22.03.2025
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
তোমাদের এই নেশা থাকা চাই যে, আমাদের পারলৌকিক বাবা হলেন, ওয়ান্ডার অফ দ্য
ওয়ার্ল্ড (স্বর্গের) রচয়িতা, আমরা যেখানকার মালিক হই"
প্রশ্নঃ -
বাবার সঙ্গে
থেকে তোমাদের কি কি প্রাপ্তি হয়?
উত্তরঃ
বাবার সঙ্গে
থেকে আমরা মুক্তি, জীবন-মুক্তির অধিকারী হয়ে যাই। বাবার সঙ্গ আমাদেরকে ওপারে নিয়ে
যায়। বাবা আমাদেরকে নিজের বানিয়ে আস্তিক আর ত্রিকালদর্শী বানিয়ে দেন। আমরা
রচয়িতা আর রচনার আদি-মধ্য-অন্তকে জানতে পারি।
গীতঃ-
ধৈর্য ধরো হে
মানব...
ওম্ শান্তি ।
এটা কে বলছেন?
বাচ্চাদেরকে বাবা-ই বলছেন, সকল বাচ্চাদেরকই বলতে হয়, কেননা সবাই দুঃখী হয়ে পড়েছে,
অধৈর্য হয়ে পড়েছে। বাবাকে স্মরণ করে বলে যে, এসে দুঃখ থেকে মুক্ত করো, সুখের
রাস্তা বলে দাও। এখন সাধারণ মানুষ, তার মধ্যেও মুখ্যতঃ ভারতবাসীদের এটা স্মরণ নেই
যে, আমরা ভারতবাসীরা অনেক সুখী ছিলাম। ভারত অতি প্রাচীন ওয়ান্ডারফুল ল্যান্ড ছিল।
ওয়ান্ডার অফ দ্য ওয়ার্ল্ড বলা হয় না! এখানে মায়ার রাজ্যে সেভেন ওয়ান্ডার্সের কথা
বলা হয় । সেগুলো হলো স্থূল ওয়ান্ডার । বাবা বোঝাচ্ছেন যে, এইসব হলো মায়ার
ওয়ান্ডার, যাতে দুঃখ রয়েছে । বাবার ওয়ান্ডার হলো স্বর্গ। সেটাই হলো ওয়ান্ডার অফ
দ্য ওয়ার্ল্ড। ভারত স্বর্গ ছিল, হীরের মত ছিল। সেখানে দেবী-দেবতাদের রাজত্ব ছিল। এই
সমস্ত কথা ভারতবাসীরা ভুলে গেছে। যদিও দেবতাদের সামনে গিয়ে মাথা ঠোকে, পূজা করে
কিন্তু যার পূজা করে তার জীবনী জানতে হবে, তাই না! এসমস্ত কথা অসীম জগতের বাবা বসে
বোঝাচ্ছেন। এখানে তোমরা এসেছ পারলৌকিক বাবার কাছে। পারলৌকিক বাবা হলেন স্বর্গের
স্থাপন কর্তা। এই কার্য কোনো মানুষ করতে পারে না। এনাকে অর্থাৎ ব্রহ্মা বাবাকেও বাবা
বলা হয় - উনি হলেনই কৃষ্ণের পুরানো তমোপ্রধান আত্মা। তুমি নিজের জন্মকে জানতে না।
তুমি কৃষ্ণ ছিলে তো সতোপ্রধান ছিলে। পুনরায় ৮৪ জন্ম নিতে নিতে এখন তোমরা তমোপ্রধান
হয়ে গেছো, শরীরের ভিন্ন ভিন্ন নাম পড়েছে। এখন তোমার নাম ব্রহ্মা রাখা হয়েছে।
ব্রহ্মাই বিষ্ণু বা শ্রীকৃষ্ণ হবে। কথা তো একটাই আছে - ব্রহ্মার থেকে বিষ্ণু,
বিষ্ণুর থেকে ব্রহ্মা। ব্রহ্মা মুখবংশাবলী ব্রাহ্মণ, তারাই পুনরায় দেবতা হয়।
পুনরায় সেই দেবতারাই আবার শূদ্র হয়। এখন তোমরা ব্রাহ্মণ হয়েছো। এখন বাবা বসে
বাচ্চাদের তোমাদেরকে বোঝাচ্ছেন, এটাই হল ভগবানুবাচ। তোমরা তো হয়ে গেলে ছাত্র। তাই
তোমাদের অনেক খুশিতে থাকতে হবে। কিন্তু এত খুশিতে কেউই থাকে না। ধনবান ধনের নেশায়
অনেক খুশিতে থাকে, তাই না। এখানে ভগবানের বাচ্চা হয়েছে তো তবুও এতটা খুশিতে থাকো
না। তারা বোঝেনা কিছুই, পাথরবুদ্ধি হয়ে গেছে, তাইনা। ভাগ্যে না থাকলে তো জ্ঞানের
ধারণা কিভাবে করবে! এখন বাবা তোমাদেরকে মন্দিরে পূজার যোগ্য তৈরি করছেন। কিন্তু
মায়ার সঙ্গও কম নয়। বলা হয়, শ্রেষ্ঠসঙ্গ ওপারে নিয়ে যায় আর কুসঙ্গ ডুবিয়ে দেয়।
বাবার সঙ্গ তোমাদেরকে মুক্তি, জীবন-মুক্তিতে নিয়ে যায় পুনরায় রাবণের কুসঙ্গ
তোমাদেরকে দুর্গতিতে নিয়ে যায়। ৫ বিকারের সঙ্গ হয়ে যায়, তাই না! ভক্তিতে বলা হয়
যে সৎসঙ্গ, কিন্তু সিঁড়ি দিয়ে তো নীচের দিকেই নামতে থাকে। সিঁড়ি থেকে কেউ ধাক্কা
খেলে তো অবশ্যই নিচের দিকেই পড়বে, তাই না। সকলের সদ্গতি দাতা হলেন এক বাবা। কেউ
কিছু করলে সেটা ভগবানের ইশারাতেই করবে। এখন বাবা ছাড়া বাচ্চাদেরকে পরিচয় কে দেবে?
বাবা-ই বাচ্চাদেরকে নিজের পরিচয় দেন। তাদেরকে নিজের আপন বানিয়ে সৃষ্টির
আদি-মধ্য-অন্তের জ্ঞান দেন। বাবা বলেন যে, আমি এসে তোমাদেরকে আস্তিকও বানাই
ত্রিকালদর্শীও বানাই। এটাই নাটকে আছে, এসব কথা কোনো সাধু-সন্তরা জানতে পারে না। সেটা
হল লৌকিক জগতের নাটক। এটা হল অসীম জগতের। এই অসীম জগতে নাটকে আমরা অনেক সুখ ভোগ করি
তো এখন দুঃখও ভোগ করি। এই নাটকে কৃষ্ণ আর খ্রীষ্টানদের মধ্যে কিরকম হিসেব নিকেশ আছে
! তারা (খ্রীষ্টানরা) ভারতে লড়াই করে রাজত্ব নিয়েছিল। এখন তোমরা লড়াই ইত্যাদি করো
না। তারা নিজেদের মধ্যে লড়াই করে। আর রাজত্ব তোমাদের প্রাপ্ত হয়। এটাও ড্রামার
মধ্যে পূর্বনির্ধারিত। এই সমস্ত কথা অন্যরা কেউ জানেনা। জ্ঞানদাতা হলেন জ্ঞানের
সাগর এক বাবা। যিনি সকলের সদ্গতি করেন। ভারতের দেবী দেবতাদের রাজত্ব ছিল, তখন সদ্গতি
ছিল। বাকি সকল আত্মারা মুক্তিধামে ছিল। ভারত স্বর্ণময় ছিল। তোমরাই রাজত্ব করেছিলে।
সত্যযুগে সূর্যবংশী রাজ্য ছিল। এখন তোমরা সত্যনারায়ণের কথা শোনাে। নর থেকে নারায়ণ
হওয়ার এই কথাই আছে । এটাও বড় বড় অক্ষরে লিখে দাও - সত্য গীতার থেকেই ভারত
সত্যখন্ড, জন্মসিদ্ধ অধিকাররূপে প্রাপ্ত হয়। বাবা এসে সত্যিকারের গীতা শোনান। সহজ
রাজযোগ শেখান তো জন্মগত অধিকার হয়ে যায়। বাবা টোটকা তো অনেক বুঝিয়েদেন কিন্তু
দেহ-অভিমানের কারণে ভুলে যায়। দেহী-অভিমানী হলে ধারণাও হবে। দেহ অভিমানের কারণে
ধারণা হয় না।
বাবা বোঝাচ্ছেন যে,
আমি কি এটা বলতে পারি যে, আমি সর্বব্যাপী । আমাকে তো তোমরাই বলো যে, তুমি হলে
মাতা-পিতা.... তাহলে এটার অর্থ কি হলো? তোমার কৃপাতে অনেক সুখ প্রাপ্ত হয়। এখন তো
হল দুঃখ । এই গান কোন্ সময়ের - এটাও বোঝে না। যেরকম পাখিরা কিচিরমিচির (চিঁ-চিঁ)
করতেই থাকে, অর্থ কিছু হয় না। সেইরকম এরাও চিঁ-চিঁ করতে থাকে, যার অর্থ কিছুই হয়না।
বাবা বসে বোঝাচ্ছেন যে, এইসব হল আনরাইটিয়াস (অধর্ম), আনরাইটিয়াস কে বানিয়েছে?
রাবণ। ভারত সত্যখন্ড ছিল, তো সবাই সত্য কথাই বলতো, চোর-ঠকবাজ আদি কিছুই ছিল না।
এখানে দেখো কত কিছু চুরি করতে থাকে। দুনিয়াতে তো সবাই ঠকবাজ । এটাকে বলাই হয় -
পাপের দুনিয়া, দুঃখের দুনিয়ায়। সত্যযুগকে বলা হয় সুখের দুনিয়া। এটা হল
দুশ্চরিত্র, বেশ্যালয়, সত্যযুগ হল শিবালয়। বাবা কত সহজ ভাবে বসে বোঝাচ্ছেন।
নামটাও কত সুন্দর - ব্রহ্মাকুমারী ঈশ্বরীয় বিশ্ববিদ্যালয়। এখন বাবা এসে বুঝদার
তৈরি করছেন। বলেন যে, এই ৫ বিকারকে জয় করলে তোমরা জগৎজীত হবে। এই কাম-ই হলো মহাশত্রু।
এই জন্যই বাচ্চারা ডেকে বলে, আমাদেরকে এসে দেবী-দেবতা বানাও।
বাবার যথার্থ মহিমা
বাচ্চারা তোমরাই জানো। সাধারণ মানুষ না বাবাকে জানে, না বাবার মহিমাকে জানে। তোমরাই
জানো যে, তিনি হলেন প্রেমের সাগর। বাবা বাচ্চাদের তোমাদেরকে এই জ্ঞান শোনাচ্ছেন,
এটাই হলো তাঁর ভালোবাসা। টিচার স্টুডেন্টকে পড়ায় তো ছাত্ররা কি থেকে কি হয়ে যায়।
বাচ্চারা, তোমাদেরকেও বাবার মতো প্রেমের সাগর হতে হবে, প্রেমের সাথে কাউকে বোঝাতে
হবে। বাবা বোঝান, তোমরাও একে অপরকে ভালোবাসো। এক নম্বর ভালোবাসা হলো - বাবার পরিচয়
দেওয়া। তোমরা গুপ্ত দান করতে থাকো। পরস্পরের প্রতি ঘৃণাভাবও যেন না থাকে। নাহলে তো
তোমাদেরকেও শাস্তি পেতে হবে। কাউকে তিরস্কার করলে তো শাস্তি পেতে হবে। কখনো কাউকে
ঘৃণা ক'রো না, তিরস্কার ক'রো না। দেহ-অভিমানে আসার কারণেই পতিত হয়েছো। বাবা
দেহী-অভিমানী বানিয়েছেন, তো তোমরা পবিত্র হও। সবাইকে এটাই বোঝাও যে, এখন ৮৪ জন্মের
চক্র সম্পূর্ণ হয়েছে। যারা সূর্যবংশী মহারাজা মহারানী ছিল তারাই পুনরায় ৮৪ জন্ম
গ্রহণ করে নিচে নামতে নামতে এখন এই নিচে পড়ে আছে। এখন বাবা পুনরায় তোমাদেরকে
মহারাজা-মহারানী তৈরি করছেন। বাবা কেবলমাত্র বলছেন যে, আমাকে স্মরণ করো, তো পবিত্র
হয়ে যাবে। বাচ্চারা, তোমাদেরকে দয়াবান হয়ে সারাদিন সেবার চিন্তনে থাকতে হবে। বাবা
নির্দেশ দেন - মিষ্টি বাচ্চারা, হৃদয়বান হয়ে বেচারা যে সব দুঃখী আত্মারা আছে, সেই
সব দুঃখী আত্মাদেরকে সুখী বানাও। তাদেরকে খুব ছোট্ট আকারে তোমরা পত্র লিখবে । বাবা
বলেন, আমাকে স্মরণ করো আর উত্তরাধিকারকে স্মরণ করো। এক শিববাবারই মহিমা আছে। সাধারণ
মানুষ বাবার মহিমাকেও বুঝতে পারে না। হিন্দিতেও চিঠি লিখতে পারো। সেবা করার জন্য
বাচ্চাদের শখ থাকতে হবে। অনেকে আছে যারা আত্মহত্যা করতে যায়, তাদেরকেও তোমরা বোঝাতে
পারো, জীবঘাত হলো মহাপাপ। এখন বাচ্চারা, তোমাদেরকে শ্রীমৎ দিচ্ছেন এক শিববাবা। তিনি
হলেন শ্রী শ্রী শিব বাবা। তোমাদেরকে শ্রী লক্ষ্মী, শ্রী নারায়ণ বানাচ্ছেন। শ্রী
শ্রী তো হলেন সেই একজনই। তিনি কখনো জন্ম-মৃত্যুর চক্রে আসেন না। বাকি তোমাদেরও
শ্রী-এর উপাধি প্রাপ্ত হয়। আজকাল তো সবাইকে শ্রী এর উপাধি দিতে থাকে। কোথায় সেই
নির্বিকারী, কোথায় এই বিকারী - রাত-দিনের পার্থক্য আছে। বাবা রোজ বোঝাচ্ছেন যে, এক
তো দেহী-অভিমানী হও আর সবাইকে এই পয়গাম (সংবাদ) পৌঁছে দাও। পয়গম্বরের সন্তান হলে
তোমরা । সকলের সদ্গতি দাতা হলেন একজনই। বাকি ধর্মস্থাপকদেরকে কখনো গুরু বলা হবে নাকি।
সদ্গতি দাতা হলেন একজনই। আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
কাউকে অপছন্দ বা ঘৃণা ক'রো না। দয়াবান হয়ে দুঃখী আত্মাদেরকে সুখী বানানোর সেবা
করতে হবে। বাবার সমান মাস্টার প্রেমের সাগর হতে হবে।
২) "আমরা হলাম
ভগবানের সন্তান" এই নেশা বা খুশিতে থাকতে হবে। কখনো মায়ার উল্টো সঙ্গে যাবে না।
দেহী-অভিমানী হয়ে জ্ঞানের ধারণা করতে হবে।
বরদান:-
বাবার
সমান বরদানী হয়ে প্রত্যেকের হৃদয়কে আরাম প্রদানকারী মাস্টার দিলারাম ভব
যে বাচ্চারা বাবার
সমান বরদানী মুর্তি হয়, তারা কখনও কারো দুর্বলতাকে দেখে না, তার সকলের প্রতি করুণা
হয়। যেরকম বাবা কারো দুর্বলতাকে হৃদয়ে রেখে দেন না, এইরকম বরদানী বাচ্চারাও কারো
দুর্বলতা হৃদয়ে ধারণ করে না, তারা প্রত্যেকের হৃদয়ে আরাম প্রদানকারী মাস্টার
দিলারাম হয়, এইজন্য সাথী হোক বা প্রজা, সবাই তার গুণগান করে। সকলের অন্তর থেকে এই
আশীর্বাদ বেরিয়ে আসে যে এ হল আমাদের সদা স্নেহী, সহযোগী।
স্লোগান:-
সঙ্গম
যুগের শ্রেষ্ঠ আত্মা হলো সে, যে সদা নিশ্চিন্ত বাদশাহ ।
মাতেশ্বরী-জীর মধুর
মহাবাক্য -
১) "জ্ঞানী তু আত্মা
বাচ্চাদের ভুল হয়ে গেলে শতগুণ দণ্ড"
এই অবিনাশী জ্ঞান
যজ্ঞে এসে সাক্ষাৎ পরমাত্মার হাত ধরেও পুনরায় কারণে-অকারণে যদি তার দ্বারা কোনো
বিকর্ম হয়ে যায় তো তার শাস্তিও অনেক বেশী ভোগ করতে হয়। যেরকম জ্ঞান নিলে তার
যেমন শতগুণ লাভ আছে, সেইরকমই জ্ঞান নিয়ে কোনো ভুল হয়ে গেলে তো শতগুণ শাস্তি ভোগ
আছে। এইজন্য অত্যন্ত সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে। ভুল করতে থাকলে তো দুর্বল হয়ে পড়বে,
এইজন্য ছোট-বড় ভুলকে ধরতে থাকো, ভবিষ্যতের জন্য পরীক্ষা করতে থাকো। দেখো, যে রকম
বুঝদার কোনো ধনী ব্যক্তি যখন কোনো ভুল কাজ করে, তখন তাকে অনেক বড় শাস্তি ভোগ করতে
হয়। আর যারা নিম্নমানের গরীব মানুষ হয়, কিছু খারাপ কাজ করলে, তাদের এতটা শাস্তি
ভোগ করতে হয় না। এখন তোমরাও পরমাত্মার বাচ্চা বলে নিজেদের পরিচয় দিচ্ছো তাে সেই
রকমভাবে তোমাদেরকে দৈবগুণ ধারণ করতে হবে। সত্য বাবার কাছে আসতে থাকো, তাই সত্য হয়ে
থাকতে হবে।
২) "পরমাত্মা
অন্তর্যামী" কিভাবে?
সাধারণ মানুষ বলে যে,
পরমাত্মা অন্তর্যামী, এখন অন্তর্যামীর অর্থ এটা নয় যে, সকলের হৃদয়ের কথা তিনি
জানতে পারেন। কিন্তু সৃষ্টি রচনার আদি মধ্য অন্তকে তিনি জানেন। বাকি এটা নয় যে,
পরমাত্মা রচয়িতা, পালনকর্তা আর সংহারকর্তা, তো এর থেকে এটা বোঝা যায় যে, পরমাত্মা
জন্ম দেন, পালন করেন আবার মেরেও দেন, কিন্তু এটা তো হয় না। সাধারণ মানুষ নিজের
কর্মের হিসেব নিকেশ দ্বারা জন্মগ্রহণ করে, তা বলে এই নয় যে, পরমাত্মা বসে তার
খারাপ সংকল্প আর ভালো সংকল্পকে জানবেন। তিনি তো জানেন যে, অজ্ঞানীদের হৃদয়ে কি চলতে
থাকে ? সারাদিন মায়াবী সংকল্প চলতে থাকে। আর জ্ঞানীদের অন্তরে শুদ্ধ সংকল্প চলতে
থাকে, বাকি এক এক সংকল্পকে বসে তিনি পড়েন না। তাছাড়া পরমাত্মা জানেন যে, এখন তো
সকল আত্মারই দুর্গতি হয়ে গেছে, তাদের সদ্গতি কিভাবে হবে, এই সমস্ত বিষয়
অন্তর্যামীর জানা আছে। এখন মানুষ যে কর্মভ্রষ্ট হয়ে গেছে, তাদেরকে শ্রেষ্ঠ কর্ম
করানো, শেখানো আর তাদেরকে কর্মবন্ধন থেকে মুক্তি দেওয়া, এটাই পরমাত্মা জানেন।
পরমাত্মা বলেন যে, আমি রচয়িতা আর আমার রচনার আদি মধ্য অন্তের এই সমস্ত জ্ঞানকে আমি
জানি, সেই পরিচয় তো বাচ্চারা, তোমাদের দিচ্ছি। এখন বাচ্চারা, তোমাদেরকে সেই বাবাকে
নিরন্তর স্মরণ করতে হবে, তবেই তোমরা সকল পাপ থেকে মুক্ত হতে পারবে অর্থাৎ অমর লোকে
যেতে পারবে, এখন এই জানাকেই অন্তর্যামী বলা হয়। আচ্ছা। ওম্ শান্তি।
অব্যক্ত ঈশারা :-
সত্যতা আর সভ্যতারূপী কালচারকে ধারণ করো
কখনও সভ্যতাকে ত্যাগ
করে সত্যতাকে প্রমাণ করা যায় না। সভ্যতার লক্ষণ হল নির্মানতা। এই নির্মানতা
নির্মাণের কাজ সহজ করে দেয়। যতক্ষণ না নির্মান হবে, ততক্ষণ নির্মাণ করতেও পারবে না।
জ্ঞানের শক্তি হলো শান্তি আর প্রেম। অজ্ঞানের শক্তি ক্রোধকে খুব ভালোভাবে সংস্কার
বানিয়ে ফেলেছো আর ইউজও করতে থাকো তারপর ক্ষমাও চাইতে থাকো। এইভাবেই এখন প্রত্যেক
গুণকে, প্রত্যেক জ্ঞানের কথাকে সংস্কার রূপে বানাও তাহলে সভ্যতা আসতে থাকবে।
জ্ঞানী তু আত্মা = তু
অর্থাৎ কিন্তু, যে পরমাত্ম জ্ঞানী হবে সে আমারই সমান (৭ম অধ্যায় ১৮ শ্লোক)