23.10.2024 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা - তোমাদের যাত্রা (তীর্থ) হলো বুদ্ধির, একে বলে আধ্যাত্মিক (রূহানী) যাত্রা, তোমরা নিজেকে আত্মা মনে করো । শরীর নয়, শরীর মনে করা অর্থাৎ উল্টো ঝুলে পড়া"

প্রশ্নঃ -
মায়ার পাম্পে (আড়ম্বরে) মানুষ কি ধরনের সম্মান প্রাপ্ত করে থাকে?

উত্তরঃ  
আসুরি সম্মান । মানুষ যদি আজ কাউকে কিছুমাত্র সম্মান দিয়ে থাকে, কাল তাকেই অসম্মান করে, গালিগালাজ করে, মায়া সবাইকেই অসম্মান করেছে, পতিত বানিয়েছে । বাবা এসেছেন তোমাদের দৈবী সম্মানে বিভূষিত করতে ।

ওম্ শান্তি ।
রূহানী বাবা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জিজ্ঞাসা করছেন ‐ কোথায় বসে আছো? তোমরা উত্তরে বলবে বিশ্বের আধ্যাত্মিক (আত্মিক) ইউনিভার্সিটিতে । আত্মিক (রূহানী) শব্দ লৌকিক জগতের মানুষ জানে না । দুনিয়াতে বিশ্ববিদ্যালয় তো অনেক আছে, এ হলো সমগ্র বিশ্বে একটাই আত্মিক বিদ্যালয়, একজনই শিক্ষা প্রদান করেন । কোন্ বিষয়ে পড়ান? আত্মিক নলেজ । সুতরাং এ হলো স্পিরিচুয়াল বিদ্যালয় অর্থাৎ আধ্যাত্মিক (রূহানী) পাঠশালা । স্পিরিচুয়াল অর্থাৎ রূহানী নলেজ প্রদান করেন কে? এটাও তোমরা বাচ্চারা এখন জেনেছো । আত্মিক পিতাই আত্মিক নলেজ প্রদান করেন, সেইজন্য তাঁকে টিচারও বলা হয় । স্পিরিচুয়াল ফাদার পড়ান । আচ্ছা, তারপর কি হবে? তোমরা বাচ্চারা জানো যে এই আত্মিক নলেজের দ্বারা আমরা আমাদের আদি সনাতন দেবী-দেবতা ধর্ম স্থাপন করে থাকি । এক ধর্মের স্থাপনা বাদবাকি যে যে ধর্ম আছে সবই বিনাশ হয়ে যাবে । এই স্পিরিচুয়াল নলেজের সাথে সব ধর্মের কি সম্পর্ক আছে-- এও তোমরা জানো । এক ধর্মের স্থাপনা এই আত্মিক নলেজের দ্বারাই গড়ে ওঠে । লক্ষ্মী-নারায়ণও বিশ্বের মালিক ছিল, তাই না! সেই দুনিয়াকে বলা হয় স্পিরিচুয়াল ওয়ার্ল্ড । এই স্পিরিচুয়াল নলেজের দ্বারা তোমরা রাজযোগ শিখছো, এর মাধ্যমেই রাজত্ব স্থাপন হয় । আচ্ছা, অন্য ধর্মের সাথে এর কি সম্পর্ক রয়েছে? অবশিষ্ট সব ধর্মের বিনাশ ঘটবে, কেননা তোমরা পবিত্র হলে তোমাদের নতুন দুনিয়া প্রয়োজন । অনেক ধর্ম শেষ হয়ে গিয়ে এক ধর্ম থাকবে । তাকেই বলা হবে বিশ্বে শান্তির রাজ্য । এখন হলো পতিত অশান্তির রাজ্য, তারপর হবে পবিত্র শান্তির রাজ্য । এখন তো অনেক ধর্ম, কত অশান্তি, সব পতিত থেকে পতিত হয়ে গেছে, রাবণের রাজ্য যে ! এখন বাচ্চারা জানে, ৫ বিকারকে অবশ্যই ত্যাগ করতে হবে। একে সঙ্গে করে নিয়ে যাওয়া যাবে না । আত্মাই ভালো বা মন্দ সংস্কার নিয়ে যায় । এখন বাবা তোমরা বাচ্চাদের পবিত্র হওয়ার কথা বলেন । ঐ পবিত্র দুনিয়াতে কোনওরকম দুঃখ থাকে না । এই স্পিরিচুয়াল নলেজ কে দিচ্ছেন? স্পিরিচুয়াল ফাদার, সব আত্মাদের পিতা । স্পিরিচুয়াল ফাদার কি পড়াবেন? স্পিরিচুয়াল নলেজ প্রদান করবেন । এখানে কোনও বইপত্রের প্রয়োজন নেই, শুধু নিজেকে আত্মা মনে করে বাবাকে স্মরণ করতে হবে, পবিত্র হতে হবে । বাবাকে স্মরণ করতে করতে অন্তিম সময়ে যেমন মতি তেমনই গতি হবে । এটাই হলো স্মরণের যাত্রা। যাত্রা শব্দটি সুন্দর । লৌকিকে হলো শরীরী যাত্রা, এ হলো আত্মিক যাত্রা । ঐ যাত্রায় পায়ে হেঁটে যেতে হয়, হাত পা চালাতে হয়, এখানে এসব কিছুই নেই । শুধু স্মরণ করতে হবে । ঘোরো, বেড়াও, ওঠো, বসো নিজেকে আত্মা মনে করে শুধু বাবাকে স্মরণ কর। কঠিন বিষয় নয়, শুধু স্মরণ করতে হবে । এটাই তো প্রকৃত সত্য, তাই না ! আগে তোমরা উল্টো পথে চলেছিলে । নিজেকে আত্মা মনে করার পরিবর্তে শরীর ভাবা, একে বলে উল্টো ঝুলে পড়া। নিজেকে আত্মা মনে করা ‐‐ এ হলো সোজা। আল্লাহ্ ( ঈশ্বর) যখন আসেন তখনই এসে পবিত্র করে তোলেন । আল্লাহ্-র পবিত্র দুনিয়া, রাবণের পতিত দুনিয়া । দেহ অভিমানে সবাই উল্টো হয়ে গেছে, এখন একবারই দেহী-অভিমানী হতে হবে । সুতরাং তোমরা হলে আল্লাহ্-র সন্তান । তোমরা বলবে না যে, আল্লাহ্ হু (আমিই আল্লাহ্, Allah, just He), আঙুল দ্বারা উপরেই ইশারা করা হয়ে থাকে। সুতরাং এর দ্বারাই প্রমাণ হয় যে, আল্লাহ্ তিনি-ই । সুতরাং এখানে নিশ্চয়ই অন্য কিছু আছে । আমরা সবাই ঐ আল্লাহ্-র সন্তান, আমরা সবাই ভাই-ভাই । আল্লাহ্ হু বললে ভুল বলা হয়ে থাকে যে আমরা সবাই পিতা, কিন্তু তা নয়। পিতা একজনই, তাঁকেই স্মরণ করতে হবে । আল্লাহ্ হলেন এভার পিওর, আল্লাহ্-ই বসে পড়ান । এই সামান্য বিষয়েই মানুষ কত বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে । অথচ শিব জয়ন্তীও পালন করে, তাই না ! কৃষ্ণকে এমন পদ কে দিয়েছেন? শিববাবা । শ্রী কৃষ্ণ হলেন স্বর্গের প্রথম রাজকুমার । অসীম জগতের পিতাই এনাকে রাজ্য ভাগ্য দিয়ে থাকেন । বাবা যে নতুন দুনিয়াতে স্বর্গ স্থাপনা করেন, ওখানে শ্রী কৃষ্ণ হলেন নম্বর ওয়ান প্রিন্স । বাবা বাচ্চাদের পবিত্র হওয়ার যুক্তিও বলে দেন । বাচ্চারা জানে স্বর্গ যাকে বৈকুন্ঠ, বিষ্ণুপুরী বলা হয়, তা অতীত হয়ে গেছে আবারও ভবিষ্যতে হবে । চক্র ঘুরতেই থাকে, তাইনা । এই জ্ঞান এখনই তোমরা বাচ্চারা প্রাপ্ত করে থাকো । এই জ্ঞান ধারণ করে অন্যদেরও করাতে হবে । প্রত্যেককেই টিচার হতে হবে । এমনটাও নয় যে টিচার হলেই লক্ষ্মী-নারায়ণ হবে । তা নয় । টিচার হয়ে তোমরা প্রজা তৈরি করবে, যত অনেকের কল্যাণ করতে পারবে, ততই উচ্চ পদ প্রাপ্ত করতে পারবে, স্মৃতিতে থাকবে । বাবা বলেন, ট্রেনে করে আসলেও ব্যাজের দ্বারা বোঝাও, বাবা হলেন পতিত-পাবন, মুক্তিদাতা, পবিত্রতা প্রদানকারী । অনেক কিছুই স্মরণ করতে হয় । মানুষ জন্তু জানোয়ার, হাতি, ঘোড়া ইত্যাদি এমনকি কচ্ছ-মচ্ছকেও অবতার বলে দেয়, তাদের পূজা করতে থাকে । ভাবে ভগবান সর্বব্যাপী, অর্থাৎ এদের সবার মধ্যেই আছে । তারা সবাইকেই খাওয়াবে । আচ্ছা, প্রতিটি কণায় কণায় যদি ভগবান থাকে, তবে তাঁকে তারা কিভাবে খাওয়াবে ! সব কিছুই তাদের সম্পূর্ণ বুদ্ধির বাইরে চলে গেছে । লক্ষ্মী-নারায়ণ ইত্যাদি দেবী-দেবতারা তো এই কাজ করবে না । দেবতারা পিঁপড়েদের খাওয়াবে, অমুককে খাওয়াবে? তাই বাবা বোঝান, তোমরা হলে রিলিজো পলিটিক্যাল । তোমরা জানো আমরা ধর্ম স্থাপনা করছি। রাজ্য স্থাপন করার জন্য মিলিটারি থাকে । কিন্তু তোমরা হলে গুপ্ত । তোমাদের হলো স্পিরিচুয়াল ইউনিভার্সিটি । সম্পূর্ণ দুনিয়ায় প্রতিটি মানুষ মাত্রই এইসব ধর্ম থেকে বেরিয়ে নিজের ঘরে চলে যাবে । ওটা হলো আত্মাদের নিবাস স্থান । এখন তোমরা সঙ্গম যুগে আছ তারপর সত্য যুগে গিয়ে রাজত্ব করবে তখন আর কোনো ধর্ম থাকবে না । গানেও আছে না - বাবা তুমি যা দাও তা অন্য কেউ দিতে পারে না । সম্পূর্ণ আকাশ, সম্পূর্ণ ধরিত্রী তোমাদের । তোমরা সম্পূর্ণ বিশ্বের মালিক হয়ে যাও । এখনই তোমরা এসব কথা বুঝেছ, নতুন দুনিয়াতে গিয়ে এসবই ভুলে যাবে । একেই বলে আত্মিক স্পিরিচুয়াল নলেজ । বাচ্চারা, তোমাদের বুদ্ধিতে আছে, আমরা প্রতি ৫ হাজার বছর রাজ্য গ্রহণ করি তারপর আবার হারিয়ে ফেলি। এই ৮৪ চক্র ঘুরতেই থাকে। সুতরাং ঈশ্বরীয় পঠন-পাঠন করলে তবেই যেতে পারবে । পড়াশোনা না করলে নতুন দুনিয়াতে যেতে পারবে না । ওখানে তো লিমিটেড নাম্বার কম জনসংখ্যা) । নম্বরানুসারে পুরুষার্থ অনুযায়ী ওখানে গিয়ে পদ প্রাপ্ত হবে । সবাই তো পড়াশোনা করবে না, যদি সবাই পড়াশোনা করে তবে পরবর্তী জন্মেও রাজ্য পাবে । ঈশ্বরীয় পাঠধারীদের সংখ্যারও লিমিট রয়েছে ।সত্য যুগ-ত্রেতাতে যারা আসবে তারাই পড়াশোনা করবে । তোমাদের অসংখ্য প্রজা তৈরি হতে থাকে । দেরিতে যারা আসবে, তারা তো পাপ ভস্ম করতে পারবে না । পাপ আত্মা হলে সাজা খেয়ে সামান্য পদের অধিকারী হবে । অসম্মান হবে । যাদের মায়া এখনও সম্মান করে (মায়ার বশীভূত যারা) তারাই অসম্মানিত হবে । এ হলো ঈশ্বরীয় সম্মান, আর ওটা হল আসুরি সম্মান । ঈশ্বরীয় বা দৈবী সম্মান আর আসুরি সম্মানের মধ্যে দিন-রাতের ফারাক। আমরা বাচ্চারা আসুরি সম্মানের ছিলাম এখন আবার দৈবী সম্মান প্রাপ্ত করতে চলেছি। আসুরি সম্মান দ্বারা সম্পূর্ণরূপে ভিখারিতে পরিণত হয় । এ হলো কাঁটার দুনিয়া সুতরাং অসম্মানিত হওয়া তাইনা ! তারপর কত সম্মানের অধিকারী হয়ে ওঠো । যেমন রাজা-রাণী তেমনই প্রজা । অসীম জগতের পিতা তোমাদের সম্মানকে শ্রেষ্ঠ করে তোলেন সুতরাং এতটা পুরুষার্থ তো করা উচিত । সবাই বলে আমি নিজের সম্মান এমনই বৃদ্ধি করব যাতে নর থেকে নারায়ণ, নারী থেকে লক্ষ্মী হয়ে যাবো । এদের থেকে উচ্চ সম্মান কারও নেই । কথাও শোনে নর থেকে নারায়ণ হওয়ার, অমরকথা, তিজরীর ( ভক্তি মার্গের তৃতীয় নয়ন লাভের কাল্পনিক গল্প কথা ) কথা একই । এই কথাই এখন তোমরা শুনছো ।

তোমরা বাচ্চারা বিশ্বের মালিক ছিলে, আবার ৮৪ জন্ম নিতে নিতে নীচে নেমে গেছ। তারপর আবার প্রথম নম্বরে জন্ম গ্রহণ করবে । প্রথম নম্বরে জন্ম গ্রহণ করলে অনেক উচ্চ পদ প্রাপ্ত করে থাক । রাম সম্মানিত করে তোলেন, রাবণ তোমাদের অসম্মানিত করে তোলে। এই নলেজ দ্বারাই তোমরা মুক্তি-জীবনমুক্তি প্রাপ্ত কর । অর্ধকল্প রাবণের নাম পর্যন্ত থাকে না । এসব বিষয় এখন তোমরা বাচ্চাদের বুদ্ধিতে ধারণ হচ্ছে সেটাও নম্বরানুসারে। কল্পে-কল্পে এভাবেই তোমরা নম্বরানুসারে পুরুষার্থ অনুযায়ী বিচক্ষণ হয়ে ওঠো । কিন্তু মায়া ভুল করিয়ে দেয় । অসীম জগতের পিতাকে স্মরণ করতেই ভুলে যাও। ভগবান এসে পড়ান, উনি আমাদের টিচার হয়েছেন তারপরেও অ্যাবসেন্ট থাকে, পড়াশোনা করে না । দরজায় দরজায় ধাক্কা খাওয়ার অভ্যাস তৈরি হয়ে গেছে। পড়াশোনার প্রতি যারা অমনোযোগী থাকে তাদের কাজকর্মে লাগিয়ে দেওয়া উচিত। ধোপা ইত্যাদি কাজ করে থাকে। তাতে পড়াশোনার কি দরকার। ব্যবসা করে মানুষ মাল্টিমিলেনিয়র হয়ে যায় । চাকরি করে এতো বিত্তবান হওয়া যায় না, চাকরিতে তো ফিক্সড মাইনে ধার্য করা হয় । এখান তোমাদের পড়াশোনা হলো বিশ্বের বাদশাহীর জন্য । এখান সবাই বলে থাকে না আমরা ভারতবাসী, পরে তোমাদের বলবে বিশ্বের মালিক । ওখানে দেবী-দেবতা ধর্ম ছাড়া অন্য কোনো ধর্ম থাকে না, বাবা তোমাদের বিশ্বের মালিক করে তোলেন সুতরাং ওঁনার শ্রীমতে চলা উচিত । কোন রকম বিকারের ভূত থাকা উচিত নয় । এই ভূত খুব খারাপ । কামুকদের স্বাস্থ্যের অবনতি হতে থাকে, শক্তি কমে যায় । এই কাম বিকার তোমাদের শক্তিকে সম্পূর্ণরূপে শেষ করে দিয়েছে । ফল এটাই হয়েছে যে আয়ু কমে গেছে । ভোগী হয়ে গেছো । কামুক ভোগী, রোগী সব কিছুতেই আক্রান্ত হয়ে পড়ে। সত্য যুগে কোনও বিকার নেই সুতরাং যোগী হয় এবং সবসময় স্বাস্থ্যবান থাকে আর আয়ুও হয় ১৫০ বছরের । ওখানে অকাল মৃত্যু হয় না। এ বিষয়ে উল্লেখ করে একটা কথা প্রচলিত রয়েছে ‐‐ একজনকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, প্রথমে সুখ চাই নাকি দুঃখ চাই? উত্তরে সে বলে - প্রথমে সুখ চাই, কেননা সুখের মধ্যে গেলে সেখানে কাল আসতে পারবে না । ভিতরে প্রবেশ করতে পারবে না। এই সব গল্প কথা বানিয়ে বলে দিয়েছে। বাবা বুঝিয়ে বলেছেন, তোমরা সুখধামে থাক, সুতরাং ওখানে কোনো কাল (অকালে মৃত্যু) থাকে না। রাবণ রাজ্যই নেই । তারপর যখন বিকারী হয়ে যাও তখনই কাল আসে। ওরা কত ধর্মীয় গল্প বানিয়ে দিয়েছে, কাল নিয়ে গেছে তারপর এই হয়েছে, সেই হয়েছে । না কালকে দেখা যায়, না আত্মাকে দেখা যায়। একে বলে দন্তকথা । কর্ণরসের অনেক কাহিনী আছে । এখন বাবা বুঝিয়ে বলেন ওখানে অকাল মৃত্যু কখনোই হয় না, আয়ুও বৃদ্ধি হয় আর সবাই পবিত্র থাকে । ১৬ কলা সম্পন্ন আত্মাদের ধীরে ধীরে কলা হ্রাস পেতে পেতে সম্পূর্ণ শূন্য কলা হয়ে যায় । তারপর বলে আমি নির্গুণ আমার মধ্যে কোনো গুণ নেই । বাচ্চাদের নির্গুণ নামে একটা সংস্থাও রয়েছে । বলে থাকে আমার মধ্যে কোনও গুণ নেই, আমাকে গুণবান করে তোল, সর্বগুণ সম্পন্ন করে তোল । এখন বাবা বলেন পবিত্র হতে হবে । মরতেও হবে সবাইকে। সত্য যুগে অধিক সংখ্যক মানুষ থাকবে না । এখন তো অগুনতি মানুষ । ওখানে সন্তান ও যোগবল দ্বারা হয় । এখানে দেখ কত সন্তান জন্ম দিতেই থাকে । তারপরও বাবা বলেন বাবাকে স্মরণ কর । বাবাই এসে পড়ান, স্মরণে আসে যে টিচার পড়ান । তোমরা জান শিববাবা আমাদের পড়াচ্ছেন, কি পড়ান, সেটাও তোমরা জেনেছ, সুতরাং বাবা অথবা শিক্ষকের সাথে যোগযুক্ত হতে হবে । নলেজ অনেক উচ্চস্তরের । এখন তোমাদের সবার স্টুডেন্ট লাইফ । এমন ইউনিভার্সিটি কখনও দেখেছ যেখানে বাচ্চা, বৃদ্ধ, জোয়ান সবাই একসাথে পড়াশোনা করে । একটাই স্কুল, টিচার ও একজন আছেন আর যেখানে ব্রহ্মা স্বয়ং পড়াশোনা করেন । চমকপ্রদ তাইনা । শিববাবা তোমাদের পড়াচ্ছেন । ব্রহ্মাও শুনছেন । বাচ্চা হোক বা বৃদ্ধ প্রত্যেকেই পড়াশোনা করতে পারে । তোমরাও এই নলেজ এখন নিচ্ছো, তাইনা । এখন পড়াতেও শুরু করে দিয়েছো । প্রতিদিন একটু একটু করে সময় কমে যাচ্ছে । এখন তোমরা অসীম জগতে যেতে চলেছো । জেনে গেছো যে এই ৫ হাজার বছরের চক্র কিভাবে অতিক্রম হয়েছে, প্রথমে এক ধর্ম ছিল, এখন কত ধর্ম । এখন শাসনকর্তা বলা যাবে না । এখন বলা হয় প্রজার উপর প্রজার রাজ্য পরিচালনা করা । সর্বপ্রথম খুব পাওয়ারফুল ধর্ম ছিল, সবাই মালিক ছিলে । এখন অধর্মী হয়ে গেছো, কোনও ধর্ম নেই। সবার মধ্যেই ৫ বিকার । অসীম জগতের বাবা বলেন ‐ বাচ্চারা এখন ধৈর্য্য ধরো, খুব অল্প সময়ের জন্য তোমরা এখন রাবণ রাজ্যে রয়েছো। ভালোভাবে পড়াশোনা করলে সুখধামে যেতে পারবে, এ হলো দুঃখ ধাম । তোমরা নিজের শান্তিধাম আর সুখধামকে স্মরণ করো, এই দুঃখধামকে ভুলে যাও ।

আত্মাদের পিতা ডায়রেকশন দিচ্ছেন - হে আত্মিক বাচ্চারা ! আত্মা রূপী (রূহানী) বাচ্চারা এই অরগ্যানস (কান) দ্বারা শুনছে । তোমরা আত্মারা যখন সত্যযুগে সতোপ্রধান ছিলে তখন তোমাদের শরীরও ফার্স্টক্লাস সতোপ্রধান ছিল । তোমরা অনেক ধনবান ছিলে তারপর পুনর্জন্ম নিতে নিতে কি হয়ে গেছ ! দিন-রাতের পার্থক্য। দিনে আমরা স্বর্গে ছিলাম, রাতে আমরা নরকে রয়েছি । একেই বলা হয় ব্রহ্মা এবং ব্রাহ্মণদের দিন আর রাত । ৬৩ জন্ম ধরে ধাক্কা খেতে থাকে, অন্ধকার রাত, তাইনা ! বিভ্রান্ত হয়ে ছুটে বেড়ায় । ভগবানকে কেউ-ই পায় না । একেই বলে গোলকধাঁধার (ভুলভুলাইয়ার) খেলা, সুতরাং বাচ্চারা বাবা তোমাদের সম্পূর্ণ সৃষ্টির আদি-মধ্য-অন্তের খবর শোনান । আচ্ছা!

মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার ।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) দুয়ারে দুয়ারে ধাক্কা খাওয়ার অভ্যাস ছেড়ে ঈশ্বরীয় পড়াশোনা মনোযোগী হয়ে পড়তে হবে । কখনও অ্যাবসেন্ট হওয়া উচিত নয় । অবশ্যই বাবার মতো টিচার হতে হবে । পড়াশোনা করে অন্যদেরও পড়াতে হবে ।

২ ) সত্য নারায়ণের সত্য কথা শুনে নর থেকে নারায়ণ হতে হবে, এমন সম্মানীয় নিজেকেই নিজে করে তুলতে হবে । কখনও ভূতের (বিকারের) বশীভূত হয়ে সম্মান হারানো উচিত নয় ।

বরদান:-
সম্বন্ধ আর প্রাপ্তি গুলির স্মৃতির দ্বারা সর্বদা খুশিতে থাকা সহজযোগী ভব

সহজযোগীর আধার হলো - সম্বন্ধ আর প্রাপ্তি। সম্বন্ধের আধারে ভালোবাসার উৎপত্তি হয় আর যেখানে প্রাপ্তি থাকে সেখানে মন-বুদ্ধি সেখানে চলে যায়। তাই সম্বন্ধে আমার - এই অধিকার থেকে স্মরণ করো। অন্তর থেকে বলো আমার বাবা আর বাবার দ্বারা যে শক্তির, জ্ঞানের, গুণের, সুখ, শান্তি, আনন্দ, প্রেমের সম্পদ প্রাপ্ত হয়েছে তাকে স্মৃতিতে ইমার্জ করো, এর ফলে অপার খুশী থাকবে আর সহযোগীও হয়ে উঠবে।

স্লোগান:-
দেহ-বোধ এর থেকে মুক্ত হয়, তফে অন্য সব সম্বন্ধের বন্ধন স্বভাবতঃই সমাপ্ত হয়ে যাবে।