23.06.2025 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা - তোমাদের সর্বপ্রথম পাঠ (শিক্ষা) হলো - আমি আত্মা, শরীর নই, আত্ম - অভিমানী হয়ে থাকো, তাহলে বাবার স্মরণ থাকবে''

প্রশ্নঃ -
বাচ্চারা, তোমাদের কাছে কোন্ গুপ্ত সম্পদ আছে, যা অন্য মানুষদের কাছে নেই?

উত্তরঃ  
তোমাদের ভগবান বাবা পড়ান, সেই পড়ার জন্য খুশীর গুপ্ত খাজানা তোমাদের কাছে আছে । তোমরা জানো যে, আমরা যা পড়ছি, তা ভবিষ্যৎ অমরলোকের জন্য, এই মৃত্যুলোকের জন্য নয়। বাবা বলেন, ভোরবেলা উঠে ঘোরো ফেরো, শুধু এই সর্বপ্রথম পাঠ স্মরণ করো, তাহলে খুশীর সম্পদ জমা হতে থাকবে ।

ওম্ শান্তি ।
বাবা বাচ্চাদের জিজ্ঞাসা করেন - বাচ্চারা, তোমরা আত্ম - অভিমানী হয়ে বসেছো তো? নিজেকে আত্মা মনে করে বসেছো? আমাদের অর্থাৎ আত্মাদের পরমাত্মা বাবা পড়াচ্ছেন, বাচ্চাদের এই স্মৃতি এসেছে যে, আমরা দেহ নই, আত্মা । বাচ্চাদের দেহী অভিমানী বানানোর জন্যই পরিশ্রম করতে হয় । বাচ্চারা আত্ম - অভিমানী থাকতে পারে না । তারা বারে বারে দেহ বোধে এসে যায় তাই বাবা জিজ্ঞাসা করছেন - আত্ম অভিমানী হয়ে থাকো কি? আত্ম - অভিমানী হলে বাবার স্মরণ আসবে, আর দেহবোধে থাকলে লৌকিক সম্বন্ধ স্মরণে আসবে । প্রথম প্রথম এই শব্দ স্মরণে রাখতে হবে যে, আমি আত্মা । আমি আত্মার মধ্যেই ৮৪ জন্মের পার্ট লিপিবদ্ধ আছে । এই কথা পাকা করতে হবে । আমি হলাম আত্মা । অর্ধেক কল্প তোমরা দেহ অভিমানী থেকেছো । এখন কেবল এই সঙ্গম যুগেই বাচ্চাদের আত্ম অভিমানী বানানো হয় । নিজেকে দেহ মনে করলে বাবাকে স্মরণে আসবে না, তাই প্রথম প্রথম এই পাঠ দৃঢ় করে নাও - আমি আত্মা অসীম জগতের পিতার সন্তান । দেহের বাবাকে স্মরণ করার কথা কখনো মনে করাতে হয় না । বাবা এখন বলেন, আমি তোমাদের পারলৌকিক বাবা, তোমরা আমাকে স্মরণ করো, আত্ম অভিমানী হও । দেহী অভিমানী হলে দেহের সম্বন্ধ স্মরণে আসবে, নিজেকে আত্মা মনে করে বাবাকে স্মরণ করো, এটাই হলো পরিশ্রমের । একথা কে বোঝাচ্ছেন, আমাদের আত্মাদের বাবা, যাকে সবাই স্মরণ করে, বাবা এসো, তুমি এসে আমাদের এই দুঃখ থেকে উদ্ধার করো । বাচ্চারা জানে যে, এই পড়ার দ্বারা আমরা ভবিষ্যতে উঁচু পদ পাই ।

এখন তোমরা পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগে রয়েছো। এখন এই মৃত্যুলোকে একেবারেই থাকতে হবে না । আমাদের এই পড়াশোনা হলো ভবিষ্যৎ ২১ জন্মের জন্য । আমরা সত্যযুগ অমরলোকের জন্য পড়ছি । অমর বাবা আমাদের জ্ঞান শোনাচ্ছেন, তাহলে এখানে যখন বসো তখন সর্বপ্রথমে নিজেকে আত্মা মনে করে বাবার স্মরণে থাকতে হবে, তাহলেই বিকর্ম বিনাশ হবে । আমরা এখন সঙ্গমযুগে আছি । বাবা আমাদের পুরুষোত্তম বানাচ্ছেন । তিনি বলেন যে, আমাকে স্মরণ করো, তাহলেই তোমরা পুরুষোত্তম হয়ে যাবে । আমি এসেছি তোমাদের মানুষ থেকে দেবতা বানানোর জন্য । সত্যযুগে তোমরা দেবতা ছিলে, এখন জানো যে, তোমরা কিভাবে সিঁড়িতে নেমে এসেছো । আমাদের আত্মার মধ্যে ৮৪ জন্মের পার্ট নির্ধারিত রয়েছে । দুনিয়ার কেউই জানে না যে, ওই ভক্তি মার্গ আলাদা আর এই জ্ঞান মার্গ আলাদা । যেই আত্মাদের বাবা পড়ান, তারা জানে, আর কেউই জানে না । এ হলো ভবিষ্যতের জন্য গুপ্ত সম্পদ । তোমরা তো এই পড়া পড়ো অমরলোকের জন্য, নাকি মৃত্যুলোকের জন্য? বাবা এখন বলছেন, ভোরবেলা উঠে তোমরা ঘুরে বেড়াও, কিন্তু প্রথম এই শব্দই স্মরণ করো যে, আমি শরীর নই, আমি আত্মা । আমার আত্মিক বাবা আমাকে পড়ান । এই দুঃখের দুনিয়া এখন পরিবর্তন হয়ে যাবে । সত্যযুগ হলো সুখের দুনিয়া, তোমাদের বুদ্ধিতে এই সম্পূর্ণ জ্ঞান আছে । এ হলো আত্মাদের আধ্যাত্মিক জ্ঞান । বাবা হলেন জ্ঞানের সাগর, তিনি আমাদের আধ্যাত্মিক পিতা । আর লৌকিক পিতা হলো দেহের বাবা । বাকি তো সবাই দেহের সম্বন্ধী । এখন এই দেহের সম্বন্ধ ত্যাগ করে একের সঙ্গে জুড়তে হবে । এমন গাওয়াও হয় যে, আমার তো এক, দ্বিতীয় আর কেউই নেই । আমরা এক বাবাকেই স্মরণ করি । আমরা দেহকেও স্মরণ করি না । এই পুরানো দেহ তো ত্যাগ করতে হবে । এই জ্ঞানও তোমরাই পাও । এই শরীর কিভাবে ত্যাগ করতে হবে । স্মরণ করতে করতেই শরীর ত্যাগ করতে হবে, তাই বাবা বলেন - তোমরা দেহী অভিমানী হও । নিজের ভিতরে বার বার গুলতে থাকো - বাবা, বীজ আর ঝাড়কে স্মরণ করতে হবে । শাস্ত্রে এই কল্প বৃক্ষের বৃত্তান্ত রয়েছে ।

বাচ্চারা এ কথাও জানে যে, জ্ঞানের সাগর বাবা আমাদের পড়ান । আমাদের কোনো মনুষ্য পড়ায় না । এই কথা মনে দৃঢ় করে নিতে হবে । পড়তে তো হবেই, তাই না । সত্যযুগেও দেহধারীই পড়ান । ইনি কিন্তু দেহধারী নন । ইনি বলেন, আমি পুরানো দেহের আধার নিয়ে তোমাদের পড়াই । কল্প - কল্প আমি তোমাদের এমনভাবে পড়াই । আবার পরের কল্পে এইভাবেই পড়াবো । এখন তোমরা যদি আমাকে স্মরণ করো তাহলে তোমাদের বিকর্ম বিনাশ হবে, আমিই হলাম পতিত পাবন । আমাকেই সর্বশক্তিমান বলা হয় । মায়াও কিন্তু কম নয়, সেও শক্তিমান, কোথা থেকে নামিয়ে দিয়েছে । এখন তো তোমরা মনে করতে পারো, তাই না । ৮৪ চক্রেরও মহিমা আছে । এ হলো মনুষ্যেরই কথা । অনেকেই জিজ্ঞাসা করে, পশুদের কি হবে? আরে এখানে জানোয়ারদের কথা নেই । বাচ্চাদের সঙ্গে বাবাই কথা বলেন, এছাড়া বাইরের লোকেরা তো বাবাকে জানেই না, তাহলে কি কথা বলবে? কেউ কেউ বলে, আমরা বাবার সঙ্গে দেখা করতে চাই, এখন তারা তো কিছুই জানে না, খালি বসে উল্টোপাল্টা প্রশ্ন করবে । সাতদিন কোর্স করার পরেও কিছুই বুঝতে পারে না যে, বাবা আমাদের অসীম জগতের পিতা । যারা পুরানো ভক্ত, যারা অনেক ভক্তি করে এসেছে, তাদের বুদ্ধিতে তো এই জ্ঞানের সব কথা বসে যায় । কম ভক্তি করে এলে বুদ্ধিতে এই কথা কম বসবে । তোমরাই সবথেকে বেশী পুরানো ভক্ত । এমন মহিমাও আছে যে, ভগবান ভক্তির ফল দিতেই আসেন, কিন্তু কেউ এই কথা জানেই না । জ্ঞান মার্গ আর ভক্তি মার্গ সম্পূর্ণ আলাদা । সম্পূর্ণ দুনিয়া ভক্তি মার্গে আছে । কোটিতে কয়েকজন এসে এই পড়া পড়ে । এই জ্ঞান তো খুব মিষ্টিভাবেই বোঝানো হয় । ৮৪ জন্মের চক্র তো মানুষই জানবে, তাই না । তোমরা তো আগে কিছুই জানতে না, শিবকেও জানতে না । শিবের তো কতো মন্দির আছে । মানুষ শিবের পূজা করে, জল ঢালে, শিবায় নমঃ বলে, অথচ কেন পূজা করে, কিছুই জানে না । লক্ষ্মী - নারায়ণের পূজা কেন করে, তাঁরা কোথায় গেলো, কিছুই জানে না । ভারতবাসীরাই এমন, যারা নিজেদের পূজ্যকে একদমই জানে না । খ্রীস্টানরা জানে যে খ্রাইস্ট অমুক সম্বতে এসেছিলেন, তিনি এসে সেই ধর্মের স্থাপনা করেছিলেন । শিববাবাকে কেউই জানে না । পতিত পাবনও শিবকেই বলা হয় । তিনিই তো উঁচুর থেকেও উঁচু, তাই না । সবথেকে বেশী সেবা তাঁরই করে । তিনি সর্বের সদগতিদাতা । তিনি দেখো, কিভাবে তোমাদের পড়ান । মানুষ বাবাকে ডাকেও যে, এসে আমাদের পবিত্র বানাও । মানুষ মন্দিরে কতো পুজো করে, কতো ধুমধাম করে খরচ করে । শ্রীনাথের মন্দিরে, জগন্নাথের মন্দিরে গিয়ে দেখো । তাঁরা তো সেই একই । জগন্নাথের (জগৎনাথ ) কাছে চালের হাঁড়ি চড়ানো হয় । শ্রীনাথের ওখানেও অনেক জিনিস তৈরী করা হয় । তফাৎ হয় কেন ? কারণ তো চাই, তাই না । শ্রীনাথকেও কালো আবার জগন্নাথকেও কালো করে দিয়েছে । এর কারণ তো কিছুই বোঝে না । জগৎ - নাথ লক্ষ্মী নারায়ণকেই বলা হবে নাকি রাধাকৃষ্ণকে ? রাধাকৃষ্ণ আর লক্ষ্মী নারায়ণের সম্বন্ধ কি, একথাও কেউ জানে না । বাচ্চারা, এখন তোমরা জানতে পেরেছো যে, আমরাই পূজ্য দেবতা ছিলাম তারপর পূজারী হয়েছি । চক্র লাগিয়েছি । এখন আবার দেবতা হওয়ার জন্য আমরা পড়ছি । আমাদের কোনো মানুষ পড়ায় না । এ হলো ভগবান উবাচঃ । ভগবানকেই জ্ঞান সাগর বলা হয় । এখানে তো ভক্তির সাগর অনেক আছে যারা জ্ঞান সাগর বাবাকেই স্মরণ করে । তোমরা পতিত হয়েছিলে, আবার তোমাদের অবশ্যই পাবন হতে হবে । এ হলো পতিত দুনিয়া । এ স্বর্গ নয় । বৈকুণ্ঠ কোথায়, সে কথা কেউই জানে না । মানুষ মারা গেলে বলে, বৈকুন্ঠে গিয়েছে । তাহলে তোমরা নরকের ভোজন ইত্যাদি তাদের কেন খাওয়াও । সত্যযুগে তো অনেক ফল - ফুল ইত্যাদি হয় । এখানে কি আছে ? এ হলো নরক ! তোমরা এখন জানো যে, বাবার দ্বারা আমরা স্বর্গবাসী হওয়ার জন্য পুরুষার্থ করছি । আমাদের পতিত থেকে পবিত্র হতে হবে । বাবা তো যুক্তি বলেই দিয়েছেন - কল্প-কল্প বাবাই যুক্তি বলে দেন । আমাকে স্মরণ করো তাহলে বিকর্ম বিনাশ হবে । তোমরা এখন জানো যে, আমরা পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগে আছি । তোমরাই বলো যে, বাবা আমরা পাঁচ হাজার বছর পূর্বে এমন হয়েছিলাম । তোমরাই জানো যে, আমরা কল্প কল্প এই অমরকথা বাবার কাছ থেকে শুনি । শিববাবাই হলেন অমরনাথ । বাকি এমন নয় যে, তিনি পার্বতীকে বসে অমরকথা শোনান । সে হলো ভক্তি । জ্ঞান আর ভক্তিকে তোমরাই বুঝেছো । ব্রাহ্মণদের দিন আর ব্রাহ্মণদের রাত । বাবা বোঝান যে, তোমরাই তো হলে ব্রাহ্মণ, তাই না । আদিদেব তো ব্রাহ্মণই ছিলেন । তাঁকে দেবতা বলা হবে না । মানুষ আদিদেবের কাছেও যায়, দেবীদেরও কতো নাম আছে । তোমরা সার্ভিস করেছো, তাই তোমাদের এতো মহিমা, ভারত যে নির্বিকারী দুনিয়া ছিলো, তা আবার বিকারী দুনিয়া হয়ে যায় । এখন তো রাবণ রাজ্য, তাই না ।

সঙ্গমযুগে বাচ্চারা, তোমরা এখন পুরুষার্থী হও, তোমাদের উপর অবিনাশী বৃহস্পতির দশা হয়, তখনই তোমরা অমরপুরীর মালিক হয়ে যাও । বাবা তোমাদের পড়াচ্ছেন, মানুষ থেকে দেবতা হওয়ার জন্য । স্বর্গের মালিক হওয়াকে বৃহস্পতির দশা বলা হয় । তোমরা তো অবশ্যই স্বর্গ, অমরপুরীতে যাবে । বাকি পড়াতে দশা উপর - নীচ হতে থাকে । স্মরণ করতেই ভুলে যায় । বাবা বলেছেন - আমাকে স্মরণ করো । গীতাতেও ভগবান উবাচঃ আছে - কাম মহাশত্রু । ওরা পড়ে কিন্তু বিকার জয় করতেই পারে না । ভগবান কবে বলেছিলেন ? পাঁচ হাজার বছর হয়ে গেছে । ভগবান এখন আবার বলছেন - কাম হলো মহাশত্রু, একে জয় করতে হবে । এ তোমাদের আদি - মধ্য এবং অন্ত দুঃখ দেয় । মুখ্য হলো কামের কথা, এতেই পতিত বলা হয় । এখন তোমরা জানতে পেরেছো, এই চক্র ঘুরতে থাকে । আমরা পতিত হই, তারপর ড্রামা অনুসারে বাবা এসে আমাদের পাবন বানান । বাবা বার বার বলেন, সর্বপ্রথমে অল্ফ-কে (আল্লাহ ) স্মরণ করো, শ্রীমতে চলতে পারলেই তোমরা শ্রেষ্ঠ হতে পারবে । এও তোমরাই বুঝতে পারো যে, আমরা প্রথমে শ্রেষ্ঠ ছিলাম, তারপর ভ্রষ্ট হয়েছি । এখন আবার শ্রেষ্ঠ হওয়ার জন্য পুরুষার্থ করছি । আমাদের দৈবী গুণ ধারণ করতে হবে । কাউকেও দুঃখ দেবে না । সবাইকে পথ বলতে থাকো যে, বাবা বলেন, আমাকে স্মরণ করো তাহলেই পাপ মুক্ত হবে । পতিত পাবন তো তোমরা আমাকেই বলো, তাই না । এ কথা কেউই জানে না যে, পতিত পাবন কিভাবে এসে পাবন বানান । পূর্ব কল্পেও বাবা বলেছিলেন যে, মামেকম্ স্মরণ করো । এ হলো যোগ অগ্নি, যাতে পাপ দগ্ধ হয় । খাদ মুক্ত হলে আত্মা পবিত্র হয়ে যায় । খাদ তো সোনাতেই দেওয়া হয় । তখন গয়নাও তেমনই তৈরী হয় । বাচ্চারা, বাবা এখন তোমাদের বুঝিয়েছেন, আত্মায় কিভাবে খাদ পড়েছে, তাকে এখন দূর করতে হবে । এই ড্রামাতে বাবারও পার্ট আছে, তাই তিনি এসে তোমাদের দেহী - অভিমানী বানান । তোমাদের তো পবিত্রও হতে হবে । তোমরা জানো যে, সত্যযুগে আমরা বৈষ্ণব ছিলাম । সেখানে পবিত্র গৃহস্থ আশ্রম ছিলো । এখন আমরা পবিত্র হয়ে বিষ্ণুপুরীর মালিক হই । তোমরা ডবল বৈষ্ণব হও । প্রকৃত বৈষ্ণব হলে তোমরাই । ওরা হলো বৈষ্ণব ধর্মের বিকারী । তোমরা হলে বৈষ্ণব ধর্মের নির্বিকারী । এখন তোমরা তো এক বাবাকেই স্মরণ করো আর বাবার মধ্যে যে জ্ঞান আছে তা তোমরা ধারণ করো । তোমরা রাজার রাজা হও । ওরা রাজা হয় অল্পকালের জন্য অর্থাৎ এক জন্মের জন্য । তোমাদের রাজত্ব হলো ২১ জন্মের জন্য অর্থাৎ তোমরা সম্পূর্ণ এজ রাজত্ব করো । ওখানে কখনোই অকালে মৃত্যু হবে না । তোমরাই কালকে জয় করো । সময় যখন হবে তখন বুঝতে পারো যে, এখন এই পুরানো খোলস ত্যাগ করে নতুন নিতে হবে । তোমাদের সাক্ষাৎকার হবে । খুশীর বাজনা বাজতে থাকবে । তমোপ্রধান শরীর ত্যাগ করে সতোপ্রধান শরীর ধারণ করা, এ তো খুশীর কথা । ওখানে এভারেজ ১৫০ বছর আয়ু হয় । এখানে অকালে মৃত্যু হতেই থাকে কারণ মানুষ ভোগী । যেই বাচ্চাদের যথার্থ যোগ হয়, তাদের সমস্ত কর্মেন্দ্রিয় যোগবলের দ্বারা বশে থাকবে । সম্পূর্ণ যোগে থাকলে কর্মেন্দ্রিয় শীতল হয়ে যায় । সত্যযুগে তোমাদের কোনো কর্মেন্দ্রিয়ই ধোঁকা দেয় না, ওখানে কখনো এমন বলবেই না যে কর্মেন্দ্রিয বশে নেই । তোমরা অনেক উঁচু পদ পাও । একে বলা হয় বৃহস্পতির অবিনাশী দশা । বৃক্ষপতি, মনুষ্য সৃষ্টির বীজরূপ হলেন বাবা । বীজ তো উপরে থাকে, তাই তাঁকে অবশ্যই উপরে স্মরণ করা হয় । আত্মা তার বাবাকে স্মরণ করে বাচ্চারা, তোমরা জানো যে, অসীম জগতের পিতা আমাদের পড়ান, তিনি একবারই এই অমরকথা শোনাতে আসেন । অমরকথাই বলো বা সত্যনারায়ণের কথাই বলো, ওই কথার অর্থও মানুষ বুঝতে পারে না । সত্যনারায়ণের কথায় নর থেকে নারায়ণ হয় । অমরকথায় তোমরা অমর হও । বাবা প্রতিটি কথা পরিস্কার করে বোঝান । আচ্ছা ।

মিষ্টি - মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা - পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মারূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার ।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) যোগবলের দ্বারা নিজের সর্ব কর্মেন্দ্রিয় বশীভূত করতে হবে । এক বৃক্ষপতি বাবার স্মরণে থাকতে হবে । প্রকৃত বৈষ্ণব অর্থাৎ পবিত্র হতে হবে ।

২ ) ভোরবেলা উঠে প্রকৃত পাঠ পাকা করতে হবে যে, আমি শরীর নই, আত্মা । আমার আত্মিক পিতা আমাকে পড়ান, এই দুঃখের দুনিয়ার এখন পরিবর্তন হয়ে যাবে - বুদ্ধিতে যেন এই সম্পূর্ণ জ্ঞানের মন্থন হতে থাকে ।

বরদান:-
সকল খাজানাকে কাজে লাগিয়ে পদমের উপার্জন জমা করে পদমাপদম ভাগ্যশালী ভব

প্রতি সেকেন্ড পদমের উপার্জন জমা করার বরদান ড্রামাতে সঙ্গমের সময়ে প্রাপ্ত হয়েছে। এইরকম বরদান নিজের প্রতি জমা করো আর অন্যদের প্রতি দান করো, এইরকমই সংকল্পের খাজানাকে, জ্ঞানের খাজানাকে, স্থুল ধনরূপী খাজানাকে কাজে লাগিয়ে পদমের উপার্জন জমা করো কেননা এইসময় স্থুলধনও ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে সমর্পণ করলে এক নতুন পয়সা, এক রত্নের সমান ভ্যালু হয়ে যায় - তাই এইসকল খাজানাগুলিকে নিজের প্রতি বা সেবার প্রতি কাজে লাগাও তাহলে পদমাপদম ভাগ্যশালী হয়ে যাবে।

স্লোগান:-
যেখানে হৃদয়ের স্নেহ থাকে সেখানে সকলের সহযোগ সহজেই প্রাপ্ত হয়।

অব্যক্ত ঈশারা :- আত্মিক স্থিতিতে থাকার অভ্যাস করো, অন্তর্মুখী হও

এখন এমন ট্রান্সপারেন্ট (অর্থাৎ পারদর্শী) হয়ে যাও যে তোমাদের শরীরের মধ্যে আত্মা বিরাজমান আছে, সেটা সবাই স্পষ্ট দেখতে পাবে। তোমাদের আত্মিক স্বরূপ তাদেরকে নিজেদের আত্মিক স্বরূপের সাক্ষাৎকার করাবে, একেই বলা হয় অব্যক্ত বা আত্মিক স্থিতির অনুভব করানো।