22.10.2024
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
বাবা তোমাদের যে নলেজ পড়ান, এতে ঋদ্ধি-সিদ্ধির কোনো ব্যাপার নেই, পড়াশুনায় কোনো
মন্ত্র তন্ত্রের দ্বারা কাজ চলে না"
প্রশ্নঃ -
দেবতাদের
জ্ঞান সম্পন্ন বলা যাবে, কিন্তু মানুষকে বলা যাবে না কেন?
উত্তরঃ
কারণ দেবতারা
হলেন সর্বগুণ সম্পন্ন আর মানুষের মধ্যে কোনো গুণ নেই। দেবতারা সর্বজ্ঞানী, তাই তো
মানুষ তাদের পূজা করে। তাদের ব্যাটারী চার্জড, সেইজন্য তাদের ওয়ার্থ পাউন্ড (অতিমূল্যবান)
বলা হয়ে থাকে। যখন ব্যাটরী ডিসচার্জ হয়ে যায়, তখন ওয়ার্থ পেনী (কপর্দকশূন্য) হয়ে
যায়, তখন বলা হয় অজ্ঞানী।
ওম্ শান্তি ।
বাবা
বাচ্চাদের বুঝিয়েছেন যে, এটা হলো পাঠশালা। এটা হলো পড়াশোনা । এই পড়াশোনার দ্বারা এই
পদ প্রাপ্ত হয়, একে স্কুল বা ইউনিভার্সিটি মনে করা উচিত। এখানে পড়াশোনার জন্য
দূর-দূরান্ত থেকে আসে। কি পড়তে আসে ? এই এইম অবজেক্ট বুদ্ধিতে আছে। আমরা এই পড়াশোনা
করতে আসি, পড়ান যিনি তাঁকে টিচার বলা হয়। গীতাই হলো ভগবানুবাচ। এর কোনো বিকল্প নেই।
যারা গীতা পড়ে তাদের পুস্তক আছে, কিন্তু পুস্তক ইত্যাদি কেউ অধ্যয়ণ করায় না। তিনি
কোনো গীতা হাতে নিয়ে পড়ান না । এ হলো ভগবানুবাচ। মানুষকে ভগবান বলা যায় না। ভগবান
হলেন উচ্চতমের চেয়েও উচ্চ, এক। মূলবতন, সূক্ষ্মবতন, স্থূলবতন- সবটাই হলো পুরো
ইউনিভার্স। সূক্ষ্মবতন বা মূলবতনে কোনো খেলা চলে না, নাটক এখানেই চলতে থাকে। ৮৪
জন্মের চক্রও হলো এখানে। একেই বলা হয় ৮৪ জন্মের চক্রের নাটক। এটা হলো পূর্ব-নির্মিত
খেলা। এটা বড় রকমের বোঝার ব্যাপার, কারণ উচ্চতমেরও উচ্চ যিনি ভগবান, তোমরা তাঁর মত
প্রাপ্ত করো। দ্বিতীয় কোনো বস্তু তো নেই-ই। একজনকেই বলা হয় সর্বশক্তিমান, ওয়ার্ল্ড
অলমাইটি অথরিটি (বিশ্বের সর্বশক্তিমান কর্তা)। অথরিটির অর্থও নিজেই বোঝান। এটা
মানুষ বুঝতে পারে না। কারণ তারা সকলে তমোপ্রধান, একে বলাই হয় কলিযুগ। এরকম নয় যে
কারোর জন্য কলিযুগ, কারোর জন্য সত্যযুগ, কারোর জন্য ত্রেতাযুগ। না, এখন যখন হলোই
নরক তো যে কোনো মানুষ এটা বলতে পারে না যে, আমার জন্য হলো স্বর্গ। কারণ আমার কাছে
অনেক ধন-দৌলত আছে। এটা হতে পারে না। এই খেলা পূর্ব-নির্ধারিত । সত্যযুগ এখন পাস্ট
হয়ে গেছে, এই সময় তার অস্তিত্ব থাকতে পারে না। এই সব হল বোঝার ব্যাপার। বাবা বসে
এই সব কথা বোঝান। সত্যযুগে এনাদের রাজ্য ছিল। ভারতবাসীকে সেই সময় সত্যযুগী বলতো।
এখন অবশ্যই কলিযুগী বলবে। সত্যযুগী ছিলো তো সেটাকে স্বর্গ বলা যেতো। এরকম নয় যে
নরককেও স্বর্গ বলবে। মানুষের তো নিজের নিজের মত আছে। সম্পদ সুখ থাকলে তো নিজেকে মনে
করে স্বর্গে আছে। আমার কাছে তো অনেক সম্পত্তি আছে সেইজন্য আমি স্বর্গে আছি। কিন্তু
বিবেক বলবে - এটা তো হলোই নরক। যতই কারো কাছে ১০ - ২০ লাখ থাকুক না কেন, এটা তো
হলোই রোগগ্রস্ত দুনিয়া। সত্যযুগকে বলা হবে নিরোগী দুনিয়া। দুনিয়া এটাই। সত্যযুগে
একে যোগী দুনিয়া বলা হবে, কলিযুগকে ভোগী দুনিয়া বলা হয়। সেখানে হলো যোগী, কারণ
বিকারের সাথে ভোগ-বিলাস হয় না। এটা তো হলো স্কুল, এতে শক্তির ব্যাপার নেই। টিচার
কি শক্তি দেখায়? এইম-অবজেক্ট থাকে, আমি অমুক হবো। তোমরা এই পড়াশোনার দ্বারা মানুষ
থেকে দেবতা হও। এইরকম নয় যে - কোনো যাদু, ছু-মন্ত্র বা ঋদ্ধি-সিদ্ধির কোনো ব্যাপার।
এটা তো হলো স্কুল। স্কুলে কোনো ঋদ্ধি-সিদ্ধির (অতিপ্রাকৃতিক) ব্যাপার হয় কি?
পড়াশুনা করে কেউ ডাক্তার, কেউ ব্যারিস্টার হয়। এই লক্ষ্মী-নারায়ণও মানুষ ছিলেন,
কিন্তু পবিত্র ছিলেন, সেইজন্য দেবী-দেবতা বলা হতো। পবিত্র অবশ্যই হয়। এটা হলোই
পতিত দুনিয়া।
মানুষ মনে করে দুনিয়া
পুরানো হতে লক্ষ বছর পড়ে রয়েছে । কলিযুগের পরেই সত্যযুগ আসবে। এখন তোমরা আছো
সঙ্গমে। এই সঙ্গমের কথা কারোর জানা নেই। সত্যযুগের সময়কাল লক্ষ বছর করে দেয়। এই কথা
বাবা এসে বোঝান। ওঁনাকে বলা হয় সুপ্রিম সোল। আত্মাদের পিতাকে বাবা বলা হবে। দ্বিতীয়
কোনো নাম হয় না। বাবার নাম হলো শিব। শিবের মন্দিরেও যায়। পরমাত্মা শিবকে নিরাকার
বলা হয়। ওঁনার মনুষ্য শরীর হয় না। তোমরা অর্থাৎ আত্মারা এখানে ভূমিকা পালন করতে
যখন আসো, তখন তোমাদের শরীর প্রাপ্ত হয়। তিনি হলেন শিব, তোমরা হলে শালগ্রাম। শিব আর
শালগ্রামের পূজাও হয়, কারণ চৈতন্য রূপে হয়েছিল। কিছু তো করে গিয়েছিল, তবে তো
ওনাদের নাম-বন্দনা মহিমা গাওয়া হয় বা পূজা করা হয়। পূর্ব-জন্মের কথা তো কারোর জানা
নেই। এই জন্মে তো মহিমা করো, দেবী-দেবতাদের পূজা করো। এই জন্মে তো অনেকে লিডারও
হয়েছে। যারা ভালো-ভালো সাধু-সন্ত ইত্যাদি এসেছিলেন যারা সুখ্যাতির জন্য স্ট্যাম্পও
তৈরী করা হয়েছে । এখানে আবার সবচেয়ে বড় নাম কার মহিমান্বিত ? সবচেয়ে বড়োর থেকেও বড়ো
কে ? উচ্চতমের চেয়েও উচ্চ এক হলেনই ভগবান। তিনি নিরাকার, ওঁনার মহিমা একদম আলাদা।
দেবতাদের মহিমা আলাদা, মানুষের আলাদা। মানুষকে দেবতা বলা যায় না। দেবতাদের মধ্যে
সর্বগুণ ছিলো, লক্ষ্মী-নারায়ণ আগেও হয়েছিলেন ! তারা পবিত্র ছিলো, বিশ্বের মালিক
ছিলো, তাদের পূজাও করা হয়। কারণ পবিত্র পূজ্য হয়, অপবিত্রকে পূজ্য বলা হবে না,
অপবিত্র সর্বদা পবিত্রকে পূজা করে। কন্যা পবিত্র বলে পূজা করা হয়, পতিত হলে তো
সকলের পায়ে পড়তে হয়। এই সময় সকলে পতিত, সত্যযুগে সকলে পবিত্র ছিলো। সেটা ছিলোই
পবিত্র দুনিয়া, কলিযুগ হলো পতিত দুনিয়া, তাই পতিত পাবন বাবাকে ডাকা হয়। যখন
পবিত্র থাকে তখন ডাকে না। বাবা নিজেই বলেন, আমাকে সুখের সময় কেউ স্মরণ করে না। এ হল
ভারতেরই কথা। বাবা আসেনই ভারতে। ভারতই এই সময় পতিত হয়ে গেছে, ভারতই পবিত্র ছিলো।
পবিত্র দেবতাদের দেখতে হলে মন্দিরে গিয়ে দেখো। দেবতারা সবাই পবিত্র, তাদের মধ্যে
যারা যারা প্রধান অর্থাৎ হেড তাদেরই মন্দিরে দেখানো হয়। এই লক্ষ্মী-নারায়ণের রাজ্যে
সবাই পবিত্র ছিলো, যেমন রাজা-রাণী তেমন প্রজা, এই সময় হলো সবাই পতিত। সকলে ডাকতে
থাকে - হে পতিত পাবন এসো। সন্ন্যাসীরা কৃষ্ণকে কখনো ভগবান বা ব্রহ্মা মানে না। তারা
মনে করে ভগবান তো নিরাকার, তাঁর চিত্রও নিরাকার ভাবে পূজা করা হয়। ওঁনার অ্যাকুউরেট
নাম হলো শিব। তোমরা অর্থাৎ আত্মারা যখন এসে শরীর ধারণ করো, তখন তোমাদের নাম রাখা হয়।
আত্মা হলো অবিনাশী, শরীর বিনাশী। আত্মা এক শরীর ছেড়ে গিয়ে দ্বিতীয় শরীর নেয়। ৮৪
জন্ম চাই যে । ৮৪ লক্ষ হয় না। তাই বাবা বোঝান, এই পুরানো দুনিয়া সত্যযুগে ছিল না,
রাইটিয়াস (ন্যায়নিষ্ঠ) ছিলো। এই দুনিয়াই আবার আনরাইটিয়স (পাপীষ্ঠ) হয়ে যায়।
সেটা হল সত্য-ভূমি, সকলেই সেখানে সত্য বলে। ভারতকে সত্য-ভূমি বলা হয়। মিথ্যা-ভূমিই
সত্য-ভূমিতে পরিণত হয়। সত্য বাবা এসেই সত্য-ভূমি তৈরী করেন। ওঁনাকে সত্যিকারের
রাজাধিরাজ, ট্রুথ (সত্য) বলা হয়। এটা হলই মিথ্যা-ভূমি। মানুষ যা বলে সেটা মিথ্যা।
দেবতাদের সেন্সিবল বুদ্ধি, ওনাদের মানুষ পূজা করে। জ্ঞানী আর অজ্ঞানী বলা হয়। জ্ঞানী
কে তৈরী করে আর অজ্ঞানী কে বানায় ? এটাও বাবা বলেন। জ্ঞানী, সর্বগুণ সম্পন্ন তৈরী
করেন বাবা। তিনি স্বয়ং এসে নিজের পরিচয় দেন। যেমন তোমরা হলে আত্মা আবার শরীরে
প্রবেশ করে ভূমিকা পালন করো। আমিও একবারই এনার মধ্যে প্রবেশ করি। তোমরা জানো তিনি
হলেনই এক। ওঁনাকেই সর্বশক্তিমান বলা হয়। দ্বিতীয় কোনো মানুষ নেই যাকে আমরা
সর্বশক্তিমান বলবো। লক্ষ্মী-নারায়ণকেও বলা যায় না কারণ ওনাদেরও শক্তি দেওয়ার জন্য
কেউ আছেন। পতিত মানুষের মধ্যে শক্তি থাকতে পারে না। আত্মাতে যে শক্তি থাকে সেটা
আবার আস্তে আস্তে ডিগ্রেট (নিস্তেজ)হয়ে যায় অর্থাৎ আত্মাতে যে সতোপ্রধান শক্তি ছিলো
সেটা তমোপ্রধান শক্তি হয়ে যায়। যেমন মোটর গাড়ীর তেল শেষ হয়ে গেলে মোটর দাঁড়িয়ে
পড়ে। এই ব্যাটারী ক্ষণে-ক্ষণে ডিসচার্জ হয় না, এর সম্পূর্ণ টাইম পাওয়া গেছে।
কলিযুগের শেষে ব্যাটারী ঠান্ডা হয়ে যায়। প্রথমে যে সতোপ্রধান বিশ্বের মালিক ছিলো,
এখন তমোপ্রধান হলে তো শক্তি কম হয়ে গেছে। শক্তি থাকে না। ওয়ার্থ নট পেনী (মূল্যহীন)
হয়ে যায়। ভারতে দেবী-দেবতা ধর্ম ছিলো তো ওয়ার্থ পাউন্ড (মহামূল্যের) ছিলো।
রিলিজিয়ন ইজ মাইট বলা হয়। দেবতা ধর্মে শক্তি রয়েছে । বিশ্বের মালিক হয়। কি শক্তি
ছিলো? কোনো লড়াই করার শক্তি নয় । শক্তি প্রাপ্ত হয় সর্বশক্তিমান বাবার থেকে। শক্তি
কি বস্তু?
বাবা বোঝান-মিষ্টি
মিষ্টি বাচ্চারা, তোমাদের আত্মা সতোপ্রধান ছিলো, এখন তমোপ্রধান। বিশ্বের মালিকের
পরিবর্তে বিশ্বের গুলাম হয়ে গেছে। বাবা বোঝান- এই পাঁচ বিকার রূপী রাবণ তোমাদের
সমস্ত শক্তি কেড়ে নেয়, সেইজন্য ভারতবাসী কাঙাল হয়ে পড়েছে। এরকম মনে করো না যে
সাইন্সের লোকেদের অনেক শক্তি, সেই শক্তি নেই। এটা আত্মিক শক্তি, যা সর্বশক্তিমান
বাবার সাথে যোগ যুক্ত হলে প্রাপ্ত হয়। এই সময় যেন সাইন্স আর সাইলেন্সের লড়াই। তোমরা
সাইলেন্সে যাও, তার শক্তি তোমরা প্রাপ্ত করছো। সাইলেন্সের শক্তি নিয়ে তোমরা
সাইলেন্স দুনিয়াতে চলে যাবে। বাবাকে স্মরণ করে নিজেকে শরীর থেকে ডিটাচ্ (পৃথক) করে
দাও। ভক্তি মার্গে ভগবানের কাছে যাওয়ার জন্য তোমরা অনেক মাথা ঠুকেছো। কিন্তু
সর্বব্যাপী বলার কারণে রাস্তাই প্রাপ্তি হয় না। তমোপ্রধান হয়ে গেছে। এটা হলো
অধ্যয়ণ, অধ্যয়ণকে শক্তি বলা হবে না। বাবা বলেন প্রথমে তো পবিত্র হও আর তারপর
সৃষ্টির চক্র কীভাবে আবর্তিত হয় তার নলেজ বোঝো। নলেজফুল তো একমাত্র বাবা, এতে
শক্তির ব্যাপার নেই। বাচ্চাদের এটা জানা নেই যে সৃষ্টি চক্র কীভাবে আবর্তিত হয়,
তোমরা অ্যাক্টররা তোমাদের ভূমিকা পালন করে থাকো । এ হল অসীম জগতের ড্রামা। আগে এই
সাকার লোকে যে সব নাটক অভিনীত হত, তখন সেখানে অ্যাক্টরের পরিবর্তন হতে পারতো। এখন
তো আবার বাইসকোপ তৈরী হয়েছে। বাবারও বাইসকোপের উদাহরণ দিয়ে বোঝানো সহজ হয়। ওটা ছোট
বাইসকোপ, এটা হলো বড় (অবিনাশী যে নাটক) । জাগতিক নাটকে অ্যাক্টর্স ইত্যাদিকে চেঞ্জ
করতে পারে। কিন্তু এটা তো হলো অনাদি ড্রামা। একবার যা শ্যুট হয়ে গেছে, সেটার আবার
পরিবর্তন করা যায় না। এই সমগ্র দুনিয়া হলো অসীম জগতের বাইসকোপ। এখন শক্তির কোনো
প্রশ্ন নেই। অম্বাকে শক্তি বলা হয় কিন্তু তবুও তার নাম তো আছে। ওনাকে অম্বা বলা হয়
কেন? উনি কি করে গেছেন? এখন তোমরা মনে করো যে, উচ্চতমের চেয়েও উচ্চ হলো অম্বা আর
লক্ষ্মী। অম্বাই আবার লক্ষ্মী হন। এটাও তোমরা অর্থাৎ বাচ্চারা বোঝো। তোমরা নলেজফুলও
হও আর তোমাদের পবিত্রতাও শেখানো হয়। সেই পবিত্রতা অর্ধ-কল্প চলে। আবার বাবা এসেই
পবিত্রতার রাস্তা বলে দেন। ওনাকে ডাকা হয়ই এইসময়ের জন্য যে, এসে রাস্তা বলে দাও
আর আবার গাইডও হও। তিনি হলেন পরমাত্মা, সুপ্রিমের পঠন-পাঠনের দ্বারা আত্মা সুপ্রিম
হয়। সুপ্রিম পবিত্রতাকে বলা হয়। এখন তো হলে পতিত, বাবা তো হলেন এভার পবিত্র।
পার্থক্য হয়ে যায়, তাই না। সেই এভার পবিত্রই যখন আসেন সকলকে উত্তরাধিকার দেন আর
শেখান। এতে নিজে এসে বলে দেন যে আমি তোমাদের বাবা। আমার তো অবশ্যই রথ চাই, সেটা না
হলে আত্মা বলবে কি ভাবে। রথও সুপ্রসিদ্ধ। মহিমা আছে ভাগ্যশালী রথ। তো ভাগ্যশালী রথ
হলো মানুষের, ঘোড়ার গাড়ীর কোনো ব্যাপার নেই। মানুষেরই রথ চাই, যে পথে বসে ত
মানুষকে বসে বোঝাবে। তারা আবার ঘোড়ার গাড়ীতে বসে আছে দেখিয়ে দিয়েছে। ভাগ্যশালী
রথ মানুষকে বলা হয়। এখানে তো কোনো-কোনো জানোয়ারেরও খুব ভালো ভাবে সেবা হয়, যা
মানুষেরও হয় না। কুকুরকে কতো ভালোবাসে। ঘোড়াকে, গরুকেও কতো ভালোবাসে। কুকুরের
এক্জিবিশন করে। এসব ওখানে (সত্যযুগে) হয় না। লক্ষ্মী-নারায়ণ কি আর কুকুর পুষবে !
বাচ্চারা, তোমরা এখন
জানো যে এই সময়ের মানুষরা সব তমোপ্রধান বুদ্ধি সম্পন্ন, ওদের সতোপ্রধান করতে হবে।
সেখানে তো ঘোড়া ইত্যাদি ওরকম হয় না যে, কোনো মানুষ তাদের সেবা করবে। তাই বাবা
বোঝান- তোমাদের অবস্থা দেখো কেমন হয়ে গেছে। রাবণ এই অবস্থা করে দিয়েছে, এই রাবণ
তোমাদের শত্রু হয়। কিন্তু তোমাদের জানা নেই যে এই শত্রুর জন্ম কবে হয়। শিবের
জন্মও জানা নেই তো রাবণের জন্মও জানা নেই। বাবা বলেন ত্রেতার শেষে আর দ্বাপরের
শুরুতে রাবণ আসে। ওর দশটি মাথা কেন দেখায়? প্রত্যেক বছর কেন দহন করবে? এটাও কেউ
জানে না। এখন তোমরা দেবতার থেকে মানুষ হওয়ার জন্য অধ্যয়ণ করছো, যারা অধ্যয়ণ করে
না তারা দেবতা হতে পারে না। তারা আবার আসবে যখন রাবণ রাজ্য শুরু হবে। এখন তোমরা জানো,
আমরা দেবতা ধর্মের ছিলাম আবার স্যাপলিং (চারা গাছের সারি) লাগানো হচ্ছে। বাবা বলেন
আমি প্রতি ৫ হাজার বছর পরে এসে তোমাদের এরকম পড়িয়ে থাকি। এই সময় সমগ্র সৃষ্টির
বৃক্ষ পুরানো। যখন নূতন ছিলো তো একই দেবতা ধর্ম ছিলো আবার ধীরে-ধীরে নীচে নামতে থাকে।
বাবা তোমাদের জন্মের হিসাব বলেন, কারণ বাবা তো হলেন নলেজফুল ! আচ্ছা !
মিষ্টি-মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
সাইলেন্সের শক্তি জমা করতে হবে। সাইলেন্স শক্তির দ্বারা সাইলেন্স দুনিয়াতে যেতে হবে।
বাবার স্মরণে থেকে শক্তি নিয়ে গোলামী থেকে মুক্ত হতে হবে, মালিক হতে হবে।
২ ) সুপ্রীমের পাঠ পড়ে
আত্মাকে সুপ্রীম হতে হবে। পবিত্রতার রাস্তাতে চলেই পবিত্র হয়ে অপরকেও পবিত্র বানাতে
হবে। গাইড হতে হবে।
বরদান:-
অল্ফ-কে
জেনে আর পবিত্রতার স্বধর্মকে গ্রহণকারী বিশেষ আত্মা ভব
বাপদাদা র আনন্দ হয়
যে, আমার এক একটি বাচ্চা হলো বিশেষ আত্মা - তা সে বৃদ্ধই হোক, অক্ষর জ্ঞানহীনই হোক,
ছোট বাচ্চা, যুবা কিম্বা প্রবৃত্তিতে থাকা আত্মারাই হোক, বিশ্বের সামনে তারা হলো
বিশেষ। জগতে যে যত বড় নেতাই হোক, অভিনেতাই হোক, বৈজ্ঞানিক হোক, কিন্তু অল্ফ-কেই যদি
না জানলে তবে কি জানলে! তোমরা নিশ্চয়বুদ্ধি হয়ে গর্বের সাথে বলে থাকো যে, তোমরা
খুঁজতে থাকো আর আমরা পেয়ে গেছি। প্রবৃত্তিতে থেকে পবিত্রতার স্বধর্মকে গ্রহণ করে
নেওয়ায় পবিত্র বিশেষ আত্মা হয়ে গেছো।
স্লোগান:-
যে নিজে
হাসিখুশী থাকে, সে-ই নিজের কাছে আর সকলের কাছে প্রিয় মনে হয়।