17.03.2025 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা - পড়াশোনাই হলো উপার্জন, পড়াশোনা হলো সোর্স অফ ইনকাম, এই পড়াশোনার দ্বারাই তোমাদের ২১ জন্মের জন্য সম্পদ (খাজানা) জমা করতে হবে"

প্রশ্নঃ -
যে বাচ্চাদের উপর বৃহস্পতির দশা বসে থাকবে, তাদের মধ্যে কেমন লক্ষণ দেখা যাবে?

উত্তরঃ  
তাদের সম্পূর্ণ ধ্যান শ্রীমতের উপরে থাকবে। পড়াশোনা ভালোভাবে করবে। কখনো ফেল হবে না। যারা শ্রীমৎ লঙ্ঘন করে, তারাই পড়াশোনায় ফেল হয়। তাদের উপরেই রাহুর দশা বসে যায়। বাচ্চারা, এখন তোমাদের উপরে বৃক্ষপতি বাবার দ্বারা বৃহস্পতির দশা বসেছে।

গীতঃ-
এই পাপের দুনিয়া থেকে....

ওম্ শান্তি ।
এ হলো পাপী আত্মাদের আহ্বান (ডাক) তোমাদের তো আহবান করতে হবে না। কারণ তোমরা এখন পবিত্র হচ্ছো। এই কথা হলো ধারণ করবার। এই সম্পদ (খাজানা) অত্যন্ত মূল্যবান। যেমন স্কুলের পড়াশোনাও তো সম্পদ, তাই না। পড়াশোনার মাধ্যমে শরীর নির্বাহ হয়। বাচ্চারা জানে যে, ভগবান আমাদের পড়াচ্ছেন। এ অতি উচ্চ উপার্জন কারণ এইম অবজেক্ট সম্মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে। এই সত্যিকারের সৎসঙ্গ একবারই হয়। বাকি সব হলো মিথ্যা-সঙ্গ। তোমরা জানো যে, সমগ্র কল্পে সৎসঙ্গ একবারই হয়। যখন আহ্বান করা হয় - 'পতিতপাবন এসো'। এখন তারা আহবান করতেই থাকে, আর তোমরা এখানে সম্মুখে বসে রয়েছো। বাচ্চারা, তোমরা জানো যে, আমরা নতুন দুনিয়ার জন্য পুরুষার্থ করছি। যেখানে দুঃখের নাম-নিশান থাকবে না। স্বর্গে তোমরা স্বস্তি পাও। নরকে কী স্বস্তি আছে, না নেই। এ হলো বিষয়-সাগর, কলিযুগ, তাই না ! সকলেই অত্যন্ত দুঃখী। ভ্রষ্টাচারের মাধ্যমে জন্ম হয় তাই আত্মা আহ্বান করে - বাবা আমরা অপবিত্র হয়ে গেছি। পবিত্র হওয়ার জন্য গঙ্গায় স্নান করতে যায়। আচ্ছা, স্নান করলে তো পবিত্র হয়ে যাওয়া উচিত, তাইনা। তবে পুনরায় প্রতিমুহূর্তে ধাক্কা কেন খায়? ধাক্কা খেতে-খেতে নিচে নামতে-নামতে পাপাত্মা হয়ে যায়। বাচ্চারা, তোমাদের ৮৪-র রহস্য বাবা-ই বসে বোঝান আর অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরা তো ৮৪ জন্ম নেয় না। তোমাদের কাছে এই ৮৪ জন্মের চিত্র অত্যন্ত সঠিক ভাবে বানানো রয়েছে। কল্পবৃক্ষের চিত্রও গীতায় রয়েছে, কিন্তু ভগবান কবে শুনিয়েছিলেন, এসে কি করেছিলেন এসব কিছু জানেনা। অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরা নিজের নিজের শাস্ত্রকে জানে, কিন্তু ভারতবাসীরা (নিজেদের শাস্ত্র) একেবারেই জানে না। বাবা বলেন, আমি সঙ্গমযুগেই স্বর্গের স্থাপনা করতে আসি। ড্রামা চেঞ্জ হতে পারে না। যা কিছু ড্রামায় নির্ধারিত রয়েছে, তা হুবহু হবেই। এমন নয় যে, ঘটে গিয়ে তা পুনরায় বদল হয়ে যাবে। বাচ্চারা, তোমাদের বুদ্ধিতে ড্রামার চক্র সম্পূর্ণরূপে বসে রয়েছে। এই ৮৪-র চক্র থেকে তোমরা কখনো বেরিয়ে যেতে পারো না অর্থাৎ এই দুনিয়া কখনো বিনাশপ্রাপ্ত হতে পারে না। ওয়ার্ল্ডের হিস্ট্রি-জিওগ্রাফি রিপিট হতেই থাকে। এই ৮৪-র চক্র অত্যন্ত জরুরী। ত্রিমূর্তি আর (সৃষ্টি) গোলক হলো মুখ্য চিত্র। গোলকে (ড্রামা হুইল) পরিষ্কার দেখানো হয়েছে - প্রত্যেকটি যুগ ১২৫০ বছরের। এ যেন অন্ধের সম্মুখে আয়না। ৮৪ জন্ম-পত্রিকার আয়না। বাচ্চারা, বাবা তোমাদের দশা বর্ণনা করেন। বাবা তোমাদের অসীম জগতের দশা বলে দেন। বাচ্চারা, এখন তোমাদের উপর বৃহস্পতির অবিনাশী দশা বসে রয়েছে। পুনরায় সবকিছুর আধার(ভিত) হলো পড়াশোনা। কারোর ওপর বৃহস্পতির কারোর ওপর শুক্রের কারোর ওপর রাহুর দশা বসে রয়েছে। ফেল হলে তখন রাহুর দশা বলবে। এখানেও তেমনই। শ্রীমতানুসারে না চললে রাহুর অবিনাশী দশা বসে যায়। ওটা হলো বৃহস্পতির অবিনাশী দশা, পুনরায় এ রাহুর দশা হয়ে যায়। বাচ্চাদের পড়াশোনার উপর সম্পূর্ণ ধ্যান দেওয়া উচিত, এতে টাল-বাহানা করা উচিত নয়। সেন্টার দূরে, এই (অসুবিধা) আছে......হেঁটে যদি ৬ ঘন্টাও লাগে তাও পৌঁছানো উচিত। মানুষ তীর্থযাত্রায় যায়, কত ধাক্কা(ঠোক্কর) খায়। পূর্বে অনেকেই পদব্রজে যেত, গরুর গাড়িতেও যেত। এ ছিল এক জায়গা থেকে শহরে যাওয়ার ব্যাপার। এ হলো বাবার কত বড় ইউনিভার্সিটি, যেখান থেকে তোমরা লক্ষ্মী-নারায়ণ হয়ে যাও। এমন উচ্চমানের পড়ার জন্য কেউ কী বলে যে, (অনেক) দূর পড়ে বা ফুরসৎ নেই। তাহলে বাবা কী বলবেন? এমন বাচ্চা সুযোগ্য নয়। বাবা এত উঁচুতে তুলতে আসেন, আর এরা নিজেদের সর্বনাশ করে ফেলে। শ্রীমৎ বলে - পবিত্র হও, দৈবী-গুণ ধারণ করো। একসাথে থেকেও বিকারে যাওয়া উচিত নয়। মাঝখানে জ্ঞান-যোগের তলোয়ার রয়েছে, আমাদের তো পবিত্র দুনিয়ার মালিক হতে হবে। এখন হলে পতিত দুনিয়ার মালিক, তাই না! সেই দেবতারা ছিল দ্বিমুকুটধারী, পুনরায় আধাকল্প পরে লাইটের অর্থাৎ পবিত্রতার মুকুট(তাজ) হারিয়ে যায়। আর এইসময় লাইটের তাজ কারোর উপরেই নেই। শুধু যারা ধর্মস্থাপক, তাদের উপর থাকতে পারে কারণ তারা পবিত্র আত্মা, এসে শরীর ধারণ করে। এ হলো ভারত, যেখানে দ্বিমুকুটধারীও ছিল, এক-মুকুটধারীও ছিল। এখনও পর্যন্ত এক-মুকুটধারীরা দ্বিমুকুটধারীদের সম্মুখে মাথা নত করে কারণ তারা হলেন পবিত্র মহারাজা-মহারানী। মহারাজারা রাজাদের থেকে বড়(মহান)। তাদের কাছে বড়-বড় জায়গীর (ভূ-সম্পদ) থাকতো। সভাতেও নম্বরের ক্রমানুসারে মহারাজারা সামনে আর রাজারা পিছনে বসতো। নিয়ম-মাফিক তাদের দরবার বসতো। এও হলো ঈশ্বরীয় দরবার, ইন্দ্রসভাও হিসেবেও এর গায়ন রয়েছে। তোমরা জ্ঞানের দ্বারা পরী হয়ে যাও। অতিসুন্দরকে পরী বলা হয়, তাই না! রাধা-কৃষ্ণের সৌন্দর্য্য তো ন্যাচারাল, তাই না! সেইজন্যই সুন্দর বলা হয়। পুনরায় যখন কাম-চিতায় বসে তখন সেও অন্য নাম-রূপে শ্যামবর্ণের হয়ে যায়। শাস্ত্রে এসব কোনো কথা নেই। জ্ঞান, ভক্তি আর বৈরাগ্য - এই তিনটি জিনিস রয়েছে। জ্ঞান হলো উচ্চ থেকে উচ্চ। এখন তোমরা জ্ঞান প্রাপ্ত করছো। তোমাদের বৈরাগ্য হলো ভক্তিতে। এই সমগ্র তমোপ্রধান দুনিয়া এখন সমাপ্ত হয়ে যাবে, তাই এর থেকে বৈরাগ্য। যখন নতুন বাড়ী বানানো হয় তখন পুরানোর থেকে বৈরাগ্য চলে আসে, তাই না! ওটা হলো সসীম জগতের কথা, এ হলো অসীম জগতের কথা। এখন বুদ্ধি নতুন দুনিয়ার দিকে রয়েছে। এ হলো পুরানো দুনিয়া, নরক। সত্যযুগ-ত্রেতাকে বলা হয় শিবালয়। শিববাবার-ই স্থাপনা করা, তাই না! এখন এই বেশ্যালয়ে তোমাদের ঘৃণা আসে। অনেকের আবার ঘৃণা আসেও না। বিবাহ করে সর্বনাশ করে নর্দমায় পড়ে যেতে চায়। সকল মানুষই তো বিষয় বৈতরনী নদীতে পড়ে গেছে, নোংরা (অপবিত্রতা) পড়ে রয়েছে। পরস্পরকে দুঃখ দেয়। গায়নও করা হয়, অমৃত ছেড়ে বিষ কেন খাও। যা কিছু বলে, তার অর্থ বোঝে না। বাচ্চারা, তোমাদের মধ্যেও নম্বরের ক্রমানুসারে রয়েছে। সেন্সীবেল টিচার, দেখলেই বুঝে যাবে যে, এদের বুদ্ধি কোথায়-কোথায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। ক্লাসের মধ্যে কেউ হাই তুললে বা ঢুলে পড়লে তখন বোঝা যায় যে, এদের বুদ্ধি কতটা ঘর-বাড়ীর দিকে অথবা কাজকর্মের(ধান্ধা) দিকে ঘুরে বেড়াচ্ছে। হাই তোলা ক্লান্তিরও চিহ্ন। কাজ-কর্মে মানুষের উপার্জন হতে থাকে তখন রাত ১-২টো পর্যন্তও বসে থাকে, কখনো হাই ওঠে না। এখানে তো বাবা কত খাজানা(ধনভান্ডার) দেন। হাই তোলা লোকসানের চিহ্ন। যারা দেউলিয়া হয়ে যায়, তারা ঢুলতে-ঢুলতে অনেক হাই তোলে। তোমরা তো খাজানার পর খাজানা পেতেই থাকো, তাহলে কত সচেতন হওয়া উচিত। পড়ার সময় কেউ হাই তুললে, তখন সমঝদার টিচার বুঝে যাবে যে, এদের বুদ্ধিযোগ অন্যান্যদিকে ঘুরতে থাকে। এখানে বসে ঘর-বাড়ী স্মরণে আসবে, সন্তান স্মরণে আসবে। এখানে তোমাদের ভাট্টীতে থাকতে হয়, তাই আর কারোর স্মরণ যেন না আসে। মনে করো, কেউ ৬ দিন ভাট্টীতে রয়েছে, পরে কেউ স্মরণে এলো, কাউকে চিঠি লিখলো তাহলে ফেল, তখন বলবে যে, পুনরায় ৭ দিন (ভাট্টী) শুরু করো। ৭ দিন ভাট্টীতে রাখা হয় যাতে সমস্ত রোগ নিরাময়(সেরে) হয়ে যায়। তোমরা হলে আধাকল্পের মহান রুগী। বসে-বসেই অকালে মৃত্যু হয়ে যায়। সত্যযুগে এমন কখনো হয় না। এখানে তো কোন-না-কোন রোগ অবশ্যই হয়। মৃত্যুর সময় রোগে (জর্জরিত হয়ে) চিৎকার করতে থাকে। স্বর্গে এতটুকুও দুঃখ থাকে না। ওখানে সময় হলে বুঝে যায় যে - এখন সময় হয়ে গেছে, আমি এই শরীর পরিত্যাগ করে বাচ্চা হয়ে যাবো(জন্ম নেবো)। এখানেও তোমাদের সাক্ষাৎকার হবে যে আমরা এমন হচ্ছি। এমন অনেকেরই সাক্ষাৎকার হয়। জ্ঞানের মাধ্যমেও আমরা জানি যে, আমরা বেগার টু প্রিন্স হতে চলেছি। আমাদের এইম অবজেক্ট-ই হলো রাধা-কৃষ্ণ হওয়া। লক্ষ্মী-নারায়ণ নয়, রাধা-কৃষ্ণ কারণ বলা হয়, সম্পূর্ণ ৫ হাজার বছর তো এঁনাদেরই(রাধা-কৃষ্ণ) হয়েছে। লক্ষ্মী-নারায়ণের তো তাও ২৫-৩০ বছর কম হয়ে যায় সেইজন্যই কৃষ্ণের মহিমা বেশী। এও কেউ জানে না যে, রাধা-কৃষ্ণই পুনরায় লক্ষ্মী-নারায়ণ হয়। বাচ্চারা, এখন তোমরা বুঝতে পেরেছো যে, এ হলো পঠন-পাঠন। প্রত্যেক গ্রামে-গ্রামে সেন্টার খুলে যাচ্ছে। তোমাদের এ হলো একত্রে বিশ্ববিদ্যালয় এবং হাসপাতাল। এরজন্য শুধু ৩ পা জমি চাই। বিস্ময়কর, তাই না! যাদের ভাগ্যে রয়েছে, তারা নিজেদের ঘরেও সৎসঙ্গ খুলে ফেলে। এখানে যারা অতি ধনবান, তাদের সমস্ত পয়সা মাটিতে মিশে যাবে। তোমরা বাবার কাছ থেকে ২১ জন্মের জন্য উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করছো। বাবা স্বয়ং বলেন - এই পুরানো দুনিয়াকে দেখলেও, বুদ্ধির যোগসূত্র ওখানে(নতুন দুনিয়ায়) স্থাপন করো, কর্ম করতে-করতেও এর অভ্যাস করো। প্রত্যেকটা জিনিস দেখতে হয়, তাই না! এখন তোমাদের অভ্যাস হচ্ছে। বাবা বোঝান, সর্বদা শুদ্ধ কর্ম করো, কোন অশুদ্ধ কর্ম করো না। কোনও রোগ হলে, সার্জেন বসে রয়েছেন, ওঁনার সঙ্গে পরামর্শ করো। প্রত্যেকের নিজস্ব রোগ (বিকার) রয়েছে, সার্জেনের কাছ থেকে তো ভালো পরামর্শ পাবে। জিজ্ঞাসা করতে পারো, এই অবস্থায় কী করবো? অ্যাটেনশন রাখতে হবে, যেন কোনো বিকর্ম না হয়ে যায়।

এই গায়নও রয়েছে যে - 'যেমন অন্ন তেমনই মন'। মাংসের ক্রেতার উপর, বিক্রেতার উপর, খাওয়ায় যারা তাদের উপরেও পাপ লাগে। পতিত-পাবন বাবার কাছে কোন কথা গোপন করা উচিত নয়। সার্জেনের কাছে গোপন করলে তো রোগ মুক্ত হবে না। উনি হলেন অসীম জগতের অবিনাশী সার্জেন। এইসব কথা তো দুনিয়া জানে না। তোমরাও এখনই নলেজ পাচ্ছো, তথাপি যোগের মাত্রা অনেক কম। স্মরণ একদমই করে না। একথা তো বাবাও জানেন যে, তৎক্ষণাৎ কেউ যোগে বা স্মরণে স্থিত হতে পারবে না। তা নম্বরের ক্রমানুসারেই হয়, তাই না! যখন স্মরণের যাত্রা সম্পূর্ণ হবে তখন বলা হবে যে কর্মাতীত অবস্থা পূর্ণ হয়েছে, তখন লড়াইও সম্পূর্ণরূপে শুরু হয়ে যাবে, ততক্ষণ পর্যন্ত কিছু-না-কিছু হবে আবার বন্ধও হয়ে যাবে। লড়াই তো যেকোনো সময় শুরু হয়ে যেতে পারে। কিন্তু বিবেক(বুদ্ধি) বলে যে, যতক্ষণ পর্যন্ত রাজধানী স্থাপন না হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত বড়রকমের লড়াই হবেনা। অল্প অল্প হয়ে বন্ধ হয়ে যাবে। এ তো কেউ জানেনা যে, রাজধানী স্থাপিত হচ্ছে। সতোপ্রধান, সতো, রজো, তমো বুদ্ধি তো হয়, তাই না! তোমাদের মধ্যেও যারা শত প্রধান বুদ্ধি সম্পন্ন হবে তারা ভালোভাবে স্মরণ করতে থাকবে এখন লক্ষ লক্ষ পরিমাণে হয় কিন্তু তাতেও প্রকৃত সন্তান (সগে) আর সৎ-সন্তান (লগে) তো রয়েছে, তাই না ! প্রকৃত যারা, তারা ভালভাবে সার্ভিস করবে, মা-বাবার মতানুসারে চলবে। যারা সৎ-সন্তান, তারা রাবণের মতানুসারে চলবে। কিছু আবার রাবণের মতানুসারে, কিছু রামের মতানুসারে খুঁড়িয়ে-খুঁড়িয়ে চলে। বাচ্চারা গান শুনেছে। তারা বলে যে - বাবা, এমন জায়গায় নিয়ে চলো যেখানে স্বস্তি (সম্পূর্ণ আরাম) আছে। স্বর্গে সুখই সুখ রয়েছে, দুঃখের কোন নাম-ঠিকানাই নেই। স্বর্গ বলাই হয় সত্যযুগকে। এখন হলো কলিযুগ। এখানে আবার স্বর্গ কী করে আসবে। তোমাদের বুদ্ধি এখন স্বচ্ছ হতে থাকে। স্বচ্ছ বুদ্ধি সম্পন্নদের-কে ম্লেচ্ছ বুদ্ধিরা (ভ্রষ্টবুদ্ধিসম্পন্নরা) নমন করে। যারা পবিত্র থাকে, তারা মর্যাদা সম্পন্ন (মানী) হয়। সন্ন্যাসীরা পবিত্র হয়, তাই গৃহস্থীরা তাদের কাছে মাথা নত করে। কিন্তু সন্ন্যাসীরাও বিকারের দ্বারা জন্ম নিয়ে পরে সন্ন্যাসী হয়। দেবতাদের বলাই হয় সম্পূর্ণ নির্বিকারী। সন্ন্যাসীদের কখনো সম্পূর্ণ নির্বিকারী বলা যাবে না। বাচ্চারা, তোমাদের অন্তরে খুশীর পারদ অধিকমাত্রায় চড়ে থাকা উচিত, তাই বলা হয় - অতীন্দ্রিয় সুখ কী তা গোপ-গোপিনীদের কাছে জিজ্ঞাসা করো, অর্থাৎ যারা বাবার কাছ থেকে উত্তরাধিকার নিচ্ছে, পড়াশোনা করছে। এখানে সম্মুখে শুনলে নেশা চড়ে, পুনরায় তা কারোর স্থায়ী হয়ে যায়, কারোর আবার তৎক্ষনাৎ উড়ে যায়। সঙ্গদোষের কারণে নেশা স্থায়ী হয় না। তোমাদের সেন্টারে এমন অনেকেই আসে। যাদের একটু নেশা চড়লে, তখন আবার পার্টি ইত্যাদি কোথায়-কোথায় যায়, মদ্যপান করে, বিড়ি ইত্যাদি ধূমপান করে, আর সবশেষ। সঙ্গদোষ অতি খারাপ। হংস আর বক একসঙ্গে থাকতে পারে না। স্বামী যদি হংস হয় তখন স্ত্রী বক হয়ে যায়। কোথাও আবার স্ত্রী হংসিনী হয়ে যায়, স্বামী আবার বক হয়ে যায়। তারা বলে, যদি পবিত্র হও তাহলে মার খেতে হবে। কোন-কোন ঘরে সকলেই হংস হয়, এভাবে চলতে-চলতে আবার হংস থেকে বক হয়ে যায়। বাবা বলেন, নিজেকে সর্ব-সুখী করো। বাচ্চাদের-কেও সুখী করো। এ হলো দুঃখধাম, তাই না। এখন অনেক বিপদ আসবে, তখন দেখবে কেমন ত্রাহি-ত্রাহি করে। আরে! বাবা এসেছেন, আমরা বাবার কাছ থেকে উত্তরাধিকার পাই নি, তখন টু লেট হয়ে যাবে। বাবা স্বর্গের বাদশাহী দিতে আসেন, আর সেটাই হারিয়ে বসে। তাই বাবা বোঝান যে, বাবার কাছে সর্বদা দৃঢ়তাসম্পন্নদের নিয়ে যাও। যারা নিজে বুঝে অন্যদেরকেও বোঝাতে পারে। এছাড়া বাবা কোনো দেখার মতন বস্তু নয়। শিববাবাকে কোথায় দেখা যায়? নিজের আত্মাকে দেখেছো কি? শুধু জানো। তেমনই পরমাত্মাকেও জানতে হবে। দিব্য-দৃষ্টি ব্যতীত তাঁকে কখনো দেখা যায় না। দিব্য-দৃষ্টির দ্বারা এখন তোমরা সত্যযুগ দেখো, পুনরায় সেখানে প্র্যাকটিক্যালি যেতে হবে। বাচ্চারা, কলিযুগের বিনাশ তখন হবে যখন তোমরা কর্মাতীত অবস্থায় পৌঁছবে। আচ্ছা!

মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা-রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) এই পুরানো দুনিয়াকে দেখেও বুদ্ধির যোগ যেন বাবা বা নতুন দুনিয়ার সঙ্গে যুক্ত থাকে। যেন ধ্যান থাকে - কর্মেন্দ্রিয়গুলির দ্বারা কোনো বিকর্ম না হয়ে যায়। সদা শুদ্ধ কর্ম করতে হবে, ভিতরে যদি কোন রোগ(বিকার) থাকে, তখন সার্জেনের পরামর্শ নিতে হবে।

২ ) সঙ্গদোষ অত্যন্ত খারাপ, এর থেকে নিজেকে অতিমাত্রায় সুরক্ষিত করতে হবে। নিজেকে আর পরিবারকে সুখী করতে হবে। পড়ায় কখনো টালবাহানা করা উচিত নয়।

বরদান:-
শ্রেষ্ঠ ভাবনার আধারে সবাইকে শান্তি, শক্তির কিরণ প্রদানকারী বিশ্ব কল্যাণকারী ভব

যেরকম বাবার সংকল্প বা বাণীতে, নয়নে সদাই কল্যাণের ভাবনা বা কামনা আছে, এইরকম তোমাদের, বাচ্চাদের সংকল্পে বিশ্ব কল্যাণের ভাবনা বা কামনা যেন ভরা থাকে। যেকোনও কাজ করার সময় বিশ্বের সকল আত্মারা ইমার্জ হবে। মাস্টার জ্ঞান সূর্য হয়ে শুভ ভাবনা বা শ্রেষ্ঠ কামনার আধারের দ্বারা শান্তি বা শক্তির কিরণ দিতে থাকো তখন বলা হবে বিশ্ব কল্যাণকারী। কিন্তু এর জন্য সর্ব বন্ধন থেকে মুক্ত, স্বতন্ত্র হও।

স্লোগান:-
আমি আর আমার - এটাই হল দেহ অভিমানের দরজা। এখন এই দরজাকে বন্ধ করো।

অব্যক্ত ঈশারা :- সত্যতা আর সভ্যতারূপী কালচারকে ধারণ করো

সত্যতার পরখ হল সংকল্প, বাণী, কর্ম, সম্বন্ধ-সম্পর্ক সবকিছুতেই দিব্যতার অনুভূতি হবে। কেউ বলে যে আমি তো সর্বদা সত্য কথা বলি কিন্তু বাণী বা কর্মে যদি দিব্যতা না থাকে তাহলে অন্যদের কাছে তোমার সত্য কথা সত্য বলে মনে হবে না এইজন্য সত্যতার শক্তির দ্বারা দিব্যতাকে ধারণ করো। যাকিছু সহ্য করতে হয়, ঘাবড়ে যাবে না। সত্য সময় অনুসারে নিজে থেকেই প্রমাণিত হবে।