22-12-2024 প্রাতঃ
মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ
17-03-2003 মধুবন
"সর্বদা এই স্বমানে থাকো, সম্মান দাও, সবার সহযোগী
হও আর সবাইকে সমর্থ বানাও"
আজ ভাগ্যবিধাতা বাপদাদা চতুর্দিকের প্রত্যেক বাচ্চার ললাটে ভাগ্যের তিন রেখা দেখছেন।
এক পরমাত্ম পালনের ভাগ্যবান রেখা, দুই - সত্য শিক্ষকের শিক্ষার ভাগ্যবান রেখা, তিন-
শ্রীমতের ঝলমলে রেখা। চতুর্দিকের বাচ্চাদের ললাটের মাঝখানে তিন রেখা খুব ভালো ভাবে
জ্বলজ্বল করছে। তোমরাও সবাই নিজেদের ভাগ্যের তিন রেখা দেখতে পাচ্ছো তো না! যখন
ভাগ্যবিধাতা তোমরা সব বাচ্চার বাবা তখন তোমরা ব্যতীত শ্রেষ্ঠ ভাগ্য অন্য কারও হতে
পারে! বাপদাদা দেখছেন বিশ্বে অনেক কোটি আত্মা রয়েছে, কিন্তু সেই কোটি কোটির মধ্যে
থেকে ৬ লাখ পরিবার... কত অল্প! কোটি কোটির মধ্যে কতিপয় হয়ে গেল তো না! বাস্তবে,
সব মানবের জীবনে তিনটি বিষয় - লালন পালন, পড়াশোনা এবং শ্রেষ্ঠ মত, এই তিনটিই
আবশ্যক। কিন্তু এই পরমাত্ম লালনপালন এবং দেব আত্মা ও মানব আত্মাদের মত, প্রতিপালন,
পঠনপাঠনে রাতদিনের ব্যবধান। তো এত শ্রেষ্ঠ ভাগ্য যা তোমাদের সংকল্পেও ছিল না, কিন্তু
এখন প্রত্যেকের হৃদয় গেয়ে থাকে - 'পেয়ে গেছি' । পেয়ে গেছ, নাকি পাওয়া বাকি আছে?
কী বলবে? পেয়ে গেছ তো না! বাবাও এমন বাচ্চাদের ভাগ্য দেখে আনন্দিত হন। বাচ্চারা বলে
বাঃ বাবা বাঃ! আর বাবা বলেন বাহ্ বাচ্চারা বাঃ! বস্তুত, এই ভাগ্যকে শুধু স্মৃতিতে
রাখা নয় বরং সদা স্মৃতিস্বরূপ থাকতে হবে। কিছু কিছু বাচ্চা খুব ভালো ভাবতে পারে
কিন্তু ভাবনা স্বরূপ হওয়া উচিত নয়, স্মৃতিস্বরূপ হতে হবে। স্মৃতি স্বরূপ তথা
সমর্থ স্বরূপ। ভাবনা স্বরূপ সমর্থ স্বরূপ নয়।
বাপদাদা বাচ্চাদের বিভিন্ন রকমের লীলা দেখতে দেখতে মৃদু মৃদু হাসতে থাকেন। কেউ কেউ
ভাবনা স্বরূপ থাকে, সদা স্মৃতি স্বরূপ থাকে না। কখনো ভাবনা স্বরূপ, কখনও স্মৃতি
স্বরূপ। যারা স্মৃতিস্বরূপ থাকে তারা নিরন্তর ন্যাচারাল স্বরূপ থাকে। যারা ভাবনা
স্বরূপ থাকে তাদের পরিশ্রম করতে হয়। এই সঙ্গম যুগ পরিশ্রমের নয়, সর্বপ্রাপ্তির
অনুভবের যুগ। ৬৩ জন্ম পরিশ্রমের, কিন্তু এখন পরিশ্রমের ফল প্রাপ্ত করার যুগ অর্থাৎ
সময়।
বাপদাদা দেখছিলেন যে দেহ ভাবের স্মৃতিতে থাকায় তোমরা কী পরিশ্রম করেছ - আমি অমুক,
আমি অমুক... এই পরিশ্রম করেছ! এটা ন্যাচারাল ছিল তো না! বডি কনসাসনেস এর নেচার হয়ে
গেছে, তাই না! নেচার এত পোক্ত হয়ে গেছে যে এখনও কখনো কখনো অনেক বাচ্চার
আত্ম-অভিমানী হওয়ার সময় বডি কনসাসনেস নিজের দিকে আকর্ষণ করে নেয়। ভাবে আমি আত্মা,
আমি আত্মা, কিন্তু দেহবোধ এত ন্যাচারাল ছিল যে বারবার না চাইতেও, না ভাবলেও দেহবোধে
এসে যায়। বাপদাদা বলেন এখন মরজীবা জন্মে আত্ম-অভিমান অর্থাৎ দেহী অভিমানী স্থিতিও
এরকমই নেচার হবে এবং ন্যাচারাল হবে। পরিশ্রম করতে হবে না - আমি আত্মা, আমি আত্মা।
যেমন, কোনো বাচ্চার জন্ম হওয়ার পর সে যখন একটু একটু বুঝতে শেখে তখন তাকে তার পরিচয়
দেওয়া হয়ে থাকে - তুমি কে, তুমি কার, ঠিক এইরকমই তোমরা যখন ব্রাহ্মণ জন্ম নিয়েছ,
তখন তোমরা ব্রাহ্মণ বাচ্চারা জন্মানোর সাথে সাথেই কী পরিচয় পেয়েছিলে? 'তুমি কে?'
আত্মার পাঠ পাক্কা করানো হয়েছে, তাই না! তো এই প্রথম পরিচয় যেন ন্যাচারাল নেচার
হয়ে যায়। ন্যাচারাল নেচার নিরন্তর থাকে, স্মরণ করতে হয় না। ঠিক এইরকমই সব
ব্রাহ্মণ বাচ্চার এখন সময় অনুসারে দেহী অভিমানী স্টেজ ন্যাচারাল হওয়া উচিত। কিছু
বাচ্চার রয়েছে, ভাবতে হয় না, তারা স্মৃতিস্বরূপ। এখন স্মৃতি স্বরূপ নিরন্তর এবং
ন্যাচারাল হতেই হবে। লাস্টে, সব ব্রাহ্মণের ছোট অন্তিম পেপার এটাই - "নষ্টমোহ স্মৃতি
স্বরূপ।"
তো এই বছরে কী করবে? কোনো কোনো বাচ্চা জিজ্ঞাসা করে - এই বছরে বিশেষ কোন্ লক্ষ্য
রাখবে। তো বাপদাদা বলেন, সদা দেহী অভিমানী, স্মৃতি স্বরূপ ভব। জীবনমুক্তি তো
প্রাপ্ত হওয়ারই আছে কিন্তু জীবনমুক্ত হওয়ার আগে পরিশ্রম-মুক্ত হও। এই স্থিতি
সময়কে সমীপে নিয়ে আসবে তোমাদের বিশ্বের সমুদয় ভাই আর বোনকে দুঃখ, অশান্তি থেকে
মুক্ত করবে। তোমাদের এই স্থিতি আত্মাদের জন্য মুক্তিধামের দরজা খুলবে। তো তোমাদের
ভাই বোনেদের প্রতি দয়া আসে না! চারদিকে কত আত্মারা চিৎকার করছে, সুতরাং তোমাদের
মুক্তি সকলের মুক্তি প্রাপ্ত করাবে। এটা চেক করো - ন্যাচারাল স্মৃতি তথা সমর্থ
স্বরূপ কতখানি হয়েছ! সমর্থ স্বরূপ হওয়াই ব্যর্থকে সহজে সমাপ্ত করে দেবে। বারবার
পরিশ্রম করতে হবে না।
এখন এই বছরে বাপদাদা বাচ্চাদের প্রতি স্নেহের জন্য কোনও বাচ্চার কোনো রকম সমস্যাতে
তাদের পরিশ্রম করতে দেখতে চান না। সমস্যা সমাপ্ত আর সমাধান সমর্থ স্বরূপ। এটা হতে
পারে কী? দাদিরা বলো, হতে পারে? টিচার্স বলো হতে পারে? পান্ডব, হতে পারে? পরে
অজুহাত দেখিয়ে বোলো না - এটা ছিল তো না, এটা হয়েছে তো না! এটা হয় না তো হয় না!
বাপদাদা তোমাদের খুব মিষ্টি মিষ্টি খেলা আগেই দেখে নিয়েছেন। যা কিছু হয়ে যাক,
হিমালয়ের থেকেও বড়, শতগুন সমস্যার স্বরূপ হোক, হতে পারে তা' তন দ্বারা, মন দ্বারা,
ব্যক্তি দ্বারা, প্রকৃতি দ্বারা সমস্যা, পর-স্থিতি তোমাদের স্ব-স্থিতির সামনে কিছুই
না, আর স্ব-স্থিতির সাধন হলো - স্বমান। স্বমান ন্যাচারাল রূপে হবে। যেন মনে করার
দরকার না হয়! বারংবার পরিশ্রম করার দরকার না হয় - না-না আমি স্বদর্শন চক্রধারী,
আমি আলোক রত্ন, আমি হৃদয় সিংহাসনাসীন... আমি এটাই। আর কিছু হওয়ার আছে কী! পূর্ব
কল্পে কী হয়ে ছিলে? অন্য কেউ হয়েছিল, নাকি তুমিই হয়ে ছিলে? তুমিই ছিলে, তুমিই আছ,
প্রতি কল্প তুমিই হবে। এটা নিশ্চিত। বাপদাদা সব মুখ দেখছেন, এরা সেই, পূর্ব কল্পের।
তোমরা এই কল্পের নাকি অনেক কল্পের? অনেক কল্পের তো না! হও তোমরা? হাত তোলো যারা
প্রতি কল্পের। তবে তো নিশ্চিত তোমরা, তাই না, তোমরা তো পাশ সার্টিফিকেট পেয়ে গেছ
তো না, নাকি নেওয়া বাকি আছে? পেয়ে গেছো না? পেয়ে গেছো নাকি নিতে হবে? পূর্ব কল্পে
পেয়েছ, এখন কেন পাবে না! তো এই স্মৃতি স্বরূপ হও যে, সার্টিফিকেট প্রাপ্ত হয়েই আছে।
হয় তা' পাস উইথ অনার-এর, নতুবা, পাস-এর, এই পার্থক্য তো হবে, কিন্তু আমিই হই।
নিশ্চিত তো না! নাকি ট্রেনে যেতে যেতে ভুলতে ভুলতে যাবে, প্লেনে যাবে তো উড়ে যাবে?
না।
যেমন দেখো, এই বছর, তোমরা দৃঢ় সংকল্প করেছিলে যে চতুর্দিকে উৎসাহ উদ্দীপনার সাথে
শিবরাত্রি উদযাপন করবে আর তোমরা উদযাপন করেছ, করেছ না! তোমাদের দৃঢ় সংকল্পের
মাধ্যমে যা ভেবেছ তা' সম্পন্ন হয়েছে না! তো এটা কোন বিষয়ের চমৎকার? একতা আর দৃঢ়তা।
৬৭টা প্রোগ্রাম করার জন্য তোমরা ভেবেছিলে, কিন্তু বাপদাদা দেখেছেন যে, অনেক বাচ্চা
তার থেকেও বেশি প্রোগ্রাম করেছে। এটা হলো সমর্থ স্বরূপ হওয়ার লক্ষণ, উৎসাহ
উদ্দীপনার প্রত্যক্ষ প্রমাণ। সর্বত্র, তোমরা আপনা থেকেই এটা করেছ তো না! এভাবেই
সবাই মিলে একে অপরের মনোবল বাড়িয়ে এই সংকল্প করো - এখন সময়কে সমীপে নিয়ে আসতেই
হবে। আত্মাদের মুক্তি প্রাপ্ত করাতে হবে। যতই হোক, এটা তখনই হবে যখন তোমাদের ভাবনা
স্মৃতি স্বরূপে আনবে।
বাপদাদা শুনেছেন যে, ফরেনের যারা তাদেরও বিশেষ স্নেহ মিলন বা মিটিং আছে এবং ভারতের
যারা তাদেরও মিটিং আছে তো মিটিংয়ে শুধু সেবার প্ল্যান বানিও না, বানিও কিন্তু
ব্যালেন্সের বানিও। এভাবে একে অন্যের সহযোগী হও যাতে সবাই মাস্টার সর্বশক্তিমান হয়ে
সামনে উড়ে চলে। দাতা হয়ে সহযোগ দাও। পরিস্থিতি দেখো না, সহযোগী হও। স্বমানে থাকো
এবং সম্মান দিয়ে সহযোগী হও, কেননা যে কোনও আত্মাকে যদি তুমি হৃদয় থেকে সম্মান দাও
তবে তা' অনেক অনেক বড় পুণ্য। কারণ হীনবল আত্মাকে উৎসাহ উদ্দীপনায় যদি আনো তো সেটা
কত বড় পুণ্য! যারা আগে থেকেই পড়ে আছে তাদের ঠেলে দিও না, আলিঙ্গন করো অর্থাৎ
বাহ্যিক আলিঙ্গন ক'রো না, আলিঙ্গন করা অর্থাৎ বাবা সমান বানাও। সহযোগ দাও।
বাবা তোমাদের জিজ্ঞাসা করেছেন তো না যে এই বছর কী কী করতে হবে? কেবল সম্মান দাও আর
স্বমানে থাকো। সমর্থ হয়ে সমর্থ বানাও। ব্যর্থ বিষয়ে যেয়ো না। যে দুর্বল আত্মা
দুর্বলই, তার দুর্বলতাই যদি দেখতে থাকো তবে তারা সহযোগী কীভাবে হবে? সহযোগ দাও তো
আশীর্বাদ প্রাপ্ত হবে। সর্বাপেক্ষা সহজ পুরুষার্থ হলো - আশীর্বাদ দাও, আশীর্বাদ নাও।
সম্মান দাও আর মহিমা যোগ্য হও। যারা সম্মান দেয় তারাই সর্ব দ্বারা সম্মানীয় হয়।
তাছাড়া, এখন যত সম্মানীয় হবে, ততই রাজ্য অধিকারী এবং পূজ্য আত্মা হবে। নিরন্তর
দিয়ে যাও, নেওয়ার জন্য নয়। নেবে আর দেবে এটা তো যারা বিজনেসের সঙ্গে রয়েছে
তাদের কাজ। তোমরা তো দাতার বাচ্চা। বাপদাদা চতুর্দিকের বাচ্চাদের সেবা দেখে খুশি,
সবাই ভালো সেবা করেছ। কিন্তু এখন এগিয়ে যেতে হবে তো না! বাণী দ্বারা সবাই ভালো সেবা
করেছ, সাধন দ্বারাও সেবার ভালো রেজাল্ট লাভ করেছ। অনেক আত্মার অভিযোগও সমাপ্ত করেছ।
সেইসঙ্গে সময়ের তীব্র গতির প্রগতি দেখে বাপদাদা এটাই চান যে শুধু অল্প কিছু আত্মার
সেবা নয়, বরং বিশ্বের সর্ব আত্মার মুক্তিদাতা তোমরা নিমিত্ত, কেননা তোমরা বাবার
সাথী, তো সময়ের গতি অনুসারে এখন একই সময় একত্রে তিন সেবা করতে হবে:–
এক বাণী, দুই স্ব শক্তিশালী স্থিতি এবং তিন শ্রেষ্ঠ আধ্যাত্মিক ভাইব্রেশন, যেখানেই
সেবা করো সেখানে এমন আধ্যাত্মিক ভাইব্রেশন ছড়িয়ে দাও যাতে ভাইব্রেশনের প্রভাবে
সহজে আকৃষ্ট হতে থাকে। দেখো, এখন লাস্ট জন্মেও তোমাদের জড় চিত্র কীভাবে সেবা করছে!
বাণীর দ্বারা বলে কী? ভাইব্রেশন এমন হয় যে ভক্তদের ভাবনার ফল সহজে প্রাপ্ত হয়।
ভাইব্রেশন যেন এমনই শক্তিশালী হয়, ভাইব্রেশনে সর্বশক্তির কিরণ ছড়িয়ে পড়ে,
বায়ুমন্ডল বদলে যায়। ভাইব্রেশন এমন জিনিস যে হৃদয়ে ছাপ পড়ে যায়। তোমাদের সকলের
অনুভব আছে কোনো আত্মার প্রতি যদি কোনো ভালো কিংবা খারাপ ভাইব্রেশন তোমাদের হৃদয়ে
বসে যায় তবে সেটা কত সময় পর্যন্ত চলে? অনেক সময় চলে তো না! যদি বের করতেও চাও
তবুও বের হয় না, কারও খারাপ ভাইব্রেশন বসে গেলে তা' সহজে বের হয়? সুতরাং তোমাদের
সর্বশক্তির কিরণের ভাইব্রেশন, ছাপের কাজ করবে। বাণী ভুলতে পারো, কিন্তু ভাইব্রেশনের
ছাপ সহজে বের হয় না। অনুভব আছে তো না! আছে না অনুভব?
এই গুজরাট, বম্বে যে উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখিয়েছে, বাপদাদা তারও পদ্ম-পদ্মগুন অভিনন্দন
জানাচ্ছেন । কেন? বিশেষত্ব কী ছিল? কেন অভিনন্দন জানিয়েছেন? তোমরা তো বড়-বড়ো
ফাংশন করতে থাকো কিন্তু কেন বিশেষ অভিনন্দন জানাচ্ছেন? কারণ উভয় তরফেই একতা আর
দৃঢ়তার বিশেষত্ব ছিল। যেখানে একতা এবং দৃঢ়তা থাকে সেখানে এক বছরের পরিবর্তে, এক
বছরের কাজ এক মাসের সমান হয়। শুনেছো - গুজরাট আর বম্বে?
এখন সেকেন্ডে জ্ঞান সূর্য স্থিতিতে স্থিত হয়ে চারদিকের ভীত-সন্ত্রস্ত, অস্থির
আত্মাদের, সর্বশক্তির কিরণ ছড়িয়ে দাও। তারা খুব ভীতসন্ত্রস্ত। শক্তি দাও।
ভাইব্রেশন ছড়িয়ে দাও। আচ্ছা। (বাপদাদা ড্রিল করালেন)
চতুর্দিকের বাচ্চাদের ভিন্ন ভিন্ন স্মরণ স্নেহ আর সমাচার পত্র এবং ই-মেল বাবার কাছে
পৌঁছে গেছে। প্রত্যেকে বলে আমারও স্মরণ দিও, আমারও স্মরণ দিও। বাপদাদা বলেন,
প্রত্যেক বাচ্চার ভালোবাসা বাপদাদার কাছে পৌঁছে গেছে। দূরে বসেও তারা বাপদাদার হৃদয়
সিংহাসনাসীন। তো যারাই তোমাদেরকে বলেছে না - স্মরণ দিও, স্মরণ দিও, তো বাবার কাছে
পৌঁছে গেছে। এটাই বাচ্চাদের ভালোবাসা এবং বাবার ভালোবাসা বাচ্চাদের ওড়াচ্ছে। আচ্ছা।
চতুর্দিকের অতি শ্রেষ্ঠ ভাগ্যবান, কোটি কোটির মধ্যে কিছু বিশেষ আত্মাকে, যারা সদা
স্বমানে থাকে, সম্মান দেয় এমন সার্ভিসেবল বাচ্চাদের, সদা স্মৃতি স্বরূপ তথা সমর্থ
স্বরূপ আত্মাদের, সদা অবিচল, অটল স্থিতির আসনে স্থিত সর্বশক্তি স্বরূপ বাচ্চাদের
স্মরণের স্নেহ-সুমন আর নমস্কার।
দাদিজীর সাথে – বাপদাদা আপনার
প্রতি বিশেষভাবে খুশি। কেন খুশি? এই বিষয়ে তিনি বিশেষ খুশি যে, ব্রহ্মা বাবা যেমন
সবাইকে অর্ডার করতেন এটা করতে হবে, এখন করতে হবে, একইরকমভাবে আপনিও ব্রহ্মা বাবাকে
ফলো করেছেন। (আপনিও আমার সাথে আছেন) সে তো আছিই, নিমিত্ত আপনি হয়েছেন তো না! আর
এমন দৃঢ় সংকল্প করেছেন যে চতুর্দিকে সফলতা হয়েছে, সেইজন্য আপনার মধ্যে অনেক গভীর
আধ্যাত্মিক শক্তি ভরা রয়েছে । শরীরের স্থিতি ঠিক আছে, আপনার মধ্যে আধ্যাত্মিক শক্তি
এতই পরিপূর্ণ হয়ে রয়েছে যে সেই তুলনায় আপনার শারীরিক অবস্থা কিছুই নয় । চমৎকার,
তাই না!
দাদিদের মিলন দেখে সবার মন চায় আমিও যদি দাদি হতাম তো এভাবে মিলিত হতে পারতাম তো
না! তোমরাও দাদি হবে। এখন বাপদাদা তাঁর হৃদয়ে প্ল্যান বানিয়েছেন, সেটা তোমাদের
এখনো দেননি। তো ব্রহ্মা বাবার সাকার সময়ে সেবাতে যে আদি রত্ন বের হয়েছে তাদের
সংগঠনকে মজবুত বানাতে হবে। (কবে করবো?) যখন তোমরা করবে। এই ডিউটি আপনার (দাদি
জানকির) তোমাদের হৃদয়ের সঙ্কল্পও তো আছে, আছে না? কেননা যেমন তোমরা সব দাদির একতা
আর দৃঢ়তার সংগঠন শক্তিশালী, তেমনই সেবার আদি রত্নদের সংগঠন যেন শক্তিশালী হয়, এর
অনেক অনেক আবশ্যকতা রয়েছে, কেননা সেবার অগ্রগতি তো হতেই হবে। সুতরাং সংগঠনের শক্তি
যা চায় তাই করতে পারে। পঞ্চ পান্ডব হলো সংগঠনের প্রতীকী স্মারক। সংখ্যায় তারা
পাঁচ কিন্তু সংগঠনের নিদর্শন হলো এটা। আচ্ছা - সাকার ব্রহ্মার সময় সেবার জন্য যারা
সেন্টারে থেকেছো, সেবাতে নিয়োজিত ছিলে, তারা উঠে দাঁড়াও। ভাইরাও আছে, পান্ডব
ব্যতীত থোড়াই উন্নতি হবে! এখানে অল্প আছে কিন্তু আরও আছে। সংগঠনকে একত্র করার
দায়িত্ব এনার (দাদি জানকির)। ইনি (দাদি) তো ব্যাকবোন। এঁরা খুব ভালো ভালো রত্ন।
আচ্ছা। সব ঠিক আছে। তোমরা যা কিছুই করতে থাকো সেটা তোমাদের সংগঠনের মহত্ত্ব।
তোমাদের কেল্লা মজবুত। আচ্ছা।
বরদান:-
স্বমানের সিটে সেট হয়ে সব পরিস্থিতিকে পার করে সদা
বিজয়ী ভব
সদা নিজের এই সিটে স্থিত থাকো যে আমি সদা বিজয়ী
রত্ন, মাস্টার সর্বশক্তিমান... তো যেমন সিট তেমন লক্ষণ এসে যায়। যে কোনো পরিস্থিতি
সামনে এলে সেকেন্ডে নিজের এই সিটে সেট হয়ে যাও। যারা সিটে থাকে তাদের কথাই মানা হয়।
সিটে যদি থাকো তো বিজয়ী হয়ে যাবে। সঙ্গম যুগ হলোই বিজয়ী হওয়ার যুগ, এই যুগ
বরদান প্রাপ্ত, সুতরাং বরদানী হয়ে বিজয়ী হও।
স্লোগান:-
যারা সর্ব আসক্তির উপরে বিজয় প্রাপ্ত করে তারা শিব
শক্তি পান্ডব সেনা।