19.07.2025
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
সর্বদা এই খুশীতে থাকো যে, আমাদের কে পড়াচ্ছেন, এও হলো মন্মনাভব। তোমাদের এমন খুশী
তো রয়েছে যে, কাল পর্যন্ত আমরা প্রস্তরবুদ্ধিসম্পন্ন ছিলাম, আজ পারশবুদ্ধিসম্পন্ন
হয়েছি"
প্রশ্নঃ -
ভাগ্য খুলে
যাওয়ার আধার কি?
উত্তরঃ
নিশ্চয়। যদি
ভাগ্য খুলতে দেরী হয় তবে তো খুঁড়িয়ে চলতে হবে । নিশ্চয়বুদ্ধিসম্পন্নরা ভালোভাবে পড়ে
গ্যাপ (দ্রুত এগিয়ে) করে যাবে। কোনো বিষয়ে যদি সংশয় থাকে, তবে পিছনে পড়ে যাবে। যে
নিশ্চয়বুদ্ধিসম্পন্ন হয়ে নিজের বুদ্ধিকে বাবার দিকে দৌড় করাতে থাকে, সে সতোপ্রধান
হয়ে যায়।
ওম্ শান্তি ।
সব স্টুডেন্ট
যখন স্কুলে পড়ে, তখন তাদের জানা থাকে যে, আমরা পড়াশোনা করে কি হবো। মিষ্টি-মিষ্টি
আত্মা রূপী বাচ্চাদের বুদ্ধিতে আসা উচিত যে, আমরা সত্যযুগে পারশপুরীর মালিক হই। এই
দেহের সম্বন্ধ ইত্যাদিকে পরিত্যাগ করতে হবে। এখন আমাদের পারশপুরীর মালিক পারশনাথ হতে
হবে। সারাদিন এই খুশী থাকা উচিত। তোমরা জানো - পারশপুরী কাকে বলে? ওখানে ঘর-বাড়ী
ইত্যাদি সব সোনা-রূপার হয়। এখানে হয় ইঁট-পাথরের ঘর-বাড়ী। এখন পুনরায় তোমরা
প্রস্তরবুদ্ধি থেকে পরশবুদ্ধি সম্পন্ন হও। প্রস্তরবুদ্ধি থেকে পারশবুদ্ধি তখন হয়,
যখন পারশনাথে পরিণত করেন যিনি, সেই বাবা এসে তা তৈরী করেন, তাই না ! তোমরা এখানে বসে
আছো, তোমরা জানো যে, আমাদের স্কুল হলো উচ্চ থেকেও উচ্চ। এরচেয়ে বড় স্কুল আর হয় না।
এই স্কুল থেকে তোমরা পদম-কোটি ভাগ্যশালী বিশ্বের মালিক হয়ে যাও। বাচ্চারা, তাহলে
তোমাদেরও কত খুশী থাকা উচিত। এই প্রস্তরপুরী থেকে পারশপুরীতে যাওয়ার এ হলো সঙ্গমযুগ।
কাল প্রস্তরবুদ্ধিসম্পন্ন ছিলে, আজ পারশবুদ্ধিসম্পন্ন হচ্ছো। এ'কথা সদা বুদ্ধিতে
থাকলে এও "মন্মনাভব"ই। স্কুলে টিচার আসে পড়াবার জন্য। স্টুডেন্টের মনে থাকে যে,
এখনই টিচার এলো কি এলো। বাচ্চারা, তোমরাও বোঝ যে - আমাদের টিচার স্বয়ং ঈশ্বর। তিনি
আমাদের স্বর্গের মালিক করে দেন তাহলে সঙ্গমেই আসবেন! এখন তোমরা জানো যে, মানুষ
আবাহন করতেই থাকে আর তিনি এখানে এসে গেছেন। কল্প-পূর্বেও এমনই হয়েছিল, তবেই তো লেখা
হয়েছে যে, বিনাশকালে বিপরীত বুদ্ধি কারণ তারা হলো প্রস্তরবুদ্ধিসম্পন্ন। তোমাদের হলো
বিনাশকালে প্রীত-বুদ্ধি। তোমরা পারশবুদ্ধি সম্পন্ন হচ্ছো। তাই এমন কোনো উপায় বের করা
উচিত, যাতে মানুষ শীঘ্রই বোঝে। এখানেও অনেককে নিয়ে আসে, তথাপি বলে শিববাবা ব্রহ্মার
শরীর দ্বারা কিভাবে পড়ান? কিভাবে আসেন? কিছুই বোঝে না। এত-এত সব সেন্টারে আসে।
নিশ্চয়বুদ্ধিসম্পন্ন তো, তাই না! সকলেই বলে শিব-ভগবানুবাচ, শিবই সকলের পিতা। কৃষ্ণকে
সকলের পিতা বলবে কি, না বলবে না। এতে বিভ্রান্ত হওয়ার কোনো কথাই নেই। কিন্তু ভাগ্য
যদি দেরীতে খোলে তখন খোঁড়াতে থাকে। যারা কম পড়ে তাদের বলা হয় - এরা খুঁড়িয়ে চলে।
যারা সংশয়বুদ্ধি সম্পন্ন তারা পিছনে পড়ে থাকবে। নিশ্চয়বুদ্ধিসম্পন্নরা, সঠিকভাবে
যারা পড়বে তারা দ্রুত এগিয়ে যাবে। কত সিম্পলভাবে বোঝানো হয়। বাচ্চারা যেমনভাবে দৌড়ে
গিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে পুনরায় ফিরে আসে। বাবাও বলেন, বুদ্ধি শীঘ্রই শিববাবার দিকে
ধাবিত করো তবেই সতোপ্রধান হয়ে যাবে। এখানে বোঝেও ভালোভাবে। তীরবিদ্ধ হয়, পুনরায় যখন
বাইরে যায় তখন সবশেষ হয়ে যায়। বাবা যখন জ্ঞান-ইঞ্জেকশন লাগান তখন নেশায় বুঁদ হয়ে
যাওয়া উচিত, তাই না! কিন্তু নেশা চড়েই না। এখানে যখন পেয়ালা-পূর্ণ জ্ঞানামৃত পান
করছি তখন এর প্রভাব তো পড়েই। বাইরে গেলেই ভুলে যায়। বাচ্চারা জানে যে - জ্ঞানসাগর,
পতিত-পাবন, সদ্গতিদাতা, মুক্তিদাতা হলেন একমাত্র বাবা-ই। তিনিই প্রত্যেক বিষয়ের
উত্তরাধিকার দেন। তিনি বলেন, তোমরাও সম্পূর্ণরূপে সাগর হও। আমার মধ্যে যত জ্ঞান
রয়েছে, ততটা তোমরাও ধারণ করো।
শিববাবার দেহের নেশা
নেই। বাবা বলেন - বাচ্চারা, আমি সদা শান্ত থাকি। তোমাদেরও যখন দেহ ছিল না, তখন (দেহের)
নেশাও ছিল না। শিববাবা কি বলেন যে - এ আমার জিনিস, না বলেন না। এই শরীরকে লোন নিয়েছি,
ধার করা জিনিস কি নিজের হয়, না হয় না। আমি এরমধ্যে প্রবেশ করেছি, সার্ভিসের
উদ্দেশ্যে কিছুসময়ের জন্য। বাচ্চারা এখন তোমাদের ঘরে ফিরে যেতে হবে, দৌড় লাগাতে হবে
ভগবানের সঙ্গে মিলনের জন্য। এত যজ্ঞ-তপ ইত্যাদি করে থাকে কিন্তু বোঝে কি, যে তাঁকে
কিভাবে পাওয়া যাবে? না বোঝে না। মনে করে, কোন না কোনো রূপে ভগবান আসবেন। বাবা অতি
সহজভাবে বোঝান, প্রদর্শনীতেও তোমরা বোঝাও। সত্যযুগ-ত্রেতার আয়ুও লেখা রয়েছে। সেখানে
২৫০০ বছর পর্যন্ত সবকিছু সম্পূর্ণ অ্যাকিউরেট। সূর্যবংশীদের পরে হয় চন্দ্রবংশী,
তারপর দেখাও যে রাবণ-রাজ্য শুরু হয় আর ভারত অপবিত্র হতে থাকে। দ্বাপর-কলিযুগে
রাবণ-রাজ্য শুরু হয়, তিথি-তারিখও রয়েছে। এর মধ্যে রাখো সঙ্গমযুগকে। সারথীও তো
অবশ্যই চাই, তাই না! এই রথে প্রবেশ করে বাবা রাজযোগ শেখান, যার ফলে এই
লক্ষ্মী-নারায়ণ হয়। কাউকে বোঝানো অতি সহজ। লক্ষ্মী-নারায়ণের ডিনায়েস্টি (রাজত্ব) কত
সময় পর্যন্ত চলে। আর সব কুল হলো পার্থিব জগতের, এ হলো অসীম জগতের। এই অসীম জগতের
হিস্ট্রি-জিওগ্রাফীকে জানা উচিত, তাই না! এখন হলো সঙ্গমযুগ, পুনরায় দৈবী-রাজ্য
স্থাপিত হচ্ছে। এই প্রস্তরপুরী, পুরানো দুনিয়া বিনাশ হয়ে যাবে। বিনাশ না হলে নতুন
দুনিয়া হবে কিভাবে ! এখন বলে নিউ দিল্লী। বাচ্চারা, তোমরা এখন জানো যে, নিউ দিল্লী
কবে হবে। নতুন দুনিয়ায় নিউ দিল্লী হয়। গায়নও রয়েছে, যমুনার উপকন্ঠে মহল হবে। যখন
এই লক্ষ্মী-নারায়ণের রাজ্য হবে তখন বলবে নিউ দিল্লী, পারশপুরী। নতুন রাজ্য তো
সত্যযুগে লক্ষ্মী-নারায়ণেরই থাকে। মানুষ তো এও ভুলে গেছে যে, ড্রামা কিভাবে শুরু হয়।
কারা-কারা মুখ্য অ্যাক্টর, সেও তো জানা উচিত, তাই না! অ্যাক্টর তো অনেক কিন্তু তোমরা
মুখ্য অ্যাক্টরদের জানো। তোমরাও মুখ্য অ্যাক্টর হচ্ছো। সর্বাপেক্ষা প্রধান পার্ট
তোমরা প্লে করছো। তোমরা হলে আধ্যাত্মিক সোস্যাল ওয়ার্কার, আর বাকি সব হলো লৌকিক
সোস্যাল ওয়ার্কার। তোমরা আত্মাদের বোঝাও, পড়ে আত্মা। মানুষ মনে করে শরীর পড়ে। এ'কথা
কেউ-ই জানে না যে, আত্মা এই ইন্দ্রিয় দ্বারা পড়ে। আমরা অর্থাৎ আত্মারা ব্যরিস্টার
ইত্যাদি হই। বাবা আমাদের পড়ান। সংস্কারও আত্মায় থাকে। সংস্কার নিয়ে যাবে পুনরায় এসে
নতুন দুনিয়ায় রাজত্ব করবে। যেমন সত্যযুগে রাজধানী চলতো তেমনভাবেই শুরু হয়ে যাবে। এতে
কিছু জিজ্ঞাসা করার প্রয়োজনই নেই। মুখ্যকথা হলো - কখনো দেহ-অভিমানে এসো না। নিজেকে
আত্মা নিশ্চয় করো। কোনও বিকর্ম কোরো না। স্মরণে থাকো, তা নাহলে এক বিকর্মের বোঝা
শতগুণ হয়ে যাবে। হাড়-গোড় একদম ভেঙে যাবে। এরমধ্যেও মুখ্য বিকার হলো কাম-বাসনা। অনেকে
বলে - বাচ্চারা বিরক্ত করে তখন মারতে হয়। এখন এটা কোনো জিজ্ঞাসা করার মতন কিছু নয়।
একে তো ছোট পাই-পয়সার পাপ বলা হবে। তোমাদের মাথায় তো জন্ম-জন্মান্তরের পাপ রয়েছে,
প্রথমে একে তো ভস্মীভূত করো। বাবা পবিত্র হওয়ার অনেক সহজ উপায় বলেন। একমাত্র বাবার
স্মরণেই তোমরা পবিত্র হয়ে যাবে। ভগবানুবাচ - বাচ্চাদের উদ্দেশ্যে, তোমাদের অর্থাৎ
আত্মাদের সঙ্গে বার্তালাপ করি। আর কোনো মানুষ এভাবে বুঝতে পারবে না। তারা নিজেদের
শরীর মনে করে। বাবা বলেন, আমি আত্মাদের বোঝাই। গায়নও করা হয়, আত্মা আর পরমাত্মার
মেলা হয়, এখানে কোনও আওয়াজ ইত্যাদি করতে হবে না। এ তো হলো পড়াশোনা । দূর-দূরান্ত
থেকে আসে বাবার কাছে। যারা নিশ্চয়বুদ্ধিসম্পন্ন হবে ভবিষ্যতে তারা অধিক আকৃষ্ট হবে।
এখন এতটা আকর্ষণ কারোর হয় না, কারণ স্মরণ করে না। ভ্রমণ করে যখন ফেরে, ঘরের নিকটে
চলে আসে তখন ঘর বাড়ি স্মরণে আসে, সন্তান স্মরণে আসে, তখন ঘরে পৌঁছেই খুশী মনে এসে
মিলিত হবে। খুশী বৃদ্ধি পেতে থাকে। সর্বপ্রথমে স্ত্রী স্মরণে আসবে, পরে সন্তানাদি
স্মরণে আসবে। তোমাদেরও স্মরণে আসবে যে, আমরাও ঘরে যাবো সেখানে বাবা আর বাচ্চারাই
থাকে। খুশী দ্বিগুণ হয়। শান্তিধাম, ঘরে যাব পুনরায় আসবো রাজধানীতে। ব্যস, শুধু
স্মরণই করতে হবে, বাবা বলেন - 'মন্মনাভব'। নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করে বাবা আর
উত্তরাধিকারকে স্মরণ করো। বাচ্চারা, বাবা তোমাদের সুন্দর ফুলে (গুল-গুল) পরিণত করে,
নয়নে বসিয়ে সঙ্গে করে নিয়ে যায়। কোনও কষ্ট নেই। যেমনভাবে মশাদের দল যায়, তাই না!
তোমরা আত্মারাও এভাবেই যাবে বাবার সঙ্গে। পবিত্র হওয়ার জন্য তোমরা বাবাকে স্মরণ করো,
ঘরকে নয়।
বাবার দৃষ্টি
সর্বপ্রথমে গরীব বাচ্চাদের দিকে যায়। বাবা তো দীনদয়াল, তাই না! তোমরাও গ্রামে সেবা
করতে যাও। বাবা বলেন, আমিও এসে তোমাদের গ্রামকে পারশপুরীতে পরিনত করি। এখন এ হলো
নরক, পুরানো দুনিয়া। একে অবশ্যই ভাঙতে হবে। নতুন দুনিয়ায় নিউ দিল্লী, তা সত্যযুগেই
হবে। সেখানে রাজ্যও তোমাদের হবে। তোমাদের নেশা চড়ে যে, আমরা পুনরায় নিজেদের রাজধানী
স্থাপন করবো। যেভাবে কল্প-পূর্বেও করেছিল। এ'কথা কি বলবে যে, আমরা এমন-এমনভাবে
ঘর-বাড়ী তৈরী করবো, না তা বলবে না। না, তোমরা যখন যাবে ওখানে তখন অটোমেটিক তোমরা
এ'সব তৈরী করতে থাকবে কারণ আত্মায় সেই পার্ট ভরা রয়েছে। এখানে পার্ট হলো শুধু পড়ার।
ওখানে তোমাদের বুদ্ধিতে আপনা থেকেই আসবে যে, এমন-এমনভাবে আমরা মহল তৈরী করবো। যেমন
কল্প-পূর্বেও তৈরী করেছিলে তেমনই তৈরী করতে থাকবে। আত্মায় পূর্ব থেকেই তা নির্ধারিত
হয়ে রয়েছে। তোমরা সেই মহলই তৈরী করবে, যে মহলে তোমরা প্রতি কল্পে থাকো। এই
বিষয়গুলিকে নতুনরা বুঝতে পারে না। তোমরা বোঝো যে, আমরা এখানে আসি আর নতুন-নতুন
পয়েন্টস্ শুনে রিফ্রেশ হয়ে যায়। নতুন-নতুন পয়েন্টস্ বেরিয়ে আসতে থাকে, সেও ড্রামায়
নির্ধারিত।
বাবা বলেন বাচ্চারা -
আমি সদা এই ষাঁড়ের উপর (রথে) আরোহন করবো, এতে আমি সুখী হই না। বাচ্চারা, আমি
তোমাদের পড়াতে আসি। এমনও নয় যে, ষাঁড়ের উপর আরোহন করে বসেই থাকি। রাত-দিন ষাঁড়ের
উপর আরোহন করা যায় কি? ওনার (বাবা) তো সেকেন্ডে আসা-যাওয়া। সদা বসে থাকার নিয়মই
নেই। বাবা কতদূর থেকে আসেন পড়াবার জন্য, ওনার নিবাস তো ওখানে, তাই না! সারাদিনই কি
শরীরে বসে থাকবেন, না তা থাকবেন না, এতে ওনার আরাম লাগবে না। যেমন খাঁচায় তোতাপাখি
আটকে পড়ে। আমি এই শরীর ধার হিসাবে নিই তোমাদের বোঝানোর জন্য। তোমরা বলবে,
জ্ঞানের-সাগর বাবা এসেছেন আমাদের পড়ানোর জন্য। খুশীতে রোমাঞ্চিত হয়ে যাওয়া উচিত।
সেই খুশী কি কখনো কম হয়ে যাওয়া উচিত, না তা হওয়া উচিত নয়। এই ধনী তো স্থায়ী-রূপে
বসে রয়েছেন। একটি ষাঁড়ের উপর দু'জন বসে থাকা সর্বদা হতে পারে কি? শিববাবা থাকেন আপন
ধামে। এখানে আসেন, আসতে কি দেরী লাগে, না লাগে না। রকেট দেখো কত দ্রুতগামী। শব্দ
অপেক্ষাও দ্রুত। আত্মাও অত্যন্ত ছোট রকেট। আত্মা যায় কিভাবে, এখান থেকে খুব
তাড়াতাড়ি লন্ডনে চলে যেতে পারে । গায়নও রয়েছে, এক সেকেন্ডে জীবনমুক্তি। বাবা
স্বয়ংও রকেট। বাবা বলেন, আমি তোমাদের পড়াতে আসি। পুনরায় যাই নিজের ঘর। এইসময়
অত্যন্ত ব্যস্ত থাকি। আমি দিব্য-দৃষ্টিদাতা, তাই ভক্তদেরকেও রাজি করাতে হয়।
তোমাদেরকে পড়াই। ভক্তদেরও মনে হয় যেন সাক্ষাৎকার হয় বা কিছু না কিছু চাই(ভিক্ষা)।
সর্বাপেক্ষা অধিক ভিক্ষা করে জগদম্বার কাছে। তোমরা হলে জগদম্বা, তাই না! বিশ্বের
রাজত্বের ভিক্ষা দাও। ভিক্ষা আর কিছুই নয়, শুধু বলেন, বাবাকে স্মরণ করো তবেই বিকর্ম
বিনাশ হবে। শান্তিধামে চলে যাবে। আমি গ্যারান্টি করছি যে, আমাকে স্মরণ করো তবেই
তোমাদের আয়ু দীর্ঘ হয়ে যাবে। সত্যযুগে মৃত্যুর নামই থাকে না। ওটা হলো অমরলোক, ওখানে
মৃত্যুর নামও থাকে না। শুধু এক আবরণ (খোলস) পরিত্যাগ করে অন্য নেয়। একে মৃত্যু বলবে
কি! এ হলো অমরপুরী। সাক্ষাৎকার হয় যে, আমাকে বাচ্চা হতে হবে। খুশীর বিষয়।
বাবার(ব্রহ্মা) মনে হয়, এখন গিয়ে বাচ্চা হবো। তিনি জানেন, গোল্ডেন স্পুন ইন মাউথ
হবেন। অদ্বিতীয় পিতার হারানিধি সন্তান। বাবা অ্যাডপ্ট করেছেন। আমি তো হারিয়ে যাওয়া
(হারানিধি) সন্তান তাহলে কত ভালোবাসেন। একদম প্রবেশ করে যায়। এও তো খেলা, তাই না!
খেলায় সর্বদা আনন্দ হয়। এও জানে যে, অবশ্যই অতি ভাগ্যশালী রথ। যারজন্য গায়নও রয়েছে,
জ্ঞানসাগর এনার মধ্যে প্রবেশ করে তোমাদের জ্ঞান দান করেন। বাচ্চারা, তোমাদের জন্য
এই খুশীই তো অনেক যে - ভগবান এসে পড়ান। ভগবান স্বর্গের রাজত্ব স্থাপন করেন। আমরা
ওনার সন্তান, তবে আমরা নরকে কেন? এটা কারোরই বুদ্ধিতে আসে না। তোমরা হলে ভাগ্যশালী,
তোমরা বিশ্বের মালিক হওয়ার জন্য পড়ো। এমন পড়ার উপর কত অ্যটেনশন দেওয়া উচিত। আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা-রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) এই
দ্বৈত-খুশীতে থাকতে হবে যে এখন সকল বিভ্রান্তি সম্পূর্ণ হয়েছে, প্রথমে আমরা নিজেদের
ঘর শান্তিধামে যাবো, তারপর আমরা আমাদের রাজধানীতে আসবো।
২ ) মাথায়
জন্ম-জন্মান্তরের যে পাপের বোঝা রয়েছে তা ভস্মীভূত করতে হবে, দেহ-অভিমানে এসে কোনো
বিকর্ম করা উচিত নয়।
বরদান:-
শ্রেষ্ঠ সংকল্পের সহযোগের দ্বারা সকলের মধ্যে শক্তি ভরে দেওয়া শক্তিশালী আত্মা ভব
সদা শক্তিশালী ভব-র
বরদান প্রাপ্ত করে সকল আত্মাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ সংকল্পের দ্বারা শক্তি ভরার সেবা করো।
যেরকম আজকাল সূর্যের শক্তি জমা করে অনেক কাজ সফল করে। এইরকম শ্রেষ্ঠ সংকল্পের শক্তি
এতটাই জমা থাকবে যে অন্যদের সংকল্পে শক্তি ভরে দিতে পারবে। এই সংকল্প ইন্জেকশনের
কাজ করবে। এরদ্বারা অন্তরের বৃত্তিতেও শক্তি এসে যাবে। তো এখন শ্রেষ্ঠ ভাবনা বা
শ্রেষ্ঠ সংকল্পের দ্বারা পরিবর্তন করা - এই সেবার আবশ্যকতা আছে।
স্লোগান:-
মাস্টার দুঃখহর্তা হয়ে দুঃখকেও আত্মিক সুখে পরিবর্তন করা - এটাই হলো তোমাদের
শ্রেষ্ঠ কর্তব্য।
অব্যক্ত ঈশারা :-
সংকল্পের শক্তি জমা করে শ্রেষ্ঠ সেবার নিমিত্ত হও
কোনও কোনও বাচ্চা
কখনও কখনও বড় বড় খেলা দেখায়। ব্যর্থ সংকল্প এত ফোর্স-এ আসে যে কন্ট্রোল করতে পারে
না, তখন বলে দেয় যে কি করবো, হয়ে গেল! আটকাতে পারিনি, যেটা এসেছে সেটা করে ফেলেছি
কিন্তু ব্যর্থের জন্য কন্ট্রোলিং পাওয়ার চাই। যেরকম এক সমর্থ সংকল্পের ফল পদমগুণ
প্রাপ্ত হয়, এইরকমই এক ব্যর্থ সংকল্পের হিসেব নিকেশ - উদাস হওয়া, হৃদয় বিদীর্ণ হওয়া
বা খুশী গায়েব হওয়া - এটাও একের অনেক গুণ হিসেবে অনুভব হয়।