27.09.2025
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
তোমরা এখন সত্যিকারের পাঠশালায় এসেছো, সৎসঙ্গও হলো এটাই, এখানে তোমরা সত্য-পিতার
সঙ্গ পেয়েছো, যিনি তোমাদের পার করে দেন"
প্রশ্নঃ -
হিসাব-নিকাশের
খেলায় মানুষের বোধ-বুদ্ধি আর তোমাদের বোধ-বুদ্ধির মধ্যে কি পার্থক্য রয়েছে?
উত্তরঃ
মানুষ মনে করে,
এই যে দুঃখ-সুখের খেলা চলছে, এই দুঃখ-সুখ সবকিছু পরমাত্মাই দেন আর বাচ্চারা, তোমরা
জানো যে, এ হলো প্রত্যেকের কর্মের হিসেবের খেলা। বাবা কাউকে দুঃখ দেন না। তিনি
আসেনই সুখের মার্গদর্শন করাতে। বাবা বলেন - বাচ্চারা, আমি কাউকে দুঃখী করিনি। এ হলো
তোমাদেরই কর্মের ফল।
গীতঃ-
এ'পাপের দুনিয়া
থেকে কোথাও দূরে নিয়ে চল....
ওম্ শান্তি ।
মিষ্টি-মিষ্টি
আত্মা-রূপী বাচ্চারা গান শুনেছে। কাকে আবাহন করে? বাবাকে। বাবা এসো, পাপের এই
কলিযুগীয় দুনিয়া থেকে সত্যযুগীয় পুণ্যের দুনিয়ায় নিয়ে চলো। এখন সকল জীবাত্মারাই
কলিযুগীয়। তাদের বুদ্ধি উপরে চলে যায়। বাবা বলেন - আমি যা, যেমন সেরূপে কেউই আমাকে
চেনে না। ঋষি, মুনি ইত্যাদিগনও বলেন, আমরা রচয়িতা মালিক অর্থাৎ অসীম জগতের পিতা এবং
তাঁর অসীম জগতের রচনার আদি-মধ্য-অন্তকে জানি না। আত্মারা যেখানে থাকে তা হলো ব্রহ্ম
মহাতত্ত্ব, যেখানে সূর্য, চন্দ্র ইত্যাদি থাকে না। না মূললোকে, না সূক্ষ্মলোকে।
এছাড়া এই ব্রহ্মান্ডে আলো ইত্যাদি সবকিছু তো চাই, তাই না! এই ব্রহ্মান্ডকে আলোকিত
করে - রাতে চন্দ্র-তারা, দিনে সূর্য। এগুলি হলো আলো। এ'সমস্ত আলোক থাকতেও বলা হয়
অন্ধকার। তবুও রাতে আলো জ্বালাতে হয়। সত্যযুগ-ত্রেতাকে বলা হয় দিন আর ভক্তিমার্গকে
বলা হয় রাত। এও বুঝবার মতন বিষয়। নতুন দুনিয়া পুনরায় পুরানো অবশ্যই হবে। পুনরায়
নতুন যখন হবে তখন পুরানোর অবশ্যই বিনাশ হবে। এ হলো অসীম জগতের দুনিয়া। রাজা
ইত্যাদিদের মহলও অনেক বড়-বড় হয়। এ হলো অসীম জগতের ঘর, ব্রহ্মান্ড অথবা স্টেজ, একে
কর্মক্ষেত্রও বলা হয়। কর্ম তো অবশ্যই করতে হবে। সকল মানুষেরই এ হলো কর্মক্ষেত্র।
সকলকে কর্ম করতেই হবে, নিজ ভূমিকা পালন করতেই হবে। প্রত্যেক আত্মার ভূমিকা প্রথম
থেকেই নির্ধারিত। তোমাদের মধ্যেও কেউ-কেউ রয়েছে যারা একথা ভালভাবে বুঝতে পারে।
বাস্তবে এ হলো গীতা পাঠশালা। পাঠশালায় কি কখনো বৃদ্ধরা পড়ে? এখানে বৃদ্ধ, যুবকাদি
সকলেই পড়ে। বেদাদির কোনো পাঠশালা রয়েছে এমন বলা হবে না। সেখানে কোনো এইম অবজেক্ট
নেই। আমরা এত বেদ, শাস্ত্রাদি পড়ি, এরফলে আমরা কি হবো - তা কেউ জানে না। অন্য যেকোন
সৎসঙ্গে এইম অবজেক্ট কিছু থাকে না। এখন তো এ'সবগুলিকে সৎসঙ্গ বলতেও লজ্জাবোধ হয়।
সত্য হলেন একমাত্র বাবা-ই, যাঁর উদ্দেশ্যে বলা হয়ে থাকে 'সৎসঙ্গে স্বর্গবাস....
কুসঙ্গে নরকবাস...। কুসঙ্গ হলো কলিযুগীয় মানুষের। সৎ-এর সঙ্গ একের কাছেই রয়েছে(বাবা)।
এখন তোমাদের আশ্চর্য লাগে। সমগ্র সৃষ্টির আদি-মধ্য-অন্তের জ্ঞান বাবা কিভাবে দেন,
তোমাদের খুশী হওয়া উচিত। তোমরা সত্যিকারের পাঠশালায় বসে রয়েছো। আর সব হলো অসত্য
পাঠশালা, সে'সব সৎসঙ্গাদি থেকে কেউই কিছু তৈরী হয় বেরোয় না। স্কুল-কলেজাদি থেকে
তবুও কিছু তৈরী হয়ে বেরোয় কারণ তারা পড়ে। বাকি আর কোথাও কোনো পড়া নেই। সৎসঙ্গকে পড়া
বলা যাবে না। শাস্ত্রাদি পড়ে আবার দোকান খুলে বসে, পয়সা উপার্জন করে। সামান্য
গ্রন্থ(গুরু গ্রন্থসাহেব) পড়ে, গুরুদ্বার খুলে বসে পড়ে। কত গুরুদ্বার খোলে। গুরুর
দ্বার অর্থাৎ ঘর বলা হয়, তাই না! দ্বার খোলে, সেখানে গিয়ে শাস্ত্রাদি পড়ে। তোমাদের
গুরুদ্বারও রয়েছে - মুক্তি-জীবনমুক্তি ধাম, সদ্গুরুর দ্বার। সদ্গুরুর নাম কী?
অকালমূর্তি। সদ্গুরুকে অকালমূর্তি বলা হয়, তিনি এসে মুক্তি-জীবনমুক্তির দ্বার খোলেন।
তিনি অকালমূর্তি, তাই না! যাঁকে কাল গ্রাস করতে পারে না। আত্মা হলো বিন্দু, তাকে
কাল কিভাবে গ্রাস করবে? আত্মা তো সেই শরীর পরিত্যাগ করে পালিয়ে যায়। মানুষ কি জানে
যে, এক পুরানো শরীর পরিত্যাগ করে অন্য ধারণ করবে, এতে কান্নাকাটির করার কি প্রয়োজন?
না তা জানে না। একথা তোমরা জানো যে - ড্রামা অনাদি, পূর্ব-নির্ধারিত। প্রত্যেককে (নিজ)
পার্ট প্লে করতেই হবে। বাবা বুঝিয়েছেন - সত্যযুগে হলো নষ্টমোহ। মোহজীতের কাহিনীও
রয়েছে, তাই না! পন্ডিতেরা শোনায়, মাতারাও শুনে-শুনে পুনরায় গ্রন্থ রেখে বসে পড়ে -
শোনানোর জন্য। অনেক মানুষ গিয়ে শোনে। একে বলে কানরস। ড্রামার প্ল্যান অনুসারে মানুষ
বলে, এতে আমাদের কি দোষ? বাবা বলেন - তোমরা আমাকে আহ্বান করে বলো যে এই দুঃখের
দুনিয়া থেকে নিয়ে যাও। এখন আমি এসেছি তাহলে আমার কথা তো শোনা উচিত, তাই না! বাবা
বাচ্চাদের বসে বোঝান যে সঠিক মত যখন পেয়েছো তখন তা গ্রহণ করা উচিত, তাই না!
তোমাদেরও কোনো দোষ নেই। এও ছিল ড্রামা। রাম-রাজ্য, রাবণ-রাজ্যের খেলা
পূর্ব-নির্ধারিত। খেলায় যদি কেউ পরাজিত হয় তবে তা কি তার দোষ, না তা নয়। জয়-পরাজয়
তো আছেই, এখানে লড়াই-এর কোন কথা নেই। তোমাদের রাজত্ব ছিল। এও তোমরা পূর্বে জানতে
না, এখন তোমরা জেনেছো যে, যারা সার্ভিসেবেল মহিমা কেবল তাদেরই হয়। দিল্লীতে
সর্বাপেক্ষা জ্ঞানের খ্যাতনামা শিক্ষাদাতা কে? তৎক্ষনাৎ নাম নেওয়া হয় জগদীশের।
তোমাদের জন্য ম্যাগাজিনও বেরোয়। তাতেই সবকিছু চলে আসে। অনেক প্রকারের পয়েন্টস্ লেখে,
বৃজমোহনও লেখে। লেখা কি কোনো মাসির বাড়ী(সহজ কাজ)! না তা নয়। অবশ্যই বিচার-সাগর
মন্থন করে, ভাল সার্ভিস করে। কত মানুষ পড়ে খুশী হয়। বাচ্চাদেরও রিফ্রেশমেন্ট হয়।
কেউ-কেউ প্রদর্শনীতে খুব মাথা চাপড়াতে থাকে, কেউ কর্মবন্ধনে আবদ্ধ হয়ে পড়ে, তাই
তাদের এতটা তুলে আনা সম্ভবপর হয় না। একেও বলা হবে ড্রামা, অবলাদের উপর অত্যাচারের
ভূমিকাও ড্রামায় রয়েছে। এরকম ভূমিকা কেন পালন করা হয়, এই প্রশ্ন উঠতেই পারে না। এই
অনাদি ড্রামাও পূর্ব-নির্ধারিত। একে কিছু করতে পারা যাবে কি, না তা করতে পারবে না।
কেউ-কেউ বলে যে, আমি কি এমন অপরাধ করেছি যে এরকম পার্ট(ভাগ্য) পেয়েছি। এখানে
অপরাধের তো কোনো কথা নেই। এ হলো পার্ট। কোন না কোন অবলা তো নিমিত্ত হবেই, যাদের
জন্য দুঃখও হবে। এভাবে তো সকলেই বলবে যে, আমাদের পার্ট এরকম কেন ? না, এ হলো
পূর্ব-নির্ধারিত ড্রামা। পুরুষদের উপরও অত্যাচার হয়। এ'বিষয়ে কত সহনশীলতা রাখতে হয়।
অত্যন্ত সহনশীলতা আবশ্যক। মায়ার বিঘ্ন অনেক আসবে। বিশ্বের মালিকানা নাও তাই কিছু
পরিশ্রম তো করতেই হবে। ড্রামায় বিপর্যয়, মনোমালিন্য ইত্যাদি কত হয়। অবলাদের উপর
অত্যাচারের কথা লিখিত রয়েছে। রক্তের নদীও বইবে। সুরক্ষা কোথাও থাকবে না। এখনও
সেন্টারে সকালে ক্লাস করতে যাও। সময় এমন আসবে যে তোমরা বাইরে বেরোতেও পারবে না।
দিনে-দিনে সময় খারাপ হয়ে যাচ্ছে এবং যাবে। দুঃখের দিন অতি তীব্রতার সঙ্গে আসবে।
রোগভোগাদি হলে দুঃখ হয় তখন আবার ঈশ্বরকে স্মরণ করে, আবাহন করে। তোমরা এখন জানো যে,
অল্পদিন বাকি রয়েছে। পুনরায় আমরা নিজেদের শান্তিধাম, সুখধামে অবশ্যই যাব। জগতের তো
এ'সব জানা নেই। এখন তোমরা বাচ্চারা অনুভব করো, তাই না! এখন বাবাকে সম্পূর্ণভাবে জেনে
গেছো। তারা সকলে মনে করে, পরমাত্মা হলেন লিঙ্গাকৃতির। শিবলিঙ্গের পূজাও করে। তোমরাও
শিবের মন্দিরে যেতে, কখনও খেয়াল করেছো যে, শিবলিঙ্গ কি জিনিস? অবশ্যই তা জড়(মূর্তি)
তাহলে চৈতন্যও নিশ্চই হবে ! তাহলে এটা কী? ঈশ্বর হলেন রচয়িতা যিনি উপরে রয়েছেন।
ওঁনার চিহ্ন(প্রতিমূর্তি) রয়েছে শুধু পূজা করার জন্য। (তোমরা) পূজ্য হলে তখন আর এসব
জিনিস থাকবেই না। শিবকাশীর মন্দিরে যায়, কেউ কি জানে যে ঈশ্বর নিরাকার! আমরাও তাঁর
সন্তান। বাবার সন্তান হয়ে আমরা দুঃখী কেন ? বিচার-বিবেচনা করার মতন বিষয়, তাই না!
আত্মা বলে, আমরা পরমাত্মার সন্তান তবে আমরা দুঃখী কেন ? বাবা হলেন সুখপ্রদানকারী।
আবাহনও করা হয় - হে ঈশ্বর, আমাদের দুঃখ দূর করো। তিনি কিভাবে দূর করবেন? দুঃখ-সুখ এ
হলো সব নিজ কর্মের হিসাব। মানুষ মনে করে সুখের ফল সুখ, দুঃখের ফল দুঃখ যা পরমাত্মাই
দেন। তার উপরেই সব বর্তায়, কিন্তু বাবা বলেন, আমি কখনো দুঃখ দিই না। আমি আধাকল্পের
জন্য সুখ প্রদান করে যাই। এ হলো সুখ আর দুঃখের খেলা। যদি কেবল সুখের খেলাই চলতো তবে
তো ভক্তি ইত্যাদি কিছুই থাকতো না, ঈশ্বর মিলনের উদ্দেশ্যেই এই ভক্তি ইত্যাদি সব করা
হয়, তাই না! এখন বাবা বসে সম্পূর্ণ সমাচার শোনান। বাবা বলেন - বাচ্চারা, তোমরা কত
ভাগ্যশালী। সে'সকল ঋষি-মুনি ইত্যাদিদের কত নাম। তোমরা হলে রাজঋষি, তারা হলো হঠযোগ
ঋষি। ঋষি অর্থাৎ পবিত্র। তোমরা স্বর্গের রাজা হও তাই পবিত্র অবশ্যই হতে হবে।
সত্যযুগ-ত্রেতায় যাদের রাজ্য ছিল পুনরায় তাদেরই হবে। বাকিরা পশ্চাতে আসবে। তোমরা
এখন বলো যে, আমরা শ্রীমতানুসারে নিজেদের রাজ্য স্থাপন করছি। পুরানো দুনিয়ার বিনাশ
হতে সময় তো লাগবে, তাই না! সত্যযুগ আসবে, কলিযুগ যাবে।
জগৎ কত বৃহৎ। এক-একটি
শহর মানুষে ভরে রয়েছে। বিত্তবানেরা সমগ্র জগৎ পরিক্রমা করে। কিন্তু এখানে কেউ সমগ্র
জগতকে কেউ দেখতে পারে না। হ্যাঁ, সত্যযুগে দেখতে পারো কারণ সত্যযুগেই এক রাজ্য, অতি
অল্পসংখ্যক রাজা থাকবে, এখানে দেখো দুনিয়া কত বড়। এতবড় জগতের পরিক্রমা কে করবে?
ওখানে তোমাদের সমুদ্রে যাওয়ার দরকার নেই। ওখানে সীলন (শ্রীলঙ্কা), বার্মা ইত্যাদি
কি থাকবে? না, কিছুই থাকবে না। এই করাচীও থাকবে না। তোমরা সকলে মিষ্টি জলের নদীরধারে
বসবাস করো। ওখানে চাষবাস সবকিছুই হয়, সৃষ্টি তো অনেক বড়। ওখানে অতি অল্পসংখ্যক
মানুষই থাকে, পরে আবার তা বৃদ্ধি পেতে থাকে। পুনরায় সেখানে গিয়ে নিজেদের রাজ্য
স্থাপন করেছো। ধীরে-ধীরে তা গ্রাস করে নিয়েছে। নিজেদের রাজ্য স্থাপন করেছে। এখন
সকলকে সবকিছু পরিত্যাগ করতে হবে। একমাত্র ভারতই আছে, যে কারোর রাজ্য ছিনিয়ে নেয়নি
কারণ ভারত অহিংসক, তাই না ! ভারতই সমগ্র দুনিয়ার মালিক ছিল আর বাকি সব পরে এসেছে,
এবং যারা টুকরো-টুকরো করে নিয়ে গেছে। তোমরা কাউকে গ্রাস করোনি, ইংরেজরা গ্রাস করেছে।
তোমাদের অর্থাৎ ভারতবাসীদের বাবা বিশ্বের মালিক করে দেন। তোমরা কি কোথাও গেছো, না
যাওনি। বাচ্চারা, তোমাদের বুদ্ধিতে এ'সমস্ত কথা রয়েছে, বৃদ্ধারা (মাতারা) এতসব বুঝতে
পারে না। বাবা বলেন, ভালোই হয়েছে যে তোমরা কিছুই পড়োনি। এখানে লেখা-পড়া করা সমস্ত
বুদ্ধি নিষ্কাশিত করে দিতে হবে, কেবল একটি কথাই ধারণ করতে হবে - মিষ্টি বাচ্চারা,
বাবাকে স্মরণ করো। তোমরা বলতে তাই না! যে বাবা তুমি এলে আমরা তোমার হয়ে যাবো,
সমর্পিত হয়ে যাবো। তোমাকেও আমাদের কাছে সমর্পণ করতে হবে। এ হলো আদান-প্রদান, তাই
না! বিবাহের সময় স্ত্রী-পুরুষ পরস্পরকে হাতে লবণ দেয়। বাবাকেও বলে যে আমরা পুরানো
সবকিছু তোমায় দিয়ে দিই। মরতে তো হবেই, এ'সবকিছু শেষ হয়ে যাবে। তুমি (এ'সবকিছু)
পুনরায় আমাদের নতুন দুনিয়ায় দিও। বাবা আসেনই সকলকে নিয়ে যেতে। তিনি তো কাল, তাই না!
সিন্ধুপ্রদেশে বলা হতো - এ কেমন কাল যিনি সকলকে ভাগিয়ে নিয়ে যান। বাচ্চারা, তোমরা
তো খুশী হও। বাবা আসেনই নিয়ে যেতে। আমরা খুশী-খুশী আমাদের ঘরে চলে যাবো। সহনও করতে
হয়। ভাল-ভাল বড়-বড় ঘরের মাতারাও মার খায়। তোমরা সত্য-সত্যই উপার্জন করে থাকো। মানুষ
কি জানে! যে তারা হলো কলিযুগীয় শূদ্র সম্প্রদায়, না তারা জানে না। তোমরা হলে
সঙ্গমযুগীয়, পুরুষোত্তম হচ্ছো। তোমরা জানো যে, প্রথম স্থানাধিকারী পুরুষোত্তম হলেন
এই লক্ষ্মী-নারায়ণ, তাই না! পুনরায় ডিগ্রী হ্রাস পেতে থাকবে। উপর থেকে নীচে আসতে
থাকবে। পুনরায় ধীরে-ধীরে অধঃপতনে যাবে। এ'সময় সকলেই অধঃপতিত হয়েছে। (কল্প) বৃক্ষ
পুরানো হয়ে গেছে, কান্ডে পচন ধরেছে। এখন পুনরায় স্থাপনা হচ্ছে। ফাউন্ডেশন (ভিত)
নির্মিত হচ্ছে, তাই না! স্যাপলিং (চারাগাছ) কত ছোট হয়, পুনরায় তার থেকে কত বড়
বৃক্ষের বৃদ্ধি হয়ে যায়। এও (কল্প)বৃক্ষ, সত্যযুগের বৃক্ষ অনেক ছোট হয়। এখন বৃক্ষ
কত বড়। মনুষ্য-সৃষ্টির কত ভ্যারাইটি ফুল রয়েছে। একই বৃক্ষে কত ভ্যারাইটি রয়েছে।
বিভিন্ন মানুষের অনেক ধর্মের (কল্প)বৃক্ষ। একের চেহারা অপরের সঙ্গে মেলে না। এ হলো
পূর্ব-নির্ধারিত ড্রামা, তাই না! একইরকম এর পার্ট পরস্পর অর্থাৎ একে অপরের পার্ট
প্লে করতে পারে না। একে বলা হয় পূর্ব-নির্ধারিত, নেচার, অসীম জগতের ড্রামা, এখানেও
অনেক কৃত্রিম বস্তু রয়েছে। যে বস্তু রিয়েল হয় তা সমাপ্ত অর্থাৎ ব্যবহৃতও হয়ে যায়।
পুনরায় ৫ হাজার বছর পর তা বাস্তবায়িত হবে। কোন চিত্রাদি কি (রিয়্যাল চিত্রের)
প্রতিমূর্তি সদৃশ নির্মিত হয়েছে, না হয়নি। ব্রহ্মার চেহারাও তোমরা পুনরায় ৫ হাজার
বছর পরে দেখবে। ড্রামার এই রহস্যকে বোঝার জন্য অনেক বিশাল বুদ্ধির প্রয়োজন। আর কিছু
না বুঝলেও শুধুমাত্র একটি কথা বুদ্ধিতে রেখো - শিববাবা অদ্বিতীয়, দ্বিতীয় আর কেউ
নেই। একথা আত্মা বলে - বাবা, আমরা তোমাকেই স্মরণ করবো। এ তো সহজ, তাই না! হাতের
দ্বারা কর্ম করতে থাকো আর বুদ্ধি দ্বারা স্মরণ করতে থাকো। আচ্ছা।
মিষ্টি-মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা-রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
সহনশীলতার গুণ ধারণ করে মায়ার বিঘ্ন থেকে উত্তীর্ণ হতে হবে। অনেক বিপর্যয় আসবে,
অত্যাচার হবে - এমন সময়ে সহন করার জন্য বাবার স্মরণে নিমগ্ন থাকতে হবে, সত্যিকারের
উপার্জন করতে হবে।
২ ) বুদ্ধির বিশালতার
দ্বারা পূর্ব-নির্ধারিত ড্রামাকে সঠিকভাবে বুঝতে হবে, এই ন্যাচারাল ড্রামা
পূর্ব-নির্ধারিত তাই এখানে কোনো প্রশ্ন উঠতে পারে না। বাবা যে সঠিক মত অর্থাৎ
শ্রীমত দেন, সেই অনুসারেই চলতে হবে।
বরদান:-
মায়াজীত বিজয়ী হওয়ার সাথে সাথে পরোপকারী ভব
এখনও পর্যন্ত
স্বকল্যাণে অনেক সময় যাচ্ছে। এখন পরোপকারী হও। মায়াজীৎ বিজয়ী হওয়ার সাথে সাথে সর্ব
খাজানার বিধাতা হও অর্থাৎ প্রত্যেক খাজানাকে কাজে লাগাও। খুশীর খাজানা, শান্তির
খাজানা, শক্তির খাজানা, জ্ঞানের খাজানা, গুণের খাজানা, সহযোগ দেওয়ার খাজানা বিতরণ
করো আর বৃদ্ধি করো। যদি এখন বিধাতাভাব স্থিতির অনুভব করো অর্থাৎ পরোপকারী হও তাহলে
অনেক রাজ্য বিশ্ব রাজ্যঅধিকারী হতে পারবে।
স্লোগান:-
বিশ্ব
কল্যাণকারী হতে হলে নিজের সকল দুর্বলতাগুলিকে সদাকালের জন্য বিদায় দাও।
অব্যক্ত ঈশারা :- এখন
লগণের অগ্নিকে প্রজ্বলিত করে যোগকে জ্বালা রূপ বানাও
যেরকম দুর্গ বানানো
হয়, যে দুর্গের ভেতরে প্রজারা সেফ থাকে। এক রাজার জন্য কোঠরী বানায় না, দুর্গ বানায়।
তোমরা সবাইও নিজেদের জন্য, সাথীদের জন্য, অন্য আত্মাদের জন্য জ্বালারূপ স্মরণের
দুর্গ বানাও। স্মরণের শক্তির জ্বালা হবে তাহলে প্রত্যেক আত্মা সেফটি অনুভব করবে।