18.06.2025
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
“মিষ্টি বাচ্চারা -
এই রুদ্র জ্ঞান যজ্ঞ স্বয়ং রুদ্র ভগবান রচনা করেছেন, এতে তোমরা নিজেদের সবকিছু
স্বাহা করো, কেননা এখন ঘরে ফিরে যেতে হবে”
প্রশ্নঃ -
সঙ্গমযুগে কোন্
ওয়ান্ডারফুল খেলা চলতে থাকে?
উত্তরঃ
ভগবানের দ্বারা
রচিত এই যজ্ঞেই অসুরেরা বিঘ্ন ঘটায়। সঙ্গমযুগেই এই ওয়ান্ডারফুল খেলা চলতে থাকে।
এইরকম যজ্ঞ সমগ্র কল্পে পুনরায় আর রচিত হয় না। এটাই হলো স্বরাজ্য প্রাপ্ত করার জন্য
রাজস্ব অশ্বমেধ যজ্ঞ। এতেই বিঘ্ন আসে।
ওম্ শান্তি ।
তোমরা এখন
কোথায় বসে আছো? এটাকে স্কুল অথবা ইউনিভার্সিটিও বলতে পারো। এটা হলো বিশ্ববিদ্যালয়,
যার অনেকগুলি ঈশ্বরীয় শাখাও আছে। বাবা এসে সব থেকে বড় ইউনিভার্সিটি খুলেছেন।
শাস্ত্রতে রুদ্র জ্ঞান যজ্ঞের নাম লেখা আছে, এই সময় বাচ্চারা তোমরা জানো যে শিববাবা
এই পাঠশালা অথবা ইউনিভার্সিটি খুলেছেন। উচ্চ থেকেও উচ্চ বাবা এখন পড়াচ্ছেন। এটা তো
বাচ্চাদের বুদ্ধিতে স্মরণ রাখতে হবে যে - ভগবান আমাদেরকে পড়াচ্ছেন। তাঁর এই যজ্ঞ
রচিত হয়েছে, এই যজ্ঞের নামও বিশ্বখ্যাত। রাজস্ব অশ্বমেধ রুদ্র জ্ঞান যজ্ঞ, রাজস্ব
অর্থাৎ স্বরাজ্যের জন্য। অশ্বমেধ, এখানে যা কিছু দেখছ সেইসব কিছুকে তোমরা স্বাহা
করছো, শরীরও স্বাহা হয়ে যায়। আত্মা তো স্বাহা হতে পারে না। সমস্ত শরীর স্বাহা হয়ে
যাবে। তখন সমস্ত আত্মারা বাড়ি ফিরে যায়। এটাই হলো সঙ্গম যুগ। সমস্ত আত্মারাই বাড়ি
ফিরে যাবে, আর এই শরীর এখানেই শেষ হয়ে যাবে। এই সবকিছুই হলো ড্রামা। তোমরা এই
ড্রামার নিয়মে চলছো। বাবা বলছেন যে - আমি রাজস্ব যজ্ঞ রচনা করেছি। এটাও ড্রামার
প্ল্যান অনুসারে রচিত হয়েছে। এইরকম বলা যাবে না যে - আমি যজ্ঞ রচনা করেছি। ড্রামার
প্ল্যান অনুসারে, বাচ্চারা তোমাদেরকে পড়ানোর জন্য, কল্প পূর্বের ন্যায় এই জ্ঞান
যজ্ঞ রচিত হয়েছে। আমি রচনা করেছি, এটাও সঠিক নয়। ড্রামার প্ল্যান অনুসারে রচনা করা
হয়েছে। কল্প-কল্পেই রচনা করা হয়। এই ড্রামা হলো পূর্বনির্দিষ্ট। ড্রামার প্ল্যান
অনুসারে এক বারের জন্যই এই যজ্ঞ রচনা করা হয়, এটা কোনো নতুন কথা নয়। এখন বুদ্ধিতে
ধারণ হয়ে গেছে যে, বরাবর ৫ হাজার বছর পূর্বেও সত্যযুগ ছিল, এখন পুনরায় সেই চক্রের
পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। পুনরায় নতুন দুনিয়া স্থাপন হচ্ছে। তোমরা নতুন দুনিয়াতে
স্বরাজ্য প্রাপ্ত করার জন্য এখন পড়াশোনা করছো। পবিত্রও অবশ্যই হতে হবে। পবিত্র
সে-ই হতে পারবে, যে ড্রামার প্ল্যান অনুসারে পূর্বকল্পেও পবিত্র হয়েছিল। তারা এখনই
তৈরি হবে। সাক্ষী হয়ে ড্রামাকে দেখতে হবে আবার পুনরায় পুরুষার্থও করতে হবে।
বাচ্চারা, সবাইকে এই জ্ঞান মার্গের কথাও তোমাদের বলতে হবে, মুখ্য কথাই হল পবিত্রতার।
বাবাকে ডেকেই ছিলে এই কারনে যে - বাবা এসো, পবিত্র বানিয়ে আমাদেরকে এই ছিঃ-ছিঃ
নোংরা দুনিয়া থেকে নিয়ে চলো। এখন বাবা এসেইছেন ঘরে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য।
বাচ্চাদেরকে তো অনেক সুন্দর সুন্দর জ্ঞানের পয়েন্ট দেওয়া হয়। মুখ্য কথা পুনরায়
বাবা বলছেন যে - মন্মনা ভব। পবিত্র হওয়ার জন্য বাবাকে স্মরণ করতে থাকো। এটা ভুলে
যেও না। যত স্মরণে থাকবে, ততই তোমাদের লাভ হবে, তোমাদের দৈনন্দিন চার্টও রাখতে হবে।
না হলে তো তোমরা অন্তিম সময়ে ফেল করে যাবে। বাচ্চারা এখন বুঝে গেছে যে, আমরাই
সতোপ্রধান ছিলাম, নম্বরক্রমে পুরুষার্থ অনুসারে যে আত্মা শ্রেষ্ঠ হয়, তাকে অনেক
পুরুষার্থও করতে হয়। স্মরণের যাত্রায় থাকতে হয়। এটা তো বুঝে গেছো যে, আর খুব
অল্প সময় অবশিষ্ট আছে, পুনরায় সুখের দিন আসবে। বরাবর আমাদের অসীম সুখের দিন আসবে।
বাবা এক বারের জন্যই এই কল্পের সঙ্গম যুগে আসেন, এই দুঃখ ধামকে সমাপ্ত করে নিজের
সুখ ধামে নিয়ে যাওয়ার জন্য। বাচ্চারা তোমরা জানো যে, এখন আমরা ঈশ্বরীয় পরিবারের
মধ্যে আছি, তারপর আমরা দৈবী পরিবারে যাব। এই সময়েরই গায়ন আছে যে - এই সঙ্গমই হল
পুরুষোত্তম শ্রেষ্ঠ হওয়ার যুগ। বাচ্চারা তোমরা জানো যে, আমাদেরকে এখন অসীম জগতের
বাবা পড়াচ্ছেন। পরবর্তীকালে এই কথা সন্ন্যাসীরাও স্বীকার করবেন। সেই সময়ও আসবে
তাই না। এখন তোমাদের প্রভাব ততটা বিকশিত হয়নি। এখন রাজধানী স্থাপন হচ্ছে, হাতে সময়
আছে। শেষের দিকে এই সন্ন্যাসী আদিরাও এসে এই জ্ঞান বুঝবে। সৃষ্টি চক্রের কিভাবে
পুনরাবৃত্তি হচ্ছে, এই জ্ঞান কারোর মধ্যে নেই। এটাও বাচ্চারা জানে যে, পবিত্রতার
উপরেই অনেক বিঘ্ন আসে। অবলা নারীদের উপর অত্যাচার হয়। দ্রৌপদীও ডেকেছিল তাই না।
বাস্তবে তোমরাই হলে সব দ্রৌপদী, সীতা, পার্বতী। স্মরণে থাকার কারণে অবলা, পতিতারাও
বাবার থেকে অবিনাশী উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করে। তারা স্মরণের যাত্রায় তো থাকতেই পারে,
তাই না! ভগবান এসে এই যজ্ঞ রচনা করেছেন, এই যজ্ঞে অনেক বিঘ্ন আসে। এখনও পর্যন্ত
বিঘ্ন আসতেই থাকছে, যেমন কন্যাদেরকে জোর করে বিবাহ দিয়ে দেয় আর যদি না মানে তাহলে
তাদেরকে মারধর করে ঘর থেকে বের করে দেয়, এইজন্য তারা আহ্বান করে আমাকে - হে
পতিতপাবন এসো, তাই তার আসার অবশ্যই একটি রথ চাই, তাই না! যার দ্বারা তিনি এসে
তোমাদেরকে পবিত্র বানাবেন। গঙ্গার জলে স্নান করে কেউ পবিত্র হতে পারে না। বাবা-ই এসে
তোমাদেরকে পবিত্র বানিয়ে পবিত্র দুনিয়ার মালিক তৈরী করেন।
তোমরা দেখছো যে, এই
পতিত দুনিয়ার বিনাশ সামনে অপেক্ষা করছে। কেনই না আমরা এখন বাবার হয়ে যাই, স্বাহা
হয়ে যাই। সবাই জিজ্ঞাসা করে - স্বাহা কিভাবে হবে? পুরানো সবকিছু ট্রান্সফার কিভাবে
করবে? বাবা বলছেন - বাচ্চারা, তোমরা এই (সাকার) বাবাকে তো দেখছো, তাই না! ইনি নিজে
করে তোমাদেরকে শেখাচ্ছেন। যেরকম কর্ম আমরা করব, আমাদেরকে দেখে অন্যরা করবে। শিব বাবা
এঁনার দ্বারা কর্ম করাচ্ছেন, তাই না! নিজের সবকিছু এই যজ্ঞতে স্বাহা করে দিয়েছেন।
স্বাহা হওয়ার জন্য কোনো কষ্ট করতে হয় না। ইনি না অনেক ধনী ছিলেন, আর না গরীব
ছিলেন। সাধারণ ছিলেন। যজ্ঞ রচনা করা হলে, যজ্ঞের সেবাধারীদের জন্য খাদ্য-পানীয়
ইত্যাদি সমস্ত সামগ্রীও চাই, তাই না। এটা হলো ঈশ্বরীয় যজ্ঞ। ঈশ্বর এসে এই জ্ঞান
যজ্ঞের স্থাপনা করেছেন। তোমাদেরকে পড়াচ্ছেন, এই যজ্ঞের মহিমাও অনেক প্রশংসনীয়।
ঈশ্বরীয় যজ্ঞের দ্বারাই তোমাদের শরীর নির্বাহ হয়। যে নিজেকে সমর্পিত মনে করে, বলে
- আমি হলাম নিমিত্ত, এই সবকিছু হলো ঈশ্বরের, আমি শিব বাবার যজ্ঞ থেকে ভোজন করছি -
এটাই হলো বোঝার বিষয়, তাই না। এখানে তো এমন নয় যে, সবাইকে এসে বসে যেতে হবে। এঁনাকে
(ব্রহ্মাবাবাকে) উদাহরণ হিসেবে তো দেখেছ - কিভাবে সবকিছুকে স্বাহা করেছেন। বাবা
বলছেন যে, যেরকম কর্ম এখানে ইনি (ব্রহ্মাবাবা) করেন, এঁনাকে দেখে অন্যরাও এসেছে।
অনেকেই স্বাহা হয়েছে। যে-যে স্বাহা হয়েছে, তারা নিজেদের অবিনাশী উত্তরাধিকার
প্রাপ্ত করেছে। বুদ্ধির দ্বারাও বোঝা যায় যে - আত্মা তো চলে যাবে, বাকি এই শরীর আদি
সবকিছুই এখানেই বিনাশ হয়ে যাবে। এটা হল অসীম জগতের যজ্ঞ, এখানে সবাই স্বাহা হবে।
বাচ্চারা তোমাদেরকেই বোঝানো হয় যে, কিভাবে বুদ্ধির দ্বারা স্বাহা হয়ে মোহমুক্ত হতে
হয়। এটাও জানো যে, এই সব সামগ্রী জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে যাবে। কত বড় এই যজ্ঞ!
সেখানে (সত্যযুগে) তো আর কোনো যজ্ঞ রচনা করা হবে না। না কোনো উপদ্রব হবে। এইসব
এখানকার, যে ভক্তিমার্গের অনেক যজ্ঞ হয়, সেই সব শেষ হয়ে যাবে। জ্ঞানের সাগর হলেন
এক ভগবান। তিনিই হলেন মনুষ্য সৃষ্টির বীজরূপ, সত্য এবং চৈতন্য স্বরূপ। শরীর তো হল
জড়পদার্থ, আত্মাই হল চৈতন্য। তিনি হলেন জ্ঞানের সাগর, বাচ্চারা তোমাদেরকে এখন
জ্ঞানের সাগর বসে পড়াচ্ছেন। তারা তো কেবল গান করতে থাকে আর তোমাদেরকে বাবা সমস্ত
জ্ঞান শোনাচ্ছেন। জ্ঞান তো বেশী কিছু নয়। বিশ্বের এই চক্রের কিভাবে পুনরাবৃত্তি হয়,
এটাই কেবল বোঝাতে হবে।
এখানে বাবা স্বয়ং
তোমাদেরকে পড়াচ্ছেন। তিনি বলেন-ই যে - আমি সাধারন শরীরে প্রবেশ করি। ভাগীরথও
বিশেষভাবে খ্যাত, অবশ্যই মানুষ-ই হবেন, যাঁর মধ্যে স্বয়ং বাবা এসেছেন। তাঁর তো
একটাই নাম চলে আসছে - শিব, আর অন্য সকলের নাম পরিবর্তন হতে থাকে, এনার (শিববাবার)
নাম পরিবর্তন হয়নি। তবে ভক্তিতে অনেক নাম রেখে দিয়েছে। এখানে তো হলেন-ই হলেন শিব
বাবা। শিব বাবাকেই কল্যাণকারী বলা হয়ে থাকে। ভগবানই এসে নতুন দুনিয়া স্বর্গ
স্থাপন করেন। তাই তিনি হলেন কল্যাণকারী, তাই না। তোমরা এখন জেনে গেছ যে, ভারতেই
স্বর্গ ছিল। এখন নরক হয়ে গেছে, পুনরায় স্বর্গ অবশ্যই হবে। এই যুগকেই বলা হয়
পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগ, যখন বাবা নৌকার মাঝি হয়ে তোমাদেরকে এই পাড় থেকে ওই পাড়ে
নিয়ে যান। এটাই হলো পুরানো দুঃখের দুনিয়া, পুনরায় অবশ্যই নতুন দুনিয়া হবে, ড্রামা
অনুসার, যার জন্য তোমরা এখন পুরুষার্থ করছো। বাবার স্মরণই বারেবারে ভুলে যাও, এর
মধ্যেই পরিশ্রম আছে, বাকি তোমাদের দ্বারা যা কিছু বিকর্ম হয়েছে, তার শাস্তিস্বরূপ
কর্মভোগ রূপে তোমাদেরকে ভুগতেই হবে। কর্মভোগ অন্ত পর্যন্ত ভুগতেই হবে। সেখানে ক্ষমা
হবে না। এইরকম নয় যে, বাবা ক্ষমা করো। ক্ষমা ইত্যাদি কিছুই হবে না। ড্রামা অনুসারে
সবকিছু হতে থাকবে। এখানে ক্ষমা আদির কোনো কথাই নেই। হিসেব-নিকেশ সমাপ্ত করতেই হবে।
তমোপ্রধান থেকে সতোপ্রধান হতেই হবে, তার জন্যই এখন শ্রীমত প্রাপ্ত হচ্ছে, শ্রী শ্রী
শিব বাবার শ্রীমতের দ্বারা তোমরা শ্রী তৈরী হচ্ছো। উচ্চ থেকেও উচ্চ বাবা তোমাদেরকে
উচ্চ বানাচ্ছেন। তোমরা এখন তৈরী হচ্ছ, এখনই তোমাদের স্মরণে এসেছে যে - বাবা
কল্পে-কল্পে এসে আমাদেরকে পড়ান। অর্ধেককল্প ধরে তার প্রালব্ধ প্রাপ্ত হয়। সৃষ্টি
চক্রের কিভাবে পুনরাবৃত্তি হয়, এই জ্ঞানের দরকার থাকেনা। কল্পে কল্পে এক বারের
জন্য এসে বাবা বলে দেন যে, এই সৃষ্টি চক্রের কিভাবে পুনরাবৃত্তি হয়।
তোমাদের কাজই হলো পড়া
আর পবিত্র হওয়া। স্মরণের যাত্রায় থাকতে হবে। বাবার হয়ে আর পবিত্র যদি না হও, তবে
একশত গুন শাস্তি ভোগ করতে হবে। নামই বদনাম হয়ে যাবে। বলাই হয় যে - সদ্গুরুর
নিন্দুক কোনো পদ প্রাপ্ত করতে পারবে না। সাধারণ মানুষেরা এটা জানেই না যে - ইনি কে!
সত্য বাবা-ই হলেন সদ্গুরু, সৎ শিক্ষক, তাই না! তিনি তোমাদেরকে এখন পড়াচ্ছেন, তিনিই
আবার তোমাদের সদ্গুরু। যেরকম বাবা হলেন জ্ঞানের সাগর, তোমরাও জ্ঞানের সাগর হলে, তাই
না! বাবা তো তোমাদেরকে সমস্ত জ্ঞান দিয়ে দিয়েছেন, যে আত্মা কল্পপূর্বে যতটা জ্ঞান
ধারণ করেছিল, ততটাই ধারণ করবে। পুরুষার্থ করতে হবে, কর্ম ছাড়া কেউ থাকতে পারবে না।
অনেকেই হঠযোগ আদি করতে থাকে, সেসবও হলো কর্ম, তাই না! সেটাও হলো এক ধরনের ব্যবসা,
জীবিকা পালনের জন্য। নাম হয়, অনেক টাকাও প্রাপ্ত হয়, তারা আবার জলের ওপর দিয়ে -
আগুনের ওপর দিয়ে হেঁটে যেতেও পারে। কেবলমাত্র উড়তে পারেনা। ওড়ার জন্য তো পেট্রোল
আদি চাই, তাই না! কিন্তু এর দ্বারা তো কিছু লাভ হয় না। পবিত্র তাে হতে পারেনা।
বিজ্ঞানীদের মধ্যেও প্রতিযোগিতা হয়। তাদের হলো বিজ্ঞানের প্রতিযোগিতা আর তোমাদের
হলো সাইলেন্সের। সবাই শান্তিই প্রার্থনা করে। বাবা বলেন যে - শান্তি তো হলো
তোমাদের স্বধর্ম, নিজেকে আত্মা মনে করো, নিজেদের ঘরে ফিরে যেতে হবে, শান্তিধামে। এটা
হলো দুঃখ ধাম। আমরা শান্তিধাম থেকে পুনরায় সুখধামে আসবো। এই দুঃখ ধামের এখন বিনাশ
হয়ে যাবে। এটাই খুব ভালোভাবে ধারণ করে অন্যদেরকেও ধারণ করাতে হবে। আর অল্প
কয়েকদিন অবশিষ্ট আছে, লৌকিকে তো তারা পড়াশোনা করে পুনরায় শরীর নির্বাহ করার জন্য
অনেক পরিশ্রম করে। ভাগ্যবান বাচ্চারাই শীঘ্র নির্ণয় করতে পারে যে, আমাকে কোন পড়া
পড়তে হবে। ওই লৌকিক পড়াশোনা থেকে কি প্রাপ্ত হয়। আর এই অলৌকিক পড়াশোনা থেকে ২১
জন্মের প্রালব্ধ তৈরী হয়। তাই এই চিন্তা করতে হবে যে, আমাকে কোন পড়াশোনা করতে হবে!
যে আত্মার অসীম জগতের বাবার থেকে অবিনাশী উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করার ইচ্ছা থাকবে, সে
এই অসীম জগতের পড়াশোনা করতে শুরু করে দেবে। কিন্তু ড্রামার প্ল্যান অনুসারে কারো
ভাগ্যতে না থাকলে তো সে ওই লৌকিক দুনিয়ার পড়াশোনাতেই আটকে থাকবে। এখানকার এই পড়া
তো পড়বেই না। বলে যে, সময় পাইনা। বাবা জিজ্ঞাসা করেন - কোন জ্ঞান সবথেকে ভালো?
ওখান থেকে কি প্রাপ্ত হবে আর এখান থেকে কি প্রাপ্ত হবে? তারা বলে যে - বাবা লৌকিক
পড়াশোনা করে বিশেষ কিছু প্রাপ্ত হয় না। অল্প একটু পড়ে টাকা উপার্জন করবো। এখানে
তো ভগবান পড়াচ্ছেন। তোমাদেরকে পড়াশোনা করে তো রাজপদ প্রাপ্ত করতে হবে, তাই বিশেষ
মনোযোগ কোন বিষয়ের উপর দিতে হবে? কেউ কেউ তো বলে বাবা সেখানকার কোর্স সম্পন্ন করে
তারপর আসবো। বাবা বুঝে যান যে, এর ভাগ্যে নেই। ভবিষ্যতে কি হতে চলেছে, সেটা আর
কিছুদিন পরেই দেখতে পাবে। তারা বোঝে যে, শরীরের উপর কোনো ভরসা নেই, তাই অবিনাশী
উপার্জন করতে লেগে যেতে হবে। যার ভাগ্যে আছে সেই নিজের ভাগ্য তৈরি করবে। সম্পূর্ণ
মনোযোগ সহকারে পড়বে, আমি তো বাবার থেকে অবিনাশী উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করেই ছাড়বো।
অসীম জগতের বাবা আমাদেরকে রাজত্ব দিতে এসেছেন, তাই কেনই না এই এক অন্তিম জন্মে আমরা
পবিত্র হবো না ! এত অনেক বাচ্চারা পবিত্র থাকে। তারা মিথ্যা বলে কি! সবাই পুরুষার্থ
করছে। পড়াশোনা করছে, তবুও বিশ্বাস করে না। অসীম জগতের বাবা আসেনই তখন, যখন পুরানো
দুনিয়াকে নতুন বানানোর সময় হয়। পুরানো দুনিয়ার বিনাশ তো সামনে দাঁড়িয়ে আছে।
এটা একদম পরিস্কার। সময়ও একদম সঠিক ভাবে এগোচ্ছে, এখন অনেক ধর্মও আছে, সত্যযুগে
হলোই এক ধর্ম। এটাও তোমাদের বুদ্ধিতে আছে। তোমাদের মধ্যেও অনেকেই আছে, যারা
নিশ্চয়কে পাকাপাকিভাবে ধারণ করেছে। আরে, নিশ্চয় করার জন্য সময় লাগে কি! শরীরের
উপরে কোন ভরসা নেই, তাই অল্প একটুও এই সুযোগ হাতছাড়া করা উচিত নয়। কারোর ভাগ্যে
না থাকলে তো, তাদের বুদ্ধিতে কিছুই ধারণা হবে না। আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
সততার সাথে উপার্জন করে ২১ জন্মের জন্য নিজের ভাগ্য বানাতে হবে। শরীরের উপর কোনো
ভরসা নেই, এইজন্য এই সুযোগ বিন্দুমাত্রও হাতছাড়া ক'রো না।
২ ) মোহমুক্ত হয়ে
নিজের সবকিছু এই রুদ্র যজ্ঞে স্বাহা করতে হবে। নিজেকে বাবার কাছে অর্পণ করে নিমিত্ত
হয়ে সবকিছু দেখাশোনা করতে হবে। সাকার বাবাকে ফলো করতে হবে।
বরদান:-
ঈশ্বরীয় নেশায় থেকে পুরানো দুনিয়াকে ভুলে গিয়ে সর্বপ্রাপ্তি সম্পন্ন ভব
যেরকম ওই নেশা সবকিছু
ভুলিয়ে দেয়, এইরকম এই ঈশ্বরীয় নেশা দুঃখের দুনিয়াকে সহজেই ভুলিয়ে দেয়। ওই নেশা তো
অনেক ক্ষতিকারক, অধিক পান করার কারণে জীবন শেষ হয়ে যায় কিন্তু এই নেশা অবিনাশী
বানিয়ে। যারা সদা ঈশ্বরীয় নেশাতে মত্ত থাকে তারা সর্ব প্রাপ্তি সম্পন্ন হয়ে যায়। এক
বাবা দ্বিতীয় কেউ নেই - এই স্মৃতিই নেশা চড়িয়ে দেয়। এই স্মৃতির দ্বারা সমর্থী এসে
যায়।
স্লোগান:-
একে
অপরকে কপি করার পরিবর্তে বাবাকে কপি করো।
অব্যক্ত ঈশারা :-
আত্মিক স্থিতিতে থাকার অভ্যাস করো, অন্তর্মুখী হও
যারা অন্তর্মুখী থাকে
তারাই প্রত্যেক জ্ঞান রত্নের গভীরে যেতে পারে। জ্ঞানের প্রত্যেক পয়েন্টের রহস্য কি
আর কোন্ সময়, কোন্ বিধির দ্বারা তাকে কার্যে বা সেবাতে লাগাতে হবে, এইভাবে তার উপর
মনন-চিন্তন করে সেই রহস্যের রসে চলে যাও, তাহলে নেশার অনুভূতি করতে পারবে।