17.01.2025
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
তোমরা হলে ভারতের মোস্ট ভ্যালুয়েবল সার্ডেন্ট, তোমাদেরকে নিজের তন-মন-ধন দিয়ে
শ্রীমৎ অনুসারে একে রামরাজ্য বানাতে হবে"
প্রশ্নঃ -
সত্যিকারের
অলৌকিক সেবা কোনটি, যেটা বাচ্চারা এখন তোমরা করছো?
উত্তরঃ
বাচ্চারা,
তোমরা এখন গুপ্তভাবে শ্রীমৎ অনুসারে পবিত্র ভূমি সুখধামের স্থাপনা করছো - এটাই হলো
ভারতের সত্যিকারের অলৌকিক সেবা। তোমরা অসীম জগতের বাবার শ্রীমৎ অনুসারে সবাইকে
রাবণের জেল থেকে মুক্ত করছো। এর জন্য তোমরা নিজেরা পবিত্র থেকে, অপরকেও পবিত্র
বানাচ্ছো।
গীতঃ-
নয়নহীনকে পথ
দেখাও প্রভু....
ওম্ শান্তি ।
হে প্রভু, হে
ঈশ্বর, হে পরমাত্মা বলা আর 'বাবা'- এই শব্দটি বলে ডাকার মধ্যে কতো পার্থক্য। হে
ঈশ্বর, হে প্রভু - বললে কতো সম্মান দেওয়া হয় আর 'বাবা' শব্দটি কতো সাধারণ। 'বাবা'-
তো অনেক অনেক আছে। প্রার্থনাতেও বলা হয় যে, হে প্রভু, হে ঈশ্বর। 'বাবা'- কেন বলা
হয় না ? তিনি তো হলেন পরমপিতা, তাই না। কিন্তু বাবা শব্দের পরিবর্তে পরমাত্মা এই
শব্দটি বিশেষ ভাবে শোনা যায়। প্রার্থনা করে যে - হে প্রভু, নয়নহীনদের রাস্তা বলে
দাও.....। আত্মারা বলে - বাবা, আমাকে মুক্তি-জীবনমুক্তির রাস্তা বলে দাও। 'প্রভু'-
এই শব্দটি অনেক বড়, কিন্তু 'বাবা'- এই শব্দটি খুব হালকা। এখানে এসে তোমরা জেনেছো
যে, বাবা এসে আমাদেরকে বোঝাচ্ছেন। লৌকিক রীতিতে তো 'বাবা' অনেক হয়, বলেও যে - তুমি
মাতা-পিতা..... এই শব্দটি হলো খুব সাধারণ। ঈশ্বর বা প্রভু বলে ডাকলে সবাই মনে করে
যে, তিনি সবকিছু করতে পারেন। এখন বাচ্চারা, তোমরা জেনেছো যে, বাবা এসে গেছেন। বাবা
তো অনেক উঁচু রাস্তাকে সহজেই বলে দেন। বাবা বলেন যে - আমার বাচ্চারা, তোমরা মায়ার
মতে চলে কাম চিতায় বসে পুড়ে ছাই হয়ে গেছো। এখন আমি তোমাদেরকে পবিত্র বানিয়ে ঘরে
নিয়ে যেতে এসেছি। বাবাকে আহ্বান করো এই কারণে যে, এসে আমাদেরকে পতিত থেকে পবিত্র
বানাও। বাবা বলছেন যে - আমি এসেছি তোমাদের সেবা করতে। বাচ্চারা, তোমরাও ভারতের
অলৌকিক সেবা করো। যে সেবা তোমাদের ছাড়া আর কেউ করতে পারে না। তোমরা ভারতের জন্যই
করো। শ্রীমতে চলে পবিত্র হও আর ভারতকেও পবিত্র বানাও। গান্ধীজীর আশা ছিল যে, এই
ভারতে রামরাজ্য স্থাপন হোক। এখন, কোনো মানুষ রামরাজ্য বানাতে পারে না। যদি তাই
সম্ভব হতো, তাহলে প্রভুকে পতিত-পাবন বলে কেন ডাকতো? এখন বাচ্চারা, তোমাদের ভারতের
প্রতি কতো লভ রয়েছে । সত্যিকারের সেবা তো তোমরাই করো, মুখ্যতঃ এবং ভারতের তথা
সমগ্র জগতের।
তোমরা জানো যে, ভারতকে
রামরাজ্য বানাতে হবে, যা বাপুজী চাইতেন। তিনি ছিলেন লৌকিক জগতের বাপুজী আর ইনি হলেন
অসীম জগতের বাপুজী। তিনি অসীম জগতের সেবা করেন। এটা তোমরা বাচ্চারাই জানাে। তোমাদের
মধ্যেও নম্বরের ক্রমানুসারে এই নেশা থাকে যে, আমরা রামরাজ্য বানাবো। গভর্নমেন্টের
তোমরা হলে সার্ভেন্ট। তোমরা দৈবী গভর্নমেন্টে বানিয়ে থাকো । ভারতের জন্য তোমাদের
গর্ব রয়েছে । তোমরা জেনেছো যে সত্যযুগে ভারত পবিত্র ভূমি ছিল, এখন তো পতিত হয়ে
গেছে। তোমরা জেনে গেছো যে এখন আমরা বাবার দ্বারা পুনরায় পবিত্র ভূমি বা সুখধাম
রচনা করছি, সেটাও আবার গুপ্ত রীতিতে। তোমরা শ্রীমৎও গুপ্তভাবে প্রাপ্ত করো। ভারত
সরকারের জন্যই তোমরা এই কাজ করো। শ্রীমৎ অনুসারে তোমরা তন-মন-ধন দিয়ে ভারতের জন্য
সর্বশ্রেষ্ঠ সেবা করছো। কংগ্রেসীদের তো অনেকবার হাজতবাস করতে হয়েছে। তোমাদেরকে তো
হাজতবাস করার দরকার নেই। তোমাদের বিষয়টা হলো আত্মিক। তোমাদের লড়াইও হচ্ছে ৫ বিকার
রাবণের সাথে, যে রাবণ সমগ্র পৃথিবীর উপর রাজত্ব করছে। এই হলো তোমাদের সেনা। লঙ্কা
তো ছিল একটি ছোট দ্বীপ। এই সৃষ্টি হল অসীম জগতের দ্বীপ। তোমরা অসীম জগতের বাবার
শ্রীমত অনুসারে সবাইকে রাবণের জেল থেকে মুক্ত করছো। এটাও তো তোমরা জেনে গেছো যে এই
পতিত দুনিয়ার বিনাশ অবশ্যই হবে। তোমরা হলে শিবশক্তি। এই পাণ্ডব ভাইয়েরাও হলো
শিবশক্তি। তোমরা গুপ্তভাবে ভারতের জন্য অনেক বড় সেবা করে চলেছো। ভবিষ্যতে এটা সবার
কাছে জ্ঞাত হয়ে যাবে। তোমরা শ্রীমত অনুসারে আত্মিক সেবা করছো। তোমরা এখন গুপ্ত আছো।
সরকার জানেই না যে এই বিকেরা তো ভারতকে নিজের তন-মন-ধন দিয়ে সর্বশেষ্ঠ সত্যখন্ড
বানাচ্ছে। ভারত সত্যখন্ড ছিল, এখন মিথ্যাখন্ড হয়ে গেছে। সত্য হলেন একমাত্র বাবা।
বলাও হয় যে ভগবান হলেন সত্য। তোমাদেরকে নর থেকে নারায়ণ হওয়ার জন্য সত্য শিক্ষা
প্রদান করছেন। বাবা বলেন যে কল্প পূর্বেও তোমাদেরকে নর থেকে নারায়ণ বানিয়েছিলাম।
রামায়ণে তো গল্প কথা লিখে দিয়েছে। সেখানে বলা আছে যে রাম বাঁদর সেনা নিয়েছিল।
তোমরাই প্রথমে বাঁদরের মতো ছিলে। একটা সীতার তো কথা নয়। বাবা বোঝাচ্ছেন যে, কিভাবে
আমরা রাবন রাজ্যের বিনাশ করে রাম রাজ্য স্থাপন করছি। এতে কোন পরিশ্রমের কথা নেই।
তারা তো কত খরচ আদি করে রাবণের মূর্তি তৈরি করে, সেটাকে আবার জ্বালিয়ে দেয়। কিছুই
বোঝে না। বড় বড় ব্যক্তিরা, সবাই যায় সেখানে, বিদেশীদের দেখায়, তারা কিছুই বোঝে
না। এখন বাবা বোঝাচ্ছেন যে। তোমাদের মনের মধ্যে এই উৎসাহ আছে যে, আমরা ভারতের জন্য
সত্য আত্মিক সেবা করছি। বাকি সমগ্র দুনিয়া রাবণের মতে চলছে, তোমরা হলে রামের শ্রীমৎ
অনুসারী। রাম বলো, শিব বলো- নাম তো অনেক রেখে দিয়েছে।
বাচ্চারা, তোমরা হলে
ভারতের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সেবাধারী। তোমরা শ্রীমৎ অনুসারে ভারতের সেবা করো। তারা
বলে যে - হে পতিত পাবন, এসে আমাদেরকে পবিত্র বানাও...। তোমরা জানো যে, সত্য যুগে
আমরা কত সুখ ভোগ করে থাকি, অফুরন্ত সম্পদও প্রাপ্ত হয়। সেখানে প্রত্যেকের গড়
আয়ুও অনেক বেশী হয়। তারা হলেন যোগী আর এখানে সবাই হলো ভোগী। তারা হলেন পবিত্র আর
এখানে সবাই হল পতিত। রাত দিনের মত পার্থক্য আছে। কৃষ্ণকেও যোগী বলা হয়, মহাত্মাও
বলা হয়। কিন্তু তিনি তো হলেন সত্য মহাত্মা। তাঁর মহিমা গাওয়া হয় যে - তিনি হলেন
সর্বগুণ সম্পন্ন ...। আত্মা এবং শরীর দুটোই পবিত্র হয়। সন্ন্যাসীরা তো গৃহস্থীর
কাছে বিকারের দ্বারা জন্মগ্রহণ করে, পরে সন্ন্যাসী হয়। এ সমস্ত কথা বাবা এখনই
তোমাদের বোঝাচ্ছেন। এই সময় মানুষ অধার্মিক এবং অসুখী হয়ে গেছে। সত্যযুগে তোমরা
কিরকম ছিলে ? সম্পূর্ণ রিলিজিয়াস, রাইটিয়াস ছিলে। ১০০% সলভেন্ট ছিলে। এভার হ্যাপী
ছিলে। রাত দিনের সমান পার্থক্য আছে। এটা অ্যাকুরেট তোমরাই জানো। এটা কি কারোর জানা
আছে যে ভারত স্বর্গ থেকে কিভাবে নরক হয়েছে? লক্ষ্মী-নারায়ণের পূজা করে, মন্দির তৈরি
করে, কিন্তু কিছুই বোঝে না। বাবা বোঝাচ্ছেন যে, লৌকিকে যারা ভালো ভালো পজিশনে রয়েছে,
এমনকি বিড়লাদেরকেও তোমরা বোঝাতে পারো যে, এই লক্ষী-নারায়ণ কিভাবে এই রাজসিংহাসনের
অধিকারী হয়েছেন। তাঁরা কি করেছিলেন, যার জন্য তাঁদের এত বড় বড় মন্দির তৈরি হয়।
তাদের অক্যুপেশনের বিষয়ে না জেনে তাদের পূজা করা হলো পাথর পূজা অথবা পুতুল পূজা।
অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরা এটাও জানে যে যীশু খ্রীষ্ট কোন্ সময় এসেছিল, আবারও আসবে।
তো বাচ্চারা,
তোমাদেরকে তো অনেক গুপ্ত আত্মিক নেশায় থাকতে হবে । আত্মার মধ্যে এই খুশি হওয়া চাই।
তোমরা অর্ধেক কল্প দেহ-অভিমানী হয়েছিলে। বাবা বলছেন যে - তোমরা এখন অশরীরী হও,
নিজেকে আত্মা মনে করো। আমার আত্মা বাবার থেকে শুনছে। অন্যান্য সৎসঙ্গে এমনভাবে বুঝতে
পারবেনা। এসমস্ত কথা আত্মিক বাবা, আত্মাকে বসে বোঝাচ্ছেন। আত্মাই সবকিছু শোনে, তাই
না! আত্মাই বলে যে, আমি হলাম প্রধানমন্ত্রী বা অমুক। আত্মাই এই শরীর দ্বারা বলে যে,
আমি প্রধানমন্ত্রী আছি। এখন তোমরা বলো যে আমি আত্মা পুরুষার্থ করে স্বর্গের
দেবী-দেবতা হতে চলেছি। আমি আত্মা, এটা হল আমার শরীর। দেহী-অভিমানী হতেই অনেক
পরিশ্রম করতে হয়। প্রতি ক্ষণে-ক্ষণে নিজেকে আত্মা মনে করে বাবাকে স্মরণ করতে থাকো
তো বিকর্ম বিনাশ হয়ে যাবে। তুমি হলে অত্যন্ত বাধ্য সেবাধারী। গুপ্তভাবে নিজের
কর্তব্য পালন করো। তাই এই নেশাও গুপ্ত হওয়া চাই। আমি হলাম গভর্নমেন্টের আত্মিক
সার্ভেন্ট। ভারতকে স্বর্গ বানাচ্ছি। বাপুজীও চেয়েছিলেন যে, নতুন দুনিয়াতে নতুন
ভারত হোক, নতুন দিল্লি তৈরি হোক। এখন নতুন দুনিয়া তো নেই। এই পুরানো দিল্লী
কবরস্থান হয়ে গেছে। এটাই পুনরায় পরীদের স্থান হয়ে যাবে। এখন এই দুনিয়াকে পরীদের
স্থান বলা যায় না। নতুন দুনিয়াতে পরীদের স্থান নতুন দিল্লি তোমরাই বানাচ্ছো। এটাই
হলো বোঝার বিষয়। এই কথাকে ভুলে যেওনা। ভারতকে পুনরায় সুখধাম বানানো অনেক উঁচু কাজ
আছে। ড্রামা প্ল্যান অনুসারে সৃষ্টি পুরানো হয়ে যায়, এটাই হলো দুঃখধাম। দুঃখ হর্তা,
সুখ কর্তা এক বাবাকেই বলা যায়। তোমরা জেনে গেছো যে বাবা ৫ হাজার বছর বাদে এসে দুঃখী
ভারতকে সুখী বানাচ্ছেন। সুখও দিচ্ছেন, শান্তিও দিচ্ছেন। মানুষ বলে যে, মনের শান্তি
কিভাবে পাওয়া যাবে? এখন শান্তি তো শান্তিধাম সুইট হোমেই হয়ে থাকে। তাকেই বলা যায়
শান্তিধাম। যেখানে কোন শব্দ থাকে না, কোনো চিন্তা থাকে না। সূর্য চাঁদ আদিও থাকেনা।
এখন বাচ্চারা তোমরাই এই সমস্ত জ্ঞান প্রাপ্ত করছো। বাবাও এসে তোমাদের বাধ্য সেবাধারী
হয়েছেন, তাই না! কিন্তু বাবাকে তো অনেকেই এখনো জানেনা। সবাইকেই মহাত্মা বলে দেয়।
এখন, মহান আত্মা তো স্বর্গ ছাড়া আর কোথাও হতে পারে না। সেখানে আত্মারা অনেক পবিত্র
হয়। পবিত্র ছিল তো প্রস্পারিটিও ছিল। এখন পিউরিটি নেই তো কিছুই নেই। পিউরিটিরই হলো
মান । দেবতারা পবিত্র হয়, তাই সবাই তাঁদের কাছে মাথা নত করে। পবিত্রকে পাবন আর
অপবিত্রকে পতিত বলা হয়। ইনি হলেন সমগ্র বিশ্বের অসীম জগতের বাপুজি। এরকম তো
মেয়রকেও বলা হয় সিটি ফাদার। সেখানে কি আর এসব কথা থাকবে। সেখানে তো শৃঙ্খলায়িত
ভাবেই রাজ্য পরিচালিত হবে। আহ্বান করে যে - হে পতিত-পাবন এসো। এখন বাবা বলছেন যে -
পবিত্র হও। তো সবাই বলে এটা কিভাবে সম্ভব? তাহলে বাচ্চা কি করে জন্ম নেবে? সৃষ্টি
কিভাবে বৃদ্ধি পাবে? তাদের এটা জানা নেই যে লক্ষী-নারায়ণ সম্পূর্ণ নির্বিকারী
ছিলেন। বাচ্চারা তোমাদেরকে অনেক অপজিশন সহ্য করতে হয়।
কল্প পূর্বের ড্রামাতে
যা কিছু হয়েছিল, তারই এখন রিপিট হচ্ছে। এরকম নয় যে, সব কিছু ড্রামা বলে পুরুষার্থ
করা বন্ধ করে দিওনা। এটা ভেবো না যে, ড্রামাতে থাকলে ঠিকই পাবো। স্কুলে এরকম ভেবে
বসে থাকলে কি সে পাশ করতে পারবে? প্রতিটি জিনিসকে প্রাপ্ত করার জন্যই তো মানুষ
পুরুষার্থ করে থাকে। পুরুষার্থ (পরিশ্রম) ছাড়া এক গ্লাস জলও পাওয়া যায় না। প্রতি
মুহূর্তে যে পুরুষার্থ চলে তা কিছু না কিছু প্রালব্ধের জন্যই। এই অসীম জগতের
পুরুষার্থ করতে হয় অসীম জগতেরসুখ পাওয়ার জন্যই । এখন হলো ব্রহ্মার রাত তথা
ব্রাহ্মণদের রাত, পুনরায় ব্রাহ্মণদের দিন হবে। শাস্ত্রতো অনেক পড়ে, কিন্তু অর্থ
কিছুই বোঝেনা। এই বাবাও নিজে বসে রামায়ণ ভাগবৎ আদি শোনাতেন, পন্ডিতের মতো বসতেন।
এখন বুঝেছেন যে, সেসব ছিলো ভক্তি মার্গ। ভক্তি আলাদা,জ্ঞান আলাদা।বাবা বলেন যে তোমরা
কাম চিতায় বসে কালো হয়ে গেছো। কৃষ্ণকেও শ্যাম-সুন্দর বলে তাই না। পূজারীরা
অন্ধশ্রদ্ধা ভক্তি করে। কতইনা ভূত পূজা করে। শরীরের পূজা অর্থাৎ পাঁচতত্বের পূজা করে।
এগুলিকেই বলা হয় ব্যাভিচারী পূজা। প্রথম দিকে অব্যাভিচারী ভক্তি ছিলো, এক শিবেরই
পূজা হত। এখন তো দেখো কী কী পূজা হচ্ছে। বাবা আশ্চর্যজনক কিছু করে দেখাচ্ছেন,
জ্ঞানও বোঝাচ্ছেন। কাঁটা থেকে ফুল বানাচ্ছেন। এটা তো হলোই ফুলের বাগান। করাচীতে এক
পাঠান রক্ষী ছিল, সেও ট্রান্সে চলে যেত। সে বলতো যে, সে বেহেস্তে (স্বর্গে) গিয়েছিল,
সেখানে দেবতারা তাকে ফুল দিয়েছেন। সে খুব মজা পেত। আশ্চর্যের বিষয়, তাইনা। মানুষ তো
পৃথিবীতে সেভেন ওয়ান্ডার্স এর কথা বলে। বাস্তবে ওয়ার্ডের অফ দ্য ওয়ার্ল্ড তো হলো
স্বর্গ - এটা কারোরই জানা নেই ।
তোমরা কত ফার্স্ট
ক্লাস জ্ঞান প্রাপ্ত করেছো। তাই তোমাদের অনেক খুশিতে থাকা দরকার। সর্বশ্রেষ্ঠ
বাপ-দাদা, কিন্তু থাকেন কত সাধারণভাবে । বাবারই মহিমা গাওয়া হয়ে থাকে, তিনি হলেন
নিরাকার, নিরহংকারী। বাবাকে তো এখানে এসে সেবা করতেই হয়, তাই না। বাবা সর্বদা
বাচ্চাদের সেবা করে, তাদেরকে ধন-সম্পত্তি প্রদান করে নিজে বাণপ্রস্থ অবস্থায় চলে
যান। বাচ্চাদেরকে মাথার উপর রাখেন। বাচ্চারা, তোমরাই বিশ্বের মালিক হও। সুইট হোমে
গিয়ে পুনরায় সুইট রাজ্যে আসবে। বাবা বলেন যে আমি তো কোনো রাজ্যভার গ্রহণ করি না।
সত্যিকারের নিষ্কাম সেবাধারী তো একমাত্র বাবা-ই । তাই বাচ্চাদেরকে অনেক খুশিতে থাকতে
হবে। কিন্তু মায়া সবকিছু ভুলিয়ে দেয়। এই বাপ-দাদাকে কখনোই ভোলা উচিৎ নয়।
ঠাকুরদাদার সম্পত্তির প্রতি সকলেরই একটা নেশা থাকে। তোমরা তাে শিব বাবাকে পেয়েছো।
তাঁর তো অসীম সম্পদ রয়েছে । বাবা বলেন, আমাকে স্মরণ করো আর দিব্য গুণ ধারণ করো।
আসুরি গুণ গুলিকে বের করে দিতে হবে। তারা বলে যে, আমার এই নির্গুণ হারে কোনো গুণ
নেই। নির্গুণ সংস্থাও আছে। এখন অর্থ তো কেউই বোঝেনা। নির্গুণ অর্থাৎ কোনো গুণ নেই।
কিন্তু তারা কিছুই বোঝে না। বাচ্চারা, তোমাদেরকে বাবা একবারই এসে বোঝান - বলো আমরা
তো ভারতের সেবায় রত আছি। যিনি সকলের বাপুজী, আমরা তার শ্রীমতে চলি। শ্রীমদ্ভগবদগীতা
গাওয়া হয়েছে, তাই না। আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
হায়েস্ট বাপদাদা যেমন সিম্পল থাকেন, সেইরকম তোমাদেরও অত্যন্ত সিম্পল, নিরাকারী এবং
নিরহংকারী হয়ে থাকতে হবে । বাবার দ্বারা যে ফার্স্ট ক্লাস জ্ঞান প্রাপ্ত হচ্ছে,
তার মনন-চিন্তন করতে হবে।
২ ) যে ড্রামা অবিকল
রিপিট হয়ে চলেছে, এই বিষয়েই অসীম জাগতিক পুরুষার্থ করে, অসীম জগতের সুখের প্রাপ্তি
করতে হবে। কখনো 'ড্রামা' বলে পুরুষার্থ করা বন্ধ ক'রো না। প্রালব্ধের জন্য
পুরুষার্থ অবশ্যই করতে হবে।
বরদান:-
অব্যক্ত স্বরূপের সাধনার দ্বারা পাওয়ারফুল বায়ুমন্ডল নির্মাণকারী অব্যক্ত ফরিস্তা
ভব
বায়ুমন্ডলকে
পাওয়ারফুল বানানোর সাধন হলো - নিজের অব্যক্ত স্বরূপের সাধনা। এর প্রতি বার বার যেন
অ্যাটেনশান থাকে কেননা যেটার সাধনা করা হয়, সেটার প্রতি মনোসংযোগ থাকে। তো অব্যক্ত
স্বরূপের সাধনা অর্থাৎ বার-বার অ্যাটেনশানের তপস্যা চাই এইজন্য অব্যক্ত ফরিস্তা ভব-র
বরদানকে স্মৃতিতে রেখে শক্তিশালী বায়ুমন্ডল বানানোর তপস্যা করো। তখন তোমাদের সামনে
যে আসবে সে ব্যক্ত আর ব্যর্থ কথাগুলি থেকে ঊর্ধ্বে চলে যাবে।
স্লোগান:-
সর্ব
শক্তিমান বাবাকে প্রত্যক্ষ করার জন্য একাগ্রতার শক্তিকে বৃদ্ধি করো।
নিজের শক্তিশালী
মন্সার দ্বারা সকাশ দেওয়ার সেবা করো -
যেরকম নিজের স্থুল
কাজের প্রোগ্রামকে দিনলিপি অনুসারে সেট করে থাকো, এইরকম নিজের মন্সা সমর্থ স্থিতির
প্রোগ্রাম সেট করো। যত যত নিজের মনকে সমর্থ সংকল্পে বিজি রাখবে ততই মন আপসেট হওয়ার
সময়ই পাবে না। মন সদা সেট অর্থাৎ একাগ্র আছে তো স্বতঃ ভালো ভাইব্রেশন ছড়িয়ে পড়বে,
সেবা হবে।