25.11.2024
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
শান্তির গুণ হলো সবথেকে বড় গুণ, সেইজন্য শান্তি সহকারে বলো, অশান্তি ছড়ানো বন্ধ করো"
প্রশ্নঃ -
সঙ্গম যুগে
বাবার থেকে বাচ্চাদের কোন্ উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয়? গুণবান বাচ্চার লক্ষণ কেমন হবে?
উত্তরঃ
প্রথম
উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয় জ্ঞানের, ২. শান্তির, ৩. গুণের। গুণবান বাচ্চারা সর্বদা
খুশিতে থাকে। কারোর খারাপ গুণ দেখে না। কারোর বিষয়ে কমপ্লেন (অভিযোগ) করে না। যার
মধ্যে খারাপ গুণ আছে, তার সঙ্গে মেলামেশাও করে না। কেউ কিছু বললে তাতে কর্ণপাত না
করে আপন খুশিতে মেতে থাকে।
ওম্ শান্তি ।
আত্মিক বাবা
তাঁর আত্মিক বাচ্চাদের বোঝাচ্ছেন। এক তো হলো, তোমরা বাবার থেকে জ্ঞানের উত্তরাধিকার
প্রাপ্ত করছো। বাবার থেকেও গুণ গ্রহণ করতে হবে আবার এই লক্ষ্মী-নারায়ণের চিত্র
থেকেও গ্রহণ করতে হবে। বাবাকে বলা হয় শান্তির সাগর। তাহলে শান্তিও ধারণ করতে হবে।
শান্তির জন্যই বাবা বোঝাচ্ছেন যে, তোমরা পরস্পরের সাথে শান্তিতে বার্তালাপ করো। এই
গুণ ধারণ করো। জ্ঞানের গুণ তো ধারণ হচ্ছে-ই। এই জ্ঞান পড়তে হবে। এই জ্ঞান
কেবলমাত্র এক বিচিত্র বাবা-ই পড়ান। বিচিত্র আত্মারা অর্থাৎ বাচ্চারাই সেই জ্ঞান পড়ে।
এটা হলো এখানকার নতুন খুশির খবর। যেটা আর কেউ জানে না। কৃষ্ণের ন্যায় দৈবীগুণও
ধারণ করতে হবে। বাবা বোঝাচ্ছেন যে, আমি শান্তির সাগর, তাই এখানে শান্তি স্থাপন করতে
হবে। অশান্তি সমাপ্ত করতে হবে। নিজের চাল-চলনকে দেখতে হবে, কতখানি আমি শান্ত স্বরূপ
হতে পেরেছি? এমনও অনেক আত্মা আছে, যারা শান্তি পছন্দ করে। এটাও বোঝে যে শান্ত থাকা
ভালো। শান্তি হলো শ্রেষ্ঠ গুণ, কিন্তু শান্তি কিভাবে স্থাপন হবে? শান্তির অর্থ কি?
এসমস্ত কথা ভারতবাসী বাচ্চারা জানে না। বাবা ভারতবাসী বাচ্চাদের জন্যই বলেন। বাবা
আসেন-ই এই ভারতে। এখন তোমরা বুঝে গেছো যে, আমাদের নিজেদের অন্তরেই শান্তি আছে। এমন
নয় যে, কেউ অশান্ত করবে আর আমরাও অশান্ত হয়ে যাব। না। অশান্ত হওয়া - এটাও এক
খারাপ গুণ। খারাপ গুণগুলিকে বের করতে হবে। প্রত্যেকের থেকে ভালো গুণ গ্রহণ করতে হবে।
খারাপ গুণের দিকে দৃষ্টিপাত করবে না। হয়তো কানে আওয়াজ আসতে থাকবে, তথাপি নিজেকে
শান্ত থাকতে হবে। কেননা বাবা আর দাদা দু'জনেই শান্ত থাকেন। কখনো অশান্ত হন না। কখনো
উচ্চবাচ্য উচ্চারণ করেন না। এই ব্রহ্মা বাবাও শিখেছেন, তাই না। যত পরিমাণে শান্ত
থাকবে ততই ভালো। শান্তিতেই স্মরণ করতে পারবে। অশান্ত আত্মারা স্মরণ করতে পারে না।
প্রত্যেকের থেকে ভালো গুণ গ্রহণ করতেই হবে। ঋষি দত্তাত্রেয় প্রমুখের উদাহরণও এই
ক্ষেত্রে দেওয়া যায় । দেবতাদের মতো গুণবান আর কেউ হতে পারে না। একটি বিকারই হলো
মুখ্য। তার ওপর তোমরা বিজয় প্রাপ্ত করছো, করতেও থাকবে। কর্মেন্দ্রিয়ের উপরে বিজয়
পেতে হবে। খারাপ গুণগুলিকে বের করে দিতে হবে। দেখবেও না, বলবেও না, যার মধ্যে ভালো
গুণ আছে, তাদের কাছেই যাবে, থাকতেও হবে খুব মিষ্টি এবং শান্ত হয়ে। অল্প একটু
কথাতেই তোমরা সব কাজ করে ফেলতে পারো। সবার থেকে গুণ গ্রহণ করে গুণবান হতে হবে।
বুঝেছো। সুবুদ্ধি সম্পন্ন এবং প্রজ্ঞ বাচ্চারা খুব শান্ত থাকা পছন্দ করে। কিছু ভক্ত
আত্মা, জ্ঞানী আত্মাদের থেকেও প্রাজ্ঞ, নির্মাণচিত্ত হয়। বাবা তো অনুভাবী, তাইনা !
ইনি যে লৌকিক বাবার সন্তান ছিলেন, তিনি ছিলেন একজন শিক্ষক। খুব নির্মাণচিত্ত এবং
শান্ত থাকতেন। কখনো ক্রোধ করতেন না। যেরকম সাধু আত্মারা হয়। তাই তাঁদের মহিমাও করা
হয়ে থাকে। ভগবানের সাথে মিলিত হওয়ার জন্য পুরুষার্থ করতে থাকে, তাই না। কাশিতে,
হরিদ্বারে গিয়ে থাকে। বাচ্চাদেরকে খুব শান্ত এবং মিষ্টি হয়ে থাকতে হবে। এখানে কেউ
অশান্ত থাকলে, সে শান্তির বাতাবরণ তৈরি করার নিমিত্ত হতে পারে না। অশান্ত আত্মাদের
সঙ্গে কথাও বলা উচিত নয়। তাদের থেকে দূরে থাকতে হবে। পার্থক্য তো আছে, তাই না! তারা
হলো বক আর তোমরা হলে রাজহংস। রাজহংস সারাদিন মোতি ঠোকরায়। উঠতে-বসতে চলতে-ফিরতে এই
জ্ঞানকে স্মরণ করতে থাকো। সারাদিন বুদ্ধিতে এটাই যেন থাকে যে - কাকে কিভাবে বোঝাবো,
বাবার পরিচয় কিভাবে দেবো।
বাবা বোঝাচ্ছেন যে,
যে সমস্ত বাচ্চারা এখানে আসে তাদেরকে ফর্ম ভরতে দাও। সেন্টারে যখন কেউ কোর্স করতে
আসে, তখন তাদেরকে এই ফর্ম দাও। কোর্স করতে না চাইলে ফর্ম ভরানোর দরকার নেই। ফর্ম
এইজন্য ভরানো হয়, যাতে তারা বুঝতে পারে যে, এখানে কী কী আছে ? কী কী বোঝানো হয় ?
কেননা দুনিয়াতে তো এসব কথা কেউ বোঝে না। তাই তারা এই ফর্মের দ্বারা সমস্ত বিষয়টা
অবগত হয়ে যায়। বাবার সঙ্গে কেউ যদি মিলন করতে চায় তবে তাদেরকেও ফর্ম ভরতে হয়।
তাহলে বোঝা যায় যে, তারা কেন মিলন করতে এসেছে? কেউ যদি আসে তবে তাকে তার এই লৌকিক
জগতের এবং অসীম জগতের বাবার পরিচয় দিতে হবে। কেননা তোমাদেরকে এই অসীম জগতের বাবা
এসে নিজের পরিচয় দিয়েছেন। তাই তোমরাও অন্যদেরকে বাবার পরিচয় দিতে থাকো। তাঁর নাম
হলো শিব বাবা। "শিব পরমাত্মায় নমঃ" - বলে তাইনা! তারা তো কৃষ্ণকে - "দেবতায় নমঃ"
বলে। শিবকে বলে - "শিব পরমাত্মায় নমঃ"। বাবা বলেন যে, আমাকে স্মরণ করলে তোমাদের
সমস্ত পাপ কেটে যাবে। মুক্তি-জীবনমুক্তির অবিনাশী উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করার জন্য
পবিত্র আত্মা অবশ্যই হতে হবে। সেটা হলই পবিত্র দুনিয়া, যাকে সতোপ্রধান দুনিয়াও বলা
হয়ে থাকে। সেখানে যেতে হলে, বাবা বলেন যে, "আমাকে স্মরণ করো"। এটা তো খুবই সহজ
বিষয়। যেকোন কাউকে ফর্ম ভরিয়ে তারপর তুমি তাকে কোর্স করাতে পারো। একদিন ভরাও,
তারপর বোঝাও। তারপর আবার ফর্ম ভরাও। তাহলে বুঝতে পারবে যে, আমাকে উনি বুঝিয়েছেন,
তাঁর স্মরণ থাকে কিনা তা বোঝা যাবে। তুমি লক্ষ্য করবে, দুদিনের ফর্মের মধ্যে অনেক
পার্থক্য অবশ্যই থাকবে। তুমি তাড়াতাড়ি বুঝতে পেরে যাবে যে, সে কি বুঝেছে ? আমার
বোঝানোর উপর সে কিছু চিন্তন করেছে কিনা ? এই ফর্ম সকলের কাছে হওয়া চাই। বাবা
মুরলীর মাধ্যমে ডায়রেক্শন দেন। তাই বড় বড় সেন্টার গুলিকে তৎক্ষণাৎ সেই
ডায়রেক্শনকে বাস্তবে রূপদান করতে হবে। ফর্ম রাখতে হবে। নাহলে বোঝা যাবে কি করে? সে
নিজেই অনুভব করবে যে - কাল কি লিখেছিলাম, আজ কি লিখছি। ফর্ম তো খুব জরুরী। আলাদা
আলাদা ছাপাও তাতেও কোনো অসুবিধা নেই। কিংবা একজায়গায় ছাপিয়ে সব সেন্টারে বিলিয়ে
দাও। এটা হলো অপরের কল্যাণ করা।
তোমরা বাচ্চারা এখানে
এসেছো দেবী-দেবতা হওয়ার জন্য। 'দেবতা' এই শব্দটি অত্যন্ত শ্রেষ্ঠ। দৈবীগুণ ধারণ করা
আত্মাকে 'দেবতা' বলা হয়। এখন তোমরা দৈবীগুণ ধারণ করছো, তাই যেখানে প্রদর্শনী বা
মিউজিয়াম হয় সেখানে এই ফর্ম অবশ্যই রাখতে হবে। তাহলে বোঝা যাবে কেমন অবস্থায় আছে।
সেই আত্মাকে বুঝে তারপর তাকে বোঝানো যাবে। বাচ্চাদেরকে তো সর্বদা গুণের কথাই বর্ণন
করতে হবে। খারাপ গুন কখনোই নয়। তোমরা গুণবান হচ্ছো, তাই না। যার মধ্যে অনেক গুণ
থাকবে সে অপরকেও গুন দান করতে পারবে। খারাপ গুণযুক্ত আত্মারা কখনোই গুণদান করতে
পারেনা। বাচ্চারা জেনে গেছে যে, সময় আর বেশি নেই। পুরুষার্থ অনেক করতে হবে। বাবা
বুঝিয়েছেন যে, তোমরা রোজ তীর্থযাত্রা করছো। এই যে গায়ন আছে, অতীন্দ্রিয় সুখ কেমন
হয় তা গোপ গোপীদের জিজ্ঞাসা করো। এটাতো হলো অতীতের কথা। এখন তো নম্বরের ক্রম আছে।
কেউতো অন্তরে অন্তরে খুশির গীত গাইতে থাকে - অহো! পরমপিতা পরমাত্মাকে আমি প্রাপ্ত
করেছি, তার থেকে আমি অবিনাশী উত্তরাধিকার নিচ্ছি। তার কাছে কোনো অভিযোগ থাকতে পারেনা।
কেউ কিছু বললেও সেসব কথায় কর্ণপাত না করে আপন খুশিতে মতে থাকতে থাকে। কোনো
অসুখ-বিসুখ বা দুঃখ ইত্যাদি হলে তখন কেবল স্মরণে থাকো। এই হিসেব-নিকেশ এখনই সমাপ্ত
করতে হবে। তবেই তো তুমি একুশ জন্মের জন্য ফুল হতে পারবে। সেখানে তো দুঃখের কথাই
থাকবে না। বলা হয়ে থাকে, খুশির মতো কোনো পুষ্টিকর আহার নেই। তারপর আলসেমি (সুস্তি)
ইত্যাদি সব সমাপ্ত হয়ে যাবে। এখানে এটাই হলো সত্যিকারের খুশি, আর সেটা হলো মিথ্যা
খুশি। ধন-সম্পদ প্রাপ্ত হলে বা স্বর্ণ প্রভৃতি প্রাপ্ত হলে খুশি হয়। কিন্তু এখানে
হলো অসীম জগতের কথা। তোমাদেরকে তো অসীম খুশিতে থাকতে হবে। তোমরা তো জেনে গেছো যে,
আমরা ২১ জন্মের জন্য সর্বদা সুখে থাকবো। এই স্মরণে থাকো - আমি কি হতে চলেছি। মুখ
থেকে বাবা বললেই দুঃখ দূর হয়ে যাওয়া চাই। এটা তো হল ২১ জন্মের খুশি। আর বাকি অল্প
দিন-ই অবশিষ্ট আছে। আমরা যাচ্ছি আমাদের সুখধামে। তারপর তো আর কিছুই স্মরণে থাকবে
না। এই বাবাও নিজের অনুভবের কথা শোনাচ্ছেন। কত সমাচার আসতে থাকে। নানা প্রকারের
মতান্তর বা বিবাদ চলতে থাকে। বাবার কোনো কথায় দুঃখ হয় কি? শোনেন, আচ্ছা এটাই
ভবিতব্য, এটা তো কিছুই নয়। আমরা তো এই জগতের মালিক হতে চলেছি, নিজের সঙ্গে কথা
বললেই খুশি আসে। বেশ শান্ত চিত্তেই থাকে। তার চেহারা হাসিখুশী দেখাবে। স্কলারশিপ
পেলে চেহারার মধ্যে কত উৎফুল্লতা থাকে, তাই না। তোমরা পুরুষার্থ করছো এই
লক্ষ্মী-নারায়ণের মতো প্রফুল্ল থাকার জন্য। এনাদের মধ্যে জ্ঞান তো নেই। তোমাদের
মধ্যে জ্ঞান আছে। তাই তোমাদেরকে খুশিতে থাকতে হবে। প্রফুল্ল চিত্ত থাকতে হবে। এই
দেবতাদের থেকেও তোমরা অনেক শ্রেষ্ঠ। জ্ঞানের সাগর বাবা আমাদেরকে কত শ্রেষ্ঠ জ্ঞান
দিচ্ছেন। অবিনাশী জ্ঞান রত্নের লটারী পেয়ে গেছো, তাহলে কত খুশিতে থাকতে হবে।
তোমাদের এই জন্ম হীরের সমান বলা হয়ে থাকে। জ্ঞানের সাগর, এক বাবাকেই বলা হয়। এই
দেবতাদেরকেও বলা হয় না। তোমরা ব্রাহ্মণরাই জ্ঞানবান হচ্ছ্য। তোমাদের মধ্যে এই
জ্ঞানের খুশি থাকা চাই। এক তো হল বাবাকে প্রাপ্ত করার খুশি। তোমাদের ছাড়া আর কেউ
এই খুশিতে থাকতে পারে না। ভক্তি মার্গে চিরস্থায়ী (হাড্ডি) সুখ থাকে না। ভক্তি
মার্গে হলো আর্টিফি অল্পকালের সুখ। আর তার নামই তো হলো স্বর্গ, সুখধাম, হেভেন।
সেখানে হলো অপার সুখ। আর এখানে হলো অপার দুঃখ। এখন বাচ্চারা বুঝতে পেরেছে যে রাবন
রাজ্যে আমরা কতটাই ছিঃ ছিঃ হয়ে গিয়েছিলাম। আস্তে আস্তে অধঃপতনে গমন করছিলাম। এসব
তো হলোই বিষয় বিষের সাগর। এখন বাবা এই বিষের সাগর থেকে বের করে তোমাদেরকে ক্ষীরের
সাগরে নিয়ে যাচ্ছেন। বাচ্চাদের এখানকার সবকিছুই খুব মিষ্টি লাগে। কিন্তু পুনরায়
ভুলে যাওয়ার ফলে কিরকম অবস্থা হয়ে যায়। বাবা কিভাবে খুশির পারদ চড়িয়ে দেন। এই
জ্ঞান অমৃতেরই গায়ন আছে। জ্ঞান অমৃতের গ্লাস পান করতে হবে। এখানে তোমাদের খুব
ভালোভাবে নেশা চড়ে যায় কিন্তু বাহিরে গিয়ে সমস্ত নেশা কম হয়ে যায়। বাবা নিজেই
অনুভব করেন যে, এখানে বাচ্চাদের খুব ভালো ফিলিং আসে। আমরা নিজেদের ঘরে ফিরে যাচ্ছি।
আমরা বাবার শ্রীমতে রাজধানী স্থাপন করছি। আমরাই হলাম সবথেকে বড় উত্তরাধিকারী। এইসব
বুদ্ধির মধ্যে জ্ঞান আছে। যার জন্য তোমরা এত বড় পদ প্রাপ্ত করছো। কে পড়াচ্ছেন দেখো!
অসীম জগতের বাবা, একদম পরিবর্তন করে দেন। তাহলে বাচ্চাদের হৃদয়ে কতইনা খুশি থাকা
উচিত। এসব কিছু হৃদয়ে থাকতে হবে, অন্যদেরকেও খুশি প্রদান করতে হবে। রাবণের হল
অভিশাপ আর বাবার হল আশীর্বাদ। রাবণের অভিশাপে তোমরা কতই না দুঃখী অশান্ত হয়ে গেছো।
অনেক গোপও আছে যাদের হৃদয়ে সেবা করার ইচ্ছা থাকে, কিন্তু জ্ঞানের কলস মাতাদেরকে
দেওয়া হয়েছে। শক্তি দল, তাইনা। বন্দেমাতরম্ - গাওয়া হয়। সাথে বন্দেপিতরম্ তো
আছেই। কিন্তু নাম মাতাদের আছে। প্রথমে লক্ষ্মী তারপর নারায়ণ, প্রথমে সীতা পরে রাম।
এখানে প্রথমে পুরুষের নাম পরে স্ত্রীর নাম লেখে। এও এক খেলা, তাই না ! বাবা তো
সবকিছুই বুঝিয়ে বলেন। ভক্তি মার্গের রহস্য বলে দেন। ভক্তিতে কি কি হয়। যতক্ষণ
জ্ঞান নেই ততক্ষণ তো এসব কিছুই জানা যেতো না। এখন তোমাদের সকলের ক্যারেক্টার্স
সংশোধিত হয় । তোমাদের দৈবী ক্যারেক্টার তৈরি হচ্ছে। ৫ বিকার থেকে তোমাদের আসুরি
ক্যারেক্টার তৈরি হয়। কতখানি পরিবর্তন হচ্ছে। তাই পরিবর্তনে আসতে হবে, তাই না।
শরীর ছেড়ে দিলে তারপর কি আর থোড়াই চেঞ্জ হতে পারবে। বাবার মধ্যে শক্তি আছে। কতো
কতো জনের চেঞ্জ আনেন। কোনো কোনো বাচ্চা নিজের অনুভবের কথা শোনায় - আমি অনেক কামি,
মদাসক্ত ছিলাম, আমার মধ্যে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। এখন আমি অনেক প্রেমপূর্ণভাবে থাকি।
প্রেমের অশ্রু ঝরতে থাকে। বাবা তো অনেককিছু বোঝান কিন্তু এই সমস্ত কথা সবাই ভুলে
যায়। না হলে তো খুশির পারদ সর্বদাই ঊর্ধ্বে থাকবে। আমরা অনেক জনকে কল্যাণ করে থাকি।
মানুষ অনেক দুঃখী হয়ে গেছে। তাদেরকে সঠিক রাস্তা বলে দিই। বোঝানোর জন্য অনেক
পরিশ্রম করতে হয়। গালিগালাজও খেতে হয়। প্রথম থেকেই এই শব্দ শোনা যায় যে, এখানে
তো সবাইকে ভাই-বোন বানিয়ে দেয়। আরে ভাই-বোনের সম্বন্ধ তো খুব ভালো, তাই না! তোমরা
আত্মারা তো হলে ভাই-ভাই । কিন্তু জন্ম-জন্মান্তরের কুদৃষ্টি যেটা পাকাপোক্ত হয়ে
গেছে, সেটা ছাড়তে চায় না। বাবার কাছে তো অনেক সমাচার আসতে থাকে। বাবা বোঝান যে,
এই ছিঃ ছিঃ দুনিয়া থেকে তোমাদের বাচ্চাদের মন সরিয়ে নিতে হবে। খুব সুন্দর ফুল হতে
হবে। কত জ্ঞান শুনেও ভুলে যাও। সমস্ত জ্ঞান উড়ে যায়। কাম মহাশত্রু, তাই না। বাবা
তো অনেক অনুভাবী আছেন। এই বিকারের পিছনে অনেক রাজারাও তাদের রাজত্ব হারিয়েছেন। কাম
খুব খারাপ। সবাই বলতে থাকে যে বাবা এটা খুব ক্ষতিকারক শত্রু। বাবা বলেন যে কামকে
জিতলেই তোমরা বিশ্বের মালিক হতে পারবে। কিন্তু কাম বিকার এতটাই তীব্র প্রকৃতির হয়
যে, প্রতিজ্ঞা করেও পরাজিত হয়ে যায়। খুব কম সংখ্যকই এতে পাস হতে পারে। এই সময়
সমস্ত দুনিয়ার ক্যারেক্টার খারাপ হয়ে গেছে। পবিত্র দুনিয়া কবে ছিল? কিভাবে
হয়েছিল? এঁনারা রাজ্য ভাগ্য কিভাবে পেয়েছিলেন? কেউ কিছু বলতে পারেনা। ভবিষ্যতে
এমন সময়ও আসবে, তোমরা বিদেশে যাবে। তারাও সব শুনবে। প্যারাডাইস (স্বর্গোদ্যান)
কিভাবে স্থাপন হয়েছিল। তোমাদের বুদ্ধিতে এসমস্ত কথা খুব ভালো ভাবে আছে। এখন
তোমাদের বুদ্ধিতে এটার বিষয়েই যত রকমের সম্ভব উদ্যম থাকতে হবে, অন্য সমস্ত কথা ভুলে
যেতে হবে। আচ্ছা !
মিষ্টি-মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
উঠতে - বসতে, চলতে - ফিরতে জ্ঞানের স্মরণ করে মুক্তো আহরণকারী রাজহংস হতে হবে। সবার
থেকে গুণ গ্রহণ করতে হবে। পরস্পরের মধ্যে গুণের আদান প্রদান করতে হবে।
২ ) নিজের চেহারা
সর্বদা হাসিখুশী রাখার জন্য নিজের সাথেই নিজেকে কথা বলতে হবে - অহো! আমি তো অবিনাশী
সম্পদের মালিক হতে চলেছি। জ্ঞানের সাগর বাবার দ্বারা আমরা জ্ঞান রত্নের লটারি
প্রাপ্ত করেছি।
বরদান:-
নিজের
টাইটেলের স্মৃতির সাথে সমর্থ স্থিতি বানিয়ে স্বমানধারী ভব
সঙ্গম যুগে বাবা স্বয়ং
তাঁর বাচ্চাদেরকে শ্রেষ্ঠ টাইটেল দেন, তো সেই আত্মিক নেশায় থাকো। যেরকম টাইটেল
স্মরণে আসবে, সেইরকম সমর্থ স্থিতি বানাতে থাকবে। যেরকম তোমাদের টাইটেল হল স্বদর্শন
চক্রধারী, তো এই স্মৃতি আসতেই পরদর্শন সমাপ্ত হয়ে যাবে, স্বদর্শনের সামনে মায়ার গলা
কেটে যাবে। আমি হলাম মহাবীর, এই টাইটেল স্মরণে এলে স্থিতি অবিচল-অনড় হয়ে যাবে। তো
টাইটেলের স্মৃতির সাথে সমর্থ স্থিতি বানাও তাহলে বলা হবে শ্রেষ্ঠ স্বমানধারী।
স্লোগান:-
উদ্ভ্রান্ত হওয়া আত্মাদের চাহিদা পূরণ করার জন্য যাচাই করার শক্তি বৃদ্ধি করো।