17.12.2024 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা - তোমরা বাবার কাছে এসেছো নিজেদের সৌভাগ্য তৈরী করতে, সেইসব বাচ্চাদেরই পরম সৌভাগ্য - ঈশ্বর যাদের সবকিছু স্বীকার করেন"

প্রশ্নঃ -
বাচ্চাদের কোন্ একটি ভুলের কারণে মায়া অত্যন্ত বলবান হয়ে যায়?

উত্তরঃ  
বাচ্চারা, আহার করবার সময় বাবাকে ভুলে যায়, বাবাকে না খাওয়ানোর জন্য মায়া ভোজন খেয়ে যায় । যার ফলে সে বলবান হয়ে যায়, আর তারপর বাচ্চাদের-কেই হয়রান (বিরক্ত) করে। এই ছোট একটি ভুল মায়ার কাছে পরাজিত করে দেয়, তাই বাবার আজ্ঞা হলো - বাচ্চারা! স্মরণে থেকে আহার করো। দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করো - তোমার সাথেই খাবো.... যখনই স্মরণ করবে তখনই তিনি রাজী হয়ে যাবেন।

গীতঃ-
আজ নয় তো কাল/ ঝরে পড়বে বাদল......

ওম্ শান্তি ।
বাচ্চারা, মনে করে যে, আমাদের দুর্ভাগ্যের দিন বদল হয়ে গিয়ে এখন সদাকালের জন্য সৌভাগ্যের দিন আসছে। পুরুষার্থের নম্বরের ক্রমানুসারে ভাগ্য পরিবর্তন হতেই থাকে। স্কুলেও তো ভাগ্য পরিবর্তন হতে থাকে, তাই না ! অর্থাৎ উচ্চ হতে থাকে। তোমরা ভালো মতোই জানো যে, এখন এই রাত সমাপ্ত হয়ে যাবে, এখন ভাগ্য পরিবর্তিত হচ্ছে। জ্ঞানের বর্ষা হতেই থাকে। সেন্সীবেল বাচ্চারা মনে করে যে, অবশ্যই আমরা দুর্ভাগ্যশালী থেকে সৌভাগ্যশালী হচ্ছি অর্থাৎ স্বর্গের মালিক হচ্ছি। পুরুষার্থের নম্বরের ক্রমানুসারে আমরা নিজেদের দুর্ভাগ্যকে সৌভাগ্যে পরিণত করছি। এখন রাত থেকে দিন হচ্ছে। বাচ্চারা, এসব তোমরা ব্যতীত কেউ জানেই না। বাবা গুপ্ত, তাই তাঁর কথাও গুপ্ত। অবশ্যই মানুষ বসে সহজ রাজযোগ আর সহজ জ্ঞানের কথা শাস্ত্রে লিখেছে, কিন্তু যারা লিখেছে তারা তো মারা গেছে। বাকি যারা পড়ে, তারা কিছু বুঝতে পারে না। কারণ তারা অবুঝ। কত পার্থক্য। তোমরাও পুরুষার্থের নম্বরের ক্রমানুসারে বোঝ। সকলেই একরকমের (একরস) পুরুষার্থ করে না। কাকে দুর্ভাগ্য, আর কাকে সৌভাগ্য বলা হয় - একথা শুধুমাত্র তোমরা ব্রাহ্মণেরাই জানো। আর সকলে তো গভীর অন্ধকারে রয়েছে। তাদেরকে বুঝিয়ে জাগাতে হবে। সৌভাগ্যশালী বলা হয় সূর্যবংশীদের, ১৬ কলা সম্পূর্ণ তারাই। আমরা বাবার থেকে স্বর্গে যাওয়ার সৌভাগ্য গড়ছি, যে স্বর্গ বাবা রচনা করবেন। ইংরেজী ভাষাভাষী মানুষদেরকেও তোমরা বোঝাতে পারো যে, আমরা হেভেনলী গডফাদারের দ্বারা স্বর্গের সৌভাগ্য তৈরী করছি। স্বর্গে আছে সুখ, নরকে আছে দুঃখ। স্বর্ণযুগ অর্থাৎ সত্যযুগ, সুখ আর লৌহযুগ অর্থাৎ কলিযুগ, দুঃখ। একেবারে সহজকথা। আমরা এখন পুরুষার্থ করছি। ইংরেজ, খ্রীষ্টানাদিরা অনেকেই আসবে। তাদের বলো যে, এখন আমরা শুধু একজন হেভেনলী গডফাদার-কেই স্মরণ করি, কারণ মৃত্যু সম্মুখে উপস্থিত । বাবা বলেন, তোমাদেরকে আমাদের কাছেই আসতে হবে। যেমন, তীর্থে যায় ঠিক তেমনই তাই না। বৌদ্ধদের নিজস্ব তীর্থস্থান রয়েছে, খ্রীষ্টানদের নিজস্ব। প্রত্যেকেরই নিজস্ব রীতি-রেওয়াজ রয়েছে। আমাদের হলো বুদ্ধিযোগের ব্যাপার। যেখান থেকে পার্ট প্লে করতে এসেছি, সেখানেই পুনরায় ফিরে যেতে হবে। তিনি হলেন স্বর্গ স্থাপনকারী গডফাদার। তিনি আমাদের বলেছেন যে, আমি তোমাদেরকে সত্য পথ বলে দিই। বাবা অর্থাৎ গডফাদারকে স্মরণ করো তাহলে অন্তিমকালে যেমন স্থিতি তেমন গতি হবে। যখন কেউ অসুস্থ হয়ে পড়ে তখন সকলে গিয়ে তাকে সাবধান করে বলে যে, রাম নাম জপ করো। বাংলায় যখন কারো মৃত্যু হয় তখন গঙ্গায় নিয়ে যায় আর বলে হরি বোল, হরি বোল.....তাহলেই হরির কাছে চলে যাবে। কিন্তু কেউই যায় না। সত্যযুগে তো কেউ বলবে না যে - রাম-রাম বলো বা হরি বোল বলো। দ্বাপর থেকে পুনরায় এই ভক্তিমার্গ শুরু হয়। এমন নয় যে, সত্যযুগে কোনো ভগবান বা গুরুকে স্মরণ করা হয়। ওখানে তো শুধু নিজ-আত্মাকেই স্মরণ করা হয়, আমরা আত্মারা এক শরীর পরিত্যাগ করে অন্য নেব। নিজেদের রাজত্ব (বাদশাহী) স্মরণে আসে। মনে করে যে, আমরা নিজেদের রাজ্যে গিয়ে জন্ম নেবো। এখন এই দৃঢ় নিশ্চয় রয়েছে, রাজত্ব প্রাপ্ত তো হবেই, তাই না। এছাড়া কাকে স্মরণ করবে বা দান-পুণ্য করবে? দান-পুণ্য করার মতন কোনো গরীব ওখানে থাকেই না। ভক্তিমার্গের রীতি-রেওয়াজ আলাদা, জ্ঞানমার্গের রীতি-রেওয়াজ আলাদা। এখন বাবাকে সবকিছু দিয়ে ২১ জন্মের জন্য (বাবার) উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করেছি। ব্যস্, এখন আর দান-পুণ্য করার প্রয়োজনই নেই। ঈশ্বর অর্থাৎ বাবাকে আমরা সবকিছু দিয়ে দিই। ঈশ্বরই তা স্বীকার (গ্রহণ) করে নেয়। স্বীকার যদি না করে পুনরায় তবে দেবে কিভাবে ? স্বীকার না করা এটাও দুর্ভাগ্য। তথাপি স্বীকার করতে হয় যাতে তাদের মোহ কেটে যায়। বাচ্চারা, এই রহস্যও তোমরা জানো। যখন প্রয়োজনই পড়বে না তখন গ্রহণ কেন করবে? এখানে কিছু জমা করতে হবে না। এখান থেকে সব আকর্ষণ কাটিয়ে ফেলতে হবে।

বাবা বুঝিয়েছেন যে - বাইরে কোথাও গেলে, নিজেকে অত্যন্ত হাল্কা মনে করো। আমরা বাবার বাচ্চা, আমরা আত্মারা রকেটের থেকেও দ্রুতগামী। এমন দেহী-অভিমানী যে, হেঁটে গেলেও কখনো ক্লান্ত হবে না। কারণ দেহের অভিমান আসবে না। যেন হাঁটছি না, আমরা উড়ে চলেছি। তোমরা যেখানেই যাও দেহী-অভিমানী হয়ে যাও। পূর্বে মানুষ তীর্থাদিতে পদব্রজে যেত। সেইসময় মানুষের বুদ্ধি তমোপ্রধান ছিল না। অত্যন্ত শ্রদ্ধার সাথে যেত, ক্লান্ত হয়ে পড়তো না। বাবাকে স্মরণ করলে সাহায্য তো পাবে, তাই না। যদিও সেসব পাথরের মূর্তি কিন্তু বাবা ওইসময় ক্ষণিকের জন্য মনোবাসনা পূর্ণ করে দেয়। সেসময় রজঃপ্রধান স্মরণ ছিল তাতেও শক্তি প্রাপ্ত হতো, ক্লান্ত হয়ে পড়তো না। এখন তো ধনীরা শীঘ্রই ক্লান্ত হয়ে পড়ে। গরীবরা খুব তীর্থে যায়। ধনীরা অতি আড়ম্বরের সাথে ঘোড়া ইত্যাদিতে যায়। গরীবরা তো হেঁটেই চলে যাবে। ভাবনার ভাড়া যত গরীবরা পায় তত ধনীরা পায় না। এইসময়েও তোমরা জানো যে - বাবা গরীবের ভগবান(গরীব নিয়াজ) তাহলে কেন বিভ্রান্ত হয়ে পড়ো? কেন ভুলে যাও? বাবা বলেন - তোমাদের কোনো কষ্ট করতে হবে না। শুধু একমাত্র প্রিয়তম-কেই স্মরণ করতে হবে। তোমরা সকলেই প্রিয়তমা তাই প্রিয়তমকে স্মরণ করতে হবে। সেই প্রিয়তমকে ভোগ অর্পণ না করে ভোজন করে নিতে কী তোমরা লজ্জাবোধ করো না ? তিনি প্রিয়তমও, আবার বাবাও। তিনি বলেন, আমাকে কী ভোজন করাবে না ! তোমাদের তো আমাকে ভোজন করানো উচিত, তাই না। দেখো, বাবা যুক্তি বলে দেন। তোমরা বাবাকে বা প্রিয়তমকে তো মানো, তাই না। যে (আমাদের) ভোজন করায়, প্রথমে তো তাঁকেই ভোজন করানো উচিত। বাবা বলেন, আমাকে ভোগ অর্পণ করে, আমাকে স্মরণ করে আহার গ্রহণ করো। এতেই অনেক পরিশ্রম। বাবা বার-বার বোঝান, বাবাকে স্মরণ অবশ্যই করতে হবে। বাবা নিজেও বার-বার পুরুষার্থ করতে থাকেন। তোমাদের অর্থাৎ কুমারীদের জন্য তো অত্যন্ত সহজ। তোমরা সিঁড়ি চড়ইনি। কন্যাদের তো প্রিয়তমের সঙ্গে বাগদান হয়ই। তাই এমন প্রিয়তমকে স্মরণ করে আহার গ্রহণ করা উচিত। ওঁনাকে আমরা স্মরণ করি আর উনি আমাদের কাছে চলে আসেন। স্মরণ করলে তবেই তিনি (ভোগের) সুবাস গ্রহণ করবেন। তাই এমনভাবেই বাবার সঙ্গে কথা বলা উচিত। তোমাদের এই অভ্যাস হবে রাতে জাগলে। অভ্যাস হয়ে গেলে তখন দিনেও স্মরণে থাকবে। ভোজনের সময়েও স্মরণ করা উচিত। প্রিয়তমের সঙ্গে তোমাদের বাগদান-পর্ব সমাপ্ত হয়ে গেছে। তোমার সাথেই খাবো..... এই দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করতে হবে। যখন স্মরণ করবে তখনই তিনি ভোজন করবেন, তাই না। উনি তো সুবাসই গ্রহণ করেন। কারণ ওনার নিজস্ব শরীর তো নেই। কুমারীদের জন্য তো অতি সহজ, এদের ফেসিলিটিজ্ অনেক। শিববাবা আমাদের অতি সুন্দর প্রিয়তম, কত মিষ্টি। আধাকল্প আমরা তোমাকে স্মরণ করেছি, এখন তুমি এসে মিলেছো ! আমরা যা খাচ্ছি, তুমিও তা খাবে। এমনও নয়, একবার স্মরণ করেছি, ব্যস্, পুনরায় তোমরা নিজেরা ভোজন করতে থাকো। ওনাকে ভোজন করাতে ভুলে যাও। ওনাকে ভুলে গেলে আর ওনাকে আর পাবে না। অনেক জিনিসই তো খাও, খিচুড়ি খাও, আম খাও, মিষ্টি খাও..... এভাবে শুরু থেকে স্মরণ করে পরে (স্মরণ করা) কী বন্ধ করে দেবে? না দেবে না, তাহলে সব জিনিস তিনি কী করে খাবেন। প্রিয়তম যদি ভোজন না করে তাহলে মাঝে মায়া এসে তা খেয়ে যাবে, ওনাকে খেতে দেবে না। আমি দেখি যে, মায়া খেয়ে বলবান হয়ে যায় আর তোমাদের পরাজিত করে। বাবা তোমাদের যুক্তি বলে দেন। বাবাকে স্মরণ করো, তবেই বাবা বা প্রিয়তম সম্পূর্ণ সহায় (রাজী) হয়ে যাবেন। তারা বলে, বাবা তোমার সঙ্গেই বসবো, তোমার সঙ্গেই খাব। আমরা তোমাকে স্মরণ করে খাই। জ্ঞানের মাধ্যমেই তোমরা জেনেছো যে, তিনি তো সুবাসই (শুদ্ধ ভাবনা) গ্রহণ করবেন। এ তো লোন নেওয়া শরীর। স্মরণ করলে তিনি আসেন। তোমাদের স্মরণই সবকিছুর আধার। একে যোগ বলা হয়, যোগেই পরিশ্রম। সন্ন্যাসী ইত্যাদিরা কখনো এভাবে বলবে না। তোমাদের যদি পুরুষার্থ করতে হয় তবে বাবার শ্রীমতকে নোট করো। সম্পূর্ণরূপে পুরুষার্থ করো। বাবা নিজের অনুভব বলেন - যেমন কর্ম আমি করি, তুমিও তেমন করো, আর সেই কর্মই তো আমি তোমাদেরকে শেখাই। বাবাকে কর্ম করতে হয় না। সত্যযুগে কর্মভোগ করতে হয় না। বাবা অত্যন্ত সহজ কথা বোঝান। তোমার সঙ্গেই বসবো, শুনবো, তোমার সঙ্গেই খাবো......এ তোমাদেরই গান। প্রিয়তম-রূপে বা পিতা-রূপে স্মরণ করো। গায়নও রয়েছে, তাই না - বিচারসাগর মন্থন করে জ্ঞানের পয়েন্টস্ বের করতে হবে। এই অভ্যাসের দ্বারা বিকর্মও বিনাশ হবে, সুসাস্থ্যের অধিকারী হবে। সমগ্র দুনিয়াই তো আর স্বর্গের মালিক হবে না। এও হিসেব-নিকেশ।

বাবা অত্যন্ত ভালোভাবে বোঝান। এই সঙ্গীত তো অবশ্যই শুনেছো যে, আমরা এখন (আধ্যাত্মিক) যাত্রায় চলেছি। যাত্রায় আহারাদি তো করতেই হয়, প্রিয়তমা, প্রিয়তমের সঙ্গে, সন্তান তার পিতার সঙ্গে ভোজন করবে। এখানেও এমন হবে। তোমাদের প্রিয়তমের প্রতি যত মনোযোগ বাড়বে, ততই খুশীর পারদ চড়তে থাকবে। নিশ্চয়বুদ্ধির বিজয় হতে থাকবে। যোগ অর্থাৎ দৌঁড়। এ হলো বুদ্ধির দৌড়। আমরা হলাম স্টুডেন্ট, টিচার আমাদের দৌঁড়নো (স্মরণের যাত্রা) শেখান। বাবা বলেন, এটা ভেবো না যে দিনে শুধু কর্মই করতে হবে। কচ্ছপের মতন কর্ম করে পুনরায় স্মরণে বসে যাও। ভ্রমর সারাদিন ভূঁ-ভূঁ করে। তখন কেউ উড়ে যায়, কেউ মরে যায়, সে তো এক উদাহরণ হয়ে যায়। এখানেও তোমরা ভূঁ-ভূঁ করে নিজ-সম তৈরী করো। এরমধ্যে কারো ভালো লাগে, কেউ নষ্ট হয়ে যায়, কেউ অসম্পূর্ণ রয়ে যায়, ভাগন্তী হয়ে যায়। পুনরায় গিয়ে কীটে পরিণত হয়। এইভাবে ভূঁ-ভূঁ করা অত্যন্ত সহজ। 'মানুষ থেকে দেবতা হতে বেশী সময় লাগে না..... '। এখন আমরা যোগযুক্ত হচ্ছি, দেবতা হওয়ার জন্য পুরুষার্থ করছি। এই জ্ঞানই গীতায় ছিল। তিনি মানুষ থেকে দেবতা বানিয়ে গিয়েছিলেন। সত্যযুগে তো সকলেই দেবতা ছিল। অবশ্যই ওনাদের সঙ্গমযুগেই এসে (তিনি) দেবতা বানিয়েছিলেন । ওখানে দেবতা হওয়ার জন্য যে যোগ করা হয় তা শেখানো হবে না। সত্যযুগের প্রারম্ভে দেবী-দেবতা ধর্ম ছিল আর কলিযুগের শেষে আসুরী ধর্ম। একথা শুধুমাত্র গীতাতেই লেখা রয়েছে। মানুষকে দেবতায় পরিণত করতে বিলম্ব হয় না, কারণ এইম অবজেক্ট তৈরী করাই থাকে। ওখানে সমগ্র দুনিয়ায় এক ধর্ম হবে। সমগ্র দুনিয়াই তো হবে, তাই না। এমন নয় যে, চীন, ইউরোপ হবে না, হবে কিন্তু সেখানে মানুষ থাকবে না। শুধুমাত্র দেবতা ধর্মের যারা তারাই থাকবে, অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরা থাকে না। এখন হলো কলিযুগ। আমরা এখন ভগবানের সাহায্যে মানুষ থেকে দেবতায় হতে চলেছি। বাবা বলেন, তোমরা ২১ জন্মের জন্য সদা সুখী হয়ে যাবে। এতে কষ্টের কোনো কথা নেই। ভক্তিমার্গে ভগবানের কাছে যাওয়ার জন্য কত পরিশ্রম করেছি। বলাও হয় যে, নির্বাণধামে চলে গেছে। এমন কখনো বলা হয় না যে, ভগবানের কাছে চলে গেছে। বলা হবে, স্বর্গে গেছে। একজন চলে গেলে তো স্বর্গ তৈরী হবে না। সকলকে যেতে হবে। গীতায় বর্ণিত রয়েছে যে, ভগবান হলেন কালেরও কাল (মহাকাল)। মশার ঝাঁকের মতো সকলকে ফিরিয়ে নিয়ে যায়। বুদ্ধিও বলে যে, চক্র পুনরাবৃত্ত হয়। তাহলে সর্বপ্রথমে অবশ্যই সত্যযুগীয় দেবী-দেবতা ধর্ম রিপীট হবে। পরে আবার অন্যান্য ধর্ম রিপীট হবে। বাবা কত সহজ করে বলেন - 'মন্মনাভব'। ব্যস্, ৫ হাজার বছর পূর্বেও গীতার ভগবান বলেছিলেন - প্রিয় বাচ্চারা! যদি কৃষ্ণ বলে তাহলে অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরা কেউ-ই শুনবে না। ভগবান বললে তখন সকলেরই মনে হবে যে - গডফাদার হেভেন স্থাপন করছে সেখানে পুনরায় আমরা গিয়ে চক্রবর্তী রাজা হবো। এতে কোনো খরচাদির কথা নেই শুধু সৃষ্টির আদি-মধ্য-অন্তকে জানতে হবে।

বাচ্চারা, তোমাদের বিচারসাগর মন্থন করতে হবে । কর্ম করতে-করতেও রাত-দিন এমন পুরুষার্থ করতে থাকো। বিচারসাগর মন্থন না করে বা বাবাকে স্মরণ না করে শুধু যদি কর্ম করতে থাকো, তবে রাতেও সেই চিন্তাভাবনা মনের মধ্যে আসতে থাকবে। যে বাড়ী তৈরী করে তার বাড়ীর চিন্তা ভাবনাই চলে। অবশ্যই বিচার সাগর মন্থন করার রেসপন্সিবিলিটি এনার (ব্রহ্মার) উপরে। কিন্তু বলা হয়, কলস লক্ষ্মীকে দেওয়া হয়েছে, তোমরাই তো লক্ষ্মী হও, তাই না। আচ্ছা।

মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা-রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) শ্রীমতকে নোট করে পুরুষার্থ করতে হবে। বাবা যে কর্ম করতে শিখিয়েছেন, সেটাই করতে হবে। বিচারসাগর মন্থন করে জ্ঞানের পয়েন্টস্ বের করতে হবে।

২ ) নিজের কাছে প্রতিজ্ঞা করতে হবে যে, আমরা বাবার স্মরণে থেকেই খাবার খাবো। তোমার সঙ্গেই বসবো, তোমার সঙ্গেই খাবো...... এই প্রতিজ্ঞা দৃঢ়তার সঙ্গে পালন করতে হবে।

বরদান:-
কর্ম আর সম্বন্ধ দুটোতেই স্বার্থভাব থেকে মুক্ত থেকে বাবার সমান কর্মাতীত ভব

বাচ্চারা, তোমাদের সেবা হলো সবাইকে মুক্ত করা। তো অন্যদেরকে মুক্ত বানাতে গিয়ে নিজেকেই বন্ধনে বেঁধে ফেলো না। যখন লৌকিকের আমার-আমার থেকে মুক্ত হবে তখন অব্যক্ত স্থিতির অনুভব করতে পারবে। যে বাচ্চারা লৌকিক আর অলৌকিক, কর্ম আর সম্বন্ধ দুটোতেই স্বার্থভাব থেকে মুক্ত থাকে তারাই বাবার সমান কর্মাতীত স্থিতির অনুভব করতে পারে। তো চেক করো কর্মের বন্ধন থেকে কতখানি নিজেকে পৃথক করতে পেরেছো? ব্যর্থ স্বভাব-সংস্কারের বশীভূত হওয়া থেকেও মুক্ত।

স্লোগান:-
যে সরলচিত্ত আর সহজ স্বভাবের হয়, সে-ই সহজযোগী, ভোলানাথের প্রিয় ।