20-10-2024 প্রাতঃ
মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ
28-03-2002 মধুবন
"এই বছরকে নির্মান, নির্মল এবং ব্যর্থ থেকে মুক্ত
হওয়ার মুক্তিবর্ষ উদযাপন করো"
আজ বাপদাদা নিজের চতুর্দিকের বাচ্চাদের ললাটে ঝলমলে তিন রেখা
দেখছেন। একটি রেখা হলো প্রভু পালনার, আরেক রেখা হলো শ্রেষ্ঠ অধ্যয়নের এবং তৃতীয়
রেখা হলো শ্রেষ্ঠ মতের। তিন রেখাই ঝলমল করছে। এই তিন রেখা সকলের ভাগ্যের রেখা।
তোমরাও সবাই নিজের তিন রেখা দেখছো তো না! প্রভু-পালনার ভাগ্য তোমরা সব ব্রাহ্মণ
আত্মা ব্যতীত আর কারও প্রাপ্ত হয় না। পরমাত্ম-পালনা এমনই যে পালনা দ্বারা কত
শ্রেষ্ঠ পূজনীয় হয়ে যাও তোমরা। কখনো স্বপ্নেও এমন ভেবেছিলে যে আমি আত্মার পরমাত্ম
পাঠের অধিকার প্রাপ্ত হওয়ার আছে! কিন্তু এখন সাকারে অনুভব করছো। স্বয়ং সদ্গুরু
অমৃতবেলা থেকে রাত পর্যন্ত সব কর্মের শ্রেষ্ঠ মত প্রদান ক'রে, কর্ম বন্ধনের পরিবর্তে
কর্ম সম্বন্ধে আসতে শ্রীমৎ দেওয়ার নিমিত্ত বানাবেন, এটাও স্বপ্নে ছিল না। কিন্তু
এখন অনুভবের দ্বারা বলে থাকো আমাদের সব কর্ম শ্রীমতে চলছে। এমন অনুভব আছে তোমাদের?
সব বাচ্চার এমন শ্রেষ্ঠ ভাগ্য দেখে বাপদাদাও আনন্দিত হন। বাঃ আমার শ্রেষ্ঠ ভাগ্যবান
বাঃ! বাচ্চারাও বলে বাঃ বাবা বাঃ! আর বাবা বলেন বাঃ বাচ্চারা বাঃ!
আজ অমৃতবেলা থেকে বাচ্চাদের দুটো সংকল্পের দ্বারা স্মরণ
বাপদাদার কাছে পৌঁছেছে। এক তো কিছু বাচ্চার নিজের অ্যাকাউন্ট দেওয়ার বিষয়ে স্মরণ
ছিল। দ্বিতীয় - বাবার সঙ্গের রঙের হোলি স্মরণ ছিল। তো সবাই হোলি উদযাপন করতে এসেছো
তো না! ব্রাহ্মণের ভাষায় উদযাপন অর্থাৎ হওয়া। হোলি উদযাপন করো অর্থাৎ তোমরা হোলি
হও। বাপদাদা দেখছিলেন ব্রাহ্মণ বাচ্চাদের হোলিয়েস্ট হওয়া সবার থেকে কত স্বতন্ত্র
আর অনুপম! বাস্তবে, দ্বাপরের আদি সময়ের মহান আত্মারা এবং সময়-সময়তে আসা ধর্ম
পিতারাও পবিত্র, হোলি হয়েছে। কিন্তু তোমাদের পবিত্রতা সবার থেকে শ্রেষ্ঠও,
স্বতন্ত্রও। তোমরা আত্মারাও পবিত্র, তোমাদের শরীরও পবিত্র, প্রকৃতিও সতোপ্রধান
পবিত্র। সমগ্র কল্পে অন্য যে কেউ, সে মহাত্মা হোক বা ধর্ম আত্মা, কিংবা ধর্ম পিতা,
কিন্তু তোমাদের মতো এমন হোলিয়েস্ট না কেউ হয়েছে, না কেউ হতে পারে। নিজের ভবিষ্যৎ
স্বরূপ সামনে নিয়ে এসো। সবার সামনে নিজের ভবিষ্যৎ রূপ এসেছে? নাকি জানি না, আমি হবো
কি হবো না! কি হবো! যা কিছুই হও কিন্তু হবে তো পবিত্র, তাই না! শরীরও পবিত্র,
আত্মাও পবিত্র আর প্রকৃতিও পবিত্র পাবন, সুখদায়ী...নিশ্চয়ের কলম দ্বারা নিজের
ভবিষ্যৎ চিত্র সামনে আনতে পারো। নিশ্চয় আছে তো না! টিচারদের নিশ্চয় আছে? আচ্ছা এক
সেকেন্ডে নিজের ভবিষ্যৎ চিত্র সামনে আনতে পারো? ঠিক আছে, কৃষ্ণ না হতে পারো কিন্তু
কৃষ্ণের সাথী তো হবে, হবে তো না! এটা কত সুন্দর লাগে! আর্টিস্ট কীভাবে হতে হয় জানো
তোমরা, নাকি জানো না? শুধু সামনে দেখো। এখন আমি সাধারণ, কাল (ড্রামার কাল, এটা সেই
কাল নয় যেটা আগামীকাল আসবে), তো কাল (ভবিষ্যতে) এই পবিত্র শরীরধারী অবশ্যই হতে হবে।
পান্ডব কী ভাবছো? পাক্কা তো না! সন্দেহ নেই তো - জানি না হবো কি হবো না! সন্দেহ আছে?
নেই তো, তাই না? পাক্কা? তোমরা যখন রাজযোগী তখন তোমাদের অধিকারী তো হতেই হবে।
বাপদাদা অনেক বার স্মরণ করিয়ে দেন যে বাবা তোমাদের জন্য উপহার এনেছেন, তো কী উপহার
এনেছেন? স্বর্ণালী দুনিয়া, সতোপ্রধান দুনিয়ার উপহার এনেছেন। তো নিশ্চয় আছে,
নিশ্চয়ের লক্ষণ হলো অধ্যাত্ম নেশা। নিজের রাজ্যের সমীপে আসছো, ঘরেরও সমীপে আসছো আর
নিজের রাজ্যের যত সমীপে আসছো, তো বারবার নিজের সুইট হোম আর নিজের সুইট রাজ্যের
স্মৃতি স্পষ্ট রূপে আসাই উচিত। এটা হলো সমীপে আসার লক্ষণ। নিজ নিকেতন, নিজের রাজ্য
এমনই স্পষ্ট রূপে যেন স্মৃতিতে আসে, তৃতীয় নয়ন দ্বারা যেন স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়।
অনুভব হবে আজ এটা, কাল এটা। কতবার তোমরা পার্ট সম্পূর্ণ করে নিজের ঘর এবং নিজের
রাজ্যে গেছো, স্মরণে আসে তো না! আর এখন আবার যেতে হবে।
বাপদাদা সকলের বর্তমান সময়ের রেজাল্ট দেখেছেন। ডবল ফরেনার্স
হোক বা ভারতবাসী, সব বাচ্চার রেজাল্টে দেখেছেন যে বর্তমান সময়ে বাচ্চাদের মধ্যে
অনেক নতুন নতুন ধরনের অমনোযোগিতা বিদ্যমান। অনেক ধরনের অমনোযোগিতা। মনে মনেই ভেবে
নেয়, "সব চলে" - এটা হলো অমনোযোগিতা। সাথে অল্প অল্প বিভিন্ন রকমের পুরুষার্থ বা
স্ব-পরিবর্তনে বেখেয়াল ভাবের সাথে কিছু পার্সেন্টে আলস্যও রয়েছে। হয়ে যাবে, করেই
নেবো... বাপদাদা নতুন নতুন ধরনের অমনোযোগিতার বিষয়গুলো দেখেছেন। সেইজন্য অমনোযোগী
রূপে নয়, নিজেদের সত্য হৃদয় থেকে অবশ্যই অ্যাকাউন্ট রাখো।
তো বাপদাদা আজ রেজাল্ট শোনাচ্ছেন। শোনাবেন, নাকি না! শুধু
ভালোবাসবেন? এটাও ভালোবাসা। প্রত্যেকের প্রতি বাপদাদার এত ভালবাসা আছে যে তাঁর মনে
হয় বাচ্চারা সবাই যেন ব্রহ্মা বাবার সাথে সাথে নিজের ঘরে ফিরে যায়। পিছনে পিছনে
যেন না যায়, সাথী হয়ে যায়। সুতরাং সমান হতে হবে তো না! সমান হওয়া ব্যতীত সাথী
হয়ে যেতে পারবে না এবং তারপরে আবার নিজের রাজ্যে প্রথম জন্ম, প্রথম জন্ম তো প্রথমই
হবে, তাই না! যদি দ্বিতীয়-তৃতীয় জন্মে এসেও যাও, ভালো রাজাও হয়ে যাও, কিন্তু বলা
তো হবে দ্বিতীয়-তৃতীয়, তাই তো না! সাথে যাওয়া আর ব্রহ্মা বাবার সাথে প্রথম
জন্মের অধিকারী হওয়া - এরাই হলো নম্বর ওয়ান পাস উইথ অনার। তো পাস উইথ অনার হবে,
নাকি পাস মার্ক্স হলেও ঠিক আছে? কখনও এটা ভেবো না যে আমরা যা করছি, যা হচ্ছে তা'
বাপদাদা দেখেন না। এতে কখনো অমনোযোগী হওয়া উচিত নয়। যদি কোনও বাচ্চা নিজের
হৃদয়ের চার্ট জিজ্ঞাসা করে তো বাপদাদা বলতে পারেন, কিন্তু এখন সেটা বলার নয়।
বাপদাদা প্রত্যেক মহারথী, ঘোড়সওয়ার... সবার চার্ট দেখছেন। অনেকবার তো বাপদাদার
খুব করুণা হয়, তোমরা কে আর করছো কী! কিন্তু ব্রহ্মা বাবা যেমন বলতেন না - মনে আছে
তোমাদের, কী বলতেন? গুড় জানে গুড়ের বস্তা জানে। শিব বাবা জানে আর ব্রহ্মা বাবা
জানে, বাপদাদার অতি করুণার সঞ্চার হয়। কিন্তু এমন বাচ্চারা বাপদাদার দয়ার সংকল্প
টাচ্ করতে পারে না, ক্যাচ করতে পারে না। সেইজন্য বাপদাদা বলেছেন - বিভিন্ন রকমের
রয়্যাল অসতর্কতা বাবা দেখতে থাকেন। আজ বাপদাদা বলেই দিচ্ছেন তাঁর সমবেদনা বোধ হয়।
কোনো কোনো বাচ্চা এইরকম মনে করে যে সত্যযুগে তো জানাই যাবে না কে কী ছিল, এখন তো মজা
করে নাও। এখন যা কিছু করার করে নাও। কেউ আটকানোর নেই, কেউ দেখার নেই। কিন্তু এটা
ঠিক নয়। বাপদাদা শুধু নামটা বলেন না, যদি নাম বলেন তোমরা কাল ঠিক হয়ে যাবে।
তাহলে বুঝেছো যে কী করতে হবে! পান্ডব বুঝেছো কি বোঝানি! চলে
যাবে? চলবে না, কেননা বাপদাদার কাছে প্রত্যেকের প্রতি দিনের রিপোর্ট আসে। বাবা-দাদা
নিজেদের মধ্যেও আত্মিক বার্তালাপ করেন। তো বাপদাদা সব বাচ্চাকে আবারও ইশারা দিচ্ছেন
যে, সময় সবরকমভাবে অতির দিকে যাচ্ছে। মায়াও নিজের অতির পার্ট প্লে করছে, প্রকৃতিও
নিজের অতির পার্ট প্লে করছে। এমন সময়ে ব্রাহ্মণ বাচ্চাদের নিজের প্রতি অ্যাটেনশনও
অতি অর্থাৎ মন বচন কর্মে অতি প্রয়োজন। সাধারণ পুরুষার্থ নয়। প্রকৃতপক্ষে, বাপদাদা
দেখেছেন যে, সেবাতে তোমাদের নিষ্ঠা ভালো। সেবার জন্য তোমরা এভাররেডি, যখন তোমরা
চান্স পাও তো ভালোবাসার সাথে সেবার জন্য এভাররেডি। কিন্তু এখন সেবাতে অ্যাডিশন করো
- বাণীর সাথে সাথে মন্সা সেবা। নিজেকে তথা আত্মাকে কোনো না কোনো বিশেষ প্রাপ্তির
স্বরূপে স্থিত করে বাণীর দ্বারা সেবা করো। মনে করো, ভাষণ করছো, বাণীর দ্বারা ভাষণ
তোমরা তো ভালোই করো কিন্তু সেই সময় আত্মিক স্থিতিকে বিশেষভাবে হয় শক্তির, নতুবা
শান্তির, কিংবা পরমাত্ম-ভালবাসার, কোনো না কোনো বিশেষ অনুভূতির স্থিতিতে স্থিত করে
মন্সা দ্বারা আত্মিক স্থিতির প্রভাব বায়ুমন্ডলে ছড়িয়ে দাও এবং বাণীর দ্বারা
সন্দেশ দাও। মন্সা দ্বারা আত্মিক স্থিতির অনুভূতি করাও। ভাষণের সময় ললাট থেকে,
নয়ন থেকে, চেহারার থেকে সেই অনুভূতির আন্তরিক সৌন্দর্য যেন প্রতীয়মান হয় যে, আজ
আমরা ভাষণ তো শুনছিলাম, তার সাথে সাথে পরমাত্ম-ভালবাসার খুব ভালো অনুভূতি হচ্ছিল।
ভাষণের রেজাল্টে তারা যেমন বলে থাকে খুব ভালো বলেছো, খুব ভালো, খুব ভালো ভালো বিষয়ে
বলেছো, ঠিক সেইভাবেই যেন তোমাদের আত্ম- স্বরূপের অনুভূতিরও বর্ণন করে। মনুষ্য
আত্মাদের কাছে যেন ভাইব্রেশন পৌঁছায়, বায়ুমন্ডল তৈরি হয়। যখন সায়েন্সের সাধন
বাতাবরণ ঠাণ্ডা করতে পারে, সবার বোধগম্য হয় খুব ভালো ঠাণ্ডা আসছে। এটা গরম
বায়ুমন্ডলও অনুভব করাতে পারে। সায়েন্স ঠাণ্ডায় গরমের অনুভব করাতে পারে, গরমে
ঠাণ্ডার অনুভব করাতে পারে। তাহলে তোমাদের সায়েন্স কী প্রেম স্বরূপ, সুখ স্বরূপ,
শান্ত স্বরূপ বায়ুমন্ডল অনুভব করাতে পারে না! এটা রিসার্চ করো। তারা শুধু ভালো ভালো
করেছে, কিন্তু তারা যেন ভালো হয়ে যায়, তবেই সমাপ্তির সময়কে সমাপ্ত করে নিজেদের
রাজত্ব আনতে পারবে। কেন তোমাদের নিজেদের রাজ্য স্মরণে আসে না? সঙ্গমযুগ শ্রেষ্ঠ সেটা
ঠিক আছে, হীরে তুল্য। কিন্তু হে দয়াবান, বিশ্ব কল্যাণী বাচ্চারা, নিজেদের দুঃখী
অশান্ত ভাই বোনেদের প্রতি দয়া আসে না? উৎসাহ জাগে না, দুঃখময় সংসারকে সুখময়
বানিয়ে দিই, এই উৎসাহ-উদ্দীপনা আসে না? দুঃখ দেখতে চাও, অন্যের দুঃখ দেখেও দয়া আসে
না? তারা তোমাদের ভাই, তোমাদের বোন, তো দুঃখ দেখতে ভালো লাগে? নিজের দয়ালু, কৃপালু
স্বরূপ ইমার্জ করো। শুধু সেবায় নিয়োজিত হয়ো না, এই প্রোগ্রাম করেছি, এই
প্রোগ্রাম করেছি...ঠিক আছে বর্ষ সম্পূর্ণ হয়েছে। এখন মার্সিফুল হও। হয় দৃষ্টির
দ্বারা, অথবা অনুভূতির দ্বারা কিংবা আত্মিক স্থিতির প্রভাবের দ্বারা মার্সিফুল হও।
হৃদয়বান হও।
বাপদাদা আরও একটি বিষয় দেখেছেন, তাঁর বলতে ভালো লাগে না।
কখনো কখনো কোনো কোনো বাচ্চারা, তারা সব ভালো ভালো, তবুও অন্যের ব্যাপারে খুব জড়িয়ে
পড়ে। অন্যের বিষয়ে দেখা, অন্যের ব্যাপারে বর্ণন করা... তাছাড়া তারা দেখেও ব্যর্থ
বিষয়। একে অন্যের বিশেষত্ব বর্ণন করা - এটার অভাব রয়েছে । প্রত্যেকের বিশেষত্ব
দেখা, বিশেষত্ব বর্ণন করা, তাদের বিশেষত্বের দ্বারা তাদেরকে প্রবলভাবে উৎসাহিত করা,
এটার অভাব রয়েছে । কিন্তু ব্যর্থ বিষয় যে বিষয়গুলোকে বাপদাদা বলেন ছেড়ে দাও,
নিজেরটা তো ছাড়ার চেষ্টা করে কিন্তু অন্যেরটা দেখার অভ্যাস রয়েছে। তা'তে অনেক
টাইম যায়। বাপদাদা এক বিশেষ শ্রীমৎ দিচ্ছেন - কমন বিষয় কিন্তু টাইম বেশি ওয়েস্ট
হয়ে যায়। বোলে নিরহংকারী (নির্মান) হও। বোলে অহংকার শূন্যতা কম হওয়া উচিত নয়।
হয়তো বা সাধারণ শব্দ বলো, তখন মনে করো এ'ক্ষেত্রে বলতে হবেই তো না! কিন্তু
নিরহঙ্কারিতার পরিবর্তে যদি কেউ অথরিটির সাথে অহংকারশূন্য বোল না বলে তবে কার্যের
ভিত্তিতে, তার সিট অনুসারে, ৫% অভিমানও দৃষ্টিগোচর হবে। অহংকার শূন্যতা ব্রাহ্মণের
জীবনের বিশেষ রূপসজ্জা। তোমাদের মনে, বাণীতে, বোলে, সম্বন্ধ-সম্পর্কে...
অহংকারশূন্যতা হবে। এমন নয় যে তিন বিষয়ে তো আমি নিরহংকার, একটায় কম আছি তো কী
হয়েছে! কিন্তু সেই একটা অভাব পাস উইথ অনার হতে দেবে না। অহংকারশূন্যতাই হলো
মহত্ত্ব। ঝুঁকতে হবে না, ঝুঁকাতে হবে। কিছু বাচ্চা হাসি মজায় বলে দেয় আমাকেই
ঝুঁকতে হবে, সে তো নত হোক। কিন্তু সেটা নত হওয়া নয়, বাস্তবে পরমাত্মাকেও নিজের
উপরে ঝুঁকাতে হবে, আত্মার ব্যাপার তো ছাড়ো। নম্রতা আপনা থেকেই নিরহংকারী বানিয়ে
দেয়। নিরহংকারী হওয়ার পুরুষার্থ করতে হয় না। অহংকারশূন্যতা প্রত্যেকের মনে,
তোমাদের প্রতি ভালোবাসার স্থান বানিয়ে দেয়। অহংকারশূন্যতার কারণে প্রত্যেকের মন
থেকে তোমাদের জন্য শুভাশিস বের হয়। অনেক আশীর্বাদ প্রাপ্ত হবে। তোমাদের পুরুষার্থে
লিফ্ট দ্বারা আশীর্বাদ রকেট হয়ে যাবে, অহংকারশূন্যতা এমনই জিনিস। অন্যেরা যে যেমনই
হোক, তারা বিজি হোক বা কঠোর হৃদয়ের হোক, কিংবা ক্রোধী, কিন্তু অহংকারশূন্যতা
তোমাদের জন্য সর্ব দ্বারা সহযোগ দেওয়ার নিমিত্ত হয়ে যাবে। যারা নিরহংকারী, তারা
প্রত্যেকের সংস্কার অনুসারে নিজেকে চালাতে পারে। রিয়েল গোল্ড হওয়ার কারণে নিজেকে
মোল্ড করার বিশেষত্ব থাকে। তো বাপদাদা দেখেছেন যে, বার্তালাপ করার সময়ও, সম্বন্ধ
সম্পর্কেও, সেবাতেও পরস্পরের সাথে অহংকারশূন্য স্বভাব বিজয় প্রাপ্ত করায়। সেইজন্য
বাপদাদা এই বছরকে বিশেষভাবে নির্মান, নির্মল বর্ষ-এর নাম দিচ্ছেন। বর্ষ উদযাপন করবে
তো না!
এই বছরে বাপদাদা সব বাচ্চাকে ব্যর্থ থেকে মুক্ত দেখতে চান।
মুক্ত বর্ষ উদযাপন করো। যে খামতিই থাক, সেই খামতিকে মুক্তি দাও, কেননা যতক্ষণ
পর্যন্ত মুক্তি না দিচ্ছো, ততক্ষণ মুক্তিধামে বাবার সঙ্গে যেতে পারবে না। তাহলে,
মুক্তি দেবে তোমরা? মুক্তিবর্ষ উদযাপন করবে? যে উদযাপন করবে সে এইভাবে হাত নাড়ো।
উদযাপন করবে? একে অপরকে দেখে নিয়েছো তো না, উদযাপন তো করবে তাই না! এটা ভালো। যদি
মুক্তিবর্ষ উদযাপন করো তবে বাপদাদা জহরত জড়িত থালায় অনেক অনেক অভিনন্দন, গ্রিটিংস,
শুভেচ্ছা দেবেন। এটা ভালো, নিজেকেও মুক্ত করো। নিজের ভাই-বোনেদেরও দুঃখ থেকে দূরে
করো। যারা অসহায় তাদের মন থেকে যেন এই খুশির আওয়াজ বের হয় - আমাদের বাবা এসে
গেছেন। ঠিক আছে। আচ্ছা।
চতুর্দিকের সকল হোলিয়েস্ট আত্মাকে, সদা নির্মান (নিরহংকার)
হয়ে নির্মাণ করে এমন সমীপ আত্মাদের, সদা নিজের পুরুষার্থের বিধিকে ফাস্ট, তীব্র করে
এমন সম্পন্ন হওয়া স্নেহী আত্মাদের, সদা নিজের সঞ্চয়ের খাতা বাড়িয়ে তীব্র
পুরুষার্থী হওয়া তীব্র বুদ্ধির বাচ্চাদের বিশাল বুদ্ধি হওয়ার শুভেচ্ছা আর হোলিরও
অর্থাৎ সেকেন্ডে হো লি, বিন্দু লাগানো বাচ্চাদের অনেক অনেক স্মরণের স্নেহ-সুমন। কোণে
কোণে থাকা বাচ্চাদের বাপদাদা বিশেষ স্মরণের স্নেহ-সুমন দিচ্ছেন। তিনি তোমাদের
পোতামেলও পেয়েছেন, স্মরণের স্নেহ-সুমন এর পত্রও পেয়েছেন, কার্ডও পেয়েছেন আর
হৃদয়ের সংকল্পও পৌঁছেছে, হৃদয়ের আত্মিক বার্তালাপও পৌঁছেছে, সেই সবকিছুর রিটার্নে
বাপদাদা পদ্ম গুন স্মরণের স্নেহ-সুমন দিচ্ছেন। স্মরণের স্নেহ-সুমনের সাথে সকল
বাচ্চাকে নমস্কার।
বরদান:-
এক বল এক ভরসার আধারে মায়াকে স্যারেন্ডার করিয়ে
শক্তিশালী ভব
এক বল এক ভরসা অর্থাৎ শক্তিশালী। যেখানে এক বল এক
ভরসা সেখানে কেউ টলাতে পারে না। তার আগেই মায়া মূর্ছিত হয়ে যায়, স্যারেন্ডারড হয়।
যখন মায়া স্যারেন্ডার করে তখন তোমরা সদা বিজয়ী। তো সদা যেন এই নেশা থাকে যে বিজয়
আমাদের জন্মসিদ্ধ অধিকার। এই অধিকার কেউ ছিনিয়ে নিতে পারে না। হৃদয়ে এই স্মৃতি
যেন ইমার্জ থাকে যে, আমরা কল্প কল্পের শক্তি এবং পান্ডব বিজয়ী হয়েছিলাম, হচ্ছি এবং
আবারও হবো।
স্লোগান:-
নতুন দুনিয়ার স্মৃতির দ্বারা সর্ব শক্তিকে আহ্বান
করো আর তীব্র গতিতে এগিয়ে যাও।
সূচনাঃ — আজ মাসের তৃতীয় রবিবার, অন্তর্রাষ্ট্রীয়
যোগ দিবস। সকল ব্রহ্মা বৎস সংগঠিত ভাবে সন্ধ্যা ৬:৩০ থেকে ৭:৩০ পর্যন্ত বিশেষ দয়ালু,
কৃপালু বাবার সাথে প্রত্যেক আত্মার প্রতি দয়া, কৃপার দৃষ্টি দিন, সবার থেকে
আশীর্বাদ নিন আর সবাইকে দিন।