17.06.2024
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
স্মরণ আর পড়াশোনার দ্বারাই তোমরা ডবল মুকুট প্রাপ্ত করবে, তাই নিজের এইম অবজেক্টকে
সামনে রেখে দৈবীগুণ ধারণ করো"
প্রশ্নঃ -
বাচ্চারা,
বিশ্ব রচয়িতা বাবা তোমাদের জন্য কি (খিদমত) সেবা করেন?
উত্তরঃ
১) বাচ্চাদের
অসীম জগতের উত্তরাধিকার প্রদান করে সুখী করে তোলা, এটাই হলো সেবা । বাবার মতো
নিষ্কাম সেবা কেউই করতে পারে না । ২) অসীম জগতের পিতা সিংহাসন (তখ্ত) ভাড়া নিয়ে
তোমাদের বিশ্বের সিংহাসনের অধিকারী করেন। তিনি নিজে ময়ূর সিংহাসনে বসেন না, কিন্তু
বাচ্চাদের ময়ূর সিংহাসনে বসান। বাবার তো জড় মন্দির বানানো হয়, তাতে তাঁর কি টেস্ট
আসবে । আনন্দ তো বাচ্চাদের, যারা স্বর্গের রাজ্য - ভাগ্য গ্রহণ করে ।
ওম্ শান্তি ।
মিষ্টি -
মিষ্টি আত্মা রূপী বাচ্চাদের বাবা বলেন যে, নিজেকে আত্মা মনে করে বাবাকে স্মরণ করো
। ওম্ শান্তির অর্থ তো বাচ্চাদের বোঝানো হয়েছে । বাবাও বলেন আর বাচ্চারাও বলে ওম্
শান্তি, কেননা আত্মার স্বধর্ম হলো শান্ত। তোমরা এখন জেনে গেছো যে, আমরা শান্তিধাম
থেকে এখানে সবার প্রথমে সুখধামে আসি, তারপর ৮৪ জন্ম পুনর্জন্ম গ্রহণ করতে করতে
দুঃখধামে আসি । তোমরা এটা স্মরণ করো, তাই না । বাচ্চারা ৮৪ জন্মগ্রহণ করে, জীব আত্মা
হয় । বাবা জীব আত্মা হন না । তিনি বলেন, আমি টেম্পোরারি এনার আধার গ্রহণ করি । না
হলে কিভাবে পড়াবো? বাচ্চাদের প্রতি মুহূর্তে কিভাবে বলবো যে 'মন্মনাভব', নিজের
রাজত্বকে স্মরণ করো । একে বলা হয় সেকেন্ডে বিশ্বের রাজত্ব। অসীম জগতের পিতা তিনি,
তাই অবশ্যই অসীম জাগতিক খুশী, অসীম জগতের উত্তরাধিকার প্রদান করবেন।বাবা খুব সহজ পথ
বলে দেন। তিনি বলেন, এখন এই দুঃখধামকে বুদ্ধি থেকে দূর করো । যে নতুন দুনিয়া
স্বর্গ স্থাপন করা হচ্ছে, তার মালিক হওয়ার জন্য আমাকে স্মরণ করো তাহলে তোমাদের পাপ
দূর হবে । তোমরা আবার সতোপ্রধান হয়ে যাবে, একে বলা হয় সহজ স্মরণ। বাচ্চারা যেমন
লৌকিক বাবাকে কতো সহজে স্মরণ করে, বাচ্চারা, তেমনই তোমাদের অসীম জগতের পিতাকে স্মরণ
করতে হবে । বাবাই তোমাদের দুঃখ থেকে মুক্ত করে সুখধামে নিয়ে যান। ওখানে দুঃখের নাম
- চিহ্ন পর্যন্ত থাকে না । তিনি খুব সহজ কথা বলেন - নিজের শান্তিধামকে স্মরণ করো,
যেটা বাবার গৃহ সেটাই তোমাদের গৃহ আর নতুন দুনিয়াকে স্মরণ করো, সেটা হলো তোমাদের
রাজধানী । বাচ্চারা, বাবা তোমাদের কতো নিষ্কাম সেবা করেন। বাচ্চারা, তিনি তোমাদের
খুশী করে তারপর বাণপ্রস্থ, পরমধামে বসে যান। তোমরাও হলে পরমধাম নিবাসী । তাকে
নির্বাণধাম, বাণপ্রস্থও বলা হয় । বাবা আসেন বাচ্চাদের সেবা করতে অর্থাৎ
উত্তরাধিকার প্রদান করতে । ইনি নিজেও বাবার থেকে উত্তরাধিকার গ্রহণ করেন। শিব বাবা
তো হলেন উঁচুর থেকেও উঁচু ভগবান, শিবের মন্দিরও আছে । তাঁর কোনো বাবা বা টিচার নেই।
সম্পূর্ণ সৃষ্টির আদি - মধ্য এবং অন্তের জ্ঞান তাঁর কাছে আছে । তিনি কোথা থেকে
এসেছেন? তিনি কি কোনো বেদ - শাস্ত্র ইত্যাদি পাঠ করেছেন? তা নয় । বাবা তো হলেন
জ্ঞানের সাগর, সুখ - শান্তির সাগর। বাবার মহিমা আর দৈবীগুণ সম্পন্ন মানুষের মহিমাতে
তফাৎ আছে । তোমরা দৈবীগুণ ধারণ করে এমন দেবতা হও। পূর্বে তোমাদের মধ্যে আসুরী গুণ
ছিলো । অসুর থেকে দেবতা বানানো, এ তো বাবার কাজ। এইম অবজেক্টও তোমাদের সামনে
উপস্থিত। অবশ্যই তিনি এমন শ্রেষ্ঠ কর্ম করে থাকবেন। কর্ম - অকর্ম এবং বিকর্মের গতি
অথবা প্রতিটি কথা বোঝাতে এক সেকেন্ড লাগে ।
বাবা বলেন, মিষ্টি -
মিষ্টি বাচ্চাদের পার্ট প্লে করতেই হবে । এই অনাদি - অবিনাশী পার্ট তোমরাই পেয়েছো
। তোমরা কতো বার এই সুখ - দুঃখের খেলাতে এসেছো । কতো বার তোমরা এই বিশ্বের মালিক
হয়েছো । বাবা তোমাদের কতো উচ্চ বানান। পরমাত্মা, যিনি সুপ্রীম সোল, তিনিও এতটাই
ছোটো । সেই বাবা হলেন জ্ঞানের সাগর। তিনি আত্মাদেরও নিজের সমান তৈরী করেন। তোমরা
প্রেমের সাগর, সুখের সাগর তৈরী হও। দেবতাদের মধ্যে পারস্পরিক কতো প্রেম থাকে ।
কখনোই তাদের ঝগড়া হয় না । তাই বাবা এসে তোমাদের নিজের সমান তৈরী করেন। আর কেউই এমন
তৈরী করতে পারে না । খেলা হয় এই স্থূল বতনে । প্রথমে আদি সনাতন দেবী - দেবতা ধর্ম,
তারপর ইসলাম ধর্ম, বৌদ্ধ ইত্যাদি ধর্ম নম্বরের ক্রমানুসারে এই নাট্যমঞ্চ বা
নাটকশালাতে আসে । তোমরা ৮৪ জন্মগ্রহণ করো । এমন গায়নও আছে - আত্মা - পরমাত্মা পৃথক
ছিল বহুকাল....। বাবা বলেন - মিষ্টি - মিষ্টি বাচ্চারা, তোমারই সবার প্রথমে এই
বিশ্বে পার্ট প্লে করতে এসেছো । আমি তো অল্প সময়ের জন্য এনার মধ্যে প্রবেশ করি । এ
তো পুরানো জুতো । পুরুষের এক স্ত্রীর মৃত্যু হলে বলে যে, পুরানো জুতো চলে গেলো, তখন
আবার নতুন গ্রহণ করে । ইনিও তো পুরানো তন, তাই না । ইনি ৮৪ জন্মের চক্র আবর্তন
করেছেন। ততত্বম্, তাই আমি এসে এই রথের আধার গ্রহণ করি । আমি তো পাবন দুনিয়াতে
কখনোই আসি না । তোমরা এখন পতিত, তাই তোমরা আমাকে ডাকো যে, তুমি এসে আমাদের পাবন
বানাও। অবশেষে তোমাদের স্মরণ তো ফলিভূত হবে, তাই না । পুরানো দুনিয়া যখন শেষ
হওয়ার সময় উপস্থিত হয়, আমি তখন আসি । ব্রহ্মার দ্বারা স্থাপনা । ব্রহ্মার দ্বারা
অর্থাৎ ব্রাহ্মণদের দ্বারা । প্রথমে শিখা (টিকি) হলো ব্রাহ্মণ, তারপর ক্ষত্রিয়...তাই
তোমরা ডিগবাজির খেলা খেলো । তোমাদের এখন দেহ বোধ ত্যাগ করে দেহী - অভিমানী হতে হবে
। তোমরা ৮৪ জন্মগ্রহণ করো । আমি তো কেবল একই বার এই তন লোন নিই। ভাড়াতে এই তন নিই।
আমি এই বাড়ির মালিক নই। আমি তো একে ছেড়েই দেবো । ভাড়া তো দিতেই হয়, তাই না । বাবাও
বলেন, আমি এই বাড়ির ভাড়া দিই। অসীম জগতের পিতা, কিছু তো ভাড়া দেবেন, তাই না । এই
সিংহাসন নেন তোমাদের বোঝানোর জন্য। তিনি এমন বোঝান যে, তোমরাও বিশ্বের সিংহাসনের
অধিকারী হয়ে যাও। তিনি নিজেই বলেন, আমি হই না । সিংহাসনে আসীন অর্থাৎ ময়ূর
সিংহাসনে বসান। শিব বাবার স্মরণেই সোমনাথ মন্দির বানানো হয়েছে । বাবা বলেন, এতে
আমার কি টেস্ট আসবে? ওখানে জড় পুতুল রেখে দেয় । বাচ্চারা, তোমাদের মজা তো স্বর্গে
। আমি তো স্বর্গে আসিই না । এরপর যখন ভক্তিমার্গ শুরু হয়, তখন মানুষ এই মন্দির
ইত্যাদি তৈরী করতে কতো খরচ করেছে । তারপর চোরও লুঠ করে নিয়ে গেছে । রাবণের রাজ্যে
তোমাদের ধন - দৌলত ইত্যাদি সব শেষ হয়ে যায় । এখন সেই ময়ূর সিংহাসন আছে কি? বাবা
বলেন, আমাদের যে মন্দির বানানো হয়েছিলো, তা মহম্মদ গজনী এসে লুঠ করে নিয়ে গেছে ।
ভারতের মতো সলভেন্ট
আর কোনো দেশই নেই। ভারতের মতো তীর্থ আর কোথাও হতে পারে না কিন্তু আজ তো হিন্দু
ধর্মের অনেক তীর্থ হয়ে গেছে । বাস্তবে বাবা যে সকলের সদ্গতি করেন, তীর্থ তো তাঁর
হওয়া চাই। এই ড্রামাও বানানো রয়েছে । এটা বোঝার জন্য খুবই সহজ কিন্তু নম্বরের
ক্রমানুসারেই বুঝতে পারে, কেননা এখন রাজধানী স্থাপন হচ্ছে । স্বর্গের মালিক হলেন এই
লক্ষ্মী - নারায়ণ। এঁরা হলেন উত্তম থেকেও উত্তম পুরুষ, যাদের দেবতা বলা হয় । দৈবী
গুণধারীদের দেবতা বলা হয় । এই উচ্চ দেবতা ধর্মের মানুষরা প্রবৃত্তি মার্গে ছিলেন।
ওই সময় তোমাদেরই প্রবৃত্তি মার্গ থাকে । বাবা তোমাদের ডবল মুকুটধারী বানিয়েছেন।
রাবণ তোমাদের দুই মুকুটই নামিয়ে দিয়েছে । এখন তো মুকুটহীন, না পবিত্রতার মুকুট,
না ধনের মুকুট, দুইই রাবণ নামিয়ে দিয়েছে । বাবা আবার এসে তোমাদের দুই মুকুটই
ফিরিয়ে দেন - এই স্মরণ আর ঈশ্বরীয় পড়াশুনার দ্বারা, তাই তো গেয়ে থাকে - ও গড
ফাদার, আমাদের গাইড হও, লিবরেটও (উদ্ধার) করো । তোমাদের নাম এখন পাণ্ডা রাখা হয়েছে
। পাণ্ডব, কৌরব, যাদব কি করছে? মানুষ বলে যে, বাবা আমাদের দুঃখের রাজ্য থেকে মুক্ত
করে সাথে করে নিয়ে যাও। বাবাই সত্যখণ্ডের স্থাপনা করেন, যাকে স্বর্গ বলা হয় ।
তারপর রাবণ আবার মিথ্যা খণ্ড বানায় । ওরা বলে, শ্রীকৃষ্ণ ভগবান উবাচঃ । বাবা বলেন
শিব ভগবান উবাচঃ । ভারতবাসীরা নাম পরিবর্তন করে নিয়েছে তাই সারা দুনিয়াই পরিবর্তন
করে নিয়েছে । শ্রীকৃষ্ণ তো দেহধারী, বিদেহী হলেন একমাত্র শিব বাবা । এখন বাবার কাছ
থেকে তোমরা বাচ্চারা শক্তি অর্জন করছো । তোমরা সম্পূর্ণ বিশ্বের মালিক হও। তোমরা
সম্পূর্ণ অকাশ, ধরিত্রী প্রাপ্ত করো । কারোর শক্তি নেই যে তোমাদের থেকে পৌনে কল্প
পর্যন্ত ছিনিয়ে নিতে পারে । জনসংখ্যা যখন বৃদ্ধি পেয়ে কোটির আন্দাজে হয়ে যায়
তখন লস্কর নিয়ে এসে তোমাদের জয় করে । বাবা বাচ্চাদের কতো সুখ প্রদান করেন। তাঁর
মহিমাই হলো দুঃখহর্তা, সুখকর্তা । এই সময় বাবা বসে তোমাদের কর্ম - অকর্ম এবং
বিকর্মের গতি বোঝান। রাবণ রাজ্যে কর্ম বিকর্ম হয়ে যায় । সত্যযুগে কর্ম অকর্ম হয়ে
যায় । এখন তোমরা এক সদ্গুরুকে পেয়েছো, যাকে পতিরও পতি বলা হয়, কেননা ওই পতিরাও
সবাই তাঁকেই স্মরণ করে । বাবা তাই বোঝান, এ কতো ওয়ান্ডারফুল ড্রামা । এতো ছোটো
আত্মার মধ্যে কতো অবিনাশী পার্ট ভরা আছে, যা কখনোই মুছে যাবে না । একে অনাদি -
অবিনাশী ড্রামা বলা হয় । গড ইজ ওয়ান। রচনা অথবা সিঁড়ি বা চক্র সব একই। না কেউ
রচয়িতাকে আর না রচনাকে জানে । ঋষি - মুনিরাও বলে দেয় যে, আমরা জানি না । তোমরা
এখন সঙ্গম যুগে বসে আছো, তোমাদের যুদ্ধ হলো মায়ার সঙ্গে । মায়া তোমাদের ছাড়ে না ।
বাচ্চারা বলে - বাবা, মায়ার থাপ্পড় লেগে গেছে । বাবা বলেন - বাচ্চারা, তোমরা যা
উপার্জন করেছিলে, সব গায়েব করে দিয়েছে! তোমাদের ভগবান পড়ান, তাই তোমাদের খুব
ভালোভাবে পড়া উচিত। এমন ঈশ্বরীয় পড়া তো তোমরা আবার পাঁচ হাজার বছর পরে পাবে । আচ্ছা
!
মিষ্টি - মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতাপিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মারূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) এই
দুঃখধাম থেকে বুদ্ধিযোগকে সরিয়ে নিয়ে নতুন দুনিয়া স্থাপন করতে করতে বাবাকে স্মরণ
করতে হবে, সতোপ্রধান হতে হবে ।
২ ) বাবার সমান
প্রেমের সাগর, শান্তি আর সুখের সাগর হতে হবে । কর্ম - অকর্ম আর বিকর্মের গতিকে জেনে
সদা শ্রেষ্ঠ কর্ম করতে হবে ।
বরদান:-
সদা
উৎসাহ - উদ্দীপনাতে থেকে মনে খুশীর গীত গেয়ে অবিনাশী খুশীর ভাগ্যের অধিকারী ভব
তোমরা খুশীর ভাগ্যের
অধিকারী বাচ্চারা অবিনাশী বিধিতে অবিনাশী সিদ্ধি প্রাপ্ত করো । তোমাদের মন থেকে সদা
বাঃ - বাঃ এমন খুশীর গীত বাজতে থাকে । বাঃ বাবা ! বাঃ ভাগ্য ! বাঃ মিষ্টি পরিবার!
বাঃ শ্রেষ্ঠ সঙ্গমের সুন্দর সময় ! প্রতিটি কর্ম বাঃ - বাঃ, তাই তোমরা অবিনাশী
খুশীর ভাগ্যের অধিকারী । তোমাদের মনে কখনো কেন বা আমি, এমন প্রশ্ন আসতে পারে না । 'কেন'
এর বদলে বাঃ - বাঃ আর 'আমি'র বদলে 'বাবা - বাবা' শব্দই আসে ।
স্লোগান:-
যে
সঙ্কল্প করো, তাতে অবিনাশী গভর্নমেন্টের স্ট্যাম্প লাগিয়ে দাও তাহলে অটল থাকবে ।
মাতেশ্বরী জী'র মধুর
মহাবাক্য -- "জীবনের আশা পূর্ণ হওয়ার সুন্দর সময়"
আমাদের মতো সকল
আত্মাদের অনেক সময় ধরে এই আশা ছিলো যে, জীবনে যেন সদা সুখ - শান্তি প্রাপ্ত করি,
এখন অনেক জন্মের আশা কখনো তো পূর্ণ হবে । এখন এ হলো আমাদের অন্তিম জন্ম, ওই অন্তিম
জন্মেরও অন্তিম সময় । এমন কেউই যেন মনে করে না যে, আমি তো এখনো ছোটো, ছোটো - বড়
সকলেরই তো সুখ চাই, তাই না, কিন্তু কিসের ফলে দুঃখের প্রাপ্তি হয়, এ জানার পূর্বেও
জ্ঞানের প্রয়োজন। তোমরা এখন এই জ্ঞান পেয়েছো যে, এই পাঁচ বিকারে ফেঁসে যাওয়ার
কারণে এই যে কর্মবন্ধন তৈরী হয়েছে তা পরমাত্মার স্মরণের অগ্নিতে ভস্ম করতে হবে,
এটাই হলো কর্মবন্ধন থেকে মুক্ত হওয়ার সহজ উপায় । এই সর্বশক্তিমান বাবাকে চলতে -
ফিরতে প্রতি শ্বাসে স্মরণ করো। এখন এই উপায় বলে দেওয়ার সহায়তা পরমাত্মা এসে করেন,
কিন্তু এতে পুরুষার্থ তো প্রতিটি আত্মাকেই করতে হবে । পরমাত্মা তো বাবা, টিচার এবং
সদ্গুরু রূপে এসে আমাদের উত্তরাধিকার প্রদান করেন। তাই প্রথমে সেই বাবার হয়ে যেতে
হবে, তারপর সেই টিচারের কাছে পড়তে হবে, যে পড়ার দ্বারা ভবিষ্যতের জন্ম - জন্মান্তর
সুখের প্রালব্ধ তৈরী হবে অর্থাৎ জীবনমুক্তিতে পুরুষার্থ অনুসারে পদ প্রাপ্ত হয় ।
আর তিনি গুরু রূপে পবিত্রতা প্রদান করে মুক্তি দান করেন। তাই এই রহস্যকে বুঝে এমন
পুরুষার্থ করতে হবে । এটাই হলো পুরানো খাতা সমাপ্ত করে নতুন জীবন বানানোর সময়, এই
সময় যতটা পুরুষার্থ করে নিজের আত্মাকে পবিত্র করে তুলবে ততই শুদ্ধ রেকর্ডে ভরপুর
হবে, তারপর সারা কল্প ধরে চলতে থাকবে। তাই সম্পূর্ণ কল্প নির্ভর করে এই সময়ের
উপার্জনের উপরে। দেখো, এই সময়ই তোমরা আদি - মধ্য এবং অন্তের জ্ঞান প্রাপ্ত করো,
আমাকে সেই দেবতা হতে হবে আর এখন আমাদের চড়তি কলা এরপর ওখানে গিয়ে আমরা প্রালব্ধ
ভোগ করবো । ওখানে দেবতারা জানতেই পারে না যে, আমরা নেমে যাবো। এই কথা যদি জানতে
পারতো যে, প্রথমে সুখ ভোগ করবো তারপর নেমে যেতে হবে, তখন এই নেমে যাওয়ার চিন্তায়
সুখ ভোগ করতে পারবে না । তাই এই ঈশ্বরীয় নিয়ম রচনা করা হয়েছে যে, মানুষ সদা
উত্তরণের কলার পুরুষার্থ করে অর্থাৎ সুখের জন্য উপার্জন করে কিন্তু ড্রামাতে অর্ধেক
অর্ধেক পার্ট বানানো আছে, যে রহস্যকে একমাত্র আমরাই জানি, কিন্তু যেটা হলো সুখের
সময়, পুরুষার্থ করে সেই সময়ের জন্য সুখ প্রাপ্ত করতে হবে, এটাই হলো পুরুষার্থের
বিশেষত্ব। অ্যক্টরের কাজ হলো অ্যাক্ট করার সময় খুব মনোযোগ সহকারে নিজের পার্ট প্লে
করা, যাতে দর্শকরা বাঃ - বাঃ করে, তাই হিরো - হিরোইনের পার্ট দেবতারা পেয়েছে,
যাঁদের স্মরণিক চিত্রের মহিমা আর পূজা করা হয় । নির্বিকারী প্রবৃত্তিতে থেকে কমল
ফুল সম অবস্থা তৈরী করা, এটাই হলো দেবতাদের বিশেষত্ব। এই বিশেষত্বকে ভোলার কারণেই
ভারতের এমন দুর্দশা হয়েছে, এখন আবার তেমন জীবন বানানোর জন্য স্বয়ং পরমাত্মা
এসেছেন, এখন তাঁর হাত ধরলেই জীবন রূপী নৌকা পার হয়ে যাবে । আচ্ছা - ওম্ শান্তি ।