27.09.2024
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
স্মরণে থাকার পুরুষার্থ (পরিশ্রম) তোমাদের সকলেরই করা উচিত, নিজেকে আত্মা অনুভব করে
আমাকে অর্থাৎ পরমাত্মা বাবাকে স্মরণ করলে আমিই তোমাদের সকল পাপ থেকে মুক্ত করে দেবো"
প্রশ্নঃ -
সকলের সদ্গতির
স্থান কোনটি - যার মহত্ত্বের কথা সমগ্র দুনিয়াই জানতে পারবে?
উত্তরঃ
আবু ভূমি হলো
সকলের সদ্গতির স্থান। (বোর্ডে) ব্রহ্মাকুমারীসের পাশে ব্র্যাকেটে তোমরা লিখতে পারো
যে - এটাই সর্বোত্তম তীর্থস্থান। সমগ্র দুনিয়ার সদগতি এখান থেকেই হয়। সকলেরই
সদ্গতিদাতা বাবা এবং আদম (ব্রহ্মা) এখানে বসে সকলের সদ্গতি করেন। আদম অর্থাৎ তিনিও
মানব, দেবতা নয়। ওনাকে ভগবানও বলা চলে না ।
ওম্ শান্তি ।
দু-বার ওম্
শান্তি কেননা এক হলো বাবার, দ্বিতীয় হলো দাদার। দু'জনের আত্মা রয়েছে নি! উনি হলেন
'পরম আত্মা', আর ইনি 'আত্মা'! সেই উঁনিই তোমাদের উদ্দেশ্যে জানাচ্ছেন যে, উঁনি আসলে
সুদূর পরমধামের বাসিন্দা। ইনিও সেই একই কথা জানাচ্ছেন। তাই বাবা যেমন বলেন - ওম্
শান্তি, ইনিও তেমনই বলেন - ওম্ শান্তি। বাচ্চারাও তেমনই বলে - ওম্ শান্তি! অর্থাৎ
আমরা আত্মারা সবাই শান্তিধাম নিবাসী। এখানে আলাদা আলাদা হয়ে বসবে। একজনের অঙ্গ যেন
অপরজনের অঙ্গ স্পর্শ না করে। যেহেতু প্রত্যেকেরই নিজের নিজের অবস্থা ও যোগের
রাত-দিনের প্রভেদ থাকে। কেউ হয়তো খুব ভালো স্মরণ করে, কেউ একেবারেই স্মরণ করে না।
তো যারা একেবারেই স্মরণ করে না - তারা হলো পাপ আত্মা, তমোপ্রধান। আর যারা স্মরণ করে
তারা হলো পুণ্য আত্মা, সতোপ্রধান। অনেকটাই পার্থক্য হয়ে যায় তাই না! বাড়ীতে সবাই
একসাথেই থাকলেও, তফাৎ তো থাকবেই। সেইজন্যই ভগবতে অসুরের নাম গুলি করা হয়েছে। যা
কিন্তু আসলে এই বর্তমান সময় কালেরই। তাই বাবা বসে বাচ্চাদেরকে বোঝাচ্ছেন - এ'সব হলো
ঈশ্বরীয় চরিত্র, যার কথা ভক্তি-মার্গে গাওয়া হয় ।সত্যযুগে তো কিছুই মনে থাকবে না,
সব ভুলে যাবে। বাবা এখনই শিক্ষা প্রদান করছেন। সত্যযুগে তো এইসব একদমই ভুলে যাবে,
পুনরায় দ্বাপরে শাস্ত্র রচনা করবে আর রাজযোগ শেখানোর চেষ্টা করবে। কিন্তু রাজযোগ তো
শেখাতে পারবে না। সেটা তো বাবা যখন সম্মুখে আসেন তখনই এসে শেখান। তোমরা জানো যে
কিভাবে বাবা রাজযোগ শেখাচ্ছেন। পুনরায় পাঁচ হাজার বছর পর এসে এইভাবেই বলবেন - মিষ্টি
মিষ্টি আত্মিক বাচ্চারা, এইভাবে কখনও কোনও মানুষ মানুষকে বলতে পারবে না। আর না
দেবতারা দেবতাদেরকে বলবে! এক আত্মিক পিতাই আত্মিক বাচ্চাদেরকে বলেন - এক বার পার্ট
প্লে করলে পুনরায় পাঁচ হাজার বছর পর এই পার্ট প্লে করবে, কেননা পুনরায় তোমরা সিঁড়ি
দিয়ে নামতে থাকবে, তাই না। তোমাদের বুদ্ধিতে এখন আদি-মধ্য-অন্তের রহস্যের জ্ঞান আছে।
তোমরা জানো যে সেটা হল শান্তিধাম অথবা পরমধাম। আমরা ভিন্ন-ভিন্ন ধর্মের আত্মারা
সবাই নম্বরের ক্রমানুসারে সেখানে থাকি, নিরাকারী দুনিয়াতে। যেরকম আকাশে স্টার্স (তারামন্ডল)
দেখে থাকো - কিভাবে দাঁড়িয়ে থাকে, এছাড়া আর কিছুই দেখা যায় না। উপরে কোনও জিনিস নেই।
ব্রহ্ম তত্ব আছে। এখানে তোমরা ধরিত্রীর উপর দাঁড়িয়ে রয়েছো, এটা হলো কর্মক্ষেত্র।
এখানে এসে শরীর ধারণ করে কর্ম করে থাকো। বাবা বুঝিয়েছেন যে তোমরা যখন আমার থেকে
উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করো তখন ২১ জন্ম তোমাদের কর্ম অকর্ম হয়ে যায় কেননা সেখানে রাবণ
রাজ্যই থাকে না। সেটা হল ঈশ্বরীয় রাজ্য, যেটা এখন ঈশ্বর স্থাপন করছেন। বাবা
বাচ্চাদেরকে বোঝাচ্ছেন - শিববাবাকে স্মরণ করে স্বর্গের মালিক হও। স্বর্গ শিববাবা
স্থাপন করছেন তাই না। তাই শিববাবাকে আর সুখধামকে স্মরণ করো। সবার প্রথমে শান্তিধামকে
স্মরণ করো তাহলে চক্রও স্মরণে এসে যাবে। বাচ্চারা ভুলে যায়, এইজন্য বারংবার স্মরণ
করিয়ে দিতে হয়। হে মিষ্টি মিষ্টি বাচ্চারা, নিজেকে আত্মা মনে করো আর বাবাকে স্মরণ
করো তাহলে তোমাদের সব পাপ ভষ্ম হয়ে যাবে। বাবা প্রতিজ্ঞা করছেন যে তোমরা যদি আমাকে
স্মরণ করো তাহলে তোমাদেরকে সকল পাপ থেকে মুক্ত করে দেবো। বাবা-ই হলেন পতিত-পাবন
সর্বশক্তিমান অথোরিটি, তাঁকে ওয়ার্ল্ড অলমাইটি অথোরিটি বলা হয়ে থাকে। তিনি সমগ্র
সৃষ্টির আদি-মধ্য-অন্তকে জানেন। বেদ-শাস্ত্র ইত্যাদি সবকিছু জানেন, তবেই তো বলেন যে
এতে কোনও সার নেই। গীতাতেও কোনও সার নেই। যদিও গীতা হলো সর্ব শাস্ত্রের শিরোমণি
মাতা-পিতা, বাদবাকি সব হলো বাচ্চা। যেরকম সর্ব প্রথম হল প্রজাপিতা ব্রহ্মা, বাকি
সবাই হলো তার সন্তান । প্রজাপিতা ব্রহ্মাকে আদম বলা হয়। আদম মানে আদমী। মানুষ, তাই
না, তাই এনাকে দেবতা বলা হয় না। অ্যাডমকে আদম বলা হয়। ভক্তরা ব্রহ্মা অ্যাডমকে দেবতা
বলে দেয়। বাবা বসে বোঝাচ্ছেন অ্যাডম অর্থাৎ মানুষ। না দেবতা, না ভগবান।
লক্ষ্মী-নারায়ণ হলেন দেবতা। ডিটিজ্ম (দৈবী রাজ্য) থাকে প্যারাডাইসে (স্বর্গে)। নতুন
দুনিয়া আছে তাই না। সেটা হলো ওয়ান্ডার অফ দি ওয়ার্ল্ড। বাদবাকি সেইসব হলো মায়ার
ওয়ান্ডার। দ্বাপরের পর থেকে মায়ার ওয়ান্ডার্স তৈরী হয়। ঈশ্বরীয় ওয়ান্ডার হলো -
হেভেন, স্বর্গ, যেটা বাবা-ই স্থাপন করেন। এখন স্থাপন হচ্ছে। এই যে দিলওয়াড়া মন্দির,
এর ভ্যালু সম্বন্ধে কারোরই কিছু জানা নেই। সাধারণ মানুষ যাত্রা করতে যায়, তো সবথেকে
ভালো তীর্থস্থান হলো এটা। তোমরা লিখে থাকো যে - ব্রহ্মাকুমারী ঈশ্বরীয়
বিশ্ব-বিদ্যালয়, আবু পর্বত। তো ব্র্যাকেটে এটাও লিখতে হবে - (সর্বোত্তম তীর্থ
স্থান) কেননা তোমরা জানো যে সকলের সদ্গতি এখান থেকেই হয়। এটা কেউ জানে না। যেরকম
সকল শাস্ত্রের শিরোমণি হল গীতা সেরকমই সকল তীর্থের মধ্যে শ্রেষ্ঠ তীর্থ হলো আবু।
তাহলে মানুষ পড়বে, অ্যাটেনশন যাবে। সমগ্র বিশ্বের তীর্থগুলির মধ্যে এটা হলো সবথেকে
বড় তীর্থ, যেখানে বাবা বসে সকলের সদ্গতি করেন। তীর্থ তো অনেক হয়ে গেছে। গান্ধীর
সমাধি স্থলকেও তীর্থ মনে করে। সবাই গিয়ে সেখান ফুল ইত্যাদি প্রদান করে, তাদের কিছুই
জানা নেই। তোমরা বাচ্চারা জানো - তাই এখানে বসে তোমাদের হৃদয়ের অন্দরে বড়ই খুশী হওয়া
চাই। আমরা হেভেনের স্থাপনা করছি। এখন বাবা বলছেন - নিজেকে আত্মা মনে করে আমাকে
স্মরণ করো। এই পড়াও খুব সহজ। কিছুই খরচা করতে হয় না। তোমাদের মাম্মার এক পয়সা খরচা
হয়েছে? বিনা কড়ি খরচ করে কতো হুশিয়ার নম্বর ওয়ান হয়ে গেছে। রাজযোগিনী হয়ে গেছে তাই
না। মাম্মার মতো আর কেউ হতে পারেনি।
দেখো, আত্মাদেরকেই
বাবা বসে পড়াচ্ছেন। আত্মাদেরই রাজ্য প্রাপ্ত হয়, আত্মারাই রাজ্য হারিয়েছে। এত ছোটো
আত্মা কতো কাজ করে! খারাপের থেকেও খারাপ কাজ হলো বিকারে যাওয়া। আত্মা ৮৪ জন্মের
পার্ট প্লে করে। ছোটো আত্মার মধ্যে কতো শক্তি রয়েছে! সমগ্র বিশ্বের উপরে রাজত্ব করে।
এই দেবতাদের আত্মার মধ্যে কতো শক্তি! প্রত্যেক ধর্মের মধ্যে নিজস্ব শক্তি থাকে তাই
না। খ্রীষ্টান ধর্মে কতো শক্তি । আত্মার মধ্যে শক্তি রয়েছে, তাই তো আত্মা শরীরের
দ্বারা কর্ম করে। আত্মাই এখানে এসে এই কর্মক্ষেত্রে কর্ম করে। সেখানে খারাপ কর্তব্য
হয় না। আত্মা বিকারী মার্গে যায়ই তখন, যখন রাবণ রাজ্য হয়। মানুষ তো বলে দেয় যে
বিকার সর্বদাই আছে। তোমরা বোঝাতে পারো যে সেখানে রাবনরাজ্যই নেই তো বিকার কিভাবে হবে!
সেখানে যোগবল থাকবে। ভারতের রাজযোগ সুপ্রসিদ্ধ। অনেকেই শিখতে চায় কিন্তু যখন তোমরা
শেখাবে। আর তো কেউ শেখাতে পারবে না। যেরকম মহর্ষি ছিলেন, কত পরিশ্রম করতেন রাজযোগ
শেখানোর জন্য। কিন্তু দুনিয়ার মানুষ থোড়াই জানতো যে এই হঠযোগী রাজযোগ কিভাবে
শেখাবেন? চিন্মিয়ানন্দের কাছে কতো মানুষ যায়, একবার যদি সে বলে দেয় যে সত্যিকারের
ভারতের প্রাচীন রাজযোগ বি.কে রা ছাড়া আর কেউ শেখাতে পারবে না তো ব্যাস। কিন্তু এরকম
নিয়ম নেই যে এখনই এই আওয়াজ উঠবে। সবাই থোড়াই বুঝবে। অনেক পরিশ্রম করতে হবে, শেষে
মহিমাও হবে, বলে যে - অহো প্রভু, অহো শিববাবা তোমার লীলা। এখন তোমরা বুঝে গেছো যে
তোমরা ছাড়া বাবাকে সুপ্রীম বাবা, সুপ্রীম টিচার, সুপ্রীম সদ্গুরু আর কেউ বুঝতে পারে
না। এখানেও অনেকে আছে, যাদেরকে চলতে-চলতে মায়া হয়রান করে দেয় তখন একদম অবুঝ হয়ে পড়ে।
লক্ষ্য অনেক উঁচু। এটা হলো যুদ্ধের ময়দান, এখানে মায়া অনেক বিঘ্ন ঘটায়। দুনিয়ার লোক
বিনাশের জন্য তৈরী করছে। তোমরা এখানে ৫ বিকারগুলিকে জয় করার জন্য পুরুষার্থ করছো।
তোমরা বিজয়ের জন্য, তারা বিনাশের জন্য পুরুষার্থ করছে। দুটি কাজ একসাথে হবে, তাই
না। এখনও সময় আছে। আমাদের রাজ্য থোড়াই স্থাপন হয়েছে। রাজা, প্রজা এখন সব তৈরী হবে।
তোমরা অর্ধেক কল্পের জন্য বাবার থেকে উত্তরাধিকার গ্রহণ করছো। এছাড়া মোক্ষ তো কারোর
প্রাপ্ত হয় না। দুনিয়ার মানুষ যদিও বলে যে অমুক ব্যক্তি মোক্ষ প্রাপ্ত করেছে,
মৃত্যুর পর সে থোড়াই জানতে পারবে যে কোথায় গেছে! এমনিই তারা গল্প বানিয়ে বলে দেয়।
তোমরা জানো যে, যারা
শরীর ত্যাগ করছে তারা পুনরায় অবশ্যই শরীর ধারণ করবে (অর্থাৎ জন্ম গ্রহণ করবে)। কেউই
মোক্ষ পাবে না। এমন নয় যে, জলের বুদবুদ যেভাবে জলেই মিশে যায় সেইরকম আত্মা
পরমাত্মায় লীন হয়ে যায়। বাবা বলছেন - এই শাস্ত্র ইত্যাদি হল সব ভক্তিমার্গের সামগ্রী।
বাচ্চারা তোমরা সম্মুখে শুনছো। গরম-গরম হালুয়া খাচ্ছো (অর্থাৎ ডাইরেক্ট বাবার থেকে
মুরলী শুনছো)। সবথেকে বেশী গরম হালুয়া কে খায়? (ব্রহ্মা) ইনি তো একদম পাশেই বসে
আছেন। শোনার সাথে-সাথেই ধারণ করেন তারপর ইনিই উঁচুপদ পাবেন। সূক্ষ্ম বতনে, বৈকুন্ঠে
এনারই সাক্ষাৎকার করে। এখানেও ওনাকেই সবাই দেখে এই চোখ দিয়ে। বাবা তো সবাইকে
পড়াচ্ছেন। বাকী থাকলো স্মরণের পরিশ্রম। স্মরণে থাকা যেরকম তোমাদের ডিফিকাল্ট লাগে,
সেইরকম এনারও লাগে। এতে কোনও কৃপা করার কথা নেই। বাবা বলছেন আমি লোন নিয়েছি, তার
হিসেব নিকেশ শোধ করে দেবো। এছাড়া স্মরণে থাকার পুরুষার্থ তো এনাকেও করতে হবে।
বুঝতেও পারি - (শিববাবা) পাশেই বসে আছেন। বাবাকে আমি (ব্রহ্মা) স্মরণ করি, তথাপি
ভুলে যাই। সবথেকে বেশী পরিশ্রম এনাকে (ব্রহ্মাকে) করতে হয়। যু্দ্ধের ময়দানে যে
মহারথী শক্তিবান হয়, যেরকম হনুমানের উদাহরণ দেয়, তো তাকেই মায়া পরীক্ষা নিয়েছিল
কেননা সে মহাবীর ছিল। যতবেশী শক্তিবান ততই বেশী মায়া পরীক্ষা নেয়। তুফানও বেশী আসে।
বাচ্চারা লেখে যে বাবা আমাদের এই-এই হয়। বাবা বলেন এখন তো সবকিছুই হবে। বাবা
প্রতিদিন বোঝাচ্ছেন - সতর্ক থাকো। লেখে যে - বাবা, মায়া অনেক তুফান নিয়ে আসে। কেউ
কেউ দেহ-অভিমানী হয় তাই বাবাকে বলে না। এখন তোমরা অত্যন্ত সুবুদ্ধিসম্পন্ন হচ্ছো।
আত্মা পবিত্র হলে শরীরও পবিত্র প্রাপ্ত হয়। আত্মা কতই চমকপ্রদ হয়ে যায়। প্রথমে তো
গরীবরাই জ্ঞান নেবে। বাবাকেও তো গরীবের ভগবান বলা হয় তাই না। বাকীরা তো দেরীতে আসবে।
তোমরা বুঝতে পারো যে যতক্ষণ ভাই-বোন না হতে পারবে, ততক্ষণ ভাই-ভাই কিভাবে হবে।
প্রজাপিতা ব্রহ্মার সন্তান তো ভাই-বোন হল তাই না। পুনরায় বাবা বোঝান যে নিজেদেরকে
ভাই-ভাই মনে করো। এটা হলো শেষ সম্বন্ধ, পুনরায় উপরে গিয়েও ভাইদের সাথে মিলিত হবে।
পুনরায় সত্যযুগে নতুন সম্বন্ধ শুরু হবে। সেখানে শ্যালক, কাকা, মামা ইত্যাদি এত
সম্বন্ধ হবে না। সম্বন্ধ অনেক হালকা হবে। তারপর ধীরে ধীরে বৃদ্ধি হতে থাকবে। এখন তো
বাবা বলছেন যে নিজেদেরকে ভাই-বোনও নয়, ভাই-ভাই মনে করতে হবে। নাম-রূপ থেকেও বেরিয়ে
যেতে হবে। বাবা ভাইদেরকেই (আত্মাদের) পড়াচ্ছেন। প্রজাপিতা ব্রহ্মা আছেন তাই তোমরা
ভাই-বোন হয়েছো। শ্রীকৃষ্ণ তো নিজেই হলো বাচ্চা। সে কিভাবে ভাই-ভাই বানাবে। গীতাতেও
এই কথাটি নেই। এই জ্ঞান হলো সবার থেকে আলাদা। ড্রামাতে সবকিছু পূর্ব নির্ধারিত আছে।
এক সেকেন্ডের পার্ট অন্য সেকেন্ডের সাথে এক হবে না। কত মাস, কত ঘন্টা, কত দিন
অতিবাহিত হচ্ছে, ৫ হাজার বছর পর পুনরায় হবে। কম বুদ্ধি যুক্ত আত্মারা তো এতটাও ধারণা
করতে পারবে না এইজন্য বাবা বলছেন এ তো খুব সহজ - নিজেকে আত্মা মনে করো, অসীম জগতের
বাবাকে স্মরণ করো। পুরানো দুনিয়ার বিনাশও হবে। বাবা বলছেন আমি তখনই আসি যখন সঙ্গম
হয়। তোমরাই দেবী-দেবতা ছিলে। এটাও জানো যে যখন এনাদের রাজ্য ছিল তখন আর অন্য কোনও
ধর্ম ছিলো না। এখন তো এনাদের রাজ্য নেই। আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
এখন হলো অন্তিম সময়, বাড়ি ফিরে যেতে হবে, সেইজন্য নিজের বুদ্ধি নাম-রূপ থেকে বের করে
দিতে হবে। আমরা আত্মারা হলাম ভাই-ভাই - এই অভ্যাস করতে হবে। দেহ-অভিমানে আসবে না।
২ ) প্রত্যেকের স্থিতি
আর যোগের মধ্যে রাত-দিনের পার্থক্য রয়েছে, সেইজন্য আলাদা-আলাদা হয়ে বসতে হবে।
কারোর শরীরের সাথে যেন স্পর্শ না হয়। পুণ্য আত্মা হওয়ার জন্য স্মরণ করার পরিশ্রম
করতে হবে।
বরদান:-
বাবার
ভালোবাসায় নিজের মূল দুর্বলতাগুলিকে সমর্পণ করে দেওয়া জ্ঞানী তু আত্মা ভব
বাপদাদা দেখছেন যে
এখনও পর্যন্ত পাঁচটি বিকারেরই ব্যর্থ সংকল্প মেজোরিটির মধ্যে চলছে। জ্ঞানী তু
আত্মাদের মধ্যেও কখনও কখনও নিজের গুণ বা বিশেষত্বের অভিমান এসে যায়। প্রত্যেকে
নিজের মূল দুর্বলতা বা মূল সংস্কারকে জানে। সেই দুর্বলতাগুলিকে বাবার ভালোবাসায়
সমর্পন করে দেওয়া - এটাই হলো তার প্রমাণ। স্নেহী বা জ্ঞানী তু আত্মারা বাবার
ভালোবাসায় ব্যর্থ সংকল্পকেও সমর্পণ করে দেয়।
স্লোগান:-
স্বমানের সিটের উপর স্থিত থেকে সকলকে সম্মান প্রদানকারী মাননীয় আত্মা ভব।