18.03.2025 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা - এই সময় তোমাদের এই জীবন খুবই অমূল্য, কারণ তোমরা হদ বা দেহের সীমা থেকে বেরিয়ে বেহদ অর্থাৎ আত্মার অসীম জগতে এসেছো, তোমরা জানো আমরা এই জগতের কল্যাণ করবো"

প্রশ্নঃ -
কোন্ পুরুষার্থ করলে বাবার উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয়?

উত্তরঃ  
সদা ভাই-ভাইয়ের দৃষ্টি যেন থাকে। স্ত্রী-পুরুষের বোধ যেন দূর হয়ে যায়, তবেই বাবার উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হবে। কিন্তু স্ত্রী-পুরুষের এই বোধ বা দৃষ্টি দূর করা খুব কঠিন। তার জন্য দেহী-অভিমানী হওয়ার অভ্যাস চাই। যখন বাবার সন্তান হবে তখন উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হবে। একমাত্র বাবার স্মরণে থেকে সতোপ্রধান হবে যারা তারাই মুক্তি-জীবনমুক্তির উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করে ।

গীতঃ-
অবশেষে সেই দিন এলো আজ ....

ওম্ শান্তি ।
বাচ্চারা জানে যে ওম্ মানে অর্থাৎ অহম্ আত্মা মম শরীর অর্থাৎ। এখন তোমরা এই ড্রামাকে, সৃষ্টি চক্রকে এবং এই সৃষ্টি চক্রের জ্ঞাতা বাবাকে জেনেছো। কারণ সৃষ্টি চক্রের জ্ঞাতা রচয়িতাকেই বলা হবে। রচয়িতা ও রচনাকে অন্য কেউ জানেনা। যদিও শিক্ষিত বড় বড় বিদ্বান-পন্ডিত ইত্যাদি রয়েছে । তাদের নিজের অহংকার তো থাকে তাইনা। কিন্তু তারা এই কথা জানেনা। যদিও বলে জ্ঞান, ভক্তি ও বৈরাগ্য। এবার এটা তিনটি জিনিস হয়ে যায়, এর অর্থও তারা বোঝেনা। সন্ন্যাসীদের বৈরাগ্য উৎপন্ন হয় ঘর সংসারের প্রতি। যদিও তাদের উঁচু নীচু-র ঈর্ষা থাকে। এ উচ্চ কুলের, সে মধ্যম কুলের - এইসব নিয়ে আলোচনা খুব হয়। কুম্ভ মেলায় এই নিয়ে খুব ঝগড়া হয় যে কে আগে যাত্রা করবে। এইসব নিয়ে যখন ঝগড়া হয় তখন পুলিশ এসে মিটমাট করে। সুতরাং এও তো দেহ-অভিমান তাইনা। দুনিয়ায় যে মানুষজন আছে, সবাই হলো দেহ-অভিমানী। তোমাদের এখন দেহী-অভিমানী হতে হবে। বাবা বলেন দেহ-অভিমান ত্যাগ করো, নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করো। আত্মা-ই পতিত হয়েছে, তাতেই খাদ পড়েছে। আত্মা-ই সতোপ্রধান হয়, আত্মা-ই তমোপ্রধান হয়। যেমন আত্মা তেমন শরীর প্রাপ্ত হয়। কৃষ্ণের আত্মা সুন্দর হয় তো শরীরও খুব সুন্দর হয়, কৃষ্ণের রূপের প্রতি আকর্ষণ থাকে। পবিত্র আত্মার প্রতি আকর্ষণ থাকে। লক্ষ্মী-নারায়ণের এতখানি মহিমা বর্ণনা হয় না, যেমন কৃষ্ণের হয়। কারণ কৃষ্ণ হলেন পবিত্র শিশু। এখানেও বলা হয় ছোট বাচ্চা আর মহাত্মা এক সমান। মহাত্মারা যদিও জীবনের অনুভব করে তারপর বিকার ত্যাগ করে। যখন ঘৃণা অনুভব হয়। কিন্তু ছোট বাচ্চা তো হলো ই পবিত্র। কৃষ্ণকে উচ্চ মহাত্মা ভাবা হয়। অতএব বাবা বুঝিয়েছেন এই নিবৃত্তি মার্গের সন্ন্যাসীরা পতনকে কিছুটা থামিয়ে রাখে। যেমন বাড়ি পুরানো হলে মেরামত করা হয়। সন্ন্যাসীরা মেরামতি করে, পবিত্র থাকার দরুন ভারতের পতন থেমে থাকে। ভারতের মতন পবিত্র এবং বিত্তবান খন্ড আর কোনোটাই নয়। এখন বাবা তোমাদের রচয়িতা আর রচনার আদি-মধ্য-অন্তের স্মৃতি মনে করিয়ে দেন কারণ তিনি হলেন বাবাও, টিচারও এবং গুরুও হলেন । গীতায় কৃষ্ণ ভগবানুবাচ লেখা হয়েছে, কৃষ্ণকে কখনও বাবা সম্বোধন করা হয় কি ! কিম্বা পতিত-পাবন বলা হয় কি ! মানুষ যখন পতিত-পাবন বলে তখন কৃষ্ণকে স্মরণ করা হয় না তারা তো ভগবানকে স্মরণ করে, তারপরে বলে দেয় পতিত-পাবন সীতারাম, রঘুপতি রাঘব রাজা রাম। বিষয়টি কতখানি বিভ্রান্তিকর। বাবা বলেন বাচ্চারা, আমি এসে তোমাদের যথার্থ ভাবে সকল বেদ-শাস্ত্র ইত্যাদির সার বলি। সর্ব প্রথম মুখ্য কথা বোঝান যে তোমরা নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করো আর বাবাকে স্মরণ করো তাহলে তোমরা পবিত্র হবে। তোমরা হলে ভাই-ভাই, তারপরে ব্রহ্মার সন্তান রূপে ভাই-বোন হয়েছো। এই কথাটি যেন বুদ্ধিতে স্মরণে থাকে। আসলে হলো ভাই-ভাই, পরে এখানে এসে শরীর ধারণ করলে ভাই-বোন হয়ে যায়। এই কথা বুঝবার জন্য এতটুকু বুদ্ধিও নেই। তিনি হলেন আত্মাদের পিতা বা ফাদার তাই আমার হলাম ব্রাদার্স তাইনা। তাহলে সর্বব্যাপী কীভাবে বলবে । উত্তরাধিকার তো সন্তানরাই পাবে, বাবা প্রাপ্ত করেন না। বাবার কাছ থেকে সন্তান উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করে। ব্রহ্মাও হলেন শিববাবার সন্তান তাইনা, তিনিও শিববাবার কাছ থেকে অবিনাশী উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করেন। তোমরা হলে পৌত্র পৌত্রী । তোমাদেরও প্রাপ্তির অধিকার আছে। অর্থাৎ আত্মা রূপে সবাই হল সন্তান পরে শরীর ধারণ করে বলো ভাই-বোন। আর কোনও সম্পর্ক নেই। সর্বদা ভাই-ভাইয়ের যেন দৃষ্টি থাকে, স্ত্রী-পুরুষের বোধ যেন মিটে যায়। যখন মেল-ফিমেল দুইজনেই বলো - ও গড ফাদার! তো ভাই বোন হলে, তাইনা। ভাই-বোন তখন হয় যখন সঙ্গমে বাবা এসে রচনা করেন। কিন্তু স্ত্রী পুরুষের দৃষ্টি পরিবর্তন হওয়া খুব কঠিন। বাবা বলেন তোমাদের দেহী অভিমানী হতে হবে। বাবার সন্তান হলে তবেই অবিনাশী উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হবে। মামেকম্ স্মরণ করো তো সতোপ্রধান হবে। সতোপ্রধান না হলে তোমরা মুক্তি-জীবনমুক্তিতে ফিরে যেতে পারবে না। এই যুক্তি সন্ন্যাসীগণ কখনোই বলে দেবে না। তারা এমন কখনোই বলবে না যে নিজেকে আত্মা ভেবে বাবাকে স্মরণ করো। বাবাকে বলা হয় পরমপিতা পরমাত্মা, সুপ্রিম। আত্মা তো সবাইকে বলা হয় কিন্তু তাঁকে পরম আত্মা বলা হয়। সেই আত্মিক পিতা বলেন - বাচ্চারা, আমি এসেছি তোমাদের কাছে। কথা বলার জন্য আমার মুখের প্রয়োজন তো আছে তাইনা। আজকাল দেখো যেখানে সেখানে গৌ মুখ নিশ্চয়ই রাখে। তারপরে বলে গৌ মুখ থেকে অমৃত বের হয়। বাস্তবে অমৃত বলা হয় জ্ঞানকে। জ্ঞান অমৃত মুখ দ্বারা-ই বের হয়। জলের কথা নয়। ইনি (ব্রহ্মাবাবা) হলেন গৌ মাতা । শিববাবা এনার মধ্যে প্রবেশ হয়েছেন। বাবা এনার (ব্রহ্মাবাবার) দ্বারা তোমাদের আপন করেছেন। এনার মুখ দিয়ে জ্ঞান বের হয়। তারা তো পাথরের বানিয়ে মুখ বানিয়ে দিয়েছে, যেখান থেকে জল ধারা বের হয়। সেসব তো হল ভক্তির নিয়ম তাইনা। যথার্থ কথা তোমরা জানো। ভীষ্ম পিতামহকে তোমরা কুমারীরা জ্ঞানের তীরবিদ্ধ করেছ। তোমরা তো হলে ব্রহ্মাকুমার -কুমারী। অর্থাৎ কুমারী কারো তো হবে, তাইনা। অধরকুমারী ও কুমারী দুইয়ের মন্দির আছে। প্রাক্টিক্যালে তোমাদের স্মারক চিহ্ন রূপে মন্দির আছে তাইনা। এখন বাবা বসে বোঝাচ্ছেন তোমরা হলে ব্রহ্মাকুমার-কুমারী তাই ক্রিমিনাল অ্যাসল্ট হতে পারে না। নাহলে খুব কঠিন দন্ড ভোগ করতে হবে। দেহ-অভিমান এলে এই কথা বিস্মৃত হয়ে যায় যে আমরা ভাই-বোন। এরাও বি.কে, আমরাও বি.কে. তাহলে বিকারযুক্ত দৃষ্টি যাবে না। কিন্তু অসুরী সম্প্রদায় মানুষ বিকার ব্যতীত না থাকতে পেরে বিঘ্ন সৃষ্টি করে। এখন তোমরা ব্রহ্মাকুমার-কুমারী, পিতার কাছে তোমাদের অবিনাশী উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয়। বাবার শ্রীমৎ অনুসারে চলতে হবে, পবিত্র হতে হবে। এ হল এই বিকারী মৃত্যুলোকের অন্তিম জন্ম। এই কথা কেউ জানেনা। অমরলোকে কোনও বিকার থাকে না। তাদের বলা হয় সতোপ্রধান সম্পূর্ণ নির্বিকারী। এখানে হলো তমোপ্রধান সম্পূর্ণ বিকারী। গানও করে দেবতারা সম্পূর্ণ নির্বিকারী, আমরা বিকারী, আমরা পাপী। সম্পূর্ণ নির্বিকারীদের পূজা করা হয়। বাবা বোঝান তোমরা ভারতবাসীরা-ই পূজ্য পরে পূজারী হও। এই সময় ভক্তির অনেক প্রভাব রয়েছে। ভক্ত ভগবানকে স্মরণ করে যে এসে ভক্তির ফল দাও। ভক্তির কি অবস্থা হয়েছে। বাবা বুঝিয়েছেন মুখ্য ধর্ম শাস্ত্র হলো ৪-টি। এক হলো দৈবী ধর্ম, এতে ব্রাহ্মণ দেবতা ক্ষত্রিয় তিনটি এসে যায়। বাবা ব্রাহ্মণ ধর্ম স্থাপনা করেন। সঙ্গম যুগ হলো ব্রাহ্মণদের শিখা। তোমরা ব্রাহ্মণরা এখন পুরুষোত্তম হচ্ছো। ব্রাহ্মণ হয়ে তারপরে দেবতায় পরিণত হও। ওই ব্রাহ্মণরা হলো বিকারী। তারাও এসে এই ব্রাহ্মণদের সামনে প্রণাম করে। ব্রাহ্মণ দেবী-দেবতায় নমঃ বলে কারণ তারা বোঝে যে এই ব্রাহ্মণরা হলো ব্রহ্মার সন্তান, আমরা তো ব্রহ্মার সন্তান নই। এখন তোমরা ব্রাহ্মণরা হলে ব্রহ্মার সন্তান। তোমাদের সবাই নমঃ বলবে। তোমরা পরে দেবী-দেবতা হও। এখন তোমরা ব্রহ্মাকুমার-কুমারী হয়েছো পরে হবে দৈবী কুমার-কুমারী।

এই সময় তোমাদের এই জীবন হলো খুবই অমূল্য, কারণ তোমরা হলে জগৎ মাতা, তোমাদের মহিমার গায়ন আছে। তোমরা দেহের সীমা থেকে বেরিয়ে আত্মার অসীম জগতে এসেছ। তোমরা জানো আমরা এই জগতের কল্যাণ করব। সুতরাং প্রত্যেকে জগৎঅম্বা জগৎ পিতা হলে তাইনা। এই নরকে মানুষ খুব দুঃখে আছে, আমরা তাদের আত্মিক সেবার্থে এসেছি। আমরা তাদের স্বর্গবাসী করবোই করবো। তোমরা হলে সৈন্য। একে যুদ্ধ-স্থলও বলা হয় । যাদব, কৌরব ও পাণ্ডব একত্রে বসবাস করে। তারা হল ভাই-ভাই কিনা। এখন তোমাদের যুদ্ধ ভাই-বোনের সঙ্গে নয়, তোমাদের যুদ্ধ হল রাবণের সঙ্গে। ভাই-বোনেদের তোমরা বোঝাও, মানুষ থেকে দেবতায় পরিণত করার জন্য। তাই বাবা বলেন দেহ সহ দেহের সকল সম্বন্ধ ত্যাগ করতে হবে। এই হল পুরানো দুনিয়া। কত বিশাল ড্যাম, ক্যানাল ইত্যাদি বানায়, কারণ জলের অভাব। প্রজার সংখ্যা বৃদ্ধি হয়েছে। সেখানে তো তোমরা সংখ্যায় কম থাকো। নদীতে অপরিসীম জল থাকে, আনাজপাতি অনেক হয়। এখানে তো এই পৃথিবীতে কোটি কোটি মানুষ থাকে। সেখানে সম্পূর্ণ পৃথিবীতে শুরুতে সংখ্যা হয় ৯-১০ লক্ষ, অন্য কোনও খন্ড থাকে না। তোমরা সংখ্যায় কম থাকো। তোমাদের কোথাও যাওয়ার দরকার থাকে না। সেখানে থাকেই সুখকর জলবায়ু। ৫ তত্ত্ব কোনো কষ্ট দেয় না, সবই নির্দেশ মতো থাকে। দুঃখের নাম গন্ধ নেই। সেই স্থান হলোই স্বর্গ। এখন হলো নরক। নরক আরম্ভ হয় মধ্য সময়কাল থেকে। দেবতারা বাম মার্গে গমন করলে রাবণ রাজ্য শুরু হয়ে যায়। তোমরা বুঝেছো - আমরা ডবল মুকুটধারী পূজ্য স্বরূপে পরিণত হই, পরে সিঙ্গল মুকুটধারী স্বরূপ হই। সত্যযুগে পবিত্রতারও চিহ্ন আছে। দেবতারা হলেন সবাই পবিত্র। এখানে কেউ পবিত্র নেই। জন্ম তো বিকার থেকেই হয় তাইনা সেইজন্য এই দুনিয়াকে ভ্রষ্টাচারী দুনিয়া বলা হয়। সত্যযুগ হল শ্রেষ্ঠাচারী। বিকারকে ভ্রষ্টাচার বলা হয়। বাচ্চারা জানে সত্যযুগে পবিত্র প্রবৃত্তি মার্গ ছিল, এখন হয়েছে অপবিত্র। এবারে পুনরায় পবিত্র শ্রেষ্ঠাচারী দুনিয়া তৈরি হচ্ছে। সৃষ্টি চক্র ঘুরছে তাইনা। পরম পিতা পরমাত্মাকেই পতিত-পাবন বলা হয়। মানুষ বলে দেয় ভগবান প্রেরণা দেন, প্রেরণা অর্থাৎ বিচার, এতে প্রেরণা-র কোনো ব্যাপার নেই। তিনি স্বয়ং বলেন আমাকে শরীরের আধার নিতে হয়। আমি মুখের আধার না নিয়ে শিক্ষা প্রদান করব কীভাবে। প্রেরণা দ্বারা কি শিক্ষা দেওয়া যায় ! ভগবান প্রেরণার দ্বারা কিছু করেন না। বাবা তো বাচ্চাদের পড়ান। প্রেরণা দ্বারা পড়াশোনা করা কি সম্ভব। বাবা ব্যতীত সৃষ্টির আদি, মধ্য, অন্তের রহস্য কেউ বলে দিতে পারেনা। বাবাকেও জানেনা। কেউ বলে লিঙ্গ, কেউ বলে অখন্ড জ্যোতি। কেউ বলে ব্রহ্ম -ই হল ঈশ্বর। তত্ত্ব জ্ঞানী ব্রহ্ম জ্ঞানী আছে না। শাস্ত্রে দেখানো হয়েছে ৮৪ লক্ষ যোনি আছে। এবারে যদি ৮৪ লক্ষ জন্ম হয় তো কল্পের সময়াবধি বিশাল হওয়া চাই। কেউ হিসেব করতে পারেনা। তারা তো সত্যযুগকেই লক্ষ বছর বলে দেয় তাইনা। বাবা বলেন সম্পূর্ণ সৃষ্টি চক্র-ই হল ৫ হাজার বছরের। ৮৪ লক্ষ জন্মের জন্য সময়ও এতটা চাই, তাইনা। এই সব শাস্ত্র হল ভক্তি মার্গের। বাবা বলেন আমি এসে তোমাদের এইসব শাস্ত্রের সার বোঝাই । এ সব হলো ভক্তি মার্গের সামগ্রী, এর দ্বারা কেউ আমাকে প্রাপ্ত করতে পারেনা। আমি যখন আসি তখনই সবাইকে ফিরিয়ে নিয়ে যাই। আমাকে আহ্বান করা হয় - হে পতিত-পাবন এসো। পবিত্র করে আমাদের পবিত্র দুনিয়ায় নিয়ে চলো। তাহলে আমাকে খুঁজে খুঁজে হয়রান হও কেন? মানুষ কত দূরে-দূরে পাহাড়ে ইত্যাদিতে যায় আজকাল তো কত মন্দির খালি পড়ে আছে, কেউ যায় না। এখন তোমরা বাচ্চারা উঁচু থেকে উঁচু পিতার বায়োগ্রাফি জেনে গেছো। বাবা বাচ্চাদের সব কিছু দিয়ে আবার ৬০ বছর পরে বাণপ্রস্থে বসে যায় । এই নিয়ম এখনকার, উৎসব ইত্যাদি সবই হলো এইসময়ের।

তোমরা জানো এখন আমরা সঙ্গমে দাঁড়িয়ে আছি। রাতের পরে দিন হবে। এখন তো হলো ঘোর অন্ধকার। গায়নও করে জ্ঞান সূর্য প্রকট হয়েছে... তোমরা বাবাকে আর রচনার আদি-মধ্য-অন্তের কথা এখন জেনেছো। যেমন বাবা হলেন নলেজফুল, তোমরাও মাস্টার নলেজফুল হয়েছো। বাচ্চারা তোমরা বাবার কাছ থেকে অসীম জগতের সুখের অবিনাশী উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করো। লৌকিক পিতার কাছ থেকে দৈহিক জগতের উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয়, যার দ্বারা অল্পকালের সুখ প্রাপ্ত হয়। যাকে সন্ন্যাসীরা কাক বিষ্ঠা সমান সুখ বলে দেয়। তারা কিন্তু এখানে এসে সুখের জন্য পুরুষার্থ করতে পারে না। তারা হলোই হঠযোগী, তোমরা হলে রাজযোগী। তোমাদের যোগ হলো বাবার সাথে, তাদের যোগ হলো তত্ত্বের সাথে । এও পূর্ব রচিত ড্রামায় । আচ্ছা !

মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) পবিত্র হওয়ার জন্য আমরা আত্মারা হলাম ভাই-ভাই, ব্রহ্মার সন্তান রূপে আমরা হলাম ভাই-বোন, এই দৃষ্টি পাকা করতে হবে। আত্মা ও শরীর দুই-ই পবিত্র সতোপ্রধান করতে হবে। দেহ-অভিমান ত্যাগ করতে হবে।

২ ) মাস্টার নলেজফুল হয়ে সবাইকে রচয়িতা আর রচনার জ্ঞান শুনিয়ে ঘোর অন্ধকার থেকে মুক্ত করতে হবে। নরকবাসী মানুষের আত্মিক সেবা করে স্বর্গবাসী করতে হবে।

বরদান:-
মাস্টার জ্ঞান সূর্য হয়ে জ্ঞানের গভীরে গিয়ে অনুভবরূপী রত্নের দ্বারা সম্পন্ন ভব

যে বাচ্চারা জ্ঞানের গভীরে যায় তারা অনুভবরূপী রত্নের দ্বারা সম্পন্ন হয়। এক হল জ্ঞান শোনা আর শোনানো, দ্বিতীয় হল অনুভবী মূর্তি হওয়া। অনুভবী সদা অবিনাশী আর নির্বিঘ্ন থাকে। তাকে কেউ নড়াতে পারে না। অনুভবীর সামনে মায়ার কোনও প্রচেষ্টাই সফল হয় না। অনুভবী কখনও ধোঁকা খায় না। এইজন্য অনুভবের খাজানাকে বৃদ্ধি করে প্রত্যেক গুণের অনুভবী মূর্তি হও। মনন শক্তি দ্বারা শুদ্ধ সংকল্পের স্টক জমা করো।

স্লোগান:-
ফরিস্তা হলো সে, যে দেহের সূক্ষ্ম অভিমানের সম্বন্ধের থেকেও ডিট্যাচ ।

অব্যক্ত ঈশারা :- সত্যতা আর সভ্যতা রূপী কালচারকে ধারণ করো

সম্পূর্ণ সত্যতাও পবিত্রতার আধারে হয়। পবিত্রতা নেই তো সদা সত্যতাও থাকতে পারবে না। শুধুমাত্র কাম বিকার অপবিত্রতা নয়, তার আরও অনেক সাথী আছে। তো মহান পবিত্র অর্থাৎ অপবিত্রতার নাম-নিশান থাকবে না তখন পরমাত্ম প্রত্যক্ষতার নিমিত্ত হতে পারবে।