27.01.2025
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
তোমাদের অবস্থা যখন কর্মাতীত হবে, তখনই তোমরা বিষ্ণুপুরীতে যাবে, যে বাচ্চারা 'পাস
উইথ অনার' হবে, তারাই কর্মাতীত তৈরী হবে"
প্রশ্নঃ -
বাচ্চারা,
তোমাদের প্রতি দুই বাবা কোন্ পরিশ্রম করেন?
উত্তরঃ
বাচ্চারা যাতে
স্বর্গের উপযুক্ত হয় । বাপদাদা, দুইজনই বাচ্চাদের সর্বগুণ সম্পন্ন, ১৬ কলা
সম্পূর্ণ বানানোর জন্য পরিশ্রম করেন । তোমরা যেন এঁদের ডবল ইঞ্জিন পেয়েছো । তাঁরা
তোমাদের এমন আশ্চর্যের পাঠ পড়ান, যাতে তোমরা ২১ জন্মের জন্য বাদশাহী পেয়ে যাও ।
গীতঃ-
শৈশবের দিন
ভুলে যেও না......
ওম্ শান্তি ।
মিষ্টি -
মিষ্টি হারানিধি বাচ্চারা গান শুনেছে । নাটকের নিয়ম অনুসারে এমন ধরণের গীত চয়ন করা
হয়েছে । মানুষ চমকিত হয়ে যায় যে, বাবা এই নাটকের গানের উপর মুরলী চালান । এ কেমন
প্রকারের জ্ঞান ! শাস্ত্র, বেদ, উপনিষদ ইত্যাদি সবই ছেড়ে দিয়েছেন, এখন এই গানের
রেকর্ডের উপর মুরলী চলে । বাচ্চারা, তোমাদের বুদ্ধিতে এও আছে যে, আমরা এখন অসীম
জগতের বাবার হয়েছি, যেই বাবার থেকে আমরা অতীন্দ্রিয় সুখ পাই, সেই বাবাকে ভুলে গেলে
চলবে না । এই বাবার স্মরনেই জন্ম - জন্মান্তরের পাপ দগ্ধ হয় । এমন যেন না হয় যে,
তোমরা স্মরণ করা ছেড়ে দিলে আর তোমাদের পাপ রয়ে গেলো । তখন পদও কম হয়ে যাবে । এমন
বাবাকে তো খুব ভালোভাবে স্মরণ করার পুরুষার্থ করতে হবে । বিবাহের সম্বন্ধ হলে যেমন
একে অপরকে স্মরণ করতে থাকে । তোমাদেরও সম্বন্ধ হয়েছে, এরপর তোমরা যখন কর্মাতীত
অবস্থা প্রাপ্ত করবে, তখন তোমরা বিষ্ণুপুরীতে যাবে । এখন শিববাবাও এখানে আছেন ।
প্রজাপিতা ব্রহ্মাবাবাও আছেন । এই দুই ইঞ্জিন মিলিত হয়ে আছেন - এক নিরাকারী,
দ্বিতীয় সাকারী । এনারা দুজনই পরিশ্রম করেন যাতে, বাচ্চারা স্বর্গের উপযুক্ত হয়ে
যায় । তোমাদের সর্বগুণ সম্পন্ন, ১৬ কোলা সম্পূর্ণ হতে হবে । এই পরীক্ষা তোমাদের
পাস করতে হবে । এই কথা কোনো শাস্ত্রেই নেই৷ এই পড়াশোনা হলো বড়ই ওয়ান্ডারফুল -
ভবিষ্যৎ ২১ জন্মের জন্য । অন্য পড়া হয় মৃত্যুলোকের জন্য, এই পড়া হলো অমরলোকের জন্য
। এরজন্য তো এখানেই পড়তে হবে, তাই না । আত্মা যতক্ষণ পবিত্র না হবে, ততক্ষণ সত্যযুগে
যেতে পারবে না, তাই বাবা এই সঙ্গম যুগেই আসেন, এই যুগকেই কল্যাণকারী পুরুষোত্তম
সঙ্গম যুগ বলা হয় । এই যুগে তোমরা কড়ি থেকে হীরে তুল্য হও তাই তোমরা শ্রীমত অনুযায়ী
চলো । শ্রী শ্রী শিববাবাকেই বলা হয় । মালার অর্থও বাচ্চাদেরই বোঝানো হয়েছে । উপরে
ফুল হলো শিববাবা, তারপর হলো যুগল মেরু । এ তো প্রবৃত্তি মার্গ, তাই না । তারপর হলো
দানা, যারা বিজয়ী হবে, তারা প্রথমে রুদ্র মালা তারপর বিষ্ণুমালা তৈরী হয় । এই
মালার অর্থ কেউই জানে না । বাবা বসে বোঝান - বাচ্চারা, তোমাদের কড়ি থেকে হীরে তুল্য
হতে হবে । ৬৩ জন্ম ধরে তোমরা বাবাকে স্মরণ করে এসেছো । তোমরা এখন এক প্রিয়তমের (মাশুকের)
প্রিয়তমা (আশিক) । সকলেই এক ভগবানের ভক্ত । পতিদের পতি তিনি, বাবারও বাবা তিনি, সেই
একজনই । বাচ্চারা, তিনিই তোমাদের রাজার রাজা বানান । তিনি নিজে তা হন না । বাবা
বারবার তোমাদের বোঝান - বাবার স্মরণেই তোমাদের জন্ম - জন্মান্তরের পাপ ভস্ম হবে ।
সাধু - সন্তরা তো বলে দেন যে - আত্মা নির্লিপ্ত । বাবা বোঝান যে - ভালো বা মন্দ
সংস্কার আত্মাই সঙ্গে করে নিয়ে যায় । ওরা বলে দেয়, ব্যস যেদিকেই দেখি, সব ভগবানই
ভগবান । সবই ভগবানের লীলা । সকলেই সম্পূর্ণ বাম মার্গে গিয়ে মন্দ হয়ে যায় । এমন
অনেকের মতেও লাখ - লাখ মানুষ চলছে । এও এই নাটকেই নিহিত আছে । সর্বদা বুদ্ধিতে তিন
ধামের কথা স্মরণে রেখো - শান্তিধাম, যেখানে আত্মারা থাকে, সুখধাম, যেখানে যাওয়ার
জন্য তোমরা পুরুষার্থ করছো, আর দুঃখধাম শুরু হয় অর্ধেক কল্প পরে । ভগবানকে বলা হয়
হেভেনলি গড ফাদার । তিনি কোনো নরক স্থাপন করেন না । বাবা বলেন যে, আমি তো সুখধামেরই
স্থাপনা করি । বাকি এ সবই হলো হার - জিতের খেলা । বাচ্চারা, তোমরা শ্রীমতে চলে মায়া
রূপী রাবণকে জয় করো । তারপর অর্ধেক কল্প পরে রাবণ রাজ্য শুরু হয় । বাচ্চারা, তোমরা
এখন যুদ্ধের ময়দানে উপস্থিত আছো । এ কথা বুদ্ধিতে ধারণ করতে হবে তারপর অন্যদেরও
বোঝাতে হবে । তোমাদের অন্ধের লাঠি হয়ে অন্যদের ঘরের পথ বলে দিতে হবে কেননা সবাই সেই
ঘরকে ভুলে গেছে । এ কথা বলা হয় যে, এও এক নাটক কিন্তু মানুষ এর আয়ু লাখ - হাজার
বছর বলে দেয় । বাবা বোঝান যে, রাবণ তোমাদের কতো অন্ধ (জ্ঞানহীন ) করে দিয়েছে । বাবা
এখন তোমাদের সমস্ত কথা বুঝিয়ে বলছেন । বাবাকেই সর্বজ্ঞ বলা হয় । এর অর্থ এই নয় যে
তিনি প্রত্যেকেরই অন্তরকে জানেন । ও তো যারা ঋদ্ধি - সিদ্ধি শেখে, তারা তোমাদের
অন্তরের কথা জেনে নেয় । সর্বজ্ঞ - এর অর্থ এই নয় । এ তো বাবার মহিমা । তিনি
জ্ঞানের সাগর, আনন্দের সাগর । মানুষ তো বলে দেয় তিনি অন্তর্যামী । বাচ্চারা, এখন
তোমরা বুঝতে পারো যে, তিনি হলেন শিক্ষক, তিনি আমাদের পড়ান । তিনি আত্মাদের পিতা,
তিনি আত্মাদের সদগুরুও । দেহধারীরও শিক্ষক, গুরু হয় কিন্তু তারা আলাদা - আলাদা ।
তিনজন এক হতে পারেন না । কখনো কোনো বাবা শিক্ষক হয়েও থাকেন কিন্তু গুরু তো হতে
পারেন না । তাও তো তিনিও মানুষ । এখানে তো সুপ্রীম আত্মা, পরমপিতা পরমাত্মা পড়ান ।
আত্মাকে কখনোই পরমাত্মা বলা যায় না । এও কেউ বুঝতে পারে না । বলা হয় যে, পরমাত্মা
অর্জুনকে সাক্ষাৎকার করিয়েছিলেন, অর্জুন বলেছিলেন, এবার থামো, আমি এতো তেজ সহ্য করতে
পারছি না । এ সব যখন মানুষ শুনলো, তখন মনে করলো, পরমাত্মা এতো তেজোময় । আগে বাবার
কাছে এলে অনেকে সাক্ষাৎকারে চলে যেতো । তারা বলতো, এবার থামো, অনেক তেজ, আমি সহ্য
করতে পারছি না । যা শুনে এসেছে, সেই ভাবনাই বুদ্ধিতে থাকে । বাবা বলেন যে, যে
ব্যক্তি যেই ভাবনায় স্মরণ করে, আমিও তার ভাবনা পূরণ করতে পারি । কেউ যদি গণেশের
পূজারী হয়, আমি তাকে গণেশের সাক্ষাৎকার করাবো । সাক্ষাৎকার হলে তারা মনে করে, ব্যস্,
মুক্তিধামে পৌঁছে গেছি, কিন্তু তা নয়, মুক্তিধামে কেউই যেতে পারে না । নারদেরও
উদাহরণ আছে । শিরোমণি ভক্ত নামে তাঁর মহিমা করা হয় । সে জিজ্ঞেস করেছিলো যে আমি
লক্ষ্মীকে বিবাহ করতে পারি, তখন বলা হয়েছিলো, নিজের মুখ তো দেখো । আবার ভক্তদের
মালাও তৈরী হয় । মহিলাদের মধ্যে মীরা আর পুরুষদের মধ্যে নারদের মহিমা মূখ্য । এখানে
আবার জ্ঞানে মূখ্য শিরোমণি হলেন সরস্বতী । নম্বরের ক্রমানুসার তো হয়, তাই না ।
বাবা বোঝান যে, মায়ার
থেকে খুবই সাবধান থাকতে হবে । মায়া তোমাদের দিয়ে এমন উল্টো কাজ করিয়ে নেবে । তখন
অন্তিম সময়ে খুবই কাঁদতে হবে, অনুতাপ করতে হবে যে - ভগবান এলেন, আর আমরা তাঁর
অবিনাশী উত্তরাধিকার নিতে পারলাম না । তখন প্রজাতে গিয়ে দাস - দাসী হবে । শেষের দিকে
এই পড়া তো সম্পূর্ণ হয়ে যায়, তখন খুবই অনুতাপ করতে হয়, তাই প্রথম থেকেই বুঝিয়ে
দেন, যাতে পরে না অনুতাপ করতে হয় । বাবাকে যতো স্মরণ করতে থাকবে, ততই যোগ অগ্নির
দ্বারা পাপ ভস্ম হবে । তোমাদের আত্মা সতোপ্রধান ছিলো তারপর খাদ জমতে - জমতে
তমোপ্রধান হয়ে গেছে । স্বর্ণযুগ, রৌপ্যযুগ, তাম্রযুগ এবং লৌহযুগ - এমন নামও আছে ।
তোমাদের এখন লৌহযুগ থেকে স্বর্ণযুগে যেতে হবে । পবিত্র হওয়া ছাড়া আত্মারা সেই যুগে
যেতে পারে না । সত্যযুগে পবিত্রতা ছিলো, তাই শান্তি এবং সম্পদ ছিলো । এখানে পবিত্রতা
নেই তাই শান্তি এবং সম্পদ নেই । এ রাতদিনের তফাৎ । বাবা তাই বোঝান - তোমরা শৈশবের
দিন ভুলে যেও না । বাবা তো তোমাদের দত্তক নিয়েছেন, তাই না । ব্রহ্মার দ্বারা তিনি
অ্যাডপ্ট করেন, এ হলো অ্যাডপশন । স্ত্রীকেও অ্যাডপ্ট করা হয় । বাকি সন্তানদের জন্ম
দেওয়া হয় । স্ত্রীকে রচনা বলা হবে না । এই বাবাও তোমাদের অ্যাডপ্ট করেন যে, তোমরা
আমার সেই সন্তান যাদের আমি পূর্ব কল্পে অ্যাডপ্ট করেছিলাম । অ্যাডপ্টেড বাচ্চারাই
বাবার থেকে উত্তরাধিকার পায় । উঁচুর থেকেও উঁচু বাবার থেকে উঁচুর থেকেও উঁচু
অবিনাশী উত্তরাধিকার পাওয়া যায় । তিনিই হলেন ভগবান তারপর দ্বিতীয় নম্বরে লক্ষ্মী
- নারায়ণ হলেন সত্যযুগের মালিক । তোমরা এখন সত্যযুগের মালিক তৈরী হচ্ছো । এখনো তোমরা
সম্পূর্ণ হওনি, সম্পূর্ণ তৈরী হচ্ছো ।
নিজে পবিত্র হয়ে
অন্যকে পবিত্র করা, এ হলো প্রকৃত আধ্যাত্মিক সেবা । তোমরা এখন সেই আত্মিক সেবা করো
তাই তোমরা অনেক উচ্চ । শিববাবা পতিতদের পবিত্র করেন । তোমরাও পবিত্র করো । রাবণ
তোমাদের কতো তুচ্ছ বুদ্ধির করে দিয়েছে । বাবা এখন তোমাদের উপযুক্ত করে এই বিশ্বের
মালিক বানান । এমন বাবাকে কিভাবে তোমরা নুড়ি - পাথরে বলতে পারো? বাবা বলেন যে, এই
খেলা বানানো আছে । আবার পরের কল্পে এমনই হবে । এখন এই নাটকের নিয়ম অনুসারে আমি এসেছি
তোমাদের বোঝাতে । এতে কোনো ফারাকই হতে পারে না । বাবা এক সেকেণ্ডের দেরী করতে পারেন
না । বাবার যেমন অবতরণ হয়, তেমনই বাচ্চারা তোমাদেরও অবতরণ হয়, তোমরা অবতরিত হও ।
আত্মা এখানে এসে আবার সাকারে পার্ট প্লে করে, একে বলা হয় অবতরণ । আত্মা উপর থেকে
আসে পার্ট প্লে । বাবার জন্মও দিব্য এবং অলৌকিক । বাবা নিজেই বলেন, আমাকে প্রকৃতির
আধার নিতে হয় । আমি এই শরীরে প্রবেশ করি । এই শরীর আমার জন্য নির্ধরিত করা হয়েছে
। এ এক অনেক বড়ই ওয়ান্ডারফুল খেলা । এই নাটকে প্রত্যেকেরই পার্ট নির্ধারিত রয়েছে
যা তারা প্লে করতে থাকে । ২১ জন্ম ধরে আবার এইভাবেই পার্ট প্লে করবে । তোমরা
পুরুষার্থের নম্বর অনুসারে এই স্বচ্ছ জ্ঞান পেয়েছো । বাবা তো মহারথীদের মহিমা করেন,
তাই না । এই যে দেখানো হয় কৌরব আর পাণ্ডবদের যুদ্ধ হয়েছিলো, এ সবই বানানো কথা ।
তোমরা এখন বুঝতে পারো যে, ওরা হলো শরীরের ডবল হিংসক, আর তোমরা হলে আত্মিক ডবল
অহিংসক । বাদশাহী নেওয়ার জন্য তোমরা দেখো কিভাবে বসে আছো । তোমরা জানো যে, বাবার
স্মরণে তোমাদের বিকর্মের বিনাশ হবে । তোমাদের এই আগ্রহ লেগেই থাকে । সমস্ত পরিশ্রম
স্মরণ করাতেই, তাই ভারতের এই প্রাচীন যোগের মহিমা আছে । বিদেশের মানুষও ভারতের এই
প্রাচীন যোগ শিখতে চায় । তারা মনে করে, সন্ন্যাসীরা আমাদের এই যোগ শেখাবে । বাস্তবে
সন্ন্যাসীরা এই যোগ কিছুই শেখান না । তাঁদের সন্ন্যাস হলো হঠযোগের । তোমরা হলে
প্রবৃত্তিমার্গের । তোমাদের শুরুর থেকেই রাজধানী ছিলো । এখন হলো অন্তিম সময় । এখন
তো পঞ্চায়েতী রাজ্য । দুনিয়াতে এখন অন্ধকার তো অনেক । তোমরা জানো যে এখন তো রক্তের
নাটকের খেলা হবে । এও এক খেলা দেখানো হয়, যা হলো অসীম জগতের কথা, কতো রক্ত বইবে ।
ন্যাচারাল ক্যালামিটিজ হবে । সকলের মৃত্যুও হবে । একে রক্ত গঙ্গার খেলা (খুনে নাহেক)
বলা হয় । এই নাটক দেখার জন্য খুবই সাহসের প্রয়োজন । ভীতুরা তো চট করে বেহুঁশ হয়ে
যাবে, এতে নির্ভয়তার খুবই প্রয়োজন । তোমরা তো শিব শক্তি, তাই না । শিব বাবা হলেন
সর্বশক্তিমান, আমরা তার থেকে শক্তি গ্রহণ করি, পতিত থেকে পবিত্র হওয়ার যুক্তি বাবাই
বলে দেন । বাবা সম্পূর্ণ সাধারণ রায় দেন - বাচ্চারা, তোমরা সতোপ্রধান ছিলে, এখন
তমোপ্রধান হয়েছো, বাবা এখন বলছেন - আমাকে স্মরণ করলে তোমরা পতিত থেকে পবিত্র,
সতোপ্রধান হয়ে যাবে । আত্মা যদি বাবার সঙ্গে যোগযুক্ত হয় তাহলে পাপ ভস্ম হয়ে যাবে
। বাবাই হলেন অথরিটি । চিত্রে দেখানো হয় - বিষ্ণুর নাভি থেকে ব্রহ্মার জন্ম । সেই
ব্রহ্মার দ্বারা বসে সব শাস্ত্র, বেদের রহস্য বোঝানো হয়েছে । তোমরা এখন জানো যে,
ব্রহ্মাই বিষ্ণু আর বিষ্ণুই ব্রহ্মা হন । ব্রহ্মার দ্বারা স্থাপনা করা হয়, তারপর
যে স্থাপনা হয়েছে তার পালন তো অবশ্যই করতে হবে, তাই না । এইসব খুব ভালোভাবে বোঝানো
হয়, যারা বুঝতে পারে তাদের এই খেয়াল থাকবে যে, এই আত্মিক জ্ঞান কিভাবে সকলেরই পাওয়া
উচিত । আমাদের কাছে অর্থ থাকলে আমরা কেন সেন্টার খুলবো না । বাবা বলেন, আচ্ছা, তোমরা
ভাড়াতেই বাড়ি নাও, সেখানে হসপিটাল কাম ইউনিভার্সিটি খোলো । যোগে হলো মুক্তি আর
জ্ঞানে হলো জীবনমুক্তি । দুই ধরণের অবিনাশী উত্তরাধিকার পাওয়া যায় । এতে কেবল তিন
পদ পৃথিবীর প্রয়োজন, আর কিছুই চাই না । তোমরা গড ফাদারলি ইউনিভার্সিটি খোলো । বিশ্ব
বিদ্যালয় বা ইউনিভার্সিটি, কথা তো একই হলো । এ মানুষ থেকে দেবতা হওয়ার কতো বড়
ইউনিভার্সিটি । মানুষ জিজ্ঞেস করবে, আপনাদের খরচ কিভাবে চলে? আরে, বি.কে দের বাবার
কতো সন্তান - সন্ততি, তোমরা জিজ্ঞেস করতে এসেছো । বোর্ডে দেখো কি লেখা আছে? এ হলো
বড়ই ওয়ান্ডারফুল নলেজ । বাবাও তো আশ্চর্যের, তাই না । তোমরা কিভাবে এই বিশ্বের
মালিক হও? শিব বাবাকে বলা হবে শ্রী - শ্রী, কারণ তিনি উঁচুর থেকেও উঁচু, তাই না ।
লক্ষ্মী - নারায়ণকে বলা হবে শ্রী লক্ষ্মী, শ্রী নারায়ণ । এ সবই খুব ভালোভাবে ধারণ
করার মতো কথা । বাবা বলেন যে, আমি তোমাদের রাজযোগ শেখাই । এই হলো সত্য - সত্য অমর
কথা । তিনি এক পার্বতীকে কখনোই অমর কথা শোনাবেন না । কতো মানুষ অমরনাথ দর্শনে যায়
। বাচ্চারা, তোমরা বাবার কাছে এসেছো রিফ্রেশ হতে । এরপরে তোমাদের সবাইকে বোঝাতে হবে,
রিফ্রেশ করতে হবে, সেন্টারও খুলতে হবে । বাবা বলেন যে, কেবল তিন পা পৃথিবী নিয়ে যদি
হসপিটাল আর ইউনিভার্সিটি খোলো তাহলে অনেকের কল্যাণ হবে । এতে খরচ তো কিছুই নেই । এক
সেকেণ্ডেই হেল্থ, ওয়েল্থ, হ্যাপিনেসের প্রাপ্তি হয় । বাচ্চার জন্ম হবে আর
উত্তরাধিকারী হয়ে যাবে । তোমাদেরও নিশ্চয় হয়েছে আর বিশ্বের মালিক হতে পারছো ।
এরপর সবই পুরুষার্থের উপর নির্ভর করে । আচ্ছা ।
মিষ্টি - মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা - পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ - সুমন আর সুপ্রভাত
। আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মারূপী বাচ্চাদের নমস্কার জানাচ্ছেন ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
অন্তিম রক্ত গঙ্গার দৃশ্য দেখার জন্য অনেক অনেক নির্ভয়, শিব শক্তি হতে হবে ।
সর্বশক্তিমান বাবার স্মরণে শক্তি গ্রহণ করতে হবে ।
২ ) পবিত্র হয়ে,
পবিত্র বানানোর সত্যিকারের আত্মিক/আধ্যাত্মিক সেবা করতে হবে । ডবল অহিংসক হতে হবে ।
অন্ধের লাঠি হয়ে সবাইকে ঘরের পথ বলে দিতে হবে ।
বরদান:-
আমি আর
আমার ভাব-কে সমাপ্ত করে সমানতা এবং সম্পূর্ণতার অনুভবকারী সত্যিকারের ত্যাগী ভব
প্রত্যেক সেকেন্ড,
প্রত্যেক সংকল্পে বাবা-বাবা স্মরণে থাকলে আমিত্ব ভাব সমাপ্ত হয়ে যাবে, যখন আমি নেই
তখন আমারভাব-ও নেই। আমার স্বভাব, আমার সংস্কার, আমার নেচার, আমার কাজ বা ডিউটি,
আমার নাম, আমার নেশা... যখন আমি আর আমার ভাব সমাপ্ত হয়ে যায় তখনই আসে সমানতা আর
সম্পূর্ণতা। এই আমি আর আমারভাবের ত্যাগই হল সবথেকে বড় সূক্ষ্ম ত্যাগ। এই
আমিত্বভাবের অশ্বকে অশ্বমেধ যজ্ঞে স্বাহা করো, তখন অন্তিম আহুতি পড়বে আর বিজয়ের
ডঙ্কা বাজবে।
স্লোগান:-
হাঁ-জি
করে সহযোগের হাত বাড়িয়ে দেওয়া অর্থাৎ আশীর্বাদের মালা পরিধান করা।
নিজের শক্তিশালী
মন্সার দ্বারা সকাশ দেওয়ার সেবা করো :-
মন্সা দ্বারা সকাশ
তখন দিতে পারবে যখন নিরন্তর একরস স্থিতিতে স্থিত হওয়ার অভ্যাস থাকবে। এরজন্য সবার
আগে ব্যর্থ সংকল্পগুলিকে শুদ্ধ সংকল্পে পরিবর্তন করো। তারপর মায়ার দ্বারা আগত অনেক
প্রকারের বিঘ্নগুলিকে ঈশ্বরীয় লগণের আধারে সমাপ্ত করো। এক বাবা দ্বিতীয় কেউ নেই এই
পাঠ দ্বারা একাগ্রতার শক্তিকে বৃদ্ধি করো।