23.09.2024
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
ভিতরে-ভিতরে দিন রাত বাবা - বাবা চলতে থাকলে তবে অপার খুশী থাকবে, বুদ্ধিতে থাকবে
বাবা আমাদের কুবেরের ধন-ভান্ডার দিতে এসেছেন"
প্রশ্নঃ -
বাবা কোন্
বাচ্চাদের অনেস্ট (সৎ) ফুল বলেন? তাদের লক্ষণ বলো?
উত্তরঃ
অনেস্ট ফুল হলো
সে-ই, যে কখনোই মায়ার বশীভূত হয় না। মায়ার সংঘাতের মধ্যে আসে না। এইরকম অনেস্ট
ফুল লাস্টে এসেও ফাস্ট (দ্রুত) যাওয়ার পুরুষার্থ করে। তারা পুরানোদের থেকেও এগিয়ে
যাওয়ার লক্ষ্য রাখে। নিজেদের অবগুণকে বের করে দেওয়ার পুরুষার্থতে থাকে। অপরের
অবগুণকে দেখে না।
ওম্ শান্তি ।
শিব ভগবানুবাচ।
তিনি হলেন আত্মাদের পিতা। কারণ শিব তো সুপ্রিম রুহ (আত্মা), আত্মাই তো, তাই না। বাবা
তো প্রতিদিন নতুন নতুন কথা বোঝাতে থাকেন। গীতা শোনাবার সন্ন্যাসী ইত্যাদি অনেক আছে।
তারা বাবাকে স্মরণ করতে পারে না। বাবা শব্দ ওদের মুখ থেকে কখনো বের হতে পারে না। এই
শব্দ হলোই গৃহস্থ মার্গের লোকেদের জন্য। ওরা তো হলো নিবৃত্তি মার্গের। তারা
ব্রহ্মকেই স্মরণ করে। মুখে কখনো শিববাবা বলবে না। তোমরা চাইলে গিয়ে চেক করতে পারো
। মনে করো বড়-বড় বিদ্বান সন্ন্যাসী চিন্ময়ানন্দ ইত্যাদি গীতা শোনায়, এরকম নয়
যে তারা গীতার ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে বুঝতে পেরে তার সাথে যোগ যুক্ত হতে পারবে। না। তারা
তো হলো ব্রহ্মর সাথে যোগ যুক্ত হতে চাওয়া ব্রহ্ম-জ্ঞানী বা তত্ত্ব জ্ঞানী। কৃষ্ণকে
কখনো কেউ বাবা বলছে, এটা হতে পারে না। তাহলে কৃষ্ণ তো গীতা শোনানোর বাবা- এটা
দাঁড়ালো না। শিবকে সকলে বাবা বলে, কারণ উনি সমস্ত আত্মাদের পিতা। সব আত্মারা ওঁনাকে
ডাকে - পরমপিতা পরমাত্মা। উনি হলেন সুপ্রিম, পরম- কারণ পরমধামে থাকেন। তোমরাও সকলে
পরমধামে থাকো, কিন্তু ওঁনাকে পরমাত্মা বলা হয়। উনি কখনো পুনর্জন্মে আসেন না। নিজেই
বলেন - আমার জন্ম হলো দিব্য আর অলৌকিক। এ'রকম কোনো রথে প্রবেশ করে তোমাদের বিশ্বের
মালিক হওয়ার যুক্তি বলি, এটা আর কোথাও হতে পারে না। তাই বাবা বলেন - আমি কে, আমি
কিরকম, আমাকে কেউ জানে না। আমি যখন নিজের পরিচয় দিই তখন জানতে পারে। এই ব্রহ্ম বা
তত্ত্বকে মানে যারা, তারা আবার কৃষ্ণকে নিজের বাবা মানবে কিভাবে। আত্মারা সবাই
বাচ্চা সাব্যস্ত হলো যে না। সবাই কিভাবে কৃষ্ণকে পিতা বলবে। এইরকম তো আর বলতে পারে
না যে কৃষ্ণ সবার পিতা । আমরা সবাই হলাম ব্রাদার্স। এরকমও নয় কৃষ্ণ সর্বব্যাপী।
সবাই কি আর কৃষ্ণ হতে পারে। যদি সবাই কৃষ্ণ হয় তো তার বাবাও চাই। মানুষ অনেক কিছু
ভুলে আছে। জানে না বলেই বলেন আমাকে কোটির মধ্যে কেউ জানে। কৃষ্ণকে তো যে কেউই জেনে
যায়। বিদেশের সবাইও তাকে জানে। লর্ড কৃষ্ণ বলে থাকে । চিত্রও আছে, আসল চিত্র তো নেই।
ভারতবাসীদের থেকে শোনে, এনার পূজা অনেক হয়, তারপর গীতাতে এটা লিখে দিয়েছে - কৃষ্ণ
ভগবান। ভগবানকে কী লর্ড বলা যায়? তারা বলে লর্ড কৃষ্ণ। লর্ড টাইটেল বাস্তবে বড়
মানুষদের প্রাপ্ত হয়। তারা তো সবাইকে দিতে থাকে, একে বলা হয় অন্ধকার নগরী। যে কোনো
পতিত মানুষকে লর্ড বলে দেয়। কোথায় আজকালকার পতিত মানুষ, কোথায় শিব বা কৃষ্ণ! বাবা
বলেন, আমি তোমাদের যে জ্ঞান প্রদান করি, সেটা আবার বিলুপ্ত হয়ে যায়। আমি এসেই নূতন
দুনিয়া স্থাপন করি। আমি জ্ঞানও এখনই দিই। আমি যখন জ্ঞান দেব তখনই বাচ্চারা শুনবে।
আমি ছাড়া কেউ শোনাতে পারে না। জানেই না।
সন্ন্যাসী কি আর
শিববাবাকে স্মরণ করতে পারে? তারা বলতেও পারে না যে নিরাকার গডকে স্মরণ করো। তোমরা
কী কখনো তাদের তা বলতে শুনেছো? অনেক লেখা-পড়া করা মানুষও বোঝে না। বাবা এখন বোঝান
- কৃষ্ণ ভগবান নয়। মানুষ তো তাকেই ভগবান বলতে থাকে। কতো পার্থক্য হয়ে গেছে। বাবা
তো বসে বাচ্চাদের পড়ান। তিনি বাবা, টিচার এমন কি গুরুও। শিববাবা বসে সকলকে বোঝান।
না বোঝার কারণে ত্রিমূর্তিতে শিব রাখেই না। ব্রহ্মাকে রাখে, যাকে প্রজাপিতা ব্রহ্মা
বলে। প্রজাকে রচনা করেন যিনি। কিন্তু ওনাকে ভগবান বলা হবে না। ভগবান প্রজা রচনা
করেন না। ভগবানের তো সকল আত্মারা হলো বাচ্চা। আবার কারোর দ্বারা প্রজা রচনা করেন।
তোমাদের কে অ্যাডপ্ট করেছে? ব্রহ্মা দ্বারা বাবা অ্যাডপ্ট করেছেন। ব্রাহ্মণ হবে যখন
তখনই তো দেবতা হবে। এই কথা তো তোমরা কখনো শোনোনি। প্রজাপিতারও অবশ্যই পার্ট আছে।
অ্যাক্ট চাই তো। এতো প্রজা কোথা থেকে আসবে। তারা তো কুখ বংশাবলী (গর্ভজাত) হতে পারে
না। সেই গর্ভজাত ব্রাহ্মণ বলবে - আমার সারনেম (পদবী) হলো ব্রাহ্মণ। সবার নাম তো
আলাদা-আলাদা। প্রজাপিতা ব্রহ্মা তো তখনই বলবে, যখন শিববাবা এনার মধ্যে প্রবেশ করেন।
এ হলো নতুন কথা। বাবা নিজে বলেন - আমাকে কেউ জানে না, সৃষ্টি চক্র কি তাও জানে না।
তাই তো ঋষি- মুনি সকলে নেতি, নেতি (এটাও না - ওটাও না) বলে গেছে। না পরমাত্মাকে, না
পরমাত্মার রচনাকে জানে। বাবা বলেন যখন আমি এসে নিজের পরিচয় দিই, তখনই জানে। এই
দেবতাদের কি আর ওখানে এই কথা মনে পড়ে যে আমরা এই রাজ্য কীভাবে পেয়েছি? এদের মধ্যে
জ্ঞান থাকেই না। পদ প্রাপ্ত করে নিয়েছে তাই আর জ্ঞানের দরকার থাকে না তাদের ।
সদ্গতির জন্যই জ্ঞানের প্রয়োজন। এরা তো সদ্গতি প্রাপ্ত করেছেই। এটা খুবই বোঝার মতো
রহস্যপূর্ণ বিষয় । বুদ্ধিমান যে, সে-ই বুঝতে পারবে। এছাড়া যে সব বয়স্ক মাতা-রা আছে,
ওদের মধ্যে এতো বুদ্ধিই তো নেই। সেটাও ড্রামার প্ল্যান অনুসারে প্রত্যেকের নিজস্ব
পার্ট আছে। এইরকম তো বলবে না যে - হে ঈশ্বর বুদ্ধি দাও। আমি সবাইকে একরকম বুদ্ধি
দিলে তো সবাই নারায়ণ হয়ে যাবে। সবাই একে অপরের উপরে সিংহাসনে বসবে নাকি ! হ্যাঁ,
এইম অবজেক্ট হলো এটা হওয়া। সবাই পুরুষার্থ করছে নর থেকে নারায়ণ হওয়ার। হবে তো
পুরুষার্থ অনুসারে, তাই না। সবাই যদি হাত তোলে যে - আমি নারায়ণ হবো, তো বাবার
ভিতরে-ভিতরে হাসি আসবে যে, তাই না। সবাই এক রকম হতে পারে কীভাবে! নম্বর অনুযায়ী তো
হয়। নারায়ণ- দ্যা ফাস্ট, সেকেন্ড, থার্ড। যে'রকম এডওয়ার্ড দ্যা ফার্স্ট, সেকেন্ড
থার্ড...হয় । যদিও এইম অবজেক্ট হলো এটা, কিন্তু নিজে তো বুঝতে পারে- চলন এমন হলে
তবে কি পদ প্রাপ্ত হবে? পুরুষার্থ তো অবশ্যই করতে হবে। বাবা নম্বর অনুযায়ী ফুল নিয়ে
আসেন, নম্বর অনুযায়ী ফুল দিতেও পারেন কিন্তু ঐরকম করেন না। অনেকেই তাতে আশাহত হয়ে
পড়বে । বাবা জানেন, দেখেনও কে বেশী সার্ভিস করছে, এ তো খুব ভালো ফুল । শেষে তো
নম্বর অনুযায়ী হয়ই। অনেক পুরানোরাও বসে আছে কিন্তু তাদের মধ্যে নতুন নতুন, বড়-বড়
ভালো ফুল আছে। বাবা বলবেন, এ তো নম্বর ওয়ান অনেস্ট ফুল, কোনো দ্বিধাদ্বন্দ্ব, ঈর্ষা
ইত্যাদি এর মধ্যে নেই। অনেকের মধ্যে কোনো না কোনো ঘাটতি অবশ্যই আছে। কাউকেই তো
সম্পূর্ণ বলা যায় না। ষোলো কলা সম্পূর্ণ হওয়ার জন্য অনেক পরিশ্রমের দরকার। এখন তো
কেউ সম্পূর্ণ হতে পারে না। এখন তো ভালো ভালো বাচ্চাদের মধ্যেও তো অনেক ঈর্ষা রয়ছে।
ঘাটতি তো আছে। বাবা জানেন, সকলে কেমন পুরুষার্থ করছে। দুনিয়ার লোকেরা কি জানে ! তারা
তো কিছু বোঝে না। খুবই কম বোঝে। গরীব যে তাড়াতাড়ি বোঝে। অসীম জগতের বাবা পড়াতে
এসেছেন। সেই বাবাকে স্মরণ করলে আমাদের পাপ খন্ডন হবে। আমরা বাবার কাছে এসেছি, বাবার
থেকে নূতন দুনিয়ার উত্তরাধিকার অবশ্যই প্রাপ্ত হবে। নম্বর অনুযায়ী তো হয়ে থাকে -
১০০ থেকে শুরু করে এক নম্বর পর্যন্ত। বাবাকে জেনে নিয়েছে, একটু যদি শুনে থাকে তো
অবশ্যই স্বর্গে যাবে। ২১ জন্মের জন্য স্বর্গে আসা কি কিছু কম ব্যাপার ! এইরকম তো নয়
যে, কেউ মরলে পরে বলবে ২১ জন্মের জন্য স্বর্গে গেছে। স্বর্গ আছেই বা কোথায় ! কিরকম
মিসআন্ডারস্ট্যান্ডিং (ভুল বোঝাবুঝি) করে দিয়েছে। বড়-বড় ভালো লোকেরাও বলে দিয়েছে
অমুকে স্বর্গে গেছেন । স্বর্গ বলে কাকে? অর্থ কিছুই বোঝে না। এটা শুধুমাত্র তোমরাই
জানো। তোমরাও মানুষ, কিন্তু তোমরা এখন ব্রাহ্মণ হয়েছো। নিজেকে ব্রাহ্মণই বলে থাকো।
তোমাদের ব্রাহ্মণদের এক বাপদাদা আছেন । সন্ন্যাসীদেরকেও তোমরা জিজ্ঞাসা করতে পারো -
এই যে মহাবাক্য বা ভগবানুবাচ আছে যে, দেহের সাথে দেহের সকল ধর্ম ছেড়ে মামেকম্ স্মরণ
করো - এটা কি কৃষ্ণ বলে যে, "মামেকম্ স্মরণ করো"? তোমরা কৃষ্ণকে স্মরণ করো কি? তারা
কিন্তু কখনো হ্যাঁ বলবে না। সেখানেই প্রত্যক্ষ হয়ে যাবে। কিন্তু বেচারী অবলারা যায়,
তারা কি আর জানে। তারা নিজেদের ফলোয়ারদের প্রতি ক্রুদ্ধ হয়ে যায়। দুর্বাসার নাম
আছে না ! তাদের আবার খুব অহঙ্কার । তাদের ফলোয়ার্সও অনেক । ভক্তির রাজ্য যে।
তাদেরকে জিজ্ঞাসা করার ক্ষমতা কারোর নেই। নয়তো তাকে বলতে হতো তুমি তো শিববাবাকে
পূজা করো। এখন ভগবান বলে কাকে ? নুড়ি-পাথর, ভাঙা কলসীর টুকরোতে কি ভগবান? তারাও পরে
এ'সব কথা বুঝবে। তারা এখন তাদের নেশায় রয়েছে । সবাই হলো পূজারী। তাদেরকে পূজ্য বলা
যাবে না।
বাবা বলেন, আমাকে
বিরলই কেউ জানে। বাচ্চারা, আমি যে হই, যে' রকম হই - তোমাদের মধ্যেও বিরলই কেউ,
অ্যাকুউরেট জানে। তার ভিতরে ভিতরে অনেক খুশী থাকে। এটা তো বোঝে যে, বাবা-ই আমাদের
স্বর্গের বাদশাহী দেন। কুবেরের ধন-ভান্ডার লাভ হয় আমাদের । আল্লাহ্ আলাদীনের খেলাও
(আলাদীনের আশ্চর্য প্রদীপ) দেখায । প্রদীপ ঘোষলেই অঢেল ধন-ভান্ডার বেরিয়ে আসবে।
অনেক খেলা দেখায় - এক সম্রাটের বন্ধু ছিলেন ভগবান, তার উপরেও গল্প আছে। যে কিনা তার
রাজত্ব একদিনের জন্য দিয়ে দেবে তাকে, যে প্রথম সাঁকোর উপরে আসবে। এই সবই হলো গল্প।
এখন বাবা বোঝান খোদা তোমাদের অর্থাৎ বাচ্চাদের বন্ধু হন, এনার মধ্যে প্রবেশ করে
তোমাদের সাথে খাওয়া-দাওয়া করেন, খেলাও করেন। শিববাবা আর ব্রহ্মাবাবার রথ একই,
অবশ্যই তাই শিববাবাও খেলা করতে পারেন। বাবাকে স্মরণ করে খেললে এনার মধ্যে দুই জন
থাকে। হলেন তো দুই জন - বাবা আর দাদা। কিন্তু এ'কথা কেউই বোঝে না, বলে রথে করে
এসেছেন, তাই আবার ঘোড়ার গাড়ীর রথ দেখিয়ে দিয়েছে। এইরকম বলে না যে, কৃষ্ণের উপর
বসে শিববাবা জ্ঞান দিচ্ছেন। তারা আবার বলে দেয় কৃষ্ণ ভগবানুবাচ। এইরকম তো বলবে না
যে, ব্রহ্মা ভগবানুবাচ। না। এটা হলো রথ। শিব ভগবানুবাচ। বাবা বসে তোমাদের অর্থাৎ
বাচ্চাদের নিজের আর রচনার আদি-মধ্য-অন্তের পরিচয়, ডিউরেশন (সময় কালের পরিধি সম্বন্ধে)
বলেন। যে কথা কেউই জানে না। যারা সেন্সেবেল হবে তারা বুদ্ধি দিয়ে কাজে লাগাবে।
সন্ন্যাসীদের তো সন্ন্যাস করতে হবে। তোমরাও শরীর সহ সব কিছুর সন্ন্যাস করো। তোমরা
জানো যে, এটা পুরানো চামড়া, আমাদের তো এখন নূতন দুনিয়াতে যেতে হবে। আমরা আত্মারা
এখানে থাকার জন্য নই। এখানে পার্ট প্লে করতে এসেছি। আমরা পরমধামের বাসিন্দা। তোমরা
বাচ্চারা এটাও জানো ওখানে নিরাকারী বৃক্ষ কিরকম। সমস্ত আত্মারা ওখানে থাকে, এই অনাদি
ড্রামা নির্ধারিত হয়েই আছে। কতো কোটি-কোটি জীব-আত্মারা আছে। এতো সব কোথায় থাকে?
নিরাকারী দুনিয়ায়। এছাড়া নক্ষত্র সমূহ তো আর আত্মা নয়। মানুষ তো নক্ষত্রদেরও দেবতা
বলে দিয়েছে। কিন্তু সেসব কোনো দেবতা নয়। জ্ঞান সূর্য তো আমরা শিববাবাকে বলবো। তাই
ওঁনাকে দেবতা বলা যাবে কি? শাস্ত্রে কি-কি সব লিখে দিয়েছে। এই সব হলো ভক্তি
মার্গের সামগ্রী। যার দ্বারা তোমরা নীচে নামতেই থেকেছো। ৮৪ জন্ম নিলে তো অবশ্যই নীচে
আসতে থাকবে। এখন এটা হলো আয়রন এজেড দুনিয়া। সত্যযুগকে বলা হয় গোল্ডেন এজেড দুনিয়া।
সেখানে কারা থাকতো? দেবতারা। তারা গেলো কোথায়- এটা কারোরই জানা নেই। তারা এটা বোঝে
যে মানুষ পুনর্জন্ম নেয়। বাবা বুঝিয়েছেন, পুনর্জন্ম নিতে নিতে দেবতা থেকে
পরিবর্তিত হয়ে হিন্দু হয়ে গেছে। পতিত হয়ে গেছে। আর কারোর ধর্ম পরিবর্তিত হয় না।
এদের ধর্ম কেন পরিবর্তিত হয় - কারোর জানা নেই। বাবা বলেন ধর্ম ভ্রষ্ট, কর্ম ভ্রষ্ট
হয়ে গেছে। দেবী দেবতা যখন ছিলো নারী-পুরুষ পবিত্র জুড়ি ছিলো। তোমরা আবার
রাবণ-রাজ্যে অপবিত্র হয়ে গেছো। তাই দেবী-দেবতা বলা যায় না, সেইজন্য নাম হলো হিন্দু।
দেবী-দেবতা ধর্ম কৃষ্ণ ভগবান স্থাপন করেননি। অবশ্যই শিববাবা এসেই করে থাকবেন। শিব
জয়ন্তী শিব রাত্রিও পালন করা হয় কিন্তু উনি এসেই করেছেন, এটা কারোর জানা নেই। শিব
পুরাণও একটি আছে। বাস্তবে শিবের একমাত্র গীতাই আছে, যা শিববাবা শুনিয়েছেন, আর কোন
শাস্ত্র হয় না। তোমরা কোনো হিংসা করো না। তোমাদের কোনো শাস্ত্র তৈরী হয় না। তোমরা
নূতন দুনিয়াতে চলে যাও। সত্যযুগে গীতা ইত্যাদি কোনো শাস্ত্রই হয় না। সেখানে কে
পড়বে? তারা তো বলে দেয় এই বেদ-শাস্ত্র ইত্যাদি পরমম্পরায় চলে আসছে। ওদের কিছুই
জানা নেই। স্বর্গে কোনো শাস্ত্র ইত্যাদি হয় না। বাবা তো দেবতায় পরিণত করে
দিয়েছেন, সকলের সদ্গতি হয়ে গেছে আবার শাস্ত্র পড়ার দরকার কি। সেখানে শাস্ত্র হয়
না। এখন বাবা তোমাদের জ্ঞানের চাবি দিয়ে দিয়েছেন, যার দ্বারা বুদ্ধির তালা খুলে
গেছে। প্রথমে তালা একদম বন্ধ ছিলো, কিছুই বুঝতে না। আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
কারোর প্রতিই ঈর্ষা ইত্যাদি করতে নেই। যাবতীয় দুর্বলতা বের করে দিয়ে সম্পূর্ণ
হওয়ার পুরুষার্থ করতে হবে। ঈশ্বরীয় পাঠ পড়ে উচ্চ পদ প্রাপ্ত করতে হবে।
২ ) শরীর সহ সব কিছুর
সন্ন্যাস করতে হবে। কোনো প্রকারেরই হিংসা করতে নেই। অহঙ্কার রাখতে নেই।
বরদান:-
অবিনাশী
আর অসীম জগতের অধিকারের খুশী বা নেশায় থেকে সদা নিশ্চিন্ত ভব
দুনিয়ায় লৌকিক
অধিকারের জন্য অনেক পরিশ্রম করে, তোমরা তো বিনা পরিশ্রমেই অধিকার প্রাপ্ত করেছো।
বাচ্চা হয়েছো অর্থাৎ অধিকার নিয়েছো। “বাঃ আমি শ্রেষ্ঠ অধিকারী আত্মা” - এই অসীম
জগতের অধিকারের নেশা আর খুশীতে থাকো তো সদা নিশ্চিন্ত থাকবে। এই অবিনাশী অধিকার
নিশ্চিত রূপেই আছে। যেখানে নিশ্চিত থাকে সেখানে নিশ্চিন্ত থাকে। নিজের সকল দায়িত্ব
বাবাকে অর্পণ করে দাও তাে সকল চিন্তা থেকে মুক্ত হয়ে যাবে।
স্লোগান:-
যারা
উদারচিত্ত, বিশাল হৃদয়ের অধিকারী হয় তারাই হলো একতা-র ভিত্তি।