24.05.2025
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
“মিষ্টি বাচ্চারা -
অমৃতবেলায় নিজের সমস্ত চিন্তাগুলোকে লক-আপে বন্ধ করে কেবল বাবাকে ভালোবাসার সাথে
স্মরণ করো, বাবার সাথেই মিষ্টি মিষ্টি আত্মিক বার্তালাপ করো"
প্রশ্নঃ -
বাচ্চারা,
তোমাদের প্রতিটি কথা-ই অর্থপূর্ণ, কার পক্ষে এইরকম অর্থপূর্ণ কথা বলা সম্ভব?
উত্তরঃ
যে
দেহী-অভিমানী, তার পক্ষেই অর্থপূর্ণ কথা বলা সম্ভব। বাবা তোমাদেরকে এই সঙ্গমযুগে
যাকিছু শেখান, সেই সবকিছুই অর্থপূর্ণ। দেহ-অভিমানের বশীভূত হয়ে মানুষ যা কিছু বলে,
সেগুলো সব অর্থহীন বা অনর্থ। সেগুলোর দ্বারা কোনো ফলপ্রাপ্তি হয় না, কোনো লাভ হয়
না।
গীতঃ-
নয়নহীনকে পথ
দেখাও প্রভু…
ওম্ শান্তি ।
এ সব হলো
ভক্তিমার্গের গীত। তোমাদের জন্য এইরকম গানের কোনো দরকার নেই। কোনো ঝামেলার ব্যাপার
নেই। ভক্তিমার্গে তো অনেক ঝামেলা। কত রকমের রীতি নিয়ম পালন করতে হয় - ব্রাহ্মণ
খাওয়ানো, তারপরে তীর্থে গিয়েও অনেক কিছু করতে হয়। এখানে আসার পরে সমস্ত ঝামেলা থেকে
মুক্ত করে দেওয়া হয়। এখানে এইসব কিছুই করতে হয় না। মুখে শিব-শিব বলতেও হয় না। এগুলো
কোনো নিয়ম-ই নয়। এগুলো করে কোনো ফল পাওয়া যাবে না। বাবা বলছেন - আন্তরিক ভাবে বুঝতে
হবে যে আমি এক আত্মা। বাবা বলেছেন - আমাকে স্মরণ করো। অন্তর্মুখী হয়ে বাবাকেই স্মরণ
করতে হবে। তাহলে বাবাও প্রতিজ্ঞা করছেন যে তোমাদের পাপ ভস্ম হয়ে যাবে। এটা হলো
যোগ-অগ্নি, যার দ্বারা তোমাদের বিনাশ হয়ে যাবে, তোমরা ফেরত চলে যাবে। ইতিহাসের
পুনরাবৃত্তি হয়। এইভাবে নিজের সাথে কথা বলতে হবে। নিজের সঙ্গে আত্মিক বার্তালাপ করো।
বাবা বলছেন - আমি প্রত্যেক কল্পেই তোমাদেরকে এইসব শেখাই। এটাও জানো যে এই বৃক্ষ ধীরে
ধীরে বড় হবে। এই সময়ে যখন আমি এসে তোমাদেরকে মায়ার বন্ধন থেকে মুক্ত করি, তখনই
মায়াবী তুফান আসে। সত্যযুগে কোনো বন্ধন থাকে না। এই পুরুষোত্তম যুগের বিষয়টাও এখনই
তোমাদের বুদ্ধিতে অর্থপূর্ণ ভাবে রয়েছে। এখানে প্রত্যেকটি কথা-ই অর্থপূর্ণ।
দেহ-অভিমানীর সকল কথা-ই অনর্থ। দেহী-অভিমানী যা কিছু বলবে সবই অর্থপূর্ণ হবে, তার
দ্বারা কিছু প্রাপ্তি হবে। ভক্তিমার্গে তো কত পরিশ্রম করতে হয়। ওরা ভাবে এইরকম
তীর্থ যাত্রা ইত্যাদি করা - এগুলো সব ভগবানের কাছে পৌঁছানোর রাস্তা। কিন্তু বাচ্চারা
এখন বুঝেছে যে একজনও ফিরে যেতে পারবে না। প্রথম নম্বরে যে লক্ষ্মী-নারায়ণ বিশ্বের
মালিক ছিল, ওদের জন্যই যখন ৮৪ জন্ম বলা হয়, তাহলে অন্যরা কিভাবে মুক্তি পাবে? সবাই
যখন এই চক্রে আবদ্ধ, তাহলে কৃষ্ণের জন্য কিভাবে বলা যাবে যে তিনি সর্বদাই রয়েছেন।
কৃষ্ণের সেই নাম-রূপ তো অতীত হয়ে গেছে, কিন্তু আত্মা তো কোনো না কোনো রূপে রয়েছে।
বাবা এসে বাচ্চাদেরকে এইসব বিষয় বুঝিয়েছেন। এটা হলো পড়াশুনা। স্টুডেন্ট লাইফে
মনোযোগ দিতে হবে। প্রতিদিন নিজের চার্ট লেখার জন্য একটা সময় নির্ধারণ করে নাও।
ব্যবসায়ীদের অনেক রকমের বন্ধন থাকে। যারা চাকরি করে তাদের অত বন্ধন থাকে না। ওরা তো
নিজের কাজ শেষ করেই ছুটি পেয়ে যায়। ব্যবসায়ীদের কাছে যখনই গ্রাহক আসবে, তখনই জিনিস
দিতে হবে। বুদ্ধির যোগ বাইরে চলে যায়। তাই চেষ্টা করে সময় বার করতে হবে। অমৃতবেলার
সময়টা খুবই ভালো। ওই সময়ে সকল বাহ্যিক চিন্তা গুলোকে লক-আপে বন্ধ করে দিতে হবে।
ওইসব চিন্তা যেন একদম না আসে, কেবল বাবার কথাই স্মরণে থাকে। বাবার মহিমার সাথে এটাও
লেখা উচিত যে বাবা হলেন জ্ঞানের সাগর, পতিত-পাবন। বাবা আমাদেরকে বিশ্বের মালিক
বানান। তাই তাঁর শ্রীমৎ অনুসারেই চলতে হবে। তাঁর দেওয়া সবথেকে ভালো মত হলো ‛মন্মনা
ভব’। অন্য কেউ এইরকম বলতে পারবে না। প্রতি কল্পেই এইরকম তমোপ্রধান থেকে সতোপ্রধান
হওয়ার মত পেয়ে থাকি। বাবা কেবল তাঁকেই স্মরণ করতে বলছেন। এটাই হলো বশীকরণ মন্ত্র।
অর্থপূর্ণ ভাবে স্মরণ করলেই খুশি আসবে। বাবা বলছেন - অব্যভিচারী স্মরণ করতে হবে।
যেমন ভক্তিতে প্রথমে কেবল শিবের অব্যভিচারী পূজা হতো, তারপরে ব্যভিচারী হয়ে যাওয়ার
ফলে অনেকের পূজা শুরু হয়েছে। আগে ছিল অদ্বৈত ভক্তি, কেবল একজনের ভক্তি করত। তাঁর
কাছ থেকেই জ্ঞান শুনতে হবে। বাচ্চারা, তোমরা যার ভক্তি করতে, তিনি স্বয়ং তোমাদেরকে
বোঝাচ্ছেন - মিষ্টি মিষ্টি বাচ্চারা, আমি এখন এসেছি, ভক্তির কাল এখন শেষ হয়েছে।
তোমরাই প্রথমে কেবল শিববাবার মন্দির বানিয়েছিলে। তখন তোমরা অব্যভিচারী ভক্ত ছিলে,
তাই অনেক সুখী ছিলে। তারপর ব্যভিচারী ভক্ত হয়ে গিয়ে যখন দ্বৈতবাদী হয়ে গেলে, তখন
একটু দুঃখ শুরু হলো। কেবল বাবা-ই সবাইকে সুখ দেন। বাবা বলছেন - বাচ্চারা, আমি এসে
তোমাদেরকে মন্ত্র দিই। একজনের কাছ থেকেই মন্ত্র নাও। এখানে তো কোনো দেহধারী নেই।
এখানে তোমরা বাপদাদার কাছে এসেছ। শিববাবার ওপরে তো আর কেউই নেই। সবাই তাঁকেই স্মরণ
করে। এই ভারত-ই স্বর্গ ছিল, লক্ষ্মী-নারায়ণের রাজত্ব ছিল। ওদেরকে এইরকম কে
বানিয়েছিলেন? পরবর্তী সময়ে তোমরা তাঁকেই পূজা করো। কেউই জানে না মহালক্ষ্মী আসলে
কে? আগের জন্মে মহালক্ষ্মী কে ছিলেন? তোমরা বাচ্চারা জানো যে তিনি হলেন জগৎ আম্বা।
তোমরাও সবাই মাতা, বন্দে মাতরম্। সমগ্র বিশ্বের ওপর তোমরা তোমাদের অধিকার স্থাপন করো।
ভারত মাতা কোনো একজনের নাম নয়। তোমরা সকলেই যোগবলের দ্বারা শিববাবার কাছ থেকে শক্তি
নিচ্ছ। শক্তি নেওয়ার ক্ষেত্রেই মায়া ইন্টারফেয়ার করে। যুদ্ধের সময়ে যদি কেউ আঘাত করে,
তবে আরো বাহাদুর হয়ে লড়াই করতে হবে। এমন নয় যে তোমাকে আঘাত করলো বলে তুমিও ফেঁসে
গেলে। এই যুদ্ধটা তো মায়ার সাথে। কোনো পাণ্ডব - কৌরবদের যুদ্ধ নয়। মানুষ যখন লড়াই
করে তখন এক-দুই গজ জমির জন্য গলা কেটে দেয়। বাবা এসে বোঝাচ্ছেন - ড্রামা এইরকম
ভাবেই বানানো আছে। রাম রাজ্য আর রাবণ রাজ্য। তোমরা বাচ্চারা জানো যে আমরা এখন রাম
রাজ্যে যাব। ওখানে অসীম সুখ। নামটাই হলো সুখধাম। ওখানে দুঃখের নামও থাকবে না। যেহেতু
এখন বাবা এইরকম রাজত্ব দেওয়ার জন্য এসেছেন, তাহলে কতোই না পুরুষার্থ করতে হবে। প্রতি
মুহূর্তে বলছি - বাচ্চারা, ক্লান্ত হয়েও না। শিববাবাকে স্মরণ করো। তিনিও বিন্দু,
আমরা আত্মারাও বিন্দু। এখানে পার্ট প্লে করতে এসেছি। এখন পার্ট শেষ হয়েছে। এখন বাবা
বলছেন - আমাকে স্মরণ করলে বিকর্ম বিনাশ হবে। আত্মার ওপরেই বিকর্মের প্রলেপ পড়ে।
শরীরটা তো এখানেই নষ্ট হয়ে যাবে। অনেক মানুষ কোনো পাপ কর্ম করার পর নিজের শরীরটাকে
শেষ করে দেয়। কিন্তু এতে তো পাপ নাশ হয় না। পাপ-আত্মা বলা হয়। সাধু-সন্তরা বলে দেয়
আত্মার ওপরে প্রলেপ পড়ে না, আত্মা-ই পরমাত্মা। কত কত রকমের মত রয়েছে । তোমরা এখন
একটাই শ্রীমৎ লাভ করছ। বাবা তোমাদেরকে জ্ঞানের ত্রিনয়ন দিয়েছেন। আত্মাই সবকিছু জানে।
আগে তো ঈশ্বরের সম্বন্ধে কিছুই জানতে না। কিভাবে সৃষ্টিচক্র আবর্তিত হয়, আত্মা কতো
ছোট। আগে আত্ম-অনুভূতি করানো হয়। আত্মা অতি সূক্ষ্ম। অনেকের আত্মার দর্শনও হয়।
কিন্তু ওগুলো সব ভক্তিমার্গের বিষয়। জ্ঞানের বিষয় তো বাবা-ই বোঝান। তিনিও দুই
ভ্রূকুটির মধ্যে এনার পাশে এসে বসেন। তখন ইনিও বুঝতে পারেন। এগুলো সব নতুন নতুন কথা
যেগুলো বাবা এসে বোঝাচ্ছেন। পাকাপাকি ভাবে মনে রেখে দাও, ভুলে গেলে চলবে না। বাবাকে
যত বেশি স্মরণ করবে, তত বিকর্মের বিনাশ হবে। কতটা বিকর্মের বিনাশ হবে, তার ওপরেই
তোমাদের ভবিষ্যত নির্ভর করছে। বাচ্চারা, তোমাদের সাথে সাথে এই ভারত ভূমিও সবথেকে
সৌভাগ্যবান। অন্য কোনো ভূখন্ড এত সৌভাগ্যবান নয়। এখানেই বাবা আসেন। ভারত ভূমিই
হেভেন ছিল যাকে গার্ডেন অফ আল্লাহ বলা হয়। তোমরা জানো যে বাবা পুনরায় ভারতকে ফুলের
বাগান বানাচ্ছেন। আমরা ওখানে যাওয়ার জন্যই পড়াশোনা করছি। অনেকেই সাক্ষাৎকার করে।
এটাও জানো যে এটাই হলো সেই মহাভারতের যুদ্ধ। এইরকম যুদ্ধ আর কখনোই হয় না। বাচ্চারা,
তোমাদের জন্য তো অবশ্যই নুতন দুনিয়া প্রয়োজন। দুনিয়াটা তো একদিন নুতন ছিল, স্বর্গ
ছিল। ৫ হাজার বছর আগের কথা। লক্ষ বছরের কথা মোটেও নয়। লক্ষ বছর হলে তো মানুষের
সংখ্যা গোনাই যেত না। এটাও কারোর মাথায় আসে না যে এতদিন কিভাবে হওয়া সম্ভব?
জনসংখ্যাই তো এখনো অত হয়নি। তোমরা এখন বুঝতে পেরেছো যে আজ থেকে ৫ হাজার বছর আগে আমরা
বিশ্বের ওপর রাজত্ব করতাম। অন্য কোনো ভূখন্ড ছিল না। ওগুলো পরবর্তী কালে তৈরি হয়েছে।
বাচ্চারা, তোমাদের বুদ্ধিতে এখন এইসব বিষয় রয়েছে। অন্য কারোর বুদ্ধিতে এগুলো কিছুই
নেই। একটু ইশারা দিলেই বুঝতে পেরে যাবে। ব্যাপারটা তো একই, আমাদের আগে নিশ্চয়ই কোনো
ধর্ম ছিল। তোমরা এখন বোঝাতে পারো যে এক আদি সনাতন দেবী-দেবতা ধর্ম ছিল যা এখন
লুপ্তপ্রায়। কেউই নিজেকে দেবী-দেবতা ধর্মের বলতে পারবে না। মানুষ তো মনেই করে না যে
আমরাই আগে আদি সনাতন দেবী-দেবতা ধর্মের ছিলাম। তারপর সেই ধর্ম গেল কোথায়? হিন্দু
ধর্ম এলো কোথা থেকে? এই বিষয়গুলো নিয়ে কেউই ভাবে না। তোমরা বাচ্চারা বোঝাতে পারো যে
বাবা হলেন জ্ঞানের সাগর, জ্ঞানের অথরিটি। তাহলে নিশ্চয়ই তিনি এসে জ্ঞান শুনিয়েছিলেন।
জ্ঞানের দ্বারা-ই সদগতি হয়। এক্ষেত্রে প্রেরণা দেওয়ার প্রশ্নই আসে না। বাবা বলছেন -
আমি এখন যেমন এসেছি, সেরকম প্রতি কল্পেই আসি। পরের কল্পেও এভাবেই এসে সকল বাচ্চাদের
সাথে মিলিত হব। তোমরাও এভাবে চক্কর লাগাও। রাজ্য নাও আর হারিয়ে ফেল। এটা হলো অসীম
জগতের নাটক। তোমরা সবাই অভিনেতা। আত্মা নিজে অভিনেতা হওয়া সত্ত্বেও যদি ক্রিয়েটর,
ডাইরেক্টর আর মুখ্য অভিনেতাকেই না জানে, তবে সে কোনো কাজের নয়। তোমরা বাচ্চারা জানো
যে কিভাবে আত্মা শরীর ধারণ করে এবং অভিনয় নয়। এখন পুনরায় ফেরার পালা। এটা এই পুরাতন
দুনিয়ার অন্তিম সময়। কতো সহজ ব্যাপার। তোমরা বাচ্চারাই জানো যে কেমন গুপ্ত ভাবে বাবা
বসে আছেন। যেন লেপ মুড়ি দিয়ে আছেন। দেখা আর জানা - একই ব্যাপার। আত্মাকে দেখতে পাওয়া
যাবে কিন্তু তাতে কোনো লাভ নেই। কেউই বুঝতে পারবে না। অনেক ভক্তি করলে অনেকে দর্শন
পেয়ে যায়। তোমরা বাচ্চারাও আগে অনেক সাক্ষাৎকার করতে। অন্তিমেও তোমরা এইরকম খেলা
দেখবে। বাবা এখন বলছেন - পড়াশুনা করে হুঁশিয়ার হয়ে যাও। যদি না পড়ো, তবে রেজাল্ট
বেরানোর পরে মুখ নিচু হয়ে যাবে। তখন বুঝতে পারবে যে আমি কত সময় নষ্ট করেছি। যত বেশি
বাবাকে স্মরণ করবে, স্মরণের শক্তির দ্বারা তত পাপ নাশ হবে। যত বাবাকে স্মরণ করবে,
তত খুশির পারদও ঊর্ধগামী হবে। মানুষ তো জানেই না যে ভগবানকে কেন স্মরণ করা হয়।
মানুষ গীত গায় - তুমিই মাতা পিতা তুমি, কিন্তু এর অর্থ জানে না।
তোমরা এখন জেনেছো।
শিববাবার ছবি দেখিয়ে বোঝাতে পারবে যে ইনি হলেন জ্ঞানের সাগর, পতিত-পাবন। এনাকেই
স্মরণ করতে হবে। বাচ্চারা জানে যে ওই বাবা-ই স্বয়ং এসেছেন অসীম সুখ দেওয়ার জন্য। এটা
হলো পড়াশুনা। যে যত পুরুষার্থ করবে, সে তত উঁচু পদ পাবে। ইনি কোনো সাধু-সন্ত নন যার
আসন (পদ) ক্রমানুসারে চলে আসছে। এটা তো শিববাবার আসন। এমন নয় যে একজন যাওয়ার পর
অন্যজন সেই আসনে বসবে। বাবা তো সবাইকে সঙ্গে নিয়ে যাবেন। অনেক বাচ্চাই ব্যর্থ চিন্তা
করে নিজের সময় নষ্ট করে। মনে করে, অনেক সম্পত্তি জমা করবো, পুত্র আর নাতি-নাতনি খাবে,
পরবর্তী কালে কাজে আসবে। তাই ব্যাংকের লকারে জমা করি, সন্তানদের ভরণপোষণ হবে। কিন্তু
গভর্নমেন্ট তো কাউকেই ছাড়বে না। তাই ঐসব নিয়ে বেশি চিন্তা না করে ভবিষ্যতের উপার্জনে
লেগে যেতে হবে। বাচ্চাদেরকে এখন পুরুষার্থ করতে হবে। এমন নয় যে ড্রামাতে থাকলে করব।
বিনা পুরুষার্থে তো খাবারও পাওয়া যায় না। কিন্তু কারোর যদি ভাগ্যেই না থাকে তবে
এইরকম চিন্তা আসবে। ভাগ্যে না থাকলে স্বয়ং ঈশ্বরও আর কি প্রচেষ্টা করবেন? যার ভাগ্যে
আছে, সে নিজেও ভালোভাবে ধারণ করে আর অন্যকেও ধারণ করায়। বাবা-ই তোমাদের টিচার এবং
গুরু। তাই তাঁকে অবশ্যই স্মরণ করতে হবে। সবথেকে প্রিয় তো বাবা, টিচার আর গুরুই হন।
তাঁকে স্মরণ তো করতেই হবে। বাবা অনেক রকমের উপায় বলে দেন। তোমরা সাধু-সন্তদেরকেও
নিমন্ত্রণ দিতে পারো। আচ্ছা !
মিষ্টি-মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্নেহ-সুমন স্মরণ-ভালবাসা আর সুপ্রভাত।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
পুরুষার্থের দ্বারা নিজের ভবিষ্যতের উপার্জনে লেগে যেতে হবে। ড্রামাতে থাকলে করবো -
এইরকম কথা বলে পুরুষার্থহীন হওয়া যাবে না।
২ ) সারাদিনে যত পাপ
হয় কিংবা কাকে কাকে দুঃখ দাও সেগুলো নোট করতে হবে। সততার সাথে বাবাকে শোনাতে হবে।
আন্তরিক ভাবে পরিষ্কার থেকে কেবল বাবাকে স্মরণ করে সকল হিসাব মেটাতে হবে।
বরদান:-
মুকুট
আর সিংহাসন সদা বজায় রেখে নিরন্তর স্বতঃ যোগী ভব
বর্তমান সময়ে বাবার
দ্বারা সকল বাচ্চাদের মুকুট আর সিংহাসন প্রাপ্ত হয়, এখনকার এই মুকুট বা সিংহাসন
অনেক জন্মের জন্য মুকুট, সিংহাসন প্রাপ্ত করায়। বিশ্ব কল্যাণের দায়িত্বের মুকুট আর
বাপদাদার হৃদয় সিংহাসন সদা বজায় থাকলে নিরন্তর স্বতঃ যোগী হয়ে যাবে। তাদের কোনও
প্রকারের পরিশ্রম করতে হবে না। কেননা এক তো সম্বন্ধ হল অতি নিকটবর্তী আর দ্বিতীয়তঃ
প্রাপ্তি হল অক্ষুণ্ণ। যেখানে প্রাপ্তি হয় সেখানে স্বতঃ স্মরণ থাকে।
স্লোগান:-
প্লেন
বুদ্ধির দ্বারা প্ল্যানকে প্র্যাক্টিক্যালে নিয়ে এসো, তাতেই সফলতা সমাহিত হয়ে রয়েছে।
অব্যক্ত ঈশারা -
আত্মিক রয়্যাল্টি আর পিওরিটির পার্সোনালিটি ধারণ করো
দুঃখ অশান্তির উৎপত্তি
অপবিত্রতা থেকে হয়। যেখানে অপবিত্রতা নেই সেখানে দুঃখ অশান্তি কোথা থেকে আসবে। তোমরা
সবাই হলে পতিত পাবন বাবার বাচ্চা মাস্টার পতিত পাবন, তো যারা অন্যদেরকে পতিত থেকে
পবিত্র বানায় তারা স্বয়ং তো পবিত্র থাকবেই। এইরকম পাবন পবিত্র আত্মাদের কাছে সুখ আর
শান্তি স্বতঃই থাকে। সবথেকে বড়-র থেকে বড় মহানতা হলই পাবন হওয়া। আজও এইরকম মহানতার
সামনে সবাই মাথা নত করে।