16.09.2024 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা - এটা হলো এক ওয়ান্ডারফুল সৎসঙ্গ, যেখানে তোমাদেরকে জীবন্মৃত হতে শেখানো হয়, যারা জীবন্মৃত হতে পারে, তারাই হংস হতে পারে"

প্রশ্নঃ -
বাচ্চারা, এখন তোমাদের কোন্ বিষয়ে চিন্তা রয়েছে?

উত্তরঃ  
বিনাশের পূর্বে আমাদেরকে সম্পন্ন হতে হবে। যে বাচ্চারা জ্ঞান আর যোগে দৃঢ় হতে থাকে, তাদের মধ্যে মানুষকে দেবতা বানানোর এই অভ্যাস চলে আসে । তারা সেবা ছাড়া থাকতেই পারে না । তারা জিনের মতো দৌঁড়াতে থাকবে । সেবার সাথে সাথে নিজেকেও সম্পন্ন করার চিন্তা থাকবে ।

ওম্ শান্তি ।
আত্মাদের পিতা বসে তাঁর আত্মিক বাচ্চাদেরকে বোঝাচ্ছেন - আত্মা এখন সাকারে রয়েছে এবং তারা হলো প্রজাপিতা ব্রহ্মার সন্তান, কেননা তাদেরকে অ্যাডপ্ট করা হয়েছে । তোমাদের বিষয়ে সবাই বলে যে, এরা সবাইকে ভাই - বোন বানিয়ে দেয় । বাবা তাঁর বাচ্চাদের বুঝিয়েছেন যে, প্রকৃতপক্ষে তোমরা আত্মারা হলে ভাই - ভাই । সৃষ্টি এখন নতুন হচ্ছে, তাই সর্বপ্রথমে ব্রাহ্মণ টিকি প্রয়োজন। তোমরা শূদ্র ছিলে, এখন তোমাদের পরিবর্তন হয়েছে । ব্রাহ্মণও তো অবশ্যই চাই । প্রজাপিতা ব্রহ্মার নাম তো সুপ্রসিদ্ধ। এই হিসাবে তোমরা বুঝতে পারো যে, আমরা সমস্ত বাচ্চারা ভাই - বোন হলাম । যারা নিজেদের ব্রহ্মাকুমার - কুমারী বলে পরিচয় দেবে, তারা অবশ্যই ভাই - বোন হবে । সবাই যখন প্রজাপিতা ব্রহ্মার সন্তান, তখন অবশ্যই ভাই - বোন হওয়া উচিত । অবুঝদের এই কথা বুঝিয়ে বলা উচিত । অবুঝরাও যেমন আছে, তেমনই অন্ধ বিশ্বাসীরাও আছে । তারা যার পূজা করে, যার প্রতি বিশ্বাস রাখে যে, এ অমুক, কিন্তু তাঁর সম্বন্ধে কিছুই জানে না । তারা লক্ষ্মী - নারায়ণের পূজা করে, কিন্তু তাঁরা কবে এসেছিলেন, কিভাবে এমন হয়েছিলেন, এরপর কোথায় গেলেন, এসব কেউই জানে না । কোনো মানুষ যদি নেহেরু ইত্যাদিকে জানে, তাহলে তাঁর হিস্ট্রি - জিওগ্রাফিকেও অবশ্যই জানে । যদি তাঁর জীবনীই না জানে তাহলে কোন কাজের নয়? ওরা পূজা করে কিন্তু জীবন কাহিনীই জানে না । মানুষের জীবন কাহিনী তো জানে কিন্তু বড়রা, যারা অতীত হয়ে গেছেন তাদের একজনেরও জীবন কাহিনী জানে না । শিবের কতো পূজারী, তারা পূজা করে, তবুও মুখে বলে দেয়, ঈশ্বর নুড়ি - পাথরের মধ্যে আছেন, কণায় - কণায় আছেন । একি কোনো জীবন - কাহিনী হলো? এ তো কোনো বুদ্ধির কথাই নয় । মানুষ নিজেদেরও পতিত বলে দেয় । পতিত শব্দ কতটা সঠিক? পতিত কথার অর্থ বিকারী । তোমরা বুঝিয়ে বলতে পারো, আমাদের কেন ব্রহ্মাকুমার - কুমারী বলা হয়? কেননা আমরা ব্রহ্মার গৃহীত সন্তান । আমরা কুলজাত নয়, আমরা মুখ বংশাবলী । ব্রাহ্মণ - ব্রাহ্মাণীরা তো হলো ভাই - বোন। তাই তাদের নিজেদের মধ্যে কোনো কুদৃষ্টি থাকতে পারে না । মুখ্য খারাপ চিন্তা হলো কাম বিকারের । তোমরা বলো যে, আমরা প্রজাপিতা ব্রহ্মার সন্তান, তাই ভাই - বোন হয়ে যাই । তোমরা মনে করো, আমরা সবাই শিববাবার সন্তান, ভাই - ভাই । এও পাকা কথা । এই দুনিয়া এসবের কিছুই জানে না । তারা নিজের মতো করে বলে দেয় । তোমরা সবাইকে বুঝিয়ে বলতে পারো, সমস্ত আত্মাদের বাবা হলেন এক । তাঁকেই সবাই ডাকতে থাকে । তোমরা তাঁর ছবিও দেখিয়েছো । বড় - বড় ধর্মের মানুষরাও এই নিরাকার বাবাকে মানেন । তিনি হলেন সমস্ত নিরাকার আত্মাদের বাবা, আর সাকারে সকলের বাবা হলেন প্রজাপিতা ব্রহ্মা, যার থেকে বৃদ্ধি হতে থাকে এবং বৃক্ষের ঝাড় বৃদ্ধি হতে থাকে । আত্মা ক্রমাগত ভিন্ন - ভিন্ন ধর্মে আসতে থাকে । আত্মা তো এই শরীর থেকে পৃথক । শরীর দেখে মানুষ বলে - এ আমেরিকান, এ অমুক । আত্মাকে তো সে কথা বলে না । আত্মারা সকলেই শান্তিধামে থাকে । সেখান থেকে অভিনয় করার জন্য এখানে আসে । তোমরা যে কোনো ধর্মের মানুষদের এ কথা শোনাও, পুনর্জন্ম তো সবাই নেয় আর উপর থেকেও নতুন আত্মা আসতে থাকে । তাই বাবা বলেন - তোমরাও মানুষ আর মানুষেরই তো সৃষ্টির আদি - মধ্য এবং অন্তকে জানা উচিত যে, এই সৃষ্টিচক্র কিভাবে ঘুরছে, এর রচয়িতা কে, এই সৃষ্টিচক্রের পুনরাবৃত্তি হতে কতটা সময় লাগে? এ কথা তোমরাই জানো, দেবতারা তো জানেই না । মানুষই সব জেনে দেবতা হয় । আর এই মানুষকে দেবতা বানান বাবা । বাবা নিজের এবং রচনার পরিচয় দেন । তোমরা জানো যে, আমরা বীজরূপ বাবার বীজরূপ সন্তান । বাবা যেমন এই উল্টো বৃক্ষকে জানেন, তেমনই আমরাও জেনে গেছি । মানুষ, মানুষকে এ কথা কখনোই বোঝাতে পারবে না । বাবা কিন্তু তোমাদের তা বুঝিয়েছেন ।

যতক্ষণ না তোমরা ব্রহ্মার সন্তান হচ্ছো ততক্ষণ তোমরা এখানে আসতে পারবে না । যতক্ষণ না তোমরা কোর্স সম্পূর্ণ করে বুঝতে পারছো ততক্ষণ এই ব্রাহ্মণদের সভায় কিভাবে বসতে পারবে? একে ইন্দ্র সভাও বলা হয় । ইন্দ্র কখনো জলের বর্ষণ করেন না । 'ইন্দ্র সভা' বলা হয় আর ‘পরী’-ও তোমাদেরই হতে হবে । অনেক প্রকার পরীর মহিমা আছে । কোনো কোনো বাচ্চা খুব সুন্দর হলে যেমন বলা হয়, এ তো যেন পরীর মতো । পাউডার লাগিয়ে সুন্দর হয়ে যায় । সত্যযুগে তোমরা পরী হও, পরীজাদা হও । এখন তোমরা জ্ঞানের সাগরে জ্ঞান স্নান করাতে পরী (দেবী - দেবতা) হয়ে যাও । তোমরা জানো যে, আমরা কি থেকে কি হচ্ছি । সেই পরিব্রাজক বাবা, যিনি সদা পবিত্র, চির সুন্দর, তিনি তোমাদেরও তাঁর তুল্য বানানোর জন্য অপবিত্র শরীরে প্রবেশ করেন । এখন গোরা অর্থাৎ নির্বিকারী, সুন্দর কে বানাবেন? বাবাকেই তো বানাতে হবে, তাই না । এই সৃষ্টিচক্রকে তো পুনরাবৃত্তি হতেই হবে । তোমাদের এখন গোরা অর্থাৎ সুন্দর হতে হবে । একমাত্র জ্ঞানের সাগর বাবা-ই তোমাদের পড়ান । তিনি জ্ঞানের সাগর, প্রেমের সাগর । এই বাবার মহিমার গায়ন যেমন হয়, লৌকিক বাবার তেমন হয় না । এ হলো অসীম জগতের পিতার মহিমা । তাঁকেই সবাই ডাকতে থাকে যে, তুমি এসে আমাদেরও এমন মহিমা সম্পন্ন করো । এখন তোমরা পুরুষার্থের নম্বর অনুসারে তেমন তৈরী হচ্ছো । এই পড়াতে সবাই একরস হয় না । এতে রাতদিনের তফাৎ থাকে । এরপর তোমাদের কাছেও অনেকেই আসবে । তোমাদের অবশ্যই ব্রাহ্মণ হতে হবে । এরপর কেউ ভালোভাবে পড়ে, কেউ আবার কম । এই আধ্যাত্মিক পঠনে যে ভালো হবে, সে আবার অন্যদেরও পড়াতে পারবে । তোমরা এখন বুঝতে পারো, কতো আধ্যাত্মিক কলেজ তৈরী হচ্ছে । বাবাও বলেন, এমন কলেজ তোমরা বানাও যাতে যে কেউ এসে যেন বুঝতে পারে যে, এই কলেজে রচয়িতা আর রচনার আদি - মধ্য এবং অন্তের জ্ঞান মেলে । বাবা এই ভারতেই আসেন তাই ভারতেই আধ্যাত্মিক কলেজ খোলা হয় । এর পরে বিদেশেও খুলতে থাকবে । অনেক কলেজ - ইউনিভার্সিটি তো চাই যেখানে অনেকে এসে পড়বে আর যখন এই পাঠ সম্পূর্ণ হবে তখন দেবী - দেবতা ধর্মে সবাই ট্রান্সফার হয়ে যাবে অর্থাৎ মানুষ থেকে দেবতা হয়ে যাবে । তোমরা তো মনুষ্য থেকে দেবতা হও, তাই না । এমন মহিমাও আছে - ‘মানুষ থেকে দেবতা করতে বেশী সময় লাগে না...’। এখানে এটা হলো মনুষ্যের দুনিয়া আর ওটা হলো দেবতাদের দুনিয়া । দেবতা আর মানুষের মধ্যে রাতদিনের তফাৎ । দিন (অর্থাৎ জ্ঞানের প্রকাশ) হল দেবতা আর রাত (অর্থাৎ অজ্ঞানের অন্ধকার) হল মানুষ । সমস্ত ভক্তই হলো ভক্ত এবং পূজারী । তোমরা এখন পূজারী থেকে পূজ্যে পরিণত হচ্ছো । সত্যযুগে শাস্ত্র - ভক্তি ইত্যাদির কোনো নাম থাকে না । সেখানে সকলেই হলো দেবতা । মানুষ হলো ভক্ত । মানুষই আবার পরে দেবতা হয় । সে হলো দৈবী দুনিয়া আর একে বলা হয় আসুরী দুনিয়া । রাম রাজ্য আর রাবণ রাজ্য । পূর্বে তোমাদের বুদ্ধিতে ছিলোই না যে, রাবণ রাজ্য কাকে বলা হয়? রাবণ কবে এসেছিলো? তোমরা কিছুই জানতে না । মানুষ বলে, লঙ্কা সমুদ্রে ডুবে গিয়েছিলো । দ্বারকার জন্যও এমনই বলা হয় । এখন তোমরা জানো যে, এই সম্পূর্ণ লঙ্কা ডুবে যাবে, এই সম্পূর্ণ দুনিয়া হলো অসীম জগতের লঙ্কা । এ সবই ডুবে যাবে, অনেক জল এসে যাবে । কিন্তু স্বর্গ কখনোই ডুবে যায় না । সেখানে অগাধ ধন - সম্পদ ছিলো । বাবা বুঝিয়েছেন যে, এক সোমনাথ মন্দিরকে মুসলিমরা কতবার লুট করেছে । এখন দেখো, কিছুই নেই । ভারতে কতো অগাধ ধন ছিলো । ভারতকেই স্বর্গ বলা হয় । এখন কি একে স্বর্গ বলা হবে? এখন তো নরক, আবার স্বর্গ তৈরী হবে । কে স্বর্গ আর কে নরক বানায়? এ কথা এখন তোমরা জেনে গেছো । রাবণ রাজ্য কতো সময় ধরে চলে, এও তোমাদের বলা হয়েছে । রাবণ রাজ্যে কতো অজস্র ধর্ম হয়ে যায় । রামরাজ্যে তো কেবল সুর্যবংশী আর চন্দ্রবংশীরা থাকে । এখন তোমরা এই আধ্যাত্মিক পাঠ গ্রহণ করছো । এই পাঠ আর কারোর বুদ্ধিতেই নেই । তারা তো রাবণ রাজ্যেই আছে । রামরাজ্য হয় সত্যযুগে । বাবা বলেন, আমি তোমাদের যোগ্য বানাই । তারপর তোমরা অযোগ্য হয়ে যাও । অযোগ্য কেন বলা হয় তোমাদের? কেননা তোমরা পতিত হয়ে যাও । তোমরা দেবতাদের যোগ্যতার মহিমা করো আর নিজেদেরকে অযোগ্য বলে পরিচয় দাও ।

বাবা বোঝাচ্ছেন - তোমরা যখন পূজ্য ছিলে তখন দুনিয়া নতুন ছিলো । সেখানে খুবই অল্প জনসংখ্যা ছিলো । তোমরাই সম্পূর্ণ বিশ্বের মালিক ছিলে । এখন তোমাদের খুবই খুশী হওয়া উচিত । তোমরা তো ভাই - বোন হয়ে গেছো, তাই না । ওরা বলে যে, তোমরা সংসার ভেঙ্গে দিচ্ছো । আবার ওরাই যখন এখানে এসে শিক্ষা গ্রহণ করে তখন বুঝতে পারে, এই জ্ঞান তো খুবই ভালো । তখন অর্থ বুঝতে পারে, তাই না । ভাই - বোনের সম্পর্ক ছাড়া পবিত্রতা কোথা থেকে আসবে? সমস্ত কিছুই পবিত্রতার উপর নির্ভর করে । বাবা আসেনই মগধ দেশে, যে দেশের অনেক পতন ঘটেছে, সেখানে অনেক পতিত বসবাস করে, খাওয়া - দাওয়াও সেখানে অশুদ্ধ । বাবা বলেন - যে আত্মা অনেক জন্মের পর অন্তিম জন্ম নিয়েছে তার শরীরে আমি প্রবেশ করি । ইনি ৮৪ জন্মগ্রহণ করেন । অন্ত থেকে আদি আর আদি থেকে অন্তে যান । একজনকেই তো উদাহরণ বানাবেন, তাই না । তোমাদের সাম্রাজ্য এখন তৈরী হচ্ছে । তোমরা যত ভালোভাবে বুঝতে পারবে, ততই তোমাদের কাছে অনেকে আসবে । এখন এই বৃক্ষের ঝাড় খুবই ছোটো । ঝড়ও অনেক আসে । সত্যযুগে ঝড়ের কোনো কথাই নেই । উপর থেকে নতুন নতুন আত্মা আসতে থাকে । এখানে মায়ার ঝড় এলেই মানুষ মুষড়ে পড়ে । ওখানে মায়ার তুফান থাকেই না । এখানে তো বসে বসেই মানুষ প্রাণত্যাগ করে, আর তোমাদের তো মায়ার সঙ্গে যুদ্ধ, তাই মায়াও তোমাদের হয়রান করে । সত্যযুগে এসব হয় না । দ্বিতীয় অন্য কোনো ধর্মে এমন বিষয় নেই । রাবণ রাজ্য আর রাম রাজ্যকে আর কেউই বুঝতে পারে না । সত্যযুগে যদিও বা যায়, সেখানে বেঁচে থাকা বা মারা যাওয়ার কোনো কথাই নেই । এখানে তো বাচ্চাদেরকে দত্তক নেওয়া হয় । তোমরা বলো, আমরা শিববাবার সন্তান, আমরা তাঁর থেকে অবিনাশী উত্তরাধিকার গ্রহণ করি । এই উত্তরাধিকার নিতে নিতে আমরা নামতে থাকি তখন এই উত্তরাধিকারও শেষ হয়ে যায় । হংস থেকে পরিবর্তন হয়ে বক হয়ে যায় । বাবা তো দয়ালু, তাই তিনি আবারও বোঝাতে থাকেন । কেউ আবার নতুন করে উঠতে থাকে । যে স্থির, অচল থাকে, তাকে বলা হয় মহাবীর, হনুমান । তোমরাই হলে সেই মহাবীর । তোমাদের নম্বরের ক্রমানুসার তো থাকেই । সবথেকে শক্তিশালীকে মহাবীর বলা হয় । আদিদেবকেও মহাবীর বলা হয়, যার থেকে এই মহাবীরের জন্ম হয়, তিনিই এই বিশ্বের উপর রাজত্ব করেন । পুরুষার্থের নম্বর অনুসারে রাবণের উপর বিজয় প্রাপ্ত করার জন্য তোমরা পুরুষার্থ করতে থাকো । রাবণ হলো পাঁচ বিকার । এটা তো হলো বোঝার মতো কথা । বাবা এখন তোমাদের বুদ্ধির তালা খুলছেন । এরপর তালা একদম বন্ধ হয়ে যায় । এখানেও এমন আছে, যার তালা খুলে যায়, সে-ও গিয়ে সার্ভিস করে । বাবা বলেন, তোমরা গিয়ে সার্ভিস করো, যারা গর্তে পড়ে আছে তাদের তুলে ধরো । এমন নয় যে, তোমরাও গর্তে পড়ে গেলে । তোমরা গর্ত থেকে বের হয়ে অন্যদেরও বের করো । বিষয় বৈতরণী নদীতে অপার দুঃখ থাকে । এখন তোমাদের অপার সুখের দুনিয়ায় যেতে হবে । যিনি অপার সুখ প্রদান করেন, তাঁর মহিমা গায়ন হয় । রাবণ, যে দুঃখ দেয়, তার কি মহিমা হবে? রাবণকে বলা হয় অসুর । বাবা বলেন যে, তোমরা রাবণ রাজ্যে ছিলে, এখন অপার সুখ ভোগ করার জন্য তোমরা এখানে এসেছো । তোমরা অপার সুখ ভোগ করো । তোমাদের কতটা খুশীতে থাকা উচিত আবার সাবধানও থাকা উচিত । নম্বরের ক্রমানুসারে তো তোমাদের পদ-পজিশন হয় । প্রত্যেক অভিনেতার পজিশন আলাদা । সবার মধ্যে তো ঈশ্বর থাকতে পারে না । বাবা প্রত্যেকটি কথা নিজে বসে বোঝান । তোমরা পুরুষার্থের নম্বর অনুসারে বাবাকে আর এই রচনার আদি - মধ্য এবং অন্তকে জেনে যাও । পুরুষার্থের নম্বর অনুসারে এই পাঠের উপর মার্কস দেওয়া হয় । এ হলো অসীম জগতের পাঠ, এতে বাচ্চাদের খুবই মনোযোগ দেওয়া উচিত । একদিনও যেন এই পাঠ বাদ না যায় । আমরা হলাম ছাত্র, গড ফাদার আমাদের পড়ান - বাচ্চাদের এই নেশা থাকা উচিত । ভগবান উবাচঃ - ওরা কেবল নাম পরিবর্তন করে কৃষ্ণের নাম দিয়ে দিয়েছে । ভুল করে ওরা কৃষ্ণ ভগবান উবাচঃ ভেবে নিয়েছে কেননা কৃষ্ণ হলেন ভগবানের সবথেকে কাছের । বাবা যে স্বর্গ স্থাপন করেন তাতে এক নম্বর হলেন ইনি । এই জ্ঞান এখন তোমরা পেয়েছো । পুরুষার্থের নম্বর অনুসারে তারা নিজেরও কল্যাণ করে, আর অন্যেরও কল্যাণ করতে থাকে, তাদের সেবা ছাড়া কিছুতেই সুখ আসবে না ।

বাচ্চারা, তোমরা যোগ আর জ্ঞানে দৃঢ় হয়ে যাবে, তখন এমনভাবে কাজ করবে, যেন জিন । মানুষের দেবতা হওয়ার অভ্যাস হয়ে যাবে । মৃত্যুর আগেই তোমাদের উত্তীর্ণ হতে হবে । তোমাদের অনেক সেবা করতে হবে । এরপরে তো লড়াই লেগে যাবে । প্রাকৃতিক বিপর্যয়ও আসবে । আচ্ছা ।

মিষ্টি - মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা - পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মারূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) লাস্টে এসেও ফাস্ট (দ্রুত) যাওয়ার জন্য মহাবীর হয়ে পুরুষার্থ করতে হবে । মায়ার ঝড় দেখে ঘাবড়ে যেও না । বাবার সমান দয়ালু হয়ে মানুষের বুদ্ধির তালা খোলার সেবা করতে হবে ।

২ ) জ্ঞানের সাগরে রোজ স্নান করে পরীজাদা হতে হবে । একদিনও এই আধ্যাত্মিক পাঠ বাদ দেবে না । ভগবানের স্টুডেন্ট আমরা - এই নেশায় থাকতে হবে ।

বরদান:-
গম্ভীরতার গুণের দ্বারা ফুল মার্ক্স জমা করে গম্ভীরতার দেবী-দেবতা ভব

বর্তমান সময়ে গম্ভীরতার গুণের বিশেষ প্রয়োজন । কেননা বলার অভ্যাস অনেক বেশী হয়ে গেছে, যেটা মনে আসে সেটাই বলে দাও। কেউ যদি ভালো কাজ করে বলে ফেলে তাহলে অর্ধেক পুণ্য শেষ হয়ে যায়। অর্ধেকই জমা হয় আর যারা গম্ভীর হয় তার সম্পূর্নই জমা হয়, এইজন্য গম্ভীরতার দেবী-দেবতা হয়ে নিজের ফুল মার্ক্স জমা করো। বর্ণনা করলে মার্ক্স কমে যাবে।

স্লোগান:-
বিন্দু রূপে স্থিত থাকো তাহলে সমস্যাগুলিকে সেকেণ্ডে বিন্দু লাগাতে পারবে।