21-07-2024 প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ 16-12-20 মধুবন


"সাক্ষাৎ ব্রহ্মা বাবার সমান কর্মযোগী হও, তখন সাক্ষাৎকার শুরু হবে"


আজ ব্রাহ্মণ সংসারের রচয়িতা বাপদাদা নিজের ব্রাহ্মণ সংসার দেখে আনন্দিত হচ্ছেন। কত ছোট সুন্দর সংসার। প্রত্যেক ব্রাহ্মণের ললাটে ভাগ্যের নক্ষত্র ঝলমল করছে। নম্বরক্রম হওয়া সত্ত্বেও ভগবানকে চেনার এবং তাঁর হওয়ার শ্রেষ্ঠ ভাগ্যের ঝলকানি রয়েছে প্রত্যেক নক্ষত্রের। যে বাবাকে ঋষি, মুনি, তপস্বী নেতি-নেতি (জানি না, জানি না) বলে চলে গেছে, সেই বাবাকে ব্রাহ্মণ সংসারের ভোলাভালা আত্মারা জেনে নিয়েছে, প্রাপ্ত করেছে। এই ভাগ্য কোন্ আত্মাদের প্রাপ্ত হয়? যারা সাধারণ আত্মা। বাবাও সাধারণ তনে আসেন, তো সাধারণ আত্মা বাচ্চারাই তাঁকে চেনে। আজকের এই সভাতে দেখো, কে বসে আছে? কোনো কোটি কোটিপতি বসে আছে? সাধারণ আত্মাদেরই গায়ন আছে। বাবাকে দীনের বন্ধু বলা হয়। কোটি কোটিপতি গাওয়া হয়নি। বুদ্ধিমানদের বুদ্ধি কোনো কোটি কোটিপতির বুদ্ধি কী পাল্টাতে পারেন না? কী এমন বড় ব্যাপার! কিন্তু ড্রামার খুব ভালো কল্যাণকারী নিয়ম তৈরি হয়ে আছে, পরমাত্ম-কার্যে বিন্দু বিন্দু দিয়ে জলাশয় তৈরি হয়। অনেক আত্মার ভবিষ্যৎ গঠন হওয়ার আছে। ১০-২০র নয়, অনেক আত্মাকে সফল হতে হবে। সেইজন্য গায়ন আছে - 'বিন্দু বিন্দুতে দিঘি।' তোমরা সবাই যত তন, মন, ধন সফল করতে থাকো ততটাই সফলতার নক্ষত্র হয়ে গেছ। সবাই সফলতার নক্ষত্র হয়েছো? হয়েছ নাকি এখন হবে, ভাবছো? ভেবো না। করবো, দেখবো, করতে তো হবেই... এই ভাবনাও সময় খুইয়ে দেওয়া। ভবিষ্যৎ আর বর্তমানের প্রাপ্তি খোয়ানো।

কোনো কোনো বাচ্চার একটি সঙ্কল্প বাপদাদার কাছে পৌঁছে যায়। যারা বাইরের তারা তো বেচারী (নিঃসহায়), কিন্তু ব্রাহ্মণ আত্মারা বেচারী নয়, তারা

সুবিচারক (সুচিন্তক), বিচক্ষণ। তবুও কখনো কখনো কোনো কোনো বাচ্চার মধ্যে একটা দুর্বল সঙ্কল্প ওঠে, বলবো, বলবো? সবাই হাত তুলছে, খুব ভালো। কখনো কখনো তারা ভাবে যে বিনাশ হবে কি হবে না! ৯৯ সালও শেষ হয়ে গেছে, ২০০০ও প্রায় শেষ। এখন কত সময় পর্যন্ত? বাপদাদা ভাবেন - হাসির বিষয়, বিনাশের ভাবনা অর্থাৎ বাবাকে বিদায় দেওয়া, কেননা বিনাশ হলে বাবা তো পরমধামে চলে যাবেন, তাই না! তবে কি সঙ্গমে থেকে ক্লান্ত হয়ে গেছ? হীরেতুল্য বলো আর গোল্ডেনকে বেশি স্মরণ করছো? হওয়ার তো আছে কিন্তু অপেক্ষা কেন করছো? কিছু বাচ্চা ভাবে তাদের সবকিছু সফল করবে, কিন্তু কাল পরশু যদি বিনাশ হয়ে যায় তবে আমাদের কোনো কিছুই তো সময়োপযোগী করা গেল না। আমাদের কোনো কিছু সেবাতে লাগলো না। করবো তো ভেবে করতে হবে। হিসেব করে করতে হবে, একটু একটু করে করতে হবে। এই সব সঙ্কল্প বাবার কাছে পৌঁছায়। কিন্তু মনে করো, আজ তুমি তন সেবাতে সমর্পণ করেছ, বিশ্ব পরিবর্তনের ভাইব্রেশনে নিরন্তর

মনকে নিযুক্ত করেছো, তোমাদের যা কিছু ধন আছে তা' প্রাপ্তির তুলনায় কিছুই নয় । কিন্তু যা আছে আজ সেটা সফল করেছ আর কাল যদি বিনাশ হয়ে যায় তাহলে তোমার ধন সফল হলো নাকি ব্যর্থ গেল? এটা ভাবো! সেবাতে তো লাগলো না, তবে কী সফল হলো? তোমরা কা'র জন্য সফল করো? বাপদাদার জন্য সফল করেছ, তাই না? তাহলে, বাপদাদা তো অবিনাশী, তিনি তো কখনো বিনাশ হন না! অবিনাশী খাতায়, অবিনাশী বাপদাদার কাছে জমা করেছ, এমনকি যদি এক ঘণ্টা আগে জমা করেছ, তাহলে অবিনাশী বাবার কাছে তোমার খাতা একের পদ্মগুন জমা হয়ে গেছে। বাবা বেঁধে আছেন এক এর পদ্মগুন দেওয়ার জন্য। বাবা তো চলে যাচ্ছেন না, তাই না! এটা পুরানো সৃষ্টি, বিনাশ হবে তো না! সেইজন্য হৃদয় থেকে করো। যদি বাধ্যবাধকতায় করো, কারও দেখাদেখি করো তাহলে তোমাদের কোনোকিছুর পূর্ণ রিটার্ন প্রাপ্ত হয় না। অবশ্যই প্রাপ্ত হয় কেননা দাতাকে

দিয়েছ, কিন্তু পুরো প্রাপ্তি হয় না। সুতরাং এটা ভেবো না - আচ্ছা, বিনাশ তো এখন ২০০১ পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না, এখনো তো প্রোগ্রাম তৈরি হচ্ছে, গৃহ নির্মাণ হচ্ছে। বড় বড়ো প্ল্যান তৈরি হচ্ছে, অন্ততঃ ২০০১ পর্যন্ত কিছু দেখা যাচ্ছে না, দেখা যাবেও না। কখনও এই বিষয়গুলোকে নিজের আধার বানিয়ে অমনোযোগী হয়ো না। অকস্মাৎ হওয়ার আছে। আজ এখানে বসে আছো, এক ঘণ্টা বাদেও হতে পারে। হবে না, ভয় পেও না যে, জানি না এক ঘণ্টা পর না জানি কী হবে! এটা সম্ভব। এতটা এভাররেডি থাকতেই হবে। ভেবো না যে তোমাদের সময় আছে, এটা ভেবো না। সময়ের অপেক্ষা ক'রো না। সময় তোমাদের রচনা, তোমরা মাস্টার রচয়িতা। রচয়িতা রচনার অধীন হয় না। সময়-রচনা তোমাদের অর্ডারে চলবে। তোমরা সময়ের অপেক্ষা ক'রো না, কিন্তু সময় এখন তোমাদের অপেক্ষা করছে। কিছু বাচ্চা ভাবে, ৬ মাসের জন্য বাপদাদা বলেছেন, তাহলে ৬ মাস তো হবেই। হবেই তো না! কিন্তু বাপদাদা বলেন সীমাবদ্ধ দুনিয়ার এই বিষয়ের আধার নিও না, এভাররেডি থাকো। নিরাধার, এক সেকেন্ডে জীবনমুক্তি। তোমরা অন্যদেরকে চ্যালেঞ্জ করে থাকো, এক সেকেন্ডে তাদের জীবনমুক্তির উত্তরাধিকার নিতে। তাহলে কী তোমরা এক সেকেন্ডে নিজেকে জীবনমুক্ত বানাতে পারো না? সুতরাং 'সময়ের অপেক্ষা নয়, সম্পন্ন হওয়ার ব্যবস্থা করো'।

বাচ্চাদের খেলা দেখে বাপদাদার হাসিও আসে। কোন খেলাতে হাসি আসে? বলবো কী? আজ মুরলী শোনাচ্ছি না, সমাচার শোনাচ্ছি। এখনও পর্যন্ত অনেক বাচ্চার খেলনা দিয়ে খেলা করতে খুব ভালো লাগে। তুচ্ছ বিষয়ের সাথে খেলা, তুচ্ছ বিষয়কে আপন করে নেওয়া, এটা সময় খোয়ানো। এগুলো সাইডসীনস্। ভিন্ন ভিন্ন সংস্কারের বিষয়গুলো কিংবা আচরণ এটা সম্পূর্ণ লক্ষ্যের মাঝখানে সাইডসীনস্। এতে থেমে যাওয়া অর্থাৎ সেসব সম্পর্কে ভাবা, প্রভাবে আসা, সময় খুইয়ে দেওয়া, উৎসাহের সাথে শোনা এবং শোনানো, বায়ুমন্ডল বানানো... এসব হলো থেমে থাকা, এর ফলে সম্পূর্ণতার লক্ষ্য থেকে তোমরা দূরে হয়ে যাও। তোমরা অনেক পরিশ্রম করো, তোমাদের অনেক আকাঙ্ক্ষা "বাবা সমান হতেই হবে", শুভ সঙ্কল্প, শুভ ইচ্ছা আছে কিন্তু পরিশ্রম করা সত্ত্বেও নিশ্চলতা এসে যায়। তোমাদের দুটো কান আছে, দুটো চোখ আছে, মুখ আছে, সুতরাং তোমরা সবকিছু দেখতেও পারবে, শুনতেও পারবে আর সবকিছু বিষয়ে বলতেও পারবে, কিন্তু বাবার বলা বহু পুরানো স্লোগান স্মরণে রাখো - 'দেখেও দেখো না, শুনেও শুনো না। শুনে চিন্তা ক'রো না, শুনে নিজের মধ্যে সমাহিত করে নাও, ছড়িয়ে দিও না।' এই পুরানো স্লোগান স্মরণে রাখা অবশ্যাক, কেননা দিন দিন যেভাবে সকলের পুরানো শরীরের যা কিছু হিসেব চুকে যাচ্ছে, ঠিক সেভাবেই পুরানো সংস্কারও, পুরানো অসুখও সব বের হয়ে শেষ হওয়ার আছে, সেইজন্য ঘাবড়ে যেও না, জানি না এখন তো পরিস্থিতি আরও বাড়ছে, আগে তো ছিল না! যা ছিল না, সেটাও এখন বের হচ্ছে, বের হওয়ার আছে। তোমাদের সমাহিত করার শক্তি, সহন করার শক্তি, গুটিয়ে নেওয়ার শক্তি, নির্ণয় করার শক্তির পেপার আছে। ১০ বছর আগের পেপার আসবে কী? বি. এ. ক্লাসের পেপার এম. এ. ক্লাসে আসবে কী? সুতরাং কী হচ্ছে ভেবে ঘাবড়ে যেও না। এটা হচ্ছে, এটা হচ্ছে... খেলা দেখো। পেপার পাস হয়ে যাও, পাস উইথ অনার হয়ে যাও।

বাপদাদা আগেও বলেছেন যে, পাস হওয়ার সবচাইতে সহজ সাধন হলো বাপদাদার কাছে থাকা, তোমাদের অ-কাজের যেসব দৃশ্যমান বস্তু, সেগুলোকে পাস হয়ে যেতে দাও। 'পাশে থাকো, পাস করো, পাশ হয়ে যাও' । কঠিন কী? টিচার্স শোনাও, যারা মধুবনের শোনাও। যারা মধুবনের হাত উঠাও। মধুবনের যারা হুঁশিয়ার, সামনে এসে যায়, যদিও বা আসতেই পারো। বাপদাদা খুশি হন। নিজেদের অধিকার নেয়, তাই না? সেটা ভালো, বাপদাদা অখুশি নন, যদিও বা তোমরা সামনে বসতে পারো। তোমরা মধুবনে থাকো কিছু তো খাতির হওয়া চাই, তাই না! কিন্তু পাস শব্দ স্মরণে রেখো। মধুবনে নতুন নতুন ব্যাপার হয় তো না, ডাকাতও আসে। অনেক নতুন নতুন ব্যাপার হয়, এখন বাবা জেনারেল-এ কী শুনাবেন, কিছু গুপ্ত রাখেন, কিন্তু যারা মধুবনের তারা জানে। মনোরঞ্জন করো, বিভ্রান্ত হয়ো না। হয় বিভ্রান্তি, নয়তো মনোরঞ্জন মনে করে এটা পাস করে যাও। তাহলে, বিভ্রান্ত হওয়া ভালো নাকি পাস করে আনন্দে থাকা ভালো? পাস করতে হবে তো না! পাস হতে হবে, তাই না! সুতরাং পাস করো। বড় ব্যাপার কী? কোনো বড় ব্যাপার নয়। বিষয়কে বড় করা অথবা ছোট করা, নিজের বুদ্ধির উপরে নির্ভর করে। যারা বিষয়কে বড় করে দেয়, তাদের জন্য অজ্ঞানকালেও বলা হয়ে থাকে যে এরা রস্যিকে সাপ বানিয়ে দেয় । সিন্ধি ভাষায় বলে "নোরি কো নাগ" (দড়িকে সাপ ভেবে বসে) বানায়। এইভাবে খেলা ক'রো না। এখন এই খেলা শেষ।

আজ বিশেষ সমাচার শুনিয়েছেন তো না, বাপদাদা এখন এক সহজ পুরুষার্থ সম্বন্ধে শোনাতে চলেছেন, কঠিন নয়। সবার এই সঙ্কল্প তো আছেই যে 'বাবা সমান হতেই হবে।' হতেই হবে, পাক্কা তো না! ফরেনার্স! হতেই হবে, তাই না? টিচার্স! হতে হবে না? এত টিচার্স এসেছে! বাঃ! চমৎকারিত্ব টিচারদের। বাপদাদা আজ টিচারদের খুশখবর শুনেছেন। কোন্ খুশির খবর বলো। টিচারদের আজ গোল্ডেন মেডেল (ব্যাজ) প্রাপ্ত হয়েছে। যাদের গোল্ডেন মেডেল প্রাপ্ত হয়েছে, হাত উঠাও। পান্ডবদেরও প্রাপ্ত হয়েছে? বাবার হমজিন্স তারা, সুতরাং বাকি থাকা উচিত নয়। পান্ডব ব্রহ্মা বাবার হমজিন্স। (তাদের অন্য রকমের গোল্ডেন মেডেল প্রাপ্ত হয়েছে) পান্ডবদের গোল্ডেন মেডেল প্রাপ্ত হয়েছে। যাদের গোল্ডেন মেডেল প্রাপ্ত হয়েছে তাদেরকে বাপদাদার কোটি কোটি বার অভিনন্দন, অভিনন্দন, অভিনন্দন।

দেশ-বিদেশের যারা বাবাকে শুনছ এবং গোল্ডেন মেডেল প্রাপ্ত হয়েছে, তারা সবাই যেন এটা মনে করে, বাপদাদা আমাদেরও অভিনন্দন জানিয়েছেন। তোমরা পান্ডব হও বা শক্তি, কোনও বিশেষ কার্যের যারা নিমিত্ত হও, এমনকি পরিবারে যারা থাকে তাদেরও কোনও বিশেষত্বের আধারে বিশেষ এই দাদিরা গোল্ডেন মেডেল দেয়। তো যারই যেটা বিশেষত্ব, তার আধারে হয় তা' স্যারেন্ডারের আধারে, অথবা কোনও সেবাতে বিশেষভাবে যারা অগ্রচালিত তাদের দাদিদের দ্বারাও গোল্ডেন মেডেল প্রাপ্ত হয়েছে,

তো যারা দূরে বসে শুনছ তাদেরও অনেক অনেক অভিনন্দন। তোমরা সবাই দূরে বসে মুরলী শুনছো তাদের জন্য, গোল্ডেন মেডেল প্রাপ্তকারীদের জন্য এক হাতের তালি বাজাও, তারা তোমাদের তালি দেখছে। তারাও হাসছে, খুশি হচ্ছে।

বাপদাদা সহজ পুরুষার্থের সম্বন্ধে শোনাচ্ছিলেন - এখন তো সময় অকস্মাৎ হওয়ার আছে, এক ঘন্টা আগেও বাপদাদা অ্যানাউন্স করবেন না, করবেন না, করবেন না! নম্বর কীভাবে হবে? যদি আচমকা না হবে তবে পেপার কীভাবে হয়? পাস উইথ অনারের সার্টিফিকেট, ফাইনাল সার্টিফিকেট তো অকস্মাৎ হওয়ারই আছে। সেইজন্য দাদিদের এক সঙ্কল্প বাপদাদার কাছে পৌঁছেছে। দাদিরা চান যে এখন বাপদাদা যেন সাক্ষাৎকারের চাবি খোলেন, এটা তাদের সঙ্কল্প। সবাই তোমরা চাও সেটা? বাপদাদা চাবি খুলবেন নাকি তোমরা নিমিত্ত হবে? আচ্ছা, বাপদাদা খুলবেন, ঠিক আছে। বাপদাদা হাঁ জী করছেন, (তালি বাজিয়ে দিয়েছে) আগে পুরোটা শোনো। বাপদাদার চাবি খুলতে কী দেরি আছে, কিন্তু করাবেন কা'র দ্বারা? প্রত্যক্ষ কাকে করতে হবে? বাচ্চাদেরকে নাকি বাবাকে? বাবাকেও বাচ্চাদের দ্বারাই করতে হবে, কারণ জ্যোতিবিন্দুর সাক্ষাৎকার যদি হয়েও যায় তো অনেকেই তো অসহায়... অসহায় তো না! তখন তারা বুঝবেই না এটা কি! অন্তে শক্তি এবং পান্ডব বাচ্চাদের দ্বারা বাবার প্রত্যক্ষ হওয়ার আছে। তাইতো বাপদাদা এটাই বলছেন, যখন সব বাচ্চার একই সঙ্কল্প যে বাবা সমান হতেই হবে, তা'তে তো দুটো বিচার নেই না! একই বিচার, তাই না। অতএব, ব্রহ্মা বাবাকে ফলো করো। অশরীরী, বিন্দু অটোমেটিক্যালি হয়ে যাবে। ব্রহ্মাবাবার প্রতি সবার ভালোবাসা আছে তো না! দেখা গেছে সবচাইতে বেশি, বাস্তবে তো সবারই আছে, কিন্তু ফরেনারদের ব্রহ্মাবাবার প্রতি অনেক ভালোবাসা আছে। এই নেত্র দ্বারা দেখেনি, কিন্তু অনুভবের নেত্র দ্বারা ফরেনারদের মেজরিটি ব্রহ্মাবাবাকে দেখেছে এবং তাদের অনেক ভালোবাসা আছে। এমন তো ভারতের গোপীকা এবং গোপেরাও রয়েছে, তবুও বাপদাদা কখনো কখনো ফরেনারদের অনুভবের কাহিনী শোনেন, ভারতবাসী নিজেদের একটু গুপ্ত রাখে, তারা (ফরেনার্স) তাদের কাহিনী ব্রহ্মা বাবাকে শোনায় তো তাদের কাহিনী বাপদাদাও শোনেন আর অন্যদেরও শোনান।। অভিনন্দন ফরেনারদের। লন্ডন, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, আফ্রিকা, এশিয়া, রাশিয়া, জার্মানি... উদ্দেশ্য তো চতুর্দিকের ফরেনারদের যারা দূরে বসেও শুনছে, তাদেরকেও বাপদাদা অভিনন্দন জানাচ্ছেন, বিশেষভাবে ব্রহ্মাবাবা অভিনন্দন জানাচ্ছেন। যারা ভারতের তাদেরটা খানিক গুপ্ত আছে, তারা এত

বহুখ্যাত করতে পারে না, গুপ্ত রাখে। এখন প্রত্যক্ষ করাও। তাছাড়া, ভারতেও অনেক ভালো ভালো বাচ্চা আছে, এমন সব গোপীকা আছে, যদি তাদের অনুভব আজকালকার প্রাইম মিনিস্টার, প্রেসিডেন্ট শোনেন তো তাদের চোখেও জল এসে যাবে। এমন অনুভব রয়েছে, কিন্তু গুপ্ত রাখে, তারা তেমন ব্যাপকভাবে বলে না, চান্সও কম পায়। তো বাপদাদা এটা বলছেন যে ব্রহ্মা বাবার প্রতি সবার প্রীতি-ভালবাসা তো আছে, সেইজন্য তোমরা নিজেদের কী বলো? ব্রহ্মাকুমারী নাকি শিবকুমারী? ব্রহ্মাকুমারী বলে থাকো তো না, তাহলে ব্রহ্মাবাবার প্রতি ভালোবাসা তো আছেই, তাই না। তো ঠিক আছে, অশরীরী হওয়াতে পরিশ্রম একটু করতেও হয়, কিন্তু ব্রাহ্মাবাবা এখন কী রূপে আছেন? কী রূপে আছেন বলো! (ফরিস্তা রূপে) সুতরাং ব্রহ্মার সাথে ভালোবাসা অর্থাৎ ফরিস্তা রূপের সাথে ভালোবাসা। ঠিক আছে, বিন্দু হওয়া কঠিন লাগে, ফরিস্তা হওয়া তো তার থেকে সহজ, তাই না! শোনাও, বিন্দু রূপ থেকে ফরিস্তা রূপ সহজ তো না! তোমরা অ্যাকাউন্টের কাজ করতে করতে বিন্দু হতে পারো? ফরিস্তা হতে পারো তো না! বিন্দু রূপে কর্ম করাকালীন কখনো কখনো ব্যক্ত শরীরে আসতে যেতে হয়, কিন্তু বাপদাদা দেখেছেন যে সায়েন্সের লোকেরা এক লাইটের (বিদ্যুৎ) আধারে রোবট বানিয়েছে, শুনেছো তো না! ঠিক আছে, দেখনি, শুনেছো তো! মাতারা শুনেছো? তোমাদের চিত্র দেখিয়ে দেবো। তারা লাইটের আধারে রোবট বানিয়েছে আর সে - সব কাজ করে। তাছাড়া, ফাস্ট গতিতে করে লাইটের আধারে এবং সায়েন্সের প্রত্যক্ষ প্রমাণ রয়েছে। তো বাপদাদা বলেন তোমরা সাইলেন্সের শক্তিতে কী সাইলেন্সের লাইট দ্বারা কর্ম করতে পারো না? পারো না তোমরা? ইঞ্জিনিয়ার এবং সায়েন্সের লোকেরা বসে আছ তো না! তো তোমরাও এক অধ্যাত্ম রোবটের স্থিতি তৈরি করো। যাকে বলা হবে আধ্যাত্মিক কর্মযোগী, ফরিস্তা কর্মযোগী। প্রথমে তোমাদের তৈরি হতে হবে। তোমরা ইঞ্জিনিয়াররা এবং সায়েন্টিস্টরা প্রথমে অনুভব করো। করবে? করতে পারো? আচ্ছা, এইরকম প্ল্যান বানাও। বাপদাদা এমন সচল রূহানী কর্মযোগী ফরিস্তা দেখতে চান। অমৃতবেলায় ওঠো, বাপদাদার সাথে মিলন উদযাপন করো, আত্মিক বার্তালাপ করো, বাবার থেকে বরদান নাও। যা করতে হবে তা' করো। কিন্তু বাপদাদার সাথে রোজ অমৃতবেলায় 'কর্মযোগী ফরিস্তা ভব'র বরদান নিয়ে তারপরে কাজেকর্মে যাও। এটা হওয়া সম্ভব?

এই নতুন বছরে লক্ষ্য রাখো - সংস্কার পরিবর্তনের, নিজেরও আর সহযোগ দ্বারা অন্যদেরও। কেউ দুর্বল যদি হয় তাহলে সহযোগ দাও, না বর্ণন করো, না বাতাবরণ বানাও। সহযোগ দাও। এই বছরের টপিক "সংস্কার পরিবর্তন।" ফরিস্তা সংস্কার, ব্রহ্মাবাবা সমান সংস্কার। তো সহজ পুরুষার্থ নাকি কঠিন? অল্প অল্প কঠিন হয়? কখনও কোনো বিষয় কঠিন হয় না, নিজস্ব দুর্বলতা কঠিন বানায়। সেইজন্য বাপদাদা বলেন, "হে মাস্টার সর্বশক্তিমান বাচ্চারা, এখন শক্তির বায়ুমন্ডল ছড়িয়ে দাও।" এখন বায়ুমন্ডলের তোমাদেরকে খুব খুব খুব আবশ্যক। যেমন আজকাল বিশ্বে পল্যুশনের প্রবলেম আছে, তেমনই বিশ্বে এক মুহূর্ত মনে শান্তি সুখের বায়ুমন্ডলের আবশ্যকতা রয়েছে, কারণ মনের পলিউশন অনেক, হাওয়ার পলিউশনের

থেকেও বেশি। আচ্ছা।

বাপদাদার সমান হতেই হবে - এই লক্ষ্য রাখা চতুর্দিকের

নিশ্চয় বুদ্ধি বিজয়ী আত্মাদের, সদা পুরানো সংসার এবং পুরানো সংস্কারকে দৃঢ় সঙ্কল্প দ্বারা পরিবর্তনকারী মাস্টার সর্বশক্তিমান আত্মাদের, যারা সদা যে কোনও কারণে সরকমস্ট্যান্সে স্বভাব- সংস্কারে দুর্বল সাথী আত্মাদের সহযোগ দেয়, কারণ দেখে না, নিবারণ করে এমন সাহসী আত্মাদের, সদা ব্রহ্মা বাবার স্নেহের রিটার্ন দেওয়া কর্মযোগী ফরিস্তা আত্মাদের বাপদাদার স্মরণ-স্নেহ আর নমস্কার।

বরদান:-
শুভচিন্তক স্থিতির দ্বারা সকলের সহযোগ প্রাপ্ত করে সকলের স্নেহী ভব

শুভচিন্তক আত্মাদের প্রতি প্রত্যেকের হৃদয়ে স্নেহ উৎপন্ন হয় এবং সেই স্নেহই সহযোগী বানায়। যেখানে স্নেহ থাকে, সেখানে সময়, সম্পত্তি, সহযোগ সদা অর্পণ করার জন্য প্রস্তুত হয়ে যায়। সুতরাং শুভচিন্তক, স্নেহী বানাবে আর স্নেহ সব রকমের সহযোগে প্রিয় বানাবে। সেইজন্য সদা শুভচিন্তনে সম্পন্ন থাকো আর শুভচিন্তক হয়ে সকলকে স্নেহী, সহযোগী বানাও।

স্লোগান:-
এই সময় যদি দাতা হও তাহলে তোমাদের রাজ্যে জন্মের পর জন্ম সব আত্মা পরিপূর্ণ থাকবে।