26.11.2024 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা - তোমরা হলে ত্রিমূর্তি বাবার সন্তান। তোমাদেরকে নিজেদের এই তিন কর্তব্যকে সদা স্মরণে রাখতে হবে - স্থাপনা, বিনাশ আর পালন"

প্রশ্নঃ -
দেহ-অভিমান নামক কঠিন রোগের কারণে কি কি ক্ষতি হয়?

উত্তরঃ  
১) দেহ-অভিমানী ব্যক্তির অন্তরে জিলাসি (হিংসা) উৎপন্ন হয়। জিলাসির কারণে নিজেদের মধ্যে নুন-জল (অসন্তুষ্ট) হয়ে থাকে। হৃদয় দিয়ে সেবা করে না। ভিতরে ভিতরে জ্বলতে থাকে। ২) বেপরোয়া হয়ে যায়। মায়া তাদেরকে অনেক ধোঁকা দেয়। পুরুষার্থ করতে করতে হাওয়া হয়ে যায়, যার কারণে এই পড়াশোনা ছেড়ে চলে যায়। ৩) দেহ-অভিমানের কারণে হৃদয় স্বচ্ছ থাকে না, হৃদয় স্বচ্ছ না হওয়ার কারণে বাবার হৃদয় হৃদয়াসনে বসতে পারে না। ৪) মুড অফ করে ফেলে । তার চেহারাই বদলে যায়।

ওম্ শান্তি ।
শুধুমাত্র বাবাকে স্মরণ করো নাকি অন্যকিছুও স্মরণে আসে? বাচ্চাদের স্থাপনা, বিনাশ আর পালন - এই তিনটিকে স্মরণে রাখতে হবে, কেননা এই তিনটে একত্রে সাথে সাথে চলে, তাই না। যে রকম কেউ ব্যারিস্টারি পড়লে তার এই জ্ঞান থাকে যে, আমি ব্যারিস্টার হবো এবং ওকালতি করবো। ব্যারিস্টারির পালনও করবে, তাই না। যা কিছু পড়বে, তার এইম তো থাকবেই। তোমরা জানো যে, এখন আমরা কন্সট্রাকশন করছি। পবিত্র নতুন দুনিয়ার স্থাপন করছি, এতে যোগ অত্যন্ত জরুরী। যোগের দ্বারাই আমাদের আত্মা পতিত থেকে পবিত্র হবে। তাই আমরা পবিত্র হয়ে, পুনরায় পবিত্র দুনিয়ায় গিয়ে রাজত্ব করবো, এটা বুদ্ধিতে আসা চাই। সকল পরীক্ষার মধ্যে সবথেকে বড় পরীক্ষা বা সকল পড়াশোনার মধ্যে সর্বোচ্চ পড়াশোনা হলো এটা। পড়াশোনা তো অনেক প্রকারের হয়, তাই না। সেখানে তো মানুষ - মানুষদেরকেই পড়ায়। আর সেই পড়াশোনা এই দুনিয়ার জন্যই হয়। পড়াশোনা করে তার ফল এখানেই প্রাপ্ত করে। তোমরা বাচ্চারা জেনে গেছো যে, এই অসীম জগতের পড়াশোনার ফল আমাদের নতুন দুনিয়ায় প্রাপ্ত হবে। সেই নতুন দুনিয়া আর দূরে নেই। এখন হলো সঙ্গম যুগ। নতুন দুনিয়াতেই আমাদের রাজ্য করতে হবে। এখানে বসে আছো তবুও বুদ্ধিতে এটাই স্মরণ রাখতে হবে। বাবার স্মরণেই আত্মা পবিত্র হবে। পুনরায় এটাও স্মরণে রাখতে হবে যে আমরা পবিত্র হলেই এই অপবিত্র দুনিয়ার বিনাশ অবশ্যই হবে। সবাই তো আর পবিত্র হতে পারবে না। তোমরা খুব অল্প সংখ্যক-ই হবে, যাদের মধ্যে সেই শক্তি থাকবে। তোমাদের মধ্যেও নম্বরক্রমে শক্তি অনুসারেই সূর্যবংশী, চন্দ্রবংশী হবে, তাইনা। শক্তি তো সব কিছুর মধ্যেই চাই। এ হলো ঈশ্বরীয় শক্তি, এটাকে যোগ বলের শক্তি বলা হয়ে থাকে। বাকি সব তো হলো শারীরিক মাইট (শক্তি) । এ হলো আত্মিক মাইট। বাবা প্রত্যেক কল্পে কল্পে বলেন - বাচ্চারা, মামেকম্ স্মরণ করো। সর্বশক্তিমান বাবাকে স্মরণ করো। তিনি তো এক বাবা-ই রয়েছেন, যাকে স্মরণ করলেই আত্মা পবিত্র হবে। এটা খুব সুন্দর কথা - ধারণ করার জন্য, যার মধ্যে এ বিষয়ে নিশ্চয়ই নেই যে আমরাই ৮৪ জন্ম নিয়েছি, তাদের বুদ্ধিতে এ সমস্ত কথা ধারণ হবে না। যে সতোপ্রধান দুনিয়াতে এসেছিল, সেই এখন তমোপ্রধান দুনিয়াতে এসেছে। সে-ই এসে শীঘ্র নিশ্চয়বুদ্ধি হবে। যদি কিছু বুঝতে না পারে তবে জিজ্ঞাসা করতে হবে। ভালো ভাবে বুঝলে, তবেই বাবাকে স্মরণ করতে পারবে। না বুঝলে স্মরণ করতেও পারবে না। এটা তো হলো সোজা কথা। আমরা আত্মারা, যারা সতোপ্রধান ছিলাম, তারা-ই পুনরায় তমোপ্রধান হয়েছি, যাদের মধ্যে এ বিষয়ে সংশয় থাকবে যে, কিভাবে বুঝবো যে আমরা ৮৪ জন্ম নিয়েছি, বা বাবার থেকে কল্প পূর্বেও আশীর্বাদ নিয়েছি, তারা তো পড়াশোনাতে পুরোপুরি মনোযোগ-ই দেবে না। বুঝতে হবে, এদের ভাগ্যে নেই। কল্পে পূর্বেও বোঝেনি। এইজন্য স্মরণ করতে পারছে না। এটা হচ্ছেই ভবিষ্যতের জন্য পড়াশোনা। না পড়লে বুঝতে হবে যে, কল্প-কল্পেও পড়েনি, অথবা খুব অল্প নম্বর নিয়ে পাস করেছিল। স্কুলে তো অনেকে ফেল হয়ে যায়। পাসও নম্বরের ক্রমানুসারে হয়। এটাও হলো পড়াশোনা, এতেও নম্বরের ক্রমানুসারে পাস হয়। যে সতর্ক থাকে, সেই পড়াশোনা করে পুনরায় পড়াতে থাকে। বাবা বলেন যে, "আমি তোমাদের, অর্থাৎ বাচ্চাদের সার্ভেন্ট"।বাচ্চারাও বলে, "আমরাও হলাম সার্ভেন্ট"। প্রত্যেক ভাই-বোনের কল্যাণ করতে হবে। বাবা আমাদের কল্যাণ করেন, আমাদেরকেও অপরের কল্যাণ করতে হবে। সবাইকে এটাও বোঝাতে হবে যে, বাবাকে স্মরণ করলে পাপ কেটে যাবে। যত যত যে অনেককে এই সংবাদ পৌঁছে দিতে পারবে, তাকে বড় ভগবানের দূত বলা হবে। তাকেই মহারথী অথবা ঘোড়সওয়ার বলা হয়। পদাতিক সৈন্য প্রজাতে চলে আসবে। এরমধ্যেও বাচ্চারা বুঝে যায় যে, কে কে ধনী হবে। এই জ্ঞান বুদ্ধির মধ্যে থাকা চাই। তোমরা বাচ্চারা, যারা সেবার জন্য নিমিত্ত হয়েছো, সেবার জন্যই জীবন সমর্পণ করেছো, তো সেই রকমই পদ পাবে। তাদের তো কোনো প্রকারের বন্ধন থাকে না। মানুষ তো হাত পা বিশিষ্ট হয়, তাই না। তাদেরকে বাঁধা যায় না। নিজেকে স্বতন্ত্র রাখতে পারে। এইরকম কেন বন্ধনে ফাঁসবো ? কেনই না বাবার থেকে অমৃত নিয়ে অমৃতের-ই দান করব। আমি তো কোন গরু-ছাগল নই যে আমাকে বেঁধে রাখবে। শুরুতে তোমরা বাচ্চারা কিভাবে নিজেদেরকে ছাড়িয়ে ছিলে। বেত্রাঘাত হয়েছিল, হায় হায় রব উঠেছিল । তোমরা বলেছিলে, আমাদের আবার কি চিন্তা থাকতে পারে। আমরা তো বসে বসেই স্বর্গ স্থাপনা করতে পারি। তখন নেশা চড়ে যায়। যাকে মৌলাই মস্তি বলা হয়। আমরা মৌলা-র মাস্তান (যে ঈশ্বরীয় আমোদে মেতে আছে) । তোমরা জেনে গেছে যে, মৌলার কাছ থেকে আমরা এখন কি কি প্রাপ্ত করছি। মৌলা (ঈশ্বর) এখন আমাদের পড়াচ্ছেন, তাই না। নাম তো তাঁর অনেক আছে, কিন্তু কিছু কিছু নাম খুব মিষ্টি হয়। এখন আমরা মৌলাই মস্ত হচ্ছি। বাবা তো নির্দেশ খুব সহজ-ই দেন। বুদ্ধিও বুঝে যায় যে - বরাবর আমরা বাবাকে স্মরণ করতে করতে সতোপ্রধান হচ্ছি আর বিশ্বের মালিকও হয়ে যাবো। এই তাপ লেগে গেছে। বাবাকে নিরন্তর স্মরণ করা চাই। সামনে বসে আছো তাই না। এখান থেকে বাইরে বের হলেই সব ভুলে যাবে। এখানে যত পরিমাণ নেশা চড়ে, ততটা বাইরে থাকে না। ভুলে যায়। তোমাদের ভুলে গেলে হবে না। কিন্তু ভাগ্যে না থাকলে এখানে বসেও ভুলে যাবে।

বাচ্চাদের জন্য মিউজিয়ামে আর গ্রামে গ্রামে সার্ভিস করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। যত সময় পাওয়া যাবে, বাবা তো বলেন যে তাড়াতাড়ি করো। কিন্তু ড্রামাতে তো তাড়াতাড়ি হচ্ছে না। বাবা তো বলেন যে, এইরকম মেশিন হয়ে যাও, যেখানে হাত দিলেই সব কাজ হয়ে যাবে। এটাও বাবা বোঝাচ্ছেন যে - ভালো ভালো বাচ্চাদেরকেও মায়া সুকৌশলে নাক কান ধরে নেয়। যে নিজেকে মহাবীর মনে করে, তার কাছেই মায়ার বড় বড় তুফান আসে, তথাপি সে কারোর পরোয়া করে না। সবকিছু লুকিয়ে ফেলে। অন্তরে স্বচ্ছতা থাকে না। স্বচ্ছ হৃদয়বান-ই স্কলারশিপ পায়। শয়তানি হৃদয় চলতে পারে না। শয়তানি হৃদয় দিয়ে নিজেই নিজের ক্ষতি করে। সকলেরই কাজ শিব বাবার সাথে । এটা তো তোমরা সাক্ষাৎকার করেছো। ব্রহ্মা বাবাকেও তৈরি করেছেন শিব বাবা। শিব বাবাকে স্মরণ করেই এরকম তৈরি হয়েছেন। বাবা বোঝাচ্ছেন যে, মায়া হল খুবই প্রবল। যেভাবে ইঁদুর কাটে, বোঝাই যায়না, সেরকমই মায়া হল মস্ত বড় ইঁদুর । মহারথীদেরকেই সতর্ক থাকতে হবে। তারা নিজেরা বুঝতে পারে না যে, আমাদেরকেই মায়া ফেলে দিয়েছে। নুনজল বানিয়ে দিয়েছে। বুঝতে হবে যে নুনজল হলে আমরা বাবার সার্ভিস করতে পারবো না। ভিতরে ভিতরেই জ্বলতে থাকবো। দেহ-অভিমান থাকলে তবেই জ্বলতে থাকবে। সেই অবস্থা তো নেই। স্মরণের ধার নেই । এইজন্য অনেক সাবধান থাকতে হবে। মায়া হলো খুবই চালাক । যখনই তুমি যুদ্ধের ময়দানে থাকো তখন মায়া তোমাকে ছাড়ে না। অর্ধেক, এক-চতুর্থাংশ তো শেষ করেই দেয়। কেউ বুঝতেই পারে না। কিভাবে ভালো ভালো, নতুন নতুন বাচ্চারাও পড়া বন্ধ করে ঘরে বসে থাকে। ভালো ভালো, নতুন নতুন বাচ্চাদেরও মায়া আঘাত করে। সব বুঝেও বেপরোয়া হয়ে যায়। অল্প কথাতেই তাড়াতাড়ি নুনজল হয়ে যায় । বাবা বোঝাচ্ছেন দেহ-অভিমানের কারণেই নুনজল হয় । নিজেকেই ধোঁকা দেয়। বাবা বোঝাচ্ছেন যে, এটাই হলো ড্রামা। যা কিছু দেখছ, কল্পপূর্বের ন্যায় ড্রামার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে । অবস্থা উপর নিচে হতে থাকে। কখনো গ্রহের দশা বসবে, কখনো আবার খুব ভালো সেবা করে সু-খবর লেখে। অবস্থা উপরে-নিচে হতেই থাকে। কখনো হার, কখনো জিৎ। পান্ডবদের মায়া কখনো হারায়, কখনো পান্ডবদের জয় হয়। ভালো ভালো মহারথীরাও পরাজিত হয়ে যায়, কেউ মারাও যায় (বাবার হাত ছেড়ে চলে যায়)। এইজন্য যেখানেই থাকো, বাবাকে স্মরণ করতে থাকো আর সেবা করতে থাকো। তোমরা নিমিত্ত হয়েছো সেবা করার জন্য। তোমরা এখন যুদ্ধের ময়দানে রয়েছো, তাই না। যারা ঘর গৃহস্থে থেকেও খুব তীব্র গতিতে পুরুষার্থ করে এগিয়ে যেতে পারে, মায়ার সঙ্গে তার পুরোপুরিভাবে যুদ্ধ চলতে থাকে। সেকেন্ড বাই সেকেন্ডে তোমাদের কল্পপূর্বের ন্যায় পার্ট চলতে থাকছে। তোমরা বলবে, এত এত সময় পাস (অতিবাহিত) হয়ে গেছে। কি কি হয়েছে সেসব আমাদের বুদ্ধিতে আছে । সমগ্র জ্ঞান আমাদের বুদ্ধিতে রয়েছে । যেরকম বাবার মধ্যে জ্ঞান আছে, এই দাদার মধ্যেও আছে। বাবা বলেন তো দাদাও অবশ্যই বলেন। তোমরা জেনে গেছো যে, কে কে স্বচ্ছ হৃদয়ের । হৃদয় যার সুন্দর, সে-ই বাবার হৃদয়ে স্থান লাভ করতে পারে । তার মধ্যে বিরক্ত হবার স্বভাব থাকে না। সদা প্রফুল্ল থাকে। তার মেজাজ কখনো উপর-নিচে হয় না। এখানে তো অনেকেই মেজাজ হারিয়ে ফেলে। সে কথা জিজ্ঞাসা কোরো না। এই সময় সবাই বলে যে আমরা এখন পতিত হয়ে গেছি। এখন পতিত-পাবন বাবাকে আহ্বান করেছে - বাবা এসে আমাদেরকে পবিত্র বানাও। বাবা বলেন যে - বাচ্চারা, আমাকে স্মরণ করতে থাকো, তাহলেই তোমাদের কাপড় পরিস্কার হয়ে যাবে। আমার শ্রীমতে চলো। শ্রীমতে না চলা ব্যক্তির কাপড় পরিস্কার হয় না। আত্মা শুদ্ধ হয় না। বাবা তো দিনরাত এর উপরই জোর দেন - নিজেকে আত্মা মনে করো। দেহ-অভিমানে আসার কারণেই তোমরা পথভ্রষ্ট হয়ে যাও। যত যত উপরের দিকে উঠতে থাকবে খুশিতে থাকবে আর হাসিখুশি থাকবে। বাবা জানেন যে, ভালো ভালো ফার্স্ট ক্লাস বাচ্চাদের অন্তরের অবস্থা দেখো, যেন গলে যাচ্ছে। দেহ-অভিমানের আগুনে গলে যাচ্ছে। কিছু বোঝেনা, এই অসুখ আবার কোথা থেকে এলো। বাবা বলেন, দেহ-অভিমান থেকেই রোগব্যাধি আসে। দেহী-অভিমানীদের কখনো রোগব্যাধি হয় না। অনেকেই আছে, যারা ভিতরে ভিতরে জ্বলতে থাকে। বাবা তো বলেন - বাচ্চারা, দেহী-অভিমানী ভব। জিজ্ঞাসা করে এই রোগ কেন লেগেছে? বাবা বলেন, দেহ অভিমানের রোগ এমনই হয়। সে কথা জিজ্ঞাসা কোরো না। যারা এই রকম রোগে আক্রান্ত হয়, তাদের মধ্যে একবারে আঠার মত আটকে যায়, ছাড়েও না। শ্রীমতে না চলে নিজের দেহ-অভিমানে চললে তো চোট আরো বেশী লেগে যায়। বাবার কাছে তো সব খবরই আসে। মায়া কিভাবে একেবারে নাক ধরে ফেলে দেয়। বুদ্ধি একদম হার মেনে যায়। সংশয় বুদ্ধি হয়ে যায়। ভগবানকে আহ্বান করে বলে যে, এসে আমাকে পাথর বুদ্ধি থেকে পারস বুদ্ধি বানাও। আবার তারাই এসে বিরুদ্ধাচরণ করে। তাহলে কি গতি হবে! একদম পড়ে গিয়ে পাথর বুদ্ধি হয়ে যায়। বাচ্চাদেরকে এখানে বসে এই খুশি হওয়া চাই যে স্টুডিও লাইফ ইজ দ্যা বেস্ট। বাবা বলেন, এর থেকে শ্রেষ্ঠ পড়াশোনা কি আর কিছু আছে? সর্বশ্রেষ্ঠ পড়াতো এটাই, ২১ জন্মের ফল দেয়। তো এই রকম পড়াশোনাতে কত একাগ্র হওয়া উচিত। কেউ কেউ তো আবার একদমই একাগ্রচিত্ত হয় না। মায়া নাক কান একদম কেটে দেয়। বাবা স্বয়ং বলছেন অর্ধ কল্প এর রাজ্য চলে তাই এইভাবে ধরে নেয়। যার কথা আর জিজ্ঞাসা করো না। এইজন্য খুব খুব সাবধান থাকো। একে অপরকে সাবধান করতে থাকো। শিব বাবাকে স্মরণ করো। না করলে মায়া নাক কান কেটে নেবে। তারপর আর তুমি কোন কাজের যোগ্য হবে না। অনেকে এটাও বলে যে, আমরা লক্ষ্মী-নারায়ণের পদ পাবো - এটা অসম্ভব। থেমে গিয়ে হারিয়ে যায়। মায়ার কাছে পরাজিত হয়ে একদম নোংরায় গিয়ে পড়ে। দেখো আমাদের বুদ্ধি খারাপ হয়ে গেলে বুঝতে হবে যে মায়া নাক দিয়ে ধরে নিয়েছে। স্মরণের যাত্রাতেই অনেক শক্তি থাকে। অনেক খুশি ভরা থাকে। কথাতেই আছে না খুশির মতো পুষ্টকর আহার নেই। দোকানে গ্রাহক এলে উপার্জন হয়, তাই সে কখনো থেমে যায় না, না খেয়ে মরে না, অনেক খুশিতে থাকে। তোমাদের তো অনেক প্রাপ্তি হচ্ছে। তোমাদের তো অনেক খুশিতে থাকতে হবে। দেখতে হবে আমাদের আচার-আচরণ দৈবী আছে নাকি আসুরি আছে। সময় খুব কম। অকাল মৃত্যুর যেন রেস চলছে। অ্যাক্সিডেন্ট ইত্যাদি দেখো কত বেড়ে গেছে। তমোপ্রধান বুদ্ধি বৃদ্ধি পাচ্ছে। বৃষ্টিও মুষলধারে হবে। তাকেও প্রাকৃতিক দুর্ঘটনা বলা যেতে পারে । মৃত্যু দরজায় কড়া নাড়ছে। মানুষ এটাও বোঝে যে, অ্যাটোমিক বম্বস্ সব শেষ করে দেবে। এমন এমন সব ভয়ানক কাজ করতে থাকবে যে লড়াই শুরু হয়ে যাবে। আচ্ছা!

মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) মৌলাই মস্তিতে থেকে নিজেকে স্বাধীন (স্বতন্ত্র) বানাতে হবে। কোনো প্রকারের বন্ধনে আবদ্ধ হবে না। মায়া রূপী ইঁদুরের থেকে খুব সতর্ক থাকতে হবে, সাবধান থাকতে হবে। হৃদয়ের মধ্যে কখনো শয়তানি চিন্তাভাবনা যেন না আসে।

২ ) বাবার দ্বারা যে অশেষ ধন প্রাপ্ত হচ্ছে, এই খুশিতে থাকতে হবে। এই উপার্জনে কখনো সংশয় বুদ্ধি হয়ে থেমে যেও না। ছাত্রজীবনই হলো সর্বশ্রেষ্ঠ জীবন। সেইজন্য পড়াশোনার উপর বিশেষ করে মনোযোগ দিতে হবে।

বরদান:-
সদা অ্যালার্ট থেকে সকলের আশা পূর্ণ কারী মাস্টার মুক্তি-জীবন্মুক্তি দাতা ভব

এখন সকল বাচ্চাদের মধ্যে এই শুভ সংকল্প ইমার্জ করতে হবে যে - 'সকলের আশা পূর্ণ করবো'। সকলের ইচ্ছে হল জন্ম-মরণ থেকে মুক্ত হয়ে যাবে, তাই তাদেরকে সেটার অনুভব করাও। এরজন্য নিজের শক্তিশালী সতোপ্রধান ভায়ব্রেশন দ্বারা প্রকৃতি আর মনুষ্যাত্মাদের বৃত্তিকে চেঞ্জ করো। মাস্টার দাতা হয়ে প্রত্যেক আত্মার আশাগুলিকে পূর্ণ করো। মুক্তি জীবন্মুক্তির দান করো। এই দায়িত্বের স্মৃতি তোমাদেরকে সদা অ্যালার্ট বানিয়ে দেবে।

স্লোগান:-
মুরলীধরের মুরলীর জন্য দেহেরও শুধ-বুধ (দেহভান) যারা ভুলে যায়, তারাই হলো সত্যিকারের গোপ-গোপী।