17.07.2024 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা - শরীরকে না দেখে আত্মাকে দেখো, নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করে আত্মার সঙ্গে কথা বলো, এই অবস্থাকে মজবুত করতে হবে, এটাই হলো অত্যন্ত উচু লক্ষ্য"

প্রশ্নঃ -
তোমরা আত্মারূপী বাচ্চারা বাবার সঙ্গে উপরে (পরমধাম ঘরে) কখন যাবে?

উত্তরঃ  
যখন একটুও অপবিত্রতা থাকবে না। বাবা যেমন পিওর, তোমরাও যখন পিওর হবে তখন উপরে যেতে পারবে। এখন তোমরা বাচ্চারা বাবার সামনে রয়েছো। জ্ঞান সাগরের কাছে জ্ঞান শুনে শুনে যখন ফুল (পরিপূর্ণ) হয়ে যাবে, বাবার সব নলেজ নিয়ে খালি করে দেবে, তখন তিনিও শান্ত (চুপ হয়ে যাবেন) হয়ে যাবেন এবং তোমরা বাচ্চারাও শান্তিধামে চলে যাবে। সেখানে জ্ঞান বর্ষণ বন্ধ হয়ে যায়। সব কিছু দান করার পরে পুনরায় ওঁনার পার্ট হয়ে যায় সাইলেন্সের।

ওম্ শান্তি ।
শিব ভগবানুবাচ। যখন শিব ভগবানুবাচ বলা হয় তখন বুঝে নেওয়া উচিত - একমাত্র শিব হলেন ভগবান বা পরমপিতা। তাঁকেই তোমরা আত্মারূপী বাচ্চারা স্মরণ করো। পরিচয় প্রাপ্ত করেছো রচয়িতা পিতার কাছে। সে তো অবশ্যই সবাই নম্বর অনুযায়ী পুরুষার্থ অনুসারে স্মরণ করবে। সবাই একরস ভাবে স্মরণ করবে না। এই কথাটি হলো খুবই সূক্ষ্ম। নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করে অন্যদেরও আত্মা ভেবে চলা, এই অবস্থাতে মজবুত হতে সময় লাগে। মানুষ তো কিছুই জানে না। না জানার দরুন সর্বব্যাপী বলে দিয়েছে। যেরকম তোমরা বাচ্চারা নিজেকে আত্মা মনে করে, বাবাকে স্মরণ করো, তেমন করে অন্য কেউ স্মরণ করতে পারবে না । কোনও আত্মার বাবার সঙ্গে যোগ নেই। এইসব কথা হলো অত্যন্ত গূহ্য, সূক্ষ্ম । নিজেকে আত্মা মনে করে বাবাকে স্মরণ করতে হবে। বলাও হয় যে আমরা আত্মারা হলাম ভাই-ভাই। তাই আত্মাকেই দেখা উচিত। শরীর দেখা উচিত নয়। এ হলো অত্যন্ত উচু লক্ষ্য। অনেকে এমনও আছে যারা বাবাকে কখনও স্মরণ করে না। আত্মায় ময়লা জমেছে। মুখ্য কথা আত্মাকে নিয়েই। আত্মা-ই এখন তমোপ্রধান হয়েছে, পূর্বে যা সতোপ্রধান ছিল - এই জ্ঞান আত্মায় নিহিত আছে। জ্ঞানের সাগর হলেন পরমাত্মা। তোমরা নিজেদের জ্ঞানের সাগর বলবে না। তোমরা জানো আমাদের বাবার কাছ থেকে সম্পূর্ণ জ্ঞান নিয়ে নিতে হবে । তিনি নিজের কাছে রেখে কি করবেন। অবিনাশী জ্ঞান রত্নের ধন তো বাচ্চাদেরকেই দিতে হবে। বাচ্চারা নম্বর অনুসারে পুরুষার্থ অনুযায়ী গ্রহণ করবে। যারা বুদ্ধিতে বেশি জ্ঞান ধারণ করবে তারা ভালো সার্ভিসও করতে পারবে। বাবাকে জ্ঞানের সাগর বলা হয়। তিনিও আত্মা, তোমরাও আত্মা। তোমরা আত্মারা সম্পূর্ণ জ্ঞান অর্জন করো। যেমন তিনি হলেন এভার পিওর (সদা পবিত্র), তোমরাও এভার পিওর হবে। তারপরে যখন অপবিত্রতা একটুও থাকবে না তখন উপরে চলে যাবে। বাবা স্মরণের যাত্রার যুক্তি শেখান। এই কথা তো তোমরা জানো যে তোমাদের সারা দিন বাবার স্মরণ থাকে না। এখানে বাবা বাচ্চাদের অর্থাৎ তোমাদের সম্মুখে বসে বোঝান, অন্য বাচ্চারা তো সম্মুখে শোনে না। মুরলী পড়ে । এখানে তোমরা সম্মুখে আছো। নিজেকে আত্মা মনে করে বাবাকে স্মরণ করো এবং জ্ঞানও ধারণ করো। আমাদের বাবার মতন সম্পূর্ণ জ্ঞান সাগর হতে হবে। ফুল নলেজ যখন তোমরা বুঝে যাবে, তখন মনে করো যেন বাবাকে নলেজ থেকে খালি করে দেবে, তিনি তখন শান্ত হয়ে যাবেন (চুপ করে যাবেন) । এই রকম নয় যে তাঁর অন্তরে জ্ঞান টিপ টিপ পড়তে থাকবে। সব কিছু দান করে দিলে তখন তাঁর পার্ট হয়ে যাবে সাইলেন্সের। যেমন তোমরা সাইলেন্সে থাকলে তখন তোমাদের জ্ঞান টপটপ করবে কি? এই কথাও বাবা বুঝিয়েছেন যে, আত্মা সংস্কার নিয়ে যায়। সে যদি কোনও সন্ন্যাসীর আত্মা হয় তবে বাল্যকাল থেকেই তার শাস্ত্র মুখস্থ থাকবে। তখন তার খুব সুনাম হবে। এখন তোমরা এসেছো নতুন দুনিয়ায় যাওয়ার জন্য। সেখানে তো জ্ঞানের সংস্কার নিয়ে যেতে পারবে না। এই সংস্কার সব মার্জ হয়ে যায়। এছাড়া আত্মাদের নিজের নিজের সিটে নিতে হবে নম্বর অনুযায়ী পুরুষার্থ অনুসারে। তারপরে তোমাদের শরীরের আধারে নামকরণ হয়। শিববাবা তো হলেন নিরাকার। তিনি বলেন আমি এই দেহের অর্গান লোন হিসেবে নিয়েছি। তিনি তো শুধু জ্ঞান শোনাতে আসেন। তিনি জ্ঞান শোনেন না, কারণ তিনি তো নিজেই হলেন জ্ঞানের সাগর, তাইনা। শুধু মুখ দিয়ে তিনি মুখ্য কাজটি করেন। আসেন শুধুমাত্র পথ বলে দিতে। তিনি শুনে কি করবেন। তিনি সর্বদা শোনান যে এমন এমন করো। সম্পূর্ণ কল্পবৃক্ষের রহস্য বলে দেন। বাচ্চারা, তোমাদের বুদ্ধিতে আছে যে নতুন দুনিয়া তো খুব ছোট হবে। এই পুরানো দুনিয়া তো কত বড়। পুরো দুনিয়ায় কত লাইট জ্বলে। লাইট দিয়ে কত কিছু হয়। সেখানে তো দুনিয়াও ছোট হবে, লাইটও কম থাকবে। যেন একটি ছোট গ্রাম। এখন তো কত বড় বড় গ্রাম আছে। সেখানে এতখানি থাকবে না। কয়েকটি মুখ্য মুখ্য রাস্তা থাকবে। ৫ তত্ত্বও সেখানে সতোপ্রধান হবে। কখনও চঞ্চল হবে না। সুখধাম বলা হয়। তার নামই হলো হেভেন। ভবিষ্যতে তোমরা যত সমীপে আসতে থাকবে তত বৃদ্ধি হতে থাকবে। বাবাও সাক্ষাৎকার করাতে থাকেন। তখন সেই সময় যুদ্ধে সৈন্য বাহিনী বা প্লেন ইত্যাদির প্রয়োজন থাকবে না। তারা তো বলে আমরা এখানে বসে সবাইকে শেষ করতে পারি। তখন এই প্লেন ইত্যাদি কিছুই কাজে লাগবে না। তখন এই চাঁদে বা অন্য গ্রহ ইত্যাদিতে প্লট দেখতেও যাবে না। এইসবই হলো ফালতু, কেবল বিজ্ঞানের অহংকার । কত কত শো করছে । জ্ঞানে কত সাইলেন্স রয়েছে, একে ঈশ্বরের উপহার বলা হয়। বিজ্ঞানে শুধু নানান রকমের উথালপাতাল । তারা শান্তি কি তা জানে না।

তোমরা বুঝেছো যে, বিশ্বে শান্তি তো নতুন দুনিয়ায় ছিল, সেটা হলো সুখধাম। এখন তো দুঃখ অশান্তি । এই কথাও বোঝাতে হবে, তোমরা শান্তি চাও, কখনও অশান্তি হবেই না, সে তো আছে শান্তিধাম ও সুখধামে । স্বর্গ তো সবাই চায়। ভারতবাসী-ই বৈকুণ্ঠ বা স্বর্গ-কে স্মরণ করে। অন্য ধর্মের মানুষ স্বর্গ-কে স্মরণ করে না। তারা শুধু শান্তিকে স্মরণ করবে। সুখকে তো স্মরণ করতে পারবে না। নিয়মেই নেই। সুখকে তো তোমরাই স্মরণ করো, তাই তো আহ্বান করো - আমাকে দুঃখ থেকে লিবারেট (উদ্ধার) করো। আত্মারা হলো আসলে শান্তিধামের বাসিন্দা। এই কথাও কেউ জানে না। বাবা বোঝান তোমরা অবুঝ ছিলে। অবুঝ কবে হয়েছো? ১৬ কলা থেকে ১২-১৪ কলায় যবে থেকে যেতে থাকো, অর্থাৎ অবুঝ হয়ে যাও। এখন কোনও কলা নেই। মানুষ কনফারেন্স করতে থাকে। নারীদের এত দুঃখ কেন? আরে, সম্পূর্ণ দুনিয়াটাই তো দুঃখে আছে। অপরিসীম দুঃখ । এবারে বিশ্বে শান্তি হবে কিভাবে? এখন তো অসংখ্য ধর্ম রয়েছে । সম্পূর্ণ বিশ্বে শান্তি তো এখন হতে পারবে না। সুখ-কে তো জানেই না। তোমরা কন্যারা বসে বোঝাবে এই দুনিয়ায় অনেক প্রকারের দুঃখ রয়েছে, অশান্তি রয়েছে! আমরা আত্মারা যেখান থেকে এসেছি, সেটা হলো শান্তিধাম এবং যেখানে এই আদি সনাতন দেবী-দেবতা ধর্ম ছিল, সেটা হলো সুখধাম। আদি সনাতন হিন্দু ধর্ম বলা হবে না। আদি অর্থাৎ প্রাচীন। সেটা তো ছিল সত্যযুগে। সেই সময় সবাই ছিল পবিত্র। সেটা হলো নির্বিকারী দুনিয়া, বিকারের নামও থাকে না। তফাৎ রয়েছে, তাইনা। সর্ব প্ৰথমে নির্বিকারী অবস্থা চাই তাইনা, সেইজন্য বাবা বলেন মিষ্টি মিষ্টি বাচ্চারা, কাম এর উপরে বিজয় প্রাপ্ত করো। নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করো। এখন আত্মা হলো অপবিত্র, আত্মায় খাদ পড়েছে তাই গহনাও (শরীর) এমন তৈরি হয়েছে। আত্মা পবিত্র হলে গয়নাও পবিত্র হবে। স্বর্গকে ভাইসলেস ওয়ার্ল্ড (নির্বিকারী দুনিয়া) বলা হয়। বট বৃক্ষের দৃষ্টান্ত (শিবপুরের) তোমরা দিতে পারো। সম্পূর্ণ বৃক্ষটি দাঁড়িয়ে রয়েছে, কিন্তু ফাউন্ডেশন (মূল শেকড়) যেটা সেটা নেই। এই আদি সনাতন দেবী-দেবতা ধর্ম নেই অন্য সব ধর্ম দাঁড়িয়ে রয়েছে । সবাই হলো অপবিত্র, এদেরকে বলা হয় মানুষ । তাঁরা হলেন দেবতা। আমি মানুষকে দেবতায় পরিণত করতে এসেছি। ৮৪ জন্ম মানুষেরই হয়। সিঁড়ির চিত্র দেখাতে হবে যে, যখন তমোপ্রধান হতে থাকে তখন হিন্দু বলা হয়। দেবতা বলতে পারে না। কারণ পতিত হয়েছে। ড্রামাতে এই রহস্যটি রয়েছে, তাইনা। না হলে হিন্দু কোনও ধর্ম নয়। আদি সনাতন আমরা-ই দেবী-দেবতা ছিলাম। ভারত পবিত্র ছিল, এখন অপবিত্র হয়েছে। তাই নিজেদের হিন্দু বলে দিয়েছে। হিন্দু ধর্ম তো কেউ স্থাপন করেনি। এই কথাটি বাচ্চাদের ভালো ভাবে ধারণ করে বোঝাতে হবে। আজকাল তো এত সময় দেওয়া হয় না। কম পক্ষে আধ ঘন্টা সময় দিলে তো পয়েন্ট শোনানো যায়। পয়েন্ট তো অনেক আছে। তার মধ্যেও প্রধান প্রধান পয়েন্ট শোনানো হয়। পড়াশোনায় যেমন ভাবে পড়তে পড়তে এগিয়ে যেতে থাকে তখন হাল্কা পড়া গুলো যেমন অল্ফ-বে ইত্যাদি (অ আ ক খ...) কি স্মরণে থাকে? সেসব ভুলে যায়। তোমাদেরও বলা হয় এখন তোমাদের জ্ঞান বদল হয়েছে। আরে, পড়াশোনাতে যত উপরে যাবে প্রথম পাঠ তো ভুলেই যাবে তাইনা। বাবাও আমাদের প্রতিদিন নতুন নতুন কথা শোনান। প্ৰথমে পড়াশোনা হাল্কা ছিল, এখন বাবা গুহ্য গুহ্য কথা শোনাতে থাকেন । তিনি হলেন জ্ঞানের সাগর, তাইনা। জ্ঞান শোনাতে শোনাতে পরে দুটি শব্দের এসে যান যে, অল্ফকে বুঝে গেলে সেটাও যথেষ্ট। অল্ফ-কে (পিতাকে) জানলে বে অর্থাৎ বাদশাহীর (রাজত্বের) কথা তো জেনেই নেবে। এতটুকু বোঝালেও ঠিক আছে। যারা বেশি জ্ঞান ধারণ করতে পারবে না তারা উঁচু পদের অধিকারীও হতে পারবে না। পাস উইথ অনার হতে পারবে না। কর্মাতীত অবস্থাও প্রাপ্ত করতে পারবে না, এতেই খুব পরিশ্রম চাই। স্মরণেও পরিশ্রম রয়েছে । জ্ঞান ধারণ করারও পরিশ্রম রয়েছে । দুটোতেই সবাই যদি দক্ষ হয়ে যাবে সেটাও তো সম্ভব নয়। রাজধানী স্থাপন হচ্ছে। সবাই নর থেকে নারায়ণ কিভাবে হবে। এই গীতা পাঠশালার এইম অব্জেক্ট হল এটাই। সেটাই হলো গীতা জ্ঞান। সে জ্ঞান কে প্রদান করেন, এই কথা তোমরা ছাড়া আর কেউ জানেই না। এখন হলো কবরখানা (কবরস্তান) এরপর পরিস্তান হবে।

এখন তোমাদের জ্ঞান চিতায় বসে পূজারী থেকে পূজ্য অবশ্যই হতে হবে। বিজ্ঞানীরা কত দক্ষ হয়ে উঠছে । ইনভেনশন করতেই থাকছে। কিছু ভারতবাসী অনেক স্কীলস্ ওখান থেকেই শিখে আসবে। তারা যখন শেষের দিকে আসবে, জ্ঞানকে তারা তেমন একটা গ্রহণ করবে না। কিন্তু স্বর্গে এসে এই ইঞ্জিনিয়ারিং ইত্যাদির কাজ করবে। রাজা-রানী তো হতে পারবে না, রাজা-রানীর সামনে সার্ভিস করবে। নানান রকমের ইনভেনশনস্ বের করতে থাকবে। রাজা-রানী হয় সুখের জন্য। সেখানে তো সর্ব সুখ প্রাপ্ত হয়। সুতরাং বাচ্চাদের পুরুষার্থ পুরোপুরি করা উচিত। সম্পূর্ণ পাশ হয়ে কর্মাতীত অবস্থা প্রাপ্ত করতে হবে। শীঘ্র ফিরে যাওয়ার চিন্তা করা উচিত নয়। এখন তোমরা হলে ঈশ্বরীয় সন্তান। বাবা পড়াচ্ছেন। এই মিশন হলো মানুষকে চেঞ্জ করার। যেমন বৌদ্ধ বা খ্রীষ্টানদের মিশন হয়, তাই না। কৃষ্ণ এবং খ্রীষ্টান শব্দ দুটো বেশ কাছাকাছি শোনায় । উভয়ের মধ্যে আদান-প্রদানের অনেক কানেকশন রয়েছে। যে এতখানি অনেক সাহায্য করে, তাদের ভাষা ইত্যাদি ত্যাগ করা এও তো এক প্রকারের ইনসাল্ট। তারা তো আসেই শেষের দিকে। না খুব সুখ ভোগ করে, না দুঃখ। সব ইনভেনশন তারা-ই করে। এখানে যদিও তারা চেষ্টা করে কিন্তু অ্যাকুরেট তৈরি করতে পারবে না। বিদেশের জিনিস বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই ভালো হয়ে থাকে। তারা সততার সাথে তৈরি করে। এখানে ডিস-অনেস্টির সাথে তৈরী করে। এখানে হলো অপরিসীম দুঃখ । সকলের দুঃখ দূর করতে পারেন একমাত্র বাবা, তিনি ছাড়া অন্য কোনো মানুষের সামর্থ্য নেই। যতই কনফারেন্স (সম্মেলন) ইত্যাদি করা হোক যে, বিশ্বে শান্তি হোক, কিন্তু ধাক্কা খেতেই থাকে। শুধু মাতা-দের দুঃখের কথা নয়, এখানে তো অনেক প্রকারের দুঃখ রয়েছে । সম্পূর্ণ দুনিয়ায় ঝগড়াঝাঁটি, লড়াই ইত্যাদির কথা সব। পাই পয়সার কথায় মারামারি করে। সেখানে তো দুঃখের কথাও নেই। এইসবও হিসেব করা উচিত। লড়াই যখন তখন আরম্ভ হয়ে যেতে পারে। ভারতে যবে থেকে রাবণের আগমন হয় তখন প্ৰথমে ঘরে ঘরে লড়াই শুরু হয়। একে অপরের থেকে আলাদা হতে থাকে, নিজেদের মধ্যেই লড়াই করে মরে, তারপরে বাইরের মানুষ আসে। প্ৰথমে ব্রিটিশ সরকার ছিল না, পরে তারা এসে টাকা কড়ির লোভ দিয়ে নিজেরা রাজত্ব করে গেছে। কত তফাৎ হয়ে যায় - রাত-দিনের। নতুন কেউ তো কিছুই বুঝবে না। নতুন নলেজ কিনা, যা পরে প্রায় লুপ্ত হয়ে যায়। বাবা নলেজ দেন, যা লুপ্ত হয়ে যায়। এই একটি মাত্র পড়াশোনা, একটি বার, একমাত্র বাবার কাছ থেকেই প্রাপ্ত হয়। ভবিষ্যতে তোমাদের সবার সাক্ষাৎকার হতে থাকবে যে তোমরা এমন হবে। কিন্তু তখন কিই বা করণীয় থাকবে। আর উন্নতি করতে পারবে না। রেজাল্ট বেরিয়ে গেলে তখন ট্রান্সফার হওয়ার সময় এসে যাবে। তখন কাঁদবে, চিৎকার করবে। আমরা নতুন দুনিয়ায় প্রবেশ করবো। তোমরা পরিশ্রম করো, চারিদিকে যেন খবর পৌঁছায়। তখন নিজের থেকে সেন্টারে ছুটে আসবে। কিন্তু যত দেরি হবে ততই টু লেট হতে থাকবে। তখন আর কিছু জমা করতে পারবে না। টাকা পয়সার প্রয়োজন থাকবে না। বোঝানোর জন্য তোমাদের এই ব্যাজ-ই হবে যথেষ্ট। ইনিই হলেন ব্রহ্মা, তিনিই হলেন বিষ্ণু, বিষ্ণুই হলেন সেই ব্রহ্মা। এই ব্যাজ হলো এমন যাতে সকল শাস্ত্রের সার তত্ত্ব এতেই রয়েছে । বাবা ব্যাজের খুব গুণগান করেন। একটা সময় আসবে যখন সবাই তোমাদের এই ব্যাজকে মাথায় ছোঁয়াবে। মন্মনাভব, এতে আছে - আমাকে স্মরণ করো তাহলে এইরূপ হবে। ইনিই (ব্রহ্মা বাবা) ৮৪ টি জন্ম নেন। একমাত্র বাবা-ই পুনর্জন্ম নেন না। আচ্ছা !

মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) স্মরণ করার পরিশ্রম এবং জ্ঞানের ধারণার দ্বারা কর্মাতীত অবস্থা প্রাপ্ত করার পুরুষার্থ করতে হবে। জ্ঞান সাগরের সম্পূর্ণ নলেজ নিজের মধ্যে ধারণ করতে হবে।

২ ) আত্মায় যে খাদ পড়েছে সেসব দূর করে সম্পূর্ণ ভাইসলেস হতে হবে। একটুও অপবিত্রতার অংশও যেন না থাকে। আমরা আত্মারা হলাম ভাই-ভাই... এই অভ্যাস করতে হবে।

বরদান:-
সময় আর সংকল্পরূপী খাজানার উপরে অ্যাটেনশন দিয়ে জমার খাতা বৃদ্ধি করে পদ্মাপদমপতি ভব

খাজানা তো অনেক আছে কিন্তু সময় আর সংকল্প, বিশেষতঃ এই দুই খাজানার উপরে অ্যাটেনশন দাও। সকল সময় সংকল্প শ্রেষ্ঠ আর শুভ হলে জমার খাতা বৃদ্ধি হতে থাকবে। এই সময় এক জমা করবে তো পদম প্রাপ্ত হবে, হিসেব রয়েছে । এ হলো এক-কে পদমগুণ করে দেওয়ার ব্যাঙ্ক। সেইজন্য যাকিছুই হোক, যদি কিছু ত্যাগ করতে হয়, তপস্যা করতে হয়, নির্মান হতে হয়, যাকিছুই হোক না কেন... এই দুটি বিষয়ের উপরে অ্যাটেনশন থাকলে পদ্মাপদমপতি হয়ে যাবে।

স্লোগান:-
মনোবলের দ্বারা সেবা করো তো তার প্রালব্ধ অনেক অনেক গুণ বেশী প্রাপ্ত হবে।