে পারে । আচ্ছা - ওম্ শান্তি ।
অব্যক্ত ঈশারা :- এখন
লগণের অগ্নিকে প্রজ্বলিত করে যোগকে জ্বালা রূপ বানাও
বাচ্চারা তোমাদের কাছে
পবিত্রতার যে মহান শক্তি আছে, এই শ্রেষ্ঠ শক্তিই অগ্নির কাজ করবে, যেটা সেকেন্ডে
বিশ্বের সমস্ত আবর্জনাকে ভষ্মীভূত করে দিতে পারে। যখন আত্মা পবিত্রতার সম্পূর্ণ
স্থিতিতে স্থিত হয় তখন সেই স্থিতির শ্রেষ্ঠ সংকল্পের দ্বারা লগণের অগ্নি প্রজ্বলিত
হয় আর আবর্জনা ভষ্মীভূত হয়ে যায়, বাস্তবে এই হল যোগের জ্বালারূপ। বাচ্চারা এখন তোমরা
নিজেদের এই শ্রেষ্ঠ শক্তিকে কাজে লাগাও।