26.10.2024
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
সর্বশক্তিমান বাবা এসেছেন তোমাদের শক্তি প্রদান করতে, তাঁকে যত স্মরণ করবে, ততই
শক্তি মিলতে থাকবে"
প্রশ্নঃ -
বাচ্চারা, এই
ড্রামাতে সবথেকে ভালো পার্ট তোমাদের - তা কিভাবে?
উত্তরঃ
বাচ্চারা,
তোমরাই এই অসীম জগতের বাবার হও । ভগবান টিচার হয়ে তোমাদের পড়ান, তাহলে তোমরা তো
ভাগ্যশালী হলে, তাই না । বিশ্বের মালিক তোমাদের অতিথি হয়ে এসেছেন, তিনি তোমাদের
সহযোগিতায় এই বিশ্বের কল্যাণ করেন । বাচ্চারা, তোমরা তাঁকে ডেকেছো আর বাবাও এসেছেন,
এ হলো দুই হাতের তালি । এখন বাবার কাছ থেকে বাচ্চারা, তোমরা সম্পূর্ণ বিশ্বে রাজত্ব
করার শক্তি প্রাপ্ত করো ।
ওম্ শান্তি ।
মিষ্টি -
মিষ্টি আত্মা রূপী বাচ্চারা আত্মাদের পিতার সামনে বসে আছে । তারা শিক্ষকের সামনে বসে
আছে, আর তারা এও জানে যে, এই বাবা গুরু রূপে এসেছেন বাচ্চাদের নিয়ে যাওয়ার জন্য ।
বাবাও বলেন - হে আত্মা রূপী বাচ্চারা, আমি এসেছি তোমাদের এখান থেকে নিয়ে যাওয়ার
জন্য । এই দুনিয়া পুরানো হয়ে গেছে আর তোমরা এও জানো যে, এই দুনিয়া হলো ছিঃ ছিঃ ।
বাচ্চারা, তোমরাও ছিঃ ছিঃ হয়ে গেছো । তোমরা নিজেরাই নিজেদের বলো, পতিত - পাবন বাবা,
তুমি এসে আমাদের মতো পতিতদের দুঃখধাম থেকে শান্তিধামে নিয়ে যাও । এখন তোমরা যখন
এখানে বসে আছো, তখন তোমাদের এই কথা মনে আসা চাই । বাবাও বলেন, আমি তোমাদের ডাকে,
তোমাদের আমন্ত্রণে এখানে এসেছি । বাবা স্মরণ করিয়ে দেন, বরাবর তোমরাই তো ডাকতে, এসো
। এখন তোমাদের সেই স্মৃতি জাগ্রত হয়েছে যে, আমরাই ডেকেছি । ড্রামা অনুসারে বাবা এখন
এসেছেন, পূর্ব কল্পের উদাহরণ স্বরূপ । ওরা তো প্ল্যান বানায় । এও শিববাবার প্ল্যান
। এই সময় সকলেরই তো নিজের - নিজের প্ল্যান আছে, তাই না । পাঁচ বছরের প্ল্যান বানায়,
তাতে এই - এই করবে, দেখো, কথা কিভাবে মিলে যায় । আগে এই প্ল্যান ইত্যাদি বানাতো
না, এখন প্ল্যান বানাতে থাকে । বাচ্চারা তোমরা জানো, আমাদের বাবার প্ল্যান হলো এই ।
ড্রামার নিয়ম অনুসারে পাঁচ হাজার বছর পূর্বে আমি এই প্ল্যান বানিয়েছিলাম । তোমরা
মিষ্টি - মিষ্টি বাচ্চারা, যারা এখানে খুব দুঃখী হয়ে গেছো, বেশ্যালয়ে পড়ে আছো, আমি
এখন এসেছি তোমাদের শিবালয়ে নিয়ে যেতে । ওই শান্তিধাম হলো নিরাকারী শিবালয় আর সুখধাম
হলো সাকারী শিবালয় । বাচ্চারা, এই সময় বাবা তোমাদের রিফ্রেশ করছেন । তোমরা তো
বাবার সম্মুখে বসে আছো, তাই না । বুদ্ধিতে তো এই নিশ্চয়তা এসেছে যে, বাবা এসেছেন ।
'বাবা' শব্দটি খুব মিষ্টি । তোমরা এও জানো, আমরা আত্মারা ওই বাবার সন্তান, এরপর
ভূমিকা পালন করার জন্য এই বাবার হই । তোমরা কতো সময় এই লৌকিক বাবাকে পেয়েছো ? তোমরা
সত্যযুগ থেকে শুরু করে সুখ আর দুঃখের অভিনয় করে এসেছো । তোমরা এখন জানো, আমাদের
দুঃখের পার্ট সম্পূর্ণ হয়েছে, সুখের পার্টও সম্পূর্ণ ২১ জন্মের জন্য করেছি । এরপর
অর্ধেক কল্প দুঃখের পার্ট করেছি । বাবা তোমাদের স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, বাবা জিজ্ঞাসা
করেন, বরাবর এমনই তো ছিলো তাই না । এখন আবার তোমাদের অর্ধেক কল্প সুখের অভিনয় করতে
হবে । এই জ্ঞানে তোমাদের আত্মা পরিপূর্ণ থাকে, পরে আবার খালি হয়ে যায় । বাবা আবার
তোমাদের পরিপূর্ণ করেন, তোমাদের গলায় তো বিজয় মালা রয়েছে । তোমাদের গলায় জ্ঞানের
মালা রয়েছে । বরাবর আমরাই চক্র অতিক্রম করি । সত্যযুগ, ত্রেতা, দ্বাপর, কলিযুগ,
তারপর আসি এই মিষ্টি সঙ্গম যুগে । এই যুগকে মিষ্টি বলা হবে । শান্তিধাম কোনো মিষ্টি
নয় । সবথেকে মিষ্টি হলো পুরুষোত্তম কল্যাণকারী সঙ্গমযুগ । এই ড্রামাতে তোমাদেরও
ভালোর থেকে ভালো পার্ট আছে । তোমরা কতো ভাগ্যবান । তোমরা এই অসীম জগতের বাবার হয়ে
যাও । বাচ্চারা, তিনি এসেই তোমাদের পড়ান । এই পড়া কতো উচ্চ আর কতো সহজ । তোমরা কতো
ধনবান হও, তোমাদের কোনো পরিশ্রম করতে হয় না । ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ররা কতো পরিশ্রম করে,
তোমরা তো অবিনাশী উত্তরাধিকার পাও, বাবার উপার্জনে বাচ্চাদের তো অধিকার থাকে, তাই
না । তোমরা এই পাঠ গ্রহণ করে ২১ জন্মের জন্য প্রকৃত উপার্জন করো । ওখানে তোমাদের
কোনো অভাব হয় না, যে বাবাকে স্মরণ করতে হয়, একেই অজপাজপ বলা হয় ।
তোমরা জানো যে বাবা
এসেছেন । বাবাও বলেন, আমি এসেছি, দুই হাতেই তো তালি বাজবে, তাই না । বাবা বলেন,
তোমরা আমাকে স্মরণ করলে তোমাদের জন্ম জন্মান্তরের পাপ ভস্ম হয়ে যাবে । পাঁচ বিকার
রূপী রাবণ তোমাদের পাপাত্মা বানিয়েছে, তোমাদের আবার পুণ্যাত্মা হতে হবে, এই কথা
বুদ্ধিতে আসা উচিত । আমরা বাবার স্মরণে পবিত্র হয়ে বাবার সঙ্গে ঘরে ফিরে যাবো । এই
পড়ার থেকে আমরা শক্তি পাই । দেবী - দেবতা ধর্মের জন্য বলা হয়, ধর্মই হলো শক্তি ।
বাবা তো হলেন সর্বশক্তিমান । তাই বাবার থেকে আমরা এই বিশ্বে শান্তি স্থাপনের শক্তি
পাই । ওই বাদশাহী আমাদের থেকে কেউ ছিনিয়ে নিতে পারবে না । এতটাই আমাদের শক্তি
প্রাপ্ত হয় । রাজাদের হাতে দেখো, কতখানি শক্তি এসে যায় । কতো মানুষ তাদের ভয় পায়
। এক রাজার কতো প্রজা, লস্কর ইত্যাদি থাকে, কিন্তু সে হলো অল্পকালের শক্তি । এ হলো
২১ জন্মের শক্তি । তোমরা এখন জানো, আমরা এই বিশ্বে রাজত্ব করার জন্য সর্বশক্তিমান
বাবার থেকে শক্তি পাই । তাই তাঁর প্রতি প্রেম তো থাকেই । দেবতারা প্রত্যক্ষভাবে নেই,
তবুও তাঁদের প্রতি কতো ভালোবাসা থাকে । তাঁরা যখন সামনে থাকবেন তখন প্রজাদের তাঁদের
প্রতি কতো প্রেম থাকবে । এই স্মরণের যাত্রায় তোমরা এই শক্তি গ্রহণ করছো । এই কথা
তোমরা ভুলো না । এই স্মরণ করতে করতে তোমরা অনেক শক্তিমান হয়ে যাও । সর্বশক্তিমান আর
কাউকেই বলা হয় না । এই স্মরণে সকলেই শক্তি প্রাপ্ত করে, এইসময় কারোরই কোনো শক্তি
নেই, সকলেই তমোপ্রধান । এরপর সমস্ত আত্মারা একের থেকেই শক্তি পায়, তারপর নিজের
রাজধানীতে গিয়ে নিজের - নিজের ভূমিকা পালন করে । তারপর নিজের হিসেব - নিকেশ শোধ করে
নম্বর অনুযায়ী আবার শক্তিমান হয় । প্রথম নম্বরে এই দেবতাদের শক্তি । এই লক্ষ্মী -
নারায়ণ বরাবর সম্পূর্ণ বিশ্বের মালিক ছিলেন, তাই না । তোমাদের বুদ্ধিতে এখন
সম্পূর্ণ সৃষ্টিচক্রের জ্ঞান আছে । তোমাদের আত্মার মধ্যে যেমন এই জ্ঞান আছে, তেমনই
বাবার আত্মার মধ্যেও সম্পূর্ণ জ্ঞান আছে । তিনি এখন তোমাদের এই জ্ঞান দান করছেন ।
এই ড্রামাতে সম্পূর্ণ পার্ট ভরা আছে যা বারে বারে রিপিট হতে থাকে । এরপর ওই পার্ট
আবার পাঁচ হাজার বছর পরে রিপিট হবে । বাচ্চারা, তোমরা এ কথাও জানো । তোমরা যখন
সত্যযুগে রাজত্ব করো তখন বাবা অবসর জীবনে থাকেন, এরপর আবার কখন এই স্টেজে আসেন ?
তোমরা যখন দুঃখী হও । তোমরা জানো যে, তাঁর ভিতরে সম্পূর্ণ রেকর্ড ভরা আছে । আত্মা
কতো ছোটো কিন্তু তার কতো বোধজ্ঞান । বাবা এসে কতো বুদ্ধি দান করেন । এরপর সত্যযুগে
তোমরা সব ভুলে যাও । সত্যযুগে তোমাদের এই জ্ঞান থাকে না । ওখানে তোমরা সুখ ভোগ করতে
থাকো । এও তোমরা বুঝতে পারো, সত্যযুগে আমরা দেবতা হয়ে সুখ ভোগ করি । এখন আমরাই আবার
ব্রাহ্মণ । আমরাই আবার দেবতা হচ্ছি । এই জ্ঞান - বুদ্ধি খুব ভালোভাবে ধারণ করতে হবে
। কাউকে বোঝালে খুশী উৎপন্ন হয়, তাই না । তোমরা যেন তাদের প্রাণ দান দাও । মানুষ
তো বলে, কাল এসে সবাইকে নিয়ে যায় । এমন কাল ইত্যাদি কিছুই নেই । এ তো হলো বানানো
ড্রামা । আত্মা বলে, আমি এক শরীর ত্যাগ করে চলে যাই তারপর অন্য শরীর ধারণ করি ।
আমাকে কখনো কাল গ্রাস করে না । আত্মার অনুভূতি আসে । আত্মা যখন গর্ভে থাকে তখন
সাক্ষাৎকার করে দুঃখ ভোগ করে । ভিতরে থেকে সাজা ভোগ করে তাই তাকে বলা হয় গর্ভ জেল
। এই আশ্চর্যজনক ড্রামা কেমন ভাবে বানানো আছে । গর্ভ জেলে সাজা ভোগ করতে করতে
সাক্ষাৎকার করতে থাকে । কেন সাজা পেয়েছে সেই সাক্ষাৎকার তো করাবেই, তাই না, যেমন -
এই - এই ভুল কাজ করেছে, একে দুঃখ দিয়েছে । ওখানে সব সাক্ষাৎকারই হয় তবুও বাইরে এসে
পাপাত্মা হয়ে যায় । এই সমস্ত পাপ কিভাবে ভস্ম হবে ? তাই বাচ্চাদের বোঝানো হয়েছে -
এই স্মরণের যাত্রায় আর স্বদর্শন চক্র ঘোরালে তোমাদের পাপ কেটে যায় । বাবা এও বলেন
- মিষ্টি - মিষ্টি স্বদর্শন চক্রধারী বাচ্চারা, তোমরা যদি এই ৮৪ জন্মের স্বদর্শন
চক্র ঘোরাও তাহলে তোমাদের পাপ কেটে যাবে । চক্রকেও যেমন স্মরণ করতে হবে, তেমনই যিনি
জ্ঞান দান করেছেন, তাঁকেও স্মরণ করতে হবে । বাবা আমাদের স্বদর্শন চক্রধারী তৈরী
করছেন । তিনি তো আমাদের তৈরী করেনই তবুও প্রতিদিনই নতুন - নতুন আসে, তাই তাদেরও
রিফ্রেশ করতে হয় । তোমরা সমস্ত জ্ঞান পেয়েছো, এখন তোমরা জানো যে, আমরা এখানে অভিনয়
করতে এসেছি । আমরা ৮৪ চক্র সম্পূর্ণ করেছি, এখন আবার আমাদের ফিরে যেতে হবে । এমনভাবে
চক্র ঘোরাও কি ? বাবা জানেন যে, বাচ্চারা খুবই ভুলে যায় । এই চক্র ঘোরাতে কোনো
অসুবিধা নেই, অবসর তো তোমরা অনেকই পাও । পরের দিকে তোমাদের এই স্বদর্শন চক্রধারীর
অবস্থা থাকবে । তোমাদের এমন হতে হবে । সন্ন্যাসীরা তো এই শিক্ষা দিতে পারে না । এই
স্বদর্শন চক্রকে গুরুরাও জানেন না । ওরা তো কেবল বলবেন - গঙ্গা দর্শনে চলো । কতো
মানুষ সেখানে স্নান করে । অনেকে স্নান করলে গুরুদেরও দক্ষিণা প্রাপ্ত হয় । বারে
বারে তারা তীর্থ যাত্রায় যায় । এখন তোমরা দেখো, ওই যাত্রা আর এই যাত্রায় কতো তফাৎ
। এই যাত্রা ওইসব তীর্থযাত্রা ছাড়িয়ে দেয় । এই যাত্রা কতো সহজ । তোমরা চক্রও ঘোরাও
। এমন গানও তো আছে -- চারিদিকে পরিক্রমা করলাম, তবুও প্রতি মুহূর্তে দূরে । অসীম
জগতের পিতার থেকে তোমরা দূরে থেকেছো । তোমাদের এই অনুভব হয় । ওরা এর অর্থ জানে না
। তোমরা এখন জানো যে, আমরা অনেক পরিক্রমা করেছি । এখন এই পরিক্রমা থেকে তোমরা মুক্তি
পেয়েছো । এই পরিক্রমা করে তোমরা কাছাকাছি তো আসোইনি বরং দূরে চলে গেছো ।
এখন এই ড্রামার নিয়ম
অনুসারে সবাইকে নিয়ে যাওয়ার জন্য বাবাকে আসতে হয় । বাবা বলেন, আমার মতে তোমাদের
চলতেই হবে, পবিত্র হতেই হবে । এই দুনিয়াকে দেখেও দেখবে না । যতক্ষণ না নতুন গৃহ তৈরী
হচ্ছে ততক্ষণ পুরানো গৃহতেই থাকতে হয় । বাবা তাঁর অবিনাশী উত্তরাধিকার দিতে এই
সঙ্গম যুগেই আসেন । অসীম জগতের পিতার এ হলো অসীম এবং অবিনাশী উত্তরাধিকার । বাচ্চারা
জানে যে, বাবার এই অবিনাশী উত্তরাধিকার হলো আমাদের । তারা সেই খুশীতেই মগ্ন থাকে ।
তারা নিজের উপার্জনও করে আবার বাবার অবিনাশী উত্তরাধিকারও পায় । তোমরা তো অবিনাশী
উত্তরাধিকারই পাও । ওখানে তোমরা জানতেই পারবে না যে স্বর্গের উত্তরাধিকার তোমরা
কিভাবে পেয়েছো ? ওখানে তো তোমাদের জীবন খুব সুখের হবে, কেননা তোমরা বাবাকে স্মরণ করে
শক্তি গ্রহণ করো । পাপ মুক্তকারী পতিত - পাবন একমাত্র বাবাই । বাবাকে স্মরণ করলে এবং
স্বদর্শন চক্র ঘোরালেই তোমাদের পাপ মুক্ত হয় । এ কথা খুব ভালো করে নোট করে নাও ।
এটা বোঝাই হলো যথেষ্ট । ভবিষ্যতে তোমাদের বারে বারে বলতে হবে না । এক ইশারাই যথেষ্ট
। তোমরা যদি অসীম জগতের পিতাকে স্মরণ করো, তাহলে তোমাদের পাপ কেটে যাবে । তোমরা
এখানে নর থেকে নারায়ণ আর নারী থেকে লক্ষ্মী হতে আসো । এ কথা তো স্মরণে আছে, তাই না
। আর কারোর বুদ্ধিতেই এই কথা আসে না । এখানে তোমরা আসো, তোমাদের বুদ্ধিতে আছে যে,
আমরা বাপদাদার কাছে যাই, তাঁর থেকে নতুন দুনিয়া স্বর্গের অবিনাশী উত্তরাধিকার গ্রহণ
করতে ।
বাবা বলেন, স্বদর্শন
চক্রধারী হলে তোমাদের বিকর্ম বিনাশ হয়ে যাবে । এখন যিনি তোমাদের জীবন হীরে তুল্য
করেন, তাঁকে দেখো । এও তোমরা জানো যে, এখানে চাক্ষুষ দেখার কোনো কথা নেই । এ তোমরা
দিব্যদৃষ্টির দ্বারাই জানো । আত্মাই এই শরীরের দ্বারা পাঠ গ্রহণ করে - এই জ্ঞান
তোমরা এখন পেয়েছো । আমরা যে কর্ম করি, আত্মাই এই শরীর ধারণ করে কর্ম করে । বাবাকেও
পড়াতে হয়, তাঁর নাম সর্বদাই শিব । শরীরের নামের পরিবর্তন হয় । এই শরীর তো আমাদের
নয় । এ হলো এনার সম্পত্তি । শরীর হলো আত্মার সম্পত্তি, যার দ্বারা অভিনয় করে । এ
তো খুব সহজ সরল, বোঝার মতো কথা । আত্মা তো সকলের মধ্যেই আছে, কিন্তু সকলেরই শরীরের
নাম পৃথক । আর ইনি হলেন পরম আত্মা, সুপ্রীম আত্মা । উঁচুর থেকেও উঁচু । এখন তোমরা
বুঝতে পারো, ভগবান তো একজনই, তিনিই সৃষ্টিকর্তা । বাকি সকলেই হলো রচনা, যারা অভিনয়
করে । এও তোমরা জেনে গেছো, কিভাবে আত্মারা আসে, প্রথম দিকে আদি সনাতন দেবী দেবতা
ধর্মের আত্মারা থাকে, অল্প সংখ্যক । আবার শেষের দিকে তাঁরাই যোগ্য হয় প্রথমে আসার
জন্য । এ হলো যেন সৃষ্টিচক্রের এক মালা, যা ঘুরতেই থাকে । তোমরা যখন মালা ঘোরাও তখন
দানার চক্র তো ঘুরতে থাকে ।সত্যযুগে সামান্যতম ভক্তিও থাকে না । বাবা বুঝিয়েছেন -
হে আত্মারা, তোমরা মামেকম্ স্মরণ করো । তোমাদের অবশ্যই ঘরে ফিরে যেতে হবে, বিনাশ তো
সামনে উপস্থিত । এই স্মরণের দ্বারাই তোমরা পাপ মুক্ত হবে আর তখন সাজা ভোগ করা থেকে
মুক্তি পাবে । পদও তখন ভালো পাবে । তা না হলে অনেক সাজা ভোগ করতে হবে । বাচ্চারা,
আমি তোমাদের কাছে কতো ভালো এক অতিথি । আমি সম্পূর্ণ বিশ্বের পরিবর্তন করি । আমি
পুরাতন বিশ্বকে নতুন করে দিই । তোমরাও জানো যে, বাবা কল্পে - কল্পে এসে বিশ্বকে
পরিবর্তন করে পুরানো বিশ্বকে নতুন করে দেন । এই বিশ্ব তো পুরাতন থেকে নতুন আর নতুন
থেকে পুরাতন হয়, তাই না । তোমরা এই সময় চক্র ঘোরাতে থাকো । বাবার বুদ্ধিতে জ্ঞান
আছে, তিনি তার বর্ণনা করেন, তোমাদের বুদ্ধিতেও আছে যে চক্র কিভাবে ঘোরে । তোমরা জানো
যে, বাবা এসেছেন, আমরা তাঁর শ্রীমতে চলে পবিত্র হই । তোমরা এই স্মরণের দ্বারাই
পবিত্র হতে থাকবে, তারপর উঁচু পদ পাবে । পুরুষার্থ করাও আবশ্যক । এই পুরুষার্থ
করানোর জন্য কতো চিত্র ইত্যাদি বানানো হয় । যারা আসে তাদের তোমরা ৮৪ জন্মের চক্রের
উপর বোঝাও । বাবাকে স্মরণ করলে তোমরা পতিত থেকে পবিত্র হয়ে যাবে । আচ্ছা ।
মিষ্টি - মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত ।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
জ্ঞানকে খুব ভালোভাবে বুদ্ধিতে ধারণ করে অনেক আত্মাদের প্রাণ দান করতে হবে,
স্বদর্শন চক্রধারী হতে হবে ।
২ ) এই মিষ্টি সঙ্গম
যুগে নিজের উপার্জনের সাথে সাথে বাবার শ্রীমতে চলে সম্পূর্ণ অবিনাশী উত্তরাধিকার
নিতে হবে । নিজের জীবন সর্বদা সুখের করে তুলতে হবে ।
বরদান:-
সকল
বরদান গুলিকে সময় মতো কাজে লাগিয়ে ফলপ্রসূ করে তুলে ফল স্বরূপ ভব
বরদানের দ্বারা সময়ে
সময়ে যে যে বরদান প্রাপ্ত হয়েছে, সে'গুলিকে সময় মতো কাজে লাগাও। বরদান শুনেই কেবল
খুশী হয়ে যেও না যে আজ খুব ভালো বরদান ছিল। বরদানকে কাজে লাগালে তবেই বরদান কায়েম
থাকে। বরদান তো হলো অবিনাশী বাবার, কিন্তু তাকে ফলপ্রসূ করতে হবে। তার জন্য বরদানকে
বারে বারে স্মৃতির জল দাও, বরদানের স্বরূপে স্থিত হওয়ার রৌদ্র দাও তবে বরদানের ফল
স্বরূপ হয়ে যাবে।
স্লোগান:-
বিশেষত্ব গুলি হলো প্রভু প্রসাদ, সে'গুলিকে সেবাতে লাগাও, বিতরণ করো আর বৃদ্ধি করতে
থাকো।