24.09.2024 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা - তোমরা যতটা সময় বাবার স্মরণে থাকবে, ততটা সময় উপার্জন(কামাই) হতেই থাকবে, স্মরণের দ্বারাই তোমরা বাবার সমীপে আসতে থাকবে"

প্রশ্নঃ -
যে বাচ্চারা স্মরণে থাকতে পারে না, তারা কোন্ বিষয়ে লজ্জা পায়?

উত্তরঃ  
তারা নিজেদের চার্ট রাখতে লজ্জা পায়। মনে করে, সত্যিকথা লিখলে বাবা কি বলবে। কিন্তু বাচ্চাদের কল্যাণ এতেই রয়েছে যে, তারা যেন সত্যিকারের চার্টই লিখতে থাকে। চার্ট লেখায় অনেক লাভ রয়েছে। বাবা বলেন - বাচ্চারা, এতে লজ্জা পেও না।

ওম্ শান্তি ।
আত্মাদের পিতা বসে তাঁর বাচ্চাদের বোঝান। বাচ্চারা, এখন তোমরা এখানে ১৫ মিনিট পূর্বে এসে বাবাকে স্মরণ করতে বসো। এখানে এখন আর অন্য কোনো কাজ নেই। বাবার স্মরণেই এসে বসো। ভক্তিমার্গে তো বাবার কোনো পরিচয়ই পাওয়া যায়নি। এখানে বাবার পরিচয় পেয়েছো আর বাবা বলেন, মামেকম্ স্মরণ করো। আমি তো সব বাচ্চাদেরই পিতা। বাবাকে স্মরণ করলে (বাবার) অবিনাশী উত্তরাধিকার স্বাভাবিকভাবেই স্মরণে চলে আসা উচিত । ছোট বাচ্চা তো নও, তাই না। যদিও লেখে যে, আমরা ৫ মাস বা ২ মাসের (বাচ্চা), কিন্তু তোমাদের কর্মেন্দ্রীয় তো বড়। তাই আত্মিক পিতা বোঝান, এখানে বাবা আর অবিনাশী উত্তরাধিকারকে স্মরণ করতে বসতে হবে। তোমরা জানো, আমরা নর থেকে নারায়ণ হওয়ার পুরুষার্থে তৎপর বা স্বর্গে যাওয়ার জন্য পুরুষার্থ করছি। বাচ্চারা, তাই তোমাদের নোট করা উচিত - আমরা এখানে বসে-বসে (বাবাকে) কতটা স্মরণ করি? (চার্ট) লিখলে বাবা বুঝে যাবেন । এমনও নয় যে বাবা জানেন না - প্রত্যেকে কতটা সময় স্মরণে থাকে? সে তো প্রত্যেকেই নিজেদের চার্ট দেখেই বুঝতে পারে - বাবার স্মরণে ছিল, না বুদ্ধি অন্যদিকে চলে গিয়েছিল? এও বুদ্ধিতে রয়েছে যে, বাবা যখন আসবেন, সেটাও তো বাবার-ই স্মরণ। কতটা সময় স্মরণ করেছো, চার্টে সত্যিকথা লিখবে। মিথ্যাকথা লিখলে তো শতগুণ পাপ চড়বে আরও ক্ষতি হয়ে যাবে তাই সত্যিকথা লেখো - যত স্মরণ করবে ততই বিকর্ম বিনাশ হবে। আর এও জানো যে, আমরা বাবার সমীপে এসে গেছি। শেষে যখন স্মরণ করা সম্পূর্ণ হয়ে যাবে তখন আমরা পুনরায় বাবার কাছে চলে যাবো। পুনরায় কেউ শীঘ্র নতুন দুনিয়ায় এসে পার্ট প্লে করবে, আর কেউ কেউ ওখানেই (শান্তিধামে) বসে থাকবে। ওখানে কোনো সঙ্কল্প চলে না। ওটা হলো মুক্তিধাম, দুঃখ-সুখের উর্ধ্বে। সুখধামে যাওয়ার জন্য এখন তোমরা পুরুষার্থ করছো। যত তোমরা স্মরণ করবে ততই বিকর্ম বিনাশ হবে। স্মরণের চার্ট রাখলে জ্ঞানের ধারণাও ভালো হবে। চার্ট রাখলে লাভই হয়। বাবা জানে যে, স্মরণে না থাকার কারণে লিখতে লজ্জা পায়। বাবা কি আর করবে, মুরলীর মাধ্যমে শুনিয়ে দেবেন। বাবা বলেন, এতে লজ্জার কি আছে। মনে-মনে প্রত্যেকেই বুঝতে পারে যে - আমরা স্মরণ করি কি করি না? কল্যাণকারী বাবা বোঝান যে, নোট করলে তোমাদের কল্যাণই হবে। যতক্ষণ না বাবা (ক্লাসে) আসছেন সেইসময়ে তোমাদের স্মরণের চার্ট কেমন ছিল? তফাৎটা তোমাদের দেখা উচিত । প্রিয় জিনিসকে তো অনেক স্মরণ করা হয়। কুমার-কুমারীর যখন বাগদান-পর্ব সমাপ্ত হয়ে যায় তখন তারা স্মরণের মাধ্যমে একে-অপরের হৃদয়ে বিরাজ করে। এমনকি একে-অপরকে না দেখেও তারা জানে যে, তারা বাগদত্ত বা বাগদত্তা। পরে বিবাহ হওয়ার পর সেই স্মরণ আরও পাকা হয়ে যায়। বাচ্চারা, এখন তোমরা জানো যে, শিববাবা হলেন আমাদের অসীম জগতের পিতা। যদিও বাবাকে দেখোনি, কিন্তু বুদ্ধির সাহায্যে বুঝতে পারো। যদি সেই পিতা নাম-রূপ রহিত হন, তাহলে পূজা কার করো? স্মরণ কেন করো? নাম-রূপ রহিত, অনন্ত তো কোনো বস্তুই হয় না। অবশ্যই সব বস্তুকে দেখা যায় তবেই তো তার বর্ণনা করা হয়। আকাশকেও তো দেখো, তাই না। অনন্ত বলতে পারো না। ভক্তিমার্গে ভগবানকে স্মরণ করে - 'হে ভগবান' তাহলে অন্তহীন বলবে কি, না বলবে না। 'হে ভগবান' বললেই তো তৎক্ষণাৎ তিনি স্মরণে আসেন তাহলে কোনো বস্তুর অস্তিত্ব রয়েছে। আত্মাকেও জানা যায়, কিন্তু দেখা যায় না।

সকল আত্মাদের পিতা একজনই, আর তোমরা তাঁকে জেনেও গেছো। বাচ্চারা, তোমরা এও জানো যে, বাবা এসে আমাদের পড়ানও। পূর্বে একথা তোমাদের জানা ছিল না যে, তিনিই পড়ান। তাই কৃষ্ণের নাম বলা হয়েছে। কৃষ্ণকে তো এই স্থূল নয়ন দ্বারা দেখা যায়। তাঁর উদ্দেশ্যে অনন্ত, নাম-রূপ বহির্ভূত এসব কথা বলা যেতে পারে না। কৃষ্ণ তো কখনো বলে না - মামেকম্ স্মরণ করো। তিনি তো সম্মুখেই বিরাজমান। তাঁকে বাবাও বলা যাবে না। মাতারা তো কৃষ্ণকে (তাঁর মূর্তিকে) শিশু মনে করে কোলে বসায়। জন্মাষ্টমীতে ছোট কৃষ্ণকে দোলনায় দোলায়। তাহলে কি সর্বদা ছোটই রয়ে যায়। আবার রাসলীলাও তো করে। তাহলে তো অবশ্যই একটু বড় হয়েছে, যখন আরো বড় হয় তখন কি হন, কোথায় যান, কারোর জানা নেই। সর্বদা শরীর ছোটই তো থাকবে না, তাই না। লোকেরা এইসব কিছুই খেয়াল করে না। (বহুপূর্ব হতেই) এই পূজা-অর্চনাদির রীতি-রেওয়াজের প্রচলন রয়েছে। কারোর মধ্যেই এখন আর জ্ঞান নেই। দেখানোও হয় যে, কৃষ্ণ কংসপুরীতে জন্মগ্রহণ করেছে। এখানে কংসপুরীর তো কোন কথাই নেই। এই ব্যাপারে কারও বিচার-বুদ্ধিই সঠিক দিশায় চলে না। ভক্তরা তো বলে যে, কৃষ্ণ সর্বব্যাপী, পুনরায় তাঁকে স্নানও করানো হয়, ভোজনও করানো হয়। এখন তিনি তো ভোজন করেন না। মূর্তির সম্মুখে রাখে এবং নিজেরাই খেয়ে নেয়। এও তো ভক্তিমার্গ, তাই না। শ্রীনাথজীর সম্মুখে এত ভোগ অর্পণ করা হয়। উনি তো খান না, (ভক্তরা) নিজেরাই খেয়ে নেয়। দেবীমাতা-দের পূজাতেও সেটাই করে। নিজেরাই দেবী-মূর্তি তৈরী করে, পূজা-অর্চনা করে পুনরায় ডুবিয়ে দেয়। গহনাদি সব খুলে নিয়ে ডুবিয়ে দেয়, ওখানে অনেক লোকজন থাকে। যার যাকিছু হাতে আসে সে সেগুলো নিয়ে নেয়। অধিক পুজা দেবীদেরই হয়। লক্ষ্মী আর দুর্গা দুয়েরই মূর্তি তৈরী করা হয়, কিন্তু বড়মা তো এখানেই রয়েছেন, তাই না। তাকে ব্রহ্মপুত্রও বলা হয়। তোমরাই জানো যে, তাঁর এই জন্ম আর ভবিষ্যৎ-রূপের পূজা হয়। ড্রামা কতো ওয়ান্ডারফুল। এই ধরনের কথা শাস্ত্রতে আসে না। এ হলো প্র্যাকটিক্যাল অ্যাক্টিভিটি। বাচ্চারা, এখন তোমাদের জ্ঞান রয়েছে। তোমরা জানো যে, সর্বাপেক্ষা অধিক চিত্র যা বানানো হয়েছে তা হলো আত্মাদের। যখন রুদ্র-যজ্ঞ রচনা করা হয় তখন লক্ষ-লক্ষ শালগ্রামও তৈরী করা হয়। দেবীমাতাদের চিত্র কখনো লক্ষ-লক্ষ তৈরী করা হয় না। যদিও সেখানে অনেক ভক্তরা থাকে, তারা অনেক দেবী-মূর্তিও বানায়, আর ওরাই আবার সেই একই সময়ে লক্ষ-লক্ষ শালগ্রামও তৈরী করে। যদিও তাদের কোনো ফিক্সড দিন থাকে না। কোনো শুভ মুহূর্ত ইত্যাদিও থাকে না। যেমন দেবীদের পূজার জন্য নির্দিষ্ট দিন ধার্য করা থাকে, তখনই হয়। বড় বড় ব্যবসায়ীরা যখন মনে করে যে যজ্ঞের জন্য রুদ্র বা শালগ্রাম তৈরী করবে, তখন তারা ব্রাহ্মণদের ডাকে। রুদ্র বলা হয় একমাত্র বাবাকেই। তার সঙ্গে আবার অনেক শালগ্রামও তৈরী করে। তারা বলে দেয় এত গুলো শালগ্রাম তৈরী করো। তাদের এরজন্য কোনো তিথি-তারিখ নির্দিষ্ট করা থাকে না। এমনও নয় যে, তারা শিবজয়ন্তীতেই রুদ্রপূজা করে থাকে। না, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বৃহস্পতিবারকেই শুভদিন হিসাবে ধার্য করা হয়। দীপাবলীতে একটি থালার উপর লক্ষ্মীর চিত্র সাজিয়ে পূজা করে, পুনরায় রেখে দেয়। উনি হলেন মহালক্ষ্মী, যুগল-মূর্তি। মানুষ এইসব কথা জানে না। লক্ষ্মীর কাছে টাকাপয়সা কোথা থেকে আসবে? যুগলকে তো চাই, তাই না। তাই এঁরা হলেন যুগল (লক্ষ্মী-নারায়ণ)। পুনরায় নাম মহালক্ষ্মী রেখে দেয়। কখন দেবীদের আবির্ভাব হয়েছিল? কোন্ সময়ে মহালক্ষ্মী ছিলেন? এইসমস্ত কথা মানুষ জানেই না। এখন একথা তোমাদের বাবা বসে বোঝান। তোমাদের মধ্যেও সকলের ধারণা একরকম থাকে না। বাবা এতকিছু বুঝিয়েও পুনরায় বলেন, শিববাবা স্মরণে রয়েছে তো? উত্তরাধিকার স্মরণে রয়েছে তো? মুখ্য কথাই হলো এটা। ভক্তিমার্গে কত টাকা পয়সা নষ্ট করে। এখানে তোমাদের পাই-পয়সাও নষ্ট হয় না। তোমরা সলভেন্ট হওয়ার জন্য সার্ভিস করো। ভক্তিমার্গে তোমরা অনেক পয়সা খরচ করো, বিকারী হয়ে যাও, সবকিছু মাটিতে মিশে যায়। কত পার্থক্য। এইসময় যাকিছু করে তা ঈশ্বরীয় সেবায় শিববাবাকে দেয়। শিববাবা তো খান না, খাও তো তোমরা। তোমরা অর্থাৎ ব্রাহ্মণরা তো এর ট্রাস্টী। ব্রহ্মাকে তো দাও না। তোমরা শিববাবাকে দাও। কেউ-কেউ বলে - বাবা, তোমার জন্য ধুতি-পাঞ্জাবি (কুর্তা) নিয়ে এসেছি। বাবা বলেন -- এঁনাকে (ব্রহ্মা) দিলে তোমাদের কিছুই জমা হবে না। জমা সেটাই হবে যা তোমরা শিববাবাকে স্মরণ করে এঁনাকে দেবে। তাছাড়া এটাও তো জানো যে, ব্রাহ্মণরা শিববাবার ভান্ডার থেকেই লালিত-পালিত হয়। বাবাকে জিজ্ঞাসা করার প্রয়োজন নেই যে পাঠাব কি? উনি তো নেবেন না। যদি ব্রহ্মাকে স্মরণ করো, তবে তোমাদের (প্রাপ্তি) জমাই হবে না। ব্রহ্মাকেও তো নিতে হবে শিববাবার ভান্ডার (খাজানা) থেকে। তখন শিববাবাই স্মরণে আসবে। তোমাদের জিনিস তিনি কেন গ্রহণ করবেন। বি.কে.-দের দেওয়াও ভুল। বাবা তো বুঝিয়েছেন যে, তোমরা কারোর কাছ থেকে নিয়ে যদি পরিধান করো তাহলে তার কথাই স্মরণে আসবে। যদি কোনো ছোট বা হাল্কা জিনিস হয় সেটা কোনো বড় ব্যাপার নয়। কোনো ভালো বা বড় জিনিস হলে তো আরোই মনে পড়বে - অমুকে এটা দিয়েছে। তাদের জমা তো কিছুই হয় না। তাহলে তো ক্ষতিই হলো, তাই না। শিববাবা বলেন - মামেকম্ স্মরণ করো। আমার বস্ত্রাদির কোনো প্রয়োজনই নেই। বস্ত্রাদি তো বাচ্চাদের চাই। তারা শিববাবার ভান্ডার থেকে পরবে। আমার তো নিজের শরীর নেই। ইনি (ব্রহ্মা) তো শিববাবার ভান্ডার থেকে নেওয়ার অধিকারী। রাজত্বেরও অধিকারী। বাবার ঘরেই তো বাচ্চারা খাওয়া-দাওয়া করে, তাই না। তোমরাও সার্ভিস করো, আর জমা করতে থাকো। যত বেশী সার্ভিস করবে, তত বেশী উপার্জন হবে। তোমরা শিববাবার ভান্ডার থেকেই খাও, পান করো। ওঁনাকে যদি না দাও তাহলে তো জমাই হবে না। শিববাবাকেই দিতে হবে। বাবা তোমার থেকে আমরা ভবিষ্যতে ২১ জন্মের জন্য পদ্মাপদমপতিই হবো। টাকা পয়সা তো শেষ হয়ে যাবে, তাই সমর্থকে আমরা দিয়ে দিই। বাবা-ই তো সমর্থ (সর্বশক্তিমান), তাই না। তিনি ২১ জন্মের জন্য সবকিছু দিয়ে দেন। ইনডায়রেক্টলী যারা দেয় তারাও তো ঈশ্বরের উদ্দেশ্যেই দান করে, তাই না। ইনডায়রেক্ট দানে এতটা শক্তি থাকে না। এখন তোমরা অনেক শক্তি অর্জন করো কারণ তিনি সম্মুখে রয়েছেন। ওয়ার্ল্ড অলমাইটি অথরিটি তো এইসময়েই এখানে থাকেন।

ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে কিছু দান-পুণ্য করলে, অল্পকালের জন্য কিছু প্রাপ্ত হয়। এখানে তো বাবা তোমাদের বোঝান - আমি সম্মুখে রয়েছি। আমিই দাতা। ইনি তো শিববাবাকে সবকিছু দান করে দিয়ে সমগ্র বিশ্বের রাজত্ব (বাদশাহী) নিয়ে নিয়েছেন, তাই না। এও জানো যে - এই ব্যক্তর-ই (সাকারী ব্রহ্মা) অব্যক্ত-রূপের সাক্ষাৎকার হয়। এঁনার মধ্যেই শিববাবা এসে বাচ্চাদের সঙ্গে কথা বলেন। কখনই এ'কথা মনে আনা উচিত নয় যে - আমরা মানুষজনের থেকে নেবো। বলো, শিববাবার ভান্ডারায় পাঠিয়ে দাও, এঁনার উদ্দেশ্যে দান করলে তো কিছুই পাওয়া যাবে না। আরও ক্ষতি হয়ে যাবে। যদি গরীব হয়, তাহলে ৩-৪ টাকার কোনো জিনিস দেবে। এর থেকে তো শিববাবার ভান্ডারায় দান করলে তা পদমগুণ হয়ে যাবে। নিজেকে ক্ষয়-ক্ষতির দিকে নিয়ে যাবে কি, না যাবে না। পূজা সাধারণতঃ দেবীদেরই হয়ে থাকে, কারণ তোমরা দেবীরাই বিশেষভাবে নিমিত্ত হও জ্ঞান প্রদানের জন্য। যদিও গোপেরাও (ভাই) জানে, কিন্তু সাধারণতঃ মাতারাই ব্রাহ্মণী হয়ে পথ বলে দেয়। তাই দেবীদের নামের মহিমা অধিক। দেবীদের পূজার প্রচলন বেশী। বাচ্চারা, এও তোমরাই জানো যে অর্ধকল্প আমরা পূজ্য ছিলাম। প্রথমে ফুল পূজ্য, তারপর সেমি-পূজ্য । কারণ দুই কলা কম হয়ে যায়। রামের ডিনায়েসাটি বলা হবে ত্রেতাকে। ওরা তো লক্ষ-লক্ষ বছরের কথা বলে, তাই তার কোনো হিসেবই হতে পারে না। ভক্তিমার্গে চলা মানুষের বুদ্ধিতে আর তোমাদের বুদ্ধিতে কত রাত-দিনের পার্থক্য ! তোমরা হলে ঈশ্বরীয় বুদ্ধিসম্পন্ন, ওরা হলো রাবণ-বুদ্ধিসম্পন্ন। তোমাদের বুদ্ধিতে রয়েছে যে, এই সমগ্র চক্রই ৫ হাজার বছরের, যা আবর্তিত হতেই থাকে। যারা রাতে (ভক্তিতে) রয়েছে তারা বলে লক্ষ-লক্ষ বছর, আর যারা দিনে (জ্ঞানে) রয়েছে তারা বলে ৫ হাজার বছর। ভক্তিমার্গে অর্ধকল্প তোমরা অসত্য কথা শুনেছো। সত্যযুগে এমন কথা হয়ই না। ওখানে তো অবিনাশী উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয়। এখন তোমরা ডায়রেক্ট মত পাও। এ হলো শ্রীমদভগবত্গীতা, তাই না। আর কোনো শাস্ত্রে 'শ্রীমদ্' শব্দটি ব্যবহৃত হয় না। প্রতি ৫ হাজার বছর পর এই পুরুষোত্তম সঙ্গমযুগ, গীতার যুগ আসে। লক্ষ-লক্ষ বছরের কথা তো হতে পারে না। যখনই কেউ আসবে তাকে সঙ্গমে নিয়ে যাও। অসীম জগতের পিতা, রচয়িতা অর্থাৎ নিজের এবং তাঁর রচনার সমগ্র পরিচয় (জ্ঞান) দিয়েছেন। বাবা তাও বলেন যে - আচ্ছা, বাবাকে স্মরণ করো, আর কোনো ধারণা না করতে পারলে শুধু নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করে বাবাকে স্মরণ করো। পবিত্র তো হতেই হবে। বাবার কাছ থেকে অবিনাশী উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করতে হলে দৈবী-গুণও ধারণ করতে হবে। আচ্ছা !

মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা-রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) ২১ জন্মের জন্য পদমগুণ উপার্জন করতে হলে ডায়রেক্ট ঈশ্বরীয় সেবায় সবকিছু সফল করতে হবে। ট্রাস্টী হয়ে শিববাবার জন্য সেবা করতে হবে।

২ ) যতটা সময়ের জন্য স্মরণ করতে বসো, ততটা সময়ে বুদ্ধি কোথায়-কোথায় গেছে - তা চেক্ করতে হবে। সততার সাথে নিজের পোতামেল (চার্ট) রাখতে হবে। নর থেকে নারায়ণ হওয়ার জন্য বাবা আর তাঁর অবিনাশী উত্তরাধিকারকে স্মরণে রাখতে হবে।

বরদান:-
বিস্মৃতির দুনিয়া থেকে বেরিয়ে স্মৃতি স্বরূপ থেকে হিরো-র পার্ট প্লে করা বিশেষ আত্মা ভব

এই সঙ্গম যুগ হলো স্মৃতির যুগ আর কলিযুগ হলো বিস্মৃতির যুগ। তোমরা সবাই বিস্মৃতির দুনিয়া থেকে বেরিয়ে এসেছো। যে স্মৃতি স্বরূপ থাকে সে-ই হলো হিরো-র পার্ট প্লে করা বিশেষ আত্মা। এই সময় তোমরা হলে ডবল হিরো, এক হলো হিরের সমান ভ্যালুয়েবল হয়েছো আর দ্বিতীয় হলো হিরো পার্ট। তো মনের মধ্যে এই গান সদাই যেন বাজতে থাকে যে - বাঃ আমার শ্রেষ্ঠ ভাগ্য। যেরকম লৌকিক অক্যুপেশন স্মরণে থাকে সেইরকম এই অবিনাশী অক্যুপেশন - “আমি হলাম শ্রেষ্ঠ আত্মা” স্মরণে থাকলে তখন বলা হবে বিশেষ আত্মা।

স্লোগান:-
সাহসের প্রথম কদম এগিয়ে দাও তাহলে বাবার সম্পূর্ণ সহায়তা প্রাপ্ত হবে।