22.01.2025 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা - এই অনাদি ড্রামা হলো পূর্ব রচিত, এ অত্যন্ত ভালো ভাবে বানানো হয়েছে। বাচ্চারা, তোমরা এর পাস্ট, প্রেজেন্ট আর ফিউচার-কে খুব ভালোভাবে জানো"

প্রশ্নঃ -
কোন্ আকর্ষণের উপরে ভিত্তি করে (আধারে) সকল আত্মারা তোমাদের কাছে আকৃষ্ট হয়ে আসবে?

উত্তরঃ  
"পবিত্রতা" আর যোগের" আকর্ষণের উপরে আধারে । এর মাধ্যমেই তোমাদের বৃদ্ধি হতে থাকবে। ভবিষ্যতে বাবাকে অতি শীঘ্র জেনে যাবে। যখন তারা দেখবে যে, এত অগণিত সংখ্যক আত্মারা উত্তরাধিকার নিচ্ছে তখন অনেকেই আসবে। যত সময় অতিবাহিত হবে ততই তোমাদের প্রতি আকৃষ্ট হতে থাকবে।

ওম্ শান্তি ।
আধ্যাত্মিক (রুহানী) বাচ্চাদের এ তো জানা রয়েছে যে, আমরা আত্মারা পরমধাম থেকে আসি - এ'কথা বুদ্ধিতে তো রয়েছে, তাই না। যখন প্রায় সকল আত্মাদের আসা সম্পূর্ণ হয়ে যায়, আর বাকি কিছু অল্পসংখ্যক থাকে, তখন বাবা আসেন। বাচ্চারা, এখন তোমাদের কাউকে বোঝানো অতি সহজ। দূরদেশ-নিবাসী আসেন সবশেষে। বাকি সেখানে অল্পসংখ্যক থেকে যায়। এখনও পর্যন্ত বৃদ্ধি তো হচ্ছেই, তাই না। তোমরা এও জানো যে - বাবাকে তো কেউ জানেই না তাহলে তারা রচনার আদি-মধ্য-অন্তকে কিভাবে জানবে ! এ হলো অসীম জগতের ড্রামা, তাই না। একে(ড্রামাকে) তো ড্রামার অ্যাক্টরদের জানা উচিত। যেমন পার্থিব জগতের অ্যাক্টররাও (স্থূল ড্রামাকে) জানে যে - অমুকে-অমুকে এই পার্ট পেয়েছে। যে জিনিস অতীত হয়ে যায় তারই পুনরায় ছোট ড্রামা তৈরি হয়। ফিউচারের তো কেউ বানাতে পারবে না। যা পাস্ট হয়ে গেছে সেখান থেকে নিয়ে আর কিছু কাহিনী সৃষ্টি করেও ড্রামা তৈরী করা হয়, সেটাই সকলকে দেখানো হয়। ফিউচারকে তো কেউ জানেই না। এখন তোমরা জানো যে, বাবা এসেছেন, স্থাপনা হচ্ছে, আমরা উত্তরাধিকার পাচ্ছি। যারা-যারা আসে, তাদের আমরা রাস্তা বলে দিই - দেবী-দেবতা পদ পাওয়ার। এই দেবতারা এত উচ্চ (পদাধিকারী) কীভাবে হয়েছে? সেটাও কারও জানা নেই। বাস্তবে তো হলো আদি সনাতন দেবী-দেবতা ধর্মই। নিজেদের ধর্মকে ভুলে যায় তখন বলে - আমাদের কাছে তো সব ধর্মই একটাই।

বাচ্চারা তোমরা এখন জানো যে, বাবা আমাদের পড়াচ্ছেন। বাবার ডায়রেক্শনেই চিত্রাদি তৈরী করা হয়। বাবা দিব্য-দৃষ্টির দ্বারা চিত্র তৈরী করাতেন। কেউ আবার নিজের বুদ্ধির দ্বারাও তৈরী করতো। বাচ্চাদের এও বোঝানো হয়েছে যে, একথা অবশ্যই লেখো, পার্টধারী অ্যাক্টররা তো রয়েছে কিন্তু ক্রিয়েটর, ডাইরেক্টর ইত্যাদিকে কেউই জানে না। বাবা এখন নতুন ধর্ম স্থাপনা করছেন। পুরানোর থেকেই নতুন দুনিয়া তৈরি হয়। একথাও বুদ্ধিতে থাকা উচিত। বাবা পুরানো দুনিয়ায় এসেই তোমাদের ব্রাহ্মণ বানান। ব্রাহ্মণই পুনরায় দেবতা হবে। দেখো, যুক্তি কতো সুন্দর । অবশ্যই এ হলো অনাদি, পূর্ব-নির্ধারিত ড্রামা, কিন্তু অত্যন্ত সঠিকভাবে রচিত। বাবা বলেন, প্রতিদিন তোমাদের অতি গুপ্ত রহস্যময় কথা শোনাই। বাচ্চারা, যখন বিনাশ শুরু হবে তখন তোমরা অতীতের সমগ্র ইতিহাস জানতে পারবে। যখন সত্য যুগে যাবে তখন পাস্টের কোনো হিস্ট্রিই স্মরণে থাকবে না। তখন তোমরা প্র্যাক্টিকাল পার্ট প্লে করো। অতীত কাকে শোনাবে? এই লক্ষ্মী-নারায়ণ তাঁদের পাস্টকে একটুও জানে না। তোমাদের বুদ্ধিতে পাস্ট, প্রেজেন্ট, ফিউচার সবকিছু আছে - কিভাবে বিনাশ হবে? কিভাবে রাজধানী তৈরী হবে? কিভাবে প্রাসাদ তৈরী হবে? হবে তো অবশ্যই, তাই না। স্বর্গের দৃশ্যাবলীই সম্পূর্ণ আলাদা। যেমন-যেমন পার্ট প্লে করতে থাকবে, তেমন-তেমনভাবে জানতে থাকবে। একে বলা হয় - বিনা কারণে রক্তপাত। বিনা কারণে ক্ষয় ক্ষতি হয়ে যায়, তাই না। যখন আর্থকোয়েক হয় তখন কত ক্ষতি হয়ে যায়। বম্বিং হয়, এ তো নাটক, তাই না। কেউ কিছু কি করে থোড়াই । বিশাল বুদ্ধির যে হয়, সে বোঝে যে - বিনাশ অবশ্যই হয়েছিল। অবশ্যই মারামারি হয়েছিল। এমন খেলাও (ড্রামা) তৈরি করে। একথা তো বুঝতেও পারে। কোনোসময় কারও বুদ্ধিতে টাচ্ হয়ে যায়। তোমরা তো প্র্যাকটিক্যালি এখন রয়েছো। তোমরা সেই রাজধানীর মালিক হও। তোমরা জানো যে, এখন সেই নতুন দুনিয়ায় অবশ্যই যেতে হবে। ব্রাহ্মণ যারা হয়, যখন ব্রহ্মার কাছে বা ব্রহ্মাকুমার-কুমারীদের কাছ থেকে নলেজ নেয়, তখন সে চলে আসে। কিন্তু থাকে তো তারা নিজেদের ঘর-গৃহস্থীতেই, তাই না। অনেককে তো তোমরা জানতেই পারো না। সেন্টার গুলোতে কতো মানুষ আসে। এতজনকে কি স্মরণে রাখা যায়, না যায় না। কত ব্রাহ্মণ, বৃদ্ধি হতে-হতে অগণিত হয়ে যাবে। সঠিক হিসেব বের করা যাবে না। রাজা কি জানে, না জানে না যে - আমার প্রজার সংখ্যা সঠিক কত? অবশ্যই আদমসুমারি (লোকগণনা) ইত্যাদি বের করে, তথাপি পার্থক্য তো থেকেই যায়। এখন তুমিও স্টুডেন্ট, এত এত স্টুডেন্ট । সব ভাইদেরই (আত্মাদের) স্মরণ করতে হবে - একমাত্র বাবাকে। ছোট বাচ্চাদের-কেও শেখানো হয় যে - 'বাবা-বাবা' বলো। এও তোমরা জানো যে, তোমরা যত (উন্নতির দিকে) এগিয়ে যাবে, মানুষ আসবে এবং তৎক্ষণাৎ বাবাকে চিনে যাবে। যখন দেখবে, এত-এত সংখ্যক উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করছে, তখন অনেকেই আসবে। যত দেরী হবে, তত তোমাদের প্রতি আকর্ষণ বাড়তে থাকবে। যত পবিত্র হবে, ততই আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে। যত যোগে থাকবে ততই আকর্ষণীয় হবে, অন্যদেরকেও আকৃষ্ট করতে পারবে। বাবাও তো আকর্ষণ করেন, তাই না। অনেক বৃদ্ধি হতে থাকবে। তারজন্য যুক্তিও রচনা করা হচ্ছে। গীতার ভগবান কে? কৃষ্ণকে স্মরণ করা তো অতি সহজ। তিনি তো সাকার রূপে রয়েছেন, তাই না। নিরাকার পিতা বলেন, মামেকম্ স্মরণ করো - এই বিষয়ের উপরেই সবকিছু নির্ভর করছে। তাই বাবা বলেছিলেন যে, এই কথাটি সকলকে লেখাতে থাকো। যখন বড়-বড় লিস্ট বানাবে তখন মানুষ জানতে পারবে।

তোমরা ব্রাহ্মণরা যখন পাক্কা নিশ্চয়বুদ্ধিসম্পন্ন হবে, তখন বৃক্ষ (কল্প বৃক্ষ) বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হতে থাকবে। মায়ার তুফানও শেষপর্যন্ত চলবে। বিজয়প্রাপ্ত করে নিলে, তখন না পুরুষার্থ থাকবে, না মায়া থাকবে। স্মরণেই অনেকে পরাজিত হয়। যত তোমরা যোগে শক্তিশালী হবে, তখন আর পরাজিত হবে না। এই রাজধানী স্থাপিত হচ্ছে। বাচ্চাদের নিশ্চয় রয়েছে যে, আমাদের রাজত্বকাল আসবে তখন আমরা হীরে-জহরৎ কোথা থেকে নিয়ে আসব! খনি কোথা থেকে আসবে? এইসব তো সত্যিই ছিল ঠিকই তাই না। এতে বিভ্রান্ত হওয়ার কথা তো নয়। যা হবে তা প্র্যাক্টিক্যালে দেখতে পাবে। স্বর্গ তো অবশ্যই তৈরী হবে। যারা ভালোভাবে পড়ে, তাদের এই নিশ্চয় থাকবে যে, ভবিষ্যতে আমরা গিয়ে ওখানে প্রিন্স হবো। ওখানে হীরে-জহরতের রাজপ্রাসাদ থাকবে। এই নিশ্চয়ও সার্ভিসেবেল বাচ্চাদের থাকবে, যারা নিম্নপদাধিকারী হবে, তাদের কখনো এমন-এমন ধরণের চিন্তাও আসবে না যে আমরা প্রাসাদাদি কীভাবে বানাবো। যারা খুব ভালোভাবে সার্ভিস করবে তারাই তো মহলে যাবে তাই না। দাস-দাসী তৈরি হয়েই থাকবে। সার্ভিসেবেল বাচ্চাদের এমন-এমন ধরনের খেয়াল আসবে। বাচ্চারাও জানে যে, কারা কারা ভালো সার্ভিস করবে। আমাদের তো যারা পড়াশোনা করছে তাদের সামনে মাথা নত করতে হবে । যেমন এই বাবা (ব্রহ্মা), বাবার তো খেয়াল থাকে, তাই না। বৃদ্ধ আর বালক সমান হয়ে গেছে তাই এঁনার অ্যাক্টিভিটিও শৈশবের মতন হয়ে গেছে। বাবার তো একটাই অ্যাক্ট - বাচ্চাদের (জ্ঞান) পড়ানো আর (যোগ) শেখানো। বিজয়মালার দানা হতে গেলে, পুরুষার্থও অনেক করতে হবে। অনেক মিষ্টি হতে হবে। শ্রীমতে চলতে হবে তবেই উচ্চস্থানাধিকারী হবে। এ তো বুঝবার মতন বিষয়, তাই না। বাবা বলেন, আমি যা শোনাই তার উপরে বিচার করো। ভবিষ্যতে তোমাদের আরও সাক্ষাৎকার হতে থাকবে। যত নিকটে আসবে তত স্মরণে আসতে থাকবে। নিজেদের রাজধানী ছেড়ে এসেছ, ৫ হাজার বছর হয়ে গেছে। ৮৪ জন্মের চক্রও পরিক্রমা করে এসেছ। যেমন ভাস্কো-ডা-গামার উদ্দেশ্যে বলা হয় যে - ওয়ার্ল্ড পরিক্রমণ করেছিল। আমরা এই ওয়ার্ল্ডে ৮৪ জন্ম পরিক্রমা করেছি। ওই ভাস্কো-ডা-গামা তো একজনই, তাই না। ইনিও তো এক, যিনি তোমাদের ৮৪ জন্মের রহস্য বোঝান। ডিনায়েস্টি চলতে থাকে । তাই নিজেদের অন্তরে দেখবে যে - আমার মধ্যে কোনো দেহ-অভিমান নেই তো? ফেল হয়ে যাই না তো? অথবা আপসেট হয়ে যাই না তো?

তোমরা যোগে থাকবে, শিববাবাকে স্মরণ করতে থাকবে তাহলে তোমাদের কেউই (মায়া) থাপ্পড় ইত্যাদি মারতে পারবে না। যোগবলই হলো তোমাদের ঢাল। কেউ কিছু করতেই পারবে না। যদি কেউ আঘাত পায় তবে তার অবশ্যই দেহ-অভিমান আছে। দেহী-অভিমানীকে কেউ আঘাত করতে পারে না। ভুল নিজেরই হয়। বিবেক একথা বলে যে, দেহী-অভিমানীকে কেউ কিছু করতে পারবে না তাই দেহী- অভিমানী হওয়ার প্রচেষ্টা করা উচিত। সকলকে পয়গাম দিতে হবে। ভগবানুবাচ, "মন্মনাভব" । কোন্ ভগবান? বাচ্চারা, এও তোমাদের-কেই বোঝাতে হবে। ব্যস্, এই একটি কথাতেই তোমাদের বিজয় হবে। সমগ্র দুনিয়ায় মানুষের বুদ্ধিতে কৃষ্ণ ভগবানুবাচই রয়েছে। যখন তোমরা বোঝাও তখন বলে যে - একথা তো একদম সত্য। যখন সম্পূর্ণ তোমাদের মতো করে বুঝবে তখন বলবে যে, বাবা যা শেখায় সেটাই সঠিক। কৃষ্ণ কী বলবে, না বলবে না যে -- আমি এমন, আমাকে কেউ জানতেই পারে না। কৃষ্ণকে তো সকলেই জেনে যাবে। এমনও নয় যে, কৃষ্ণের শরীরে এসে ভগবান বলেন। না, কৃষ্ণ তো সত্যযুগেই থাকে। সেখানে ভগবান কি করে আসবে? ভগবান তো আসেই পুরুষোত্তম সঙ্গমযুগে। বাচ্চারা, তাই তোমরা অনেককে লেখাতে থাকো। তোমাদের একটি বড় বই ছাপানো উচিত, তাতে যেন সকলের মতামত লেখা থাকে। যখন দেখবে যে, এখানে তো এত-এতজন সকলেই লিখেছে তখন নিজেও লিখবে। তখন তোমাদের কাছে অনেকের (মতামত) লেখা হয়ে যাবে যে - গীতার ভগবান কে? উপরেও যেন লেখা থাকে যে, সর্বোচ্চ হলেন বাবা-ই, কৃষ্ণকে সর্বোচ্চ বলা যাবে না। তিনি কখনো বলতে পারেন না যে, মামেকম্ স্মরণ করো। ব্রহ্মার থেকেও উচ্চ থেকে উচ্চতম হলেন ভগবান, তাই না। মুখ্যকথাই হলো এটা, এতেই সকলের দেউলিয়া বের হয়ে যায়।

বাবা কখনো বলেন না যে, এখানে বসে থাকতে হবে। না, সদ্গুরুকে নিজের করে নিয়ে পুনরায় নিজ-ঘরে গিয়ে থাকো। শুরুতে তোমাদের ভাট্টী হতো। শাস্ত্রতেও ভাট্টির কথা রয়েছে কিন্তু ভাট্টী কাকে বলা হয় তা কেউ জানে না। ভাট্টী হয় ইটের। তাতে কোনো-কোনোটা পাকা, কোনো-কোনোটা আধ-পাকা বেরোয়। এখানেও দেখো - সোনা নেই, আছে পাথর-মাটির টুকরো। পুরানো জিনিসের (অ্যান্টিক) মূল্য অপরিসীম। শিববাবা, দেবতাদের মান-সম্মান আছে, তাই না। সত্যযুগে তো মান-সম্মানের কোনো কথাই নেই। ওখানে কি পুরানো জিনিস বসে কেউ খোঁজে, না খোঁজে না। ওখানে পেট ভর্তি (সর্বপ্রাপ্তি) থাকে। খোঁজ করার প্রয়োজনই থাকে না। তোমাদের খনন করার প্রয়োজনই নেই, দ্বাপরের পর থেকে খননকার্যাদি শুরু হয়। ঘর-বাড়ী যখন বানায়, (খুঁড়তে গিয়ে) কিছু বেরিয়ে আসে তখন মনে করে যে, নীচে কিছু রয়েছে। সত্যযুগে তোমাদের কোনো চিন্তা থাকে না। ওখানে তো সোনা-ই সোনা (অগাধ সোনা)। ইটও সোনার । কল্প-পূর্বে যা হয়েছিল, যা নির্ধারিত তারই সাক্ষাৎকার হয়। আত্মাদের আহ্বান করা হয়, এও ড্রামায় পূর্ব-নির্ধারিত। এতে বিভ্রান্ত হওয়ার প্রয়োজন নেই। সেকেন্ড বাই সেকেন্ড পার্ট প্লে হয়, পুনরায় লুপ্ত হয়ে যায়। এ হলো পঠন-পাঠন। ভক্তিমার্গে অনেক চিত্র রয়েছে। তোমাদের এই চিত্র সবই অর্থপূর্ণ। কোনো চিত্রই অর্থহীন নয়। যতক্ষণ না পর্যন্ত তোমরা কাউকে বোঝাবে, ততক্ষণ পর্যন্ত কেউ-ই বুঝতে পারে না। একমাত্র বাবা-ই বুদ্ধিমান, নলেজফুল, যিনি (নলেজ) বোঝান। এখন তোমরা ঈশ্বরীয় মত পেয়েছো। তোমরা হলে ঈশ্বরীয় বংশ বা কুলের। ঈশ্বর এসে বংশ বা কুল স্থাপন করেন। এখন তোমাদের রাজ্যাদি কিছুই নেই। রাজধানী ছিল, এখন নেই। দেবী-দেবতা ধর্ম অবশ্যই ছিল। সূর্যবংশীয়-চন্দ্রবংশী রাজত্ব অবশ্যই রয়েছে, তাই না। গীতার দ্বারা ব্রাহ্মণ কুল স্থাপিত হয়, সূর্যবংশীয়-চন্দ্রবংশী কুলও স্থাপিত হয়। এছাড়া অন্য কেউ-ই হতে পারে না। বাচ্চারা, তোমরা সৃষ্টির আদি-মধ্য-অন্তকে জেনে গেছো। পূর্বে মনে করতো যে - বড় প্রলয় হয়। পরে দেখানো হতো, সাগরে অশ্বত্থ পাতার উপর কৃষ্ণ ভেসে আসে। প্রথম নম্বরে তো কৃষ্ণই আসে, তাই না। এছাড়া সাগরের কোনো কথা নেই। বাচ্চারা, এখন তোমাদের বোধবুদ্ধি অত্যন্ত ভালো হয়ে গেছে। খুশীও তাদেরই হবে যারা আধ্যাত্মিক পড়াশোনা ভালোভাবে করে। যারা ভালোভাবে পড়ে তারাই পাস উইথ অনার হয়। যদি কারোর সঙ্গে প্রেম হয়ে যায়, তখন পড়ার সময়ও সে স্মরণে আসতে থাকবে। বুদ্ধি সেখানেই চলে যাবে, তাই পড়াশোনা সর্বদা ব্রহ্মচর্য অবস্থাতেই হয়। বাচ্চারা, এখানে তোমাদের বোঝানো হয় যে, একমাত্র বাবা ব্যতীত আর কোথাও যেন বুদ্ধি না চলে যায়। কিন্তু জানে যে, অনেকেরই পুরানো দুনিয়া স্মরণে চলে আসে। পুনরায় এখানে বসেও শোনেই না। ভক্তিমার্গেও এমন হয়। সৎসঙ্গে বসেও বুদ্ধি কোথায়-কোথায় পালিয়ে যায়। এ তো অনেক বড় কঠিন পরীক্ষা। কেউ তো যেন বসে আছে কিন্তু শুনছে না। অনেক বাচ্চারা তো খুশীও হয়। বাবার সম্মুখে বসে খুশীতে দুলতে থাকে। বুদ্ধি যদি বাবার সঙ্গে থাকে তাহলে অন্তিম সময়ে যেমন মতি হবে, তেমনই গতি হবে। এরজন্য পুরুষার্থ অত্যন্ত ভালোভাবে করতে হবে। এখানে তোমরা অগাধ ধন প্রাপ্ত কর। আচ্ছা!

মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা-রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) বিজয়মালার দানা হওয়ার জন্য অত্যন্ত ভালোভাবে পুরুষার্থ করতে হবে, অত্যন্ত মিষ্টি হতে হবে, শ্রীমতানুসারে চলতে হবে।

২ ) যোগই হলো ঢাল, সেইজন্য যোগবল জমা করতে হবে। দেহী-অভিমানী হওয়ার জন্য পুরোপুরি প্রচেষ্টা করতে হবে।

বরদান:-
“বিশেষ”- শব্দের স্মৃতি দ্বারা সম্পূর্ণতার লক্ষ্যকে প্রাপ্তকারী স্ব-পরিবর্তক ভব

সদা এটাই যেন স্মৃতিতে থাকে যে আমি হলাম বিশেষ আত্মা, বিশেষ কাজ করার জন্য নিমিত্ত হয়েছি আর নিজের বিশেষত্বগুলির প্রদর্শন করাচ্ছি। এই “বিশেষ” শব্দ বিশেষ স্মরণে রাখো - বলতেও হবে বিশেষ, দেখতেও হবে বিশেষ, করতেও হবে বিশেষ, চিন্তনও হবে বিশেষ... প্রত্যেক বিষয়ে এই বিশেষ শব্দ নিয়ে আসার কারণে সহজে স্বপরিবর্তক তথা বিশ্ব পরিবর্তক হয়ে যাবে। আর সম্পূর্ণতাকে প্রাপ্ত করার যে লক্ষ্য আছে, সেই লক্ষ্যকেও সহজেই প্রাপ্ত করে ফেলবে।

স্লোগান:-
বিঘ্নগুলিকে দেখে ঘাবড়ে যাওয়ার পরিবর্তে সেগুলিকে পেপার (পরীক্ষা) মনে করে পার করো।

নিজের শক্তিশালী মন্সার দ্বারা সকাশ দেওয়ার সেবা করো :-

এখন মন্সার কোয়ালিটিকে বৃদ্ধি করো তাহলে কোয়ালিটি যুক্ত আত্মারা নিকটে আসবে। এতে ডবল সেবা হবে - নিজেরও আর অন্যদেরও। নিজের জন্য আলাদা করে পরিশ্রম করতে হবে না। প্রালব্ধ প্রাপ্ত হয়ে গেছে - এইরকম স্থিতির অনুভব হবে। এই সময়ের শ্রেষ্ঠ প্রালব্ধ হল - “সদা স্বয়ং সর্ব প্রাপ্তিগুলির দ্বারা সম্পন্ন থাকা আর সবাইকে সম্পন্ন বানানো।”