24-11-2024 প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ 15-12-2002 মধুবন


"সময় অনুসারে লক্ষ্য আর লক্ষণের সমতার দ্বারা বাবা সমান হও"


আজ বাপদাদা চতুর্দিকের সর্ব স্বমানধারী বাচ্চাদের দেখে আনন্দিত হচ্ছেন। এই সঙ্গমে তোমরা সব বাচ্চার যে স্বমান প্রাপ্ত হয় তার থেকে বড় স্বমান সারা কল্পে কোনও আত্মার প্রাপ্ত হতে পারে না। কত বড় স্বমান, সেটা জানো তোমরা? স্বমানের নেশা কত বড়! এটা তোমাদের স্মৃতিতে থাকে? স্বমানের মালা অনেক বড়। একেকটা দানা গুনে যাও আর স্বমানের নেশায় লাভলীন হয়ে যাও। এই স্বমান অর্থাৎ টাইটেলস্ স্বয়ং বাপদাদার দ্বারা প্রাপ্ত হয়েছে। পরমাত্মার দ্বারা স্বমান প্রাপ্ত হয়। সেইজন্য এই স্বমানের আধ্যাত্মিক নেশা নাড়িয়ে দিতে পারে এমন কোনো অথরিটি নেই, কারণ এই প্রাপ্তি হয়েছে অলমাইটি অথরিটি দ্বারা।

তাইতো বাপদাদা আজ অমৃতবেলায় বিশ্বে চক্রভ্রমণ করতে করতে সর্ব বাচ্চার দিকে দেখেছেন যে প্রত্যেক বাচ্চার স্মৃতিতে কত স্বমানের মালা পড়ে রয়েছে। মালা ধারণ করা অর্থাৎ স্মৃতি দ্বারা সেই স্থিতিতে স্থিত থাকা। তো নিজেকে চেক করো - এই স্মৃতির স্থিতি কতটা থাকে। বাপদাদা দেখছিলেন যে স্বমানের নিশ্চয় এবং তার আধ্যাত্মিক নেশা এই দুইয়ের ব্যালেন্স কতটা থাকে? নিশ্চয় হলো - নলেজফুল হওয়া আর অধ্যাত্ম নেশা হলো - পাওয়ারফুল হওয়া। তো নলেজফুলের মধ্যেও বাবা দু' প্রকার দেখেছেন - এক নলেজফুল, আরেক হলো নলেজেবল (জ্ঞান স্বরূপ)। তো নিজেকে জিজ্ঞাসা করো - আমি কে? বাপদাদা জানেন যে বাচ্চাদের লক্ষ্য অনেক উঁচু। লক্ষ্য উঁচু তো না, কী উঁচু? তোমরা সবাই বলে থাকো বাবা সমান হবো। তো বাবা যেমন উঁচু থেকে উঁচু তেমন বাবা সমান হওয়ার লক্ষ্য কত উঁচু! সুতরাং লক্ষ্য দেখে বাপদাদা খুব খুশি হন কিন্তু ... কিন্তু বাবা বলবেন কি? কিন্তু কী... সেটা টিচার্স বা ডবল ফরেনার্স শুনবে? বুঝে গেছো তো নিশ্চয়ই! বাপদাদা লক্ষ্য আর লক্ষণ সমান চান। এখন নিজেকে জিজ্ঞাসা করো লক্ষ্য আর লক্ষণ অর্থাৎ প্র্যাকটিক্যাল স্থিতি সমান আছে? কেননা, লক্ষ্য আর লক্ষণের সমান হওয়াই বাবা সমান হওয়া। সময় অনুসারে এই সমতা সমীপে নিয়ে এসো।

বর্তমান সময়ে বাপদাদা বাচ্চাদের একটা ব্যাপার দেখতে পারেন না। কিছু কিছু বাচ্চা বিভিন্ন রকমের পরিশ্রম করে বাবা সমান হওয়ার জন্য, বাবার ভালবাসার সামনে পরিশ্রম করার আবশ্যকতাই নেই, যেখানে ভালবাসা আছে সেখানে পরিশ্রম নেই। দেহ অভিমানের ভুল নেশা নেচার হয়ে গেছে, ন্যাচারাল হয়ে গেছে। দেহ অভিমানে আসতে কী তোমাদের পুরুষার্থ করতে হয়? নাকি ৬৩ জন্ম পুরুষার্থ করেছো? সেটা তোমাদের নেচার হয়ে গেছে, ন্যাচারাল হয়ে গেছে, যাতে তোমরা এখনও মাঝে-মাঝেই বলে থাকো যে দেহীর বদলে দেহতে এসে যাও। তো যেরকম দেহ অভিমান নেচার এবং ন্যাচারাল ছিল, সেরকমই এখন দেহী-অভিমানী স্থিতিও ন্যাচারাল আর নেচার হতে হবে, নেচার পরিবর্তন করা কঠিন হয়। এখনও তোমরা কখনো কখনো বলে থাকো তো না যে আমার ভাব এটা নয়, এটা নেচার। তবুও সেই নেচারকে ন্যাচারাল বানিয়েছ আর বাবা সমান নেচারকে ন্যাচারাল বানাতে পারো না! বিপরীত নেচারের বশ হয়ে যাও তোমরা আর বাবা সমান হওয়ার যথার্থ নেচার বানাতে পরিশ্রম কেন? অতএব, এখন বাপদাদা সব বাচ্চার দেহী অভিমানী থাকার ন্যাচারাল নেচার দেখতে চান। ব্রহ্মা বাবাকে তোমরা দেখেছ, তিনি ঘুরতে ফিরতে এবং কোনও কার্য করার সময় দেহী অভিমানী স্থিতি তাঁর ন্যাচারাল নেচার ছিল।

বাপদাদা সমাচার শুনেছেন যে আজকাল দাদিরা বিশেষ এই আত্মিক বার্তালাপ করেন - ফরিস্তা অবস্থা, কর্মাতীত অবস্থা, বাবা সমান অবস্থা ন্যাচারাল কীভাবে হওয়া যাবে! যেন নেচার হয়ে যায়, এই আত্মিক আলাপচারিতা করো তোমরা, তাই না! দাদিরও এটাই বারবার ভাবনায় আসে - ফরিস্তা হয়ে যাই, কর্মাতীত হয়ে যাই, যাতে বাবার প্রত্যক্ষতা হয়ে যায়। সুতরাং ফরিস্তা হওয়া এবং নিরাকারী কর্মাতীত অবস্থা হওয়ার বিশেষ সাধন হলো - নিরহংকারী হওয়া। নিরহংকারীই নিরাকারী হতে পারে।

সেইজন্য বাবার ব্রহ্মা দ্বারা লাস্ট মন্ত্র নিরাকারীর সাথে নিরহংকারী বলেছেন। শুধু নিজের দেহ কিংবা অন্যের দেহের ফাঁদে আটকে যাওয়া - সেটাকেই দেহ অহংকার কিংবা দেহ বোধ বলা হয় না। দেহ অহংকারও আছে, দেহ ভাবও আছে। নিজের দেহ কিংবা অন্যের দেহের বোধে থাকা, আকর্ষণে থাকা - তা'তে তো মেজরিটি পাস হয়েছে। যে পুরুষার্থের একাগ্রতায় থাকে, প্রকৃত পুরুষার্থী, সে স্থূল রূপের ঊর্ধ্বে। কিন্তু দেহ ভাবের অনেক সূক্ষ্ম রূপ আছে, নিজেদের মধ্যে তার লিস্ট বের করো। বাপদাদা আজ বলেননি। আজ এতটা ইশারা অনেক, কেননা, সবাই বিচক্ষণ তোমরা। তোমরা সবকিছু জানো তো না, যদি সবাইকে জিজ্ঞাসা করা হয় না, তখন সবাই খুব চাতুরির সাথে বলবে। কিন্তু বাপদাদা কেবল ছোট সহজ পুরুষার্থ বলেন, সদা মন-বচন-কর্ম, সম্বন্ধ- সম্পর্কে লাস্ট মন্ত্রের তিন শব্দ (নিরাকারী, নিরহংকারী, নির্বিকারী) সদা স্মরণে রাখো। সংকল্প যদি করছো তবে চেক করো - মহামন্ত্র সম্পন্ন হয়েছে কিনা। এরকমই বোল, কর্ম সবকিছুতে শুধু তিন শব্দ স্মরণে রাখো আর সমতা বজায় রাখো। এটা সহজ তো না? বাবা এটা বলেন না যে সম্পূর্ণ মুরলী স্মরণ করো, শুধু তিন শব্দ। এই মহামন্ত্র সংকল্পকেও শ্রেষ্ঠ বানিয়ে দেবে, বাণীতে নিরহংকারিতা নিয়ে আসবে। কর্মে আনবে সেবা ভাব। সম্বন্ধ সম্পর্কে সদা শুভ ভাবনা, শ্রেষ্ঠ কামনার বৃত্তি তৈরি করবে।

বাপদাদা সেবার সমাচার শোনেন, সেবাতে আজকাল তোমরা ভিন্ন ভিন্ন কোর্স করিয়ে থাকো, কিন্তু একটা কোর্স এখনো বাকি রয়ে গেছে। সেটা হলো - সব আত্মার মধ্যে যে শক্তির প্রয়োজন, সেই ফোর্সের (কার্যকারিতা) কোর্স করাও। শক্তি ভরণের কোর্স, বাণী দ্বারা শোনানোর কোর্স নয়, বাণীর সাথে সাথে শক্তি ভরণের কোর্সও প্রয়োজন। কেবল ভালো ভালো যেন না বলে, বরং এমন যার দ্বারা তারা ভালো হয়ে যায়। যেন এটা বর্ণন করে যে আজ আমার শক্তিকণা প্রাপ্ত হয়েছে। শক্তির কণা যদি অনুভবও হয় তবে সেই আত্মাদের জন্য সেটা অনেক। কোর্স করাও কিন্তু আগে নিজেকে করিয়ে তারপরে বলো। তো শুনেছ, বাপদাদা কি চান? লক্ষ্য আর লক্ষণকে সমান বানাও। সকলের লক্ষ্য দেখে বাপদাদা অনেক অনেক খুশি হন। এখন শুধু বাবা সমান বানাও, তবে বাবা সমান সহজেই হয়ে যাবে।

বাপদাদা তো বাচ্চাদেরকে সমান হওয়া থেকেও উঁচু, এমনকি নিজের থেকেও উঁচু দেখেন। সদা বাপদাদা বাচ্চাদেরকে মাথার মুকুট বলে থাকেন। মুকুট তো মাথা থেকেও উঁচু হয়, তাই না! টিচার্স - মাথার মুকুট তোমরা?

টিচারদের প্রতি - দেখো, কত টিচার্স! এক গ্রুপে এত টিচার্স, তবে সব গ্রুপে কত টিচার্স হবে! টিচার্স বাপদাদার একটা আশা পূর্ণ করার সংকল্প করেছে। কিন্তু সামনে নিয়ে আসেনি। জানো তোমরা কোনটা? এক, বাপদাদা বলেছেন যে এখন সব ওয়ারিশ-এর মালা বানাও। যারা ওয়ারিশ তাদের মালা, জেনারেল মালা নয়। দ্বিতীয়ত, যারা তোমাদের সম্বন্ধ- সম্পর্কের তাদেরকে মাইক বানাও। তোমরা ভাষণ দিও না কিন্তু তারা যেন তোমাদের পক্ষের মিডিয়া তৈরি হয়। নিজের মিডিয়া বানাও। মিডিয়া কী করে? ভুল হোক কিংবা ঠিক হোক তার আওয়াজ ছড়িয়ে দেয় তো না! সুতরাং এমন মাইক তৈরি করো, যারা প্রত্যক্ষতার আওয়াজ যেন মিডিয়ার মতন ছড়িয়ে দেয়। তোমরা বলবে, ভগবান এসে গেছেন, ভগবান এসে গেছেন...

তারা এটাকে কমন বলে মনে করে, কিন্তু তোমাদের পক্ষে অন্য কেউ বলবে, অথরিটির সাথে বলবে, প্রথমে তারা তোমাদের শক্তি রূপে প্রত্যক্ষ করাবে। যখন সমূহ শক্তি প্রত্যক্ষ হবে তখন বাবা প্রত্যক্ষ হবেন। সুতরাং বানাও, মিডিয়া প্রস্তুত করো। তখন দেখব। করেছ? আচ্ছা ঠিক আছে মালা ছাড়ো, না হয় বালাই হলো, প্রস্তুত করেছ তোমরা? হাত উঠাও যারা এমন প্রস্তুত করেছ? বাপদাদা দেখবেন কা'কে প্রস্তুত করেছ, আচ্ছা, সাহস তো রেখেছ! শুনেছ - টিচারদের কী করতে হবে? শিবরাত্রিতে ওয়ারিশ কোয়ালিটি প্রস্তুত করো। মাইক প্রস্তুত করো, তার পরে আগামী বছরে শিবরাত্রিতে সবার মুখ থেকে এই আওয়াজ যেন বের হয় - শিববাবা এসে গেছেন। এরকম শিবরাত্রি উদযাপন করো। প্রোগ্রাম তো খুব ভালো বানিয়েছ। প্রোগ্রাম সবাইকে পাঠিয়েছ তো না! প্রোগ্রাম তো ঠিক বানিয়েছ কিন্তু প্রতিটা প্রোগ্রাম থেকে যেন কোনও মাইক প্রস্তুত হয়, কোনও ওয়ারিশ প্রস্তুত হয়। এই পুরুষার্থ করো, ভাষণ দিলে আর চলে গেলে এমন নয়। এটা তো ৬৬ বছর হয়ে গেছে আর সেবারও ৫০ বছর উদযাপন করেছো। এখন শিবরাত্রির ডায়মন্ড জুবিলি উদযাপন করো। এই দুই প্রকারের আত্মা প্রস্তুত করো, তারপর দেখো কাড়ানাকাড়া বাজে কিনা! থোরাই তোমরা নাকাড়া বাজাবে। তোমরা তো সব দেবী, সাক্ষাৎকার করাবে। যারা নাকাড়া বাজাবে তাদের প্রস্তুত করো। যারা প্র্যাকটিক্যালি গীত গাইবে, শিব শক্তি এসে গেছে। শুনেছ, শিবরাত্রিতে তোমাদের কী করতে হবে! কেবল ভাষণ দিয়েই শেষ করে দিও না। তারপরে তোমরা লিখবে - বাবা, ৫০০- ১০০০, লাখো লোক এসে গেছে, এসে গেছে সেই বার্তা তো দিয়েছো, কিন্তু ওয়ারিশ কত বের হয়েছে, মাইক কত বের হয়েছে, এখন সেই সমাচার দাও। যা তোমরা এখনো পর্যন্ত করেছ, ভূমি বানিয়েছ, বার্তা দিয়েছ, বাবা সেটাকে ভালো বলেন, সেই সেবা ব্যর্থ যায়নি, সেটা শক্তিশালী হয়েছে। প্রজা তো তৈরি হয়েছে, রয়্যাল ফ্যামিলি তো তৈরি হয়েছে, কিন্তু রাজা রাণীও তো প্রয়োজন। সিংহাসনে থাকা রাজা রাণী নয়, রাজা রাণীর সাথে ওখানে দরবারে রাজা সমান আকর্ষণীয় যারা, তারা বসে, সেইরকম তো প্রস্তুত করো। রাজ- দরবার যেন সৌন্দর্যমন্ডিত হয়ে যায়। শুনেছো, শিবরাত্রিতে তোমাদের কী করতে হবে! পান্ডব শুনছো তোমরা? হাত তোলো। মনোযোগ দিয়েছো। এটা ভালো। বড়- বড়ো মহারথী বসে আছে। বাপদাদা খুশি হন, এটাও হৃদয়ের ভালবাসা, কেননা, তোমাদের সবার সংকল্প চলে তো না, প্রত্যক্ষতা কবে হবে, কবে হবে... তো বাপদাদা শুনতে থাকেন। মধুবনের তোমরা কি শুনেছ? মধুবন নিবাসী শুনেছে। মধুবন, শান্তিবন, যারা জ্ঞান সরোবরের, সবাই মধুবন নিবাসী। আচ্ছা।

মধুবন থেকে নাকাড়া বাজবে, কোথা থেকে নাকাড়া বাজবে? (দিল্লি থেকে) মধুবন থেকে নয়? বলো চারদিক থেকে। এক দিক থেকে বাজবে না। মধুবন থেকেও যখন বাজবে, তখন চতুর্দিক থেকে বাজবে, আর তখনই কুম্ভকর্ণ জাগবে। মধুবনের তোমরা যেভাবে সেবাতে অক্লান্ত হয়ে সেবার পার্ট প্লে করছ না, ঠিক সেভাবেই এই মন্সা সেবাও করতে থাকো। শুধু কর্মণা নয়, মন্সা, বাচা, কর্মণা এই তিন সেবা তোমরা তো করছই, আরও বেশি করো। আচ্ছা। মধুবনের তোমরা ভুলে যাওনি; যারা মধুবনের তারা ভাবছ বাপদাদা মধুবনে আসেন কিন্তু মধুবনের নাম নেন না। মধুবন তো সদা স্মরণে থাকেই। মধুবন না থাকলে তাহলে এরা কোথায় আসত! তোমরা সেবাধারীরা যদি সেবা না করতে তাহলে এরা কীভাবে খেতো, কীভাবে থাকতো! তাইতো মধুবনের যারা, তাদেরকে বাপদাদাও হৃদয়ে স্মরণ করেন এবং হৃদয়ের আশীর্বাদ দেন। আচ্ছা। মধুবনের জন্যও ভালবাসা, টিচার্স-এর জন্যও ভালবাসা, মিষ্টি মিষ্টি মাতাদের জন্যও ভালবাসা এবং সাথে মহাবীর পান্ডবদেরও ভালবাসা। পান্ডবদের ছাড়া গতিও নেই। সেইজন্য চতুর্ভুজের মহিমা বেশি। পান্ডব আর শক্তি দুইয়ের কম্বাইন্ড রূপ বিষ্ণু চতুর্ভুজ। আচ্ছা।

মধুবনের পান্ডবরা নেশা আছে তোমাদের? বিজয়ের নেশা অন্য নেশা নয়। এটা ভালো, পান্ডব ভবনে মেজরিটি পান্ডব, পান্ডব যদি না থাকত তবে তোমাদের সবার মধুবনে আনন্দ হতো না। সেইজন্য বাহবা মধুবন নিবাসীদের, তোমাদের আনন্দের সঙ্গে দিন যাপন করায়, খাওয়ায় এবং ওড়ায়। আজ বাপদাদা মধুবন নিবাসীদের অমৃতবেলা থেকে স্মরণ করছেন। হয় তোমরা এখানে আছ, নয়তো উপরে বসে আছ, কিংবা যারা মধুবনের তাদের কেউ এখানে ডিউটিতে আছে কিন্তু চতুর্দিকের মধুবন নিবাসীদের অমৃতবেলা থেকে বাবা স্মরণ দিয়েছেন।

বাপদাদা যে অধ্যাত্ম এক্সারসাইজ দিয়েছেন, তা' সারাদিনে কতবার করো? আর কত সময় করো? নিরাকারী আর ফরিস্তা। বাবা আর দাদা, এই মুহূর্তে নিরাকারী, পর-মুহূর্তে ফরিস্তা স্বরূপ। দুইয়ের মধ্যে দেহ বোধ নেই। তো দেহবোধের ঊর্ধ্বে যদি থাকতে হয় তবে কর্ম করাকালীনও নিজের ডিউটি করতে করতেও এই এক্সারসাইজ এক সেকেন্ডে অভ্যাস করতে পারো। এটা যেন এক ন্যাচারাল অভ্যাস হয়ে যায় - এই মুহূর্তে নিরাকারী পর-মুহূর্তে ফরিস্তা। আচ্ছা। (বাপদাদা ড্রিল করালেন) এরকম নিরন্তর ভব!

চতুর্দিকে, বাপদাদার স্মরণে মগ্ন হয়ে বাবা সমান হওয়ার লক্ষ্য এবং লক্ষণ সমান বানায়, যারা সায়েন্সের সাধনের সাথে দিন বা রাত জেগে কোণায় কোণায় বসে আছে, সেই বাচ্চাদেরও বাপদাদা স্মরণের স্নেহ-সুমন, অভিনন্দন আর হৃদয়ের আশীর্বাদ দিচ্ছেন। বাপদাদা জানেন এই সময় সবার হৃদয়ে দিলারাম বাবার স্মৃতি সমাহিত হয়ে আছে। প্রতিটা কোণে কোণে বসে থাকা বাচ্চাদের বাপদাদা তাদের পার্সোনাল নামে স্মরণের স্নেহ-সুমন দিচ্ছেন। নামের মালা জপতে গেলে তো রাত শেষ হয়ে যাবে। বাপদাদা সব বাচ্চাকে স্মরণ দিয়ে থাকেন, সেটা পুরুষার্থে যে কোনও নম্বর হোক, কিন্তু বাপদাদা সদা সব বাচ্চার শ্রেষ্ঠ স্বমানকে স্মরণ-স্নেহ জানান এবং নমস্কার করেন। স্মরণ স্নেহ দেওয়ার সময় বাপদাদার সামনে চতুর্দিকের সব বাচ্চা স্মরণে থাকে। কোনো একটা বাচ্চাও কোনও কোণায়, গ্রামে, শহরে, দেশে, বিদেশে, যেখানেই আছে বাপদাদা তাদেরকে স্বমান স্মরণ করিয়ে স্মরণের স্নেহ-সুমন দেন। সবাই স্মরণ স্নেহের অধিকারী, কেননা বাবা বলেছেন, সুতরাং তোমরা অবশ্যই স্মরণ-স্নেহের অধিকারী। সমুখে থাকা তোমাদের সবাইকেও বাপদাদা স্বমানের মালাধারী স্বরূপে দেখছেন। সবাইকে বাবা সমান স্বমান স্বরূপে স্মরণের স্নেহ-সুমন আর নমস্কার।

দাদিজীর সাথে - ঠিক হয়ে গেছো, এখন কোনো অসুস্থতা নেই, পালিয়ে গেছে। ওটা শুধু দেখানোর জন্য এসেছে, যা সবাই যেন দেখে যে আমাদের কাছেও আসে তো এটা কোনো বড় বিষয় নয়। দাদিরা সবাই খুব ভালো পার্ট প্লে করছেন। বাপদাদা সবার পার্ট দেখে খুশি হন। (নির্মলশান্তা দাদির সাথে) তুমি আদি রত্ন তো না! অনাদি রূপেও নিরাকারী বাবার সমীপে আছো, সাথে সাথে থাকো এবং আদি রূপেও রাজ-দরবারের সাথী। রয়্যাল ফ্যামিলিতেও তুমি সদা রয়্যাল আর সঙ্গমেও আদি রত্ন হওয়ার ভাগ্য প্রাপ্ত হয়েছে। তাইতো ভাগ্য অনেক বড়, ভাগ্য আছে তাই না? তোমার উপস্থিতিই সবার জন্য বরদান। বলো বা না বলো, কিছু করো বা না করো কিন্তু তোমার উপস্থিতিই সবার জন্য বরদান। আচ্ছা। ওম্ শান্তি।

বরদান:-
লৌকিক অলৌকিক জীবনে সদা স্বতন্ত্র হয়ে পরমাত্ম-সাথের অনুভব দ্বারা নষ্টমোহ ভব

সদা স্বতন্ত্র থাকার লক্ষণ হলো - প্রভু প্রেমের অনুভূতি। প্রেম যত হবে ততই সাথে থাকবে, বিচ্ছিন্ন হবে না। প্রেম তাকেই বলা যায় যে সাথে থাকে। বাবা যখন সাথে আছেন তখন সমস্ত বোঝা বাবাকে দিয়ে নিজে হালকা হয়ে যাও, এটাই নষ্টমোহ হওয়ার বিধি।
কিন্তু পুরুষার্থের ব্যাপারে সাবজেক্টে সদা আন্ডারলাইন করো। লৌকিক এবং অলৌকিক জীবনে সদা স্বতন্ত্র থাকো, তখনই সাথে অনুভব হবে।

স্লোগান:-
বিকার রূপী সব সাপকে নিজের শয্যা বানিয়ে দাও তবে সহজযোগী হয়ে যাবে।