18.07.2024 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা - তোমাদের সেবার সমাচার শোনার, পড়ার শখ থাকা উচিত, কারণ এতে উৎসাহ-উদ্দীপনা বাড়ে, সার্ভিস করার সঙ্কল্প উৎপন্ন হয়"

প্রশ্নঃ -
সঙ্গমযুগে বাবা তোমাদের সুখ প্রদান করেন না কিন্তু সুখের পথ বলে দেন - কেন?

উত্তরঃ  
কারণ সকলেই বাবার সন্তান, যদি এক সন্তানকে সুখ দেন সেটাও তো ঠিক নয়। লৌকিক বাবার কাছ থেকে বাচ্চারা অবশ্যই তাদের ভাগ পায়, অসীম জগতের পিতা (সুখের) প্রাপ্তি বন্টন করেন না, সুখের পথ বলে দেন। যারা সেই পথে চলে, পুরুষার্থ করে, তারা উচ্চপদ লাভ করে। বাচ্চাদের পুরুষার্থ করতে হবে, সবকিছুই নির্ভর করে পুরুষার্থের উপর।

ওম্ শান্তি ।
বাচ্চারা জানে যে, বাবা মুরলী (জ্ঞান) বাজান। মুরলী সকলের কাছেই যায় আর যারা মুরলী পড়ে সার্ভিস করে তাদের খবর ম্যাগাজিনে আসে। এখন যে বাচ্চারা ম্যাগাজিন পড়ে, তারা সেন্টারের সেবার খবর জানতে পারবে - অমুক-অমুক স্থানে এমন-এমন সেবা হচ্ছে। যারা পড়বেই না তারা কোনো খবর জানতেও পারবে না আর পুরুষার্থও করবে না। সার্ভিসের খবর শুনে মনে হয় আমিও যদি এরকম সেবা করতে পারি। ম্যাগাজিন পড়ে জানা যায়, আমাদের ভাই-বোনেরা কত সেবা করছে। একথা তো বাচ্চারা বোঝে - যত সার্ভিস ততই উচ্চপদের প্রাপ্তি, তাই ম্যাগাজিনও উৎসাহ প্রদান করে সার্ভিস করার জন্য। এ (ম্যাগাজিন) এমনিই (ফালতু) তৈরী হয় না। অপ্রয়োজনীয় তারাই মনে করে যারা নিজেরা পড়ে না। কেউ বলে, আমাদের অক্ষরজ্ঞান নেই, আরে রামায়ণ, ভাগবত, গীতা ইত্যাদি শোনার জন্য যাও, এও শোনা উচিৎ। তা নাহলে সার্ভিসে উৎসাহ বৃদ্ধি পাবে না। অমুক স্থানে এই সেবা হয়েছে। যদি শখ থাকে তবে কাউকে বল যে, সে পড়ে শুনিয়ে দিক। অনেক সেন্টারে এমনও অনেকে রয়েছে যারা ম্যাগাজিন পড়েই না। অনেকেই আছে যাদের তো সার্ভিসের কোনো নাম-নিশানই (চিহ্ন) থাকে না। তাহলে পদও তেমনই পাবে। একথা তো বোঝে যে, রাজধানী স্থাপিত হচ্ছে। তাতে যে যতটা পরিশ্রম করবে, ততটাই উচ্চপদ লাভ করবে। পড়ায় মনোযোগ না দিলে ফেল হয়ে যাবে। সবকিছুই নির্ভর করে এইসময়ের পড়ার উপর। যতই পড়বে আর পড়াবে তত নিজেরই লাভ হবে। এমন অনেক বাচ্চারাই রয়েছে, যাদের ম্যাগাজিন পড়ার কথা মনেও আসে না। তারা পাই-পয়সার (সামান্য) পদ প্রাপ্ত করে। ওখানে (স্বর্গে) একথা মনেও থাকবে না যে এ পুরুষার্থ করেনি তাই এই পদ পেয়েছে। না। এখানেই কর্ম-বিকর্মের সব কথা বুদ্ধিতে আসে।

কল্পের সঙ্গমযুগেই বাবা বোঝান, যারা বোঝে না তারা তো প্রস্তরবুদ্ধিসম্পন্ন। তোমরাও বোঝো যে, আমরা তুচ্ছবুদ্ধিসম্পন্ন ছিলাম, তাতেও আবার পার্সেন্টেজ থাকে। বাবা বাচ্চাদের বোঝাতে থাকেন, এখন কলিযুগ, এখানে দুঃখ অসীম। দুঃখও এমন-এমন রয়েছে, যারা সেন্সিবেল (বিচক্ষণ) হবে, তারা ঝট্ করে বুঝে যাবে যে, এ তো ঠিক কথা। তোমরাও জানো, কাল পর্যন্ত আমরা কত দুঃখী ছিলাম, অসীম দুঃখের মধ্যে ছিলাম। এখন আবার অসীম সুখের মধ্যে যাচ্ছি। এ হলো রাবণ-রাজ্য, কলিযুগ - একথাও তোমরা জানো। যারা নিজেরা জানে কিন্তু অন্যদের বোঝায় না, বাবা তাদের বলেন যে, এরা কিছুই জানে না। এরা জানে তখনই বলা হবে যখন সার্ভিস করবে, সেই খবর ম্যাগাজিনে আসবে। প্রতিদিন বাবা অনেক সহজ পয়েন্টস্ শোনাতে থাকেন। মানুষ তো জানে যে, কলিযুগ এখনও শিশু, যখন সঙ্গম মনে করবে তখনই পার্থক্য বুঝতে পারবে - সত্যযুগ আর কলিযুগের। কলিযুগে অসীম দুঃখ রয়েছে, সত্যযুগে সুখ অসীম। বাচ্চারা বলো, বাবা আমাদের অসীম সুখ দিচ্ছেন, যার বর্ণনা আমরা করছি। আর কেউ এমনভাবে বোঝাতে পারবে না। তোমরা নতুন কথা শোনাও আর কেউ তো একথা জিজ্ঞাসা করতে পারবে না যে তোমরা স্বর্গবাসী না নরকবাসী? বাচ্চারা, তোমাদের মধ্যেও নম্বরের ক্রমানুসারে রয়েছে, এতো পয়েন্টস্ স্মরণ করতে পারবে না, বোঝানোর সময় দেহ-অভিমান চলে আসে। আত্মাই শোনে বা ধারণ করে। কিন্তু বড়-বড় মহারথীরাও একথা ভুলে যায়। দেহ-অভিমানে এসে বলতে থাকে, এমন সবার হয়। বাবা তো বলেন, সবাই পুরুষার্থী। এমনও নয় যে, সবাই আত্মা মনে করে কথা বলে। না, বাবা, (সকলকে) আত্মা মনে করে জ্ঞান প্রদান করেন। বাকি যারা ভাই-ভাই, তারা পুরুষার্থ করছে - এমন (আত্ম-স্থিতিতে) অবস্থায় স্থির হতে হবে। তাই বাচ্চাদেরও বুঝতে হবে, কলিযুগে তো অসীম দুঃখ, সত্যযুগে সুখ অসীম। এখন সঙ্গমযুগ চলছে। বাবা পথ বলে দেন, এমন নয় যে, বাবা সুখ দেন। তিনি সুখের পথ বলে দেন। রাবণও দুঃখ দেয় না, দুখের অর্থাৎ উল্টো পথ বলে দেয়। বাবা না দুঃখ দেন, না সুখ দেন, সুখের পথ বলে দেন। তাই যে যত পুরুষার্থ করবে ততই সুখ পাবে। তিনি সুখ দেন না। বাবার শ্রীমতে চলে সুখ পায়। বাবা তো শুধু রাস্তা বলে দেন, রাবণের থেকে দুঃখের পথের খোঁজ পাওয়া যায়। যদি বাবা-ই দেন তাহলে সকলেরই একই রকমের উত্তরাধিকার পাওয়া উচিত । যেমন লৌকিক পিতাও তার উত্তরাধিকার বন্টন করেন। এখানে তো, যে যেমন পুরুষার্থ করবে তেমন। বাবা তো অতি সহজ পথ বলে দেন। এইরূপ এইরূপ করলে তবেই উচ্চপদ লাভ করবে। বাচ্চাদের পুরুষার্থ করতে হয় যেন আমরা সর্বাপেক্ষা উচ্চপদ লাভ করি, তারজন্য পড়তে হবে। আবার এমনও নয় যে ও উচ্চপদ পাবে, আর আমি বসে থাকবো। না, সর্বপ্রথমে পুরুষার্থ। ড্রামা অনুসারে পুরুষার্থ অবশ্যই করতে হবে। কেউ তীব্র পুরুষার্থ করে, কেউ কম। সর্বপ্রাপ্তি পুরুষার্থের উপরেই। বাবা তো পথ বলে দেন - আমাকে স্মরণ করো। যত স্মরণ করবে ততই বিকর্ম বিনাশ হবে। ড্রামার উপরেই সবকিছু ছাড়তে হবে। এ হলো বোঝার মতো বিষয়।

ওয়ার্ল্ডের হিস্ট্রি-জিওগ্রাফি রিপিট হয়। তাই যে পার্ট পূর্বে প্লে করেছি সেটাই পুনরায় প্লে করতে হবে। সব ধর্মই পুনরায় স্ব-স্ব সময়ানুসারে আসবে। মনে কর, খ্রীস্টানরা এখন ১০০ কোটি, পুনরায় এতজনই তাদের ভুমিকা পালন করতে আসবে। না আত্মার বিনাশ হয়, না তার পার্টের কখনও বিনাশ হতে পারে। এ হলো বোঝার মতো বিষয়। যে বুঝতে পারবে সে বোঝাতেও পারবে। জ্ঞান ধন দান করলে ধন কখনো কমে যায় না। ধারণা হতে থাকবে, অন্যদেরকেও ধনবান তৈরী করতে থাকবে কিন্তু ভাগ্যে না থাকলে নিজেকে দুর্ভাগ্যশালী মনে করবে। টিচার বলবে যে, তোমরা বোঝাতে না পারলে তো তোমাদের ভাগ্যে কম পদপ্রাপ্তি রয়েছে। ভাগ্যে না থাকলে, পুরুষার্থ কি করতে পারবে ! এ হলো অসীম জগতের পাঠশালা। প্রত্যেক (লৌকিক) টিচারের নিজস্ব পড়ানোর সাব্জেক্ট হয়। বাবার পড়ানোর কায়দা তো বাবা-ই জানেন আর বাচ্চারা, তোমরা জানো, আর কেউ জানতে পারে না। বাচ্চারা, তোমরা কত প্রচেষ্টা কর তবুও কেউ-কেউই বোঝে। বুদ্ধিতে বসেই না। যত সমীপে যেতে থাকবে, দেখতে পারবে যে ততই সমঝদার হয়ে যাচ্ছ। এখন মিউজিয়াম, আধ্যাত্মিক কলেজ ইত্যাদি খোলে। তোমাদের এই নামই তো সবচেয়ে বিচিত্র, আধ্যাত্মিক বিশ্ব বিদ্যালয়। গভর্নমেন্টও দেখবে। বলো, তোমাদের হলো স্থূল (জাগতিক) বিশ্ববিদ্যালয়, আর এ হলো আধ্যাত্মিক (রুহানী)। আত্মা (রুহ্) পড়ে। আত্মিক পিতা একবারই এসে সমগ্র ৮৪ চক্রের পড়া তাঁর আত্মা-রূপী সন্তানদের পড়ান। তোমরা ফিল্মে (ড্রামা) দেখবে যে তা ৩ ঘন্টা অন্তর-অন্তর হুবহু রিপীট হবে। এও ৫ হাজার বছরের চক্র, যা হুবহু রিপীট হয়। বাচ্চারা, এ শুধু তোমরাই জানো। ভক্তিতে ওরা শুধু শাস্ত্রকেই সঠিক (সত্য) বলে মনে করে। তোমাদের কোনো শাস্ত্র নেই। বাবা বসে বোঝান, বাবা কি কোনো শাস্ত্র পড়েছেন ?ভক্তি মার্গের লোকেরা তো গীতা পাঠ করে শোনায়। পড়াশোনা করে তো আর মায়ের পেট থেকে বেরোবে না। পড়ানোর পার্ট হলো অসীম জগতের পিতার। নিজের পরিচয় দেন। দুনিয়া তো জানেই না। গাওয়াও হয় - বাবা জ্ঞানের সাগর। কৃষ্ণের উদ্দেশ্যে একথা বলা হয় না যে তিনি জ্ঞানের সাগর। এই লক্ষ্মী-নারায়ণও কি জ্ঞানের সাগর? না, এও বিস্ময়কর, আমরা ব্রাহ্মণরাই শ্রীমত অনুসারে এই জ্ঞান শোনাই। তোমরাও জানো যে, সেই অর্থে আমরা ব্রাহ্মণরাই হলাম প্রজাপিতা ব্রহ্মার সন্তান। অনেকবার এমন হয়েছি, পুনরায় হব। মানুষের বুদ্ধিতে যখন প্রবেশ করবে তখন তারা মানবে। তোমরাই কেবল জানো যে, প্রতি কল্পে আমরাই প্রজাপিতা ব্রহ্মার দত্তক-সন্তান হই। যারা বোঝে তারা নিশ্চয়বুদ্ধি হয়ে যায়। ব্রাহ্মণ না হলে দেবতা হবে কিভাবে? প্রত্যেকের বুদ্ধিতেই এটি রয়েছে। স্কুলেও এমন হয় - কেউ স্কলারশিপ পায়, কেউ আবার ফেলও করে। পুনরায় নতুন করে পড়তে হয়। বাবা বলেন যে, বিকারে পতিত হলে সব উপার্জনই নষ্ট হয়ে যায়, আর পুনরায় বুদ্ধিতেও বসে না। তখন ভিতরে-ভিতরে দংশন হতে থাকবে।

তোমরা জানো যে, এই জন্মে যা পাপ করেছি সে তো সকলেই জানে। কিন্তু পূর্ব জন্মে কি করেছি তা তো স্মরণে নেই। অবশ্যই পাপ করেছি। যারা পুণ্যাত্মা ছিল তারাই পাপাত্মা হয়ে গেছে। সব হিসেব-নিকেশ বাবা বসে বোঝান। অনেক বাচ্চারা আবার ভুলেও যায়, পড়ে না। যদি পড়ে তাহলে (অন্যদের) পড়াতেও অবশ্যই পারবে। কোনো স্বল্পবুদ্ধিসম্পন্নও তীক্ষ্ণবুদ্ধিসম্পন্ন হয়ে যায়, এই পড়া কত উচ্চ(বড়)। বাবার এই পড়ার (জ্ঞানের) দ্বারাই সূর্যবংশীয়-চন্দ্রবংশীয় পরিবার তৈরী হয়। এই জন্মেই তারা পড়াশোনা করে আর পদপ্রাপ্ত করে। তোমরা তো জানো যে, এই পড়ার জন্য যে পদপ্রাপ্তি ঘটে তা পাওয়া যায় নতুন দুনিয়ায়। নতুন দুনিয়া আর অতি দূরে নয়। যেমন বস্ত্র বদল করা হয় তেমনই পুরানো দুনিয়াকে ছেড়ে যেতে হবে নতুন দুনিয়ায়। বিনাশও অবশ্যই হবে। এখন তোমরা নতুন দুনিয়ার জন্য তৈরী হচ্ছো। এই পুরানো বস্ত্র (শরীর) পুনরায় ছেড়ে যেতে হবে। নম্বরের ক্রমানুসারে রাজধানী স্থাপিত হচ্ছে, যারা ভালভাবে পড়বে তারাই প্রথমে স্বর্গে আসবে। বাকিরা পরে আসবে। তারা কি স্বর্গে আসতে সমর্থ হবে, না হবে না। স্বর্গে যারা দাস-দাসী হবে তারাও হৃদয়ে বসে থাকবে। এমন নয় যে সবাই আসতে পারবে। এখন আধ্যাত্মিক কলেজ ইত্যাদি খুলতে থাকে, সকলেই এসে পুরুষার্থ করবে। যারা পড়াশোনায় তীক্ষ্ণ হবে, তারা এগিয়ে যেতে পারবে। তারা উচ্চপদ লাভ করবে। যারা স্বল্পবুদ্ধিসম্পন্ন হবে তারা কম পদ প্রাপ্ত করবে। এমনও হতে পারে যে, ভবিষ্যতে স্বল্পবুদ্ধির আত্মাও ভাল পুরুষার্থ করতে শুরু করে দেবে। আবার কোনো তীক্ষ্ণবুদ্ধিসম্পন্নও নীচে চলে যেতে পারে। পুরুষার্থের দ্বারাই তা বোঝা যায়। এই সকল ড্রামাই ঘটে চলেছে। আত্মা শরীর ধারণ করে এখানে তার নিজ ভুমিকা পালন করে, আবার নতুন বস্ত্র ধারণ করে তার নতুন ভুমিকা পালন করে। কখন যে কি কি হয়ে যায়। সংস্কার আত্মায় থাকে। বাইরে (লৌকিক জগতে) তো এতটুকুও জ্ঞান কারোর কাছে নেই। বাবা যখন এসে পড়ান তখনই জ্ঞান প্রাপ্ত হয়। টীচারই নেই তাহলে জ্ঞান কোথা থেকে আসবে। ওরা হলো ভক্ত। ভক্তিতে তো অসীম দুঃখ, যদিও মীরার সাক্ষাৎকার হয়েছিল কিন্তু সুখ কি পেয়েছিল, না পায় নি। সে অসুস্থও কি হয় নি! ওখানে (স্বর্গে) তো কোনো রকমের দুঃখের কথাই নেই। এখানে অসীম দুঃখ আর ওখানে সুখ অসীম। এখানে সকলেই দুঃখী, রাজারও দুঃখ আছে, তাই না। এর নামই হলো দুঃখধাম। আর ওটা হলো সুখধাম। সম্পূর্ণ দুঃখ আর সম্পূর্ণ সুখের এ হলো সঙ্গমযুগ। সত্যযুগে হলো সম্পূর্ণ সুখ, কলিযুগে সম্পূর্ণ দুঃখ। যত রকমের দুঃখ রয়েছে সবই বৃদ্ধি পেতে থাকে। ভবিষ্যতে আরও কত দুঃখ পেতে থাকবে। অগাধ দুঃখের পাহাড় ভেঙ্গে পড়বে।

যারা তোমাদের বলার জন্য খুব কম সময় দেবে, দুই মিনিট দিলেও তাতেই বোঝাও যে, সত্যযুগে অসীম সুখ ছিল যা বাবা দেন। রাবণের থেকে অসীম দুঃখ প্রাপ্ত হয়। এখন বাবা বলেন, কাম-বিকারের উপর বিজয়লাভ কর তবেই জগৎ-জিৎ হবে। এই জ্ঞানের বিনাশ হয় না। এতটুকু শুনলেও স্বর্গলাভ করবে। প্রজা তো অনেক। কোথায় রাজা, আর কোথায় ফকির (রঙ্ক)। প্রত্যেকের নিজস্ব বুদ্ধি রয়েছে। যারা নিজেরা বুঝে অন্যদের বোঝায়, তারাই উচ্চ পদ লাভ করে। এই স্কুলও অতি বিচিত্র। ভগবান এসে পড়ান। শ্রীকৃষ্ণ তো তাও দৈবী-গুণসম্পন দেবতা। বাবা বলেন, আমি তো সব দৈবী-গুণ আর আসুরী-গুণ থেকে পৃথক । আমি তোমাদের পিতা, এখানে আসি তোমাদের পড়াতে। আধ্যাত্মিক জ্ঞান পরম আত্মাই দেন। গীতা-জ্ঞান কোনো দেহধারী মানুষ বা দেবতা দেয়নি। বিষ্ণু দেবতায় নমঃ বলা হয়, তাহলে কৃষ্ণ কে? দেবতা কৃষ্ণই তো বিষ্ণু - একথা কেউ জানে না। তোমাদের মধ্যেও কেউ-কেউ ভুলে যায়। নিজে যদি সম্পূর্ণ বোঝে তবেই অন্যদের বোঝাতে পারবে। সার্ভিস করে প্রমান নিয়ে এলে তবেই বোঝা যাবে যে সার্ভিস করছে। তাই বাবা বলেন, লম্বা-চওড়া সমাচার লিখো না, ওই অমুকে আসবে, এভাবে বলে গেছে... এইসব লেখার প্রয়োজনই নেই। সংক্ষেপে লিখতে হয়। দেখো, যখন এসেছে, থাকবে কি? সে যখন জ্ঞান বুঝবে আর সেবা করতে শুরু করবে, তখন বাবাকে লেখো । কেউ-কেউ সমাচার লেখে শুধু ফর শো । বাবা সব কিছুর রেজাল্ট দেখতে চায়। এমনিতে তো অনেকেই বাবার কাছে আসে, পরে চলেও যায়, এতে কি লাভ হয়। তাদের বাবা কি করবে। এতে না তাদের লাভ, না তোমাদের। এতে তোমাদের মিশন তো বৃদ্ধিলাভ করে না। আচ্ছা।

মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ সুমন আর সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা-রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) কোনো বিষয়েই অসহায় বোধ করবে না। নিজের মধ্যে জ্ঞানকে ধারণ করে তা দান করতে হবে। অন্যদের ভাগ্যকেও জাগাতে হবে।।

২ ) কারো সাথে কথা বলার সময় নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করে (অন্য) আত্মার সঙ্গে কথা বলতে হবে। এতটুকুও দেহ-অভিমান যেন না আসে। বাবার কাছ থেকে যে অসীম সুখ প্রাপ্ত করেছো, সেইসব অন্যদেরকে বন্টন করতে হবে।

বরদান:-
হৃদয় আর বুদ্ধি এই দুই এর ব্যালেন্স রেখে সেবা করে সদা সফলতামূর্তি ভব

কখনও কখনও বাচ্চারা সেবাতে কেবল বুদ্ধি ইউজ্ করে। কিন্তু হৃদয় আর বুদ্ধি এই দুটি দিয়ে সেবা করো তাহলে সেবাতে সফলতামূর্তি হয়ে যাবে। যারা কেবল বুদ্ধি দিয়ে সেবা করে তাদের বুদ্ধিতে অল্প সময়ের জন্য বাবার স্মরণ থাকে যে - হ্যাঁ বাবা-ই করাচ্ছেন কিন্তু কিছু সময় পরে পুনরায় সেই আমিত্ব ভাব এসে যায়। আর যে হৃদয় থেকে সেবা করে তার হৃদয়ে বাবার স্মরণ সদাই থাকে। হৃদয় থেকে সেবা করলে তার ফল অবশ্যই প্রাপ্ত হবে। আর যদি দুইএর ব্যালেন্স থাকে তাহলে সদাই সফলতা হতে থাকবে।

স্লোগান:-
অসীম জগতে থাকো তাহলে পার্থিব জগতের কথা স্বভাবতঃই সমাপ্ত হয়ে যাবে।