18.12.2024 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা - সর্বশক্তিমান বাবার সাথে বুদ্ধিযোগ লাগালে শক্তি প্রাপ্ত হবে, স্মরণের দ্বারাই আত্মারূপী ব্যাটারি চার্জ হয়, আত্মা পবিত্র সতোপ্রধান হয়ে যায়"

প্রশ্নঃ -
সঙ্গম যুগে তোমরা বাচ্চারা কী এমন পুরুষার্থ করো, যার প্রালব্ধে (ফল স্বরূপ) তোমাদের দেবতা পদ প্রাপ্ত হয়?

উত্তরঃ  
সঙ্গমে আমরা শীতল হওয়ার পুরুষার্থ করি। শীতল অর্থাৎ পবিত্র হলে আমরা দেবতা হয়ে যাই। যতক্ষণ না পর্যন্ত আমরা শীতল হতে পারছি, ততক্ষণ দেবতাও হতে পারবো না। এই সঙ্গমেই শীতল দেবী হয়ে সকলের উপরে জ্ঞানের ঠান্ডা জলের ছিটে দিয়ে সবাইকে শীতল করতে হবে। সকলের উত্তাপ শীতল করতে হবে। নিজেও শীতল হতে হবে আর সবাইকেও করতে হবে।

ওম্ শান্তি ।
বাচ্চাদের প্রথমে একটি কথাকে ভালো করে বুঝতে হবে যে, আমরা সবাই হলাম ভাই-ভাই আর শিব বাবা হলেন সকলের বাবা। তাঁকে সর্বশক্তিমান বলা হয়। তোমাদের মধ্যেই সর্বশক্তি ছিল। তোমরা সমগ্র বিশ্বের উপর রাজত্ব করেছিলে। ভারতের মধ্যেই এই দেবী-দেবতাদের রাজত্ব ছিল, তোমরাই পবিত্র দেবী-দেবতা ছিলে। তোমাদের কুল বা বংশে সবাই নির্বিকারী ছিল। কে নির্বিকারী ছিল? আত্মারা। এখন পুনরায় তোমরা নির্বিকারী হচ্ছো। সর্বশক্তিমান বাবার স্মরণে থেকে শক্তি গ্রহণ করছো। বাবা বুঝিয়েছেন যে, আত্মাই ৮৪ বার শরীর ধারণ করে পার্ট প্লে করে। আত্মার মধ্যেই সতোপ্রধানতার শক্তি ছিল, সেটাই আবার দিন দিন হ্রাস হয়ে গেছে। সতোপ্রধান থেকে তমোপ্রধান তো হতেই হবে। যেরকম ব্যাটারির শক্তি কম হয়ে গেলে মোটর বন্ধ হয়ে যায়। ব্যাটারি শক্তিহীন হয়ে যায়। আত্মার ব্যাটারি সম্পূর্ণরূপে শক্তিহীন হয়না, কিছু না কিছু শক্তি থাকে। যেরকম কেউ যদি মারা যায়, তখন তার উদ্দেশ্যে দীপ প্রজ্জ্বলন করা হয়, তাতে ঘৃত ঢালতেই থাকে, যাতে সেই জ্যোতি নিভে না যায়। এখন তোমরা বাচ্চারা বুঝে গেছো যে তোমাদের আত্মার মধ্যে সম্পূর্ণ শক্তি ছিল, এখন নেই। এখন পুনরায় তোমরা সর্বশক্তিমান বাবার থেকে নিজের বুদ্ধিযোগ লাগিয়ে নিজের মধ্যে শক্তি অর্জন করতে থাকো কেননা শক্তি কম হয়ে গেছে। শক্তি একদমই সমাপ্ত হয়ে গেলে শরীর থাকবে না। আত্মা বাবাকে স্মরণ করতে করতে একদম পবিত্র হয়ে যায়। সত্যযুগে তোমাদের ব্যাটারি সম্পূর্ণ শক্তিসম্পন্ন ছিল। পুনরায় ধীরে ধীরে কলা অর্থাৎ ব্যাটারি কম হতে শুরু করে। কলিযুগে আত্মার শক্তি একদম অল্প পরিমাণে থেকে যায়। যেন শক্তির দেউলিয়া হয়ে যায়। বাবাকে স্মরণ করলে আত্মা পুনরায় ভরপুর হয়ে যায়। তাই এখন বাবা বোঝাচ্ছেন যে একজনকেই স্মরণ করো। উচ্চ থেকেও উচ্চ, সর্বশ্রেষ্ঠ হলেন ভগবান। বাকি যা কিছু আছে সব হলো তাঁর রচনা। রচনার থেকে রচনা লৌকিক জগতের উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করে। রচয়িতা তো হলেন একমাত্র অসীম জগতের বাবা। বাকি যা কিছু আছে সবই হলো লৌকিক জগতের। অসীম জগতের বাবাকে স্মরণ করলে অসীম জগতের উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয়। তাই বাচ্চাদের আন্তরিকভাবে এটাই ভালোভাবে বুঝতে হবে যে বাবা আমাদের জন্য স্বর্গ নতুন দুনিয়া স্থাপন করছেন। ড্রামা অনুসারে স্বর্গ স্থাপনা হচ্ছে, যেখানে তোমরা বাচ্চারাই এসে রাজত্ব করো। আমি তো সদা পবিত্র থাকি। আমি কখনই গর্ভ থেকে জন্ম গ্রহণ করি না, না দেবী দেবতাদের মতো জন্ম নিই। কেবলমাত্র বাচ্চারা, তোমাদেরকে স্বর্গের রাজত্ব দেওয়ার জন্য যখন ইনি (ব্রহ্মা বাবা) ৬০ বছরের বাণপ্রস্থ অবস্থায় উপনীত হন তখন এঁনার শরীরে আমি এসে প্রবেশ করি। ইনিই আবার নম্বর ওয়ান তমোপ্রধান থেকে নম্বর ওয়ান সতোপ্রধান হয়ে যান। উচ্চ থেকেও উচ্চ হলেন ভগবান। তারপর হলেন ব্রহ্মা, বিষ্ণু, শংকর - সূক্ষ্মবতনবাসী। এই ব্রহ্মা, বিষ্ণু, শংকর কোথা থেকে এসেছেন? এটা কেবলমাত্র সাক্ষাৎকার হয়। সূক্ষ্ম বতন মাঝখানে আছে তাই না। এখানে স্থূল শরীর থাকেনা। সূক্ষ্ম শরীর কেবলমাত্র দিব্যদৃষ্টি দিয়েই দেখা যায়। ব্রহ্মা তো হলেন শ্বেত বস্ত্রধারী। বিষ্ণু হলেন হীরে জহরতে সজ্জিত। আবার শঙ্করের গলায় সাপ ইত্যাদি দেখানো হয়েছে। এইরকম শংকরাদি কেউ হয় না। দেখানো হয়েছে অমরনাথে শংকর পার্বতীকে অমরকথা শুনিয়েছিলেন। এখন সূক্ষ্ম বতনে তো মনুষ্যসৃষ্টি নেই। তাহলে সেখানে কথা কি করে শোনাবেন? বাকি সূক্ষ্মবতনের কেবলমাত্র সাক্ষাৎকারই হয়। যে সম্পূর্ণ পবিত্র হয়ে যায়, তারই সাক্ষাৎকার হয়। সেই আবার সত্যযুগে গিয়ে স্বর্গের মালিক হয়। তাই বুদ্ধিতে থাকা চাই যে এঁনারা এই রাজ্য-ভাগ্য কি করে পেয়েছেন? লড়াই আদি তো কিছু হয় না। দেবতারা হিংসা কিভাবে করবে? এখন তোমরা বাবাকে স্মরণ করে রাজ্য ভাগ্য নাও, কেউ মানুক বা না মানুক। গীতাতেও আছে যে দেহ সহ দেহের সকল ধর্মকে ভুলে মামেকম্ স্মরণ করো। বাবার তো দেহই নেই, যার মধ্যে আসক্তি থাকবে। বাবা বলেন - অল্প সময়ের জন্য আমি এই শরীরের লোন নিই। নাহলে আমি নলেজ কিভাবে দেবো? আমি হলাম এই কল্পবৃক্ষের চৈতন্য বীজ রূপ। এই বৃক্ষের জ্ঞান আমার কাছেই আছে। এই সৃষ্টির আয়ু কত বছর? কিভাবে উৎপত্তি, পালনা, বিনাশ হয়? মানুষের এইসব বিষয়ে কিছুই জানা নেই। তারা লৌকিক জগতের পড়াশোনা করে আর বাবা তো অসীম জগতের পড়াশোনা করিয়ে বাচ্চাদেরকে বিশ্বের মালিক বানান।

ভগবান কখনো দেহধারী মানুষকে বলা হয় না। এঁনাদের (ব্রহ্মা-বিষ্ণু-শংকরের) নিজের সূক্ষ্ম দেহ আছে, তাই এনাদেরও ভগবান বলা যায়না। এই শরীর তো হলো এই দাদার আত্মার সিংহাসন। অকালতখ্ত তাইনা। এখন এ হলো অকাল মূর্তি বাবার তখ্ত। অমৃতসরেও অকালতখ্ত আছে। বড় বড় ব্যক্তিরা সেই অকালতখ্তের উপর গিয়ে বসে। এখন বাবা বোঝাচ্ছেন যে, এ হলো আত্মাদের অকালতক্থ। আত্মার মধ্যেই ভালো কিংবা খারাপ সংস্কার হয়, তবেই তো বলা যায় যে এসব হলো কর্মের ফল। সকল আত্মার বাবা একজনই। বাবা কোনো শাস্ত্র আদি পড়ে বোঝান না। এই সকল কথাও শাস্ত্রাদির মধ্যে নেই, তবেই তো সবাই চিৎকার করে, বলে এরা শাস্ত্রকে মানে না। সাধু-সন্তাদি গঙ্গায় গিয়ে স্নান করে তো তারা কি পবিত্র হয়ে গেছে? ফিরে তো কেউই যেতে পারে না। সবাই পিছনে-পিছনে যাবে। যেরকম মশার ঝাঁক বা মৌমাছির ঝাঁক যায়। মৌমাছিদের মধ্যে আবার রানী মৌমাছি আছে, তার পিছনে-পিছনে সবাই যায়, বাবাও যাবেন তো তার পিছনে-পিছনে সকল আত্মারাও যাবে। মূলবতনে যেরকম সকল আত্মাদের ঝাঁক আছে, এখানে হলো সব মানুষে ঝাঁক। তো এই ঝাঁকও একদিন ফিরে যাবে। বাবা এসেছেন সকল বাচ্চাদের নিয়ে যাওয়ার জন্য। শিবের বরযাত্রী গাওয়া হয়, তাই না। পুত্র বলো বা কন্যা বলো বাবা এসেছেন বাচ্চাদেরকে স্মরণের যাত্রা শেখাতে। পবিত্র হওয়া ছাড়া আত্মা ঘরে ফিরে যেতে পারবে না। যখন পবিত্র হয়ে যাবে তো প্রথমে শান্তিধামে যাবে, পুনরায় সেখান থেকে ধীরে ধীরে এখানে আসতে থাকবে, বৃদ্ধি হতে থাকবে। রাজধানী হতেই হবে, তাই না। সবাই একসঙ্গে তো আসে না। কল্প বৃক্ষ আস্তে আস্তে বৃদ্ধি পায়। সবার প্রথমে আদি সনাতন দেবী-দেবতা ধর্ম ছিল, যেটা বাবা স্থাপন করেন। ব্রাহ্মণও সবার প্রথমে সেই রকমই হয়, যাদেরকে দেবতা হতে হয়। প্রজাপিতা ব্রহ্মা তো আছেন, তাইনা। প্রজাতেও ভাই-বোন হয়ে যায়। ব্রহ্মাকুমার-কুমারী তো এখানে অনেক হয়। অবশ্যই নিশ্চয়বুদ্ধি হতে হবে তবেই তো এত বেশি নম্বর পেতে পারে। তোমাদের মধ্যেও যে পাকাপোক্ত হবে সে-ই এখানে প্রথমে আসবে, আর যে পরিপক্ব হবে না সে পিছনে আসবে। মূলবতনে সকল আত্মারা থাকে, যখন নিচে আসে তখন এখানে বৃদ্ধি হতে থাকে। শরীর ছাড়া আত্মা কিভাবে পার্ট প্লে করবে? এ হলো পার্টধারীদের দুনিয়া, যেটা চার যুগ ধরে চলতে থাকে। সত্যযুগে আমরা দেবতা ছিলাম পুনরায় ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, শূদ্র হয়েছি। এখন এটা হলো পুরুষোত্তম সঙ্গমযুগ। এই যুগ এখনই তৈরি হয়, যখন বাবা আসেন। এই অসীম জগতের জ্ঞান এখন অসীম জগতের বাবা-ই আমাদের প্রদান করেন। শিববাবার নিজের শরীরের কোনো নাম নেই। এই শরীর তো হলো এই দাদার । বাবা অল্প সময়ের জন্য এই শরীরকে লোন নেন। বাবা বলেন যে, তোমাদের সাথে কথা বলার জন্য মুখ তো চাই আমার তাইনা। মুখ নাহলে বাবা বাচ্চাদের সঙ্গে কথা বলবেন কি করে। আবার অসীম জগতের জ্ঞানও এই মুখ দিয়েই তোমাদের শোনাই। এইজন্য এনাকে গৌমুখও বলা হয়। পাহাড় থেকে জল তো যেদিক থেকে খুশি বের হতে পারে। তবুও এখানে গোমুখ বানিয়ে দিয়েছে, তার থেকে জল বেরিয়ে আসে। সেটাকে আবার সবাই গঙ্গাজল মনে করে পান করে। সেই জলেরই আবার কত মহত্ত্ব থাকে। এই দুনিয়াতে সবই হলো মিথ্যা।সত্য তো একমাত্র বাবা-ই এসে শোনান। আবার সেই সমস্ত মিথ্যুক মানুষেরা বাবার জ্ঞানকে মিথ্যা মনে করে। ভারতে যখন সত্যযুগ ছিল তো একে সত্যখন্ড বলা হতো। এই ভারতই আবার পুরানো হয়ে যায়, তো প্রতিটা কথা, প্রতিটা জিনিস মিথ্যা হয়ে যায়। কতটা পার্থক্য হয়ে যায়। বাবা বলেন তোমরা আমার কতো গ্লানি করেছো। সর্বব্যাপী বলে কতো নিন্দা করেছো। শিববাবাকে আহ্বান করো এই কারণে যে এই পুরানো দুনিয়ার থেকে আমাকে নিয়ে চলো। বাবা বলেন আমার সকল বাচ্চারা কাম চিতাতে বসে কাঙ্গাল হয়ে গেছে। বাবা বাচ্চাদেরকে বলেন, তোমরা তো স্বর্গের মালিক ছিলে, তাইনা। স্মরণে আসছে? সেসব কথা বাচ্চাদেরকেই তো বাবা এসে বোঝান, সমগ্র দুনিয়াকে তো বোঝান না। বাচ্চারাই বাবাকে বোঝে। দুনিয়া এসব কথা কি জানে !

সব থেকে বড় কাঁটা হলো কাম বিকার। নামই হলো পতিত দুনিয়া। সত্যযুগ হলো ১০০% পবিত্র দুনিয়া। মানুষ পবিত্র দেবতাদের সামনে গিয়ে নমস্কার করে। হয়তো অনেক ভক্ত ভেজিটেরিয়ানও হয়ে থাকে, কিন্তু এমন নয় যে তারা বিকারগ্রস্ত নয়। এইরকম তো অনেক বাল্যকাল থেকেই ব্রহ্মচারীও আছে। ছোট থেকেই কোনো ছিঃ ছিঃ খাবার খায় না। সন্ন্যাসীরাও বলে নির্বিকারী হও। ঘরবাড়ির সন্ন্যাস করে, কিন্তু আবার পরের জন্মে কোনো গৃহস্থীর কাছেই জন্মগ্রহণ করে আবার পুনরায় ঘরবাড়ি ছেড়ে জঙ্গলে চলে যায়। কিন্তু তারা কি সত্যিই পতিত থেকে পবিত্র হতে পেরেছে? না। পতিত-পাবন বাবার শ্রীমৎ ছাড়া কেউ পতিত থেকে পাবন হতে পারে না। ভক্তি হলো নিচে নামার কলার রাস্তা। তাহলে আবার পবিত্র কি করে হবে ? পবিত্র হলেই তো ঘরে ফিরে যেতে পারবে, স্বর্গে আসতে পারবে। সত্যযুগী দেবী দেবতারা কখনো ঘরবাড়ি ছেড়ে চলে যায় কি? বাইরের লোকেদের হলো লৌকিক জগতের সন্ন্যাস, তোমাদের হলো অসীম জগতের সন্ন্যাস। সমগ্র দুনিয়া, আত্মীয় বন্ধু ইত্যাদি সবকিছুর সন্ন্যাস। তোমাদের জন্যই এখন স্বর্গের স্থাপনা হচ্ছে। তোমাদের বুদ্ধি স্বর্গের দিকে রয়েছে । মানুষ তো নরকেই আটকে আছে। তোমরা বাচ্চারা আবার বাবার স্মরণে আটকে আছো।

তোমাদেরকে শীতলদেবী বানানোর জন্য জ্ঞান চিতার উপর বসানো হয়। শীতল শব্দের এগেইনস্ট হলো উত্তপ্ত। তোমাদের নামই হলো শীতলা দেবী। একজন তো হবেনা, তাইনা। অবশ্যই অনেক হবে, যাঁরা ভারতকে শীতল বানিয়েছেন। এই সময় সবাই কাম চিতার উপরে জ্বলছে। তোমাদের নামই হলো শীতলা দেবী। তোমরা হলে শীতলকারী ঠান্ডা জলের ছিটা দেওয়া দেবী। জলের ছিটে দেওয়া হয় তাই না। এ হলো জ্ঞানের ছিটে, যেটা আত্মার উপর দেওয়া হয় । আত্মা পবিত্র হলেই শীতল হয়ে যায়। এই সময় সমগ্র দুনিয়া কাম চিতার উপরে চড়ে কালি হয়ে গেছে। এখন কলস প্রাপ্ত হয়েছে বাচ্চারা তোমাদের। কলস দ্বারা তোমরা নিজেরাও শীতল হও আর অপরদেরকেও শীতল বানাও। ইনিও শীতল হয়েছেন, তাই না। স্ত্রী পুরুষ একসাথে থাকে। ঘরবাড়ি ছাড়ার তো কোনো ব্যাপারই নেই, কিন্তু গোশালা তৈরি হয়েছে তো অবশ্যই কেউ ঘর বাড়ি ত্যাগ করেছে। কি কারণে ? জ্ঞান চিতার উপরে বসে শীতল হওয়ার জন্য। যখন তোমরা এখানে শীতল হয়ে যাবে, তখনই তোমরা দেবতা হতে পারবে। এখন বাচ্চারা, তোমাদের বুদ্ধিযোগ পুরানো ঘরের দিকে যেন না যায়। বাবার সাথে বুদ্ধি আটকে থাকে। কেননা তোমাদের সবাইকে বাবার সাথে ঘরে যেতে হবে। বাবা বলেন, মিষ্টি বাচ্চারা, আমি পান্ডা হয়ে এসেছি তোমাদেরকে নিয়ে যাওয়ার জন্য। এ হলো শিবশক্তি পাণ্ডবসেনা। তোমরা হলে শিবের থেকে শক্তি গ্রহণকারী। তিনি হলেন সর্বশক্তিমান। মানুষ তো বোঝে যে - পরমাত্মা মৃত ব্যক্তিকে জীবিত করে তুলতে পারেন। কিন্তু বাবা বলেন - প্রিয় বাচ্চারা, এই ড্রামায় প্রত্যেকের অনাদি পাঠ প্রাপ্ত হয়েছে। আমিই ক্রেয়েটর, ডায়রেক্টর, প্রিন্সিপাল অ্যাক্টর । ড্রামার পার্টকে আমরা কোনোভাবেই চেঞ্জ করতে পারবো না। মানুষ বোঝে যে গাছের পাতাও পরমাত্মার আদেশে নড়ে। কিন্তু পরমাত্মা তো নিজে বলছেন যে আমিও এই নাটকের অধীন, এর বন্ধনে বাঁধা রয়েছি। এইরকম নয় যে আমার আদেশে এই পাতা নড়বে। সর্বব্যাপীর জ্ঞান ভারতবাসীকে একদম কাঙ্গাল করে দিয়েছে। বাবার জ্ঞানে ভারত পুনরায় শির মুকুট হয়ে ওঠে। আচ্ছা!

মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) সূর্যবংশীতে সর্ব প্রথমে আসার জন্য নিশ্চয়বুদ্ধি হয়ে সম্পূর্ণ নম্বর নিতে হবে। পাক্বা ব্রাহ্মণ হতে হবে। অসীম জগতের জ্ঞানকে স্মরণে রাখতে হবে।

২ ) জ্ঞান চিতাতে বসে শীতল অর্থাৎ পবিত্র হতে হবে। জ্ঞান আর যোগের দ্বারা কামাগ্নিকে সমাপ্ত করতে হবে। বুদ্ধিযোগ সর্বদা এক বাবাতেই যেন আটকে ঝুলে থাকে।

বরদান:-
ব্রাহ্মণ জীবনে শ্রেষ্ঠ স্থিতি রূপী মেডেল প্রাপ্তকারী বেগমপুরের বাদশাহ্ ভব

তোমরা সবাই নিজেদের স্বস্থিতি ভালোর থেকেও ভালো বানানোর জন্যই ব্রাহ্মণ হয়েছো। ব্রাহ্মণ জীবনে স্থিতিই হলো তোমাদের প্রোপার্টি। এটাই হলো ব্রাহ্মণ জীবনের মেডেল। যে এই মেডেল প্রাপ্ত করে সে সদা অবিচল অনড় একরস স্থিতিতে থাকে, সদা নিশ্চিন্ত, বেগমপুরের বাদশাহ্ হয়ে যায়। সে সর্ব ইচ্ছাগুলির থেকে মুক্ত, ইচ্ছা মাত্রম্ অবিদ্যা স্বরূপ হয়ে যায়।

স্লোগান:-
অটুট নিশ্চয় আর নেশার সাথে বলো "আমার বাবা", তাহলে মায়া কাছেও আসতে পারবে না।