26.07.2024
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
এই অনাদি ড্রামা ক্রমাগত আবর্তিত হয়, টিক-টিক করে চলতেই থাকে, এই ড্রামাতে একজনের
পার্ট অন্যজনের সাথে মিলবে না, একে যথার্থ ভাবে বুঝে সর্বদা হাসিখুশি থাকতে হবে"
প্রশ্নঃ -
কোন্ যুক্তির
দ্বারা তোমরা প্রমাণ করে বলতে পারবে যে ভগবান এসে গেছেন?
উত্তরঃ
কাউকে সরাসরি
বলবে না যে ভগবান এসে গেছেন। এইভাবে বললে লোকে হেসে উড়িয়ে দেবে, ঠাট্টা করবে। কারণ
আজকাল তো অনেকেই নিজেকে ভগবান বলে থাকে। তাই তোমরা যুক্তি সহকারে আগে দুই পিতার
পরিচয় দাও। একজন শারীরিক পিতা এবং অন্যজন অসীম জগতের পিতা। শারীরিক পিতার কাছ থেকে
সীমিত উত্তরাধিকার পাওয়া যায়। এখন অসীম জগতের পিতা এসেছেন অসীমিত উত্তরাধিকার দিতে।
এইভাবে বললে বুঝতে পারবে।
ওম্ শান্তি ।
আত্মাদের পিতা
বসে থেকে আত্মা রূপী সন্তানদের বোঝাচ্ছেন যে সৃষ্টি তো এখানেই। বোঝানোর জন্য
বাবাকেও এখানেই আসতে হয়। মূলবতনে তো বোঝানো যাবে না। বাবা জানেন যে বাচ্চারা পতিত
হয়ে গেছে। এখন ওরা কোনো কর্মের নয়। এই দুনিয়ায় তো কেবল দুঃখ আর দুঃখ। বাবা
বুঝিয়েছেন যে এখন তোমরা বিষয় (বিষ) সাগরে ডুবে আছ। আসলে তোমরা ক্ষীর-সাগরে (সুখের)
ছিলে। বিষ্ণুপুরীকে ক্ষীর-সাগর বলা হয়। এখানে তো ক্ষীর-সাগর পাওয়া যাবে না। তাই
বিভিন্ন জলাশয় তৈরি করেছে। বলা হয় ওখানে দুধের নদী বইত, ওখানকার গরুগুলোও
ফার্স্টক্লাস ছিল। এখানে তো মানুষরাই রোগগ্রস্ত। কিন্তু ওখানে গরুদেরও কোনো রোগ হয়
না। একদম ফার্স্টক্লাস হয়। কোনো জানোয়ারের কখনো রোগ হবে না। এই দুনিয়ার সাথে ওই
দুনিয়ার অনেক পার্থক্য। বাবা এসেই এইসব কথা বলছেন। দুনিয়ায় আর কেউ এইসব জানে না।
তোমরা জানো যে এটা হল পুরুষোত্তম সঙ্গমযুগ। এই যুগেই বাবা এসে সবাইকে ফেরৎ নিয়ে যান।
বাবা বলছেন - আমার যত সন্তান রয়েছে, তাদের মধ্যে কেউ আল্লাহ, কেউ গড, কেউ ভগবানকে
স্মরণ করে। আমার অনেক নাম রেখে দিয়েছে। ভালো-খারাপ যা ইচ্ছে হয়েছে, তাই রেখে দিয়েছে।
তোমরা বাচ্চারা জানো যে বাবা এসেছেন। দুনিয়ার মানুষ তো এইসব বুঝবে না। সে-ই বুঝবে,
যে ৫ হাজার বছর আগে বুঝেছিল। সেইজন্যেই বলা হয় কোটির মধ্যে কেউ, তার মধ্যে কেউ। আমি
কে, আমি কেমন, আমি বাচ্চাদেরকে কি শিক্ষা দিই - এইসব কেবল তোমরা বাচ্চারাই জানো।
অন্য কেউ বুঝতে পারবে না। এটাও তোমরা জানো যে আমাদেরকে কোনো সাকার শরীরধারী
পড়াচ্ছেন না। যিনি পড়াচ্ছেন তিনি নিরাকার। মানুষের সংশয় তো হবেই। নিরাকার তো ওপরে
থাকেন, তিনি কিভাবে পড়াবেন ! তোমরা নিরাকার আত্মারাও ওপরেই থাকো। তারপর এই আসনে এসে
বসো। এই আসনটি বিনাশী, কিন্তু আত্মা অকাল (অবিনাশী)। আত্মার কখনো মৃত্যু হয় না।
কেবল শরীরের মৃত্যু হয়। এটা হল চৈতন্য আসন। অমৃতসরে অকাল-তখ্ত রয়েছে। ওটা তো কাঠের
তৈরি আসন। ওরা তো বেচারা জানেই না যে আসলে আত্মা-ই হলো অকাল, যাকে কখনো কাল গ্রাস
করে না। অকাল-মূর্তি আত্মা একটা শরীর ত্যাগ করে অন্য শরীর ধারণ করে। তার তো একটা রথ
প্রয়োজন। সেইরকম যিনি নিরাকার পিতা, তাঁরও একটা মানব-রথের প্রয়োজন। কারণ বাবা হলেন
জ্ঞানের সাগর, জ্ঞানেশ্বর। এখন তো অনেকেই জ্ঞানেশ্বর নাম রেখে দেয়। নিজেকেই ঈশ্বর
মনে করে। ভক্তি-শাস্ত্রের বিভিন্ন কথা শোনায়। নাম রাখে জ্ঞানেশ্বর অর্থাৎ জ্ঞান দাতা
ঈশ্বর। কিন্তু জ্ঞান দেওয়ার জন্য জ্ঞানের সাগরের প্রয়োজন। তাঁকেই গড ফাদার বলা হয়।
এখানে তো অনেকেই ভগবান নামে পরিচিত। যখন অনেক ধর্ম-গ্লানি হয়, মানুষ খুব গরিব আর
দুঃখী হয়ে যায়, তখনই বাবা আসেন। বাবাকে দীনবন্ধু বলা হয়। অবশেষে সেই দিন এসেছে।
দীনবন্ধু বাবার আগমন হয়েছে। বাচ্চারাও জেনেছে যে বাবা এসে স্বর্গ স্থাপন করেন। ওখানে
অগাধ ধন-সম্পত্তি থাকবে, টাকা-পয়সা কখনো গোনা হবে না। এখানে তো হিসাব করে যে এত কোটি
টাকা খরচ হয়েছে। ওখানে এইরকম নামগুলোই থাকবে না। অগাধ ধন-সম্পত্তি থাকবে। তোমরা
বাচ্চারা এখন জেনেছ যে বাবা আমাদেরকে তাঁর ঘরে নিয়ে যাওয়ার জন্য এসেছেন। বাচ্চারা
তো নিজের ঘরকেই ভুলে গেছে। ভক্তিমার্গে ধাক্কা খাচ্ছে। এটাকেই রাত্রি বলা হয়। কেবল
ভগবানকে খুঁজতে থাকে। কেউই ভগবানকে পায় না। তোমরা বাচ্চারা নিশ্চিত যে এখন ভগবান
এসেছেন। তবে এমন নয় যে সবাই পুরোপুরি নিশ্চিত। কোনো না কোনো সময়ে মায়া ভুলিয়ে দেয়।
সেইজন্যেই বাবা বলেন - আশ্চর্য হয়ে আমাকে দেখল, আমার সন্তান হল, অন্যকেও শোনালো,
কিন্তু হে মায়া, তুমি কতই না শক্তিশালী যে এরপরেও তাদেরকে ভাগিয়ে নিয়ে যাও। অনেকেই
বাবাকে ত্যাগ দিয়ে চলে যায়। এরপর সে কোথায় গিয়ে জন্ম নেবে ? একেবারে সাধারণ জন্ম
পাবে। পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ হয়ে যায়। এটা হল মানুষ থেকে দেবতা হওয়ার পরীক্ষা। বাবা
তো এইরকম বলবেন না যে সকলেই নারায়ণ হয়ে যাবে। না, যে ভালো পুরুষার্থ করবে, সে-ই ভালো
পদ পাবে। বাবা বুঝতে পারেন যে কোন্ কোন্ বাচ্চা ভালো পুরুষার্থী যারা অন্যদেরকেও
বাবার পরিচয় দেয় এবং মানুষ থেকে দেবতা বানানোর পুরুষার্থ করায়। আজকাল বিরোধিতা করার
জন্য অনেক মানুষ নিজেকেই ভগবান বলে দেয়। তোমাদেরকে ওরা অবলা মনে করে। ওদেরকে কিভাবে
বোঝাবে যে ভগবানের আগমন হয়েছে। যদি সরাসরি বলে দাও তাহলে কেউই মানবে না। তাই
বোঝানোর জন্য যুক্তি প্রয়োজন। কখনো কাউকে এইভাবে সরাসরি বলা উচিত নয় যে, ভগবান এসে
গেছেন। ওদেরকে বোঝাতে হবে - আপনার দুইজন পিতা রয়েছেন। একজন হলেন পারলৌকিক বা অসীম
জগতের পিতা এবং অন্যজন হলেন লৌকিক বা শারীরিক পিতা। খুব ভালো ভাবে পরিচয় দিতে হবে
যাতে যে-কেউ বুঝতে পারে যে, এরা তো ঠিক কথাই বলছে। অসীম জগতের পিতার কাছ থেকে কিভাবে
উত্তরাধিকার পাওয়া যাবে সেটা কেউই জানে না। বাবার কাছ থেকেই উত্তরাধিকার পাওয়া যায়।
কেউ কখনো এইরকম বলবে না যে প্রত্যেক মানুষের দুইজন পিতা আছেন। তোমরা এটা যুক্তি
সহকারে বলছ। লৌকিক বা শারীরিক পিতার কাছ থেকে সীমিত উত্তরাধিকার পাওয়া যায়। অপরদিকে
পারলৌকিক বা অসীম জগতের পিতার কাছ থেকে অসীম অর্থাৎ নুতন দুনিয়ার উত্তরাধিকার পাওয়া
যায়। নুতন দুনিয়া হল স্বর্গ। সেই উত্তরাধিকার তো বাবা এসে দেবেন। ঐ পিতা হলেন নুতন
সৃষ্টির রচয়িতা। কিন্তু তোমরা যদি কেবল এটাই বলো যে 'ভগবান এসে গেছেন', তাহলে ওরা
কখনোই মানবে না, উল্টে টিকা টিপ্পনি করবে। শুনবেই না। সত্যযুগে তো কাউকে বোঝাতে হবে
না। যখন বাবা এসে শিক্ষা দেন, তখনই বোঝাতে হয়। সুখের সময়ে কেউ স্মরণ করে না, দুঃখের
সময়ে সকলেই স্মরণ করে। ওই পারলৌকিক পিতাকেই দুঃখ হরণকারী এবং সুখ প্রদানকারী বলা হয়।
দুঃখ থেকে মুক্ত করে গাইড রূপে সবাইকে নিজ ঘরে অর্থাৎ সুইট হোমে ফেরৎ নিয়ে যান। ওই
ঘরকে সুইট সাইলেন্স হোম বলা হয়। কেউই জানে না যে ওখানে আমরা কিভাবে যেতে পারি।
রচয়িতাকে এবং রচনার আদি-মধ্য-অন্তকেও জানে না। তোমরা জানো যে বাবা আমাদেরকে
নির্বাণধামে নিয়ে যাওয়ার জন্য এসেছেন। সকল আত্মাকেই নিয়ে যাবেন। একজনকেও ছাড়বেন না।
ওটা হল আত্মাদের নিবাসস্থান, এটা হল শারীরিক বাসস্থান। সুতরাং আগে বাবার পরিচয় দিতে
হবে। তিনি হলেন নিরাকার পিতা, ওঁনাকে পরমপিতাও বলা হয়। পরমপিতা শব্দটা একেবারে
যথার্থ এবং খুবই মিষ্টি একটা শব্দ। কেবল ভগবান কিংবা ঈশ্বর বললে উত্তরাধিকারের
সুগন্ধ পাওয়া যায় না। তোমরা পরমপিতাকে স্মরণ করো বলে উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করো।
বাচ্চাদেরকে এটাও বোঝানো হয়েছে যে সত্যযুগ হল সুখধাম। স্বর্গকে শান্তিধাম বলা যাবে
না। যেখানে আত্মারা থাকে, সেটাই হল শান্তিধাম। এটা ভালোভাবে বুঝে নাও।
বাবা বলছেন - বাচ্চারা, এইসব বেদ-শাস্ত্র ইত্যাদি পাঠ করে তোমাদের কিছুই প্রাপ্তি
হয় না। শাস্ত্র তো ভগবানকে পাওয়ার জন্যই পাঠ করা হয়। কিন্তু ভগবান বলছেন - শাস্ত্র
পাঠের দ্বারা কেউ আমাকে পায় না। এই পতিত দুনিয়াকে পবিত্র করার জন্যই আমাকে স্মরণ করা
হয়। এই কথাটা কেউই বোঝে না। কারন সকলের বুদ্ধি এখন পাথর হয়ে গেছে। স্কুলে বাচ্চারা
পড়াশোনা না করলে বলা হয় যে তোমার বুদ্ধি পাথর হয়ে গেছে। সত্যযুগে কখনো এইরকম বলা হবে
না। পরমপিতা অর্থাৎ যিনি অসীম জগতের পিতা, তিনিই বুদ্ধিকে পরশসম বানিয়ে দেন। এখন
তোমরা বাবার সাথে রয়েছ। তাই তোমাদের বুদ্ধি এখন পরশসম। এরপর সত্যযুগে এক জন্ম পরেও
সামান্যতম পরিবর্তন অবশ্যই হবে। এইভাবে ১২৫০ বছর পরে ২ কলা কমে যায়। ১২৫০ বছরের
প্রতি সেকেন্ডেই একটু একটু করে কলা কমতে থাকে। এখন তোমাদের জীবন একেবারে পারফেক্ট
হওয়া উচিত। কারণ তোমরা এখন বাবার মতোই জ্ঞানের সাগর, সুখ-শান্তির সাগর হয়েছ। সকল
উত্তরাধিকার তোমরাই প্রাপ্ত করো। বাবা তো উত্তরাধিকার দেওয়ার জন্যই আসেন। প্রথমে
তোমরা শান্তিধামে যাও, তারপর সুখধামে যাও। শান্তিধামে তো কেবল শান্তি আর শান্তি।
এরপর যখন সুখধামে যাও, তখন ওখানেও বিন্দুমাত্র অশান্তি থাকবে না। এরপর আবার অধঃপতন
শুরু হয়। প্রত্যেক মিনিটে তোমরা একটু একটু করে নীচে নামো। নুতন দুনিয়া ধীরে ধীরে
পুরাতন হতে থাকে। সেইজন্যেই বাবা বলেছিলেন হিসাব করে দেখো যে ৫ হাজার বছরে কত মাস,
কত ঘন্টা হয়। তখন মানুষ আশ্চর্য হয়ে যাবে। এই হিসাবটা তো বলে দেওয়া হয়েছে। একেবারে
অ্যাকুরেট হিসাব লিখতে হবে। এক্ষেত্রে কখনোই সামান্যতম কম-বেশিও হয় না। প্রতি মিনিটে
টিক টিক করে এগিয়ে যায়। গোটা রিলটাই রিপিট হয়। একদিকে আবর্তিত হতে থাকে, অন্যদিকে
রোল হতে থাকে। সেটাই আবার রিপিট হবে। এই বিশাল রোল খুবই ওয়ান্ডারফুল। এটা পরিমাপ করা
সম্ভব নয়। টিক টিক করে গোটা দুনিয়ার নাটক চলছে। এক সেকেন্ডের সাথে অন্য সেকেন্ডের
কোনো মিল নেই। এইভাবে সৃষ্টিচক্র ক্রমাগত আবর্তিত হচ্ছে। ওইগুলো ছোট-খাটো নাটক, আর
এটা হলো অসীম জগতের নাটক। আগে তোমরা জানতে না যে এটা একটা অবিনাশী নাটক যেটা পূর্ব
নির্ধারিত ভাবে পুনরায় নির্মিত হচ্ছে। যেটা হওয়ার ছিল সেটাই হচ্ছে। কিছুই নুতন নয়।
আগে অনেকবার এই নাটকের প্রত্যেকটা সেকেন্ড এইভাবেই রিপিট হয়েছে। এইসব কথা অন্য কেউ
বোঝাতে পারবে না। আগে তো বাবার পরিচয় দিতে হবে। অসীম জগতের পিতা অসীম উত্তরাধিকার
দেন। তাঁর কেবল একটাই নাম - শিব। বাবা বলছেন - যখন অতি ধর্মগ্লানি হয়, সেই সময়েই আমি
আসি। এই সময়টাকেই ঘোর কলি বলা হয়। এখানে প্রচুর দুঃখ। কেউ কেউ বলে, এই ঘোর কলিযুগে
কিভাবে পবিত্র থাকা সম্ভব! কিন্তু ওরা তো জানেই না যে পবিত্র কে বানায় ? বাবা এসেই
সঙ্গমযুগে পবিত্র দুনিয়া স্থাপন করেন। ওখানে স্ত্রী-পুরুষ উভয়েই পবিত্র থাকে। এখানে
দুজনেই অপবিত্র হয়ে গেছে। এই দুনিয়াটাই অপবিত্র দুনিয়া। ওটা হল পবিত্র দুনিয়া -
স্বর্গ বা হেভেন। এটা হল পতিত দুনিয়া - নরক বা হেল। তোমরা বাচ্চারা পুরুষার্থের
ক্রম অনুসারে এইসব বুঝতে পেরেছ। কাউকে বোঝানোর জন্য একটু পরিশ্রম করতে হয়। গরিবরা
ঝট করে বুঝে যাবে। দিনে দিনে বৃদ্ধি হচ্ছে। এরপর তো অনেক বড় বাড়ি বানাতে হবে। অনেক
বাচ্চারা এখানে আসবে। কারণ বাবা তো কোথাও যাবেন না। আগে কেউ না বললেও বাবা নিজে
থেকেই চলে যেতেন। এখন বাচ্চারা এখানে আসবে। ঠান্ডার মধ্যেও আসতে হয়। তাই প্রোগ্রাম
বানাতে হবে। এক-একটা গ্রুপকে আলাদা আলাদা সময়ে আসতে বললে আর ভিড় হবে না। সকলে একসাথে
একই সময়ে আসতে পারবে না। বাচ্চাদের সংখ্যাও তো বৃদ্ধি হচ্ছে। এখানে বাচ্চারা ছোট
ছোট বাড়ি বানাচ্ছে। ওখানে তো অনেক মহল পাওয়া যাবে। তোমরা বাচ্চারা জানো যে টাকা-পয়সা
সব মাটিতে মিশে যাবে। অনেকেই গর্ত খুঁড়ে তার মধ্যে ধন-সম্পত্তি রেখে দেয়। এরপর হয়তো
সেটা চোর নিয়ে যায় অথবা মাটির নিচেই থেকে যায়, যেটা পরে কখনো চাষ-বাস করার সময়ে
বেরিয়ে আসে। এখন বিনাশের সময়ে সেইসব চাপা পড়ে যাবে। এরপর ওখানে সবকিছু নুতন পাওয়া
যাবে। এমন অনেক রাজ প্রাসাদ রয়েছে যেখানে অনেক কিছু মাটি চাপা দেওয়া আছে। অনেক সময়
বড় বড় হীরেও বেরিয়ে আসে। তখন হাজার-লক্ষ টাকা আয় হয়ে যায়। তবে এমন নয় যে স্বর্গে
তোমরা এইরকম মাটি খুঁড়ে হীরে-মানিক বের করবে। না, ওখানে তো সবকিছুর খনি একেবারে
নতুন এবং ভরপুর হয়ে যাবে। এখানকার অনুর্বর জমিতে আর কোনো শক্তি নেই। যে বীজ বপন করা
হয়, তার মধ্যেও কোনো শক্তি নেই। যত রকমের আবর্জনা এবং অশুদ্ধ জিনিস সব মাটিতে ফেলে
দেয়। ওখানে তো অশুদ্ধ জিনিসের নামটাই থাকবে না। সবকিছুই নুতন। কন্যাদের স্বর্গের
সাক্ষাৎকার হয়। ওখানকার সৌন্দর্য একেবারে ন্যাচারাল। তোমরা বাচ্চারা এখন সেই
দুনিয়ায় যাওয়ার জন্য পুরুষার্থ করছ । আচ্ছা !
মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর
সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) এই
সময়েই বাবার সমান সম্পূর্ণ পারফেক্ট হয়ে সম্পূর্ণ উত্তরাধিকার নিতে হবে। বাবার সকল
শিক্ষাকে নিজের মধ্যে ধারণ করে ওঁনার মতো জ্ঞানের সাগর, সুখ-শান্তির সাগর হতে হবে।
২ ) বুদ্ধিকে পারস (পরস
পাথরের মতো) বানানোর জন্য পড়াশোনার প্রতি সম্পূর্ণ মনোযোগ দিতে হবে। নিশ্চয়বুদ্ধি
হয়ে মানুষ থেকে দেবতা হওয়ার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।
বরদান:-
নিশ্চিত বিজয়ের নেশায় থেকে বাবার পদমগুণ সহায়তা প্রাপ্তকারী মায়াজীত ভব
বাবার পদমগুণ সহায়তার
পাত্র বাচ্চারা মায়ার আক্রমণকে চ্যালেঞ্জ করে যে মায়ার কাজ হলো আসা আর আমাদের কাজ
হলো মায়ার উপরে বিজয় প্রাপ্ত করা। তারা মায়ার ব্যাঘ্র রূপকে পিঁপড়ে মনে করে, কেননা
জানে যে এই মায়ার রাজ্য এখন সমাপ্ত হবে, আমরা অনেক বারের বিজয়ী আত্মা, আমাদের বিজয়
হান্ড্রেট পার্সেন্ট নিশ্চিত। এই নিশ্চিত এর নেশা বাবার পদমগুণ সহায়তার অধিকার
প্রাপ্ত করায়। এই নেশার দ্বারা সহজেই মায়াজীত হয়ে যাবে।
স্লোগান:-
সংকল্প
শক্তিকে জমা করে স্ব প্রতি এবং বিশ্বের প্রতি এর প্রয়োগ করো।