18.04.2025
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
নিজের উপরে দয়া করো, বাবা যে শ্রীমৎ দিচ্ছেন, সেই অনুসারে চলো তো অনেক খুশীতে থাকবে,
মায়ার অভিশাপ থেকে বেঁচে যাবে"
প্রশ্নঃ -
মায়ার অভিশাপ
কেন লাগে? অভিশপ্ত আত্মার কী গতি হয়?
উত্তরঃ
১) বাবা আর
পড়াশুনার (জ্ঞান রত্নের) অনাদর করলে, নিজের মনমতে চললে মায়ার অভিশাপ লেগে যায়। ২)
আসুরী আচরণ থাকলে, দৈবী গুণ ধারণ না করার কারণে নিজের উপর নির্দয় থাকে। বুদ্ধিতে
তালা লেগে যায়। সে বাবার হৃদয় সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হতে পারে না।
ওম্ শান্তি ।
আত্মিক
বাচ্চাদের এটা তো এখন নিশ্চয় হয়ে গেছে যে, আমাকে আত্ম-অভিমানী হতে হবে আর বাবাকে
স্মরণ করতে হবে। মায়া রূপী রাবণ অভিশপ্ত এবং দুঃখী বানিয়ে দেয়। অভিশাপ শব্দটিই হল
দুঃখের, অপর দিকে আশীর্বাদ শব্দটি হল সুখের। যে বাচ্চারা বিশ্বস্ত এবং আজ্ঞাকারী আছে,
তারা ভালো ভাবে জানে। যে বাবার শ্রীমত মেনে চলে না, সে বাবার বাচ্চা-ই নয়। যদিও সে
নিজেকে বিশাল কিছু মনে করে, কিন্তু বাবার হৃদয়ে স্থান পায় না, আশীর্বাদও পায় না। যে
মায়ার কথা মতো চলে আর বাবাকে স্মরণ-ই করে না, সে কাউকে জ্ঞান বোঝাতেও পারবে না।
অজান্তে নিজের ভুলের কারণে নিজেই অভিশাপগ্রস্ত হয়। বাচ্চারা জানে যে, মায়াও খুব
শক্তিশালী। যদি অসীম জগতের বাবাকে না মেনে চলে, তাহলে তো মায়ার কথামতো চলে। মায়ার
বশীভূত হয়ে যায়। কথিত আছে যে, প্রভুর আজ্ঞা সর্বদা মাথার উপর থাকে। তাই বাবা বলেন
বাচ্চারা, পুরুষার্থ করে বাবাকে স্মরণ করো তো মায়ার কোল থেকে বেরিয়ে প্রভুর কোলে চলে
আসবে। বাবা তো হলেন বুদ্ধিবানেদের বুদ্ধিবান। বাবার শ্রীমত না মানলে বুদ্ধিতে তালা
লেগে যাবে। তালা খুলতে পারেন এক বাবা-ই। শ্রীমতে না চললে তার কি অবস্থা হবে। মায়ার
মতে চললে কোনো পদ-ই পাবে না। হয়তো জ্ঞান শোনে, কিন্তু না কিছু ধারণা করতে পারে আর
না করাতে পারে, তাহলে তার অবস্থা কেমন হবে! বাবা তো হলেন গরীবের ভগবান। মানুষ
গরীবদেরকে দান করে, তো বাবাও এসে কত অসীম সম্পত্তি দান করেন। যদি শ্রীমতে না চলে তো
একদম বুদ্ধিতে তালা লেগে যায়। তখন কী প্রাপ্তি করবে! যারা বাবার শ্রীমত মেনে চলে,
তারাই হল বাবার প্রকৃত সন্তান। বাবাতো হলেন দয়ার সাগর। তারা বোঝে যে, বাইরে গেলেই
মায়া একদম শেষ করে দেবে। কেউ আত্মহত্যা করলে সে নিজের সর্বনাশ করে। বাবা তো সবসময়েই
বোঝাতে থাকেন যে, নিজের উপর দয়া করো, শ্রীমতে চলো, নিজের মতে চলো না। শ্রীমতে চললে
খুশীর পারদ চড়তে থাকবে। লক্ষ্মী-নারায়ণের মুখমণ্ডলে সর্বদা হাসিখুশী দেখা যায়। তো
পুরুষার্থ করে এইরকম উঁচু পদ প্রাপ্ত করতে হবে, তাই না। বাবা অবিনাশী জ্ঞানরত্ন দান
করেন তো তার অনাদর কেন করো! রত্ন দিয়ে বুদ্ধি রূপী ঝুলি ভরপুর করতে হবে। শোনে তো
ঠিকই কিন্তু ঝুলি ভরপুর করতে পারে না কেননা বাবাকে স্মরণ করে না। আসুরী চলন চলতে
থাকে। বাবা বারংবার বোঝান যে - নিজের উপর দয়া করো, দৈবী গুণ ধারণ করাে। তারা হলোই
আসুরী সম্প্রদায়ের। বাবা পরিস্তান বানাতে আসেন। পরিস্তান স্বর্গকে বলা হয়।
ভক্তিমার্গে মানুষ অনেক ধাক্কা খায়। সন্ন্যাসীদের কাছে যায়, মনে করে যে, সেখানে গেলে
শান্তি পাওয়া যাবে। বাস্তবে এই কথাটি হল ভুল। এর কোনো অর্থ নেই। আত্মারই তো শান্তি
চাই, তাই না। আত্মার স্বরূপই হল শান্ত। তারা এইরকমও বলে না যে,আত্মা কিভাবে শান্ত
হবে? বলে যে মন কিভাবে শান্তি পাবে? এখন মন কি আছে, বুদ্ধি কি আছে, আত্মা কি আছে,
কিছুই জানে না। যাকিছু বলে বা করে, সে সব হল ভক্তি মার্গ। ভক্তিমার্গে ভক্তরা সিঁড়ি
দিয়ে নামতে নামতে একদম তমোপ্রধান হয়ে যায়। হয়তো কারোর অনেক ধন সম্পত্তি আছে, কিন্তু
আছে তো সবই রাবণ রাজ্যে, তাইনা !
বাচ্চারা, তোমাদেরকে
চিত্র দেখিয়ে বোঝানোর জন্য অনেক অভ্যাস করতে হবে। বাবা সমস্ত সেন্টারের বাচ্চাদের
বোঝাচ্ছেন, নম্বরের ক্রম অনুসারে। যদি কোনো বাচ্চা রাজ্যপদ পাওয়ার জন্য পুরুষার্থ
না করে, তো প্রজাতে গিয়ে কি পদ পাবে! সেবা করে না, নিজের উপর করুণা আসেনা যে, আমি
কি পদ পাবো, পরে বোঝা যায় যে ড্রামাতে এর পার্ট এতটাই ছিলো। নিজের কল্যাণনের জন্য,
জ্ঞানের সাথে সাথে যোগও করতে হবে। যোগে না থাকলে তো কিছুই কল্যাণ হবে না। যোগ ছাড়া
পবিত্র হতে পারবে না। জ্ঞান তো খুব সহজ কিন্তু নিজের কল্যাণও করতে হবে। যোগে না
থাকলে কিছুই কল্যাণ হবে না। যোগ ছাড়া কিভাবে পবিত্র হবে? জ্ঞান আলাদা বিষয়, যোগ
আলাদা বিষয়। যোগে খুব কাঁচা আছো। যোগ করার ইচ্ছাই আসে না। তো স্মরণ ছাড়া বিকর্ম
কিভাবে বিনাশ হবে ? তাই অনেক শাস্তি খেতে হয়, অনেক অনুতাপ করতে হয়। তারা কোনো স্থুল
উপার্জন করে না তো কোনো শাস্তিও ভোগ করতে হয় না, এতে তো পাপের বোঝা মাথার উপর চেপে
বসে, তাদেরকে অনেক শাস্তি ভোগ করতে হয়। বাবার বাচ্চা হওয়ার পর যদি বেয়াদপ হয়ে যায়
তো অনেক শাস্তি ভোগ করতে হয়। বাবা তো বলেন - নিজের উপরে দয়া করো, স্মরণে থাকো। নাহলে
তো নিজেই নিজের ক্ষতি করবে। যেরকম কেউ উপর থেকে পড়ে গেলে, মারা না গেলে, হসপিটালে
শুয়ে চিৎকার করতে থাকে। বৃথাই নিজেকে ধাক্কা দিলাম, মরেও গেলাম না, তথাপি আর কোনো
কাজেও আসবো না। এখানেও সেইরকম। অনেক উঁচুতে উঠতে হবে। শ্রীমতে না চললে তো পড়ে
যাবেই। আর কিছুদিন পরে প্রত্যেকেরই নিজের পদের সাক্ষাৎকার হবে, তখন দেখে নেবে যে,
আমি কি পদ পাবো? যে সার্ভিসেবল, আজ্ঞাকারী হবে, সে-ই উঁচুপদ প্রাপ্ত করবে। নাহলে তো
সেখানে গিয়ে দাস-দাসী হবে। তারপর শাস্তিও অনেক খেতে হবে। সেই সময় বাপদাদা দুজনেই
ধর্মরাজের রূপ ধারণ করবে। কিন্তু বাচ্চারা কিছুই বুঝতে চায়না, ভুল করতেই থাকে।
শাস্তি তো এখানেই খেতে হবে তাই না। যে যত বেশী সার্ভিস করবে, ততোই শোভনীয় হবে। না
হলে তো কোনাে কাজেই আসবে না। বাবা বলেন যে, অপরের কল্যাণ করতে না পারলে নিজের
কল্যাণ করো। বন্ধনে থাকা আত্মারাও (বন্ধেলী) নিজের কল্যাণ করতে থাকে। বাবা তবুও
বাচ্চাদেরকে বলেন যে, সাবধান থাকো। নাম রূপে ফেঁসে গেলে মায়া অনেক ধোঁকা দেয়। বলে
যে, বাবা অমুক আত্মাকে দেখলে আমার মধ্যে খারাপ সংকল্প চলে। বাবা বোঝান যে -
কর্মেন্দ্রিয়ের দ্বারা কোনো খারাপ কাজ করো না। কোনোও খারাপ লোক, যার চলন ঠিক নেই,
তাকে সেন্টারে আসতে দেওয়া উচিত নয়। স্কুলে কেউ খারাপ আচরণ করলে তো অনেক মার খায়।
শিক্ষক সবার সামনে বলে যে, এ এই খারাপ কাজটি করেছে, এইজন্য একে স্কুল থেকে বের করে
দেওয়া হচ্ছে। তোমাদের সেন্টারগুলিতেও এরকম কুদৃষ্টি যাদের রয়েছে তাদেরকে স্থান
দেওয়া যাবে না । বাবা বলেন যে, কখনো কুদৃষ্টি যেন না থাকে। সার্ভিস করে না, বাবাকে
স্মরণ করে না, তবে তো অন্তরে অবশ্যই কিছু না কিছু নোংরা সংস্কার রয়েছে । যে ভালো
সার্ভিস করে, তার অনেক নাম হয়। এতটুকুও খারাপ সংকল্প এলে বা খারাপ দৃষ্টি গেলে বুঝবে
যে মায়ার আক্রমণ হতে চলেছে। সাথে সাথে সেই সঙ্গ পরিত্যাগ করবে। না হলে যাকিছু বৃদ্ধি
হয়েছে, সে সবই নষ্ট হয়ে যাবে। বাবাকে স্মরণ করতে থাকলে বেঁচে যাবে। বাবা সব
বাচ্চাদেরকেই সাবধান করতে থাকেন - সাবধান থাকো, কখনো নিজের বংশের নাম বদনাম ক'রো
না। কেউ গন্ধর্ব বিবাহ করে একসাথে থাকে তো তার অনেক নাম হয়, আবার কেউ তো নষ্ট হয়ে
যায়। এখানে তোমরা এসেছো নিজেদের সদ্গতি করতে, না কি খারাপ গতি প্রাপ্ত করতে। সবথেকে
খারাপ হলো কাম, তারপরে ক্রোধ। এখানে আসে বাবার থেকে আশীর্বাদ নেওয়ার জন্য কিন্তু
মায়া আক্রমণ করে অভিশাপ দিয়ে দেয়, তো একদম নীচে এসে পরে। এর মানে হলো নিজেকেই নিজে
অভিশাপ দেয়। তাই বাবা বোঝাচ্ছেন, অনেক সতর্ক থাকতে হবে, এইরকম কেউ এলে তাকে সাথে
সাথেই রওনা করে দিতে হবে। দেখানো হয় যে, - অমৃত পান করতে এসেছিলো, তারপর বাইরে গিয়ে
অসুর হয়ে নোংরা কাজ করলো। সে তো এই জ্ঞান কাউকে শোনাতেও পারবে না। তালা বন্ধ হয়ে
যায়। বাবা বলেন যে, নিজের সেবার উপর তৎপর থাকতে হবে। বাবার স্মরণে থাকতে থাকতে
অন্তিম সময়ে ঘরে চলে যেতে হবে। গান আছে না- রাতের পথিক ক্লান্ত হয়ো না, ভোর হতে আর
দেরী নেই। আত্মাদেরকে ঘরে ফিরে যেতে হবে। আত্মাই হলো পথিক। আত্মাকেই প্রতিদিন বোঝানো
হয় যে, এখন তোমরা শান্তিধাম যাওয়ার পথিক আছো। তো এখন বাবাকে, ঘরকে, আর বাবার
উত্তরাধিকারকে (স্বর্গকে) স্মরণ করতে থাকো। নিজেকে দেখতে হবে যে, মায়া কোথাও ধোঁকা
তো দিচ্ছে না তো? আমি বাবাকে স্মরণ করছি তো?
উচ্চ থেকে উচ্চ বাবার
দিকেই যেন দৃষ্টি থাকে - এটাই হলো অনেক উঁচু পুরুষার্থ। বাবা বলেন - বাচ্চারা,
কুদৃষ্টি ত্যাগ করো। দেহ-অভিমান মানে কুদৃষ্টি, দেহী-অভিমানী মানে শুদ্ধ দৃষ্টি।
তাই বাচ্চাদের দৃষ্টি সর্বদা বাবার দিকে থাকতে হবে। উত্তরাধিকারও অনেক শ্রেষ্ঠ -
বিশ্বের রাজত্ব লাভ, এটা কি কম কথা ! কারোর স্বপ্নেও এমন আসবে না যে, পড়াশোনা করে,
স্মরণের যাত্রায় থেকে বিশ্বের মালিক হতে পারবো। পড়াশোনা করে উঁচুপদ পেলে তো বাবাও
খুশী হবেন, শিক্ষকও খুশী হবেন, সদ্গুরুও খুশী হবেন। স্মরণ করতে থাকলে তো বাবাও
অনেক ভালোবাসা দেবেন। বাবা বলেন যে - বাচ্চারা এই দুর্বলতা গুলিকে ত্যাগ করো। নাহলে
তো বৃথাই নাম বদনাম করবে। বাবাতো বিশ্বের মালিক বানিয়ে সৌভাগ্য খুলে দেন। ভারতবাসীই
১০০% সৌভাগ্যশালী ছিলো, তারাই আবার ১০০% দুর্ভাগ্যশালী হয়ে গেছে, তাদেরকেই আবার
সৌভাগ্যশালী বানানোর জন্য পড়ানো হয়।
বাবা বুঝিয়েছেন যে,
বড় বড় ধর্মগুরুরাও তোমাদের কাছে আসবে। যোগ শিখে যাবে। মিউজিয়ামে যে টুরিস্টরা আসে,
তাদেরকেও তোমরা বোঝাতে পারো- এখন স্বর্গের গেট খোলার সময় হয়ে গেছে। কল্পবৃক্ষের (ঝাড়ের)
উপরে বোঝাও, দেখো তোমরা অমুক সময়ে এসেছো। ভারতবাসীদের পার্ট হলো অমুক সময়ে । তোমরা
এই জ্ঞান শুনে তারপর নিজের দেশে গিয়ে বলো যে, বাবাকে স্মরণ করো, তবে তমোপ্রধান থেকে
সতোপ্রধান হয়ে যাবে। তারা তো যোগ শিখতে চায়। হঠযোগী সন্ন্যাসীরা তো তাদেরকে যোগ
শেখাতে পারে না। তোমাদের মিশনও বিদেশে যাবে। বোঝানোর জন্য অনেক যুক্তি চাই। বড় বড়
ধর্ম প্রবক্তা যারা, তাদের তো এখানে আসতেই হবে। তোমাদের থেকে কেউ একজনও যদি ভালোভাবে
ধারণ করে যায় তাহলে একজনের থেকে বহুজন জানতে পারবে। একজনেরও বুদ্ধিতে ধারণা হয়ে গেলে
তো সে সংবাদপত্রেও ছাপিয়ে দেবে। এটাও ড্রামাতে পূর্ব নির্ধারিত। নাহলে তো বাবাকে
স্মরণ করা কিভাবে শিখবে। বাবার পরিচয় তো সবাইকেই দিতে হবে। কেউ না কেউ তো বাবার
সন্তান হবেই। মিউজিয়ামে অনেক পুরানো জিনিস দেখতে যায়। আর এখানে তো তোমাদের পুরানো
জ্ঞান শুনবে। অনেকে আসবে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ খুব ভালো ভাবে বুঝবে। এখান থেকেই
দৃষ্টি নেবে কিংবা তোমাদের মিশন বিদেশে যাবে। তোমরা বলবে যে, বাবাকে স্মরণ করো তো
নিজের ধর্মে শ্রেষ্ঠ পদ পাবে। পুনর্জন্ম নিতে নিতে সবাই নীচে এসে গেছে। নীচে নামা
অর্থাৎ তমোপ্রধান হওয়া। পোপ আদি এইভাবে বলতে পারবে না যে, বাবাকে স্মরণ করাে। বাবাকে
জানেই না। তোমাদের কাছে খুব ভালো জ্ঞান আছে। চিত্রও অনেক সুন্দর তৈরী হচ্ছে। সুন্দর
জিনিস থাকলে মিউজিয়ামও আরও সুন্দর হয়ে উঠবে। দেখার জন্য অনেকে আসবে। যত বড় চিত্র হবে
তত সুন্দর করে বোঝাতে পারবে। শখ থাকতে হবে যে আমি এইভাবে বোঝাবো। সর্বদা তোমাদের
বুদ্ধিতে এটাই যেন থাকে যে, আমরা ব্রাহ্মণ হয়েছি, তাই যত বেশী সেবা করবো, ততোই মান
বাড়বে । এখানে মান বাড়লে ওখানেও মান হবে। তোমরা পূজ্য হবে। এই ঈশ্বরীয় নলেজ ধারণ
করতে হবে। বাবা তো বলেন, সার্ভিসের জন্য ছুটতে থাকো। বাবা যেখানে খুশী সেবার জন্য
পাঠাবেন, তাতেই তোমাদের কল্যাণ আছে। সারাদিন বুদ্ধিতে সেবার চিন্তা যেন চলতে থাকে।
বিদেশিদেরও বাবার পরিচয় দিতে হবে। অতি মিঠা বাবাকে স্মরণ করো, কোনো দেহধারীকে গুরু
বানিয়ো না। সকলের সদগতি তো এক বাবা-ই আছেন। এখন হোলসেল মৃত্যু সামনে উপস্থিত,
হোলসেল আর রিটেল ব্যবসা হয় তাই না। বাবা হলেন হোলসেল, উত্তরাধিকারও হোলসেল দেন। ২১
জন্মের জন্য বিশ্বের রাজত্ব পদ প্রাপ্ত করো। মুখ্য চিত্র হলোই ত্রিমূর্তি,
সৃষ্টিচক্রের গোলা, কল্পবৃক্ষের ঝাড়, বিরাট রূপের চিত্র আর গীতার ভগবান কে?....
এইসব চিত্রগুলো তো ফার্স্টক্লাস আছে, এতে বাবার মহিমাই পুরো রয়েছে । বাবা-ই কৃষ্ণকে
এইরকম বানিয়েছেন, এই উত্তরাধিকার গড্ ফাদার দিয়েছেন। কলিযুগে মানুষের সংখ্যা অনেক,
সত্যযুগে খুব কম সংখ্যক হবে। এইসব পরিবর্তন কে করেছেন? কেউ কিছুই জানে না। তো অনেক
অনেক টুরিস্ট বড় বড় শহড়ে যায়। তারাও এসে বাবার পরিচয় পাবে। সেবার জন্য তো অনেক
পয়েন্ট আছে। বিদেশেও যেতে হবে। একদিকে তোমরা বাবার পরিচয় দিতে থাকো, অন্যদিকে
মারামারি চলতে থাকবে। সত্যযুগে খুব কম সংখ্যক মানুষ হবে তো অবশ্যই বাকিদের বিনাশ হয়ে
যাবে তাই না। ওয়ার্ল্ডের হিস্ট্রি জিওগ্রাফি রিপিট হয় । যা হয়ে গেছে, তা পুনরায়
রিপিট হবে। কিন্তু কাউকে বোঝানোর জন্য বোধবুদ্ধির প্রয়োজন । আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
সর্বদা এক বাবার প্রতিই দৃষ্টি রাখতে হবে। দেহী-অভিমানী হওয়ার পুরুষার্থ করে মায়ার
ধোঁকা থেকে নিজেকে রক্ষা করতে হবে। কখনো কুদৃষ্টি রেখে নিজের কুলের নাম বদনাম করবে
না।
২ ) সার্ভিসের জন্য
দৌঁড়ঝাপ করতে হবে। সার্ভিসেবল এবং আজ্ঞাকারী হতে হবে। নিজের আর অপরের কল্যাণ করতে
হবে। কোনো রকম খারাপ আচার-আচরণ যেন না থাকে।
বরদান:-
ফুলস্টপের স্টেজের দ্বারা প্রকৃতির দোলাচলকে স্টপ করে দেওয়া মাস্টার প্রকৃতিপতি ভব
বর্তমান সময় হলো
দোলাচল বৃদ্ধি হওয়ার সময়। ফাইনাল পেপারে একদিকে প্রকৃতির, অন্যদিকে পাঁচ বিকারের
ভয়ংকর রূপ হবে। তমোগুণী আত্মাদের ওয়ার (যুদ্ধ) আর পুরানো সংস্কার... সবই লাস্ট সময়ে
নিজেদের চান্স নেবে। এইরকম সময়ে সমাহিত করার শক্তি দ্বারা এখনই সাকারী, এখনই আকারী
আর এখনই নিরাকারী স্থিতিতে স্থিত হওয়ার অভ্যাস চাই। দেখেও দেখবে না, শুনেও শুনবে
না। যখন এইরকম ফুলস্টপের স্টেজ হবে, তখন প্রকৃতিপতি হয়ে প্রকৃতির দোলাচলকে সমাপ্ত
করতে পারবে।
স্লোগান:-
নির্বিঘ্ন রাজ্য অধিকারী হওয়ার জন্য নির্বিঘ্ন সেবাধারী হও।
অব্যক্ত ঈশারা :-
“কম্বাইন্ড স্বরূপের স্মৃতির দ্বারা সদা বিজয়ী হও”
সদা এই স্মৃতি যেন
থাকে যে আমি হলাম আত্মা, সেই সুপ্রীম আত্মার সাথে কম্বাইন্ড রূপে আছি। সুপ্রীম আত্মা
আমি আত্মা ছাড়া থাকতে পারেন না আর আমিও সুপ্রীম আত্মা ছাড়া আলাদা থাকতে পারি না।
এইরকম প্রত্যেক সেকেন্ড হুজুরকে হাজির অনুভব করলে আত্মিক সুগন্ধীতে অবিনাশী আর একরস
থাকতে পারবে।