20.06.2025
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
বাবার ভালোবাসা নিতে চাইলে আত্ম-অভিমানী হয়ে বসো, বাবার থেকে আমরা স্বর্গের
উত্তরাধিকার গ্রহণ করছি, এই খুশীতে থাকো"
প্রশ্নঃ -
সঙ্গমযুগে
তোমরা ব্রাহ্মণদের ফরিস্তা হওয়ার জন্য কোন্ গুপ্ত পরিশ্রম করে থাকো?
উত্তরঃ
তোমাদের অর্থাৎ
ব্রাহ্মণদের পবিত্র হওয়ারই গুপ্ত পরিশ্রম করতে হয়। তোমরা ব্রহ্মার সন্তানেরা
সঙ্গমযুগে হলে ভাই-বোন, ভাই-বোনের মধ্যে নোংরা দৃষ্টি থাকতে পারে না। স্ত্রী-পুরুষ
একসাথে থাকলেও নিজেদের বি.কে মনে করে থাকো। এই স্মৃতির দ্বারা যখন সম্পূর্ণ পবিত্র
হবে, তখন ফরিস্তা হতে পারবে।
ওম্ শান্তি ।
মিষ্টি-মিষ্টি
বাচ্চারা, নিজেকে আত্মা মনে করে এখানে বসতে হবে। এই রহস্য বাচ্চারা, তোমাদেরও বোঝাতে
হবে। আত্ম-অভিমানী হয়ে বসলে তবে বাবার সাথে ভালোবাসা থাকবে। বাবা আমাদের রাজযোগ
শেখাচ্ছেন। বাবার থেকে আমরা স্বর্গের উত্তরাধিকার গ্রহণ করছি। এই স্মরণ যেন সারাদিন
বুদ্ধিতে থাকে - এতেই পরিশ্রম রয়েছে । এটা বারংবার ভুলে গেলে তখন খুশীর পারদ ডাল (নিস্তেজ)
হয়ে যায়। বাবা সাবধান করেন যে - বাচ্চারা, দেহী-অভিমানী হয়ে বসো । নিজেকে আত্মা মনে
করো। এখন হলো আত্মাদের আর পরমাত্মার মেলা! মেলা বসেছিলো, কবে বসেছিলো? অবশ্যই
কলিযুগের শেষে আর সত্যযুগ আদির সঙ্গমেই বসেছিলো। আজ বাচ্চাদের টপিকের উপর বোঝানো
হচ্ছে। তোমাদের তো অবশ্যই টপিক নিতে হবে। উচ্চতমের চেয়েও উচ্চ ভগবান আবার নীচে এলে
ব্রহ্মা-বিষ্ণু-শঙ্কর। বাবা আর দেবতারা। মানুষের এটা জানা নেই যে শিব আর
ব্রহ্মা-বিষ্ণু-শঙ্করের সম্বন্ধ কি? তাদের জীবন-কাহিনী কারোরই জানা নেই।
ত্রি-মূর্তির চিত্র হলো নামী-দামী। এই তিন জনই হলো দেবতা। কেবল এই ৩ এরই কি ধর্ম হয়
নাকি! ধর্ম তো বড় হয়, ডিটি ধর্ম। এরা হলেন সূক্ষ্মবতনবাসী, উপরে হলেন শিববাবা।
মুখ্য হলেন ব্রহ্মা আর বিষ্ণু। বাবা এখন বোঝান যে তোমাদের টপিক দিতে হবে- যিনি
ব্রহ্মা তিনিই বিষ্ণু, বিষ্ণু থেকে ব্রহ্মা কীভাবে হয়। তোমরা যেমন বলো আমি শূদ্র
থেকে ব্রাহ্মণ, ব্রাহ্মণ থেকে দেবতা, সেরকম এনারও, সর্বপ্রথম ব্রহ্মা থেকে বিষ্ণু,
বিষ্ণু থেকে ব্রহ্মা। তারা তো বলে দেয় আত্মাই পরমাত্মা, পরমাত্মাই আত্মা। এটা তো
হলো রং (ভুল)। হতেই পারে না। তাই এই টপিকের উপরে ভালোভাবে বোঝানো উচিত, কেউ বলে
পরমাত্মা কৃষ্ণের দেহে আসে। যদি কৃষ্ণের দেহে আসে আবার তবে ব্রহ্মার পার্ট শেষ হয়ে
যায়। কৃষ্ণ তো হলেন সত্যযুগের প্রথম প্রিন্স। সেখানে পতিত কীভাবে হতে পারে, যাকে এসে
পবিত্র করবে। একদমই ভুল। এই কথাও মহারথী সার্ভিসেবেল বাচ্চারাই বুঝতে পারে। এছাড়া
তো কারোর বুদ্ধিতে আসেই না। এই টপিক তো খুবই ফার্স্টক্লাস। ব্রহ্মা থেকে বিষ্ণু,
বিষ্ণু থেকে ব্রহ্মা কীভাবে হয়ে ওঠে। ওনার জীবন কাহিনী বলা হয়, কারণ এনার কানেক্শন
আছে। এভাবেই শুরু করতে হবে। ব্রহ্মা থেকে বিষ্ণু এক সেকেন্ডে। বিষ্ণু থেকে ব্রহ্মা
হতে ৮৪ জন্ম লাগে। এইটা খুবই বোঝার ব্যাপার। এখন তোমরা হলে ব্রাহ্মণ কুলের।
প্রজাপিতা ব্রহ্মার, ব্রাহ্মণ কুল কোথায় গেল? প্রজাপিতা ব্রহ্মার তো নূতন দুনিয়া
চাই যে না। নতুন দুনিয়া হলো সত্যযুগ। সেখানে তো প্রজাপিতা থাকেন না। কলিযুগেও
প্রজাপিতা থাকেন না। তিনি থাকেন সঙ্গমযুগে। তোমরা এখন সঙ্গমযুগে আছো। শূদ্র থেকে
তোমরা ব্রাহ্মণ হয়েছো। বাবা ব্রহ্মাকে অ্যাডপ্ট করেছেন। শিববাবা এনাকে কীভাবে রচনা
করেছেন, এটা কেউ জানে না। ত্রিমূর্তিতে রচয়িতা শিবের চিত্রই নেই, তাহলে কীভাবে
জানতে পারা যাবে যে উচ্চতমের চেয়ে ও উচ্চ হলেন ভগবান। এছাড়া সব হলো ওনার রচনা। এই
হলো ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়, তাই অবশ্যই প্রজাপিতা চাই। কলি যুগে তো তিনি থাকতে পারেন
না। সত্যযুগেও না। বলা হয়ে থাকে ব্রাহ্মণ দেবী দেবতায়ঃ নমঃ। এখন ব্রাহ্মণ কোথাকার?
প্রজাপিতা ব্রহ্মা কোথাকার? অবশ্যই বলা হবে সঙ্গমযুগের। এটা হলো পুরুষোত্তম
সঙ্গমযুগ। এই সঙ্গমযুগের বর্ণনা কোনো শাস্ত্রেই নেই। মহাভারত লড়াইও এই সঙ্গমযুগে
লেগেছে, নাকি সত্যযুগ বা কলিযুগে। পান্ডব আর কৌরব, এরা হলো সঙ্গমের। তোমরা পান্ডবরা
হলে সঙ্গমযুগী, আর কৌরব হলো কলিযুগী। গীতাতেও ভগবানুবাচ রয়েছে তাইনা! তোমরা হলে
পান্ডব দৈবী সম্প্রদায়। তোমরা আত্মিক পান্ডা হয়ে উঠছো। তোমাদের হলো রুহানী যাত্রা
বা আত্মিক যাত্রা, যা তোমরা বুদ্ধি দ্বারা করে থাকো।
বাবা বলেন নিজেকে
আত্মা মনে করো। স্মরণের যাত্রাতেই থাকো। শারীরিক যাত্রায় তীর্থ ইত্যাদি করে আবার
ফিরে আসে। সেটা অর্ধ-কল্প ধরে চলে। এই সঙ্গম যুগের যাত্রা হলো একবারের জন্যই। তোমরা
মৃত্যুলোকের গিয়ে আবার ফিরে আসতে পারবে না। পবিত্র হয়ে আবার তোমাদের পবিত্র
দুনিয়াতে আসতে হবে, সেইজন্য তোমরা এখন পবিত্র হয়ে উঠছো। তোমরা জানো যে এখন আমরা
হলাম ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ের। এরপর দৈবী সম্প্রদায়ের, বিষ্ণু সম্প্রদায়ের হবো।
সত্যযুগে দেবী-দেবতারা হলো বিষ্ণু সম্প্রদায়ের। সেখানে চতুর্ভুজের প্রতিমা থাকে,
যাতে বুঝতে পারা যায় যে, এরা হলো বিষ্ণু সম্প্রদায়ভুক্ত। এখানে প্রতিমা হলো রাবণের,
তো রাবণ সম্প্রদায় আছে। তবে এই টপিক রাখলে মানুষ ওয়ান্ডার বোধ করবে। এখন তোমরা
দেবতা হওয়ার জন্য রাজযোগ শিখছো। ব্রহ্মা মুখ বংশাবলী ব্রাহ্মণ, তোমরা শূদ্র থেকে
ব্রাহ্মণ হয়ে উঠছো। অ্যাডপ্ট করা হয়েছে। ব্রাহ্মণও এখানে আবার দেবতা এখানেই হবে।
ডিনায়েস্টি এখানেই হয়। ডিনায়েস্টি রাজত্বকে বলা হয়। বিষ্ণুর ডিনায়েস্টি আছে।
ব্রাহ্মণদের ডিনায়েস্টি বলা হবে না। ডিনায়েস্টিতে রাজত্ব চলে। একের পিছনে দ্বিতীয়
এরপর তৃতীয়। এখন তোমরা জানো যে, আমরা হলাম ব্রাহ্মণ কুল-ভূষণ। আবার দেবতা হয়ে উঠি।
ব্রাহ্মণ মানেই বিষ্ণু কুলের, বিষ্ণু কুল থেকে আসে ক্ষত্রিয় চন্দ্রবংশী কুলে, এরপর
বৈশ্য কুলে, তারপর শূদ্র কুলে। আবার ব্রাহ্মণ থেকে দেবতা হবে। অর্থ কতো ক্লীয়ার।
চিত্রতে কতো কি দেখায়। আমরা অর্থাৎ ব্রাহ্মণরাই বিষ্ণুপুরীর মালিক হয়ে উঠি। এতে
বিভ্রান্ত হওয়ার কিছু নেই। বাবা যে এসে (প্রবন্ধ) দেন তার উপর বিচার সাগর মন্থন করা
উচিত- কাকে কীভাবে বোঝাবে, যাতে মানুষ ওয়ান্ডার বা অবাক হবে যে এর বোঝানো তো খুবই
ভালো। জ্ঞান সাগর ব্যাতীত আর কেউ বোঝাতে পারে না। বিচার সাগর মন্থন করে তারপর বসে
লেখা উচিত। এরপর পড়লে মনে পড়বে। এই এই শব্দ অ্যাড করা উচিত। প্রথমদিকে বাবাও মুরলী
লিখে তোমাদের হাতে দিয়ে দিতেন। আবার শোনাতেন। এখানে তো তোমরা বাড়ীতে বাবার সাথে
থাকো। এখন তো তোমাদের বাইরে গিয়ে শুনতে হয়, এই টপিক খুবই ওয়ান্ডারফুল, ব্রহ্মা
থেকে বিষ্ণু, এনাকে কেউ জানে না। বিষ্ণুর নাভি থেকে ব্রহ্মা দেখানো হয়। যেন গান্ধীর
নাভি থেকে নেহেরু। কিন্তু ডিনায়েস্টি (রাজত্ব) তো দরকার যে না। ব্রাহ্মণ কুলে
রাজত্ব নেই, ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়েরই ডিটি ডিনায়েস্টি রাজত্ব হয়। এরপর চন্দ্রবংশী
ডিনায়েস্টিতে আসবে তারপর বৈশ্য ডিনায়েস্টি। এরকমই প্রতিটা ডিনায়েস্টি চলে।
সত্যযুগ হলো ভাইসলেস ওয়ার্ল্ড, কলিযুগ হলো ভিসস্ ওয়ার্ল্ড। এই দুটি শব্দও কারোর
বুদ্ধিতে নেই। না হলে এটা তো বুদ্ধিতে থাকা উচিত যে ভিসস্ থেকে ভাইসলেস কীভাবে হয়।
মানুষ না পাপমুক্ত কি তা জানে, না জানে পাপ কি। তোমাদের বোঝানো হয়, দেবতারা হলো
ভাইসলেস। এরকম কখনো শোনা যায় নি যে ব্রাহ্মণ হলো ভাইসলেস। নূতন দুনিয়া হলো ভাইসলেস,
পুরানো দুনিয়া হলো ভিসস্। তাই অবশ্যই সঙ্গমযুগ দেখাতে হয়। এই সঙ্গমযুগ কারোরই জানা
নেই। পুরুষোত্তম মাস পালন করে যে না। ওটা তিন বছর বাদে এক মাস পালন করা হয়। তোমাদের
৫ হাজার বছর পরে এক সঙ্গমযুগ আসে। মনুষ্য আত্মা আর পরমাত্মাকে যথার্থ ভাবে জানে না,
শুধু বলে দেয় জ্বল-জ্বল করে এক আজব তারা। ব্যস্, যেমন দেখানো হয় রামকৃষ্ণ পরমহংসের
শিষ্য বিবেকানন্দ বলেছিল আমি গুরুর সামনে বসেছিলাম, গুরুরও তো ধ্যান করা হয় তাই না।
বাবা এখন বলেন, কেবলমাত্র মামেকম্ স্মরণ করো । ধ্যান করার তো কথাই নেই, গুরু তো
স্মরণে আছেনই। বিশেষ ভাবে বসে স্মরণ করলে কি স্মরণে আসবে আর! ওনার গুরুর ভাবনা ছিলো
যে এই ভগবান আছেন তো দেখলেন কি ওনার আত্মা বেরিয়ে গিয়ে আমার মধ্যে লীন হয়ে গেল।
ওনার আত্মা কোথায় গিয়ে বসলো, তারপর কি হলো- কিছুই বর্ণনা নেই, ব্যস্। খুশী হলো যে
আমার ভগবানের সাথে সাক্ষাৎকার হয়েছে। ভগবান কে সেটা জানে না। বাবা বোঝান, সিঁড়ির
চিত্রের উপরে তোমরা বোঝাও। এটা হলো ভক্তি মার্গ। তোমরা জানো যে এক হলো ভক্তির বোট (নৌকা),
দ্বিতীয় হলো জ্ঞানের। জ্ঞান আর ভক্তি আলাদা। বাবা বলেন আমি তোমাদের কল্প-পূর্বে
জ্ঞান দিয়েছিলাম, বিশ্বের মালিক করেছিলাম। এখন তোমরা কোথায়। তোমাদের অর্থাৎ
বাচ্চাদের বুদ্ধিতে সমগ্র জ্ঞান আছে- কীভাবে অন্যান্য ডিনায়েস্টি আসে, মনুষ্য
বৃক্ষ কীভাবে বৃদ্ধি পায়। যেমন ফুলের তোড়া হয় না ! এই সৃষ্টি রূপী বৃক্ষও হলো
ফুলদানি। এরমধ্যে তোমাদের ধর্ম, আবার এর থেকে তিনটি ধর্ম বের হয়, আবার ওর থেকে
বৃদ্ধি পেতে থাকে। তাই এই বৃক্ষকেও স্মরণ করতে হবে। কতো শাখা-প্রশাখা ইত্যাদি বের
হতে থাকে। যারা শেষের দিকে আসে তাদের কদরও বেড়ে যায়। বট বৃক্ষ যেমন, তার গোঁড়াই
নেই (লুপ্ত) । কিন্তু সমস্ত বৃক্ষ দাঁড়িয়ে রয়েছে । দেবী-দেবতা ধর্মও শেষ হয়ে পড়ে
আছে। একদম হেলে পড়েছে। ভারতবাসী নিজের ধর্মকে একেবারেই জানে না, আর সকলে নিজের
ধর্মকে জানে। মানুষ বলে দেয় আমি ধর্মকে মানিই না। চার ধর্ম হলো মুখ্য। তাছাড়া তো
ছোট-ছোটো অনেক আছে। এই কল্প বৃক্ষ আর সৃষ্টি চক্রকে তোমরা এখন জেনেছো। দেবী-দেবতা
ধর্মের নামই হারিয়ে ফেলেছে। বাবা আবার সেই দেবী-দেবতা ধর্ম স্থাপন করে বাকি সমস্ত
ধর্মের বিনাশ করে দেন। গোলার চিত্র দিকেও অবশ্যই মনোযোগ দেওয়া উচিত। এটা সত্যযুগ,
এটা কলিযুগ। কলিযুগে কতো ধর্ম আছে, সত্যযুগে একটাই ধর্ম। এক ধর্মের স্থাপনা, অনেক
ধর্মের বিনাশ কে করবে? ভগবানও অবশ্যই কারোর দ্বারা তো করাবেন নিশ্চয়ই। বাবা বলেন
ব্রহ্মা দ্বারা আদি সনাতন দেবী-দেবতা ধর্মের স্থাপনা করি। ব্রাহ্মণই বিষ্ণুপুরীর
দেবতা হয়ে ওঠে। সঙ্গমে তোমাদের অর্থাৎ ব্রাহ্মণদেরকে পবিত্র হওয়ার জন্যই গুপ্ত ভাবে
পরিশ্রম করতে হয়। তোমরা অর্থাৎ ব্রাহ্মণ বাচ্চারা হলে সঙ্গমযুগে ভাই-বোন।
ঘৃণ্য-দৃষ্টি ভাই- বোনের মধ্যে থাকতে পারে না। স্ত্রী-পুরুষ দুই-ই নিজেদের বি-কে মনে
করে। এতে অনেক পরিশ্রম আছে। স্ত্রী-পুরুষের আকর্ষণ এমন যে, ব্যস্- স্পর্শ না করে
থাকতে পারে না। এখানে ভাই বোনকে স্পর্শ তো করবেই না, তাহলে পাপের ফিলিং আসবে। আমরা
হলাম বি. কে, এটা ভুলে গেলে শেষ হয়ে যাবে। এতে খুবই গুপ্ত পরিশ্রম আছে। যদিও যুগল
ভাবে থাকে - কার কি জানা আছে, তারা নিজেরা জানে যে আমরা হলাম বি.কে- ফরিস্তা। হাত
লাগাতে নেই। এরকম করতে করতে সূক্ষ্মবতনবাসী ফরিস্তা হয়ে যাবে। তা না হলে ফরিস্তা
হতে পারবে না। ফরিস্তা হতে গেলে পবিত্র থাকতে হয়। এরকম জোড় পাওয়া গেলে তো নম্বর
ওয়ানে থাকবে। বলে দাদা তো সব অনুভব করেছেন, শেষে সন্ন্যাস করেছেন, বেশী পরিশ্রম তো
তাদের যারা জোড় হয়ে যায়। আবার ওদের জ্ঞান আর যোগ চাই। অনেককে নিজের সমান তৈরী করলে
তবে রাজা হবে। কথা শুধু তো একটা না। বাবা বলেন তোমরা শিববাবাকে স্মরণ করো। ইনি হলেন
প্রজাপিতা। অনেকে এরকমও আছে যে বলে আমাদের কাজ তো শিববাবার সাথে। আমরা ব্রহ্মাকে
কেন স্মরণ করবো ! ওনাকে কেনই বা পত্র লিখবো ! এইরকমও আছে। তোমাদের স্মরণ করতে হবে
শিববাবাকে, সেইজন্য বাবা ফটো ইত্যাদিও দিতেন না। এনার মধ্যে শিববাবা আসেন, ইনি তো
দেহধারী, তাই না ! বাচ্চারা, এখন তো বাবার থেকে উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয়। তারা
নিজেদের ঈশ্বর বলে, এরপর তাদের থেকে কি প্রাপ্ত হয়, কতো ক্ষতি হয় ভারতবাসীদের।
ভারতবাসী একদম দেউলিয়া হতে থাকে। প্রজাদের থেকে ভিক্ষা চাইতে থাকে। ২০-২০ বছরের
জন্য লোন নেয়, আবার ফেরত কি আর দেয়! দাতা আর গ্রহীতা দু'জনেই শেষ হয়ে যাবে। খেলাই
শেষ হয়ে যাবে। মাথার উপর অনেক বিঘ্ন আছে। দেউলিয়া, অসুস্থতা ইত্যাদি অনেক রকম। কেউ
বিত্তশালীদের কাছে রেখে দেয় আর তারা দেউলিয়া করে দেয় তো গরীবদের কতো দুঃখ হয়।
পায়ে-পায়ে দুঃখ আর দুঃখই আছে। হঠাৎ করে বসে বসে মরে যায়। এটা হলোই মৃত্যুলোক।
অমরলোকে তোমরা এখন যাচ্ছো। অমরপুরীর বাদশাহ হতে চলেছো। অমরনাথ তোমাদের অর্থাৎ
পার্বতীদের সত্যিকারের অমর কথা শোনাচ্ছেন। তোমরা জানো যে বাবা হলেন অমর, ওনার থেকে
আমরা অমর কথা শুনছি। এখন অমরলোকে যেতে হবে। এই সময় তোমরা সঙ্গমযুগে আছো। আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
বিচার সাগর মন্থন করে "ব্রহ্মা তথা বিষ্ণু" কীভাবে হয়, এই টপিকের উপরে শোনাতে হবে।
বুদ্ধিকে জ্ঞান মন্থনে বিজি রাখতে হবে।
২ ) রাজ পদ প্রাপ্ত
করার জন্য জ্ঞান আর যোগের সাথে সাথে নিজ সম করে তোলার সার্ভিসও করতে হবে। নিজের
দৃষ্টি খুবই শুদ্ধ রাখতে হবে।
বরদান:-
সর্ব
সম্বন্ধের অনুভব এক বাবার সাথে করে থাকা অক্লান্ত আর বিঘ্ন বিনাশক ভব
যে বাচ্চারা এক বাবার
সাথে সকল সম্বন্ধ রাখে, তাদের কাছে অন্য সকল সম্বন্ধ নিমিত্ত মাত্র অনুভব হবে, তারা
সদা খুশীতে নাচতে থাকবে, কখনও ক্লান্তির অনুভব করবে না, অক্লান্ত হবে। বাবা আর সেবা,
এই লগনেই মগন থাকবে। বিঘ্নের কারন নিবারন করার পরিবর্তে নিজেই বিঘ্ন বিনাশক হবে।
সকল সম্বন্ধের অনুভূতি এক বাবার সাথে হওয়ার কারণে সদা ডবল লাইট থাকবে, কোনও বোঝা
থাকবে না। সকল কম্লেন সমাপ্ত হবে। কম্প্লিট স্থিতির অনুভব হবে। সহজযোগী হবে।
স্লোগান:-
সংকল্পেও কোনও দেহধারীর প্রতি আকর্ষিত হওয়া অর্থাৎ অবিশ্বাসী হওয়া।
অব্যক্ত ঈশারা :-
আত্মিক স্থিতিতে থাকার অভ্যাস করো, অন্তর্মুখী হও
যেরকম মহাকাশ যান
অনেক উঁচুতে থাকার কারণে সমগ্র পৃথিবীর সব জায়গার চিত্র তুলতে পারে, এইরকম
সাইলেন্সের শক্তির দ্বারা অন্তর্মুখী যানের সাহায্যে, মন্সা শক্তির দ্বারা যেকোনও
আত্মাকে চরিত্রবান বানানোর, শ্রেষ্ঠ আত্মা বানানোর প্রেরণা দিতে পারো।