22.11.2024
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
বাবার শ্রীমতানুসারে চলাই হলো বাবার প্রতি রিগার্ড রাখা, মনমতে যারা চলে তারা
ডিস-রিগার্ড করে"
প্রশ্নঃ -
যারা গৃহস্থ
ব্যবহারে থাকে, বাবা তাদেরকে কোন্ বিষয়টিতে বারণ করেন না কিন্তু একটি পরামর্শ দেন -
সেটা কী ?
উত্তরঃ
বাবা বলেন -
বাচ্চা! অবশ্যই তুমি সকলের সম্পর্কে আসো, যদি কোনো কাজ-কর্মাদি (চাকরী) করতে হয় করো,
সম্বন্ধ-সম্পর্কে আসতে হয় আসো, যদি রঙিন বস্ত্র পড়তে হয় তাও পড়ো, বাবার এতে বারণ
নেই। বাবা তো শুধু পরামর্শ দেন - বাচ্চা! দেহ-সহ দেহের সর্ব-সম্বন্ধের থেকে
মোহমুক্ত হয়ে আমাকে স্মরণ করো।
ওম্ শান্তি ।
শিববাবা বসে
বাচ্চাদের বোঝান অর্থাৎ নিজ-সম তৈরী করার জন্য পুরুষার্থ করান। যেমন, আমি জ্ঞানের
সাগর তেমন বাচ্চারাও তৈরী হোক। একথা তো মিষ্টি বাচ্চারাও জানে যে, সকলেই এক সমান হবে
না। প্রত্যেককেই নিজের নিজের পুরুষার্থ করতে হবে। স্কুলে তো অনেক স্টুডেন্টই পড়ে
কিন্তু সকলেই তো এক সমান পাস উইথ অনার হয় না। তবুও টিচার পুরুষার্থ করায়। বাচ্চারা,
তোমরাও পুরুষার্থ কর। বাবা জিজ্ঞাসা করেন, তোমরা কী হবে? অর্থাৎ কোন্ পদ লাভ করবে?
সকলেই তখন বলবে যে, আমরা এসেছিই নর থেকে নারায়ণ, নারী থেকে লক্ষ্মী হওয়ার জন্য। সে
তো ভালো, কিন্তু নিজেদের অ্যাক্টিভিটিজ্ও (কাজকর্মাদি) দেখো, তাই না। বাবা হলেন
সর্বোচ্চ। তিনি শিক্ষক, আবার গুরুও। এই বাবাকে কেউ জানে না। বাচ্চারা, তোমরা জানো
যে শিববাবা আমাদের বাবাও, টিচারও, সতগুরুও। কিন্তু তিনি যেমন, ঠিক তেমনভাবে তাঁকে
জানা মুশকিল। বাবাকে জেনে গেলেও, ভুলে যায় তাঁর শিক্ষকতার রোল, তাঁর গুরুর রোল।
বাবার রিগার্ডও বাচ্চাদের রাখতে হবে। রিগার্ড কাকে বলে? বাবা যা পড়ান তা ভালোভাবে
পড়া অর্থাৎ বাবার রিগার্ড রাখা। বাবা হলেন অতি মিষ্টি। অন্তরে খুশীর পারদ
অধিকমাত্রায় চড়ে থাকা উচিত। খুশীতে গদগদ (পরমানন্দে) হয়ে থাকা উচিত। প্রত্যেকেই
নিজেকে প্রশ্ন করো - আমাদের কী এমন খুশী থাকে? সকলেই তো আর এক সমান হতে পারে না।
পড়াতেও প্রচুর বিভিন্নতা রয়েছে। লৌকিক স্কুলেও কত পার্থক্য থাকে। সেখানে ওই সাধারণ
টিচার পড়ায়, ইনি হলেন আন-কমন (অনন্য)। এমন টিচার আর কেউ হয়ই না। কেউ একথা জানেই না
যে নিরাকার ফাদার (আমাদের) টিচারও। যদিও তারা কৃষ্ণের নাম দিয়ে দায়েছে কিন্তু ওরা
জানেই না যে সে ফাদার কেমন করে হতে পারে। কৃষ্ণ তো দেবতা, তাই না। এমনিতে তো অনেকের
নামও কৃষ্ণ হয়। কিন্তু কৃষ্ণ বলতেই শ্রীকৃষ্ণ (চিত্র) সামনে চলে আসে। কিন্তু তিনি
তো দেহধারী, তাই না। তোমরা জানো যে, এই শরীর তাঁর (শিব বাবার) নয়। স্বয়ং তিনি বলেন
- আমি লোন নিয়েছি। ইনি (ব্রহ্মা) প্রথমেও মানুষ ছিলেন, এখনও মানুষ। ইনি ভগবান নন।
সে তো একজনই, নিরাকার তিনি । বাচ্চারা, বাবা এখন তোমাদের কত রহস্য বোঝান। কিন্তু
তথাপি ফাইনালি তাঁকেই বাবা মনে করা, টিচার মনে করা তা এখনই সম্ভব হবে না, প্রতি
মুহূর্তে ভুলে যাবে। দেহধারীদের দিকে বুদ্ধি চলে যাবে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে বাবা-ই
পিতা, শিক্ষক, সদ্গুরু - এই নিশ্চয় বুদ্ধিতে এখনও আসেনি। এখনও তো ভুলে যায়।
স্টুডেন্টস্ কী কখনও টিচারকে ভুলে যায়? হস্টেলে যারা থাকে তারা তো কখনোই ভুলবে না।
যে স্টুডেন্ট হস্টেলে থাকে তার তো পাকা হয়ে যাবে, তাই না। এখানে তো তাও সম্পূর্ণ
নিশ্চয় নেই। পুরুষার্থের নম্বরের ক্রমানুসারে হস্টেলে বসেছে তাহলে তো অবশ্যই
স্টুডেন্টস্ কিন্তু এই নিশ্চয় এখনও পাকা হয় নি। তারা জানে যে, সকলেই নিজের নিজের
পুরুষার্থ অনুসারে পদ প্রাপ্ত করছে। ওই পড়াশোনার মাধ্যমে তো কেউ ব্যারিস্টার, কেউ
ইঞ্জিনিয়ার হয়, ডাক্তার হয়। এখানে তোমরা বিশ্বের মালিক হচ্ছো। তাহলে এমন
স্টুডেন্টের বুদ্ধি কেমন হওয়া উচিত। চাল-চলন, বার্তালাপ কতখানি সুন্দর হওয়া উচিত।
বাচ্চারা, তোমরা কখনো
বিলাপ কোরবে না। তোমরা তো বিশ্বের মালিক হও। তোমাদের হায় হুসেন! অর্থাৎ হায় ঈশ্বর!
বলে বিলাপ করা উচিত নয়। হায়! হায়! করা অর্থাৎ এ হলো তারস্বরে কান্না। বাবা বলেন,
'যে কাঁদে সে হারায়..... বিশ্বের সর্বোচ্চ রাজ্য-ভাগ্য হারিয়ে ফেলে। তারা বলে - আমরা
নর থেকে নারায়ণ হতে এসেছি কিন্তু চাল-চলন তেমন কোথায়! পুরুষার্থের নম্বরের
ক্রমানুসারে সকলেই পুরুষার্থ করছে। কেউ ভালোভাবে উত্তীর্ণ হয়ে স্কলারশিপ পায়, কেউ
আবার অনুত্তীর্ণ হয়ে যায়। নম্বরের ক্রমানুসারে তো হয়েই থাকে। তোমাদের মধ্যেও কেউ পড়ে,
কেউ আবার পড়েও না। যেমন গ্রামের লোকেদের পড়তে ভালো লাগে না। ঘাস কাটতে যেতে বলো তখন
আনন্দের সঙ্গে যাবে। সেটাকেই স্বাধীন লাইফ বলে মনে করে। এমনও অনেকে আছে যারা
পড়াশোনাকে বন্ধন মনে করে। বিত্তবানদের মধ্যে জমিদাররাও কম নয়। নিজেদের স্বাধীন বলে
ভাবতে পছন্দ করে । কম সে কম এর নাম চাকরী তো নয়, তাই না। মানুষ তো অফিসাদি-তে চাকরী
করে, তাই না। বাচ্চারা, এখন তোমাদের বাবা পড়ান বিশ্বের মালিক করার জন্য। চাকরী করার
জন্য নয়। এই পড়াশোনার মাধ্যমে তোমরা বিশ্বের মালিক হবে, তাই না। এ অতি উচ্চমার্গের
পড়াশোনা। তোমরা তো সম্পূর্ণ স্বাধীন, বিশ্বের মালিক হয়ে যাও। কত সাধারণ কথা। এটাই
একমাত্র এমন পড়াশোনা যার মাধ্যমে তোমরা সুউচ্চ মহারাজা-মহারানী হয়ে যাও, তাও আবার
পবিত্র। তোমরা বল, যেকোন ধর্মেরই হোক, এসে পড়াশোনা করুক। তখন বুঝতে পারবে যে এই পড়া
কত উচ্চমার্গের। বিশ্বের মালিক হও, এ তো বাবা পড়ান। তোমাদের বুদ্ধি এখন কত বিশাল (তীক্ষ্ণবুদ্ধি)
হয়ে গেছে। পুরুষার্থের নম্বরের ক্রমানুসারে তোমরা এখন সসীম(হদ) জগতের বুদ্ধি থেকে
অসীম(বেহদ) জগতের বুদ্ধিসম্পন্ন হয়েছো, কত খুশী থাকে - আমরা সকলে আবার অন্যদেরও
বিশ্বের মালিক বানাবো। বাস্তবে চাকরী অবশ্যই ওখানেও থাকবে। দাস-দাসী ইত্যাদি তো চাই,
তাই না। অশিক্ষিতরা শিক্ষিতের কাছে মাথা নত করবে। তাই বাবা বলেন - ভালোভাবে পড়ো
তাহলে তোমরা এমন হতে পারবে। তারা বলেও যে, আমরা এমন হবো। কিন্তু পড়া না করলে কীভাবে
হবে। যারা পড়ে না, তাই তো বাবাকে অত্যন্ত রিগার্ডের সঙ্গে স্মরণও করে না। বাবা বলেন,
যত তোমরা স্মরণ করবে, তোমাদের বিকর্মও তত বিনাশ হবে। বাচ্চারা বলে, বাবা তুমি যেভাবে
চালাবে। বাবাও এঁনার দ্বারাই তো ওনার মত দেবেন, তাই না। কিন্তু এঁনার মতও গ্রহণ করে
না, তাও বস্তাপঁচা মনুষ্য-মতেই চলে। তারা দেখেও যে, শিববাবা এই রথ দ্বারা মত দেন,
তথাপি নিজের মতেই চলে। যে মতকে পাই-পয়সার, কড়িতুল্য মত বলা যায়, সেই মতানুসারে চলে।
রাবণের মতানুসারে চলতে-চলতে এইসময় কড়িতুল্য হয়ে গেছে। এখন (পরমাত্মা) রাম শিববাবা
মত দেন। নিশ্চয়েই বিজয়, এতে কখনো ক্ষতি হবে না। লোকসানকেও বাবা লাভে পরিণত করে
দেবেন। কিন্তু তা নিশ্চয়বুদ্ধিসম্পন্নদের জন্য। সংশয়বুদ্ধিসম্পন্নরা ভিতরে-ভিতরে
বাধাপ্রাপ্ত হবে। নিশ্চয়বুদ্ধিসম্পন্ন-দের কখনো বাধা আসতে, কখনও ক্ষতি হতে পারে না।
বাবা নিজেই গ্যারান্টি করেন - শ্রীমতানুসারে চললে কখনও অকল্যাণ হতে পারে না।
মনুষ্যমত-কে দেহধারীদের মত বলা হয়। এখানে তো সবই মনুষ্যযমত। গায়নও করা হয় -
মনুষ্য-মত, ঈশ্বরীয়-মত আর দৈবী-মত। এখন তোমরা ঈশ্বরীয় মত পেয়েছো, যার দ্বারা তোমরা
মানুষ থেকে দেবতা হয়ে যাও। ওখানে স্বর্গে তোমরা সুখই পাও। ওখানে কোন দুঃখের কথাই
নেই, সেটাও স্থায়ী সুখই। এইসময়ই তোমাদের সেটাকে ফিলিং এর আনতে হবে, তবেই ভবিষ্যতে
ফিলিং হবে।
এখন এ হলো পুরুষোত্তম
সঙ্গমযুগ, যখন আমরা শ্রীমত পাই। বাবা বলেন, আমি প্রতি কল্পে, কল্পের সঙ্গমযুগে আসি,
তা তোমরাই জানো। তাঁর মতানুসারে তোমরা চলো। বাবা বলেন - বাচ্চারা! গৃহস্থ ব্যবহারে
অবশ্যই থাকো, কে বলেছে তোমাদের বস্ত্রাদি বদল করতে। অন্য বস্ত্রও চাইলে পরিধান করো।
অনেকের সম্পর্কে তোমাদের আসতে হয়। রঙিন বস্ত্র পড়ার জন্য কেউ বারণ করে না। যে কোনো
বস্ত্র পড়ো, এরসঙ্গে কোন সম্পর্ক নেই। কিন্তু বাবা বলেন, দেহ-সহ দেহের সর্ব-সম্বন্ধ
পরিত্যাগ করো। তাছাড়া সবকিছুই পড়ো। শুধু নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করে বাবাকে স্মরণ করো,
একে দৃঢ়তার সাথে পাকা করো। তোমরা একথাও জানো যে, আত্মাই পতিত আর পবিত্র হয়,
মহাত্মা-কেও মহান আত্মা বলবে, মহান পরমাত্মা বলবে না। আর বলা শোভাও পায় না। বোঝার
জন্য কত ভাল-ভাল পয়েন্টস্ রয়েছে। সকলকে সদ্গতি প্রদান করা সদ্গুরু তো একজনই, তিনি
বাবা। ওখানে কখনও অকালমৃত্যু হয় না। বাচ্চারা এখন তোমরা বোঝো যে, বাবা আমাদের
পুনরায় এমন দেবতা বানাচ্ছেন। পূর্বে একথা বুদ্ধিতে ছিল না। কল্পের আয়ু কত, এও তো
জানা ছিল না। এখন সমস্ত স্মৃতিতে ফিরে এসেছে। বাচ্চারা, এও বোঝে যে, আত্মাকেই
পাপ-আত্মা, পুণ্য-আত্মা বলা হয়। পাপ-পরমাত্মা কখনো বলা হয় না। আবার তাও যদি কেউ বলে
যে, পরমাত্মা সর্বব্যাপী তাহলেও তা কত অবুঝের মতো কথা। একথা বাবা-ই বসে বোঝান। এখন
তোমরা জানো যে, ৫ হাজার বছর পরে বাবা-ই এসে পাপাত্মাদের পুণ্যাত্মায় পরিণত করেন।
একজনকে নয়, সব বাচ্চাদের তৈরী করেন। বাবা বলেন - বাচ্চারা, তোমাদের যিনি তৈরী করেন
সেই আমিই হলাম অসীম জগতের বাবা। অবশ্যই তিনি বাচ্চাদেরকে অসীম জগতের সুখ প্রদান
করবেন। সত্যযুগে থাকেই সব পবিত্র আত্মারা। রাবণের উপর বিজয় প্রাপ্ত করলেই তোমরা
পুণ্যাত্মা হয়ে যাও। তোমরা অনুভব করো যে, মায়া কত বিঘ্ন ঘটায়। একেবারে নাকে দম ধরিয়ে
দেয় (ভীষণ অতিষ্ঠ করে) । তোমরা জানো যে, মায়ার সঙ্গে যুদ্ধ কীভাবে হয়। ওরা (অজ্ঞানীরা)
আবার কৌরব আর পান্ডবদের যুদ্ধ, সৈন্য-সামন্ত ইত্যাদি কী-কী সব দেখিয়েছে। এই যুদ্ধের
কথা তো কেউ জানেই না। এ হলো গুপ্ত কথা। একে তোমরাই জানো। মায়ার সঙ্গে আমাদের অর্থাৎ
আত্মাদের যুদ্ধ করতে হবে। বাবা বলেন, তোমাদের সর্বাপেক্ষা বড় শত্রু হলো কাম-বিকার।
যোগবলের দ্বারা তোমরা এর উপর বিজয়লাভ কর। যোগবলের অর্থও কেউ বোঝে না। যিনি
সতোপ্রধান ছিলেন তিনিই তমোপ্রধান হয়ে গেছেন। স্বয়ং বাবা বলেন যে - এঁনার (ব্রহ্মা)
অনেক জন্মের অন্তিম লগ্নে আমি এঁনার মধ্যে প্রবেশ করি। তিনিই তমোপ্রধান হয়ে গেছেন,
তৎত্বম্। বাবা কি একজনকেই বলবেন, না তা বলবেন না। নম্বরের ক্রমানুসারে সকলকেই বলেন।
নম্বরের ক্রমানুসারে কে-কে রয়েছে, এখানে তোমরা জানতে পারো। ভবিষ্যতে তোমরা অনেককিছু
জানতে পারবে। তোমাদের মালার সাক্ষাৎকার করাব। স্কুলে যখন (এক ক্লাস থেকে অন্য ক্লাসে)
ট্রান্সফার হয় তখন সব জানা যায়, তাই না। রেজাল্ট পুরোপুরি তখন বেরিয়ে আসে।
বাবা তাঁর এক সন্তানকে
প্রশ্ন করে - তোমার প্রশ্নপত্র কোথা থেকে আসে? সে বলে লন্ডন থেকে। এখন তোমার পেপারস
কোথা থেকে আসবে? উপর থেকে। তোমাদের পেপার উপর থেকে আসবে। সবই সাক্ষাৎকার করবে। কেমন
বিস্ময়কর পড়াশোনা। কে পড়ায়, কেউ জানে না। কৃষ্ণ ভগবানুবাচ বলে দেয়। সকলেই নম্বরের
ক্রমানুসারে পড়া করে। তাই খুশীও থাকে নম্বরের ক্রমানুসারে। এই যে গায়নও হয়, 'অতীন্দ্রিয়
সুখ কি তা গোপ-গোপিনীদের কাছে জিজ্ঞাসা করো' - এ ভবিষ্যতের কথা। বাবা বুঝিয়েছেন,
বাবা অবশ্যই জানেন যে - এই বাচ্চারা কখনও অধঃপতনে যাবে না কিন্তু তবুও জানা নেই, কি
যে হয়ে যায়। পড়াশোনাই করে না, কারণ ভাগ্যে নেই। তাদেরকে যদি একটু বলা হয় যে, ওই
দুনিয়ায় গিয়ে নিজেদের ঘর বসাও, তাহলে তৎক্ষণাৎ চলে যাবে। কোথা থেকে বেরিয়ে কোথায় চলে
যায়। তাদের চলন-বলন, কর্মই এমন হয়। মনে করে আমরা যদি এতটা পাই, তাহলে আমরা গিয়ে
আলাদা থাকব। চাল-চলনেই বোঝা যায়। এর অর্থ নিশ্চয় নেই, বিবশতা (অসমর্থ) গ্রাস করেছে।
অনেকেই আছে যারা জ্ঞানের 'গ'-ও জানে না। কখনো বসেও না। মায়া পড়া করতে দেয় না। এমন
সব সেন্টারেই আছে। কখনো পড়তে আসে না। বিস্ময়কর, তাই না। এ কত উচ্চ জ্ঞান। ভগবান
পড়ান। বাবা বলেন, এমন কর্ম কোরোনা, কিন্তু মানে না। অবশ্যই উল্টোকর্ম (বিকর্ম) করে
দেখাবে। রাজধানী স্থাপিত হচ্ছে, তাতে তো বিভিন্ন প্রকারের (মানুষ) চাই, তাই না। উপর
(উচ্চপদ) থেকে নিয়ে নীচে (নিম্নপদ) পর্যন্ত সবরকমেরই তৈরী হয়। পদের পার্থক্য তো থাকে,
তাই না। এখানেও নম্বরের ক্রমানুসারেই পদ প্রাপ্ত করে। শুধু পার্থক্য কোথায়? ওখানে
দীর্ঘায়ু হয় এবং সুখ বিরাজ করে। এখানে স্বল্পায়ু হয় আর দুঃখ থাকে। বাচ্চাদের
বুদ্ধিতে এই ওয়ান্ডারফুল কথাগুলো থাকে। কেমনভাবে এই ড্রামা নির্ধারিত হয়ে রয়েছে।
পুনরায় প্রতি কল্পে আমরা সেই একই পার্ট প্লে করব। প্রতি কল্পে পালন করতেই থাকি। এত
ছোট আত্মায় কত পার্ট ভরা রয়েছে। একই ফীচার্স (আকৃতি/চেহারা), একই অ্যাক্টিভিটি
...... সৃষ্টির এই চক্র আবর্তিত হতেই থাকে। যা পূর্ব-নির্ধারিত তাই ঘটে চলেছে......
এই চক্র আবারও রিপীট হবে। সতোপ্রধান, সতঃ, রজঃ , তমঃ-তে আসবে। এতে বিভ্রান্ত হওয়ার
কথা নয়। আচ্ছা, নিজেকে আত্মা মনে কর কী? আত্মার পিতা শিববাবা, এটা তো জানো, তাই না।
যে সতোপ্রধান হয় সেই আবার তমোপ্রধান হয়ে যায়, পুনরায় বাবাকে স্মরণ করো সতোপ্রধান হয়ে
যাবে। এ তো ভালো, তাই না। ব্যস্, এই পর্যন্তই থামিয়ে দেওয়া উচিত। বলো যে, অসীম
জগতের বাবা এই স্বর্গের উত্তরাধিকার (বর্সা) দেন। তিনিই পতিত-পাবন। বাবা নলেজ দেন,
এরমধ্যে শাস্ত্রাদির কোনো ব্যাপার নেই। শুরুতেই শাস্ত্র কোথা থেকে আসবে। এসব যখন
অনেক হয়ে যায় তখন পরে বসে শাস্ত্র রচনা করে। সত্যযুগে শাস্ত্র থাকে না। কোনো কিছুই
পারম্পরিক হয় না। নাম-রূপ তো পরিবর্তিত হয়ে যাবে। আচ্ছা!
মিষ্টি মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা-রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
কখনো হায়! হায়! করে বিলাপ করা উচিত নয়। বুদ্ধিতে যেন থাকে যে আমরা বিশ্বের মালিক হতে
চলেছি, আমাদের চাল-চলন, বার্তালাপ অত্যন্ত সুন্দর হওয়া উচিত। কখনও বিলাপ করবে না।
২ )
নিশ্চয়বুদ্ধিসম্পন্ন হয়ে একমাত্র বাবার মতানুসারে চলতে হবে, কখনো বিভ্রান্ত হওয়া বা
অসমর্থ হওয়া উচিত নয়। নিশ্চয়েই বিজয়, তাই নিজের পাই-পয়সার (কড়িতুল্য) মত চালানো
উচিত নয়।
বরদান:-
যেকোনও
পরিস্থিতিতে ফুলস্টপ লাগিয়ে নিজেকে পরিবর্তনকারী সকলের আশীর্বাদের পাত্র ভব
যেকোনও পরিস্থিতিতে
ফুলস্টপ তখন লাগাতে পারবে যখন বিন্দু স্বরূপ বাবা আর বিন্দু স্বরূপ আত্মা, দুটোরই
স্মৃতি থাকবে। কন্ট্রোলিং পাওয়ার থাকবে। যে বাচ্চা কোনও পরিস্থিতিতে নিজেকে
পরিবর্তন করে ফুলস্টপ লাগানোতে নিজেকে প্রথমে অফার করে, সে-ই আশীর্বাদের পাত্র হয়।
সে নিজেকে নিজেই আশীর্বাদ করে অর্থাৎ খুশী প্রাপ্ত হয় আবার বাবার দ্বারা, ব্রাহ্মণ
পরিবারের দ্বারাও আশীর্বাদ প্রাপ্ত হয়।
স্লোগান:-
যে
সংকল্প করছো তাতে মাঝে মাঝে দৃঢ়তার স্ট্যাম্প লাগাও তাহলে বিজয়ী হয়ে যাবে।