21.02.2025 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা - পাস উইথ অনার হতে হলে বুদ্ধিযোগ যেন এতটুকুও অন্যদিকে বিচলিত না হয়, কেবল বাবার স্মরণ থাকে, দেহকে যারা স্মরণ করবে তারা উঁচু পদ পাবে না"

প্রশ্নঃ -
সবথেকে শ্রেষ্ঠ লক্ষ্য কোনটি?

উত্তরঃ  
আত্মা জীবিত অবস্থায় মৃত হয়ে কেবল বাবার হয়ে যাবে, অন্য কারোর কথা স্মরণ করবে না, দেহ-অভিমান একেবারে চলে যাবে - এটাই হলো সবথেকে শ্রেষ্ঠ লক্ষ্য। অবিরাম দেহী-অভিমানী অবস্থায় থাকাই হলো সর্বোত্তম লক্ষ্য। এর দ্বারা-ই কর্মাতীত অবস্থা প্রাপ্ত করবে।

গীতঃ-
তুমি প্রেমের সাগর…

ওম্ শান্তি ।
এই গীতও হলো রং। প্রেমের বদলে হওয়া উচিত জ্ঞানের সাগর । প্রেমের ঘটি বলে কিছু হয়না। গঙ্গা জলের ঘটি বলা হয়। ওগুলো হলো সব ভক্তিমার্গের গুনগান। এ'সব হলো রং ও' সব হলো রাইট। সর্বোপরি বাবা হলেন জ্ঞানের সাগর। বাচ্চাদের মধ্যে যদি এতটুকু জ্ঞানও থাকে তবে তারা অনেক ভালো পদ প্রাপ্ত করবে। বাচ্চারা জানে যে এখন আমরা অবশি চৈতন্য দিলওয়াড়া মন্দিরের মতো। ওই দিলোয়াড়া মন্দির তো হলো জড়। এ হলো চৈতন্য দিলওয়ারি মন্দির। এও ওয়ান্ডার, তাই না? যেখানে জড় স্মৃতিচিহ্ন রয়েছে, সেখানেই চৈতন্য রূপে তোমরা এসে বসে আছো। কিন্তু মানুষ তো কিছুই বোঝে না। ভবিষ্যতে বুঝবে যে বাস্তবে এটাই হলো গড ফাদারলী ইউনিভার্সিটি যেখানে স্বয়ং ভগবান এসে পড়ান। এর থেকে বড় ইউনিভার্সিটি কোথাও নেই। এটাও মানুষ বুঝবে যে বাস্তবে এটাই হলো চৈতন্য দিলওয়াড়া মন্দির। এই দিলওয়ারা মন্দির হলো তোমাদের অ্যাকুউরেট স্মরণিক। ওপরে ছাদে রয়েছে সূর্যবংশী এবং চন্দ্রবংশীরা আর নীচে আদিদেব, আদিদেবী এবং তাদের সন্তানেরা বসে আছে। এনার নাম হলো ব্রহ্মা। সরস্বতী হলেন ব্রহ্মার কন্যা। যখন প্রজাপিতা ব্রহ্মা আছেন, তাহলে নিশ্চয়ই গোপ-গোপীরাও থাকবে। ওটা হলো জড় চিত্র। যারা অতীত হয়ে গেছে, তাদের চিত্র বানিয়েছে। কেউ মারা গেলে সঙ্গে সঙ্গে তার ছবি তৈরি করা হয়। কিন্তু এদের পজিশন, বায়োগ্রাফি সম্বন্ধে তো কেউই কিছু জানে না। অক্যুপেশন যদি না লেখা থাকে তবে সেই ছবি কোনো কাজের নয়। লেখা থাকলেই বোঝা যাবে যে অমুক ব্যক্তি এই-এই কর্তব্য করেছেন। কিন্তু এতো যে দেবী-দেবতার মন্দির রয়েছে, ওদের অক্যুপেশন আর বায়োগ্রাফি সম্মন্ধে তো কেউই কিছু জানে না। সর্বশ্রেষ্ঠ শিববাবাকেও কেউ জানে না। অতীতে মুখ্য ব্যক্তি কে কে ছিলেন? সর্বশ্রেষ্ঠ হলেন ভগবান। যখন শিবরাত্রি পালন করা হয়, তাহলে নিশ্চয়ই তাঁর অবতরণ হয়েছিল। কিন্তু কখন তাঁর অবতরণ হয়েছিল, তিনি এসে কোন কর্তব্য করেছিলেন - এইগুলো কেউই জানে না। শিববাবার সাথে ব্রহ্মাও রয়েছেন। আদিদেব এবং আদিদেবী কারা? তাদের এতগুলো হাত কেন দেখানো হয়েছে? কারন ক্রমশঃ বৃদ্ধি হচ্ছে। প্রজাপিতা ব্রহ্মার দ্বারা অনেক বৃদ্ধি হয়ে যায়। প্রজাপিতা ব্রহ্মার তো একশোটা কিংবা হাজারটা হাত দেখানো হয়। বিষ্ণু কিংবা শঙ্করের ক্ষেত্রে এইরকম দেখানো হয় না। ব্রহ্মার ক্ষেত্রে কি বলা হয়? এই গোটা বংশই হলো ব্রহ্মার। এখানে কোনো হাতের ব্যাপার নেই। হয়তো মানুষ বলে যে ব্রহ্মার হাজারটা হাত, কিন্তু অর্থ কিছুই বোঝে না। এখন তোমরা বাস্তবে দেখতে পাচ্ছ যে ব্রহ্মার কতগুলো হাত রয়েছে। এই হাত গুলোকে বলা হয় সীমাহীন বাহু। প্রজাপিতা ব্রহ্মাকে সকলেই মানে, কিন্তু তাঁর অক্যুপেশন জানে না। আত্মার তো হাত থাকে না, হাত থাকে শরীরের। যেখানে এত কোটি কোটি ভাই রয়েছে, সেখানে তাঁর বাহু কতগুলো হওয়া উচিত? কিন্তু কেউ যখন ভালোভাবে জ্ঞান বুঝে যাবে, তখনই তাকে এই সমস্ত কথা বলা উচিত । প্রথম এবং মুখ্য বিষয় হলো - বাবা বলছেন, আমাকে এবং উত্তরাধিকারকে স্মরণ করো। তাঁকেই জ্ঞানের সাগর বলা হয়। কতো রকমের পয়েন্ট তিনি শোনান। সব পয়েন্ট তো মনে থাকে না। কেবল সার টুকুই বুদ্ধিতে রয়ে যায়। শেষে গিয়ে সবকিছুর সার হয়ে যায় - মন্মনাভব।

জ্ঞানের সাগর কৃষ্ণকে বলা যাবে না। কৃষ্ণ হলো রচনা। কেবল বাবা-ই হলেন রচয়িতা। বাবা-ই সবাইকে উত্তরাধিকার দেবেন, ঘরে নিয়ে যাবেন। শান্তিধাম হলো বাবা এবং সকল আত্মার নিবাসস্থান। বিষ্ণুপুরীকে বাবার নিবাসস্থান বলা যাবে না। মূলবতনকেই নিবাসস্থান বলা হয় যেখানে আত্মারা নিবাস করে। বিচক্ষণ বাচ্চারাই এইসব কথাগুলো ধারণ করতে পারবে। এতো জ্ঞান অন্য কারোর বুদ্ধিতে থাকবে না। এতো কিছু কাগজে লিখে রাখাও সম্ভব নয়। যদি এই মুরলী গুলোকে এক জায়গায় জমা করা হয় তবে এই হলের থেকেও বড় হয়ে যাবে। দুনিয়ার পড়াশুনাতেও কতো বই থাকে। একবার পরীক্ষাতে উত্তীর্ণ হয়ে গেলে সারাংশটা বুদ্ধিতে থেকে যায়। ব্যারিস্টারি পাস করলে এক জন্মের জন্য ক্ষণিকের সুখ প্রাপ্ত হয়। ওটা বিনাশী উপার্জন। তোমাদেরকে এই বাবা এখন ভবিষ্যতের জন্য অবিনাশী উপার্জন করাচ্ছেন। এছাড়া যত গুরু-গোসাই রয়েছে, তারা সকলেই বিনাশী উপার্জন করায়। যত বিনাশের সময় এগিয়ে আসছে, ওদের উপার্জন কমছে। তোমরা হয়তো বলবে যে ওদের উপার্জন তো বাড়ছে। কিন্তু না, এই সবকিছু বিনষ্ট হয়ে যাবে। আগে রাজাদের রাজত্ব ছিল। এখন তো সেটাও নেই। তোমাদের উপার্জন তো অনেক সময় ধরে সঞ্চিত থাকে। তোমরা জানো যে এটা পূর্ব-নির্মিত নাটক যেটাকে দুনিয়ার কেউই জানে না। তোমাদের মধ্যেও ক্রমানুসারে ধারণা হয়ে থাকে। কেউ কেউ একেবারে কিছুই বোঝাতে পারে না। অনেকে বলে - আমি আমার আত্মীয়-বন্ধুদেরকে বোঝাই। কিন্তু সেটা তো অল্প সময়ের ব্যাপার। অন্যান্য প্রদর্শনীতে বোঝাও না কেন? নিশ্চয়ই ঠিকঠাক ধারণ করতে পারোনি। নিজেকে বিশাল বড় কেউকেটা মনে করা উচিত নয়। যদি সেবা করার আগ্রহ থাকে, তবে যে ভালোভাবে বোঝাতে পারে তার কথা শুনতে হবে। বাবা তো উঁচু পদ দেওয়ার জন্যই এসেছেন। তাই পুরুষার্থও করতে হবে। কিন্তু ভাগ্যে না থাকলে শ্রীমৎ পালন করে না। তখন নিজের পদকেই খারাপ করে দেয়। ড্রামার প্ল্যান অনুসারে রাজধানী স্থাপন হচ্ছে। ওখানে তো সকল প্রকার মানুষ থাকবে। বাচ্চারা বুঝতে পারে যে কেউ ভালো প্রজা হবে, কেউ বা হয়তো অতটা ভালো হবে না। বাবা বলছেন - আমি তোমাদেরকে রাজযোগ শেখাতে এসেছি। দিলওয়াড়া মন্দিরে তো রাজাদের ছবি রয়েছে। যে পূজনীয় হয়, সে-ই আবার পূজারী হয়ে যায়। রাজা-রানীর পদ মর্যাদা তো অবশ্যই শ্রেষ্ঠ। তারপর যখন বামমার্গে চলে যায় তখনও রাজা কিংবা খুব ধনী ব্যক্তি থাকে। জগন্নাথের মন্দিরে সবার মুকুট দেখানো হয়েছে। প্রজাদের তো মুকুট থাকবে না। মুকুটধারী রাজাদেরকেও বিকারগ্রস্ত দেখানো হয়েছে। ওদের কাছে অনেক সুখ-সম্পত্তি থাকবে। হয়তো কারোর একটু কম থাকবে, কারোর একটু বেশি থাকবে। হীরের মহল আর রূপার মহলের মধ্যে তফাৎ তো আছেই। বাবা তো সর্বদাই ভালো পুরুষার্থ করে ভালো পদ পাওয়ার উপদেশ দেন। হয়তো রাজারা অধিক সুখ ভোগ করে, তবে ওখানে সকলেই সুখী থাকে। যেমন এখানে সকলেই দুঃখী। রোগ-অসুখ তো সকলেরই হয়। ওখানে সেইরকম সুখ আর সুখ। তবে পদ মর্যাদার ক্রম তো অবশ্যই থাকবে। বাবা তাই সর্বদাই বলেন - পুরুষার্থ করতে থাকো, গাফিলতি করো না। পুরুষার্থের দ্বারা-ই বোঝা যায় যে ড্রামা অনুসারে এর এতটাই সদগতি হবে।

নিজের সদগতির জন্যই শ্রীমৎ অনুসারে চলতে হবে। স্টুডেন্ট যদি টিচারের মতামত না শোনে তবে সেই স্টুডেন্ট কোনো কাজের নয়। সবকিছুই পুরুষার্থের ক্রম অনুসারে। সকলেই পুরুষার্থের ক্রম অনুসারে রয়েছে। *যদি কেউ বলে যে আমি এটা করতে পারব না, তবে সে শিখবে কিভাবে? শিক্ষা নিয়ে অন্যদের থেকে হুঁশিয়ার হতে হবে যাতে সবাই বলে যে ইনি খুব ভালো বোঝাতে পারেন। তবে সর্বশ্রেষ্ঠ লক্ষ্য হলো - জীবিত অবস্থায় কেবল বাবার হয়ে যাওয়া, কেবল বাবা ছাড়া অন্য কারোর কথা মনে আসবে না, দেহ-অভিমান চলে যাবে। সবকিছুই ভুলতে হবে। সম্পূর্ণ দেহী-অভিমানী অবস্থা হয়ে যাবে - এটাই হলো সর্বোত্তম লক্ষ্য। ওখানে তো আত্মারা অশরীরী অবস্থাতেই থাকবে। এখানে এসে দেহ ধারণ করে। এখন এই দেহতে থেকেও নিজেকে অশরীরী মনে করতে হবে। এটা খুবই কঠিন পরিশ্রম। নিজেকে আত্মা রূপে অনুভব করে কর্মাতীত অবস্থাতে থাকতে হবে। সাপেরও বুদ্ধি রয়েছে। সে তার পুরাতন খোলস ত্যাগ করে। সুতরাং তোমাদেরকে দেহ-অভিমান থেকে অনেক মুক্ত হতে হবে। মূল-বতনে তো তোমরা দেহী-অভিমানী অবস্থাতেই থাকো। এখানে দেহের মধ্যে থেকেও নিজেকে আত্মা রূপে অনুভব করতে হবে। দেহ-অভিমান যেন না থাকে। কত কঠিন পরীক্ষা। স্বয়ং ভগবানকে এসে শিক্ষা দিতে হয়। এইরকম তো কেউই বলবে না যে সকল দৈহিক সম্পর্ক ত্যাগ করে কেবল আমার হয়ে যাও, নিজেকে নিরাকার আত্মা রূপে অনুভব করো। কোনো বিষয়েই যেন অহং বোধ না থাকে। মায়া একে অপরের শরীরের প্রতি আকৃষ্ট করে। তাই বাবা বলছেন- এই সাকার শরীরটাকেও স্মরণ কোরো না। বাবা বলছেন - তোমাদেরকে তো নিজের শরীরটাকেও ভুলতে হবে। কেবল বাবাকেই স্মরণ করতে হবে। এটা খুবই পরিশ্রমের ব্যাপার। মায়া ভালো ভালো বাচ্চাকেও নাম-রূপের বন্ধনে বেঁধে ফেলে। এটা খুবই খারাপ সংস্কার। শরীরকে স্মরণ করা তো ভূতকে স্মরণ করার সমান। আমি কেবল শিববাবাকে স্মরণ করার উপদেশ দিচ্ছি, আর তোমরা ৫ ভূতকে স্মরণ করছো। দেহের প্রতি যেন একটুও আকর্ষণ না থাকে। ব্রাহ্মণীদের কাছ থেকে তো শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত। না কি তার নাম রূপে আকৃষ্ট হওয়া উচিত? দেহী-অভিমানী হওয়াটাই পরিশ্রমের। বাবার কাছে হয়তো অনেক বাচ্চাই চার্ট লিখে পাঠায়। কিন্তু বাবা সেইসব চার্ট বিশ্বাস করেন না। কেউ তো লেখে আমি কেবল শিববাবাকে ছাড়া অন্য কাউকে স্মরণ করিনা। কিন্তু বাবা জানেন বাচ্চারা একটু স্মরণ করে না। স্মরণ করা খুবই পরিশ্রমের ব্যাপার। কোথায় কোথায় বাচ্চারা ফেঁসে যায়। দেহধারীকে স্মরণ করা মানে ৫ ভূতকে স্মরণ করা। এটাকেই ভূত পূজা বলা হয়। ভূতকে স্মরণ করতে থাকে। এখানে তো তোমাদেরকে কেবল শিববাবাকে স্মরণ করতে হবে। পূজা আর্চার কোনো ব্যাপার নেই। ভক্তির চিহ্নই তো আর থাকবে না। সুতরাং চিত্রকে স্মরণ করার কি দরকার? ওটাও তো মাটির জিনিস। বাবা বলছেন - এটাই ড্রামাতে হওয়ার ছিল। এখন তোমাদেরকে পুনরায় পূজারী থেকে পূজনীয় বানাচ্ছি। কেবল বাবা ছাড়া অন্য কোনো শরীরকে স্মরণ করো না। আত্মা পবিত্র হয়ে গেলে পবিত্র শরীরও পাওয়া যাবে। এখন তো এই শরীরটা পবিত্র নয়। আত্মা যেভাবে সতোপ্রধান থেকে সতঃ, রজঃ এবং তমঃ অবস্থা প্রাপ্ত করেছে, সেইরকম শরীরও পেয়েছে। এখন তোমরা আত্মারা হয়তো পবিত্র হচ্ছো, কিন্তু পবিত্র শরীর এখন পাওয়া যাবে না। এ'সব হলো বোঝার বিষয়। তার বুদ্ধিতেই এইসব পয়েন্ট থাকবে যে ভালোভাবে বুঝে নিয়ে অন্যকেও বোঝাবে। আত্মাকেই তো সতোপ্রধান হতে হবে। সবথেকে পরিশ্রমের ব্যাপার হলো বাবাকে স্মরণ করা। কেউ কেউ তো একটুও স্মরণ করে না। পাস উইথ অনার হওয়ার জন্য বুদ্ধিকে একেবারে অবিচল রাখতে হবে। কেবল বাবা-ই যেন স্মরণে থাকে। কিন্তু বাচ্চাদের বুদ্ধিযোগ বিভিন্ন দিকে ধাবিত হয়। যত বেশি মানুষকে নিজের মতো বানাবে, তত ভালো পদ পাবে। যারা শরীরকে স্মরণ করে, তারা কখনোই ভালো পদ পেতে পারে না। এখানে তো পাস উইথ অনার হতে হবে। পরিশ্রম না করলে ভালো পদ কিভাবে পাওয়া যাবে? যারা শরীরকে স্মরণ করে, তারা পুরুষার্থ করতেই পারবে না। বাবা বলছেন - যারা ভালো পুরুষার্থ করছে, তাদেরকে ফলো করো। এটাও তো পুরুষার্থ তাই না!

এ হলো বড়োই বিচিত্র জ্ঞান । দুনিয়ার কেউই জানে না। কারোর বুদ্ধিতেই বসবে না যে, আত্মার চেঞ্জ কীভাবে হয়। এ সবই হলো গুপ্ত পরিশ্রম। বাবাও হলেন গুপ্ত। তোমরা কত সুন্দর ভাবে রাজত্ব পেয়ে যাও। কোনো লড়াই ঝগড়ার ব্যাপার নেই। কেবল জ্ঞান আর যোগ। আমরা কারোর সাথেই বিবাদ করি না। এখানে তো আত্মাকে পবিত্র বানানোর জন্য পরিশ্রম করতে হয়। আত্মা যত পতিত হয়েছে, তত সে পতিত শরীর পেয়েছে। এখন আত্মাকে পবিত্র হয়ে ফিরতে হবে। খুবই পরিশ্রমের ব্যাপার। কারা কারা পুরুষার্থ করে সেটা তো বাবা বুঝতেই পারেন। এটা হলো শিববাবার ভান্ডার। তোমরা শিববাবার ভান্ডারে সেবা করছো। সেবা না করলে অতি তুচ্ছ পদ পাবে। বাবার কাছে সেবা করার জন্য এসেও কোনো সেবা না করলে কি ভালো পদ পাওয়া সম্ভব? এখন রাজধানী স্থাপন হচ্ছে। এখানে তো দাস-দাসী সব তৈরি হবে। এখন তোমরা রাবনকে পরাজিত করছো। এছাড়া কোনো লড়াইয়ের ব্যাপার-ই নেই। এইসব অতি গুহ্য বিষয়গুলোই এখানে বোঝানো হয়। তোমরা যোগবলের দ্বারা বিশ্বের রাজত্ব প্রাপ্ত করছো। তোমরা জানো যে আমরা আসলে শান্তিধামের নিবাসী। বাচ্চারা, তোমাদের তো এখন সেই অসীম জাগতিক ঘরের কথাই স্মরণে আছে। এখানে তো আমরা আমাদের পার্ট প্লে করতে এসেছিলাম। এখন আবার নিজের ঘরে ফিরে যাচ্ছি। আত্মা কিভাবে ফেরত যায় সেটাও কেউ বোঝে না। ড্রামার প্ল্যান অনুসারে আত্মাদেরকে তো আসতেই হবে। আচ্ছা!

মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) কোনো দেহধারীর প্রতিই আকর্ষণ রাখা যাবে না। শরীরকে স্মরণ করা মানে ভূতকে স্মরণ করা। তাই কারোর নাম রূপে আটকে থাকা উচিত নয়। নিজের দেহকেও ভুলতে হবে।

২ ) ভবিষ্যতের জন্য অবিনাশী উপার্জন সঞ্চয় করতে হবে। বিচক্ষণ হয়ে জ্ঞানের পয়েন্টগুলো বুদ্ধিতে ধারণ করতে হবে। বাবা যাকিছু বুঝিয়েছেন, সেটা নিজে বুঝে অন্যকেও বোঝাতে হবে।

বরদান:-
কল্প কল্পের বিজয়ীর স্মৃতির আধারে মায়া শত্রুকে আহ্বানকারী মহাবীর বিজয়ী ভব

মহাবীর বিজয়ী বাচ্চারা পরিস্থিতিকে দেখে ঘাবড়ে যায় না কেননা ত্রিকালদর্শী হওয়ার কারণে জানে যে আমরা হলাম কল্প কল্পের বিজয়ী। মহাবীর কখনও এইরকম বলতে পারে না যে বাবা আমার কাছে মায়াকে পাঠিও না - কৃপা করো, আশীর্বাদ করো, শক্তি দাও, কি করবো কোনও রাস্তা বলে দাও... এটাও হল দুর্বলতা। মহাবীর তো শত্রুকে আহ্বান করে যে এসো আর আমি বিজয়ী হব।

স্লোগান:-
সময়ের সূচনা হল - সমান হও, সম্পন্ন হও।

অব্যক্ত ঈশারা :- একান্ত প্রিয় হও, একতা আর একাগ্রতাকে ধারণ করো

যেকোনও সিদ্ধির জন্য এক তো একান্ত, অন্যটি হল একাগ্রতা, দুটোরই বিধি দ্বারা সিদ্ধি প্রাপ্ত করে। যেরকম তোমাদের স্মরণিক চিত্র দ্বারা সিদ্ধি প্রাপ্তকারীরা বিশেষ দুটি বিষয়ে বিধি প্রয়োগ করে - একান্তবাসী আর একাগ্রতা। এই বিধি তোমরাও সাকারে প্রয়োগ করো। একাগ্রতা কম হওয়ার কারণেই সাধারণ সংকল্প বীজকে দুর্বল বানিয়ে দেয়, এইজন্য এই বিধি দ্বারা সিদ্ধি স্বরূপ হও।