19.03.2025 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা - তোমাদেরকে এই পুরানো দুনিয়া, পুরানো শরীরের থেকে বেঁচে থেকেও মরে গিয়ে ঘরে ফিরে যেতে হবে, সেইজন্য দেহ-অভিমান ছেড়ে দেহী-অভিমানী হও"

প্রশ্নঃ -
ভালো-ভালো পুরুষার্থী বাচ্চাদের লক্ষণ কেমন হবে?

উত্তরঃ  
যারা ভালো পুরুষার্থী হবে, তারা সকাল-সকাল উঠে দেহী-অভিমানী হয়ে থাকার অভ্যাস করবে। তারা এক বাবার স্মরণে থাকার পুরুষার্থ করবে। তাদের লক্ষ্য থাকবে, অন্য কোনো দেহধারী যেন স্মরণে না আসে, নিরন্তর বাবা আর ৮৪ জন্মের চক্র যেন স্মরণে থাকে। তারা এটাও বলবে যে - আহা (অহো!) কি সৌভাগ্য।

ওম্ শান্তি ।
এখন বাচ্চারা, তোমরা বেঁচে থেকেও মরে আছো। কিভাবে মরে আছো? দেহের অভিমানকে ছেড়ে দিয়েছো, তো বাকি রইলো আত্মা। শরীর তো শেষ হয়ে যায়। আত্মা মরে না। বাবা বলেন, বেঁচে থেকেও নিজেকে আত্মা মনে করো আর পরমপিতা পরমাত্মার সাথে যোগ লাগালে আত্মা পবিত্র হয়ে যাবে। যতক্ষণ আত্মা সম্পূর্ণ পবিত্র না হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত পবিত্র শরীর প্রাপ্ত হবে না। আত্মা পবিত্র হয়ে গেলে, এই পুরানো শরীর নিজে থেকেই ছেড়ে চলে যাবে। যেরকম ভাবে সাপ নিজের খোলস পরিত্যাগ করে বেরিয়ে যায়, তার সাথে মমতা কেটে যায়, সে জানে যে, আমার আবার নতুন খোলস প্রাপ্ত হবে, পুরানো ছেড়ে দিতে হবে। প্রত্যেকের নিজের-নিজের বুদ্ধি তো আছে, তাই না। এখন বাচ্চারা, তোমরা বুঝে গেছো যে, আমাদের বেঁচে থেকেও এই পুরানো দুনিয়া থেকে, পুরানো শরীর থেকে মরে যেতে হবে, তারপর তোমরা আত্মারা শরীর ত্যাগ করে কোথায় যাবে ? নিজের ঘরে । সবার প্রথমে তো এই বিষয়ে পাকাপোক্ত স্মরণ করতে হবে যে, আমি হলাম আত্মা, শরীর নয়। আত্মা বলে যে - বাবা, আমি তোমার হয়ে গেছি, বেঁচে থেকেও মরে গেছি। এখন আত্মাদের এই নির্দেশ প্রাপ্ত হয়েছে যে, আমাকে অর্থাৎ এক বাবাকে স্মরণ করো তো তোমরা তমোপ্রধান থেকে সতোপ্রধান হয়ে যাবে। এই স্মরণের অভ্যাস পাকাপোক্ত হওয়া চাই। আত্মা বলে যে - বাবা, তুমি এসেছো, তাই আমি তোমারই হয়ে যাবো। আত্মা কি মেল, নাকি ফিমেল। সবসময় বলা হয়, আমরা হলাম ভাই-ভাই, এইরকম কি বলে যে, আমরা হলাম সবাই সিস্টার, সবাই বাচ্চা। সমস্ত বাচ্চাদের উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয় । এখন যদি নিজেকে বাচ্চী (ফিমেল) বলে পরিচয় দাও, তাহলে উত্তরাধিকার কিভাবে প্রাপ্ত হবে? আত্মারা সবাই হলো ভাই-ভাই। বাবা সবাইকে বলেন - আত্মিক বাচ্চারা, আমাকে স্মরণ করো। আত্মা অনেক ছোট হয়। এটা খুব সূক্ষ্ম বোঝার বিষয়। বাচ্চাদের স্মরণ স্থির থাকে না। সন্ন্যাসীরা দৃষ্টান্ত দেয় যে - আমি হলাম মহিষ, মহিষ.... এইরকম বলার কারণে সে নিজেকে মহিষ রূপেই ভাবতে থাকে। এখন বাস্তবে মহিষ তো কেউ হতে পারে না। বাবা তো বলেন যে, নিজেকে আত্মা মনে করো। এই আত্মা আর পরমাত্মার জ্ঞান তো কারোর কাছেই নেই, সেইজন্য এমন-এমন কথা বলে দেয়। এখন তোমাদেরকে দেহী-অভিমানী হতে হবে, আমরা হলাম আত্মা, এই পুরানো শরীর ছেড়ে আমাদেরকে নতুন নিতে হবে। মানুষ মুখেই বলে থাকে যে, আত্মা হলো তারার মতো, দুই ভ্রূকুটির মাঝখানে থাকে, আবার বলে দেয় যে আঙুলের মতো দেখতে। এখন 'তারা' কোথায়, আর আঙ্গুল কোথায়? আবার পুনরায় মাটির শালগ্রাম বানিয়ে দেয়, এত বড় আত্মা তো হতে পারে না। মানুষ দেহ অভিমানে আছে তাইনা, তাই মোটা রূপ বানিয়ে দেয়। এসব তো খুব সূক্ষ্ম বোঝার বিষয়। ভক্তিও মানুষ একান্তে ঘরের কোণে বসে করে। তোমাদেরকে তো গৃহস্থ ব্যবহারে থেকে ব্যবসাপত্রাদি করেও বুদ্ধি দিয়ে এটা পাকাপোক্ত করতে হবে যে - আমি হলাম আত্মা। বাবা বলেন, আমি, তোমাদের বাবাও এরকমই ছোটো বিন্দু । এমন নয় যে, আমি অনেক বড় । আমার মধ্যে সমস্ত জ্ঞান আছে। আত্মা আর পরমাত্মা উভয়েই একই রকম, কেবলমাত্র তাকে 'সুপ্রিম' অর্থাৎ 'পরম' বলা হয়। এটাও ড্রামাতে পূর্বনির্ধারিত। বাবা বলেন - আমি তো অমর। আমি অমর না হলে, তোমাদেরকে পাবন কি করে বানাবো! তোমাদেরকে সুইট চিল্ড্রেন কি করে বলবো! আত্মাই সবকিছু করে। বাবা এসে দেহী-অভিমানী বানিয়ে দেন, এর মধ্যেই পরিশ্রম আছে। বাবা বলেন - আমাকে স্মরণ করো, আর কাউকে স্মরণ করো না। যোগী তো দুনিয়াতে অনেক আছে। কন্যার বিবাহ হয়ে গেলে তো পতির সাথে যোগ লেগে যায়, তাই না। বিবাহের পূর্বে কি পতির স্মরণ ছিলো! পতিকে দেখার পর, সবসময় তার স্মরণেই থাকে। এখন বাবা বলেন, আমাকে স্মরণ করো। এর জন্য অনেক ভালো অভ্যাস চাই। যারা খুব ভালো-ভালো পুরুষার্থী বাচ্চারা আছে, তারা সকাল-সকাল উঠে দেহী-অভিমানী থাকার প্র্যাকটিস করে। ভক্তিও সকালে উঠে করে, তাই না। নিজের নিজের ইষ্ট দেবকে স্মরণ করে। হনুমানেরও অনেক পূজা করে, কিন্তু জানে না কিছুই। বাবা এসে বোঝান যে - তোমাদের বুদ্ধি এখন বাঁদরের মতো হয়ে গেছে। এখন পুনরায় তোমরা দেবতা হচ্ছো। এখন এটা হল পতিত তমোপ্রধান দুনিয়া। এখন তোমরা এসেছো অসীম জগতের বাবার কাছে। আমি তো পুনর্জন্ম থেকে বিরত থাকি। এই শরীর তো হল এই দাদার । আমার কোনো শরীরের নাম নেই। আমার নামই হলো কল্যাণকারী শিব। বাচ্চারা, তোমরা এটাও জানো যে, শিববাবা কল্যাণকারী, এসে নরককে স্বর্গে পরিণত করেন। অনেক কল্যাণ করেন। নরকের একদম বিনাশ করে দেন। প্রজাপিতা ব্রহ্মার দ্বারা এখন স্থাপনা হচ্ছে। তোমরা হলে প্রজাপিতা ব্রহ্মা মুখ বংশাবলী। চলতে-ফিরতে পরস্পরকে সাবধান করতে হবে - মন্মনাভব। বাবা বলেন যে, আমাকে স্মরণ করো তো বিকর্ম বিনাশ হয়ে যাবে। পতিত-পাবন তো বাবা-ই আছেন, তাই না! তারা তো ভুল করে ভগবানুবাচ এর বদলে কৃষ্ণ ভগবানুবাচ লিখে দিয়েছে। ভগবান তো নিরাকার আছেন, তাকেই পরমপিতা পরমাত্মা বলা হয়। তাঁর নাম হলো শিব। শিবের পূজাও অনেক হয়। শিব কাশি.., শিব কাশি.. বলতে থাকে। ভক্তিমার্গেও অনেক প্রকারের নাম রেখে দেয়। উপার্জন করার জন্য অনেক মন্দির বানায়। আসল নাম হলো শিব। পুনরায় সোমনাথ রেখে দিয়েছে, সোমনাথ, সোমরস পান করান, জ্ঞান ধন প্রদান করেন। পুনরায় যখন পূজারী হয়ে যায় তখন কত খরচ আদি করে তাঁর মন্দির বানায়, কেননা সোমরস দিয়েছেন, তাই না। সোমনাথের সাথে সোমনাথিনীও হবে! যথা রাজা-রাণী তথা প্রজা, সব সোমনাথ সোমনাথিনী আছে। তোমরা এখন স্বর্ণময় দুনিয়াতে যাচ্ছো। সেখানে সোনার ইঁট হবে। না হলে দেওয়াল আদি কিভাবে তৈরি হবে। সেখানে অনেক সোনা থাকবে, এইজন্য সেই দুনিয়াকে সোনার দুনিয়া বলা হয়। এটা হল লোহা, পাথরের দুনিয়া। স্বর্গের নাম শুনেই মুখে জল চলে আসে। বিষ্ণুর দুটো রূপ লক্ষ্মী-নারায়ণ আলাদা আলাদা হবে, তাইনা! তোমরা বিষ্ণুপুরের মালিক তৈরি হচ্ছো। এখন তোমরা আছো রাবণপুরীতে। তাই এখন বাবা বলেন যে, শুধুমাত্র নিজেকে আত্মা মনে করে আমাকে অর্থাৎ এক বাবাকে স্মরণ করো। বাবাও পরমধামে থাকেন, তোমরা আত্মারাও পরমধামে থাকো। বাবা বলেন যে, তোমাদেরকে কোনো পরিশ্রমই করাই না। খুব সহজ আছে। বাকি এই রাবণ শত্রু তোমাদের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। এই বিঘ্ন দেয়। জ্ঞানে বিঘ্ন পরে না, বিঘ্ন পরে স্মরণের সময়। সময় প্রতি সময়ে মায়া ভুলিয়ে দেয়। দেহ-অভিমানে নিয়ে আসে। বাবাকে স্মরণ করতে দেয়না, এই যুদ্ধ চলতেই থাকে। বাবা বলেন যে, তোমরা কর্মযোগী তো আছোই। আচ্ছা, দিনে স্মরণ না করতে পারো তো রাতে স্মরণ করো। রাতের স্মরণের অভ্যাস দিনে কাজে আসবে।

নিরন্তর স্মৃতিতে যেন থাকে যে - বাবা আমাদেরকে বিশ্বের মালিক বানাচ্ছেন, আমরা কি তার সাথে যোগযুক্ত হয়ে আছি? বাবার স্মরণ আর ৮৪ জন্মের চক্র স্মরণে থাকলে, অহো সৌভাগ্য। অন্যদেরকেও শোনাতে হবে - ভাই এবং বোনেরা, এখন কলিযুগ সম্পূর্ণ হয়ে সত্যযুগ আসছে। বাবা এসেছেন, সত্যযুগে যাওয়ার জন্য রাজযোগ শেখাচ্ছেন। কলিযুগের পরে সত্যযুগ আসবে। এক বাবাকে ছাড়া আর কাউকে স্মরণ করো না। বাণপ্রস্থী যারা হয়, তারা সন্ন্যাসীদের কাছে গিয়ে সঙ্গ করে। বানপ্রস্থ, সেখানে বাণীর প্রয়োজন নেই। আত্মা শান্ত থাকে। লীন তো হতে পারে না। ড্রামার থেকে কোনও অ্যাক্টর বেরিয়ে যেতে পারে না। এটাও বাবা বুঝিয়েছেন - এক বাবাকে ছাড়া আর কাউকে স্মরণ করো না। দেখেও স্মরণ করো না। এই পুরোনো দুনিয়া তো বিনাশ হয়ে যাবেই, কবরখানা, তাই না! মৃত ব্যক্তিকে কি কখনো স্মরণ করা হয়! বাবা বলেন, এরা সবাই মরে পড়ে আছে। আমি পতিতদেরকে পবিত্র বানিয়ে নিয়ে যেতে এসেছি। এখানেই সব কিছু শেষ হয়ে যাবে। আজকাল বম্ব আদি যা কিছু বানায়, অনেক তেজোময় জিনিস বানায়। বলে যে, এখানে বসেই যেখানে উদ্দেশ্য করে ছাড়বো, সেখানে গিয়েই পড়বে। এটাই পূর্বনির্দিষ্ট আছে, পুনরায় বিনাশ হবেই। ভগবান আসেনই, নতুন দুনিয়ায় জন্য রাজযোগ শেখাতে। এটা হল মহাভারতের লড়াই, যেটা শাস্ত্রতে লেখা আছে। প্রত্যেক কল্পেই ভগবান আসেন - স্থাপনা আর বিনাশ করতে। চিত্রও খুব সুন্দর আছে। তোমরাও সাক্ষাৎকার করতে থাকো যে, আমরা এটা হবো। এখানকার এই পড়াশোনাও শেষ হয়ে যাবে। সেখানে তো কোন ব্যারিস্টার ডাক্তার আদির দরকারই নেই। তোমরা তো এখানকার উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত অধিকার নিয়ে যাও। দক্ষতা এবং প্রতিভাও এখান থেকে নিয়ে যাবে। মহল আদি যারা বানায় সেগুলো অতি উত্তম হবে এবং সেখানেই তৈরি হবে। সেখানে বাজার আদিও তো হবে, তাই না। কাজকর্ম তো চলবে। এখান থেকে শেখা সমস্ত ক্রিয়া-কলাপ ওখানে কাজে আসবে। বিজ্ঞানের থেকেও অনেক দক্ষতা বা প্রতিভা শেখা হয়। সেসবকিছুই সেখানে কাজে আসবে। প্রজাতে যাবে। বাচ্চারা, তোমরা তো প্রজাতে যাবে না। তোমরা এসেইছো বাবা-মাম্মার হৃদয় সিংহাসনে বসার জন্য। বাবা যা কিছু শ্রীমত দেন, সেই অনুসারে চলো। অতি উত্তম শ্রীমৎ তো একটাই দেন যে, আমাকে স্মরণ করো। কারোর-কারোর ভাগ্য তো খুব তাড়াতাড়ি খুলে যায়। কোনো কারণে নিমিত্ত হয়ে যায়। কুমারীদেরকেও বাবা বলেন যে, শাদি হলো বরবাদি। এই নর্দমাতে পড়ে যেও না। তোমরা কি বাবার কথা মানবে না! স্বর্গের মহারানি হবেনা! নিজের সাথে প্রতিজ্ঞা করতে হবে যে, আমি সেই দুনিয়াতে কখনোই যাবো না। সেই দুনিয়াকে স্মরণও করবো না। শ্মশানকে কি কেউ স্মরণ করে! এখানে তোমরা বলো যে, এই শরীর ছেড়ে দিলেই আমরা নিজেদের স্বর্গে যেতে পারবো। এখন ৮৪ জন্ম পুরো হয়েছে, এখন আমরা নিজেদের ঘরে ফিরে যাবো। অন্যদেরকেও এই সমস্ত কথা শোনাতে হবে। তোমরা এটাও বোঝাে যে, বাবা ছাড়া সত্য যুগের রাজত্ব কেউ দিতে পারবে না।

এই রথকেও তো কর্মভোগ ভুগতে হয়, তাইনা! বাপ-দাদার মধ্যেও কখনো-কখনো কথাবার্তা হয় - এই বাবা(ব্রহ্মা) বলেন যে, বাবা আশীর্বাদ করো। কাশির জন্য কোনো ওষুধ দাও বা ছু-মন্ত্র দিয়ে উড়িয়ে দাও। বাবা(শিব) বলেন, না এটা তো তোমাকে ভুগতেই হবে। এই যে আমি তোমার রথ নিই, তার জন্য তো তোমাকে কিছু দিই। বাকি এসব তো হলো তোমার হিসাব-নিকাশ। অন্তিম সময় পর্যন্ত কিছু না কিছু হতেই থাকবে। তোমাকে আশীর্বাদ করলে তো সবাইকেই করতে হবে। আজ এই বচ্চী এখানে বসে আছে, কাল ট্রেনে অ্যাক্সিডেন্ট হলে বা মারা গেলে, বাবা বলবেন - এসব ড্রামা। এইরকম বলতে পারে কি যে, বাবা আগে কেন সাবধান করে দিলেন না? সেটা হয় না। আমি তো আসি-ই তোমাদেরকে পতিত থেকে পাবন বানাতে। এইসব বলতে আসি নাকি! এই হিসেব-নিকেশ তো তোমাদেরকে সমাপ্ত করতেই হবে। এখানে আশীর্বাদের কোন কথা নেই। এরজন্য যাও না সন্ন্যাসীদের কাছে। বাবা তো একটি কথাই বলেন। তোমরা আমাকে আহ্বান করেছো এইজন্য যে, আমাদেরকে এসে নরক থেকে স্বর্গে নিয়ে যাও। গাইতেও থাকে, পতিত-পাবন সীতারাম। কিন্তু অর্থ উল্টো বের করে দিয়েছে। তারপর তারা রামের মহিমা করতে থাকে - রঘুপতি রাঘব রাজা রাম....। বাবা বলেন, এই ভক্তি মার্গে তোমরা অনেক পয়সা নষ্ট করেছো। একটা গান আছে না - কি কৌতুক দেখলাম...দেবীদের মূর্তি বানিয়ে পূজা করে তারপর সমুদ্রে ডুবিয়ে দেয়। এখন বুঝতে পেরেছো যে, কত টাকা-পয়সা তোমরা নষ্ট করেছো, এটা আবারও হবে। সত্য যুগে তো এইরকম কাজ হয়না। সেকেন্ডের অনুসারে সবকিছুই পূর্বনির্দিষ্ট থাকে। কল্প পরেও ঠিক এইরকমই কথার পুনরাবৃত্তি হবে। এই ড্রামাকে খুব ভালোভাবে বুঝতে হবে। আচ্ছা, কেউ যদি বেশি সময় স্মরণ করতে না পারে, তো বাবা বলেন যে, কেবলমাত্র অল্ফ আর বে, অর্থাৎ বাবা আর বাদশাহীকে (সত্যযুগ) স্মরণ করো। অন্তরে এই চিন্তনই যেন সবসময় চলে যে আমি আত্মা কিভাবে ৮৪ জন্মের চক্র লাগিয়ে এসেছি। চিত্র দেখিয়ে বোঝাও, খুব সহজ আছে। এটাই হল আত্মিক বাচ্চাদের সাথে কথোপকথন। বাবা তো বাচ্চাদের সাথেই কথোপকথন করেন। অন্য কারোর সাথে তো করতে পারেন না। বাবা বলেন যে - নিজেকে আত্মা মনে করো। আত্মাই সবকিছু করে। বাবা স্মরণ করিয়ে দেন যে, তোমরা ৮৪ বার জম্ম নিয়েছো। মনুষ্য ই হয়েছো। যেরকম বাবা নিয়ম রচনা করেন যে, বিকারে যাওয়া যাবে না, সেরকমই এই নিয়মও রচনা করেন যে, দুঃখী হয়ে কেউ কান্নাকাটি করবে না। সত্যযুগ-ত্রেতাতে কেউ কান্নাকাটি করেনা, ছোট বাচ্চাও কান্নাকাটি করেনা। কান্নাকাটি করার নির্দেশ নেই। সেটা হলই হাসি-খুশীতে থাকার দুনিয়া। তার জন্য সম্পূর্ণ অভ্যাস এখানেই করতে হবে। আচ্ছা!

মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) বাবার থেকে আশীর্বাদ চাওয়ার পরিবর্তে, স্মরণের যাত্রায় থেকে নিজের হিসাব-নিকাশ সমাপ্ত করতে হবে। পবিত্র হওয়ার পুরুষার্থ করতে হবে। এই ড্রামাকে যথার্থ রীতিতে বুঝতে হবে।

২ ) এই পুরানো দুনিয়াকে দেখেও স্মরণ করবে না। কর্মযোগী হতে হবে। সর্বদা হাসিখুশিতে থাকার অভ্যাস করতে হবে। কখনও কান্নাকাটি করবে না।

বরদান:-
প্রবৃত্তিতে থেকে আমার ভাবের ত্যাগ করে সত্যিকারের ট্রাস্টি, মায়াজিৎ ভব

যেরকম নোংড়া আবর্জনাতে পোকামাকড়ের জন্ম হয় সেরকমই যখন আমার ভাব আসে তখন মায়ার জন্ম হয়। মায়াজীৎ হওয়ার সহজ উপায় হলো - নিজেকে সদা ট্রাস্টি মনে করা। ব্রহ্মাকুমার মানে ট্রাস্টি, ট্রাস্টির কারোর সাথে অ্যাটাচমেন্ট থাকে না, কেননা তাদের মধ্যে আমার ভাব থাকে না। গৃহস্থী মনে করলে মায়া আসবে আর ট্রাস্টি মনে করলে মায়া পালিয়ে যাবে এইজন্য পৃথক হয়ে প্রবৃত্তির কাজ করো তাহলে মায়াপ্রুফ থাকবে।

স্লোগান:-
যেখানে অভিমান থাকে সেখানে অপমানের ফিলিং অবশ্যই আসে।

অব্যক্ত ঈশারা :- সত্যতা আর সভ্যতারূপী কালচারকে ধারণ করো

তোমাদের আন্তরিক স্বচ্ছতা, সত্যতা উঠতে, বসতে, সেবা করতে লোকেদের অনুভব হবে, তখন পরমাত্ম প্রত্যক্ষতার নিমিত্ত হতে পারবে, এর জন্য পবিত্রতার আলো (প্রকাশ) যেন সদা জ্বলতে থাকে। অল্প একটুও দোলাচলে আসবে না, যত যত পবিত্রতার আলো অচল থাকবে ততই সহজে সবাই বাবাকে চিনতে পারবে।