19-10-2025 প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ 31-03-2007 মধুবন


“সুযোগ্য সন্তান হয়ে নিজের রূপের দ্বারা বাবার রূপ দেখাও, গঠনমূলক (নির্মাণ) সেবার সাথে নির্মল বাণী, নির্মান স্থিতির ব্যালেন্স রাখো”


আজ বাপদাদা চতুর্দিকের বাচ্চাদের ভাগ্যের রেখা দেখে আনন্দিত হচ্ছেন। সব বাচ্চার মস্তকে উজ্জ্বল জ্যোতির রেখা ঝলমল করছে। নয়নে অধ্যাত্ম ভাগ্যের রেখা দেখা যাচ্ছে। মুখে শ্রেষ্ঠ বাণীর ভাগ্যের রেখা দেখা যাচ্ছে। ওষ্ঠাধরে অধ্যাত্ম মৃদুহাসি দেখছেন। হাতে পরমাত্ম সর্ব ভাণ্ডারের রেখা দেখা যাচ্ছে। সকল স্মরণের কদমে পদম (অগণিত) রেখা দেখছেন। প্রত্যেকের হৃদয়ে বাবার লভে লভলীন হওয়ার রেখা দেখছেন। এমন শ্রেষ্ঠ ভাগ্য তোমরা প্রত্যেক বাচ্চা অনুভব করছ তো না! কেননা, ভাগ্যের এই সমূহ রেখা বাবা প্রত্যেকের শ্রেষ্ঠ কর্মের কলম দ্বারা টেনেছেন। এমন শ্রেষ্ঠ ভাগ্য যা অবিনাশী, শুধু এই জন্মের জন্য নয় বরং অনেক জন্মের অবিনাশী ভাগ্যের রেখা। বাবা অবিনাশী আর অবিনাশী ভাগ্যের রেখা। এই সময় শ্রেষ্ঠ কর্মের আধারে সব রেখা প্রাপ্ত হয়। এই সময়ের পুরুষার্থ অনেক জন্মের প্রালব্ধ বানিয়ে দেয়।

বাচ্চাদের অনেক জন্মের যে প্রালব্ধ প্রাপ্ত হওয়ার আছে, বাপদাদা এই সময়ে এই জন্মে পুরুষার্থের সেই প্রালব্ধের প্রাপ্তি এখনই দেখতে চান। শুধু ভবিষ্যৎ নয় বরং এখনই এই সব রেখা যেন অনুভবে আসে কারণ এখনের এই দিব্য সংস্কার তোমাদের নতুন সংসার বানাচ্ছে। তো চেক করো, চেক করতে জানো তো না! নিজেই নিজের চেকার হও। তো সর্ব ভাগ্যের রেখা এখনই অনুভব হয়? এমন ভাবো না তো যে এই প্রালব্ধ অন্তে দেখা যাবে? প্রাপ্তি এখনই, সুতরাং প্রালব্ধের অনুভবও এখন করতে হবে। ভবিষ্যৎ সংসারের সংস্কার এখন প্রত্যক্ষ জীবনে অনুভব হওয়া উচিত। তো কী চেক করবে? ভবিষ্যৎ সংসারের সংস্কারের গায়ন করে থাকো যে ভবিষ্যৎ সংসারে এক রাজ্য হবে। স্মরণে আছে তো না সেই সংসার! কত বার সেই সংসারে রাজত্ব করেছ? স্মরণে আছে তোমাদের? নাকি স্মরণ করিয়ে দিলে স্মরণে আসে? কী ছিলে, সেটা স্মৃতিতে আছে না? কিন্তু সেই সংস্কার এখনের জীবনে প্রত্যক্ষ রূপে আছে? তো চেক করো, এখনও মনে, বুদ্ধিতে, সম্বন্ধ সম্পর্কে, জীবনে এক রাজ্য আছে কিনা! কিংবা কখনো কখনো আত্মার রাজ্যের সাথে সাথে মায়ার রাজ্যও থাকে, থাকে না তো? ভবিষ্যৎ প্রালব্ধে যেমন একটাই রাজ্য, দুটো নেই। তেমনই এখনও দুটো রাজ্য তো নেই? ভবিষ্যৎ রাজ্যে যেমন এক রাজ্যের সাথে এক ধর্ম থাকে, সেই ধর্ম কোনটা? সম্পূর্ণ পবিত্রতার ধারণার ধর্ম। তো এখন চেক করো পবিত্রতা সম্পূর্ণ হয়েছে? স্বপ্নেও অপবিত্রতার লেশমাত্র যেন না থাকে। পবিত্রতা অর্থাৎ সংকল্প, বোল, কর্ম এবং সম্বন্ধ-সম্পর্কে সম্পূর্ণ পবিত্রতার একটাই ধারণা থাকবে। নিজের চেকিং করতে জানো তোমরা? যারা চেকিং করতে জানো তারা হাত তোলো। জানো? আর চেকিংও করো? করো তোমরা? করো? টিচার্স জানো তোমরা? ডবল ফরেনার্স জানো তোমরা? কেননা, এখনের পবিত্রতার কারণ তোমাদের জড় চিত্রের থেকেও পবিত্রতার চাহিদা রাখে। পবিত্রতা অর্থাৎ এক ধর্ম, এখনের স্থাপন যা ভবিষ্যতেও চলে। এরকমই ভবিষ্যৎ গায়ন কী আছে? এক রাজ্য, এক ধর্ম আর সাথে সদা সুখ-শান্তি, সম্পত্তি, অখণ্ড শান্তি, অখণ্ড সম্পত্তি। তো এখনের তোমাদের জীবনে স্বরাজ্যের ওটা হলো বিশ্ব রাজ্য আর এই সময় হলো স্বরাজ্য, তো চেক করো অবিনাশী সুখ, পরমাত্ম সুখ অবিনাশী রূপে অনুভূত হয়? এমন নয় তো যে, তোমরা সুখের অনুভব করছ কোনো সাধন বা কোনো স্যালভেশনের আধারে? কখনো দুঃখের তরঙ্গ কোনও কারনে অনুভবে আসা উচিৎ নয়। কোনো নাম, মান-মর্যাদার আধারে তো সুখ অনুভব হয় না? কেন? এই নাম মান-মর্যাদা, সাধন, স্যালভেশন এসব কিছু নিজেই বিনাশী, অল্পকালের।তো বিনাশী আধারে অবিনাশী সুখ প্রাপ্ত হয় না। নিরন্তর চেক করো। এখনও নিরন্তর শোনো আর নিজের মধ্যে চেক করো, তবে জানতে পারবে যে এখনের সংস্কার আর ভবিষ্যৎ সংসারের প্রালব্ধে কত তফাৎ! তোমরা সবাই জন্মানোর সাথে সাথেই বাপদাদার কাছে প্রতিজ্ঞা করেছ, স্মরণে আছে প্রতিজ্ঞা? তোমাদের প্রতিজ্ঞা স্মরণে আছে, নাকি ভুলে গেছ? এটাই প্রতিজ্ঞা করেছ, আমরা সবাই বাবার সাথী হয়ে, বিশ্ব কল্যাণকারী হয়ে সুখ শান্তিময় নতুন সংসার বানাবো। স্মরণে আছে? স্মরণে আছে নিজেদের প্রতিজ্ঞা? আছে স্মরণে? হাত তোলো। পিছনের ওরাও হাত তুলছে। এখানেও তুলছে, প্রতিজ্ঞা পাক্কা, নাকি সামান্য নড়চড় হয়ে যায়? নতুন সংসার এখন পরমাত্ম সংস্কারের আধারে তোমরা বানিয়ে থাকো। তো এখন শুধু পুরুষার্থ করা নয়, বরং পুরুষার্থের প্রালব্ধও এখন অনুভব করতে হবে। সুখের সাথে শান্তিরও চেক করো - অশান্ত সার্কমস্ট্যান্স, অশান্ত বায়ুমণ্ডল তার মধ্যেও তোমরা শান্তি সাগরের বাচ্চারা সদা কমল পুষ্প সমান। তাহলে তোমরা অশান্তিকে শান্তির বায়ুমণ্ডলে পরিবর্তন করতে পারো না? বায়ুমণ্ডল শান্ত, তার মধ্যে তোমরা শান্তি অনুভব করছ, সেটা এমন কোনো বড় ব্যাপার নয়, কিন্তু তোমাদের প্রতিজ্ঞা অশান্তিকে শান্তিতে পরিবর্তন করার। তো চেক করো - তোমরা চেক করছ তো না? পরিবর্তক তোমরা? পরবশ তো নও, তাই না? তোমরা পরিবর্তক। পরিবর্তক কখনো পরবশ হতে পারে না। এমন সম্পত্তি, অক্ষয় সম্পত্তি, এটা কী স্বরাজ্য অধিকারীর? জ্ঞান, গুণ আর শক্তি এসব স্বরাজ্য অধিকারীর সম্পত্তি। তো চেক করো - জ্ঞানের সমুদয় বিস্তারের সারাংশ স্পষ্টরূপে জেনে গেছ তো না? জ্ঞানের অর্থ এটা নয় যে ভাষণ দিলে কোর্স করালে শুধু এটুকু, জ্ঞানের অর্থ হলো বোধ। তো সব সংকল্প, সব কর্ম বোল জ্ঞান অর্থাৎ বিচক্ষণতা, নলেজ ফুল হয়ে করো? সর্ব গুণ প্র্যাকটিক্যাল জীবনে ইমার্জ থাকে? সর্ব আছে, নাকি যথাশক্তি? এই রকম সর্ব শক্তি তোমাদের টাইটেল - মাস্টার সর্বশক্তিমান, শক্তিমান নয়। তো সর্বশক্তি সম্পন্ন হয়েছো? আর দ্বিতীয় বিষয়, সর্ব শক্তি সময়মতো কাজ করে? সময়কালে হাজির হয়, নাকি সময় চলে গেলে তারপরে স্মরণে আসে? তো চেক করো তিন বিষয়ই - এক রাজ্য, এক ধর্ম ও অবিনাশী সুখ শান্তি, সম্পত্তি। কেননা নতুন সংসারে (দুনিয়ায়) এই সব বিষয় যা এখন স্বরাজ্যের সময়ের অনুভব তা' হবে না! এখন এই সব বিষয়ের অনুভব করতে পারো। এখন থেকে এই সংস্কার ইমার্জ হবে, তখন অনেক জন্ম প্রালব্ধের রূপে চলবে। এমন ভাবো না তো যে ধারণ করছি, হয়ে যাবে, শেষ পর্যন্ত তো হয়েই যাবে।

বাপদাদা আগে থেকেই ইশারা দিয়ে দিয়েছেন, বহুকালের প্রাপ্তির আধার হলো এখনের এই বহুকালের অভ্যাস। অন্তে হয়ে যাবে ভেবো না, হয়ে যাবে না, হতেই হবে। কেন? স্বরাজ্যের যে অধিকার আছে তার জন্য এখন বহুকালের অভ্যাস প্রয়োজন। যদি এক জন্মে অধিকারী হতে না পারো, অধীন হয়ে যাও তবে অনেক জন্ম কীভাবে হবে! সেইজন্য বাপদাদা চতুর্দিকের সব বাচ্চাকে বারবার ইশারা দিচ্ছেন এবং এখন সময়ের গতি তীব্র গতিতে যাচ্ছে, সেইজন্য সব বাচ্চাকে এখন শুধু পুরুষার্থী হওয়া নয়, বরং তীব্র পুরুষার্থী হয়ে, পুরুষার্থের প্রালব্ধের অনুভব এখন বহুকাল ধরে করতে হবে। তীব্র পুরুষার্থের লক্ষণ বাপদাদা আগেও শুনিয়েছেন। তীব্র পুরুষার্থী সদা মাস্টার দাতা হবে, গ্রহীতা নয় দেবতা, যে শুধু দেয়। এটা যদি হয় তবে আমার পুরুষার্থ হবে, এ' যদি করে তবে আমিও করব, এ' যদি বদলায় তবে আমিও বদলাবো! এ'বদলাবে, এ'করবে - এটা দাতাভাবের লক্ষণ নয়। কেউ করুক বা না করুক, কিন্তু আমি বাবা সমান করবো, ব্রহ্মা বাবা সমানও, সাকারেও দেখেছ, বাচ্চারা যদি করে তবে আমি করবো - এটা কখনও বলেননি। আমি প্রথম ক'রে বাচ্চাদের দিয়ে করাবো। দ্বিতীয় লক্ষণ হলো তীব্র পুরুষার্থীর, সদা নিরহংকার, কার্য করার সময়ও নিরহংকার। গঠনমূলক (নির্মাণ) আর নিরহংকার (নির্মান) দুইয়ের ব্যালেন্স প্রয়োজন। কেন? নিরহংকার হয়ে কার্য করায় সকলের দ্বারা হৃদয়ের স্নেহ আর আশীর্বাদ প্রাপ্ত হয়। বাপদাদা দেখেছেন যে গঠনমূলক সেবার ক্ষেত্রে আজকাল সবাই খুব উৎসাহ উদ্দীপনার সাথে নতুন নতুন প্ল্যান বানাচ্ছে। এর জন্য বাপদাদা চতুর্দিকের বাচ্চাদের অভিনন্দন জানাচ্ছেন।

বাপদাদার কাছে গঠনমূলক সেবার খুব ভালো ভালো প্ল্যান এসেছে। কিন্তু বাপদাদা দেখেছেন যে গঠনমূলক কার্য তো খুব ভালো, কিন্তু সেবার কার্যে যতটা উৎসাহ উদ্দীপনা আছে, ততটা যদি নিরহংকার স্টেজের ব্যালেন্স থাকে তবে গঠনমূলক সেবার কার্যে সফলতা আরও বেশি প্রত্যক্ষ রূপে হতে পারে। বাপদাদা আগেও বলেছিলেন - নির্মান স্বভাব, নির্মান বোল আর নির্মান স্থিতিতে যখন তোমরা সম্বন্ধ সম্পর্কে আসো, সেটা দেবতাদের গায়ন, কিন্তু বাস্তবে সেটা ব্রাহ্মণদের গায়ন। দেবতাদের জন্য বলা হয়ে থাকে তাদের মুখ থেকে যে বোল নিঃসৃত হয় তা' হিরে মোতির মতো অমূল্য, নির্মল আনন্দের, নির্মল স্বভাবের। এখন বাপদাদা দেখছেন, তিনি রেজাল্ট বলবেন তো না! কেননা, সিজনের এটা লাস্ট টার্ন। তো বাপদাদা দেখেছেন যে নির্মল বাণী, নির্মল স্থিতি এতে এখন অ্যাটেনশন দরকার।

বাপদাদা প্রথমে এটা বলেছেন যে তিন খাতা জমা করো। তো রেজাল্টে কী দেখেছেন? তিন খাতা কোনগুলো? সেটা তো স্মরণে থাকবে তাই না! তবুও তোমাদের রিভাইস করাচ্ছেন। এক - নিজের পুরুষার্থ দ্বারা জমার খাতা বাড়ানো। দুই - সদা নিজেও সন্তুষ্ট থাকা আর অন্যকেও সন্তুষ্ট রাখা, বিভিন্ন রকমের সংস্কার জানা সত্ত্বেও সন্তুষ্ট থাকা আর সন্তুষ্ট করা, এর দ্বারা আশীর্বাদের খাতা জমা হয়। যদি কোনও কারণে সন্তুষ্ট করার ক্ষেত্রে খামতি থেকে যায় তবে পুণ্যের খাতায় জমা হয় না। সন্তুষ্টতা পুণ্যের চাবি। থাকতে হবে, করতে হবে। আর তৃতীয় - সেবাতেও সদা নিঃস্বার্থ। আমিত্ব বোধ নয়। আমি করেছি, অথবা আমার হওয়া উচিত, সেবাতে যেখানে এই আমি আর আমার বোধ এসে যায় সেখানে পুণ্যের খাতা জমা হয় না। আমিত্ববোধ, তোমরা এর অনুভাবী, রয়্যাল রূপেরও এই আমিত্ব বোধ অনেক। রয়্যাল রূপের আমিত্ব বোধের লিস্ট সাধারণ আমিত্ব বোধের থেকে লম্বা। তো যেখানেই আমি আর আমার ভাবের স্বার্থ এসে যায়, নিঃস্বার্থ হয় না সেখানে পুণ্যের খাতা কম জমা হয়। আমার ভাবের লিস্ট বাবা পরে কখনো শোনাবেন, অনেক লম্বা আর অতি সূক্ষ্ম। তো বাপদাদা দেখেছেন যে সবাই নিজের পুরুষার্থ দ্বারা যথাশক্তি নিজের নিজের খাতা জমা করছে, কিন্তু আশীর্বাদের খাতা আর পুণ্যের খাতা এগুলো এখন ভরার আবশ্যকতা আছে। সেইজন্য তিন খাতা জমা করার ব্যাপারে অ্যাটেনশন রাখতে হবে। ভ্যারাইটি সংস্কার এখনও দেখা দেবে, সবার সংস্কার এখন সম্পন্ন হয়নি, কিন্তু আমাদের ওপরে অন্যদের দুর্বল স্বভাব, দুর্বল সংস্কারের প্রভাব পড়া উচিৎ নয়। আমি মাস্টার সর্বশক্তিমান, দুর্বল সংস্কার শক্তিশালী নয়। আমি মাস্টার সর্বশক্তিমানের ওপরে দুর্বল সংস্কারের প্রভাব পড়া উচিৎ নয়। সেফটির সাধন হলো বাপদাদার ছত্রছায়ায় থাকা। বাপদাদার সাথে কম্বাইন্ড থাকো। ছত্রছায়া হলো শ্রীমৎ।

বাপদাদা সুস্পষ্ট ইঙ্গিত দিচ্ছেন যে স্ব-এর জন্য প্রত্যেককে সংকল্প, বোল, সম্পর্ক-সম্বন্ধ, কর্মে নবীনত্ব আনার প্ল্যান বানাতেই হবে। বাপদাদা প্রথমে রেজাল্ট দেখবেন তোমরা কী নবীনত্ব এনেছো? পুরানো সংস্কার দৃঢ় সংকল্পে পরিবর্তন করেছ? প্রথমে এই রেজাল্ট দেখবেন। কী ভাবছো? এরকম করবে? করবে? হাত তোলো যারা বলছো করবে। করবে? আচ্ছা। করবে, নাকি অন্যকে দেখবে? কী করবে? অন্যকে দেখো না, বাপদাদাকে দেখো, নিজেদের বড় দাদিকে দেখো। কত ডিট্যাচ (স্বতন্ত্র) আর সুন্দর স্থিতি। বাপদাদা বলেন, যদি আমি আর সীমাবদ্ধতার আমিত্ব ভাব থেকে কাউকে ডিট্যাচ (স্বতন্ত্র) দেখতে চাও তবে তোমার বাপদাদার হৃদয় সিংহাসনাসীন দাদিকে দেখো। সম্পূর্ণ লাইফে সীমাবদ্ধতার আমিত্ব বোধ, সীমাবদ্ধতার আমি থেকে স্বতন্ত্র থেকেছেন, রোগ-ব্যাধি যাই থাকুক কিন্তু দুঃখ কষ্টের আভাস থেকে পৃথক। একটা শব্দই পাক্কা - যে কেউই যদি জিজ্ঞাসা করেছে দাদি কোনো ব্যথা আছে, দাদি কিছু হচ্ছে? কী উত্তর পেতো তারা? কিছু না। কেননা, নিঃস্বার্থ এবং উদারচিত্ত, সবাইকে মানিয়ে নেওয়া, সকলের প্রিয় - এসবের প্র্যাকটিক্যাল লক্ষণ দেখছো। তো যখন ব্রহ্মা বাবার সম্বন্ধে বলো, তখন বলে থাকো তাঁর মধ্যে বাবা ছিলেন তো না! কিন্তু দাদি তো তোমাদের সাথে প্রভু পালনায় থেকেছে, পঠন পাঠনে থেকেছে, সেবাতে সাথী থেকেছে, তো যখন এক (দাদি) হতে পারে তখন তোমরা সবাই কি নিঃস্বার্থ স্থিতিতে হতে পারো না? হতে পারো তো না! বাপদাদার নিশ্চয় আছে তোমরাই হবে। কতবার হয়েছো? মনে আছে তোমাদের? মনে আছে? অনেক কল্প বাবা সমান হয়েছ আর এখনও তোমরাই হবে। এই উৎসাহ-উদ্দীপনায় নিরন্তর উড়ে চলো। তোমাদের প্রতি বাবার নিশ্চয় আছে, তোমাদেরও নিজের মধ্যে সদা নিশ্চয়বুদ্ধি হতেই হবে, এমন নিশ্চয়বুদ্ধি হয়ে উড়ে চলো। বাবার প্রতি যখন ভালবাসা রয়েছে, ভালবাসায় ১০০% এর থেকেও বেশি আছে, এরকম বলে থাকো। এটা ঠিক আছে? সবাই, যারাই বসে আছ বা যারাই নিজের নিজের স্থান থেকে শুনছো, দেখছ তারা সবাই ভালোবাসার সাব্জেক্টে নিজেকে ১০০ পার্সেন্ট মনে করো? তো হাত তোলো। ১০০ পার্সেন্ট? (সবাই হাত তুলেছে) আচ্ছা। পিছনে যারা রয়েছ তারা লম্বা করে হাত তোলো, নাড়াও। এ' ব্যাপারে তো সবাই হাত উঠিয়েছ। তো ভালবাসার লক্ষণ হলো সমান হওয়া। যার প্রতি ভালবাসা থাকে তার মতো বলা, তার মতো চলা, তার মতো সম্বন্ধ সম্পর্কের দায়িত্ব পালন করা, এটা হলো ভালবাসার লক্ষণ।

তো বাপদাদা এখন এখনই দেখতে চান যে এক সেকেন্ডে স্বরাজ্যের সিটে কন্ট্রোলিং পাওয়ার, রুলিং পাওয়ারের সংস্কারে তোমরা বসতে পারো! তো এক সেকেন্ডে দু তিন মিনিটের জন্য রাজ্য অধিকারীর সিটে সেট হয়ে যাও। আচ্ছা। (ড্রিল)

চতুর্দিকের বাচ্চাদের স্মরণ স্নেহের পত্র আর সেইসঙ্গে সায়েন্সের যে সাধনই আছে তাদের দ্বারা স্মরণের স্নেহ-সুমন বাপদাদার কাছে পৌঁছে গেছে। নিজের হৃদয়ের সমাচারও অনেক বাচ্চা লেখেও আর আত্মিক বার্তালাপ করার সময় শুনিয়েও থাকে। বাপদাদা সেই সব বাচ্চাকে রেসপন্স করছেন - সত্যকার হৃদয়ে প্রভু সন্তুষ্ট। বাপদাদার হৃদয়ের আশীর্বাদ আর হৃদয় ভরা স্নেহ রয়েছে সেই বিশেষ আত্মাদের প্রতি। চতুর্দিক থেকে তোমরা যে সমাচারই দাও, উৎসাহ-উদ্দীপনার সাথে তোমরা ভালো ভালো যে প্ল্যানই বানিয়েছো, বাপদাদা তার জন্য অভিনন্দন জানাচ্ছেন এবং বরদানও দিচ্ছেন - এগিয়ে চলো, অন্যদেরও অগ্রচালিত করো।

চতুর্দিকের, কোটি কোটির মধ্যে কিছুসংখ্যক, সেই কিছুর মধ্যেও শ্রেষ্ঠ ভাগ্যবান বাচ্চাদের সাহস আর উৎসাহ-উদ্দীপনার অভিনন্দন জানাচ্ছেন। ভবিষ্যতে তীব্র পুরুষার্থী হওয়ার, ব্যালেন্স বজায় রাখার পদম পদমগুন ব্লেসিংসও দিচ্ছেন। তোমাদের সবার ভাগ্যের নক্ষত্র নিরন্তর ঝলমল করবে এবং অন্যদের ভাগ্য তোমরা নির্মাণ করবে, তারও আশীর্বাদ দিচ্ছেন। চতুর্দিকের বাচ্চারা নিজের নিজের স্থান থেকে শুনছেও, দেখছেও আর বাপদাদাও চতুর্দিকে দূরে বসে থাকা সব বাচ্চাকে দেখতে দেখতে খুশি হচ্ছেন। দেখতে থাকো আর মধুবনের শোভা সদা বাড়াতে থাকো। তো সকল বাচ্চাকে হৃদয়ের আশীর্বাদ, সেইসঙ্গে নমস্কার।

বরদান:-
অ্যাটেনশন রূপী ঘৃত দ্বারা আত্মিক স্বরূপের নক্ষত্রের দ্যুতি বাড়িয়ে আকর্ষণ মূর্ত ভব

যখন বাবার দ্বারা, নলেজের দ্বারা আত্মিক স্বরূপের নক্ষত্র দ্যুতিমান হয়ে গেছে তখন নির্বাপিত হতে পারে না। কিন্তু দ্যুতির পারসেন্টেজ কম বা বেশি হতে পারে। এই দ্যুতিমান নক্ষত্র সবাইকে তখনই আকর্ষণ করতে পারবে যখন রোজ অমৃতবেলায় অ্যাটেনশন রূপী ঘৃত ঢালতে থাকবে। যেভাবে প্রদীপে ঘী ঢালা হয়, তো তখন সেটা একভাবে (একরস) জ্বলে। এভাবে সম্পূর্ণ অ্যাটেনশন দেওয়া অর্থাৎ বাবার সর্ব গুণ বা শক্তি নিজের মধ্যে ধারণ করা। এই অ্যাটেনশন দ্বারা আকর্ষণ মূর্ত হয়ে যাবে।

স্লোগান:-
সীমাবদ্ধতার বৈরাগ্যবৃত্তির দ্বারা বীজকে প্রত্যক্ষ করো।

অব্যক্ত ইশারা :- স্বয়ং আর সকলের প্রতি মন্সা দ্বারা যোগের শক্তি গুলির প্রয়োগ করো কর্ম করার সময় যেন যোগের পাওয়ারফুল স্টেজ থাকে - এর অভ্যাস বাড়াও। সেবার জন্য তোমরা যেমন ইনভেনশন করো, ঠিক তেমনই এই বিশেষ অনুভবের অভ্যাসের জন্য সময় বের করো এবং নবীনত্ব এনে সকলের সামনে এক্সাম্পল হও। সূচনাঃ - আজ মাসের তৃতীয় রবিবার, সকল রাজযোগী তপস্বী ভাইবোন সন্ধ্যা সাড়ে ছ'টায থেকে সাড়ে সাতটা পর্যন্ত বিশেষ যোগ অভ্যাসের সময় সর্বশক্তিমানের শক্তিশালী স্বরূপে স্থিত হয়ে প্রকৃতি সহ সকল আত্মাকে পবিত্রতার কিরণ দিন, সত: প্রধান বানানোর সেবা করুন।