15-12-2024 প্রাতঃ
মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ
28-02-2003 মধুবন
"সেবার সাথে সাথে এখন সম্পন্ন হওয়ার প্ল্যান বানাও,
কর্মাতীত হওয়ার অনবচ্ছিন্ন প্রয়াস করে যাও"
আজ শিববাবা নিজের নিজের শালগ্রাম বাচ্চাদের সঙ্গে নিজের এবং বাচ্চাদের অবতরণের
জয়ন্তী উদযাপন করতে এসেছেন। অবতরণের এই জয়ন্তী কত ওয়ান্ডারফুল! চতুর্দিকের সব
বাচ্চা ছুটতে ছুটতে এসেছে বাবার জয়ন্তী এবং নিজেদের জয়ন্তী উদযাপন করার জন্য। বাবা
আর বাচ্চাদের জয়ন্তী অর্থাৎ অবতরণ দিবস একই। বাবা আর বাচ্চাদের জন্ম দিবস এক, এটাই
ওয়ান্ডার। সুতরাং আজ তোমরা সব শালগ্রাম বাচ্চারা বাবাকে অভিনন্দন জানাতে এসেছ, নাকি
অভিনন্দন নিতে এসেছ? দিতেও এসেছ, নিতেও এসেছ। সাথে সাথে হওয়ার লক্ষণ এটাই যে সব
বাচ্চার এবং বাবার নিজেদের মধ্যে অনেক অনেক অনেক স্নেহ রয়েছে। সেইজন্য জন্মও একসাথে
আর সারা জন্ম থাকেও কম্বাইন্ড অর্থাৎ সাথে আছে। এত ভালবাসা দেখেছ! যদি অক্যুপেশন
থাকেও তবে সেটা বাবা আর বাচ্চাদের একই, বিশ্ব পরিবর্তন করার অক্যুপেশন, আর কী
প্রতিজ্ঞা রয়েছে? পরমধাম, সুইট হোমেও তোমরা সাথে সাথে যাবে, নাকি আগুপিছু যাবে?
সাথে সাথেই যেতে হবে তো না! তোমাদের আর বাবার এমন স্নেহ! না বাবা একলা কিছু করতে
পারেন, না তোমরা বাচ্চারা একলা কিছু করতে পারো। করতে পারো? বাবা ব্যতীত কিছু করতে
পারো তোমরা! তাছাড়া, বাবাও কিছু করতে পারেন না। সেইজন্য এই অলৌকিক অবতরণের জন্ম
দিবসে বাবা বাচ্চাদের আর বাচ্চারা বাবার পদ্মাপদম বার অভিনন্দন জানাচ্ছেন। তোমরা
বাবাকে দিচ্ছ, বাবা তোমাদের দিচ্ছেন। অমৃতবেলা থেকে শুরু করে, তার আগে থেকেও
বাচ্চাদের অভিনন্দন, কার্ড, পত্র, হৃদয়ের মিষ্টি মিষ্টি গীত বাবা পেয়েছেন, আর
এখনও বাপদাদা দেখছেন যে চতুর্দিকের দেশ বিদেশের বাচ্চারা সূক্ষ্ম-ভাবে বাপদাদাকে
অভিনন্দন জানাচ্ছে। সেসব পৌঁছে যাচ্ছে। বাচ্চাদের কাছে আওয়াজ পৌঁছাচ্ছে আর
বাচ্চাদের হৃদয়ের আওয়াজ বাবার কাছে পৌঁছাচ্ছে। চতুর্দিকে বাচ্চারা খুশিতে নাচছে।
বাহ্! বাবা বাহ্! আমরা শালগ্রাম আত্মারা বাঃ! বাঃ! - এর গীত গাইছে। তোমাদের এই জন্ম
দিবসের স্মৃতিচিহ্ন দ্বাপর থেকে এখনো পর্যন্ত ভক্তরাও উদযাপন করতে থাকে। ভক্তও
ভাবনাতে কম নয়। কিন্তু তারা ভক্ত, বাচ্চা নয়। তারা প্রতি বছর উদযাপন করে আর তোমরা
সারা কল্পে একবার অবতরণের গৌরব উদযাপন করো। তারা প্রতি বছর ব্রত পালন করে। ব্রত
উদযাপনও করে আর ব্রত পালনের অঙ্গীকারও করে। তোমরা একবারই ব্রত ধারণ করে নাও,
তোমাদেরই কপি করে, কিন্তু তোমাদের মহত্ত্ব আর তাদের স্মারক-এর মহত্ত্বের মধ্যে
প্রভেদ রয়েছে। তারাও পবিত্রতার ব্রত নেয়। কিন্তু তারা প্রতি বছর ব্রত নেয়
একদিনের জন্য। তোমরাও সবাই জন্ম নেওয়ার সাথে সাথেই পবিত্রতার ব্রত ধারণ করে নিয়েছ,
তাই তো না! নিয়েছ, নাকি নেওয়া বাকি আছে? নিয়ে নিয়েছ। একবার নিয়েছ, তারা বছর
বছর নেয়। সবাই নিয়েছ? শুধু ব্রহ্মচর্য নয়, সম্পূর্ণ পবিত্রতার ব্রত নিয়েছ।
পান্ডব, সম্পূর্ণ পবিত্রতার ব্রত নিয়েছ? নাকি শুধু ব্রহ্মচর্যই ঠিক আছে?
ব্রহ্মচর্য তো ফাউন্ডেশন, কিন্তু সাথে শুধু ব্রহ্মচর্যই নয় আরও চার আছে। চারের
জন্যও ব্রত নিয়েছ নাকি শুধু একের জন্য নিয়েছ। চেক করো। ক্রোধ করার তো অনুমতি আছে
না? নেই অনুমতি? অল্প অল্প তো ক্রোধ করতে হয়, তাই না? করতে হয় না? বলো, পান্ডব,
ক্রোধ করতে হয় না? করতে তো হয়! ঠিক আছে, বাপদাদা দেখেছেন যে ক্রোধ এবং মহাভূতের
যে সব সাথী আছে তা' তো ত্যাগ করেছ কিন্তু যেমন, মাতাদের, যারা প্রবৃত্তির তাদের বড়
বাচ্চাদের প্রতি এত ভালোবাসা থাকে না, মোহ থাকে না কিন্তু নাতি পুতিদের প্রতি খুব
থাকে। ছোট ছোট বাচ্চারা খুব আদরের, প্রিয় লাগে। তো বাপদাদা দেখেছেন যে বাচ্চাদেরও
এই পাঁচ বিকারের যে মহাভূত আছে, সেই মহারূপের প্রতি ভালোবাসা কম তো হয়ে গেছে কিন্তু
এই বিকারগুলোর যে ছোট বাচ্চারা আছে না, ছোট ছোট অংশমাত্র, বংশ মাত্র, সেসবের প্রতি
এখনও অল্প অল্প ভালবাসা আছে। আছে ভালবাসা! কখনো কখনো তো ভালোবাসা হয়ে যায়। হয়ে
যায়? মাতারা? ডবল ফরেনার্স, ক্রোধ আসে না? কোনো কোনো বাচ্চা বড়ই চাতুরীপূর্ণ কথা
বলে, বাবা শোনাবেন কী বলে? শোনাবেন বাবা? বাবা যদি শোনান তবে আজই ছাড়তে হবে। তৈরি
আছ? তৈরি আছ, ছাড়বে? নাকি কেবল ফাইলে কাগজ জমা করবে, যেরকম প্রতি বছর তোমরা করে
থাকো। তোমাদের প্রতিজ্ঞার ফাইল যা বাবার কাছে আছে, তা' অনেক অনেক বড় হয়ে গেছে। তো
এখনও সেরকম নয় তো যে তোমরা তোমাদের প্রতিজ্ঞার একটা কাগজ ফাইলে অ্যাড করে দেবে,
এমন নয় তো না! ফাইনাল করবে নাকি ফাইলে অ্যাড করবে? কী করবে? টিচার্স বলো তোমরা কী
করবে? ফাইনাল? হাত উঠাও। বৃথা প্রতিজ্ঞা ক'রো না। নয়তো, বাপদাদা সামান্য কঠিন রূপ
ধারণ করবেন। ঠিক আছে। ডবল ফরেনার্স, তোমরা করবে ফাইনাল? যারা ফাইনাল করবে তারা হাত
উঠাও। টি. ভি. তে দেখাও। হাত বড় করে তোলো। ছোট, ত্রেতাযুগীয় নয়। আচ্ছা, ঠিক আছে।
শোনো - বাবা আর বাচ্চাদের কথোপকথন কী হয়? বাপদাদা নিরন্তর স্মিত হাসি হাসেন। বাবা
বলেন, ক্রোধ কেন করেছ? তোমরা বলো, আমি করিনি, বরং আমাকে ক্রোধান্বিত করা হয়েছিল।
আমি করিনি, আমাকে রাগানো হয়েছিল। তাহলে বাবা এখন কী বলবেন? তখন তোমরা কী বলো - যদি
আপনি থাকতেন না তাহলে আপনারও ক্রোধ এসে যেত। মিষ্টি মিষ্টি কথা বলো তো না! তারপরে
আবার বলো, নিরাকার থেকে সাকার তন নিয়ে দেখুন। এবার বলো, এমন মিষ্টি বাচ্চাদের বাবা
কী বলবেন! তবুও বাবাকে করুণাময় হতেই হয়। বলেন, ঠিক আছে এখন মাফ করে দিচ্ছি, কিন্তু
ভবিষ্যতে ক'রো না। কিন্তু তোমরা খুব ভালো ভালো জবাব দিয়ে থাকো।
তো পবিত্রতা তোমরা সব ব্রাহ্মণের সর্বাধিক বড় রূপসজ্জা (শৃঙ্গার), সেইজন্য তারা
তোমাদের চিত্রগুলোর কত অলংকরণ করে! এই অলংকরণ পবিত্রতার স্মৃতিচিহ্ন। পবিত্রতা,
সম্পূর্ণ পবিত্রতা - কাজ চালানোর মতো পবিত্রতা নয়। সম্পূর্ণ পবিত্রতা তোমাদের
ব্রাহ্মণ জীবনের সর্বাপেক্ষা বড় প্রপার্টি, রয়্যালটি, পার্সোনালিটি। সেইজন্য
ভক্তরাও এক দিন পবিত্রতার ব্রত পালন করে। এটা তোমাদের কপি করেছে। দ্বিতীয় ব্রত
ধারণ করে ভোজনপান -এর। ভোজনপানের ব্রতরও আবশ্যকতা আছে। কেন? তোমরা ব্রাহ্মণরাও
ভোজনপানের দৃঢ় ব্রত ধারণ করেছ তো না! যখন মধুবনে আসার জন্য সবার থেকে ফর্ম পূরণ
করাও, তখন ফর্মে এটাও পূরণ করাও তো না যে ভোজনপান শুদ্ধ কিনা! পূরণ করাও তো না! তো
ভোজনপানের ব্রত পাক্কা? পাক্কা আছে নাকি কখনো কখনো কাঁচা হয়ে যায়? ডবল বিদেশিদের
ডবল পাক্কা হবে, তাই তো না! ডবল বিদেশিদের ডবল পাক্কা, নাকি কখনো ক্লান্ত হয়ে গেলে
তখন বলো যে ঠিক আছে আজ অল্প খেয়ে নিই। একটু আলগা দিয়ে দাও, না। ভোজনপানে দৃঢ়তা
আছে, তাইতো ভক্তরাও ভোজনপানের ব্রত ধারণ করে। তৃতীয় ব্রত পালন করে জাগরণের - রাত
জাগে, তাই না! তো তোমরা সব ব্রাহ্মণও অজ্ঞান- নিদ্রা থেকে জাগরণের ব্রত ধারণ করো।
মাঝে মাঝে অজ্ঞানের নিদ্রা এসে যায় না তো না! ভক্তরা তোমাদের কপি করছে, তোমরা
পাকাপোক্ত তাইতো তারা কপি করে। কখনও যেন অজ্ঞান অর্থাৎ হীনবলের, অমনোযোগিতার,
আলস্যের নিদ্রা না আসে। নাকি অল্প-স্বল্প যদি তন্দ্রা আসে তো ক্ষতি নেই?
তন্দ্রাচ্ছন্ন হও তোমরা? অমৃতবেলাতেও অনেকে তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়। কিন্তু এটা ভাবো যে
আমাদের স্মারক চিহ্নে ভক্তরা কী কী কপি করছে! তাদের এত দৃঢ়তা থাকে যা কিছু হয়ে
যাক না কেন কিন্তু ব্রত ভাঙে না। আজকের দিন ভক্তরা ব্রত পালন করবে ভোজনপানের, আর
তোমরা আজ কী করবে? পিকনিক করবে? তারা ব্রত পালন করবে, তোমরা পিকনিক করবে, কেক কাটবে,
তাই না! পিকনিক করবে কারণ তোমরা জন্ম থেকে ব্রত নিয়েছ, সেইজন্য আজকের দিন পিকনিক
করবে।
বাপদাদা বাচ্চাদের থেকে এখন কী চান? তোমরা তা' জানো। খুব ভালো সংকল্প করো তোমরা, এত
ভালো সংকল্প করো যা শুনতে শুনতে বাবা খুশি হয়ে যান। সংকল্প তো করো, কিন্তু পরে কী
হয়? যখন চাইছই তখন সংকল্প দুর্বল কেন হয়ে যায়? তোমরা কিছু করতেই চাও কেননা বাবার
প্রতি তোমাদের অনেক ভালোবাসা আছে, বাবাও জানেন যে তোমরা সব বাচ্চার বাপদাদার জন্য
তোমাদের হৃদয়ের ভালোবাসা আছে। আর ভালোবাসাতে তোমরা হাত তুলিয়ে বলে থাকো যে
তোমাদের ভালোবাসা কেবল ১০০ পার্সেন্ট নয়, বরং ১০০ পার্সেন্ট থেকেও বেশি ভালোবাসা
আছে এবং বাবাও সেটা মানেন, ভালবাসায় সবাই পাশ। কি, কিন্তু আছে? কিন্তু আছে, নাকি
নেই? কিন্তু আসে নাকি আসে না? পান্ডব, মাঝে মধ্যে কী কিন্তু এসে যায়? তোমরা না করছ
না, তাহলে এর মানে হ্যাঁ। বাপদাদা মেজরিটি বাচ্চাদের একটা বিষয় নোট করেছেন,
প্রতিজ্ঞা দুর্বল হওয়ার একটাই কারণ, একটাই শব্দ। ভাবো সেই একটা শব্দ কি? টিচার্স
বলো কি সেই একটা শব্দ? পান্ডব বলো এক শব্দ কি? মনে পড়ে গেছে তো না! এক শব্দ হলো -
'আমি'।
অভিমান রূপেও 'আমি' আসে আর হীনবল করতেও 'আমি' আসে। আমি যা বলেছি, আমি যা করেছি, আমি
যা বুঝেছি, সেটাই রাইট। সেটাই হওয়া উচিৎ। এটা অভিমানের 'আমি'। আমি যখন পূর্ণ হয়
না তখন আবার নিরাশও হয়ে যায় - আমি করতে পারি না, এগোতে পারি না, খুব কঠিন। বডি
কনসাসনেস এর এই 'আমি' যেন বদলে যায়, 'আমি' স্বমানও মনে করিয়ে দেয় আর 'আমি' দেহ
অভিমানেও নিয়ে আসে। 'আমি' নিরাশও করে আর 'আমি' প্রসন্নচিত্তও বানায়। তাছাড়া,
অভিমানের লক্ষণ কী জানো তোমরা? কখনও কারও মধ্যে যদি বডি কনসাসনেস এর অভিমান অংশ
মাত্রও থাকে, তবে তার লক্ষণ কী হবে? সে নিজের অপমান সহন করতে পারবে না। অভিমান
অপমান সহ্য করতে দেবে না। কেউ যদি সামান্য কিছুও বলে যে এটা ঠিক নয়; একটু নম্র হও,
তাহলে তোমাদের সেটা অপমান মনে হবে, এটা অভিমানের লক্ষণ।
বাপদাদা বতনে মৃদু মৃদু হাসছিলেন - এই বাচ্চারা শিবরাত্রিতে এখানে ওখানে ভাষণ দিয়ে
থাকে, তাই না, এখন অনেক ভাষণ দিচ্ছ, তাই তো এনা! বাচ্চাদের একটা পয়েন্ট বাপদাদার
স্মরণে এলো। তো তা'তে বলা হয়ে থাকে, শিবরাত্রিতে ছাগ-বলি দেওয়া হয় — সেই ছাগল
খুব ম্যাএ.. ম্যাএ..করে, তো শিবরাত্রিতে এই "ম্যায়" "ম্যায়" (আমিত্ব) এর বলি দাও।
তো এটা যখন বাবা শোনেন, তিনি মৃদু মৃদু হাসছিলেন। তাহলে, তোমরাও এই "আমি"র বলি দাও।
সারেন্ডার করতে পারো তোমরা? করতে পারো এটা? পান্ডব, তোমরা করতে পারো? ডবল ফরেনার্স
তোমরা করতে পারো? ফুল সারেন্ডার নাকি শুধু সারেন্ডার। ফুল সারেন্ডার। আজ পতাকা
উত্তোলনের সময় বাপদাদা শুধু প্রতিজ্ঞাই করাবেন না, আজ প্রতিজ্ঞা করবে আর আর তা'
তোমাদের ফাইলে আরেকটা কাগজ জমা করবে, এমন প্রতিজ্ঞা তিনি করাবেন না। কী ভাবছ? দাদিরা,
আজকেও এমন প্রতিজ্ঞা করাবো? ফাইনাল করবে নাকি ফাইলে জমা করবে? বলো, (ফাইনাল করাও)
সাহস আছে? সাহস আছে? এটা শুনতে তোমরা মগ্ন হয়ে গেছ, হাত উঠাচ্ছ না। কাল তো কিছু হয়ে
যাবে না, তাই তো না! কাল মায়া চক্কর লাগাতে আসবে। মায়ারও তোমাদের প্রতি ভালোবাসা
আছে তো না! কারণ আজকাল সবাই ধুমধামের সাথে সেবার প্ল্যান বানাচ্ছে, তাই না! তোমরা
প্রবলভাবে সেবা করছ তো সেবা প্রবলভাবে করা অর্থাৎ সম্পূর্ণ সমাপ্তির সময়কে নিকটে
নিয়ে আসা। এমন ভেবো না যে তোমরা কেবল ভাষণ দিয়েছ, বরং কার্যত তোমরা সময়কে নিকটে
নিয়ে আসছ। ভালো সেবা করছ। বাপদাদা খুশি। কিন্তু বাপদাদা দেখেন যে, সময় নিকটে আসছে,
তোমরা নিয়ে আসছ। শুধুই লাখ দেড় লাখ একত্রিত করনি, এটা সময়কে নিকটে নিয়ে আসা।
এখন গুজরাট করেছে, বম্বে (মুম্বই) করবে অন্যরাও করছে। ঠিক আছে লাখ নয় তো ৫০ হাজারই
হোক, কিন্তু বার্তা দিচ্ছ তো বার্তার সাথে সাথে সম্পন্নতারও প্রস্তুতি হয়েছে?
প্রস্তুতি হয়েছে? বিনাশকে আহ্বান করছ তো প্রস্তুতি হয়েছে? দাদি কোশ্চেন করেছিলেন
যে এখন কী এমন প্ল্যান বানাব যাতে অবিলম্বে প্রত্যক্ষতা হয়ে যায়? তো বাপদাদা বলেন
- প্রত্যক্ষতা তো সেকেন্ডের ব্যাপার কিন্তু প্রত্যক্ষতার আগে বাবা জিজ্ঞাসা করেন
যারা স্থাপনের সাথে রয়েছে তারা প্রস্তুত হয়েছে? পর্দা খুলি? নাকি কেউ কানের
রূপসজ্জা করছে, কেউ মাথার? প্রস্তুত তোমরা? হয়ে যাবে, কবে? ডেট বলো। যেমন, এখন
তোমরা ডেট ফিক্স করেছ না, এই মাসের ভিতরে বার্তা দিতে হবে, এরকম সবাই এভাররেডি?
কমপক্ষে ১৬ হাজার তো এভাররেডি হবে, ৯ লাখ ছেড়ে দাও, এটা ছেড়েই দাও। অন্তত ১৬
হাজার তো প্রস্তুত হবে! প্রস্তুত হয়েছে? তবে তালি বাজাই? নিরর্থক হ্যাঁ ক'রো না।
যখন এভাররেডি হয়ে যাবে তখন বাপদাদা টাচ্ করবেন, তালি বাজাবেন, প্রকৃতি নিজের কাজ
শুরু করবে। যারা সায়েন্সের তারা নিজের কাজ শুরু করে দেবে। দেরি কী আছে, সবাই রেডি?
১৬ হাজার প্রস্তুত হয়েছে? হয়েছে প্রস্তুত? হয়ে যাবে। (আপনিই অধিক জানেন) এই জবাব
তো এড়িয়ে যাওয়ার। ১৬ হাজারের রিপোর্ট আসা চাই - এভাররেডি, সম্পূর্ণ পবিত্রতার
সাথে তারা সম্পন্ন হয়েছে। বাপদাদার তালি বাজানোতে কোনো দেরি হবে না। ডেট বলো। (আপ
ডেট দাও) সবাইকে জিজ্ঞাসা করো। দেখ, হতে তো হবেই, কিন্তু বাবা যেটা শুনিয়েছেন - 'আমি'
এই এক শব্দের সম্পূর্ণ পরিবর্তন, তখনই বাবার সাথে যাবে। নয়তো পিছনে পিছনে যেতে হবে।
সেইজন্য বাপদাদা এখন গেট খুলছেন না কেননা, সাথে যেতে হবে।
ব্রহ্মা বাবা সব বাচ্চাকে জিজ্ঞাসা করেন যে গেট খোলার ডেট বলো। গেট খুলতে হবে তো
না! সাথে তো যেতে হবে, তাই না! আজ উদযাপন করা অর্থাৎ সেরকম হওয়া। শুধু কেক কাটা নয়,
বরং আমি-কে সমাপ্ত করতে হবে। ভাবছ নাকি ভেবে নিয়েছ? কারণ অমৃতবেলায় বাপদাদার কাছে
সবার অনেক ভ্যারাইটি সংকল্প পৌঁছায়। তো নিজেদের মধ্যে পরামর্শ করো এবং ডেট বাবাকে
বলে দিও। যতক্ষণ না ডেট ফিক্স করছ না, ততক্ষণ কোনো কার্য হয় না। প্রথমে মহারথীরা
নিজেদের মধ্যে ডেট ফিক্স করো, তারপরে সবাই ফলো করবে। যারা ফলো করার তারা প্রস্তুত
আছে এবং তোমাদের সাহস দ্বারা আরও বল প্রাপ্ত হবে। যেমন দেখ, এখন উৎসাহ-উদ্দীপনা
আনন্দ লাভ করিয়েছ তো তারা তৈরি হয়ে গেছে, তাই না! সম্পূর্ণ হতে সেরকম প্ল্যান
বানাও। নিরন্তর প্রয়াস চালিয়ে যাও, কর্মাতীত হতেই হবে। যা কিছু হয়ে যাক না কেন
তৈরি হতেই হবে, করতেই হবে, হতেই হবে। সায়েন্টিস্টদের আওয়াজ, যারা বিনাশ করবে
তাদেরও আওয়াজ বাবার কানে আসে, তারাও বলে কেন থামাচ্ছেন, কেন থামাচ্ছেন...?
অ্যাডভান্স পার্টিও বলে ডেট ফিক্স করো, ডেট ফিক্স করো। ব্রহ্মা বাবাও বলেন ডেট
ফিক্স করো। সুতরাং এই মিটিং করো। বাকি যা সেবা তোমরা করছ, বাপদাদা তা'তে সন্তুষ্ট।
প্রত্যেকে করছে, ফরেনও করছে, ভারতেও সব জোন থেকে করছে, যারা প্রবৃত্তির তারাও করছে,
সবাই করছে। এর জন্য অভিনন্দন, সেবার অভিনন্দন, অভিনন্দন। এখন এই চমৎকার করে দেখাও।
বাবা বিশেষভাবে দাদিদের বলছেন, বিশেষভাবে বরিষ্ঠ ভাইদের বলছেন। এবারে পরবর্তী
শিবরাত্রিতে সমারোহ আর চমৎকার দুইই একসাথে হোক। ঠিক আছে! সামনের লাইনের টিচার্স,
ঠিক আছে? মিটিং করবে তো না! বাপদাদার এখন ডেট চাই, এমনিই হয়ে যাবে না, আমরা করছি
সেটাও নয়। এসব অনেক হয়েছে। বাচ্চারা আগে ডেট দেবে তারপরে বাবা ফাইনাল করবেন।
বাপদাদা তো বলেন পরের শিবরাত্রিতে চমৎকার আর সমারোহ দুটো একসাথে হোক। এখন প্রস্তুতি
নাও। টিচার্স, মঞ্জুর? ডবল বিদেশি, মঞ্জুর? প্রথম লাইন, মঞ্জুর? পান্ডব, মঞ্জুর?
(হাঁ জী) অভিনন্দন। তারা অনেক দুঃখী। বাপদাদা এত দুঃখ দেখতে পারেন না। সর্বাগ্রে,
তোমরা সব শক্তি, দেবতা রূপ পান্ডবদের দয়া হওয়া উচিত। কত আর্তস্বরে তারা ডাকছে।
এখন তাদের আর্তস্বর তোমাদের কানে প্রতিধ্বনিত হওয়া উচিত। সময়ের আহ্বানের
প্রোগ্রাম তোমরা করো তো না! এখন ভক্তদের আহ্বানও শোনো, দুঃখীদের কাতর চিৎকারও শোনো।
সেবাতে নম্বর ভালো, এই সার্টিফিকেট তো বাপদাদাও দেন, উৎসাহ উদ্দীপনা ভালো, গুজরাট
নম্বর ওয়ান নিয়েছে, তো নম্বর ওয়ান হওয়ার অভিনন্দন। এখন তো একটুখানি কাতর ধ্বনি
শোনো, যারা অসহায় তারা আর্তস্বরে চিৎকার করছে, হৃদয় থেকে উচ্চস্বরে চিৎকার করছে,
ছটফট করছে। সায়েন্সের ওরাও খুব চিৎকার করছে, কবে হবে? কবে করব? কবে করব? তারা
চিৎকার করছে। যদি বা আজ কেক কেটেও নাও, কিন্তু কাল থেকে কাতর আহ্বান শুনো। উদযাপন
করা তো সঙ্গমযুগের উৎসব। একদিকে উদযাপন করা, আরেকদিকে আত্মাদের তৈরি করা। আচ্ছা। তো
কী শুনেছ?
তোমাদের গীত হলো - দুঃখীদের প্রতি দয়া করো। তোমরা ব্যতীত কেউ দয়া করতে পারে না।
সেইজন্য এখন সময় অনুসারে মাস্টার দয়ার সাগর হও। নিজের প্রতিও দয়া, অন্য আত্মাদের
প্রতিও দয়া। এখন নিজের এই স্বরূপ লাইট হাউস হয়ে ভিন্ন ভিন্ন লাইটস এর কিরণ দাও।
সারা বিশ্বের অপ্রাপ্ত আত্মাদের আঁজলা পরিমাণ প্রাপ্তির কিরণ দাও। আচ্ছা।
সাক্ষাৎ বাবা-মূর্ত সকল শ্রেষ্ঠ আত্মাকে, সদা উৎসাহ উদ্দীপনায় থাকা বাবার সমীপ
আত্মাদের, সদা যারা সর্ব কদম বাবা সমান করে এমন বাচ্চাদের, চতুর্দিকের ব্রাহ্মণ
জন্মের অভিনন্দন-যোগ্য বাচ্চাদের, সদা একাগ্রতার শক্তি সম্পন্ন আত্মাদের বাপদাদার
স্মরণের স্নেহ-সুমন এবং পদ্ম-পদ্মগুন জন্ম শুভেচ্ছাময় হোক। অভিনন্দন, অভিনন্দন এবং
নমস্কার।
প্রিয় অব্যক্ত বাপদাদা নিজের হস্তে শিব ধ্বজা আন্দোলিত করেছেন এবং সবাইকে
অভিনন্দিত করেছেন।
আজকের দিন সবাই নিজের জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছে এবং নিয়েছে, পতাকাও উত্তোলন
করেছে। কিন্তু এখন সেই দিন অবিলম্বে আনতে হবে যাতে বিশ্বের গ্লোবের ওপরে সর্ব আত্মা
দাঁড়িয়ে তোমাদের সকলের ফেস-এ যেন বাবার পতাকা দেখে। কাপড়ের পতাকা তো নিমিত্ত
মাত্র কিন্তু একেক বাচ্চার ফেস যেন বাবার চিত্র দেখায়। এমন পতাকা উত্তোলন করতে হবে।
সেই দিনও খুব খুব খুব শীঘ্র আনতে হবে, আসতে হবে, আসতে হবে।
বরদান:-
সীমাবদ্ধতার সমস্ত ইচ্ছা থেকে মুক্ত হওয়া সেবাকারী
নিঃস্বার্থ সেবাধারী ভব
যেমন, ব্রহ্মা বাবা কর্মের বন্ধন থেকে মুক্ত,
স্বতন্ত্র (ডিট্যাচ) হওয়ার প্রমাণ দিয়েছেন, সেবার স্নেহ ব্যতীত অন্য কোনো বন্ধন
ছিল না। সেবায় যে সব সীমিত ইচ্ছা থাকে, সেগুলোও হিসেবনিকেশের বন্ধনে বাঁধে, প্রকৃত
সেবাধারী সেই হিসেবনিকেশের বন্ধন থেকে মুক্ত থাকে। যেমন, দেহের বন্ধন, দেহের
সম্বন্ধের বন্ধন, তেমনই সেবাতে স্বার্থ - এটাও বন্ধন। এই বন্ধন থেকে এবং রয়্যাল
হিসেবনিকেশ থেকে মুক্ত হয়ে নিঃস্বার্থ সেবাধারী হও।
স্লোগান:-
প্রতিজ্ঞা ফাইলে রেখো না, ফাইনাল বানিয়ে দেখাও।
সূচনাঃ - আজ মাসের তৃতীয় রবিবার, অন্তর্রাষ্ট্রিয়
যোগ দিবস, সকল ব্রহ্মা বৎস সংগঠিত রূপে সন্ধ্যা ৬:৩০ থেকে ৭:৩০ পর্যন্ত মূলবতনের
বিশেষ গহন শক্তির অনুভব করুন। মন-বুদ্ধিকে একাগ্র করে, জ্বালা স্বরূপে স্থিত হয়ে
সম্পন্নতা এবং সম্পূর্ণতার অনুভব করুন।