17.06.2025 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


“মিষ্টি বাচ্চারা - নিজের কল্যাণ করতে চাইলে সকল প্রকারের নিয়ম পালন করো, ফুলের মতো হওয়ার জন্য পবিত্র ব্যক্তির হাতে বানানো শুদ্ধ ভোজন খাও"

প্রশ্নঃ -
তোমরা বাচ্চারা এখন এখানে কোন্ প্র্যাক্টিস করছো যা ২১ জন্ম পর্যন্ত কায়েম থাকবে?

উত্তরঃ  
তোমরা এখান থেকেই সর্বদা শারীরিক এবং মানসিক ভাবে সুস্থ থাকার প্র্যাক্টিস করো। তোমাদেরকে দধীচি ঋষির মতো যজ্ঞ সেবাতে অস্থি দিতে হবে, কিন্তু তাই বলে এখানে হঠযোগের কোনো ব্যাপার নেই। নিজের শরীরকে দুর্বল করা যাবে না। তোমরা যোগের দ্বারা ২১ জন্মের জন্য স্বাস্থ্যবান হয়ে যাও। সেই প্র্যাক্টিস তোমরা এখান থেকেই করছ।

ওম্ শান্তি ।
কলেজ কিংবা ইউনিভার্সিটিতে টিচাররাও স্টুডেন্টদের দিকে দেখে - কোথায় গোলাপের মতো ফুল রয়েছে, সামনের সারিতে কারা রয়েছে? এটাও একটা বাগান। কিন্তু ক্রম তো অবশ্যই রয়েছে। এখানেই গোলাপ ফুলকে দেখতে পাই, তার পাশে রত্ন জ্যোতিকেও দেখতে পাই। আবার কখনো আকন্দ ফুলও দেখতে পাই। বাগানের মালিককে তো সবকিছু দেখতে হবে। ওই বাগানের মালিককেই মানুষ আহ্বান করে। বলে - তুমি এসে কাঁটার জঙ্গলের বিনাশ করে ফুলের চারা লাগাও। কিভাবে কাঁটা থেকে ফুলের চারা রোপন করা হয় সেটা তোমরা বাচ্চারা এখন প্র্যাকটিক্যালে জানো। তোমাদের মধ্যেও খুব কমজন রয়েছে যারা এইসব বিষয় নিয়ে চিন্তন করে। তোমরা বাচ্চারাই জানো যে, তিনি যেমন বাগানের মালিক, সেইরকম তিনি আবার মাঝিও, সবাইকে নিয়ে যান। ফুলের মতো বাচ্চাকে দেখে বাবাও খুশি হন। প্রত্যেকেই মনে করে আমরা কাঁটা থেকে ফুল হচ্ছি। এই জ্ঞানটাও দেখো কতো শ্রেষ্ঠ। এটা বুঝতে পারার জন্যেও বিশাল বুদ্ধির প্রয়োজন। এরা সকলেই কলিযুগের বা নরকের বাসিন্দা। তোমরা এখন স্বর্গবাসী হচ্ছ। সন্ন্যাসীরা তো ঘর বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়। তোমাদের এভাবে পালিয়ে যাওয়ার দরকার নেই। অনেকের বাড়িতে একজন কাঁটা তো একজন ফুল। বাবাকে কেউ কেউ জিজ্ঞেস করে - বাবা, সন্তানের কি বিয়ে দেবো? বাবা বলেন - দিতে চাইলে দাও। ঘরের মধ্যে সামলে রেখো। জিজ্ঞাস করার অর্থই হলো তার সাহস নেই। তাই বাবাও বলে দেন - করতে চাইলে করো।অনেকে বলে - আমার তো শরীর ভালো নয়, তাই বৌমা এলে তো তার হাতের রান্নাই খেতে হবে। বাবা বলবেন - খেতে চাইলে খাও। তিনি কি আর না বলবেন ! পরিস্থিতি এমন হয়ে যায় যে খেতেই হয়। কারণ তার প্রতি মোহ রয়েছে। ঘরে বৌমা এলে এমন কান্ড করবে যে বলার কথা নয়, যেন দেবী এসেছে। কতো খুশি হয়ে যায়। কিন্তু এই ব্যাপারটাও তো বুঝতে হবে। আমরা যদি ফুলের মতো হতে চাই তবে অবশ্যই কোনো পবিত্র ব্যক্তির হাতে খেতে হবে। এর জন্য নিজেকেই ব্যবস্থা করতে হবে। এতে জিজ্ঞেস করার কি আছে? বাবা বোঝাচ্ছেন, তোমরা তো দেবতা হচ্ছো। এর জন্য এই নিয়ম পালন করতে হবে। যত ভালো করে নিয়ম পালন করবে, তত তোমার কল্যাণ হবে। ভালো করে নিয়ম পালন করতে গেলে কিছু পরিশ্রম তো হবেই। রাস্তায় যদি খিদে পায় তবে সাথে করে খাবার নিয়ে যাও। যদি কোনো সমস্যা হয়ে যায় কিংবা কোনো উপায় না থাকে, তবে স্টেশনে কারোর কাছ থেকে দুই পাউন্ড রুটি কিনে খাও। কেবল বাবাকে স্মরণ করতে থাকো। এটাকেই যোগবল বলা হয়। এক্ষেত্রে হঠযোগের কোনো ব্যাপার নেই। শরীরকে কখনোই দুর্বল করা উচিত নয়। তবে যজ্ঞ সেবাতে দধীচি ঋষির মতো অস্থি দিতেই হবে, এর মধ্যে হঠযোগের কোনো ব্যাপার নেই। এগুলো সব ভক্তি মার্গের বিষয়। শরীরকে তো সম্পূর্ণ সুস্থ রাখতে হবে। যোগের দ্বারা ২১ জন্মের জন্য স্বাস্থ্যবান হতে হবে। এর অভ্যাস তো এখানেই করতে হবে। বাবা বোঝাচ্ছেন, এতে জিজ্ঞেস করার কিছু নেই। তবে হ্যাঁ, কোনো বড় ব্যাপারে যদি মনে কোনো সংশয় আসে, তবে জিজ্ঞেস করতে পারো। ছোট ছোট বিষয়গুলো বাবাকে জিজ্ঞেস করলে কত সময় নষ্ট হয়। বড় বড় ব্যক্তিরা তো কম কথা বলে। শিববাবাকে বলা হয় সদগতি দাতা। রাবণকে তো সদগতি দাতা বলা হয় না। যদি তাই হবে তাহলে তাকে পোড়ানো হয় কেন? বাচ্চারা মনে করে - রাবণ কতো বিখ্যাত ব্যক্তি। হয়তো রাবণের মধ্যেও অনেক শক্তি রয়েছে, কিন্তু সে তো শত্রু। অর্ধেক কল্প ধরে রাবণের রাজত্ব চলে। কিন্তু কখনো কি কাউকে তার গুনগান করতে শুনেছো? কিছুই শোনোনি। তোমরা জানো যে ৫ বিকারকে রাবণ বলা হয়। সাধু-সন্তরা পবিত্র থাকে বলে তাদের গুনগান করা হয়। এখন তো সকল মানুষই পতিত। যেকোনো ব্যক্তিই আসুক না কেন, মনে করো খুব বড় কোনো ব্যক্তি এসে বাবার সাথে দেখা করতে চাইল। বাবা তাকে কি জিজ্ঞেস করবেন ? এটাই জিজ্ঞেস করবেন যে রাম-রাজ্য আর রাবণ-রাজ্যের ব্যাপারে কি কখনো শুনেছো? মানুষ এবং দেবতাদের কথা শুনেছো? এখন মানুষের রাজত্ব চলছে না কি দেবতাদের? মানুষ কারা আর দেবতা কারা? দেবতারা কোন্ রাজত্বে ছিল? দেবতারা তো সত্যযুগেই ছিল। সেখানে রাজা-রানী যেরকম ছিলেন, প্রজারাও সেইরকম ছিল। তোমরা জিজ্ঞেস করতে পারো যে এই দুনিয়াটা নতুন না কি পুরানো? সত্যযুগে কাদের রাজত্ব ছিল? এখন কাদের রাজত্ব চলছে। ছবি তো সামনেই রয়েছে। ভক্তি কি আর জ্ঞান কি? স্বয়ং বাবা-ই এগুলো বসে থেকে বোঝান। যে বাচ্চা বলে - বাবা, ধারণা হচ্ছে না, তাকে বাবা বলেন - আরে, বাবা এবং উত্তরাধিকারের বিষয়টা তো সহজ। অল্ফ অর্থাৎ বাবা বলছেন - আমাকে স্মরণ করলেই উত্তরাধিকার পেয়ে যাবে। ভারতে শিব জয়ন্তী পালিত হয়। কিন্তু তিনি কবে ভারতে এসে স্বর্গ বানিয়েছিলেন ? মানুষ জানে না যে এই ভারত-ই আগে স্বর্গ ছিল, ভুলে গেছে। তোমরাও বলবে যে আমরাও আগে জানতাম না যে আমরা স্বর্গের মালিক ছিলাম। এখন বাবার দ্বারা আমরা পুনরায় দেবতা হচ্ছি। আমিই তোমাদেরকে বোঝাচ্ছি। এক সেকেন্ডে জীবন মুক্তির গায়ন রয়েছে। কিন্তু এই কথাটার অর্থ তো কেউই বোঝে না। এক সেকেন্ডেই তোমরা স্বর্গের পরী হয়ে যাও। এটাকে ইন্দ্র সভাও বলা হয়। ওরা মনে করে ইন্দ্র-ই বৃষ্টিপাত করায়। যারা বৃষ্টিপাত করাবে, তাদের কি এইরকম সভা হওয়া সম্ভব ? ইন্দ্রলোক, ইন্দ্রসভা কতো কিছুই না বলে দেয়। এখন পুনরায় পুরুষার্থ করছে। এটা তো পড়াশুনা। ব্যারিস্টারি পড়লে ওরা মনে করে যে কালকে আমি ব্যারিস্টার হব। তোমরাও আজকে পড়াশুনা করছো আর কালকে এই শরীরটা ত্যাগ করার পরে নিজের রাজত্বে গিয়ে জন্ম নেবে। তোমরা ভবিষ্যতের জন্য পুরষ্কার পাও। এখানে পড়াশুনা করে আমরা চলে যাব। তারপর সত্যযুগে আমরা জন্ম নেবো। লক্ষ্যই হলো রাজকুমার, রাজকুমারী হওয়া। কারণ এটা হলো রাজযোগ। কেউ কেউ বলে - বাবা, আমার বুদ্ধি খুলছে না। এটা তো তোমার ভাগ্য। ড্রামা তে এইরকম ভূমিকা রয়েছে। বাবা ওটাকে কিভাবে চেঞ্জ করবেন। সকলেই স্বর্গের মালিক হওয়ার দাবিদার। কিন্তু তাদের মধ্যে ক্রম তো অবশ্যই থাকবে। এমন তো নয় যে সকলেই সকলেই সম্রাট হয়ে যাবে। অনেকে বলে - ঈশ্বরীয় শক্তির দ্বারা তো সবাইকেই সম্রাট বানিয়ে দেওয়া যায়। কিন্তু তাহলে প্রজা আসবে কোথা থেকে। এটা তো বোঝার বিষয়। এই লক্ষ্মী-নারায়ণের রাজত্ব ছিল। এখন তো কেবল নামেই মহারাজা-মহারানী আছে। অনেককে উপাধি দেওয়া হয়। কয়েক লাখ টাকা দিলেই রাজা-রানীর উপাধি পাওয়া যায়। তারপর আচার আচরণও সেইরকম রাখতে হয়। তোমরা বাচ্চারা জানো যে আমরা এখন শ্রীমৎ অনুসারে চলে আমাদের রাজত্ব স্থাপন করছি। সেখানে সকলেই সুন্দর এবং গৌর বর্ণের হবে। এই লক্ষ্মী-নারায়ণের রাজত্ব ছিল। শাস্ত্রে কল্পের আয়ু কয়েক লক্ষ বছর লিখে দেওয়ার জন্য মানুষ সবকিছু ভুলে গেছে। এখন তোমরা শ্যাম থেকে সুন্দর হওয়ার জন্য পুরুষার্থ করছ। দেবতারা কি কখনো কালো হবে? কৃষ্ণকে কালো আর রাধাকে ফর্সা দেখানো হয়। কিন্তু সুন্দর হলে তো দুজনেই সুন্দর হবে। তারপর কাম চিতাতে চড়ে দুজনেই কালো হয়ে যায়। ওখানে ওরা সুন্দর জগতের মালিক ছিল। এখানে এটা হলো কালো জগৎ। বাচ্চারা, তোমাদের তো এক নম্বর আন্তরিক ভাবে খুশি থাকতে হবে, আর দুই নম্বর দিব্যগুণ ধারণ করতে হবে। কেউ কেউ বলে - বাবা, বিড়ির নেশা ছাড়তে পারি না। বাবা বলবেন - আচ্ছা, ভালো করে খাও। কেউ জিজ্ঞেস করলে তাকে কি বলা যাবে ! নিয়ম অনুসারে চলতে না পারলে পড়ে যাবে। নিজেকেই বুঝতে হবে। আমরা তো দেবতা হচ্ছি। তাহলে আমাদের চাল চলন, খাওয়া দাওয়া কেমন হওয়া উচিত ! সবাই লক্ষ্মী-নারায়ণকে বিয়ে করতে চায়। আচ্ছা, নিজের মধ্যেই দেখো যে, ওইরকম গুণ কি আছে? আমি তো বিড়ি খাই, তাহলে নারায়ণ কিভাবে হবো? এই বিষয়ে নারদের একটা গল্প আছে। তবে নারদের মাধ্যমে তো কেবল একজনের কথা বলা হয়নি। সকল মানুষই ওইরকম ভক্ত (নারদ)। বাবা বলছেন - বাচ্চারা, আমার ভবিষ্যতের দেবতারা, তোমরা অন্তর্মুখী হয়ে নিজের সাথে কথা বলো যে আমরা তো দেবতা হচ্ছি, তাই আমাদের চাল-চলন কেমন হওয়া উচিত? আমরা যেহেতু দেবতা হচ্ছি, তাই মদ্যপান-ধূমপান করতে পারিনা, বিকারের বশীভূত হতে পারিনা, কোনো পতিত ব্যক্তির হাতে খেতে পারি না। নয়তো স্থিতির ওপরে তার প্রভাব পড়বে। বাবা নিজে বসে থেকে এইসব বিষয় বোঝান। ড্রামার রহস্যকে কেউই জানে না। এটা তো নাটক। সকলেই যে যার ভূমিকা পালন করছে। আমরা আত্মারা ওপর থেকে আসি। দুনিয়ার সকল আত্মাকেই পার্ট প্লে করতে হবে। প্রত্যেকের নিজস্ব নিজের পার্ট রয়েছে। অসংখ্য অ্যাক্টর রয়েছে, সবাই পার্ট প্লে করছে। এটা হলো ভ্যারাইটি ধর্মের বৃক্ষ। যে গাছে কেবল আম হয়, তাকে ভ্যারাইটি গাছ বলা যাবে না। ওতে তো কেবল আম-ই হয়। এই বৃক্ষ হলো মনুষ্য সৃষ্টির বৃক্ষ। এর নাম - ভ্যারাইটি ধর্মের বৃক্ষ। বীজ তো একটাই, কিন্তু মানুষের ভ্যারাইটি দেখো কত রকমের। সবাই আলাদা, আলাদা। বাবা বসে থেকে এইগুলো বোঝাচ্ছেন। মানুষ তো কিছুই জানে না। বাবা-ই মানুষের বুদ্ধিকে পরশসম বানিয়ে দেন। তোমরা বাচ্চারা জানো যে এই পুরানো দুনিয়ায় তো আর মাত্র কয়েকটা দিন। আগের কল্পের মতো এই কল্পেও চারা লাগানো হচ্ছে। ভালো প্রজা, সাধারণ প্রজাদের চারাও রোপণ করা হচ্ছে। এখানেই রাজধানী স্থাপন হচ্ছে। বাচ্চাদেরকে সকল বিষয়তেই বুদ্ধি খাটাতে হয়। এমন নয় যে মুরলী না শুনলেও চলবে। এখানে বসে থেকেও বুদ্ধি বাইরের দিকে চলে যায়। এমন অনেকে আছে যারা সামনে বসে মুরলী শোনার সময়ে খুব খুশি হয়। মুরলী শোনার জন্য বাড়ি থেকে পালিয়ে আসে। স্বয়ং ভগবান পড়াচ্ছেন। এইরকম ক্লাস কি মিস্ করা উচিত? টেপ-এর মধ্যে তো হুবহু রেকর্ড হয়। ওটাও শুনতে হবে। কোনো ধনী ব্যক্তি যদি কিনে আনে তবে গরিবরাও শুনতে পারবে। কতোজনের কল্যাণ হবে। গরিব বাচ্চারাও নিজেদের ভাগ্যকে শ্রেষ্ঠ বানাতে পারে। বাবা তো বাচ্চাদের জন্য বাড়ি বানাচ্ছেন। গরিব বাচ্চারাও মানি-অর্ডার করে দেয়। বলে - বাবা, এটা দিয়ে একটা ইট কিনে বাড়ি বানানোর কাজে লাগিয়ে দেবে আর এক টাকা যজ্ঞসেবায় দিয়ে দেবে। আবার অনেকে আছে যারা পুরো ভাণ্ডার ভর্তি করে দেয়। মানুষ হাসপাতাল ইত্যাদি বানানোর জন্য কতো খরচা করে। ধনী ব্যক্তিরা সরকারকে অনেক সাহায্য করে। পরিবর্তে তারা কি পায়? ক্ষণিকের সুখ ভোগ করে। এখানে তোমরা যা কিছু করছো, সব ২১ জন্মের জন্য। দেখছ যে বাবা তো সবকিছুই দিয়েছেন, বিশ্বের প্রথম মালিক হয়েছিলাম। ২১ জন্মের জন্য এইরকম চুক্তিতে কে না রাজি হবে? তাইতো তাঁকে ভোলানাথ বলা হয়। এটা এই সময়ের কথা। তিনি কতোই না ভোলা। বলছেন - যা কিছু করার আছে এখনই করে নাও। কতো গরিব বাচ্চারা আছে। জামা-কাপড় সেলাই করে পেট চালায়। বাবা জানেন যে এইসব বাচ্চারা খুব উঁচু পদ পাবে। সুদামার উদাহরণ তো এইজন্যই রয়েছে। এক মুঠো চালের বিনিময়ে ২১ জন্মের জন্য মহল পেয়ে যায়। তোমরা পুরুষার্থের ক্রম অনুসারে এইসব কথা জানো। বাবা বলছেন, আমি হলাম ভোলানাথ। এই ঠাকুরদাদা (ব্রহ্মাবাবা) তো ভোলা নন। ইনিও বলছেন যে ভোলানাথ হলেন শিববাবা। তাই তাঁকে সওদাগর, রত্নাকর, জাদুগর বলা হয়। তোমরা বিশ্বের মালিক হয়ে যাও। এখন তো ভারত কাঙাল হয়ে গেছে। প্রজারা ধনী আর গভর্নমেন্ট গরিব হয়ে গেছে। তোমরা এখন বুঝেছ যে ভারত কতো শ্রেষ্ঠ ছিল ! স্বর্গ ছিল। তার নিদর্শনও রয়েছে। সোমনাথের মন্দির কতো হীরে-মানিকে সুসজ্জিত ছিল। পরে উট বোঝাই করে নিয়ে গেছে। তোমরা বাচ্চারা জানো যে এই দুনিয়ার পরিবর্তন এখন অবশ্যই হবে। এর জন্য তোমরা প্রস্তুত হচ্ছ। যে করবে, সে পাবে। মায়া অনেক বিরোধিতা করে। তোমরা হলে ঈশ্বরের অনুগামী। বাকি সবাই রাবণের দাস। তোমরা শিববাবার সন্তান। শিববাবা তোমাদেরকে উত্তরাধিকার দেন। বাবার কথা ছাড়া আর অন্য কোনো বিষয় বুদ্ধিতে আসা উচিত নয়। আচ্ছা।

মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) অন্তর্মুখী হয়ে নিজের সঙ্গে কথা বলতে হবে - যেহেতু আমরা দেবতা হব, তাই আমাদের আচার আচরণ কেমন হওয়া উচিত ! কোনো অশুদ্ধ খাদ্যাভ্যাস নেই তো !

২ ) ২১ জন্মের জন্য নিজের ভবিষ্যৎকে শ্রেষ্ঠ বানাতে হলে সুদামার মতো যা কিছু আছে, সেইসব ভোলানাথ বাবার হাতে দিয়ে দাও। পড়াশুনার ক্ষেত্রে কোনো অজুহাত দিও না।

বরদান:-
আদি আর অনাদি স্বরূপের স্মৃতির দ্বারা নিজের স্বধর্মকে ধারণকারী পবিত্র আর যোগী ভব

ব্রাহ্মণদের নিজ স্বধর্ম হল পবিত্রতা, অপবিত্রতা হল পরধর্ম। যে পবিত্রতাকে ধারণ করতে সাধারণ মানুষ অসম্ভব মনে করে সেটা তোমাদের কাছে খুবই সহজ কেননা এখন স্মৃতিতে এসে গেছে যে আমাদের বাস্তবিক আত্ম স্বরূপ হল সদা পবিত্র। অনাদি স্বরূপ হলো পবিত্র আত্মা আর আদি স্বরূপ হলো পবিত্র দেবতা। এখনকার অন্তিম জন্মও হল পবিত্র ব্রাহ্মণ জীবন, এইজন্য পবিত্রতাই হল ব্রাহ্মণ জীবনের পার্সোনালিটি। যে পবিত্র, সে-ই হলো যোগী।

স্লোগান:-
সহজযোগী বলে আলস্য নিয়ে এসো না, শক্তি রূপ হও।

অব্যক্ত ঈশারা :- আত্মিক স্থিতিতে থাকার অভ্যাস করো, অন্তর্মুখী হও

বলা হয়ে থাকে - “অন্তর্মুখী সদা সুখী”। তাদেরকে কোনও বাইরের আকর্ষণ আকর্ষিত করতে পারবে না। কখনও মনমত, কখনও পরমত আকর্ষিত করতে পারবে না। অন্তর্মুখী সদা সুখী থাকে, সুখদাতার বাচ্চা মাস্টার সুখদাতা হবে, বাহিরমুখী থেকে মুক্ত হবে।