24.04.2025
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
বৈজয়ন্তী মালাতে আসার জন্য নিরন্তর বাবাকে স্মরণ করো, নিজের টাইম ওয়েস্ট ক'রো না,
পড়াশোনার প্রতি সম্পূর্ণ ভাবে মনোযোগ দাও"
প্রশ্নঃ -
বাবা তাঁর
নিজের বাচ্চাদের কাছে কোন্ একটি রিকোয়েস্ট করেন?
উত্তরঃ
মিষ্টি
বাচ্চারা, বাবা রিকোয়েস্ট করেন - ভালো ভাবে পড়াশোনা করতে থাকো। বাবার সম্মান রক্ষা
করো (দাঁড়ির লাজ রাখো)। এমন কোনো ঘৃণ্য কাজ করো না যাতে বাবার নাম বদনাম হয়। সৎ
পিতা, সৎ শিক্ষক, সদ্গুরুর নিন্দা কখনো হতে দিও না। প্রতিজ্ঞা করো - যতদিন পর্যন্ত
পড়াশোনা চলবে ততদিন অবশ্যই পবিত্র থাকবে।
গীতঃ-
তোমাকে পেয়ে
আমি সমগ্র জগৎ পেয়ে গেছি ...(তুম্হে পাকে হামনে জঁহা পা লিয়া হ্যায়)
ওম্ শান্তি ।
এটা কে বলেছে
যে, তোমাকে পেয়ে সমস্ত স্বর্গের রাজত্ব পেয়ে থাকি? এখন তোমরা স্টুডেন্ট হও তখন তোমরা
বাচ্চাও। তোমরা জানো যে অসীম জগতের বাবা আমাদের অর্থাৎ বাচ্চাদের বিশ্বের মালিক করে
তোলার জন্য এসেছেন। ওনার সামনে আমরা বসে আছি আর আমরা রাজযোগ শিখছি অর্থাৎ বিশ্বের
ক্রাউন প্রিন্স-প্রিন্সেস হতে তোমরা এখানে পড়াশোনা করতে এসেছো বা পড়াশোনা করছো। এই
গান তো ভক্তি মার্গে গাওয়া হয়েছে। বাচ্চারা বুদ্ধি দিয়ে জেনেছে যে আমরা বিশ্বের
মহারাজা-মহারাণী হবো। বাবা হলেন জ্ঞানের সাগর, আত্মাদের সুপ্রিম টিচার বসে আত্মাদের
পড়াচ্ছেন। আত্মা এই শরীর রূপী কর্মেন্দ্রীয় দ্বারা জানে যে আমরা বাবার থেকে বিশ্ব
ক্রাউন প্রিন্স-প্রিন্সেস হওয়ার জন্য পাঠশালাতে বসেছি। কতো নেশা থাকা উচিত। নিজের
মন থেকে জিজ্ঞাসা করো- এতোটাই নেশা আমাদের এই স্টুডেন্টদের মধ্যে আছে? এটা কোনো
নূতন কথাও না। আমরা কল্প-কল্প বিশ্বের ক্রাউন প্রিন্স আর প্রিন্সেজ হওয়ার জন্য
বাবার কাছে এসে থাকি। যে বাবা, বাবাও হন, টিচারও হন।বাবা জিজ্ঞাসা করলে তো সকলেই বলে
আমি সূর্যবংশী প্রিন্স-প্রিন্সেস বা লক্ষ্মী-নারায়ণ হবো। নিজের মন থেকে প্রশ্ন করা
উচিত যে আমি ঐরকম পুরুষার্থ কি করি? অসীম জগতের পিতা - যিনি স্বর্গের উত্তরাধিকার
দিতে এসেছেন, তিনি আমাদের বাবা-টিচার-গুরুও হন, তাই অবশ্যই উত্তরাধিকারও এরকম
উচ্চতমের চেয়েও উচ্চ প্রদান করবেন। দেখা দরকার -আমাদের এতো খুশী কি আছে যে আমরা আজ
পড়াশুনা করছি, কাল ক্রাউন প্রিন্স হবো? কারণ এটা যে হলো সঙ্গম। এখন এই পারে আছো, ঐ
পারে স্বর্গে যাওয়ার জন্য পড়াশোনা করছো। সেখানে তো সর্ব গুণ সম্পন্ন, ১৬ কলা
সম্পন্ন হয়েই যাবে। আমরা কি ওই রকম যোগ্য হয়ে উঠেছি - নিজেকে জিজ্ঞাসা করতে হয়।
একজন ভক্ত নারদের কথা নয়। তোমরা সকলেই ভক্ত ছিলে, বাবা এখন ভক্তি থেকে মুক্ত করেন।
তোমরা জানো যে আমরা বাবার বাচ্চা হয়েছি ওনার থেকে উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করার জন্য,
বিশ্বের ক্রাউন প্রিন্স হতে এসেছো। বাবা বলেন যদিও নিজের গৃহস্থ ব্যবহারে থাকো,
বাণপ্রস্থ অবস্থায় যারা থাকে তাদের গার্হস্থ্য আচরণে থাকতে নেই আর কুমার-
কুমারীরাও গার্হস্থ্য আচরণে থাকে না। তাদেরও স্টুডেন্ট লাইফ আছে। ব্রহ্মচর্যে থেকেই
অধ্যয়ণ করে। এখন এই পড়াশোনা হলো অত্যন্ত উচ্চ মানের, এতে চিরতরের জন্য পবিত্র হতে
হয়। তারা তো ব্রহ্মচর্যে থেকে পড়াশোনা করে আবার বিকারে চলে আসে। এক্ষেত্রে তোমরা
ব্রহ্মচর্যে থেকে সম্পূর্ণ অধ্যয়ণ করো। বাবা বলেন আমি হলাম পবিত্রতার সাগর,
তোমাদেরও করে তুলি। তোমরা জানো যে অর্ধ-কল্প আমরা পবিত্র থাকতাম। সবসময় বাবার কাছে
প্রতিজ্ঞা করে থাকি - বাবা আমরা কেন না পবিত্র হই আর পবিত্র দুনিয়ার মালিক হই। কতো
বড় মাপের বাবা আমাদের - যদিও সাধারণ দেহ, কিন্তু আত্মার যে নেশা চড়ে যায়। বাবা
এসেছেন পবিত্র করতে। বলেন, তোমরা বিকার গ্রস্ত হতে-হতে বেশ্যালয়ে এসে পড়েছো। তোমরা
সত্যযুগে পবিত্র ছিলে, এই রাধে-কৃষ্ণ যে পবিত্র প্রিন্স- প্রিন্সেস হলেন যে না।
রুদ্র মামলাও দেখো, বিষ্ণু মালাও দেখো। রুদ্র মালাই বিষ্ণু মালায় পরিণত হবে।
বৈজয়ন্তী মালাতে আসার জন্য বাবা বোঝান - প্রথমে তো নিরন্তর বাবাকে স্মরণ করো, নিজের
টাইম ওয়েস্ট করো না। বাঁদরের পশ্চাৎ ধাবন করো না। বাঁদর ছোলা খায়। এখন বাবা তোমরা
রত্ন দিচ্ছেন। আবার এই সস্তার ময়দার দানা অথবা ছোলার পিছু নিলে কি অবস্থা হবে!
রাবণের কারাগারে আবদ্ধ হবে। বাবা এসে রাবণের কারাগার থেকে মুক্ত করেন। বাবা বলেন
দেহ সহ দেহের সকল সম্বন্ধ থেকে বুদ্ধিকে ত্যাগ করো। নিজেকে আত্মা রূপে সুনিশ্চিত করো।
বাবা বলেন আমি প্রতি কল্পে ভারতেই আসি। ভারতীয় বাচ্চাদের বিশ্বের ক্রাউন
প্রিন্স-প্রিন্সেস করে তুলি। কতো সহজ করে পড়ানো হয়, এমনও না যে কেউ এসে ৪-৮ ঘন্টা
এসে বসে। না, গার্হস্থ্য জীবনে থেকে নিজেকে আত্মা মনে করে আমাকে স্মরণ করলে তোমরা
পতিত থেকে পবিত্র হয়ে যাবে। যারা বিকারে যায় তাদের পতিত বলা হয়। দেবতারা হলো
পবিত্র, সেইজন্য তাদের মহিমার সুখ্যাতি করা হয়। বাবা বোঝান ওটা হলো অল্প সময়ের
ক্ষণভঙ্গুর সুখ। সন্ন্যাসী ঠিক বলে যে কাক বিষ্ঠা সম সুখ। কিন্তু তাদের এটা জানা
নেই যে দেবতাদের কতো সুখ। নামই হলো সুখধাম। এটা হলো দুঃখধাম। এই কথা দুনিয়াতে
কারোর জানা নেই। বাবা এসেই প্রতি কল্পে বুঝিয়ে থাকেন, দেহী-অভিমানী করে তোলেন।
নিজেকে আত্মা মনে করো।তোমরা আত্মা হও না কি দেহ! তোমরা হলে দেহের মালিক, দেহ
তোমাদের মালিক না। ৮৪ জন্ম নিতে নিতে তোমরা তমোপ্রধান হয়ে গেছো। তোমাদের আত্মা আর
শরীর দুটোই পতিত হয়ে গেছে। দেহ-অভিমানী হওয়ার কারণে তোমাদের দ্বারা পাপ হয়েছে।
আমার সাথে গৃহে ফিরে যেতে হবে। আত্মা আর শরীর দুটিকে শুদ্ধ করার জন্য বাবা বলেন
মন্মনাভব। বাবা তোমাদের রাবণের থেকে অর্ধ-কল্প ফ্রিডম দিয়েছিলেন, আবার এখন ফ্রীডম
দিচ্ছেন অর্ধ-কল্প তোমরা ফ্রীডম রাজ্য করো। সেখানে ৫বিকারের নাম নেই। এখন শ্রীমতে
চলে শ্রেষ্ঠ হতে হবে। নিজেকে জিজ্ঞাসা করো- আমাদের মধ্যে বিকার ঠিক কতোটা আছে? বাবা
বলেন এক তো মামেকম্ স্মরণ করো আর কোনো লড়াই-ঝগড়াও করতে নেই। তা না হলে তোমরা
পবিত্র হবে কীভাবে! তোমরা এখানে এসেছোই পুরুষার্থ করে মালাতে গাঁথা হতে। পাশ করতে
না পারলে আবার মালাতে গাঁথা হতে পারবে না। কল্প-কল্পের বাদশাহী হারিয়ে ফেলবে। শেষে
আবার অনেক অনুশোচনা করতে হবে। ওই পড়াশুনার জন্যও রেজিস্টার থাকে। লক্ষণও দেখা হয়।
এটাও হলো পড়াশুনা, সকালে উঠে তোমরা নিজেরাই এটা পড়ো। দিনের বেলা তো কর্ম করতেই হবে।অবসর
পাওয়া যায় না তো ভক্তিও মানুষ সকালে উঠে করে। এটা তো হলো জ্ঞান মার্গ (জ্ঞানের পথ)।
ভক্তিতেও পূজা করতে করতে আবার বুদ্ধিতে কোনো না কোনো দেহধারীর স্মরণ এসে যায়।
এখানেও তোমরা বাবাকে স্মরণ করো আবার ধান্ধা ইত্যাদি স্মরণে এসে যায়। যত বাবার স্মরণে
থাকবে ততই পাপ খন্ডন হতে থাকবে। বাচ্চারা তোমরা যখন পুরুষার্থ করতে করতে একদম
পবিত্র হয়ে যাবে তখন এই মালা তৈরী হয়ে যাবে। সম্পূর্ণ পুরুষার্থ না করলে তো প্রজাতে
চলে যাবে। ভালো মতো যোগ যুক্ত হবে, পড়াশোনা করবে, নিজের ব্যগ-ব্যাগেজ ভবিষ্যতের
জন্য ট্র্যান্সফার করে দিলে তবে রিটার্নে ভবিষ্যতে প্রাপ্ত হবে। ঈশ্বরের নিমিত্তে
দিলে পরের জন্মে তার রিটার্ন প্রাপ্ত হয়। এখন বাবা বলেন আমি ডায়রেক্ট আসি। এখন
তোমরা যা কিছু করো সেটা নিজের জন্য। মানুষ দান-পুণ্য করে, সেটা হলো ইনডাইরেক্ট। এই
সময় তোমরা বাবাকে অনেক সাহায্য করো। জানো যে এই টাকা পয়সা তো সব নিঃশেষ হয়ে যাবে।
এর থেকে ভালো বাবাকে কেন না সাহায্য করি। বাবা রাজত্ব কীভাবে স্থাপন করবেন। না কোনো
লস্কর বা সেনা ইত্যাদি আছে, না হাতিয়ার ইত্যাদি আছে। সব কিছু হলো গুপ্ত। বাক্স
বন্ধ করে চাবি হাতে দিয়ে দেয়। কেউ খুব শো করে, কেউ গুপ্ত দেয়। বাবাও বলেন তোমরা
হলে প্রিয়তমা, তোমাদের আমি বিশ্বের মালিক করতে এসেছি। তোমরা গুপ্ত সাহায্য করো। এই
আত্মা জানে যে, বাইরের জৌলুস কিছু নেই। এটা হলোই বিকারী পতিত দুনিয়া। সৃষ্টির
বৃদ্ধি হওয়ারই আছে। আত্মাদের অবশ্যই আসতে হবে। জন্ম তো আরোই বেশী হচ্ছে। বলাও হয় এর
অনুপাতে আনাজ পুরো হবে না। এটা হলোই আসুরী বুদ্ধি। বাচ্চারা তোমাদের এখন ঈশ্বরীয়
বুদ্ধি প্রাপ্ত হয়েছে। ভগবান যখন পড়াচ্ছেন সেই ব্যাপারে কতো রিগার্ড থাকা উচিত।
কতো পড়াশুনা করা উচিত। কোনো বাচ্চা আছে যাদের পড়ার রুচি নেই। বাচ্চারা, তোমাদের
তো বুদ্ধিতে এটা থাকা উচিত যে- আমরা বাবার দ্বারা ক্রাউন প্রিন্স-প্রিন্সেস হতে
চলেছি।এখন বাবা বলেন আমার মত অনুযায়ী চলো, বাবাকে স্মরণ করো। ক্ষণে-ক্ষণে বলে আমি
ভুলে যাই। স্টুডেন্ট বলে আমি পাঠ ভুলে যাই, তো টিচার কি বলবে! স্মরণ না করলে তো
বিকর্ম বিনাশ হবে না। টিচার কি সবার উপর কৃপা বা আশীর্বাদ করবেন যে এ পাশ করে যাক!
এখানে এই আশীর্বাদ কৃপার ব্যাপার নেই। বাবা বলেন পড়ো। ব্যবসা ইত্যাদি যদিও করো,
কিন্তু পড়াশুনা করা হলো অত্যাবশ্যকীয়। তমোপ্রধান থেকে সতোপ্রধান হও, আর সবাইকেও
রাস্তা বলে দাও। মন থেকে জিজ্ঞাসা করা উচিত আমি বাবার সাহায্যের জন্য কতোটুকু? কতো
জনকে নিজের সমান করেছি? ত্রিমূর্তি চিত্র তো সামনে রাখা আছে। এই শিববাবা আছেন, এই
ব্রহ্মা আছেন। এই অধ্যয়ণের ফলে এটা হয়। আবার ৮৪ জন্ম পরে এটা হবে। শিববাবা
ব্রহ্মার দেহে প্রবেশ করে ব্রাহ্মণদের এরূপ করে তুলছেন। তোমরা ব্রাহ্মণ হয়েছো। এখন
নিজের মনকে জিজ্ঞাসা করো আমি কি পবিত্র হয়েছি? দৈবী গুণ ধারণ করছি? পুরানো দেহকে
ভুলেছি? এই দেহ তো পুরানো জুতো যে না! আত্মা পবিত্র হয়ে গেলে তো জুতোও
ফার্স্টক্লাস পাওয়া যাবে। এই পুরানো পোশাক ছেড়ে নূতন পোশাক পড়বো, এই চক্র আবর্তিত
হতে থাকে। আজ পুরানো জুতোতে আছে, কাল এটি অর্থাৎ আত্মা দেবতা হতে চাইছে। বাবার
দ্বারা ভবিষ্যতে অর্ধ-কল্পের জন্য বিশ্বের ক্রাউন (মুকুটধারী) প্রিন্স হও। আমাদের
সেই রাজত্বকে কেউ কেড়ে নিতে পারবে না। তবে বাবার শ্রীমতে চলতে হবে যে।নিজেকে
জিজ্ঞাসা করো আমি কতটা স্মরণ করি? কতোটা স্বদর্শন চক্রধারী হই আর তৈরী করি? যে করবে
সে প্রাপ্ত করবে। বাবা প্রতিদিন পড়ান। সকলের কাছে মুরলী পৌঁছায়। আচ্ছা, যদি নাও
পাওয়া যায়, সাতদিনের কোর্স তো পাওয়া গেছে যে না, বুদ্ধিতে নলেজ এসে গেছে। শুরুতে তো
ভাট্টি তৈরী হয়েছিলো তারপর কেউ বা কাঁচা কেউ বা পাকা নির্ধারিত হয়ে প্রকাশ হয়েছিল।
কারণ মায়ার ঝড়েও তো আসে যে। ৬-৮ মাস পবিত্র থেকে আবার দেহ-অভিমানের বশবর্তী হয়ে
নিজেকে মেরে রাখে। মায়া খুবই শক্তি সম্পন্ন। অর্ধ- কল্প মায়ার কাছে পরাজিত হয়েছে।
এখনো পরাজিত হলে নিজের পদ হারিয়ে ফেলবে। নম্বর অনুযায়ী লক্ষ্য তো অনেক আছে যে। কেউ
রাজা-রাণী, কেউ উজির, কেউ প্রজা, কারোর হীরে-জহরতের মহল। প্রজাদের মধ্যেও কেউ
বিত্তশালী থাকে। হীরে-জহরতের মহল থাকে, এখানেও দেখো- প্রজাদের থেকে কর তোলে যে না।
তো প্রজা বিত্তশালী দাঁড়ালো না রাজা? অন্ধকার (অন্ধেরী) নগরী..... এটাও এখনকার কথা।
এখন তোমাদের অর্থাৎ বাচ্চাদের এটা দৃঢ় বিশ্বাস থাকা উচিত যে আমরা বিশ্বের ক্রাউন
প্রিন্স হওয়ার জন্য অধ্যয়ণ করছি। আমরা ব্যারিস্টার বা ইঞ্জিনিয়ার হবো, এটা কি কখনো
স্কুলে ভুলে যাই কি! কেউ তো চলতে চলতে মায়ার ঝড়ের সামনে পড়ে পড়াশুনা ছেড়ে দেয়।
বাবা তাঁর বাচ্চাদের শুধুমাত্র একটি রিকোয়েস্ট করেন- মিষ্টি বাচ্চারা- ভালো ভাবে
পড়লে ভালো পদ প্রাপ্ত করবে। বাবার দাঁড়ির সম্মান রক্ষা করো। তোমরা যদি কোনো ঘৃণ্য
কাজ করো তবে নাম বদনাম করে দেবে। সত্য বাবা, সত্য টিচার, সদ্গুরুর নিন্দা যারা করায়
তারা উচ্চ পদ প্রাপ্ত করতে পারে না। এই সময় তোমরা হীরে তুল্য হয়ে ওঠো, তবে কেন
কড়ির পিছনে কি পড়বে গিয়ে! বাবার সাক্ষাৎকার হওয়া মাত্রই সমস্ত কড়ি ছেড়ে দিয়েছো।
আরে, ২১ জন্মের জন্য বাদশাহী প্রাপ্ত হবে যখন, তখন আবার এসব কি করবে! সব দিয়ে
দিয়েছো। আমরা তো বিশ্বের বাদশাহী নিয়ে নিই। এটাও জানো যে বিনাশ হবে। এখন না পড়লে
টু লেট (অনেক দেরী) হয়ে যাবে, অনুশোচনা করতে হবে। বাচ্চাদের সব সাক্ষাৎকার হয়ে যাবে।
বাবা বলেন তোমরা তো ডাকোও যে হে পতিত পাবন এসো। এখন আমি পতিত দুনিয়াতে তোমাদের
জন্য এসেছি আর তোমাদের বলছি পবিত্র হও। তোমরা আবার ক্ষণে-ক্ষণে নোংরার মধ্যে পড়ে
যাও। আমি তো মহামৃত্যুঞ্জয় (কালো কা কাল)। সবাইকে নিয়ে যাবো। স্বর্গে যাওয়ার জন্য
বাবা এসে রাস্তা বলে দেন। নলেজ দেন যে এই সৃষ্টি চক্র কীভাবে আবর্তিত হয়। এটা হলো
অপরিসীম নলেজ। যারা পূর্ব কল্পে অধ্যয়ণ করেছিলো তারাই এসে অধ্যয়ণ করবে, সেটাও
সাক্ষাৎকার হতে থাকবে। দৃঢ় বিশ্বাস জন্মে যাবে যে অসীম জগতের পিতা এসেছেন, যে
ভগবানের সাথে মিলিত হওয়ার জন্য এতো ভক্তি করেছি তিনি এখানে এসে আমাদের অধ্যয়ণ
করাচ্ছেন। এমন ভগবান পিতার সাথে আমরা সাক্ষাৎ তো করি। কতো উল্লাস আর খুশির সাথে ছুটে
ছুটে এসে মিলিত হয়েছি, যদি নিশ্চয় (দৃঢ় বিশ্বাস) থাকে তবে। ঠকে যাওয়ার ব্যাপার
নেই। এইরকমও অনেক আছে পবিত্র হয় না, পড়াশুনা করে না, ব্যস্ চলো বাবার কাছে। এমনিই
ঘুরতে ফিরতে এসে পড়ে। বাবা বাচ্চাদের বোঝান - বাচ্চারা, তোমাদের নিজেদের গুপ্ত
রাজধানী স্থাপন করতে হবে। পবিত্র হলে তমোপ্রধান থেকে সতোপ্রধান হবে। এই রাজযোগ
একমাত্র বাবা শেখান। তাছাড়া তারা তো হলো হঠযোগী। বাবা বলেন নিজেকে আত্মা মনে করে আমি
অর্থাৎ এই বাবাকে স্মরণ করো। এই নেশা বজায় রাখো যে - আমরা অসীম জগতের বাবার কাছ থেকে
বিশ্বের ক্রাউন প্রিন্স (মুকুটধারী রাজকুমার) হতে এসেছি, তবে শ্রীমতের আধারে চলা
উচিত। মায়া এই রকম যে বুদ্ধির যোগ ছিন্ন করে দেয়। বাবা হলেন সমর্থ, তো মায়াও
সমর্থ। অর্ধ-কল্প হলো রামের রাজ্য, অর্ধ-কল্প হলো রাবণের রাজ্য। এটাও কেউ জানে না।
আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন স্মরণ-ভালবাসা আর
সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
সর্বদা এই নেশা যেন থাকে যে, আমি আজ পড়ছিলাম, কাল ক্রাউন প্রিন্স-প্রিন্সেজ হবো।
নিজের মনকে জিজ্ঞাসা করা উচিত আমি কি তেমন পুরুষার্থ করছি? বাবার প্রতি এতোটাই
রিগার্ড আছে?
২ ) বাবার কর্তব্যে
গুপ্ত সাহায্যকারী হতে হবে। ভবিষ্যতের জন্য নিজের ব্যাগ-ব্যাগেজ ট্রান্সফার করে দিতে
হবে। কড়ির পিছনে সময় না হারিয়ে হীরে তুল্য হওয়ার পুরুষার্থ করতে হবে।
বরদান:-
মন-বুদ্ধিকে মনমত থেকে ফ্রী করে সূক্ষ্মবতনের অনুভবকারী ডবল লাইট ভব
কেবল সংকল্প শক্তি
অর্থাৎ মন আর বুদ্ধিকে সদা মনমত থেকে খালি রাখো তো এখানে থেকেও বতনের সকল সীন-সীনারি
এমন ভাবে স্পষ্ট অনুভব করবে, যেন মনে হবে দুনিয়ার কোনও স্পষ্ট সীন দেখা যাচ্ছে। এই
অনুভূতির জন্য কোনও বোঝা নিজের উপর রাখবে না, সব বোঝা বাবাকে দিয়ে ডবল লাইট থাকো।
মন-বুদ্ধি দ্বারা সদা শুদ্ধ সংকল্পের ভোজন করো। কখনও ব্যর্থ সংকল্প বা বিকল্পের
অশুদ্ধ ভোজন করবে না তাহলে বোঝা থেকে হালকা হয়ে উঁচু স্থিতির অনুভব করতে পারবে।
স্লোগান:-
ব্যর্থকে ফুলস্টপ দাও আর শুভ ভাবনার স্টক ফুল করো।
অব্যক্ত ঈশারা :-
“কম্বাইন্ড রূপের স্মৃতির দ্বারা সদা বিজয়ী হও”
যদি চলতে চলতে কখনও
অসফলতা বা মুশকিলের অনুভব হয় তো তার কারণ কেবল খিদমতগার (সহায়ক) হয়েছো, খোদাই
খিদমতগার (ভগবানের কাজে সাহায্যকারী) হওনি। নিজেকে ভগবানের কাজে সাহায্য করা থেকে
সরিয়ে নিও না। যখন তোমাদের নামই হল খোদাই খিদমতগার, তখন কম্বাইন্ডকে আলাদা কেন করছো।
সদা নিজের এই নাম স্মরণে রাখো তো সেবাতে স্বতঃই খোদার জাদু ভরে যাবে।