23-06-2024 প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ 19-03-20 মধুবন


"নির্মাণ আর নির্মানের ব্যালেন্স দ্বারা আশীর্বাদের খাতা জমা করো"


আজ বাপদাদা তাঁর নিজের হোলি হ্যাপি হংসদের সভাতে এসেছেন। চতুর্দিকে হোলি হংস দেখা যাচ্ছে। হোলিহংসদের বিশেষত্বকে সবাই খুব ভালো ভাবে জানো তোমরা। সদা হোলি হ্যাপি হংস অর্থাৎ স্বচ্ছ এবং নির্মল হৃদয়। এমন হোলি হংসদের স্বচ্ছ আর নির্মল হৃদয় হওয়ার কারণে প্রতিটা শুভ আশা পূর্ণ হয়। সদা তৃপ্ত আত্মা। শ্রেষ্ঠ সঙ্কল্প করার সাথে সাথে পূর্ণ হয়েছে। পরিশ্রম করতে হয় না। কেন? বাপদাদার সবচেয়ে প্রিয়, সবচেয়ে সমীপ যারা, তারা নির্মল হৃদয় হয়। নির্মল হৃদয় সদা বাপদাদার হৃদয় সিংহাসনাসীন এবং সর্বশ্রেষ্ঠ সংকল্প পূর্ণ হওয়ার কারণে বৃত্তিতে, দৃষ্টিতে, বোলে, সম্বন্ধ - সম্পর্কে সরল আর স্পষ্ট এক সমান প্রতীয়মান হয়। সরলতার লক্ষণ হলো - হৃদয়, বুদ্ধি, বোল এক সমান। মনে এক, মুখে আরেক - এটা সরলতার লক্ষণ নয়। যারা সরল স্বভাবের তারা সদা নির্মাণচিত্ত, নিরহংকারী, নিঃস্বার্থ হয়। হোলিহংসের বিশেষত্ব হলো - সরল-চিত্ত, সরল বাণী, সরল বৃত্তি, সরল দৃষ্টি।

বাপদাদা এই বছরে সব বাচ্চার মধ্যে দুটো বিশেষত্ব 'আচরণ আর চেহারা' দেখতে চান। সবাই তো জিজ্ঞাসা করে না যে - এরপর কী করতে হবে? এই সিজনের বিশেষ সমাপ্তির পরে কী করতে হবে? সবাই ভাবে তো না যে - ভবিষ্যতে কী হবে! ভবিষ্যতে কী করতে হবে! সেবার ক্ষেত্রে তো মেজরিটি যথাশক্তি খুব ভালো প্রগতি করেছে, সামনে এগিয়েছে। বাপদাদা এই উন্নতির জন্য অভিনন্দনও জানান - খুব ভালো, খুব ভালো, খুব ভালো। সেই সঙ্গে রেজাল্টে একটা বিষয় দেখা গেছে, কী সেটা শোনাবো? টিচার্স শোনাবো, ডবল ফরেনার্স শোনাবো? পান্ডব শোনাবো? হাত তোলো তবেই শোনাবো, নয়তো শোনাবো না। (সবাই হাত তুলেছে) খুব ভালো। একটা বিষয় কি দেখেছি? কেননা, আজ বতনে বাপদাদার নিজেদের মধ্যে অধ্যাত্ম বার্তালাপ চলছিল, কিভাবে অধ্যাত্ম বার্তালাপ করবেন? উভয়ে কীভাবে পরস্পরের মধ্যে অধ্যাত্ম বার্তালাপ করবেন? যেভাবে এখানে এই দুনিয়ায় তোমরা 'মনোঅ্যাক্টিং' করে থাকো না! খুব ভালো ভালো করে থাকো । তো তোমাদের সাকারী দুনিয়ায় তো এক আত্মা দুটো পার্ট প্লে করে আর বাপদাদা তো দুই আত্মা এক শরীর। ব্যবধান হলো তো না! তো খুব মজার ব্যাপার হয়।

তো আজ বতনে বাপদাদার অধ্যাত্ম বার্তালাপ হয়েছে - কোন বিষয়ে? তোমরা সবাই জানো যে ব্রহ্মাবাবার মহৎ আকাঙ্খা কি। জানো তো না ভালো করে? ব্রহ্মা বাবার আকাঙ্খা ছিল শীঘ্রাতিশীঘ্র হোক। তো শিববাবা বলেছেন ব্রহ্মাবাবাকে - বিনাশ বা পরিবর্তন করা তো এক তালিও নয়, এক চুটকি বাজানোর ব্যাপার। কিন্তু তোমরা প্রথমে ১০৮-এর মালা নয়, অর্ধেক মালা বানিয়ে দাও। তো ব্রহ্মাবাবা কী উত্তর দিয়ে থাকবেন? বলো। (প্রস্তুত হচ্ছে) আচ্ছা - অর্ধ-মালাও তৈরি হয়নি? সম্পূর্ণ মালার ব্যাপার ছাড়ো, অর্ধ-মালা তৈরি হয়েছে? (সবাই হাসছে) হাসছো মানে কিছু আছে! যারা বলে অর্ধেক মালা তৈরি আছে তারা এক হাত তোলো। তৈরি হয়েছে? খুব কম। যারা মনে করো যে হচ্ছে, তারা হাত তোলো। মেজরিটি বলছে হচ্ছে আর মাইনরিটি বলছে হয়ে গেছে। যারা হাত তুলেছে যে তৈরি হয়েছে, তাদেরকে বাপদাদা বলেন তোমরা নাম লিখে দিও। এটা ভালো ব্যাপার হবে, তাই না! বাপদাদাই দেখবেন, আর কেউ দেখবে না, সিলমোহর (seal) লেগে যাবে। বাপদাদা দেখবেন যে এমন ভালো পদপ্রার্থী রত্ন কে কে আছে। বাপদাদাও বোঝেন হওয়া উচিত। তো এদের থেকে নাম নিও, এদের ফটো তোলো।

তো ব্রহ্মাবাবা কী উত্তর দিয়েছেন? তোমরা সবাই তো ভালো ভালো উত্তর দিয়েছো। ব্রহ্মা বাবা বলেছেন, ব্যস্ শুধু এইটুকুই যা দেরি, আপনি চুটকি বাজাবেন, তারা তৈরি হয়ে যাবে। তো এটা ভালো ব্যাপার হলো, তাই না! তো শিববাবা বলেছেন - আচ্ছা, মালা সম্পূর্ণ তৈরি হয়েছে? অর্ধ-মালার জন্য উত্তর তো পাওয়া গেছে, তিনি সম্পূর্ণ মালার জন্য জিজ্ঞাসা করেছেন। এক্ষেত্রে বলা হয়েছে আর কিছু টাইম চাই। এই অধ্যাত্ম বার্তালাপ হয়েছে। অধ্যাত্ম আলোচনায় প্রশ্ন - উত্তরই চলে তো না! কেন খানিক টাইম চাই? কোন্ বিশেষ ঘাটতি আছে যার কারণে অর্ধ-মালা থেমে আছে? তো চতুর্দিকের প্রতিটি এরিয়ার বাচ্চারা ইমার্জ হতে শুরু করে, তোমাদের যেমন জোন আছে না, ঠিক তেমনই, প্রতিটা জোন থেকে নয়, কেননা জোন অনেক অনেক বড় তো না! তো তিনি প্রতিটি বিশেষ শহরকে ইমার্জ করতে থাকেন এবং প্রত্যেকের মুখ দেখেন, দেখতে দেখতে ব্রহ্মাবাবা বলেন - সব বাচ্চা যদি এক বিশেষত্ব শীঘ্রাতিশীঘ্র ধারণ করে নেয় তাহলে মালা তৈরি হয়ে যাবে। কোন্ বিশেষত্ব? তো তিনি এটাই বলেন যে, সার্ভিসে তোমরা উন্নতি করেছো এবং সার্ভিস করতে করতে এগিয়ে গেছো। ভালো মতন এগিয়ে গেছো। যতই হোক, একটা বিষয়ের ব্যালেন্স কম। সেটা এই বিষয়ের যে, নির্মাণ করার ক্ষেত্রে তো এগিয়ে গেছো, কিন্তু নির্মাণের সাথে নির্মান থাকতে হবে। একটা বিষয় নির্মাণ, আরেকটা হলো নির্মান। একটা অক্ষরের প্রভেদ। যেমনই হোক, নির্মাণ আর নির্মান দুইয়ের ব্যালেন্সে ব্যবধান আছে। সেবার উন্নতিতে নির্মান হওয়ার ব্যালেন্সে কোথাও কোথাও, কখনো কখনো স্ব - অভিমানও মিক্স হয়ে যায়। সেবাতে যতই এগিয়ে যাও, ততখানিই বৃত্তিতে, দৃষ্টিতে, বোলে, আচার-আচরণে নির্মান হওয়া যেন দেখা যায়, এই ব্যালেন্সের এখন অত্যন্ত আবশ্যকতা রয়েছে। এখনও পর্যন্ত যে সব সম্বন্ধ-সম্পর্কের দ্বারা ব্লেসিং প্রাপ্ত হওয়া উচিত ছিল সেই ব্লেসিং প্রাপ্ত হয়নি। তাছাড়া, পুরুষার্থ যে যতই ভালো করুক কিন্তু পুরুষার্থের সাথে সাথে যদি আশীর্বাদের খাতা জমা না হয় তবে দাতা-ভাবের স্টেজ, করুণাময় হওয়ার স্টেজের অনুভূতি হবে না। আবশ্যক হলো স্ব পুরুষার্থের এবং সেইসঙ্গে বাপদাদা আর পরিবারের ছোট-বড়'র শুভ কামনা ও শুভ ভাবনা। এই যে আশীর্বাদ - এটাই হলো পুণ্যের খাতা জমা করা। এটা মার্কসের সাথে অ্যাডিশন হয়। যতই সার্ভিস করো, নিজের সার্ভিসের ধারায় অগ্রচালিত হও, কিন্তু বাপদাদা সব বাচ্চার মধ্যে এই বিশেষত্ব দেখতে চান যে সেবার সাথে সাথে নির্মান হওয়া, মৈত্রীপূর্ণ সহমত - এই পুণ্যের খাতা জমা হওয়া খুব খুব আবশ্যক। এরপরে বোলো না যে আমি তো অনেক সার্ভিস করেছি, আমি তো এটা করেছি, আমি তো এটা করেছি, কিন্তু নম্বর কেন পিছনে? সেইজন্য বাপদাদা প্রথম থেকেই ইশারা দেন যে বর্তমান সময় এই পুণ্যের খাতা অনেক অনেক সঞ্চয় করো। এমন ভেবো না - এ' তো এইরকমই, এ' তো বদলাবেই না। যখন প্রকৃতিকে বদলাতে পারো, প্রকৃতির সঙ্গে অ্যাডজাস্ট করবে তো না? তাহলে ব্রাহ্মণ আত্মাকে

অ্যাডজাস্ট করতে পারবে না? এগেন্স্টকে অ্যাডজাস্ট করো, এটা হলো - নির্মাণ আর নির্মানের ব্যালেন্স। শুনেছ!

লাস্টে হোম ওয়ার্ক দেবেন তো না! কিছু তো হোম ওয়ার্ক পাবে, তাই না! তো বাপদাদা আগামী সিজনে আসবেন কিন্তু... কন্ডিশন দেবেন। দেখো, সাকার রূপের পার্টও চলেছে, অব্যক্ত পার্টও চলেছে, এত সময় ধরে অব্যক্ত পার্ট চলবে স্বপ্নেও ছিল না। তো দুটো পার্ট ড্রামানুসারে চলেছে। এবারে তো কিছু

কন্ডিশন দিতে হবে, নাকি না! তোমাদের পরামর্শ কী? এমনভাবেই চলতে থাকবে কী? কেন? আজ বতনেও বাবা প্রোগ্রামের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করেছেন। বাপদাদার অধ্যাত্ম বার্তালাপে এটাও আলোচনা হয়েছে যে এই ড্রামার পার্ট কত সময় পর্যন্ত চলবে! কোনো কী ডেট আছে? (দেরাদুনের প্রেম বোনকে বাবা জিজ্ঞাসা করলেন) জন্ম-পত্রিকা বলো, কত সময় পর্যন্ত? এখন এই কোশ্চেন উঠেছে, কত সময় পর্যন্ত। কিন্তু... এটার জন্য ৬ মাস তো আছেই না! ৬ মাস পরেই পরবর্তী সিজন শুরু হবে। তো বাপদাদা রেজাল্ট দেখতে চান। নির্মল হৃদয়, হৃদয়ে কোনও পুরানো সংস্কারের, অভিমান-অপমানের অনুভবের দাগ যেন না থাকে।

বাপদাদার কাছেও হৃদয়ের চিত্র তোলার মেশিনারি আছে। এখানে এক্সরে-তে এই স্থূল হৃদয় দেখা যায়, তাই না। তো বতনে হৃদয়ের চিত্র খুব স্পষ্ট দেখা যায়। অনেক রকমের ছোট-বড় দাগ, কিছু দাগ বিবর্ণ, কিছু স্পষ্টরূপে দেখা যায়।

আজ হোলি উদযাপন করতে এসেছো তো না! লাস্ট টার্ন হওয়ার কারণে বাবা প্রথমে হোম ওয়ার্ক বলে দিয়েছেন, কিন্তু হোলির অর্থ অন্যদেরও শুনিয়ে থাকো যে হোলি উদযাপন অর্থাৎ যা অতীত হয়েছে তাকে অতীত করে দেওয়া। হোলি উদযাপন অর্থাৎ হৃদয়ে কোনও ছোট বড় দাগ না থাকা, সম্পূর্ণ নির্মল হৃদয়, সর্বপ্রাপ্তি সম্পন্ন। বাপদাদা আগেও বলেছেন যে বাপদাদার বাচ্চাদের সাথে ভালোবাসা হওয়ার কারণে একটা ব্যাপার ভালো লাগে না। তা' হলো - তারা অনেক পরিশ্রম করে। যদি হৃদয় নির্মল হয় তবে পরিশ্রম নয়, দিলারাম হৃদয়ে সমাহিত থাকবেন এবং তোমরা দিলারামের হৃদয়ে সমাহিত হয়ে থাকবে। হৃদয়ে বাবা সমাহিত হয়ে আছেন। যে কোনও রূপের মায়া, তা' সূক্ষ্ম রূপে হোক বা রয়্যাল রূপে, কিংবা মোটা রূপে, কোনও রূপেই মায়া আসতে পারে না। স্বপ্নে অথবা সঙ্কল্পেও পর্যন্ত মায়া আসতে পারে না। তাহলে তো পরিশ্রম মুক্ত হয়ে যাবে, যাবে তো না! বাপদাদা মন্সাতেও পরিশ্রম মুক্ত দেখতে চান। পরিশ্রম মুক্তই জীবনমুক্ত অনুভব করতে পারে। হোলি উদযাপন করা মানে পরিশ্রম মুক্ত, জীবনমুক্ত অনুভূতিতে থাকা। এখন বাপদাদা মন্সা শক্তি দ্বারা সেবাকে শক্তিশালী বানাতে চান। বাণী দ্বারা সেবা চলছে, চলতে থাকবে, কিন্তু এতে সময় লাগে। সময় কম, সেবা এখনও অনেক বাকি আছে। তোমরা সবাই রেজাল্ট শুনিয়েছো। এখনও পর্যন্ত ১০৮-এর মালাও বের করতে পারোনি। ১৬ হাজার, ৯ লক্ষ এ' তো অনেক দূরের। এর জন্য ফাস্ট বিধি চাই। প্রথমে নিজের মন্সা শ্রেষ্ঠ, স্বচ্ছ বানাও, এক সেকেন্ডও যেন ব্যর্থ না যায়। এখনও পর্যন্ত মেজরিটির ওয়েস্ট সংকল্পের পার্সেন্টেজ থেকে গেছে। অশুদ্ধ নয় কিন্তু ওয়েস্ট, সেইজন্য মন্সা সেবা ফাস্ট গতিতে হতে পারবে না। এখন হোলি উদযাপন করা অর্থাৎ মন্সাকেও ব্যর্থ থেকে হোলি বানানো।

হোলি উদযাপন করেছো? উদযাপন অর্থাৎ হওয়া। দুনিয়ায় তো ভিন্ন ভিন্ন রঙ দিয়ে হোলি উদযাপন করে। কিন্তু বাপদাদা সব বাচ্চার উপরে দিব্য গুণের, দিব্য শক্তির, জ্ঞান গোলাপের রঙ ছড়িয়ে দিচ্ছেন।

আজ বতনে আরও সমাচার ছিল। একটা তো বাবা বলেছেন - অধ্যাত্ম বার্তালাপের। আরেকটা এটা যে তোমাদের সেবা সাথীদের মধ্যে ভালো ভালো যারাই অ্যাডভান্স পার্টিতে গেছে, বতনে আজ তাদের হোলি উদযাপনের দিন ছিল। তোমাদের সবারও যখন কোনো সুযোগ হয় তখন স্মরণ আসে তো না! নিজেদের দাদীরা, সখীরা, পান্ডবরা স্মরণে তো আসে, তাই না! অনেক বড় গ্রুপ হয়ে গেছে অ্যাডভান্স পার্টির। যদি নাম বের করো তো অনেকে রয়েছে । তো বতনে আজ সব ধরনের আত্মারা হোলি উদযাপন করতে এসেছিল। সবাই নিজের নিজের পুরুষার্থের প্রালব্ধ অনুযায়ী পার্ট প্লে করছে। অ্যাডভান্স পার্টির পার্ট এখনো পর্যন্ত গুপ্ত রয়েছে। তোমরা ভাবো তো না - তারা কী করছে? তারা তোমাদের আহ্বান করছে, সম্পূর্ণ হয়ে দিব্য জন্ম দ্বারা নতুন সৃষ্টির নিমিত্ত হও। সবাই নিজের পার্টে খুশি। এই স্মৃতি নেই যে আমি সঙ্গম যুগ থেকে এসেছি। দিব্যতা আছে, পবিত্রতা আছে, পরমাত্ম মগ্নতা আছে, কিন্তু ক্লিয়ারলি ইমার্জ নেই। ডিট্যাচ্ড ভাব আছে, কিন্তু যদি জ্ঞান ইমার্জ হয়ে যায় তবে সবাই দৌড়ে মধুবনে এসে যাবে তো না! কিন্তু এদের পার্ট স্বতন্ত্র, জ্ঞানের শক্তি আছে। শক্তি কম হয়নি। নিরন্তর মর্যাদা পূর্বক তাদের ঘরের বাতাবরণ, তাদের মা-বাবা তাদের প্রতি সন্তুষ্ট এবং তাদের স্থূল সাধনও প্রাপ্ত হয়েছে। মর্যাদায় তারা খুব অভিজ্ঞ। নম্বরক্রম তো আছে কিন্তু বিশেষ আত্মারা অভিজ্ঞ। তারা অনুভব করে যে তাদের পূর্ব জন্ম মহান ছিল আর পরবর্তী জন্মও মহান হবে। তাদের মেজরিটিতে ফিচার্সও এক রয়্যাল ফ্যামিলির তৃপ্ত আত্মা, পরিপূর্ণ আত্মা, আনন্দিত আত্মা এবং দিব্য গুণ সম্পন্ন আত্মা রূপে প্রতীয়মান হয়। এটা তো হলো তাদের হিস্ট্রি, কিন্তু বতনে কী হয়েছে? হোলি কীভাবে উদযাপন করেছে? তোমরা হয়তো দেখে থাকবে যে হোলিতে বিভিন্ন শুকনো রঙ থালায় থালায় ভরে রাখে। তো বতনেও শুকনো রঙ যেমন হয় তেমনই খুব সূক্ষ্ম ঝলমলে হিরে ছিল, কিন্তু ভারী ছিল না, যেমন রঙ যদি হাতে নাও তবে তা' হালকা হয় তো না, ঠিক তেমনই বিভিন্ন রঙের হিরে ভরা থালা ছিল। যখন সবাই এসে গেছে, তো বতনে কেমন স্বরূপ হয়, জানো তোমরা? লাইটেরই হয় তো না! দেখেছো তো, তাই না! তো লাইটের প্রকাশময় কায়া প্রথম থেকেই ঝলমল করতে থাকে। তো বাপদাদা সবাইকে নিজের সঙ্গমযুগী শরীরে ইমার্জ করেছেন। যখন সঙ্গমযুগী শরীরে ইমার্জ হয় তো একে অন্যের সাথে খুব মিলন উদযাপন করতে থাকে। অ্যাডভান্স পার্টির জন্মের সবকিছু ভুলে গেছে আর সঙ্গমের বিষয় ইমার্জ হয়ে গেছে। তো তোমরা বুঝতেই পারো যে পরস্পরের সাথে যখন সঙ্গমযুগের বিষয়ে বলে তখন তারা কত খুশিতে ভরে ওঠে। খুব খুশিতে তারা একে অন্যের সাথে লেন-দেন করছিল। বাপদাদাও দেখেছেন - এরা নিজেদের মধ্যে খুব আনন্দ করছে, আর তাই তিনি ভেবেছেন - এদেরকে মিলন উদযাপন করতে দেওয়া যাক! নিজেদের মধ্যে তারা নিজের জীবনের অনেক কাহিনী একে অন্যকে শোনাচ্ছিল, বাবা এইরকম বলেছেন, বাবা আমাকে এমন করে ভালোবেসেছেন, এই সব শিক্ষা দিয়েছেন। বাবা এইভাবে বলেন, শুধু বাবা-বাবা, বাবা-বাবাই ছিল। কিছু সময় পরে কী হলো? সবার সংস্কার তো তোমরা জানোই। তো এই গ্রুপে সবচাইতে রমণীয় কে ছিল? (দিদি আর চন্দ্রমণি দাদি) তো দিদি প্রথমে উঠেছেন। চন্দ্রমণি দাদির হাত ধরলেন আর রাস শুরু করে দিলেন। আর দিদি এখানে যেমন নেশায় ট্র্যান্সে চলে যেতেন, তেমনই নেশায় খুব রাস করেছেন। মাম্মাকে মাঝখানে দাঁড় করিয়ে সার্কেল বানিয়ে ঘুরছে, একে অন্যের চোখ বন্ধ করে পরস্পরের সাথে লুকোচুরি খেলেছে, অনেক খেলেছে আর বাপদাদাও দেখতে দেখতে নিরন্তর মৃদু মৃদু হাসছিলেন। তারা হোলি উদযাপন করতে এসেছে তো খেলাও করেছে। কিছু সময় পরে সবাই বাপদাদার বাহুতে সমাহিত হয়ে গেছে আর সবাই একেবারে লাভলীন হয়ে গেছে এবং এরপরে বাপদাদা সবার উপরে ভিন্ন ভিন্ন রঙের যে হিরে ছিল, খুব সূ‍ক্ষ্ম ছিল, যেমন কোনো জিনিসের চূর্ণ হয় না, সেরকম ছিল। কিন্তু ঝলকানি ছিল অনেক, তো বাপদাদা সবার উপরে ছড়িয়ে দেন। ঝলমলে বডি তো ছিল, তাই না, তো তার উপরে ওই ভিন্ন ভিন্ন রঙের হিরে পড়ায় সবাই যেন খুব সেজে উঠেছে। লাল, হলুদ, সবুজ... যে সাত রঙের ব্যাপারে বলা হয়ে থাকে, তো সাত রঙই বিদ্যম্যান ছিল। সবাই এমনভাবে খুব সেজে উঠেছে যে সত্য যুগেও এমন ড্রেস হবে না। সবাই আনন্দানুভবে তো ছিলই, আবার একে অপরকেও ছড়িয়ে দিতে থাকে। আনন্দ করার মতো বোনেরাও তো অনেকে ছিল তাই না। খুব খুব মজা করেছে। মজার পরে কী হয়? বাপদাদা ইন অ্যাডভান্স সবাইকে ভোগ খাইয়েছেন, তোমরা কাল তো ভোগ দেবে, তাই না, কিন্তু বাপদাদা মধুবনের, সঙ্গমযুগের ভিন্ন ভিন্ন ভোগ সবাইকে খাইয়েছেন আর তার মধ্যে হোলির বিশেষ ভোগ কী? ঘেবর-জিলিপি (ঘেবর = আটা আর ঘি দিয়ে তৈরি চাকতির মতো ভাজা মিষ্টি) তোমরা গোলাপ ফুলও তো ভাজো, তাই না। তো সঙ্গম যুগেরই ভ্যারাইটি ভোগ খাইয়েছি। তোমাদের আগে তারা ভোগ নিয়ে নিয়েছে, তোমরা কাল পাবে। আচ্ছা। মূলতঃ তারা উদযাপন করেছে, নেচেছে, গেয়েছে। সবাই মিলে বাঃ বাবা, আমার বাবা, মিষ্টি বাবার গীত গেয়েছে। তো নেচেছে, গেয়েছে, খেয়েছে আর লাস্টে কী হয়? অভিনন্দন আর বিদায়। তো তোমরাও উদযাপন করেছ, নাকি শুধু শুনেছো? কিন্তু প্রথমে এখন ফরিস্তা হয়ে প্রকাশময় কায়া রূপ হয়ে যাও। হতে পারো নাকি না? স্থূল শরীর আছে? না। সেকেন্ডে ঝলমলে ডবল লাইট স্বরূপ হয়ে যাও। হতে পারো? একদম ফরিস্তা! (বাপদাদা সবাইকে ড্রিল করিয়েছেন)।

এখন নিজের সূ‍ক্ষ্ম শরীরের উপরে ভিন্ন ভিন্ন রঙের ঝলমলে হিরে লাগাও আর সদা এমন দিব্য গুণের রঙ, শক্তির রঙ, জ্ঞানের রঙ দ্বারা স্বয়ংকে নিরন্তর রাঙাতে থাকো। আর সবচাইতে বড় রঙ বাপদাদার সঙ্গের রঙে সদা রঞ্জিত হয়ে থাকো। এইভাবে অমর ভব। আচ্ছা।

দেশ-বিদেশের এই রকম ফরিস্তা স্বরূপ বাচ্চাদের, সদা নির্মল হৃদয়, প্রাপ্তি সম্পন্ন বাচ্চাদের, প্রকৃত হোলি উদযাপন অর্থাৎ অর্থ সহ চিত্র প্রত্যক্ষ রূপে নিয়ে আসা বাচ্চাদের, সদা নির্মাণ আর নির্মানের ব্যালেন্স রাখা বাচ্চাদের, সদা আশীর্বাদের পুণ্যের খাতা সঞ্চয়কারী বাচ্চাদের অনেক অনেক পদ্মগুন স্মরণের স্নেহ-সুমন আর নমস্কার।

বরদান:-
মধুরতা দ্বারা বাবার সমীপতার সাক্ষাৎকার করিয়ে মহান আত্মা ভব

যে বাচ্চাদের সংকল্পেও মধুরতা, বোলেও মধুরতা এবং কর্মেও মধুরতা থাকে তারাই বাবার সমীপে থাকে। সেইজন্য বাবাও তাদেরকে রোজ বলেন মিষ্টি বাচ্চা আর বাচ্চারাও রেসপন্ড দেয় - মিষ্টি মিষ্টি বাবা। তো প্রতিদিনের এই মধুর বোল মধুরতা সম্পন্ন বানিয়ে দেয়। এমন মধুরতা প্রত্যক্ষ করানো শ্রেষ্ঠ আত্মারাই মহান হয়। মধুরতাতেই মহত্ত্ব। মধুরতা না থাকলে মহত্ত্বের অনুভব হয় না।

স্লোগান:-
যে কোনো কাজ ডবল লাইট হয়ে যদি করো তবে মনোরঞ্জনের অনুভব করবে।