24-06-2025 প্রাতঃ
মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ মধুবন
"মাতেশ্বরী জীর পুণ্য স্মৃতি দিবসে প্রাতঃ ক্লাসে
শোনানোর জন্য মধুর মহাবাক্য"
গীতঃ- গীত : -
দেখো, আমাদের এই ছোট্ সংসার.....।
এই গীত কোন্ সময়ে গাওয়া হয়েছিলো কেননা সঙ্গম সময়েই ব্রাহ্মণ কুলের এ হলো ছোটো
সংসার । এ আমাদের কোন্ পরিবার, তা নম্বরের ক্রমানুসারে বলছি । আমরা হলাম পরমপিতা
পরমাত্মা শিবের পৌত্র, ব্রহ্মা এবং সরস্বতীর মুখ সন্তান আর বিষ্ণু শঙ্কর আমাদের
জ্যাঠা আর আমরা নিজেদের মধ্যে সবাই হলাম ভাই - বোন । এ হলো আমাদের ছোটো সংসার....
এর সামনে আর কোনো সম্বন্ধ রচনাই হয়নি, এই সময়ে এই সম্বন্ধই বলা হবে । দেখো আমাদের
সম্বন্ধ কতো বড় অথরিটির সঙ্গে । আমাদের গ্র্যান্ড পাপা হলেন শিব, তাঁর নাম কতো বৃহৎ,
তিনি হলেন সম্পূর্ণ মনুষ্য সৃষ্টির বীজ রূপ । সর্ব আত্মার কল্যাণকারী হওয়ার কারণে
তাঁকে বলা হয় 'হর হর ভোলানাথ শিব মহাদেব' । তিনি সম্পূর্ণ সৃষ্টির দুঃখহর্তা এবং
সুখকর্তা, তাঁর কাছে আমরা সুখ - শান্তি - পবিত্রতার এক বড় অধিকার প্রাপ্ত করি,
শান্তিতে কর্ম বন্ধনের কোনো হিসেব - নিকেশ আর থাকে না, কিন্তু এই দুই বস্তু
পবিত্রতার আধারেই নির্ধারিত হয় । যতক্ষণ না পিতার পালনে সম্পূর্ণ উত্তরাধিকার
প্রাপ্ত করছো, পিতার কাছ থেকে সার্টিফিকেট না পাচ্ছো, ততক্ষণ ওই উত্তরাধিকার
প্রাপ্ত করতে পারবে না । দেখো, ব্রহ্মার উপর কতো বড় কর্তব্য... ম্লেচ্ছ পাঁচ বিকারে
ময়লা হওয়া অপবিত্র আত্মাদের ফুলের সমান বানান, যেই অলৌকিক কর্তব্যের ফল হিসাবে
সত্যযুগের শ্রীকৃষ্ণ পদ প্রাপ্ত হয় । এখন দেখো, সেই পিতার সঙ্গে তোমাদের কেমন
সম্বন্ধ ! তাই তোমাদের কতো নিশ্চিন্ত এবং খুশীতে থাকা উচিত । এখন প্রত্যেকেই তাদের
মনকে জিজ্ঞেস করো, আমরা তাঁর রীতি অনুযায়ী পূর্ণতা প্রাপ্ত করেছি কি?
তোমাদের চিন্তা করা উচিত, যখন পরমাত্মা বাবা এসেছেন, তখন আমরা তাঁর কাছ থেকে
সম্পূর্ণ উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করবো । স্টুডেন্টদের কাজ হলো সম্পূর্ণ পুরুষার্থ করে
স্কলারশিপ প্রাপ্ত করা, তাহলে আমরা কেন প্রথম নম্বর লটারী উইন করবো না? এ হলো বিজয়
মালাতে গ্রথিত হওয়া । বাকি কেউ কেউ আছে, যারা দুটি লাড্ডুই ধরে বসে আছে, এখানকার
জাগতিক সুখও গ্রহণ করবো, আর ওখানেও বৈকুণ্ঠের কিছু কিছু সুখ প্রাপ্ত করবো, এমন
বিচার সম্পন্ন যারা তাদের মাধ্যম এবং কনিষ্ঠ পুরুষার্থী বালা হবে, নাকি সর্বোত্তম
পুরুষার্থী বালা হবে? বাবা যখন দেওয়াতে কার্পণ্য করেন না, তাহলে যারা গ্রহীতা তারা
কেন করে? তাই তো গুরু নানক বলেছিলেন, পরমাত্মা তো দাতা, তিনি সমর্থ, কিন্তু
আত্মাদের গ্রহণের কোনো শক্তি নেই, এমন কথিত আছে যে .....দাতা দিতেই থাকেন কিন্তু
গ্রহীতা পরিশ্রান্ত হয়ে যায় । তোমাদের মনেও হবে যে, আমরা কেন চাইবো না যে, আমরাও
এমন পদ প্রাপ্ত করি , কিন্তু দেখো, বাবা কতো পরিশ্রম করেন, তবুও মায়া কতো বিঘ্ন
সৃষ্টি করে, কেন? এখন মায়ার রাজত্ব সমাপ্ত হয়ে যাবে । এখন মায়া তার সব খেলা
খেলেছে, তাই তো পরমাত্মা আসেন । তাঁর মধ্যে সমস্ত রস সামাহিত হয়ে আছে, তাঁর থেকে
সর্ব সম্বন্ধের রস প্রাপ্ত হয়, তাই তো 'ত্বমেব মাতাশ্চ পিতা'..... ইত্যাদি মহিমার
গায়ন সেই পরমাত্মার সম্বন্ধেই রয়েছে, তাই বলিহারি এই সময়ের যে, এমন সম্বন্ধ
হয়েছে ।
তাই পরমাত্মার সঙ্গে এমন সম্পূর্ণ সম্বন্ধ জুড়তে হবে যাতে ২১ জন্মের জন্য সুখ
প্রাপ্ত হয়ে যায়, এই হলো পুরুষার্থের সিদ্ধি । কিন্তু ২১ জন্মের কথা শুনে শীতল হয়ে
যেও না । এমন ভেবো না যে, ২১ জন্মের জন্য এতো সময় পুরুষার্থও করলাম, তবুও ২১
জন্মের পরে আবার নেমে যেতে হবে, তাহলে কি সিদ্ধি হলো? ড্রামার অন্দরে আত্মাদের যতটা
সর্বোত্তম সিদ্ধি নির্দিষ্ট আছে, তা তো প্রাপ্ত করবেই, তাই না । বাবা এসে আমাদের
সম্পূর্ণ স্টেজে পৌঁছে দেন, কিন্তু আমরা বাচ্চারা বাবাকে ভুলে যাই, তাহলে অবশ্যই
আমাদের নেমে যেতে হবে, এতে বাবার কোনো দোষ নেই । এখন এই কমতি হলো বাচ্চাদের,
সত্যযুগ - ত্রেতার সমস্ত সুখ এই জন্মের পুরুষার্থের আধারেই নির্ধারিত, তাহলে আমরা
কেন সম্পূর্ণ পুরুষার্থ করে আমাদের সর্বোত্তম পার্ট প্লে করবো না? কেন আমরা
পুরুষার্থ করে সম্পূর্ণ উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করবো না? মানুষ পুরুষার্থ সদা সুখের
জন্যই করে থাকে, সুখ - দুঃখ থেকে পৃথক হওয়ার জন্য কেউই পুরুষার্থ করে না, সে তো
ড্রামার অন্তিমে পরমাত্মা তোমাদের মতো সকল আত্মাদের সাজা ভোগ করিয়ে, পবিত্র করে
পার্ট থেকে মুক্ত করবেন । এ তো পরমাত্মার কার্য, তিনি তাঁর নির্ধারিত সময়ে নিজে
এসেই বলেন । এখন আত্মাদের যখন আবারও এই পার্টে আসতে হবে, তাহলে আমরা কেন সর্বোত্তম
পার্ট প্লে করবো না?
মনুষ্য সৃষ্টিকে সুখদায়ী করা বাবা জানেন যে, কিভাবে এই মনুষ্য সৃষ্টি সুখদায়ী হবে
। যতক্ষণ না আত্মারা স্বচ্ছ হচ্ছে ততক্ষণ এই সংসার সুখদায়ী হতে পারবে না, তাই তিনি
এসে প্রথমেই আত্মাদের স্বচ্ছ তৈরী করেন । এখন আত্মাদের মধ্যে ইমপিউরিটি (অসচ্ছতা)
রয়েছে । প্রথমে এই ইমপিউরিটিকে দূর করতে হবে । তারপর আত্মার শক্তিতে প্রতিটি জিনিস
থেকে তার তমোপ্রধানতা পরিবর্তন হয়ে সতোপ্রধানতা আসবে, তখন যাকে বলবে যে, এই
গোল্ডেন এজে এসে যাও, তত্ব সমেত সবকিছুই তখন গোল্ডেন এজ স্টেজে চলে যায় । প্রথমে
কিন্তু আত্মার স্টেজ পরিবর্তন হয় । তাই আত্মাদের পরিবর্তনকারী অর্থাৎ আত্মাদের
পিউরিফাইড করেন যিনি, সেই তিনিই অথরিটি হয়ে গেলেন । তোমরা তো দেখছো যে, এখন
দুনিয়ার পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে । প্রথমে তো নিজেকে পরিবর্তন করতে হবে, আমরা যখন
নিজেকে পরিবর্তন করতে পারবো, তখন সেই আধারে এই দুনিয়ার পরিবর্তন হয়ে যাবে । এখনো
পর্যন্ত যদি আমাদের মধ্যে ফারাক না আসে, নিজেকেই যদি পরিবর্তন করতে না পারি, তাহলে
দুনিয়া কিভাবে পরিবর্তন হবে, তাই রোজ নিজেকে পর্যবেক্ষণ করো । যেমন যারা পোতামেল
লেখে, তারা যেমন রোজ রাতে নিজের খাতা দেখে, আজ কি জমা হলো? সবাই নিজের হিসেব রাখে ।
তাই এও নিজের পোতামেল রাখতে হবে যে, সারাদিনে আমার কতো লাভ হলো, কতো লোকসান হলো? যদি
লোকসানে বেশী কিছু ক্ষতি হয়ে যায় তাহলে দ্বিতীয় দিন আরো সাবধান থাকতে হবে ।
এইভাবে নিজের প্রতি অ্যাটেনশন রাখলে আমরা লাভের দিকে যেতে যেতে আমাদের যে পজিশন
প্রাপ্ত হতে চলেছে, তাকে ধরতে পারবো । তাই এমন পর্যবেক্ষণ করতে করতে নিজের পরিবর্তন
অনুভব করা উচিত । এমন নয় যে, আমি তো দেবতা হবো, ও তো পরে হবে, এখন যেমন আছে তেমন
ঠিক আছে...। এমন নয় । এখন থেকেই সেই দৈব সংস্কার তৈরী করতে হবে । এখন পর্যন্ত পাঁচ
বিকারের বশীভূত যে সংস্কার চলছিলো, দেখতে হবে যে, আমাদের সেই বিকার দূর হচ্ছে কি ?
আমাদের মধ্যে যে ক্রোধ ইত্যাদি ছিলো, তা দূর হচ্ছে তো ? লোভ বা মোহ ইত্যাদি যা ছিলো,
সেইসব বিকারী সংস্কার পরিবর্তন হচ্ছে তো ? যদি তা পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে বা দূরীভূত
হয়ে যাচ্ছে, তাহলেই মানবে যে, আমরাও পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছি । যদি দূরীভূত না হয়,
তাহলে বুঝবে যে, এখনো আমরা পরিবর্তন হই নি । তাই এই পরিবর্তনের ফারাক অনুভব হওয়া
চাই, নিজের মধ্যে চেঞ্জ আসা উচিত । এমন নয় যে, সারাদিন বিকারী খাতাতেই চললে, বাকি
মনে করলে যে, আমরা কোনো ভালো দান - পুণ্য করেছি, ব্যস্ । এমন নয় । আমাদের যে
কর্মের খাতা চলে, তার সুরক্ষাই আমাদের করতে হবে । এই সমস্ত পোতামেল রাখতে হবে আর
ঘুমাতে যাওয়ার পূর্বে দশ থেকে পনেরো মিনিট নিজেকে দেখা উচিত যে, সারাদিন আমার
কিভাবে কাটলো । কেউ কেউ আবার নোটও করে কেননা পূর্ব পাপের যে বোঝা মাথার উপর আছে,
তাও দূর করতে হবে, এরজন্য বাবার নির্দেশ হলো, আমাকে স্মরণ করো, তাহলে আমরা কতো সময়
সেই স্মরণের জন্য দিয়েছি? কেননা এই চার্ট রাখলে দ্বিতীয় দিন তোমরা সাবধান থাকবে ।
এমন সাবধান থাকতে থাকতে তোমরা সাবধান হয়ে যাবে, তখন আমাদের কর্ম ভালো হতে থাকবে,
আর এমন কোনো পাপ আর হবে না । তাই এই পাপ থেকেই তো রক্ষা পেতে হবে, তাই না । আচ্ছা !
মিষ্টি মায়ের মিষ্টি - মিষ্টি বাচ্চাদের প্রতি স্মরণের স্নেহ-সুমন আর গুড মর্নিং ।
সন্দেশীর তনের দ্বারা সরস্বতী মায়ের অব্যক্ত প্রভুর মিলন এবং সংবাদ -
বেটি শ্রী রাধে দেখো, তোমার কাছে কে এসে পদার্পণ করেছেন? কতো বড় শক্তি যে তোমার
সঙ্গে কথা বলছেন । আমার আসার রহস্য থেকে তুমি নিজেকেও জানতে পারো । যিনি এসেছেন
তাঁর পজিশনের সঙ্গে সঙ্গে নিজের পজিশন অথবা পদও তুমি জানতে পারো । হে রাধে বেটি,
তুমি আমার তেজ দেখতে চাও কি ! আমি চাইলে এক সেকেন্ডে বিনাশ করতে পারি কিন্তু তা আমি
করি না, কেননা বিরাট ফিল্ম অনুসারে যে যে কর্তব্য যার যার দ্বারা যেভাবে প্লে
হওয়ার, তা অবশ্যই সেইভাবে প্লে হবে । অব্যক্ত প্রভু যিনি অনাদি নিয়ম জানেন, তিনি
এসেই অনাদি নিয়মের পরিচয় দান করেন । এই সমগ্ৰ সৃষ্টির অনাদি খেলা এই স্টেজে প্লে
হয়, তাই প্র্যাক্টিকাল প্লে হওয়াতে সময় নেয়, যদি এতো বছরের খেলা এক সেকেন্ডে
সম্পূর্ণ করে দিই, তাহলে বাকি খেলা কিভাবে চলবে ! তাই যে যে সমস্যা যেভাবে দেখার
অথবা সহন করার আছে, তা সেভাবেই সেই উপর্যুপরি রহস্যের সঙ্গে রিপিট হয় । এ হলো
উপর্যুপরি রিপিটেশন, যা দেখে প্রিয় মাম্মা রাধে তুমি আর আমি কতো হর্ষিত হই ।
এই বিরাট ড্রামার সমস্ত পার্ট যিনি টেস্ট নেবেন, তিনি এসেছেন । এই খেলা যিনি
চালাচ্ছেন, তিনি যদি চান এক সেকেন্ডেই এই ড্রামাকে ড্রপ করিয়ে নতুনভাবে শুরু করে
দিতে পারেন, কিন্তু তা তিনি করবেন না, কেননা ঈশ্বরকেও এই সাধারণ রীতিতেই কর্তব্য
করতে হয় । স্বয়ং সর্বশক্তিমান নিরাকার ঈশ্বর সাকারে আছেন কিন্তু সাধারণ বেশে । এই
হলো ভুলভুলাইয়ার খেলা, যা যে জানতে পারবে, তিনি হলেন সর্বজ্ঞ (জানি জাননহার) ।
বেটি শ্রী রাধে, প্রিয় বাচ্চাদের এই সহন করার মার্গও অবশ্যই তৈরী করতে হবে । যদ্যপি
আমি চাইলে আমার বৎসদের জন্য এর সহজ মার্গও বানাতে পারি কেননা সাক্ষাৎকার করানোর চাবি
আমার হাতেই আছে । যদি কোনো ধনবান ভক্তকে কোনো দেবতার সাক্ষাৎকার করিয়ে দিই, তাহলে
সে তার সমস্ত ধন নিয়ে এসে যজ্ঞতে নিজেই স্বাহা করে দেবে, কেননা ঈশ্বর তো সমস্ত
ধনবানেরও ধনবান, কিন্তু তোমার পিতা চায় যে, আমি আমার বেগার্স প্রিয় বৎসদের
প্রিন্স আর প্রিন্সেস তৈরী করবো, তাই তোমরা এইসব সহন করার পরেই গিয়ে প্রিন্স আর
প্রিন্সেস হবে । পিতা জানেন যে, বাচ্চাদের এই সহন করার মার্গ অবশ্যই তৈরী করতে হবে
কেননা সহন করা হলো ঈশ্বরীয় এবং দৈবী গুণ, যাতে খুশী বিলীন হয়ে থাকে । এই গুণের
দ্বারাই ঈশ্বরীয় সুখের অনুভব হয় । সহন করেও তোমরা কতো আনন্দে থাকো, এ হলো গোপনীয়
জ্ঞান । এমনভাবেই অনাসক্ত যোগীই স্থায়ী সুখ প্রাপ্ত করে ।
এখন তো পরীক্ষার সময় নিকটে এসে গেছে, প্রত্যেক বাচ্চা এই আগত পরীক্ষাকে ইন
অ্যাডভান্স সামনে রেখে সেই অভ্যাসে যেন চলতে থাকে । যদি কোনো বাচ্চা খাওয়াদাওয়া
ইত্যাদি নাও পায়, তবুও বেপরোয়া বাদশাহ হয়ে যেন উপস্থিত হয় । নিজের এমন সুন্দর
অবস্থা দীর্ঘ সময় ধরে ধারণ করতে হবে, কেউ যদি মনে করে যে, সেই সময় নিজেই চলে যাবো,
একথা মনে করা হলো নিজেকে ধোঁকা দেওয়া, তাই প্রথম থেকেই সাবধান হয়ে থাকতে হবে ।
আমার অতি প্রিয় বৎস স্মরণে তো বসে কিন্তু এখনো পর্যন্ত সেই লাইটের তেজ আমার বতন
পর্যন্ত পৌঁছায়নি । প্রত্যেকেই যখন লাইট স্বরূপ হয়ে উপস্থিত হবে তখন তাদের যোগের
তেজ আমার বতনে আসবে, তখনই তাদের প্রত্যেকের সম্পূর্ণ লাইট তাদের মধ্যে প্রবেশ করবে
। সেই সময়ই এই দুনিয়াতে শক্তিদের মহিমা হবে । তাই প্রত্যেককেই তাদের বিশ্বাসে
স্থির থাকতে হবে যে, আমি যদি নীচে নামাতেও চাই, তবুও যেন না নামে ।
হে শিরোমণি শক্তি রাধে, শক্তিদের জ্ঞান - নিষ্ঠা বলে আর মুখ দিয়ে মুরলী বলাতে সদা
তৈরী থাকা উচিত । তোমাকে তোমার একরস ঈশ্বরীয় দৃষ্টির দ্বারা প্রত্যেককেই স্নেহের
দৃষ্টিতে নিজের মধুর বীণার দ্বারা পরিচয় দিতে হবে যে, আমি কে, আর আমার পিতা কে ?
কিভাবে ব্রহ্মার মধ্যে ভগবান প্রত্যক্ষ হয়েছেন, যিনি এই অন্তের সময় ডেভিল
ওয়ার্ল্ডকে শেষ করে নিজের দেশ দেব দুনিয়াতে নিয়ে যাচ্ছেন ।
হে রাধে বেটি, যখন প্রত্যেকের অবস্থা দীপকের ললাট সদৃশ স্থিতিশীল থাকবে, তখনই
সূক্ষ্ম অন্ত প্রেরণাকে ধরে নিজের কার্য সম্পূর্ণ রীতিতে সিদ্ধ করতে পারবে, জ্ঞান
অনুসারে যেমন অবস্থা হবে, ততই প্রেরণাকে স্পর্শ করতে পারবে । সেই অবস্থাতে যতো
লাগাতার থাকবে ততই সম্পূর্ণ প্রেরণা টাচ্ করতে পারবে ।
অহো ! বেটি রাধে, আমার স্বরূপ তো দেখো, বাচ্চা, তুমি কি আমার স্বরূপকে দেখতে পাচ্ছো
না যে কিভাবে আমি অখণ্ড জ্যোতি স্বরূপ তত্ব থেকে এসে সাক্ষাৎ প্রবেশ করে তোমাদের
সাথে কথা বলি, আমার দ্বারাই এইসব সাক্ষাৎকার হয় কেননা আমিই সবকিছুর মূল সমূহ । দেখো,
প্রকৃতির মাঝে ঝলমল করে জ্ঞান লাইট । বাচ্চা, কেবল এই বিচার করো যে আহা ! যাঁকে
সম্পূর্ণ সৃষ্টি ডাকছে, সেই সর্বশক্তিমান ঈশ্বর স্বয়ং এই যজ্ঞে আমাদের মতো
বাচ্চাদের সামনে পদার্পণ করেছেন । তাঁর শীতল কোলে বসলে হৃদয় শান্ত হয়ে যায় । রচনা
যদি রচয়িতাকে প্রাপ্ত করতে পারে তাহলে তাঁকে ছেড়ে তাঁর রচনার দিকে কেন যাবে !
হাইয়েস্টের থেকেও হাইয়েস্ট অথরিটি সর্ব শক্তির মালিক যিনি, যার থেকে সর্ব শক্তি
প্রকট হয়েছে, তাঁর পরিচয় যদি প্রাপ্ত করে ফেলে তাহলে সেই কোল ত্যাগ করা অসম্ভব হয়ে
যাবে । যখন 'দি ক্রিয়েটর'কে চিনে নেবে, তখন তো বুঝতে পারবে যে, ইনি কে ! বুঝতে
পেরেছো শিরোমণি রাধে । আচ্ছা ।
বরদান:-
সদা অতীন্দ্রিয় সুখের দোলায় দুলতে থেকে সঙ্গম
যুগের সর্ব অলৌকিক প্রাপ্তিতে সম্পন্ন ভব
যে বাচ্চারা অলৌকিক প্রাপ্তিতে সদা সম্পন্ন, তারা
অতীন্দ্রিয় সুখের দোলায় দুলতে থাকে । যেমন যারা অতি প্রিয় বাচ্চা হয়, তাদের
দোলায় দোলানো হয় । তেমনই সর্ব প্রাপ্তি সম্পন্ন ব্রাহ্মণদের দোলা হলো অতীন্দ্রিয়
সুখের দোলা । এমন দোলাতে সদা দুলতে থাকো । কখনো দেহ বোধে এসো না । যারা দোলা থেকে
নেমে ধরণীতে চরণ রাখে, তারা ময়লা হয়ে যায় । উঁচুর থেকেও উঁচু বাবার স্বচ্ছ
বাচ্চারা সদা অতীন্দ্রিয় সুখের দোলায় দুলতে থাকে, তারা মাটিতে চরণ রাখে না ।
স্লোগান:-
"আমি ত্যাগী" এই অহংকারের ত্যাগ হলো প্রকৃত ত্যাগ ।
অব্যক্ত ইশারা :- আত্মিক স্থিতিতে থাকার অভ্যাস করো,
অন্তর্মুখী হও নিজেকে যখন অকালমূর্ত আত্মা মনে করবে, তখনই অকালমৃত্যু থেকে, অকাল
থেকে, সর্ব সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে পারবে । মানসিক চিন্তা, মানসিক পরিস্থিতি দূর
করার একটাই সাধন --- নিজের এই পুরানো দেহ বোধকে নাশ করা । দেহ বোধকে দূর করতে পারলে
সর্ব পরিস্থিতিও দূর হবে ।