21.09.2024 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা - বাবা কল্প-কল্প এসে বাচ্চাদের অর্থাৎ তোমাদের নিজের পরিচয় দেন, তোমাদেরও সবাইকে বাবার যথার্থ পরিচয় দিতে হবে"

প্রশ্নঃ -
বাচ্চাদের কোন্ প্রশ্নটি শুনে বাবা আশ্চর্য হয়ে যান?

উত্তরঃ  
বাচ্চারা বলে - বাবা তোমার পরিচয় দেওয়া খুব মুশকিল। আমরা তোমার পরিচয় দেবো কিভাবে? এই প্রশ্ন শুনে বাবার ওয়ান্ডার অনুভব হয়। যখন বাবা তোমাদের নিজের পরিচয় দিয়েছেন তখন তোমরাও অন্যদের দিতে পারো, এতে অসুবিধা হওয়ার কোনো কথাই নেই। এ তো খুব সহজ। আমরা সবাই আত্মারা নিরাকার তাই আত্মাদের বাবাও নিরাকার হবেন ।

ওম্ শান্তি ।
মিষ্টি-মিষ্টি আত্মারূপী (রূহানী) বাচ্চারা বোঝে যে আমরা অসীম জগতের বাবার কাছে বসে আছি। এই কথাও জানে অসীম জগতের বাবা এই রথেই আসেন। যখন বাপদাদা বলা হয়, এই কথা তো জানা আছে যে শিববাবা আছেন এবং এই রথেই বসে আছেন। নিজের পরিচয় দিচ্ছেন। বাচ্চারা জানে তিনি হলেন বাবা, বাবা মত দেন যে রূহানী পিতাকে স্মরণ করো তো পাপ ভস্ম হয়ে যাবে, যাকে যোগ অগ্নি বলা হয়। এখন তোমরা বাবাকে তো জেনে গেছো। তাহলে কখনও এমন বলবে নাকি যে বাবার পরিচয় কিভাবে দেবো । তোমরা যদি অসীম জগতের পিতার পরিচয় জানো তাহলে অবশ্যই দিতে পারবে। পরিচয় দেবে কিভাবে, এই প্রশ্ন উঠতে পারে না। যেমন তোমরা বাবাকে জেনেছো, তেমনই তোমরা বলতে পারো যে আমরা হলাম আত্মা আমাদের পিতা হলেন একজন-ই, এতে কনফিউজড হবে কেন ! কেউ কেউ বলে বাবা আপনার পরিচয় দেওয়া খুব মুশকিল কাজ। আরে, বাবার পরিচয় দেওয়া - এতে অসুবিধা হওয়ার কোনও কথাই নেই। জন্তুরাও ইঙ্গিতে বুঝে নেয় আমি অমুকের সন্তান। তোমরাও জানো যে আমরা হলাম আত্মা, তিনি আমাদের পিতা। আমরা আত্মারা এখন এই শরীরে প্রবিষ্ট রয়েছি। যেমন বাবা বুঝিয়েছেন আত্মা হলো অকাল মূর্তি । এমন নয় যে আত্মার কোনো রূপ নেই। বাচ্চারা চিনেছে - খুব সিম্পল এই কথা। আত্মাদের একজনই নিরাকার পিতা আছেন। আমরা সব আত্মারা হলাম ভাই-ভাই। এক পিতার সন্তান। বাবার কাছে উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয়। এই কথাও জানে এমন কোনও বাচ্চা দুনিয়ায় নেই যে বাবা ও তাঁর রচনার কথা জানে না বাবার কাছে কি সম্পত্তি রয়েছে, তারা সব জানে। এটা হলই আত্মা ও পরমাত্মার মেলা। এ হলো কল্যাণকারী মেলা। বাবা হলেন কল্যাণকারী। অনেক কল্যাণ করেন। বাবার পরিচয় পেয়ে তোমরা বুঝতে পারো - অসীম জগতের বাবার কাছ থেকে আমরা অসীমিত উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করি। তারা সন্ন্যাসী গুরু, তাদের শিষ্যদের গুরুর উত্তরাধিকার নিয়ে কিছুই জ্ঞান থাকে না। গুরুর কাছে কি সম্পত্তি আছে, এই কথা শিষ্যরা জানে না। তোমাদের বুদ্ধিতে তো আছে - তিনি হলেন শিববাবা, সম্পত্তিও বাবার কাছে থাকে। বাচ্চারা জানে অসীমের পিতার কাছে সম্পত্তি আছে - বিশ্বের বাদশাহী স্বর্গ। বাচ্চারা, এই কথা তোমরা ছাড়া আর কারো বুদ্ধিতে নেই। লৌকিক পিতার কাছে কি সম্পত্তি আছে, সেসব তার সন্তানরা-ই জানে। এখন তোমরা বলবে আমরা জীবিত অবস্থায় পারলৌকিক বাবার আপন হয়েছি। তাঁর কাছে কি উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয়, সেসবও জানো। আমরা প্রথমে শূদ্র কুলে ছিলাম, এখন ব্রাহ্মণ কুলে এসেছি। এই নলেজ আছে যে বাবা এই ব্রহ্মা দেহে আসেন, তাঁকে প্রজাপিতা ব্রহ্মা বলা হয়। তিনি (শিব) তো হলেন সব আত্মাদের পিতা। এনাকে (প্রজাপিতা ব্রহ্মা কে) গ্রেট-গ্রেট গ্র্যান্ড ফাদার বলা হয়। এখন আমরা এনার সন্তান হয়েছি। শিববাবার জন্য তো বলা হয় তিনি সর্বদা হাজির রয়েছেন। তিনি হলেন সর্ব জ্ঞানী। এই কথাও তোমরা বুঝেছো যে তিনি কিভাবে রচনার আদি-মধ্য-অন্তের নলেজ প্রদান করেন। তিনি হলেন সব আত্মাদের পিতা, তাঁর উদ্দেশ্যে নাম-রূপহীন বলা তো মিথ্যা । তাঁর নাম-রূপও মনে আছে। রাত্রিও পালন করা হয়, জয়ন্তী তো মানুষের হয়। শিববাবার রাত্রি বলা হয়। বাচ্চারা বোঝে রাত্রি কাকে বলে। রাতে ঘোর অন্ধকার থাকে। অজ্ঞানতার অন্ধকার, তাই না। জ্ঞান সূর্য প্রকট হলে অজ্ঞান অন্ধকার বিনাশ হয় - এখনও এই গান গাওয়া হয় কিন্তু অর্থ কিছুই বোঝে না। সূর্য কে, কবে প্রকট হয়েছে, কিছুই বোঝে না। বাবা বোঝান জ্ঞান সূর্যকে জ্ঞান সাগরও বলা হয়। অসীম জগতের পিতা হলেন জ্ঞানের সাগর। সন্ন্যাসী, গুরু, গোঁসাই ইত্যাদি নিজেদের শাস্ত্রের অথরিটি ভাবে, সেই সব হলো ভক্তি। অনেক বেদ-শাস্ত্র ইত্যাদি পড়ে বিদ্বান হয়। অতএব বাবা বসে আত্মারূপী বাচ্চাদের বোঝান, একেই বলা হয় আত্মা ও পরমাত্মার মেলা। তোমরা বুঝতে পারো যে বাবা এই রথে উপস্থিত আছেন। এই মিলনকেই মেলা বলা হয়। যখন আমরা ঘরে ফিরে যাই সেও হল মেলা। এখানে বাবা স্বয়ং বসে পড়াচ্ছেন। তিনি হলেন পিতাও, টিচারও। এই একটি পয়েন্ট ভালো রীতি ধারণ করো, ভুলে যেও না। এবার বাবা তো হলেন নিরাকার, তাঁর নিজস্ব শরীর নেই তাই শরীর লোনে নিতে হয়। তাই নিজেই বলেন আমি প্রকৃতির আধার নিই। তা নাহলে কথা বলবো কিভাবে? শরীর ব্যতীত তো কথা বলা যাবে না। অতএব বাবা এই শরীরে প্রবেশ করে আসেন, এনার নাম রাখা হয় ব্রহ্মা। আমরাও শূদ্র থেকে ব্রাহ্মণে পরিণত হয়েছি তো নাম পরিবর্তন হওয়া উচিত। নাম তো তোমাদের রাখা হয়েছিল। কিন্তু তাতেও দেখো এখন অনেকেই নেই তাই ব্রাহ্মণদের মালা থাকে না। ভক্ত মালা ও রুদ্র মালার গায়ন আছে। ব্রাহ্মণদের মালা থাকে না। বিষ্ণুর মালা তো আছেই। প্রথম নম্বরে মালার দানা কে? বলা হবে যুগল তাই সূক্ষ্ম বতনে যুগল দেখানো হয়েছে। বিষ্ণুর রূপও চার ভূজাধারী দেখানো হয়। দুটি ভুজ লক্ষ্মীর, দুটি ভুজ নারায়ণের।

বাবা বোঝান আমি হলাম ধোপাও। আমি যোগ বলের দ্বারা তোমাদের অর্থাৎ আত্মাদের শুদ্ধ করি তবুও তোমরা বিকার গ্রস্ত হয়ে নিজের শৃঙ্গার নষ্ট করো। বাবা আসেন সবাইকে শুদ্ধ করতে। এসে আত্মাদের শেখান। সুতরাং শেখানোর জন্য অবশ্যই এখানে থাকা উচিত, তাইনা। আহ্বানও করা হয় এসে পবিত্র করো। কাপড় ময়লা হলে তাকে ধুয়ে পরিষ্কার করা হয়। তোমরাও ডেকে বলো - হে পতিত-পাবন বাবা, এসে পবিত্র করো। আত্মা পবিত্র হলে তো পবিত্র শরীর প্রাপ্ত হবে। অতএব সর্বপ্রথম মূল কথা হল বাবার পরিচয় দেওয়া। বাবার পরিচয় কিভাবে দেবে, এই প্রশ্ন তো জিজ্ঞাসা করতে পারো না। তোমাদেরও বাবা পরিচয় দিয়েছেন তবেই তো তোমরা এসেছ, তাইনা। বাবার কাছে এসেছ, বাবা আছেন কোথায়? এই রথে। এ হলো অকাল তখ্ত। তোমরা আত্মারাও হলে অকাল মূর্তি । এ হলো তোমাদের তখ্ত, যার উপরে তোমরা আত্মারা বিরাজমান রয়েছো। ওই অকাল তখ্ত (অমৃতসরের) তো জড়, তাইনা। তোমরা জানো আমি অকাল মূর্তি অর্থাৎ নিরাকার, যার কোনও সাকার রূপ নেই। আমি আত্মা অবিনাশী, কখনও বিনাশ হতে পারে না। এক শরীর ত্যাগ করে অন্য ধারণ করি। আমি আত্মা, আমার অবিনাশী পার্ট নির্দিষ্ট আছে। আজ থেকে ৫ হাজার বছর পূর্বেও আমাদের এমন পার্ট শুরু হয়েছিল। ওয়ান - ওয়ান সম্বৎ থেকে আমরা এখানে পার্ট প্লে করতে ঘর অর্থাৎ পরম ধাম থেকে আসি। এটা হল-ই ৫ হাজার বছরের চক্র। তারা তো লক্ষ বছর বলে দেয়, তাই অল্প বছরের সময়কাল চিন্তা করে না। অতএব বাচ্চারা এমন কখনও বলতে পারবে না যে আমরা বাবার পরিচয় কাউকে কিভাবে দেবো। এমন-এমন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করলে আশ্চর্য অনুভব হয়। আরে, তোমরা বাবার আপন হয়েছো, তাহলে বাবার পরিচয় দিতে পারবে না কেন ! আমরা সবাই হলাম আত্মা, তিনি হলেন আমাদের পিতা। সর্বজনের সদগতি করেন। সদগতি কবে করবেন এই কথাও তোমরা এখন জেনেছ। কল্প-কল্প, কল্পের সঙ্গম যুগে এসে সকলের সদগতি করবেন। তারা তো ভাবে - এখনও ৪০ হাজার বছর বাকি আছে এবং আগেই বলে দেয় নাম-রূপহীন। এবারে নাম-রূপহীন কোনও কিছু হয় না। পাথর কাঁকরেরও নাম থাকে, তাইনা। তাই বাবা বলেন - মিষ্টি মিষ্টি বাচ্চারা, তোমরা এসেছো অসীম জগতের পিতার কাছে। বাবাও জানেন, অসংখ্য বাচ্চা রয়েছে । বাচ্চাদের এখন সসীম আর অসীমেরও ওপারে যেতে হবে। বাবা সব বাচ্চাদের দেখেন, জানেন এদের সবাইকে আমি নিয়ে যেতে এসেছি। সত্যযুগে তো সংখ্যা খুব কম হবে। কতখানি ক্লিয়ার তাই চিত্র দিয়ে বোঝানো হয়। নলেজ তো খুবই সরল। যদিও স্মরণের যাত্রায় সময় লাগে। এমন পিতাকে কখনও ভুলে যাওয়া উচিত নয়। বাবা বলেন মামেকম্ স্মরণ করো তো পবিত্র হয়ে যাবে। আমি আসি পতিত থেকে পবিত্র করতে। তোমরা অকালমূর্তি আত্মারা সবাই নিজের নিজের তখ্তে (ভ্রুকুটি রূপী সিংহাসনে) বিরাজমান আছো। বাবাও এই তখ্ত বা দেহের লোন নিয়েছেন। এই ভাগ্যশালী রথে বাবা প্রবিষ্ট হন। কেউ বলে পরমাত্মার নাম-রূপ নেই। এ তো সম্ভব নয়। তাঁকে আহ্বান করা হয়, তাঁর মহিমা বর্ণনা করা হয়, তো অবশ্যই কোনো স্বরূপ আছে, তাইনা। তমোপ্রধান হয়ে যাওয়ার জন্য কিছুই বোঝে না। বাবা বোঝান - মিষ্টি মিষ্টি বাচ্চারা, এত গুলি ৮৪ লক্ষ যোনি তো হয় না। আছেই ৮৪-টি জন্ম। পুনর্জন্ম তো সবার হবে। এমন তো নয় ব্রহ্মে বিলীন হবে বা মোক্ষ প্রাপ্ত করবে। এ হল পূর্ব নির্ধারিত ড্রামা। একটুও কম বেশি হতে পারে না। এই অনাদি অবিনাশী ড্রামা থেকেই আবার ছোট ছোট ড্রামা বা নাটক তৈরি করে। সেসব হল বিনাশী। এখন তোমরা বাচ্চারা অসীমের জগতে দাঁড়িয়ে আছো। তোমরা বাচ্চারা এই জ্ঞান অর্জন করেছ যে - আমরা কিভাবে ৮৪ জন্ম গ্রহণ করি। এখন বাবা বলেছেন, এর আগে কেউ জানত না। ঋষি-মুনিরাও বলতেন - আমরা জানি না। বাবা আসেনই সঙ্গমযুগে, এই পুরানো দুনিয়াটি পরিবর্তন করতে। ব্রহ্মা দ্বারা পুনরায় নতুন দুনিয়ার স্থাপনা করেন। তারা তো লক্ষ বছর বলে দেয়। লক্ষ বছর হলে তো পূর্বের কোনও কথাই মনে আসবে না। মহাপ্রলয় কখনোই হয় না। বাবা রাজযোগ শেখান, ফলে তোমরা রাজত্ব প্রাপ্ত কর। এতে সংশয়ের কোনো জায়গা নেই। তোমরা বাচ্চারা জানো প্রথম নম্বরে সবচেয়ে প্রিয় হলেন শিব বাবা তারপরে নেক্সট প্রিয় হলেন শ্রীকৃষ্ণ। তোমরা জানো শ্রীকৃষ্ণ হলেন প্রথম প্রিন্স, নম্বর ওয়ান। তিনিই পরে ৮৪ জন্ম নেন। তাঁরই অন্তিম জন্মে আমি প্রবেশ করি। এখন তোমাদের পতিত থেকে পবিত্র হতে হবে। পতিত-পাবন হলেন একমাত্র বাবা, নদী কখনও পবিত্র করতে পারে না। এইসব নদী সত্যযুগেও থাকে। সেখানে তো জল খুবই শুদ্ধ থাকে। আবর্জনা ইত্যাদি কিছুই থাকে না। এখানে তো কত ময়লা আবর্জনা পড়ে থাকে। বাবার দেখেছেন, সেই সময় তো জ্ঞান ছিল না। এখন আশ্চর্য অনুভব করেন জল কিভাবে পবিত্র করতে পারে।

অতএব বাবা বোঝাচ্ছেন - মিষ্টি বাচ্চারা, কখনও কনফিউজড হ'য়ো না যে বাবাকে কিভাবে স্মরণ করি। আরে, তোমরা বাবাকে স্মরণ করতে পারো না ! তারা হলো গর্ভের সন্তান, তোমরা হলে মুখ বংশাবলী সন্তান। দত্তক সন্তানদের যখন বাবার কাছ থেকে উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয় তারা কি পিতাকে কখনও ভুলতে পারে? অসীম জগতের পিতার কাছ থেকে অসীমের সম্পত্তি প্রাপ্ত হয় তো তাঁকে ভুলে যাওয়া কি উচিত । লৌকিক বাচ্চারা পিতাকে ভুলে যায় কি? কিন্তু এখানে মায়ার অপজিশন (বিরোধিতা) আছে। মায়ার যুদ্ধ চলে, সম্পূর্ণ দুনিয়া হল কর্মক্ষেত্র। আত্মা এই শরীরে প্রবেশ করে এখানে কর্ম করে। বাবা কর্ম-অকর্ম-বিকর্মের রহস্য বুঝিয়ে দেন। এখানে রাবণের রাজ্যে কর্ম বিকর্মে পরিণত হয়। স্বর্গে রাবণ রাজ্যই নেই, তাই কর্ম অকর্ম হয়ে যায়, বিকর্ম হয় না। এই কথা তো খুব সহজ। এখানে রাবণের রাজ্যে কর্ম বিকর্ম হয় তাই বিকর্মের দন্ড ভোগ করতে হয়। এমন বলা হবে না যে রাবণ হলো অনাদি। না, অর্ধকল্প রাবণ রাজ্য হয়, অর্ধকল্প রাম রাজ্য হয়। তোমরা যখন দেবতা ছিলে তখন তোমাদের কর্ম ছিল অকর্ম। এখন এ হলো নলেজ। সন্তান যখন হয়েছো তখন পড়াশোনা তো করতেই হবে। ব্যস্, পড়াশোনার সময় ব্যবসা ইত্যাদির চিন্তন করা উচিত নয়। কিন্তু গৃহস্থে থাকতে হবে, ব্যবসা ইত্যাদিও করতে হবে। বাবা বলেন, পদ্ম ফুলের মতন থাকো। তবেই এমন দেবতা রূপে পরিণত হবে, তাইনা। সেইসব চিহ্ন বিষ্ণুকে দেওয়া হয়েছে, কারণ তোমাদের দিলে শোভা পাবে না। বিষ্ণুকে শোভা পায়। সেই বিষ্ণুর দুইটি রূপ লক্ষ্মী-নারায়ণ হবে। সেটা হল অহিংস পরম দেবী-দেবতা ধর্ম। না সেখানে কোনও বিকারের কাম কাটারী থাকে, না থাকে কোনও লড়াই ঝগড়া। তোমরা ডবল অহিংসক হয়ে যাও। সত্যযুগের মালিক ছিলে তোমরা। নামই ছিল গোল্ডেন এজ। কাঞ্চন দুনিয়া। আত্মা ও শরীর (কায়া) দুই-ই হয় কাঞ্চন। কাঞ্চন কায়া কে বানায় ? বাবা। এখন তো হলো আয়রন এজ, তাইনা। এখন তোমরা বলো সত্যযুগ পার হয়েছে। গতকাল সত্যযুগ ছিল, তাইনা। তোমরা রাজত্ব করেছিলে। এখন তোমরা নলেজফুল হয়ে উঠছো। সবাই তো একরকম হবে না। আচ্ছা !

মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) আমি আত্মা অকাল সিংহাসনে (তক্খতে) বিরাজিত, এই স্মৃতিতে থাকতে হবে, সসীম ও অসীমের ওপারে যেতে হবে, তাই সসীম জগতে বুদ্ধি লাগাবে না।

২ ) অসীম জগতের বাবার কাছ থেকে অসীম জগতের সম্পত্তি প্রাপ্ত হয়, এই নেশায় থাকতে হবে। কর্ম-অকর্ম-বিকর্মের গতি জেনে বিকর্ম থেকে মুক্ত থাকতে হবে। পড়াশোনার সময় ব্যবসা ইত্যাদি থেকে বুদ্ধি যকে ফ্রী রাখতে হবে।

বরদান:-
শ্রীমতের লাগামকে টাইট করে মনকে বশ করতে পারা বালক তথা মালিক ভব

দুনিয়ার মানুষ বলে যে মন হলো ঘোড়া যে অনেক তেজ গতিতে ছুটতে থাকে, কিন্তু তোমাদের মন এদিক-ওদিক ছুটতে পারবে না কেননা শ্রীমতের লাগাম মজবুত আছে। যখন মন-বুদ্ধি সাইড সিন-কে দেখতে থাকে তখন লাগাম ঢিলা হওয়ার কারণে মন চঞ্চল হয়। সেইজন্য যখনই কোনও পরিস্থিতি আসবে, মন চঞ্চল হবে তখন শ্রীমতের লাগাম টাইট করো তাহলে গন্তব্যে পৌঁছে যাবে। আমি হলাম বালক তথা মালিক - এই স্মৃতির দ্বারা অধিকারী হয়ে মনকে নিজের বশে রাখো।

স্লোগান:-
সদা নিশ্চয় থাকো যে, যাকিছু হচ্ছে সেটা ভালোই হচ্ছে আর যেটা হতে চলেছে সেটা আরও ভালো হতে চলেছে, তাহলে অচল-অনড় থাকবে।