23-02-2025 প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ 17-02-2004 মধুবন


“শিবরাত্রি জন্ম উৎসবের বিশেষ স্লোগান – সবাইকে সহযোগ দাও আর সহযোগী বানাও, সদা অখন্ড অবিনাশী ভান্ডার নিরন্তর চলতে দাও"


আজ বাপদাদা স্বয়ং নিজের সাথে বাচ্চাদের হিরে তুল্য জন্মদিন শিব জয়ন্তী উদযাপন করতে এসেছেন। তোমরা সব বাচ্চা নিজের পারলৌকিক, অলৌকিক বাবার বার্থ ডে উদযাপন করতে এসেছ তো বাবা আবার তোমাদের জন্মদিন উদযাপন করতে এসেছেন। বাবা বাচ্চাদের ভাগ্যকে দেখে আনন্দিত হন বাঃ! আমার শ্রেষ্ঠ ভাগ্যবান বাচ্চারা বাঃ, যারা বাবার সাথে সাথে অবতরিত হয়েছে বিশ্বের অন্ধকার মুছে দেওয়ার জন্য। সমগ্র কল্পে এমন বার্থ ডে কারও হতে পারে না, যা তোমরা বাচ্চারা পরমাত্ম বাবার সাথে উদযাপন করছ। অলৌকিক অতি অনুপম, অতি সুন্দর এই জন্মদিন ভক্ত আত্মারাও উদযাপন করে, কিন্তু তোমরা বাচ্চারা মিলন উদযাপন করো আর ভক্ত আত্মারা শুধু মহিমা গাইতে থাকে। মহিমাও গায়, আর্তস্বরে আহ্বানও করে, বাপদাদা ভক্তদের মহিমা আর আর্ত চিৎকার শুনে তাদেরকেও নম্বরক্রমানুসারে ভাবনার ফল দিয়েই থাকেন। কিন্তু ভক্ত আর বাচ্চাদের মধ্যে বিশাল প্রভেদ রয়েছে। তারা তোমাদের করা শ্রেষ্ঠ কর্ম, শ্রেষ্ঠ ভাগ্যের স্মৃতিরূপ খুব ভালো ভাবে পালন করে। সেইজন্য বাপদাদা ভক্তদের ভক্তির লীলা দেখে তাদেরও অভিনন্দন জানান কেননা, তারা সব স্মৃতিরূপ ভালো করে কপি করেছে। তারাও এই দিনে ব্রত রাখে, তারা ব্রত রাখে অল্প সময়ের জন্য, অল্পকালের খাওয়া-দাওয়া এবং শুদ্ধির জন্য। তোমরা ব্রত নাও সম্পূর্ণ পবিত্রতা, যাতে আহার-ব্যবহার, বচন, কর্ম, সম্পূর্ণ জন্মের জন্য ব্রত নিয়ে থাকো। যতক্ষণ পর্যন্ত সঙ্গমের জীবনে বেঁচে থাকতে হবে ততক্ষণ পর্যন্ত মন-বচন-কর্মে পবিত্র হতেই হবে। না শুধু হতে হবে বরং বানাতেও হবে। তো দেখ ভক্তদের বুদ্ধিও কম নয়, খুব ভালো ভাবে স্মৃতিরূপের কপি করেছে। তোমরা সবাই সমস্ত ব্যর্থ সমর্পণ করে শক্তিশালী হয়েছ অর্থাৎ নিজের অপবিত্র জীবনকে সমর্পণ করেছ, তোমাদের সমর্পিত হওয়ার স্মৃতিচিহ্ন তারা উৎসর্গ করে দেয়। দেখ, কত ভালো কপি করেছে, ছাগলকে কেন বলি দেয় তারা? এরও খুব সুন্দর কপি করেছে, ছাগল কী করে! ম্যা ম্যা ম্যা করে তো না! আর তোমরা কী সমর্পণ করেছ? আমি আমি আমি। দেহবোধের আমিত্ব বোধ, কেননা এই আমিত্ব বোধের মধ্যেই দেহ অভিমান উৎপন্ন হয়। যে দেহ অভিমান সব বিকারের বীজ।

বাপদাদা আগেও বলেছেন যে সর্ব সমর্পিত হওয়ার ক্ষেত্রে এই দেহবোধের আমিত্ব ভাবই বাধা হয়ে দাঁড়ায়। কমন আমিত্ব ভাব - আমি দেহ অথবা দেহের সম্বন্ধের আমিত্ব ভাব, দেহের পদার্থের সমর্পণ এটা তো সহজ। এটা করে নিয়েছ তো না? নাকি করনি? এটাও হয়নি! তোমরা যত অগ্রচালিত হও ততই আমিত্ব ভাবও অতি সূক্ষ্ম ও গুহ্য হতে থাকে। এই স্থূল আমিত্ব ভাব তো শেষ হওয়া সহজ। কিন্তু গুহ্য আমিত্ব বোধ হলো –- পরমাত্ম জন্মসিদ্ধ অধিকার দ্বারা যে সব বিশেষত্ব প্রাপ্ত হয় - বুদ্ধির বরদান, জ্ঞান স্বরূপ। হওয়ার বরদান, সেবার বরদান কিংবা বিশেষত্ব, অথবা প্রভু প্রদত্তই বলো না কেন, তার যদি আমিত্ব বোধ আসে তো সেটাকে বলা হয় গুহ্য আমিত্ব ভাব। আমি যা করি, আমি যা বলি সেটাই ঠিক, সেটাই হওয়া উচিত, এই রয়্যাল আমিত্বের ভাব উড়তি কলায় যেতে বোঝা হয়ে যায়। তো বাবা বলেন এই আমিত্ব ভাবেরও সমর্পণ, প্রভুর দানে আমিত্ব ভাব হয় না, না আমি না আমার। প্রভুর দান, প্রভুর বরদান, প্রভুর বিশেষত্ব। তো তোমাদের সমর্পণ কত গুহ্য! তো চেক করেছ তোমরা? সাধারণ আমিত্ব ভাব এবং রয়্যাল আমিত্ব ভাব দুইয়ের সমর্পণ করেছ? করেছ নাকি করছো? করতে তো হবেই। তোমরা নিজেদের মধ্যে ঠাট্টাচ্ছলে বলো তো না, মরতে তো হবেই। কিন্তু এই মরণ ভগবানের কোলে বেঁচে থাকা। এই মরণ, মৃত্যু নয়। ২১ জন্ম দেব আত্মাদের কোলে জন্ম নেওয়া। সেইজন্য খুশির সঙ্গে সমর্পিত হও তো না! চিৎকার করে তো হও না? না। ভক্তিতেও চিৎকার করা বলি স্বীকার করা হয় না। সুতরাং যারা সীমাবদ্ধ দুনিয়ার আমি আর আমিত্বের সাথে খুশিতে সমর্পিত হয়, তারা জন্মের পর জন্ম অবিনাশী উত্তরাধিকারের অধিকারী হয়ে যায়।

তো চেক করো - কোনও ব্যর্থ সংকল্প, ব্যর্থ বোল, ব্যর্থ আচরণের পরিবর্তন করতে তা' খুশির সঙ্গে পরিবর্তন করো, নাকি বাধ্যবাধকতায় করো? ভালবাসায় পরিবর্তন হও নাকি পরিশ্রমের সাথে? যখন তোমরা বাচ্চারা সবাই জন্ম নেওয়ার সাথে সাথেই নিজেদের জীবনের এই অক্যুপেশন বানিয়েছ - বিশ্ব পরিবর্তনকারী, বিশ্ব পরিবর্তক, তখন এটা তোমাদের সবার ব্রাহ্মণ জন্মের অক্যুপেশন, তাই না! যদি পাক্কা হয় তবে হাত নাড়াও। পতাকা আন্দোলিত হচ্ছে, এটা খুব ভালো। (সবার হাতে শিব বাবার পতাকা রয়েছে যা সবাই নাড়াচ্ছে) আজ পতাকার দিন, তাই না, খুব ভালো। কিন্তু অনর্থক পতাকা নাড়িও না। বাস্তবে, পতাকা নাড়ানো তো খুব সহজ, তোমাদের মনকে নাড়া দিতে হবে। মনকে পরিবর্তন করতে হবে। তোমরা তো সাহসী, তাই না। সাহস আছে তোমাদের? অনেক সাহস আছে, আচ্ছা।

বাপদাদা আনন্দদায়ক একটা বিষয় দেখেছেন, সেটা কী জানো তোমরা? বাপদাদা এই বছরের জন্য বিশেষ গিফ্ট দিয়েছিলেন, "এই বছর যদি সামান্যতম সাহস তোমরা রাখতে পারো সেটা যে কোনও কার্যে, হতে পারে স্ব পরিবর্তনের জন্য, যে কোনো কার্যের জন্য, অথবা বিশ্ব সেবার জন্য, যদি তা' সাহসের সঙ্গে করেছ তো এই বছরের এক্সট্রা সহায়তা লাভ করার বরদান প্রাপ্ত রয়েছে।" তাহলে, আনন্দের খবর বা দৃশ্য বাপদাদা কী দেখেছেন! দেখেছেন যে এই বারের শিব জয়ন্তীর সেবাতে চতুর্দিকে অনেক অনেক অনেক বেশি মনোবল আর উৎসাহ উদ্দীপনার সাথে বাচ্চারা এগিয়ে যাচ্ছে। ( সবাই তালি দিয়েছে) হ্যাঁ, তালি দাও। কিন্তু এভাবে সদা তালি দেবে, নাকি শুধুই শিবরাত্রিতে? নিরন্তর তালি দাও। আচ্ছা। চতুর্দিক থেকে তো তোমরা সমাচার লেখ মধুবনে, বাপদাদা তো বতনেই দেখে নেন। উৎসাহ-উদ্দীপনা ভালো আর তোমরা প্ল্যানও ভালো বানিয়েছ। সেবাতে এরকমই উৎসাহ উদ্দীপনা বিশ্বের আত্মাদের মধ্যে উৎসাহ- উদ্দীপনা বাড়াবে। দেখ, নিমিত্ত দাদির কলম চমৎকার করেছে তো না! ভালো রেজাল্ট হয়েছে। সেইজন্য বাপদাদা এখন এক এক করে সেন্টারের নাম তো নেবেন না, কিন্তু সব দিকের সেবার রেজাল্টের জন্য বাপদাদা বিশেষভাবে প্রত্যেক সেবাধারী বাচ্চার বিশেষত্ব এবং নাম নিতে নিতে পদ্ম গুন অভিনন্দন জানাচ্ছেন। তারা দেখছেও, বাচ্চারা তাদের নিজের নিজের জায়গায় এটা দেখে খুশি হচ্ছে। বিদেশেও খুশি হচ্ছে, কেননা, তোমরা সবাই বিশ্বের আত্মাদের জন্য ইষ্ট দেবী-দেবতা তো না! বাপদাদা যখন বাচ্চাদের সভা দেখেন তখন তিনি তিন রূপে দেখেন :-

১) বর্তমানে স্বরাজ্য অধিকারী, এখনও তোমরা রাজা। লৌকিকেও বাবা বাচ্চাদের বলেন, আমার রাজোচিত বাচ্চারা, রাজা বাচ্চা। যদি গরিবও হয় তবুও বলে রাজা বাচ্চা। কিন্তু বাবা বর্তমানে সঙ্গমেও সব বাচ্চাকে স্বরাজ্য অধিকারী রাজা বাচ্চা রূপে দেখেন। তোমরা সব রাজা তো না! স্বরাজ্য অধিকারী, তো বর্তমান স্ব-রাজ্যের মালিক তথা অধিকারী।

২) ভবিষ্যতে বিশ্ব রাজ্য অধিকারী এবং

৩) দ্বাপর থেকে কলিযুগের অন্ত পর্যন্ত পূজ্য, পূজনের অধিকারী - সব বাচ্চাকে এই তিন রূপে বাপদাদা দেখেন। সাধারণ রূপে দেখেন না। তোমরা যেমনই হও কিন্তু বাপদাদা প্রত্যেক বাচ্চাকে স্বরাজ্য অধিকারী রাজা বাচ্চা রূপে দেখেন। তোমরা রাজযোগী, তাই না! এর মধ্যে কেউ প্রজা যোগী আছে কী? প্রজাযোগী আছে? নেই। সবাই রাজযোগী। তো রাজযোগী অর্থাৎ রাজা। এমন স্বরাজ্য অধিকারী বাচ্চাদের বার্থডে উদযাপন করতে স্বয়ং বাবা এসেছেন। দেখ, তোমরা ডবল বিদেশি তো বিদেশ থেকে এসেছ বার্থডে উদযাপন করতে। হাত তোলো ডবল বিদেশি। তাহলে, সবচাইতে বেশি দূরদেশ কোনটা? আমেরিকা, নাকি তার থেকেও দূরে আছে? আর বাপদাদা কোথা থেকে এসেছেন? বাপদাদা তো পরমধাম থেকে এসেছেন। তো, বাচ্চাদের প্রতি ভালবাসা আছে তো না! তাহলে, জন্মদিন কত শ্রেষ্ঠ যে ভগবানকেও আসতে হয়! হ্যাঁ এটা (বার্থডে উপলক্ষ্যে সব ভাষার তৈরি একটা ব্যানার দেখানো হচ্ছে) ভালো বানিয়েছ তোমরা, সব ভাষাতে লেখা আছে। বাপদাদা সব দেশের সব ভাষার বাচ্চাদের বার্থ ডে'র অভিনন্দন জানাচ্ছেন।

দেখো, তোমরা বাবার শিব জয়ন্তী উদযাপন করো, কিন্তু বাবা কী? বিন্দু। বিন্দুর জয়ন্তী, অবতরণ উদযাপন করছ। সর্বাপেক্ষা হিরেতুল্য জয়ন্তী কা'র? বিন্দুর। তো বিন্দুর কত মহিমা! সেইজন্য বাপদাদা সদা বলেন যে তিন বিন্দু সদা স্মরণে রাখো - ৮ নম্বর, ৭ নম্বর লিখতে তবুও তো খটমট লাগে, কিন্তু বিন্দু কত ইজি! তিন বিন্দু সদা স্মরণে রাখো। তিন বিন্দুকে ভালো করে জানো তো না! তুমিও বিন্দু, বাবাও বিন্দু, বিন্দুর বাচ্চারা সবাই বিন্দু। আর যখন কর্মে আসো তখন এই সৃষ্টি মঞ্চ এক ড্রামা। তো ড্রামাতে যে কর্মই করেছ তা' অতীত হয়ে গেছে, সেটাতে ফুল স্টপ লাগাও। ফুলস্টপই বা কী! বিন্দু। সেইজন্য তিন বিন্দু সদা স্মরণে রাখো। সমস্ত চমৎকার দেখ, আজকালকার দুনিয়ায় সবচাইতে বেশি মহত্ত্ব কা'র? পয়সার (অর্থের)। পয়সার মহত্ত্ব, তাই না! মা বাবাও কিছু না, পয়সাই সব কিছু। আর তাতেও দেখ যদি একের পরে একটা বিন্দু লাগিয়ে দাও তো কী হবে! দশ হয়ে যাবে তো না! আরেকটা বিন্দু লাগাবে তো ১০০ হয়ে যাবে, তৃতীয় বিন্দু লাগাও তো ১০০০ হয়ে যাবে। তো বিন্দুর চমৎকারিত্ব, তাই না। পয়সাতেও বিন্দুর চমৎকারিত্ব আছে এবং শ্রেষ্ঠ আত্মা হওয়াতেও বিন্দুর চমৎকারিত্ব রয়েছে। তাছাড়া, করণকরাবনহারও বিন্দু। তো সবদিকে কার মহত্ত্ব হলো! বিন্দুর তো না! শুধু বিন্দু স্মরণে রাখো আর বিস্তারে যেও না। বিন্দু তো স্মরণ করতে পারো। বিন্দু হও, বিন্দুকে স্মরণ করো আর বিন্দু লাগাও, শুধু এটুকুই। এটা হলো পুরুষার্থ। পরিশ্রমের? নাকি সহজ? যারা মনে করছ সহজ, তারা হাত উঠাও। সহজ যদি হয় তবে বিন্দু লাগাতে হবে। যখন কোনো সমস্যা আসে তখন বিন্দু লাগাও নাকি কোশ্চেন মার্ক? কোশ্চেন মার্ক লাগিও না, বিন্দু লাগাও। কোশ্চেন মার্ক কত বাঁকা হয়! দেখ, কোশ্চেন মার্ক লেখো কত বাঁকা, আর বিন্দু কত সহজ! তো বিন্দু হতে জানো তোমরা? জানো? সবাই পারদর্শী!

বাপদাদা বিশেষ সেবার উৎসাহ-উদ্দীপনার অভিনন্দন তো জানিয়েছেন, খুব ভালো করছো, করতে থাকবে কিন্তু ভবিষ্যতের জন্য সবসময়, সব দিন - আমি ওয়ার্ল্ড সার্ভেন্ট - এটা মনে রেখো। তোমাদের মনে আছে - ব্রহ্মা বাবা কী সাইন করতেন? ওয়ার্ল্ড সার্ভেন্ট। তাহলে, তোমরা ওয়ার্ল্ড সার্ভেন্ট, সুতরাং শুধু শিবরাত্রির সেবায় ওয়ার্ল্ডের সেবা সমাপ্ত হবে না। লক্ষ্য রাখো যে আমি ওয়ার্ল্ড সার্ভেন্ট, সুতরাং ওয়ার্ল্ডের সেবা প্রতিটি শ্বাসে, প্রত্যেক সেকেন্ডে করতে হবে। যে কেউই আসবে, যার সাথেই সম্পর্ক হবে, দাতা হয়ে তাদেরকে কিছু না কিছু দিতেই হবে। শূন্য হাতে কেউ যেন ফিরে না যায়। অখন্ড অবিনাশী রসদাগার (ভান্ডারা) সবসময় যেন খোলা থাকে। কমপক্ষে প্রত্যেকের প্রতি শুভ ভাব আর শুভ ভাবনা, এটা অবশ্য দাও। শুভ ভাব দ্বারা দেখ, শোনো, সম্বন্ধে এসো আর শুভ ভাবনা দ্বারা সেই আত্মাকে সহযোগ দাও। এখন সর্ব আত্মার তোমাদের সহযোগের অনেক অনেক আবশ্যকতা আছে। অতএব, সহযোগ দাও আর সহযোগী বানাও। কোনো না কোনো সহযোগ, সেটা মন্সার হতে পারে, কিংবা বোল দ্বারা কোনো সহযোগ দাও, অথবা সম্বন্ধ সম্পর্ক দ্বারা সহযোগ দাও, তো এই শিবরাত্রি জন্ম উৎসবের বিশেষ স্লোগান স্মরণে রাখো - "সহযোগ দাও আর সহযোগী বানাও।" সম্বন্ধ সম্পর্কে যেই আসুক কমপক্ষে তাকে সহযোগ দাও, সহযোগী বানাও। কেউ না কেউ তো সম্বন্ধে আসেই, তার অন্য কোনোরকম আপ্যায়ন যদি নাও বা করো কিন্তু প্রত্যেককে দিলখুশ মিঠাই অবশ্যই খাওয়াও। যেটা এখানের ভাণ্ডারে তৈরি হয় সেটা নয়। হৃদয় খুশিতে ভরিয়ে দাও। তো হৃদয় খুশি করা অর্থাৎ দিলখুশ মিঠাই খাওয়ানো। খাওয়াবে তোমরা! এতে তো কোনো পরিশ্রম নেই। না এক্সট্রা টাইম দিতে হবে, না পরিশ্রম আছে। শুভ ভাবনা দ্বারা দিলখুশ মিঠাই খাওয়াও। তুমিও খুশি, সেও খুশি আর কী চাই! তো তোমরা খুশি থাকবে আর অন্যদের খুশি দেবে, কখনও তোমাদের সকলের মুখ বেশি গম্ভীর হওয়া উচিত নয়। টু মাচ্ গম্ভীরতাও ভালো লাগে না। মৃদু হাসি তো থাকা উচিত, তাই না! গম্ভীর হওয়া ভালো, কিন্তু যদি টু মাচ্ গম্ভীর হও না, তাহলে সেটা এমন হয় না জানি তোমরা কোথায় হারিয়ে গেছ। দেখা যাচ্ছে কিন্তু যেন অদৃশ্য। তোমরা বলছ কিন্তু যেন অনুপস্থিত হয়ে বলছ। সুতরাং সেই মুখ ভালো না। মুখ যেন সদা হাস্যময় থাকে। মুখমন্ডল সিরিয়াস করে রেখো না। যখন তোমরা বলো কী করবো, কীভাবে করবো তখন সিরিয়াস হয়ে যায়। অনেক পরিশ্রম, অনেক কাজ... তোমরা সিরিয়াস হয়ে যাও, কিন্তু যত বেশি কাজ ততো বেশি হাসতে হবে। কীভাবে হাসতে হবে জানো তোমরা? জানো? দেখো, তোমাদের জড় চিত্র তারা কখনো এভাবে সিরিয়াস দেখায় কি! যদি সিরিয়াস দেখায় তাহলে বলা হয় আর্টিস্ট ঠিক নয়। সুতরাং তোমরাও যদি সিরিয়াস থাকো তাহলে এটা বলা হবে এ' জীবনযাপনের আর্ট জানে না। সেইজন্য কী করবে তোমরা? টিচার্স কী করবে? আচ্ছা, টিচার্স অনেক আছে, টিচার্স অভিনন্দন। সেবার অভিনন্দন। আচ্ছা।

এক সেকেন্ডে নিজের পূর্বজ এবং পূজ্য স্বরূপ ইমার্জ করতে পারো? সেই দেবী এবং দেবতা স্বরূপের স্মৃতিতে নিজেকে দেখতে পারো? যে কোনও দেবী অথবা দেবতা। আমি পূর্বজ, সঙ্গম যুগে পূর্বজ আর দ্বাপর থেকে পূজ্য। সত্যযুগ, ত্রেতায় রাজ্য অধিকারী। তো এক সেকেন্ডে অন্য সব সংকল্প সমাপ্ত করে নিজের পূর্বজ আর পূজ্য স্বরূপে স্থিত হয়ে যাও। আচ্ছা।

চতুর্দিকের অলৌকিক দিব্য অবতরিত হওয়া বাচ্চাদেরকে বাবার জন্মদিন আর বাচ্চাদের জন্ম দিনের কল্যাণপূর্ণ শুভেচ্ছা ও স্মরণের স্নেহ-সুমন, দিলারাম বাবার হৃদয়ে রাইট হ্যান্ড সেবাধারী বাচ্চারা সদা সমাহিত হয়ে আছে। তো এমন হৃদয় সিংহাসনাসীন শ্রেষ্ঠ আত্মাদের, সদা বিন্দুর মহত্ত্ব জানা বিন্দু স্বরূপ শ্রেষ্ঠ বাচ্চাদের, সদা নিজের স্বমানে স্থিত থেকে সবাইকে আধ্যাত্মিক সম্মান দেওয়া স্বমানধারী আত্মাদের, সদা দাতার বাচ্চারা যারা মাস্টার দাতা হয়ে প্রত্যেককে নিজের অখন্ড অবিনাশী ভান্ডার থেকে কিছু না কিছু দেয়, এমন মাস্টার দাতা বাচ্চাদের বাপদাদার অনেক অনেক পদ্মগুন, কোহিনূর হিরের থেকেও বেশি প্রভু নূর (আলো) বাচ্চাদের স্মরণের স্নেহ-সুমন আর নমস্কার।

বরদান:-
সব শক্তিকে অর্ডার অনুসারে চালিয়ে মাস্টার রচয়িতা ভব

কর্ম করার আগে যেমন কর্ম তেমন শক্তিকে আহ্বান করো। মালিক হয়ে অর্ডার করো, কেননা এই সর্বশক্তি তোমাদের ভুজ সমান, তোমাদের ভুজসকল তোমাদের অর্ডার ছাড়া কোনো কাজ করতে পারে না।
অর্ডার করো, সহন শক্তি কার্য সফল করো তো দেখবে কার্য সফল হয়েই আছে। কিন্তু অর্ডার করার পরিবর্তে যদি ভয় পাও যে করতে পারবে কি পারবে না, তবে এইরকম ভয় থাকলে অর্ডার কার্যকারী হবে না। সুতরাং মাস্টার রচয়িতা হয়ে শক্তিকে অর্ডার অনুসারে চালোনোর জন্য নির্ভীক হও।

স্লোগান:-
সহায়দাতা বাবাকে প্রত্যক্ষ করিয়ে সবাইকে তীরে নিয়ে এসো।

অব্যক্ত ইশারা :- একান্তপ্রিয় হও, একতা আর একাগ্রতাকে ধারণ করো যেমন কোনো ইনভেন্টর যে কোনও ইনভেনশন করার জন্য একান্তে থাকে, ঠিক তেমনই এখানেও একান্তে থাকা অর্থাৎ একের গভীরে ডুবে যাওয়া। সুতরাং বাইরের আকর্ষণ থেকে সরে একের গভীরে তোমাদের ডুবে যাওয়া উচিত। এমন নয় যে শুধু ঘরে বসে থাকার জন্য একান্ত প্রয়োজন, বরং মন একান্তে থাকতে হবে। একাগ্রতা অর্থাৎ একের স্মরণে থাকা, একাগ্র থাকাই একান্ত হওয়া।