20.02.2025
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা --
এখন বিকারগুলি দান করো, তাহলে গ্রহণ মিটে যাবে এবং তমোপ্রধান দুনিয়া সতোপ্রধান হবে"
প্রশ্নঃ -
বাচ্চারা,
তোমাদের কোন্ কথায় কখনও বিরক্ত হওয়া উচিত নয় ?
উত্তরঃ
তোমাদের
নিজেদের জীবনের প্রতি কখনও বিরক্ত হওয়া উচিত নয়, কারণ এই হীরে তুল্য জন্মের গায়ন আছে,
এই জীবনের খেয়াল রাখতে হবে। সুস্থ সবল থাকলে তবেই তো নলেজ শুনতে পারবে। এখানে যত
দিন বাঁচবে, উপার্জন হতে থাকবে, হিসেব-নিকেশ মিটতে থাকবে ।
গীতঃ-
ওম্ নমঃ শিবায়
...
ওম্ শান্তি ।
আজ গুরুবার
অর্থাৎ বৃহস্পতি বার। তোমরা বাচ্চারা বলবে সদ্গুরুবার। কারণ সত্যযুগের স্থাপনাও
করেন, সত্য নারায়ণের কাহিনীও শোনান প্রাক্টিক্যালে। নর থেকে নারায়ণ করেন । গায়নও আছে
সর্বজনের সদগতি-দাতা, তারপরে বৃক্ষপতিও তিনি। এই মনুষ্য সৃষ্টি রূপী বৃক্ষকে, কল্প
বৃক্ষও বলা হয়। কল্প-কল্প অর্থাৎ ৫ হাজার বছর পরে আবার হুবহু রিপিট হয়। লৌকিক জগতেও
বৃক্ষেরও রিপিট হয়, তাইনা। কোনো ফুল ৬ মাস ফোটার পর, মালিরা শিকড় রেখে দেয় পরে আবার
লাগায় তখন ফুল ফোটে।
এবারে এই কথা তো
বাচ্চারা জানে - বাবার জয়ন্তী অর্ধকল্প পালন করা হয়, অর্ধকল্প ভুলে থাকা হয়। ভক্তি
মার্গে অর্ধকল্প স্মরণ করা হয়। বাবা কবে এসে গার্ডেন অফ ফ্লাওয়ার স্থাপন করবেন ?
অনেক রকমের দশা হয় তাইনা। বৃহস্পতির দশাও হয়, অবরোহন কলার দশাও হয়। এই সময় ভারতে
রাহুর গ্রহণ লেগে আছে। চন্দ্রে যখন গ্রহণ লাগে তখন আহ্বান করা হয় - দিলে দান মিটবে
গ্রহণ। এখন বাবাও বলেন - এই ৫ টি বিকারের দান করো তাহলে গ্রহণ মিটে যাবে। এখন
সম্পূর্ণ সৃষ্টির উপরে গ্রহণ লেগে আছে, ৫ তত্বের উপরেও গ্রহণ লেগে আছে। কারণ
তমোপ্রধান হয়েছে। প্রত্যেকটি জিনিস অবশ্যই পুরানো হয়। নতুনকে সতোপ্রধান, পুরানোকে
তমোপ্রধান বলা হয়। শিশুদের সতোপ্রধান মহাত্মাদের চেয়েও উচ্চ বলা হয়, কারণ তাদের
বিকার থাকে না। ভক্তি তো সন্ন্যাসীগণ শৈশবেই করে। যেমন রামতীর্থ কৃষ্ণের পূজারী
ছিলেন তারপরে যখন সন্ন্যাস নিলেন তখন পুজো অর্চনা শেষ হয়ে গেল। সৃষ্টিতে পবিত্রতার
প্রয়োজন আছে। ভারত প্রথমে সবচেয়ে পবিত্র ছিল, তারপরে দেবতারা যখন বাম মার্গে গেলেন
তখন ভূমিকম্প ইত্যাদিতে স্বর্গের সর্ব সামগ্রী, সোনার মহল ইত্যাদি সব শেষ হয়ে যায়
তারপরে নতুন করে আবার তৈরি হওয়া আরম্ভ হয়। ডিস্ট্রাকশন অবশ্যই হয়। উপদ্রব তখন হয়
যখন রাবণ রাজ্য শুরু হয়, এইসময় সবাই হল পতিত। সত্যযুগে দেবতারা রাজত্ব করেন।
অসুরদের এবং দেবতাদের যুদ্ধ দেখানো হয়েছে, কিন্তু দেবতারা থাকেন সত্যযুগে। সেখানে
যুদ্ধ হবে কিভাবে। সঙ্গমে তো দেবতারা নেই। তোমাদের নাম-ই হল পাণ্ডব। পাণ্ডব কৌরবদের
মধ্যেও যুদ্ধ হয় না। এই সবই হল গল্প। খুব বিশাল এই বৃক্ষ। অসংখ্য পাতা আছে, সেসবের
হিসেব করা সম্ভব নয়। সঙ্গমে দেবতারা নেই। বাবা বসে আত্মাদের বোঝান, আত্মা-ই শুনে
মাথা নাড়ে। আমরা আত্মা, বাবা আমাদের পড়ান, এই কথাটি পাকা করতে হবে। বাবা আমাদের
পতিত থেকে পবিত্র করেন। আত্মাতে ই ভালো খারাপ সংস্কার থাকে তাইনা। আত্মা ইন্দ্রিয়
দ্বারা বলে বাবা আমাদের পড়ান। বাবা বলেন আমারও ইন্দ্রিয় চাই, যার দ্বারা বোঝাতে পারি।
আত্মার খুশী অনুভব হয়। বাবা প্রতি ৫হাজার বছর পরে আসেন আমাদের জ্ঞান শোনাতে। তোমরা
তো সামনে বসে আছো তাইনা। মধুবনের মহিমা আছে । আত্মাদের পিতা হলেন তিনি, সবাই তাঁকেই
স্মরণ করে। এখানে তোমাদের সামনে বসতে আনন্দ অনুভব হয়। কিন্তু এখানে সবাই তো থাকতে
পারবে না। নিজের ব্যবসা কারখানা ইত্যাদিও দেখাশোনা করতে হবে। আত্মারা সাগরের কাছে
আসে, ধারণ করে ফিরে গিয়ে অন্যদের শোনাতে হবে। তা নাহলে অন্যদের কল্যাণ করবে কিভাবে
? যোগী ও জ্ঞানী আত্মাদের শখ থাকে আমরা গিয়ে অন্যদেরও বোঝাবো। শিব জয়ন্তী পালন হয়
তাইনা। ভগবানুবাচ রয়েছে। ভগবানুবাচ কৃষ্ণের উদ্দেশ্যে বলা হবে না, তিনি তো হলেন
দিব্য গুণধারী মানুষ। ডিটিজম বলা হয়। এবারে বাচ্চারা এই কথা তো বুঝেছে যে এখন
দেবী-দেবতা ধর্ম নেই, স্থাপন হচ্ছে। তোমরা এমন বলবে না যে আমরা এখন দেবী-দেবতা
ধর্মের। না, এখন তোমরা হলে ব্রাহ্মণ ধর্মের, দেবী-দেবতা ধর্মের হচ্ছো। দেবতাদের ছায়া
এই পতিত সৃষ্টিতে পড়তে পারে না, এখানে দেবতারা আসতে পারেন না। তোমাদের জন্য নতুন
দুনিয়া চাই। লক্ষ্মীর পুজো করার সময় ঘর দুয়ার খুব পরিষ্কার করতে হয়। এখন এই সৃষ্টির
অনেক শুদ্ধিকরণ প্রয়োজন আছে। সম্পূর্ণ পুরানো দুনিয়া শেষ হয়ে যাবে। লক্ষ্মীর কাছে
মানুষ ধন চায়। লক্ষ্মী ও জগদম্বার মধ্যে কে বড় ? অম্বা মন্দিরও অনেক আছে। মানুষ
কিছুই জানে না। তোমরা জানো লক্ষ্মী তো হলেন স্বর্গের মালিক এবং জগৎ অম্বা যাঁকে
সরস্বতী বলা হয় , তিনিই জগৎ অম্বা পরে তিনি ই হন লক্ষ্মী। তোমাদের পদ মর্যাদা উঁচুতে,
দেবতাদের পদ কম। উঁচু থেকে উঁচু ব্রাহ্মণ শিখা তাইনা। তোমরা হলে সবচেয়ে উঁচুতে।
তোমাদের মহিমা আছে - সরস্বতী, জগৎ অম্বা, তাঁদের কাছে কি প্রাপ্ত হয় ? সৃষ্টির
বাদশাহী। সেখানে তোমরা বিত্তবান হও, বিশ্বের রাজ্য ভাগ্য প্রাপ্ত কর। তারপরে দরিদ্র
হও, ভক্তিমার্গ শুরু হয়। তখন লক্ষ্মীকে স্মরণ কর। প্রতি বছর লক্ষ্মীর পুজোও হয়।
লক্ষ্মীকে প্রতি বছর আহ্বান করা হয়, জগৎ অম্বাকে কেউ প্রতি বছর আহ্বান করে না।
জগদম্বার তো সর্বদাই পুজো হতেই থাকে, যখন ইচ্ছে অম্বা মন্দিরে যায় সবাই। এখানেও যখন
ইচ্ছে, জগৎ অম্বার সঙ্গে দেখা করতে পারো। তোমরাও হলে জগৎ অম্বা তাইনা। সবাইকে
বিশ্বের মালিক হওয়ার পথ বলে দাও তোমরা। জগৎ অম্বার কাছে গিয়ে সবকিছু চায় মানুষ।
লক্ষ্মীর কাছে শুধু ধন চায়। জগৎ অম্বার কাছে তো সর্ব কামনা রেখে দেয়, সুতরাং
বর্তমানে সবচেয়ে উঁচু পদ মর্যাদা তোমাদেরই যখন তোমরা বাবার সন্তান হও। বাবা অবিনাশী
উত্তরাধিকার দেন।
এখন তোমরা হলে
ঈশ্বরীয় সম্প্রদায়, পরে হবে দৈবী সম্প্রদায়। এই সময় সর্ব মনস্কামনা ভবিষ্যতের জন্য
পূরণ হয়। কামনা তো মানুষের থাকেই তাইনা। তোমাদের সর্ব কামনা পূরণ হয়। এই টি তো হল
অসুরী দুনিয়া। কত সন্তান জন্ম হয় দেখো। বাচ্চারা, তোমাদের তো সাক্ষাৎকার করানো হয়,
সত্যযুগে কিভাবে কৃষ্ণের জন্ম হয় ? সেখানে তো সবকিছুই নিয়ম অনুযায়ী হয়, দুঃখের নাম
গন্ধ থাকে না। তাকেই বলা হয় সুখধাম। তোমরা অনেক বার সুখে পাস করেছ, অনেক বার হার
স্বীকার করেছ এবং জিতও অর্জন করেছ। এখন স্মরণে এসেছে যে বাবা আমাদের পড়ান। স্কুলে
নলেজ পড়া হয়। তার সাথে ম্যানার্সও শেখে তাইনা। সেখানে কেউ এই লক্ষ্মী - নারায়ণের
মতন ম্যানার্স শেখে না। এখন তোমরা দিব্য গুণ ধারণ কর। মহিমাও তাঁরই গায়ন করা হয় -
সর্ব গুণ সম্পন্ন .... তো এখন তোমাদের এমন হতে হবে। বাচ্চারা, তোমাদের নিজেদের
জীবনের প্রতি কোনও বিরক্ত ভাব যেন না থাকে, কারণ এই হল হীরে তুল্য জন্ম যার গায়ন আছে।
এই জীবনের খেয়াল রাখতে হবে। সুস্থ থাকলে নলেজ শুনতে থাকবে। অসুস্থতার সময়েও শুনতে
পারবে। বাবাকে স্মরণ করতে পারো। এখানে যত দিন বাঁচবে সুখে থাকবে। উপার্জন হতে থাকবে,
হিসেব-নিকেশ মিটতে থাকবে। বাচ্চারা বলে - বাবা সত্যযুগ কবে আসবে ? এই দুনিয়া খুবই
নোংরা। বাবা বলেন - আরে, প্রথমে কর্মাতীত অবস্থা তো বানাও। যত খানি সম্ভব পুরুষার্থ
করতে থাকো। বাচ্চাদের শেখানো উচিত যে শিববাবাকে স্মরণ করো, এই হল অব্যভিচারী স্মরণ।
এক শিবের ভক্তি করা, ওই হল অব্যভিচারী ভক্তি, সতোপ্রধান ভক্তি। তারপরে
দেবী-দেবতাদের স্মরণ করা, সেসব হল সতো ভক্তি। বাবা বলেন উঠতে-বসতে আমি পিতা আমাকে
স্মরণ করো। বাচ্চারাই আহ্বান করে - হে পতিত-পাবন, হে লিবারেটর, হে গাইড ... এইসব
আত্মা বলে তাইনা।
বাচ্চারা স্মরণ করে,
বাবা এখন স্মরণ করাচ্ছেন, তোমরা স্মরণ করেছ - হে দুঃখ হর্তা সুখ কর্তা, এসে দুঃখ
থেকে মুক্ত করো, লিবারেট করো, শান্তিধাম নিয়ে চলো। বাবা বলেন তোমাদের শান্তিধাম নিয়ে
যাব, তারপরে সুখধামে তোমাদের সঙ্গে থাকি না। সঙ্গে এখনই থাকি। সব আত্মাদের ঘরে (পরমধাম)
নিয়ে যাই। আমার সঙ্গ এখন পড়াশোনায় এবং তারপরে আত্মাদের ঘরে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সঙ্গ
আমার। ব্যস, আমি নিজের পরিচয় তোমাদের অর্থাৎ আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে ভালো ভাবে বসে
শোনাই। যে যেরকম পুরুষার্থ করবে সেইরকম পরে স্বর্গে প্রালব্ধ প্রাপ্ত করবে। বোধশক্তি
তো বাবা যথেষ্ট প্রদান করেন। যত খানি সম্ভব আমায় স্মরণ করো তো বিকর্ম বিনাশ হবে এবং
উড়ে যাওয়ার ডানা পেয়ে যাবে। আত্মাদের যদিও কোনো তেমন ডানা বা পাখা নেই। আত্মা তো হল
একটি ছোট বিন্দু। কেউ এই কথা জানে না যে আত্মাতে কিভাবে ৮৪ জন্মের পার্ট নিহিত আছে।
না কেউ আত্মার পরিচয় জানে, না পরমাত্মার পরিচয় জানে। তখন বাবা বলেন - আমি প্রকৃত
রূপে যেরকম, আমাকে কেউ জানতে পারে না। কেবল আমার দ্বারা-ই আমাকে এবং আমার রচনাকে
জানতে পারে। বাচ্চারা, আমি-ই এসে তোমাদের নিজের পরিচয় প্রদান করি। আত্মা কি, সে
কথাও বোঝাই। একেই বলা হয় সোল রিয়েলাইজেশন। আত্মা ভ্রু যুগলের মধ্যিখানে অবস্থিত।
বলাও হয় ভ্রুকুটির মধ্যিখানে জ্বলজ্বল করে আজব নক্ষত্র .... কিন্তু আত্মা কি জিনিস,
সে কথা কেউ একেবারেই জানে না। যখন কেউ বলে যে আত্মার সাক্ষাৎকার হোক তো তখন তাদের
বোঝাও যে তোমরা তো বলো ভ্রুকুটির মধ্যিখানে স্টার, স্টারকে কি করে দেখবে ? তিলক-ও
স্টারের উদ্দেশ্যে দেওয়া হয়। চন্দ্রেও স্টার দেখানো হয়। বাস্তবে আত্মা হল স্টার।
এখন বাবা বুঝিয়েছেন তোমরা হলে জ্ঞান স্টার্স, বাকি ওই সূর্য, চন্দ্র, তারা ইত্যাদি
বিশ্ব কে আলো দেওয়ার জন্য আছে। তারা কোনও দেবতা নয়। ভক্তিমার্গে সূর্যকে জল অর্পণ
করা হয়। ভক্তিমার্গে ব্রহ্মাবাবাও এইসব করেছেন। সূর্য দেবতায় নমঃ, চন্দ্র দেবতায় নমঃ
এমন সম্বোধন করে জল অর্পণ করতেন। এইসব হল ভক্তি মার্গ। ব্রহ্মাবাবা তো খুব ভক্তি
করেছেন। এক নম্বর পূজ্য তিনিই একনম্বর পূজারী হয়েছিলেন। নম্বর তো গণনা করা হবে তাইনা।
রুদ্র মালারও নম্বর আছে তাইনা। ভক্তিও সবচেয়ে বেশি ইনি ই করেছেন। এখন বাবা বলেন
ছোট-বড় সকলেরই হল বাণপ্রস্থ অবস্থা। এখন আমি সবাইকে ফিরিয়ে নিয়ে যাব তখন এখানে আর
আসবে না। যদিও শাস্ত্রে যা দেখানো হয়েছে - প্রলয় হয়েছে, জলমগ্ন হয়েছে পরে অশ্বত্থ
পাতায় ভেসে কৃষ্ণ এসেছেন.... বাবা বোঝান সাগরের কোনও কথা নেই। সেখানে তো হল গর্ভ
মহল, যেখানে বাচ্চারা খুব সুখে থাকে। এখানে গর্ভ-জেল বলা হয়। পাপের ভোগ গর্ভে
প্রাপ্ত হয়। তবুও বাবা বলেন মন্মনাভব, আমাকে স্মরণ করো। প্রদর্শনী তে কেউ জিজ্ঞাসা
করে সিঁড়িতে অন্য ধর্ম কেন দেখানো হয়নি ? বলো, অন্যদের তো ৮৪-টি জন্ম নেই। সব ধর্ম
বৃক্ষে দেখানো হয়েছে, সেইখান থেকে তোমরা নিজের হিসেব বের করে নাও যে কত জন্ম নিয়েছে
। আমাদের তো সিঁড়ি ৮৪ জন্মের দেখাতে হয়। বাকি সব চক্রে এবং বৃক্ষে দেখানো হয়েছে।
এতেই সব কথা বোঝানো হয়েছে। যেমন ম্যাপ দেখলে বুদ্ধিতে এসে যায় - লন্ডন কোথায়, অমুক
শহর কোথায়। বাবা কত সহজ করে বোঝান। সবাইকে এই কথা বলো ৮৪-র চক্র এইভাবেই পরিক্রম করে।
এখন তমোপ্রধান থেকে সতোপ্রধান হতে হবে তার জন্য অসীম জগতের পিতাকে স্মরণ করো তাহলে
তোমরা পবিত্র হয়ে যাবে এবং তারপরে পবিত্র হয়ে পবিত্র দুনিয়ায় চলে যাবে। কষ্টের কোনও
কথা নেই। যতক্ষণ সময় পাও বাবাকে স্মরণ করো তাহলেই পাকা অভ্যেস হয়ে যাবে। বাবার
স্মরণে থেকে তোমরা দিল্লী পর্যন্ত হেঁটে যাও তবু ক্লান্ত হবে না। প্রকৃত স্মরণ হলে
তো দেহের ভান মিটবে, তখন ক্লান্তি অনুভব হবে না। যারা পরে আসবে তারা স্মরণে আরও
তীব্র হবে। আচ্ছা !
মিষ্টি মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত ।
আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) এক
পিতার অব্যভিচারী স্মরণে থেকে দেহ-ভাবকে সমাপ্ত করতে হবে। নিজের কর্মাতীত অবস্থা
প্রাপ্তির জন্য পুরুষার্থ করতে হবে। এই দেহে স্থিত থেকে অবিনাশী উপার্জন জমা করতে
হবে।
২ ) জ্ঞানী আত্মা হয়ে
অন্যদের সার্ভিস করতে হবে, বাবার কাছে যা কিছু শুনেছ সেসব ধারণ করে অন্যদেরকে শোনাতে
হবে। ৫ বিকারের দান দিয়ে রাহু-র গ্রহণ থেকে মুক্ত হতে হবে।
বরদান:-
একমত
আর একরস অবস্থার দ্বারা ধরণীকে ফলদায়ক বানানোর উপযোগী করে তোলা সাহসী ভব
বাচ্চারা যখন তোমরা
সাহসী হয়ে সংগঠনে একমত বা একরস অবস্থাতে থাকো বা একই কার্য করো তখন নিজেও সদা
প্রফুল্লিত থাকো আর ধরণীকেও ফলদায়ক বানিয়ে তোলো। যেরকম আজকাল সায়েন্স দ্বারা মাটিতে
বীজ দেওয়ার সাথে সাথেই ফল প্রাপ্ত হয়, এইরকমই সাইলেন্সের শক্তির দ্বারা সহজ আর
তীব্র গতিতে প্রত্যক্ষতা দেখবে। যখন স্বয়ং নির্বিঘ্ন এক বাবার লগণে মগন, একমত আর
একরস থাকবে তখন অন্য আত্মারাও স্বতঃ সহযোগী হবে আর ধরণী ফলদায়ক হয়ে যাবে।
স্লোগান:-
যে,
অভিমানকে শান মনে করে, সে নির্মান থাকতে পারেনা।
অব্যক্ত ঈশারা :-
একান্ত প্রিয় হও, একতা আর একাগ্রতাকে ধারণ করো
একান্তবাসী আর রমণীকতা!
দুটো শব্দের মধ্যে অনেক পার্থক্য আছে, কিন্তু সম্পূর্ণতায় দুটোরই সমতা থাকে। দুটোই
সমান আর একসাথে থাকে। এখনই একান্তবাসী আবার এখনই রমণীক, যতই গম্ভীরতা ততই মিলনসারও
হবে। মিলনসার অর্থাৎ সকলের সংস্কার আর স্বভাবের সাথে যে মিশে যেতে পারে।