16.12.2025
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
“মিষ্টি বাচ্চারা -
তোমাদেরকে (এই ঈশ্বরীয়) পাঠ পড়তেও হবে এবং পড়াতেও হবে, এক্ষেত্রে আশীর্বাদ করার
ব্যাপার নেই, তোমরা সবাইকে বলো যে বাবাকে স্মরণ করলেই সকল দুঃখ ঘুঁচে যাবে”
প্রশ্নঃ -
মানুষ কোন্
কোন্ বিষয়ে দুশ্চিন্তা করে? বাচ্চারা তোমাদের কোনো দুশ্চিন্তা নেই - কেন?
উত্তরঃ
আজকাল মানুষের
দুশ্চিন্তার শেষ নেই - সন্তানের শরীর খারাপ হলেও দুশ্চিন্তা, সন্তানের মৃত্যু হলেও
দুশ্চিন্তা, কারোর যদি সন্তান না হয়, তাহলেও দুশ্চিন্তা, কেউ হয়তো অনেক সবজি মজুত
করে রেখেছে, তাই পুলিশ কিংবা আয়কর বিভাগের কেউ এলেও দুশ্চিন্তা হয়… এই দুনিয়াটাই
ডার্টি (নোংরা) দুনিয়া, কেবল দুঃখ দেয়। বাচ্চারা, তোমাদের কোনো দুশ্চিন্তা হয় না।
কারণ তোমরা এখন সদ্গুরু বাবাকে পেয়েছো। বলা হয় - যিনি সদ্গুরু, যিনি নাথ, তিনিই
দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দেন। তোমরা এখন এমন দুনিয়ায় যাচ্ছো, যেখানে কোনো দুশ্চিন্তা
থাকে না।
গীতঃ-
তুমিই প্রেমের
সিন্ধু…
ওম্ শান্তি ।
মিষ্টি মিষ্টি
বাচ্চারা গান শুনলো। গানের অর্থও বুঝেছে, আমাদেরকেও মাস্টার প্রেমের সাগর হতে হবে।
আত্মারা সবাই ভাই ভাই। তাই বাবা তোমাদেরকে অর্থাৎ সব ভাইদেরকে বলছেন - আমি যেমন
প্রেমের সাগর, সেইরকম তোমাদেরকেও অতি প্রেমপূর্ণ আচরণ করতে হবে। দেবতাদের মধ্যে
অনেক ভালোবাসা থাকে, তাই মানুষ ওদেরকে কতো ভালোবাসে, ভোগ নিবেদন করে। তোমাদেরকে এখন
পবিত্র হতে হবে। মোটেই বড় ব্যাপার নয়। এই দুনিয়াটা একেবারে পতিত হয়ে গেছে। প্রত্যেক
বিষয়েই দুশ্চিন্তা করে। দুঃখের পর দুঃখ পেতেই থাকে। এটাকেই দুঃখধাম বলা হয়। পুলিশ
কিংবা আয়কর বিভাগের কেউ এলে মানুষের এতো হয়রানি হয় যে বলে বোঝানো যাবে না। কেউ হয়তো
অনেক সবজি মজুত করে রেখেছে। পুলিশ আসলে তার মুখ ফ্যাকাশে হয়ে যায়। এই দুনিয়া কতোই
না ডার্টি। এটাই নরক। মানুষ স্বর্গকে স্মরণও করে। নরকের পরে স্বর্গ এবং স্বর্গের পরে
নরক - এইভাবে চক্র ঘুরতেই থাকে। বাচ্চারা জানে যে এখন বাবা স্বর্গবাসী বানাতে
এসেছেন। তিনি আমাদের নরকবাসী থেকে স্বর্গবাসী বানাচ্ছেন। ওখানে কোনো বিকার থাকে না,
কারণ রাবণই থাকে না। ওটাই হলো সম্পূর্ণ নির্বিকারী শিবালয়। আর এটা হলো পতিতালয়। একটু
অপেক্ষা করো, সকলেই বুঝতে পারবে যে এই দুনিয়ায় সুখ আছে নাকি দুঃখ আছে। একটু
ভূমিকম্প হলেই মানুষের কি অবস্থা হয়। সত্যযুগে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ থাকে না। এখানে
অনেক রকমের দুশ্চিন্তা - সন্তানের শরীর খারাপ হলেও দুশ্চিন্তা, সন্তানের মৃত্যু
হলেও দুশ্চিন্তা। দুশ্চিন্তার আর শেষ নেই। কথিত আছে - যিনি সদগুরু, যিনি নাথ, তিনিই
দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দেন…। সকলের নাথ তো একজনই। তোমরা এখন শিববাবার সম্মুখে বসে
আছো। এই ব্রহ্মাবাবা তো গুরু নন। ইনি ভাগ্যবান রথ। বাবা এই ভাগীরথের দ্বারা
তোমাদেরকে পড়ান। তিনিই জ্ঞানের সাগর। তোমরাও সমস্ত জ্ঞান পেয়েছো। এমন কোনো দেবতা
নেই যার কথা তোমরা জানো না। তোমাদের কাছে এখন সত্য এবং মিথ্যাকে চিনতে পারার জ্ঞান
আছে। কিন্তু দুনিয়ার কেউই এগুলো জানে না। এক সময়ে সত্যভূমি ছিল, এখন মিথ্যাভূমি হয়ে
গেছে। কেউই জানে না যে কে কবে সত্যভূমি স্থাপন করেছিল। এটাই অজ্ঞান অন্ধকারের রাত্রি।
বাবা এসে জ্যোতি প্রদান করেন। গায়ন আছে - তোমার গতি-মতি তুমিই জানো। কেবল তিনিই
সর্বোচ্চ, বাকি সকলেই তাঁর রচনা। তিনি রচয়িতা, অসীম জগতের পিতা। এরা সীমিত জগতের
পিতা, দুই কিংবা চারজন সন্তান রচনা করে। সন্তান না হলেও দুশ্চিন্তা হয়। ওখানে এইরকম
কোনো ব্যাপার থাকে না। তোমরা সেখানে ‛আয়ুষ্মান ভব, ধনবান ভব…’ রূপে থাকো। তোমরা
কাউকে আশীর্বাদ করছ না। এটা তো পড়াশুনা, তোমরা টিচার। তোমরা বলছ যে কেবল শিববাবাকে
স্মরণ করলেই বিকর্ম বিনষ্ট হবে। এটাও তো শিক্ষাদান, তাই না ? এটাকেই সহজ যোগ বা সহজ
স্মরণ বলা হয়। আত্মা অবিনাশী, কেবল শরীরটার বিনাশ হয়। বাবা বলছেন, আমিও অবিনাশী।
তোমরা আমাকে ডাকো যে তুমি এসে আমাদের পবিত্র করে দাও। আত্মাই এইরকম বলে। পতিত আত্মা,
মহান আত্মা ইত্যাদি বলা হয়। পবিত্রতা থাকলে সুখ শান্তিও থাকবে। এটা পবিত্র চার্চের
থেকেও পবিত্রতম। খ্রীস্টানদের চার্চ পবিত্র হয় না, ওখানে তো বিকারী মানুষরাই যায়।
এখানে বিকারগ্রস্ত কাউকে আসার অনুমতি দেওয়া হয় না। একটা গল্প আছে - ইন্দ্রের সভায়
একবার এক পরী কাউকে লুকিয়ে নিয়ে গেছিল। ইন্দ্র জানতে পেরে তাকে পাথরে পরিণত হওয়ার
অভিশাপ দিয়েছিল। এখানে কোনো অভিশাপ দেওয়ার ব্যাপার নেই। এখানে কেবল জ্ঞানের বর্ষণ
হয়। কোনো পতিত এই পবিত্র প্রাসাদে আসতে পারে না। একদিন অনেক বড় হলঘর তৈরি হবে। এটা
সকল পবিত্র প্রাসাদের থেকেও পবিত্রতম। তোমরাও এখন পবিত্র হচ্ছ। মানুষ মনে করে,
বিকার না থাকলে দুনিয়া কিভাবে চলবে? এটা কিভাবে সম্ভব? তাদের নিজস্ব মতামত থাকে।
দেবতাদের সামনে গিয়ে বলে - তুমি সর্বগুণ সম্পন্ন, আর আমরা পাপী। অতএব, স্বর্গ হলো
পবিত্রের থেকেও পবিত্রতম। ওরাই ৮৪ জন্ম নেওয়ার পর পুনরায় হোলিয়েস্ট অফ হোলি হয়। ওটা
পবিত্র দুনিয়া, এটা পতিত দুনিয়া। সন্তানের জন্ম হলে খুশি হয়, তারপর অসুস্থ হয়ে গেলে
মুখ একেবারে ফ্যাকাসে হয়ে যায়। মারা গেলে তো পুরো পাগল হয়ে যায়। কেউ কেউ এরকমও হয়ে
যায়। এইরকম মানুষকেও নিয়ে আসে। বাবা, এনার বাচ্চা মারা গেছে, তাই মাথা খারাপ হয়ে
গেছে। এই দুনিয়াটাই তো দুঃখের। বাবা এখন সুখের দুনিয়াতে নিয়ে যাচ্ছেন। তাই শ্রীমৎ
অনুসারে অবশ্যই চলতে হবে। ভালো গুণও থাকতে হবে। যে ধারণ করবে, সে-ই পাবে। চরিত্রও
দেবতুল্য হতে হবে। স্কুলের রেজিস্টারে চরিত্রের কথাও উল্লেখ থাকে। কোনো কোনো
বাচ্চার বারবার পদস্খলন হয়ে যায়। মা-বাবা একদম নাজেহাল হয়ে যায়। বাবা এখন শান্তিধাম,
সুখধামে নিয়ে যাচ্ছেন। এটাকে টাওয়ার অফ সাইলেন্স বলা হয়। যেখানে আত্মারা থাকে, তাকে
টাওয়ার অফ সাইলেন্স বলা হয়। সূক্ষ্মবতনে কেবল মুভি আছে, যেটা তোমরা দিব্য দৃষ্টির
দ্বারা দেখতে পাও। এছাড়া ওখানে আর কিছুই নেই। দিব্য দৃষ্টির মাধ্যমে বাচ্চারা এটাও
দেখেছে যে সত্যযুগে যখন বয়স হয়ে যায়, তখন আনন্দ সহকারে পুরাতন শরীর ত্যাগ করে। এটা
তো ৮৪ জন্মের পুরাতন শরীর। বাবা বলছেন - তোমরা পবিত্র ছিলে, এখন পতিত হয়ে গেছ। এখন
বাবা তোমাদেরকে পবিত্র করতে এসেছেন। তোমরাই তো আমাকে ডেকেছো, তাই না? জীবাত্মাই
পতিত হয়ে গেছে এবং সেই জীবাত্মাই পুনরায় পবিত্র হয়ে যাবে। তোমরাই তো এই দেবী-দেবতা
ঘরানার ছিলে। এখন আসুরিক ঘরানার হয়ে গেছ। আসুরিক এবং ঈশ্বরীয় ঘরানার মধ্যে অনেক
পার্থক্য। এটা তোমাদের ব্রাহ্মণ বংশ। ডিনাইস্টিকে ঘরানা বলা হয়, যেখানে রাজত্ব থাকে।
এখানে কোনো রাজত্ব নেই। গীতাতে যদিও পাণ্ডব এবং কৌরবদের রাজ্য বলা আছে, কিন্তু আসলে
ওইরকম নয়। তোমরা তো আত্মিক সন্তান। বাবা বলছেন - মিষ্টি বাচ্চারা, খুব মিষ্টি
স্বভাবের হয়ে যাও। প্রেমের সাগর হয়ে যাও। দেহের অভিমান থাকার জন্যই প্রেমের সাগর হতে
পারো না, এবং তার জন্য পরে অনেক শাস্তি পেতে হয়। শাস্তি পাওয়ার পরে সম্পত্তি পাবে।
স্বর্গে তো যাবে, কিন্তু অনেক শাস্তি ভোগ করার পরে। কিভাবে শাস্তি পায়, সেটাও তোমরা
বাচ্চারা দিব্য দৃষ্টির মাধ্যমে দেখেছ। বাবা বুঝিয়েছেন, খুব প্রেমপূর্ণ আচরণ করো।
নয়তো কখনো কখনো ক্রোধের অংশ চলে আসে। ধন্যবাদ জানাও যে আমরা বাবাকে পেয়েছি যিনি
আমাদেরকে নরক থেকে মুক্ত করে স্বর্গে নিয়ে যান। শাস্তি পাওয়া খুব খারাপ ব্যাপার।
তোমরা জানো যে সত্যযুগে হলো প্রেমের রাজধানী। প্রেম ছাড়া সেখানে কিছুই নেই। এখানে
তো সামান্য ব্যাপারেই চেহারা পাল্টে যায়। বাবা বলছেন, আমি পতিত দুনিয়ায় এসেছি। আমাকে
পতিত দুনিয়াতেই নিমন্ত্রণ জানাও। তারপর বাবা সবাইকে অমৃত পান করার নিমন্ত্রণ জানান।
বিষ এবং অমৃতের ওপরে একটা বই বেরিয়েছে। যিনি বইটা লিখেছেন, তিনি পুরস্কার পেয়েছেন।
খুব বিখ্যাত। দেখতে হবে যে কি লিখেছে। বাবা বলছেন, তোমাদেরকে জ্ঞানামৃত পান করাচ্ছি,
কিন্তু তোমরা আবার কেন বিষ পান করছ? রাখিবন্ধন তো এই সময়ের স্মরণেই পালিত হয়। বাবা
সবাইকে বলছেন, এটাই অন্তিম জন্ম, পবিত্র হওয়ার প্রতিজ্ঞা করো। পবিত্র হলে এবং
যোগযুক্ত থাকলে পাপ কেটে যাবে। নিজের অন্তরকেই জিজ্ঞাসা করতে হবে যে আমি যোগযুক্ত
থাকি কিনা। সন্তানের কথা মনে পড়লে কতো আনন্দ হয়, স্বামীর কথা মনে করেও স্ত্রী কতো
খুশি হয়। ইনি কে? ভগবানুবাচ, নিরাকার। বাবা বলেন, আমি এনার ৮৪তম জন্মের পরে পুনরায়
এনাকে স্বর্গের মালিক বানাই। এখন বৃক্ষ ছোট আছে। অনেক মায়াবী তুফান আসে। এগুলো খুব
গুপ্ত ব্যাপার। বাবা বলেন - বাচ্চারা, স্মরণের যাত্রা করতে থাকো আর পবিত্র থাকো।
এখানেই পুরো রাজধানী স্থাপন হবে। গীতাতে যুদ্ধের কথা লেখা আছে। পাণ্ডবরা নাকি পাহাড়ে
গিয়ে গলে গেছিল। কোনো পরিণাম দেখানো হয়নি। তোমরা বাচ্চারা এখন সৃষ্টির আদি, মধ্য,
অন্তিমকে জেনেছো। বাবা তো জ্ঞানের সাগর, তাই না? তিনি সুপ্রীম সোল। আত্মার রূপ কেমন
তা কেউই জানে না। তোমাদের বুদ্ধিতে আছে যে তিনি বিন্দু। তোমাদের মধ্যেও কেউ কেউ
সঠিক ভাবে বোঝে না। তারপর বলে যে বিন্দুকে স্মরণ করব কিভাবে। কিছুই বোঝে না। তবুও
বাবা বলেন, সামান্য কিছু শুনলেও সেই জ্ঞানের বিনাশ হয় না। হয়তো জ্ঞানমার্গে আসার
পরেও চলে যায়, কিন্তু সামান্য কিছু শুনলেও স্বর্গে অবশ্যই আসবে। যে অনেক জ্ঞান শুনবে
এবং সেগুলো ধারণ করবে, সে রাজ পরিবারে আসবে। যারা কম শুনবে তারা প্রজা হবে।
রাজধানীতে তো রাজা-রানী সকলেই থাকে। ওখানে কোনো মন্ত্রী থাকে না। এখানে বিকারগ্রস্থ
রাজাদেরকে মন্ত্রী রাখতে হয়। বাবা তোমাদের বুদ্ধিকে এতো বিশাল বানিয়ে দিচ্ছেন যে
ওখানে কোনো মন্ত্রীর দরকার হয় না। বাঘে গরুতে এক ঘাটে জল খায়। তাই বাবা বোঝাচ্ছেন,
তোমরাও নুনজলের মতো না থেকে ক্ষীরখণ্ড হয়ে থাকো। ক্ষীর (দুধ) এবং খন্ড (চিনি) খুবই
ভালো জিনিস। কোনো মতভেদ রেখো না। এখানে মানুষ কতো লড়াই ঝগড়া করে। এই দুনিয়াটা নরকের
চরম সীমায় পৌঁছেছে। মানুষ এই নরকে কেবল ধাক্কা খাচ্ছে। বাবা এসে মুক্ত করছেন। কিন্তু
বার করে আনার পরেও পুনরায় ফেঁসে যাচ্ছে। কেউ কেউ অন্যকে বার করতে গিয়ে নিজেই আটকে
যাচ্ছে। শুরুর দিকে অনেকজনকে মায়া রূপী কুমির ধরে নিয়েছে। পুরোটাই গিলে নিয়েছে। একটু
চিহ্নও অবশিষ্ট নেই। কারোর হয়তো একটু চিহ্ন থাকে যারা পরে ফিরে আসে। কেউ কেউ একেবারে
শেষ হয়ে যায়। এখন বাস্তবে এইসব হচ্ছে। হিস্ট্রি শুনলে তোমরা অবাক হয়ে যাবে। একটা
গান আছে - তুমি ভালোবাসো কিংবা আঘাত করো, আমি তোমার দ্বার থেকে বাইরে যাব না। বাবা
তো কখনো কাউকে তেমন কিছুই বলেন না। কত প্রেমের সঙ্গে শিক্ষা দেন। এম অবজেক্ট সামনেই
আছে। সর্বোচ্চ পিতা এইরকম (বিষ্ণু) বানাচ্ছেন। বিষ্ণুই পরে ব্রহ্মা হয়। এক সেকেন্ডে
মুক্ত জীবন পেয়ে যান, তারপর ৮৪ বার জন্ম নেওয়ার পরে এইরকম হয়েছেন। তোমরাও তাই।
তোমাদেরও তো ফটো তোলা হতো, তাই না? তোমরা হলে ব্রহ্মার সন্তান, ব্রাহ্মণ। এখন
তোমাদের মুকুট নেই, ভবিষ্যতে পাবে। তাই তোমাদের সেই ফটোগুলো রাখা হয়েছে। বাবা এসে
বাচ্চাদেরকে দ্বি-মুকুটধারী বানিয়ে দেন। তোমরাও অনুভব করো যে সত্যিই আগে আমাদের
মধ্যে পাঁচ বিকার ছিল। (নারদের উদাহরণ) তোমরাই সবার আগে ভক্ত হয়েছিলে। এখন বাবা কতো
শ্রেষ্ঠ বানিয়ে দেন। একদম পতিত থেকে পবিত্র করে দেন। বিনিময়ে বাবা কিছুই নেন না।
শিববাবা আর কি নেবেন ! তোমরা যা দাও, শিববাবার ভান্ডারীতেই দাও। আমি তো ট্রাস্টি।
যা কিছু দেওয়া নেওয়ার হিসাব, সব শিববাবার সঙ্গে। আমি নিজে পড়ছি, এবং পড়াচ্ছি। যে
তার নিজের সবকিছুই দিয়ে দিয়েছে, সে আবার কেন নিতে যাবে? কোনো কিছুতেই মোহ থাকে না।
মানুষ গেয়ে থাকে - অমুক মানুষ স্বর্গগত হয়েছে। তাহলে তারপরেও তাকে কেন স্বর্গের
খাবার খাওয়াও? এগুলো তো অজ্ঞানতা। যেহেতু নরকে আছে, সুতরাং পুনর্জন্ম তো নরকেই হবে।
এখন তোমরা অমরপুরীতে যাচ্ছ। এটা অনেকটা ডিগবাজি খেলা। তোমরা ব্রাহ্মণরা হলে
সর্বোচ্চ (টিকি)। এরপর দেবতা এবং ক্ষত্রিয় হবে। তাই বাবা বোঝাচ্ছেন, খুব মিষ্টি
স্বভাবের হও। এরপরেও যদি না শোধরায়, তাহলে তার ভাগ্য। নিজেরই ক্ষতি করে। নিজে না
শোধরালে ঈশ্বরের প্রচেষ্টাও কিছু করতে পারে না। বাবা বলছেন, আমি আত্মাদের সঙ্গে কথা
বলছি। অবিনাশী আত্মাদেরকে অবিনাশী পরমাত্মা পিতা জ্ঞান দিচ্ছেন। আত্মা কান দিয়ে
শুনছে। অসীম জগতের পিতা তোমাদেরকে এই জ্ঞান শুনিয়ে মানুষ থেকে দেবতা বানান। রাস্তা
দেখানোর জন্য স্বয়ং সুপ্রীম পান্ডা এখানে বসে আছেন। শ্রীমৎ বলে - পবিত্র হও এবং
আমাকে স্মরণ করলে তোমাদের পাপ নাশ হয়ে যাবে। তোমরাই সতোপ্রধান ছিলে। তোমরাই ৮৪ জন্ম
নিয়েছ। বাবা এনাদেরকেই বোঝাচ্ছেন যে তোমরা এখন সতোপ্রধান থেকে তমোপ্রধান হয়ে গেছ।
তাই এখন আমাকে স্মরণ করো। একেই যোগ অগ্নি বলা হয়। তোমাদের এখন এই জ্ঞান আছে।
সত্যযুগে কেউ আমাকে স্মরণ করে না। এই সময়েই আমি বলি - আমাকে স্মরণ করলে তোমাদের পাপ
নাশ হবে, এছাড়া কোনো রাস্তা নেই। এটা তো স্কুল। একে বিশ্ব বিদ্যালয় কিংবা ওয়ার্ল্ড
ইউনিভার্সিটিও বলা হয়। রচয়িতা এবং রচনার আদি, মধ্য, অন্তিমের জ্ঞান অন্য কেউ জানে
না। শিববাবা বলছেন, এই লক্ষ্মী-নারায়ণের মধ্যেও এই জ্ঞান নেই। এটা তো ভবিষ্যতের
প্রাপ্তি। আচ্ছা !
মিষ্টি-মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্নেহ-সুমন স্মরণ-ভালবাসা আর সুপ্রভাত।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
প্রেমের রাজধানীতে যেতে হবে, তাই নিজেদের মধ্যে ক্ষীরখণ্ড হয়ে থাকতে হবে। কখনো
নুনজলের মতো মতপার্থক্য ঘটানো উচিত নয়। নিজেকেই নিজে শুধরে নিতে হবে।
২ ) দেহের অভিমান
ত্যাগ করে মাস্টার প্রেমের সাগর হতে হবে। নিজের চরিত্রকে দেবতুল্য করতে হবে। আচরণ
অতিশয় মিষ্টি হতে হবে।
বরদান:-
মনের
স্বাধীনতার দ্বারা সকল আত্মাকে শান্তি প্রদানকারী মন্সা মহাদানী ভব
বন্ধনে থাকা আত্মারা
শরীর থেকে যদিও পরতন্ত্র থাকে কিন্তু মন থেকে যদি স্বতন্ত্র হয় তাহলে নিজের বৃত্তি
দ্বারা, শুদ্ধ সংকল্প দ্বারা বিশ্বের বায়ুমন্ডলকে পরিবর্তন করার সেবা করতে পারে।
আজকাল বিশ্বে সবথেকে বেশী প্রয়োজন হল মনের শান্তি। তো মনের দ্বারা স্বতন্ত্র আত্মা
মন্সা দ্বারা শান্তির ভাইব্রেশন ছড়িয়ে দিতে পারে। শান্তির সাগর বাবার স্মরণে থাকলে
অটোমেটিক শান্তির কিরণ ছড়িয়ে পড়ে। এইরকম শান্তি প্রদানকারী মন্সা মহাদানী হও।
স্লোগান:-
পুরুষার্থ এমন করো, যাকে দেখে অন্য আত্মারাও ফলো করে।
অব্যক্ত ঈশারা :- এখন
সম্পন্ন বা কর্মাতীত হওয়ার ধুন লাগাও
প্রত্যেক ব্রাহ্মণ,
বাবার সমান চৈতন্য চিত্র হও, লাইট আর মাইট হাউসের ঝাঁকি হও। সংকল্প শক্তিতে
সাইলেন্সে থাকার ভাষণ তৈরী করো আর কর্মাতীত স্টেজের উপর বরদানী মূর্তির পার্ট অভিনয়
করো, তবে সম্পূর্ণতা নিকটে আসবে। তখন সেকেন্ডের থেকেও কম সময়ে যেখানে কাজ করানোর
দরকার হবে, সেখানে অয়্যারলেস দ্বারা ডায়রেক্শন দিতে পারবে। সেকেন্ডে কর্মাতীত
স্টেজের আধার দ্বারা সংকল্প করবে আর যেখানে চাইবে সেখানে সংকল্প পৌঁছে যাবে।