27.11.2024
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
লৌকিক জগতের এই সংসারের অবান্তর কথায় নিজের সময় নষ্ট কোরো না, তোমাদের বুদ্ধিতে
যেন সর্বদা রয়্যাল (রাজকীয়) চিন্তন চলতে থাকে"
প্রশ্নঃ -
কোন্ বাচ্চারা
বাবার প্রতিটি ডায়রেক্শনকে প্রয়োগে আনতে পারে?
উত্তরঃ
যারা
অন্তর্মুখী, যারা নিজেদের শো (প্রদর্শন) করায় না, যারা আত্মিক নেশায় থাকে, তারাই
বাবার প্রতিটি ডায়রেক্শনকে প্রয়োগে আনতে পারে । তোমাদের কখনোই মিথ্যা অহংকার আসা
উচিত নয় । অন্তরের স্বচ্ছতা যেন বজায় থাকে । আত্মা যেন খুব সুন্দর হয়, এক বাবার
প্রতিই তার যেন প্রকৃত প্রেম থাকে । কখনোই নুনজল অর্থাৎ ক্ষারের সংস্কার যেন না থাকে
। তখনই বাবার প্রতিটি ডায়রেক্শন প্রয়োগে পরিণত হবে ।
ওম্ শান্তি ।
বাচ্চারা কেবল
স্মরণের যাত্রাতেই বসে নেই । বাচ্চাদের এই নেশা আছে যে, আমরা শ্রীমতে নিজেদের
পরীস্থান স্থাপন করছি । তোমাদের এতটাই উৎসাহ আর খুশী থাকা উচিত । আবর্জনার শ্তূপের
সমস্ত অবান্তর কথা বের হয়ে যাওয়া উচিত । অসীম জগতের বাবাকে দেখে উল্লাস আসা উচিত ।
তোমরা যত স্মরণের যাত্রায় থাকবে, ততই তোমাদের ইম্প্রুভমেন্ট (উন্নতি) হতে থাকবে ।
বাবা বলেন যে, বাচ্চাদের জন্য আত্মিক বিশ্ববিদ্যালয় হওয়া উচিত । তোমাদের হলো
ওয়ার্ল্ড স্পিরিচুয়াল ইউনিভার্সিটি । তাহলে ওই ইউনিভার্সিটি কোথায়? ইউনিভার্সিটি
বিশেষভাবে স্থাপন করা হয় । এর সাথে অনেক বড় রয়্যাল হোস্টেলের প্রয়োজন । তোমাদের
চিন্তাধারা কতো রয়্যাল হওয়া উচিত । বাবার তো রাতদিন এই খেয়ালই থাকে - বাচ্চাদের
কিভাবে পড়িয়ে এই বড় পরীক্ষায় পাস করাবেন? যাতে এরা আবার বিশ্বের মালিক হতে পারে ।
প্রকৃতপক্ষে তোমাদের আত্মা শুদ্ধ সতোপ্রধান ছিলো তাই শরীরও কতো সুন্দর সতোপ্রধান
ছিলো । তোমাদের রাজত্বও কতো উচ্চ ছিলো । তোমাদের এই লৌকিক সংসারের আবর্জনার কথায়
অনেক সময় নষ্ট হয় । তোমাদের মতো স্টুডেন্টদের ভিতরে এই আবর্জনার ভাবনা চিন্তা থাকা
উচিত নয় । কমেটি ইত্যাদি তো খুব সুন্দর - সুন্দর তৈরী করা হয় কিন্তু যোগবল নেই ।
অনেক গালগল্প করে - আমরা এই করবো, ওই করবো । মায়াও বলে, আমি এর নাক পাকড়ে ধরবো ।
এদের বাবার প্রতি কোনো প্রেমই থাকে না । বলা হয় না যে - মানুষ চায় এক, হয়
অন্যকিছু - তো মায়াও কিছু করতে দেয় না । মায়া অনেক ঠকায়, কানও কেটে নেয় । বাবা
বাচ্চাদের কতো উচ্চ তৈরী করেন, তিনি ডায়রেক্শনও দেন - এই এই করো । বাবা অত্যন্ত
রয়্যাল রয়্যাল বাচ্চাদের পাঠিয়ে দেন । কেউ কেউ বলে, বাবা, আমি ট্রেনিং নিয়ে যাবো?
বাবা বলেন, বাচ্চারা, তোমরা প্রথমে নিজের দুর্বলতা গুলি তো দূর করো । নিজেদের দেখো
যে, আমাদের মধ্যে কতখানি অপগুণ রয়েছে? খুব ভালো ভালো মহারথীদেরও মায়া একদম নুন -
জল করে দেয় । এমন ক্ষার বাচ্চারা কখনোই বাবাকে স্মরণ করে না । তারা জ্ঞানের গ-ও
জানে না । তারা বাইরের প্রদর্শন অনেকই করে । এতে অনেক অন্তর্মুখী হওয়ার প্রয়োজন,
কিন্তু কারোর - কারোর তো এমন চালচলন হয় যে, যেন অশিক্ষিত মানুষ । সামান্য অর্থ
হলেই তাদের সেই নেশা চড়ে যায় । এ কথা বুঝতেই পারে না যে, আরে, আমরা তো কাঙ্গাল ।
মায়া তাদের বুঝতেই দেয় না । মায়া খুবই জোরদার । বাবা সামান্য গুণগান করলেই তাতে
খুব খুশী হয়ে যায় ।
বাবার তো রাতদিন এই
চিন্তাই থাকে যে, ইউনিভার্সিটি বেশ ফার্স্ট ক্লাস হওয়া উচিত, যেখানে বাচ্চারা খুব
ভালোভাবে পড়তে পারবে । তোমরা জানো যে, আমরা স্বর্গে যাচ্ছি, তাই খুশীর পারদ চড়ে থাকা
উচিত, তাই না । এখানে বাবা নেশা চড়ানোর জন্য নানা ধরণের ডোজ দেন । কেউ যদি দেউলিয়া
হয়ে যায়, তাকে মদ্যপান করালে মনে করবে, আমি বাদশাহ । নেশা ছেড়ে গেলে আবার যেমন
ছিলো তেমন হয়ে যাবে । এখন এ তো হলো আত্মিক নেশা । তোমরা জানো যে, অসীম জগতের পিতা
শিক্ষক হয়ে আমাদের পড়ান, আর ডায়রেক্শন দেন -- তোমরা এমন - এমন করো । কোনো কোনো
সময়ে কারোর মিথ্যা অহংকারও এসে যায় । এ তো মায়া, তাই না । এমন এমন কথা বানায় যে,
সেকথা জিজ্ঞেস কোরো না । বাবা বুঝতে পারেন, এ এই পথে চলতে পারবে না । অন্তরের
অত্যন্ত স্বচ্ছতার প্রয়োজন । আত্মাও অনেক সুন্দর হওয়ার প্রয়োজন । তোমাদের তো লভ
ম্যারেজ হয়েছে, তাই না । প্রেমের বিবাহে কতো ভালোবাসা থাকে, আর ইনি তো পতিরও পতি ।
তাও কতজনের এই লভ ম্যারেজ হয় । একজনের থোড়াই হয় । সকলেই বলে, আমার তো শিববাবার
সঙ্গে এঙ্গেজমেন্ট হয়ে গেছে । আমি তো স্বর্গে গিয়ে বসবো । এ তো খুশীর কথা, তাই না
। মনে তো এই কথা আসা উচিত যে, বাবা আমাদের কতোভাবে সাজান । শিববাবা এনার দ্বারা
তোমাদের শৃঙ্গার করান । তোমাদের বুদ্ধিতে এই কথা আছে যে, আমরা বাবাকে স্মরণ করতে
করতে সতোপ্রধান হয়ে যাবো । এই জ্ঞানকে আর কেউই জানে না । এতে অনেক নেশা থাকে । এখনো
এতো তীব্র নেশা চড়েনি । তবে তা অবশ্যই হতে হবে । এমন গানও আছে যে, অতীন্দ্রিয় সুখ
গোপ - গোপীদের জিজ্ঞাসা করো । তোমাদের আত্মা এখন কতো ছিঃ ছিঃ । যেন অনেক ছিঃ ছিঃ
আবর্জনার মধ্যে বসে আছে । বাবা এসে এদের পরিবর্তন করান, রিজুভিনেট (নবজীবন প্রদান)
করেন । মানুষ যখন গ্ল্যান্ডস্ চেঞ্জ করায়, তখন কতো খুশী হয় । তোমরা তো এখন বাবাকে
পেয়েছো, তোমাদের তো তরী পার হয়েই গেছে । তোমরা মনে করো, আমরা যখন অসীম জগতের বাবার
হয়েছি, তখন আমাদের কতো শীঘ্র পরিবর্তন হওয়ার প্রয়োজন । রাতদিন যেন এই খুশী, এই
চিন্তন থাকে যে - তোমরা দেখো মার্শাল হিসাবে কাকে পেয়েছো । রাতদিন এই খুশীতে থাকতে
হয়। যারা খুব ভালোভাবে বুঝতে পারে, চিনতে পারে, তারা তো যেন উড়তে থাকে ।
বাচ্চারা, তোমরা এখন
সঙ্গম যুগে রয়েছো । বাকি এরা সবাই তো আবর্জনায় পড়ে আছে । যেমন আবর্জনার ধারে ঝুপড়ি
তৈরী করে সেই আবর্জনাতেই বসে থাকে, তাই না । কতো কতো ঝুপড়ি পড়ে রয়েছে । এ তো হলো
অসীম জগতের কথা । এখন এর থেকে বের হওয়ার জন্য শিববাবা তোমাদের অনেক সহজ যুক্তি বলে
দেন । মিষ্টি - মিষ্টি বাচ্চারা, তোমরা তো জানো, এইসময় তোমাদের আত্মা এবং শরীর দুইই
পতিত । এখন তোমরা তার থেকে বেরিয়ে এসেছো । যারা যারা বেরিয়ে এসেছে, তাদের মধ্যে
জ্ঞানের পরাকাষ্ঠা আছে, তাই না । তোমরা তো বাবাকে পেয়েছো, আর কি ? এই নেশা যখন চড়বে,
তখনই তোমরা কাউকে বোঝাতে পারো । বাবা এখন এসেছেন । বাবা আমাদের আত্মাকে পবিত্র করে
দেন । আত্মা পবিত্র হলে তখন শরীরও একনম্বর পাওয়া যায় । তোমাদের আত্মা এখন কোথায় বসে
আছে? এই শরীরে বসে আছে । এই দুনিয়া তো তমোপ্রধান, তাই না । সকলেই আবর্জনার ধারে এসে
বসে আছে । তোমরা বিচার করো যে, আমরা কোথা থেকে বের হয়ে এসেছি । বাবা আমাদের
দুর্গন্ধের নর্দমা থেকে বের করেছেন । এখন আমাদের আত্মা স্বচ্ছ হয়ে যাবে । যারা
ওখানে থাকবে, তারা এক নম্বর মহল তৈরী করবে । বাবা আমাদের আত্মাকে শৃঙ্গার করে
স্বর্গে নিয়ে যাচ্ছেন । বাচ্চাদের ভিতরে এমন - এমন খেয়াল আসা উচিত । বাবা কতো নেশা
চড়িয়ে দেন । তোমরা এতো উচ্চ ছিলে, তারপর নামতে নামতে নীচে এসে পড়েছো । তোমরা যখন
শিবালয়ে ছিলে, তখন তোমাদের আত্মা কতো শুদ্ধ ছিলো । তাই নিজেদের মধ্যে মিলেমিশে খুব
শীঘ্রই শিবালয়ে যাওয়ার উপায় করা উচিত ।
বাবার তো ওয়ান্ডার
লাগে যে - বাচ্চাদের সেই বুদ্ধিই নেই । বাবা আমাদের কোথা থেকে বের করেন । এই পাণ্ডব
গভর্নমেন্ট বাবাই স্থাপন করেন । যে ভারত একদিন স্বর্গ ছিলো তা আজ নরক হয়ে গেছে । এ
হলো আত্মারই কথা । আত্মার উপরেই দুঃখ আসে । আত্মা একদম তমোপ্রধান দুনিয়ায় এসে বসেছে,
তাই বাবাকে স্মরণ করে - বাবা, আমাকে ওখানে নিয়ে যাও । এখানে বসেও তোমাদের এই খেয়ালই
চলা উচিত, তাই বাবা বলেন, বাচ্চাদের জন্য একনম্বর ইউনিভার্সিটি বানাও । কল্প - কল্প
এমন তৈরী হয় । তোমাদের চিন্তাধারা চমকপ্রদ হওয়া উচিত । এখনো তোমাদের সেই নেশা হয়নি
। তেমন নেশা হলে কি জানি কি করে দেখাতে । বাচ্চারা ইউনিভার্সিটির অর্থ বুঝতে পারে
না । সেই রয়্যাল নেশায় তারা থাকে না । তাদের উপর মায়া চেপে বসে আছে । বাবা বোঝান,
বাচ্চারা, তোমরা উল্টো নেশা বৃদ্ধি করো না । প্রত্যেকে নিজেদের যোগ্যতা দেখো । আমরা
কিভাবে পড়াশোনা করি, কিভাবে সেবা বা সাহায্য করি - কেবল কথার ফুলুরি খেলে চলবে না ।
যা বলো, তাই করতে হবে । কোনো গল্প নয় যে, এমন করবো - তেমন করবো । আজ বলবে, এই করবো,
কাল মৃত্যু আসবে তো সব শেষ হয়ে যাবে । সত্যযুগে তো কেউ এমন কথা বলবে না । ওখানে
কখনোই অকালমৃত্যু হয় না । কাল ওখানে আসতে পারে না । সে হলো সুখধাম । সুখধামে কালের
আসার অনুমতি নেই । রাবণ রাজ্য আর রাম রাজ্যের অর্থও বুঝতে হবে । এখন তোমাদের লড়াই
হলো রাবণের সঙ্গে । দেহ - অভিমানও জাদু করে দেয়, যা সম্পূর্ণ পতিত বানিয়ে দেয় । দেহী
অভিমানী হলে আত্মা শুদ্ধ হয়ে যায় । তোমরা তো বুঝতে পারো যে, ওখানে আমাদের কেমন
মহল তৈরী হবে । তোমরা তো এখন সঙ্গম যুগে এসে গেছো । নম্বরের ক্রমানুসারে তোমরা
নিজেদের পরিবর্তন করছো, যোগ্যও তৈরী হচ্ছো । তোমাদের আত্মা পতিত হওয়ার কারণে তোমরা
এই শরীরও পতিত পেয়েছো । আমি এখন এসেছি তোমাদের স্বর্গবাসী করার জন্য । তাই স্মরণের
সঙ্গে সঙ্গে দৈবী গুণেরও প্রয়োজন । এ তো মাসির বাড়ি নয় । তোমরা বুঝতে পারো যে, বাবা
এসেছেন আমাদের নর থেকে নারায়ণ তৈরী করতে কিন্তু মায়ার সঙ্গে গুপ্ত মোকাবিলা থাকে ।
তোমাদের লড়াই হলো গুপ্ত তাই তোমাদের অজ্ঞাত যোদ্ধা বলা হয় । অজ্ঞাত যোদ্ধা আর কেউই
হয় না । তোমাদের নামই হলো ওয়ারিয়র্স । বাইরের ওয়ারিয়রদের নাম তো রেজিস্টারে
থাকেই । তোমাদের মতো আননোন ওয়ারিয়রদের নিদর্শন ওরা নিয়েছে । তোমরা যে কতখানি
গুপ্ত, কেউই তা জানে না । মায়াকে বশীভূত করে তোমরা এই বিশ্বকে জয় করছো । তোমরা
বাবাকে স্মরণ করো কিন্তু মায়া তোমাদের ভুলিয়ে দেয় । কল্প - কল্প তোমরা নিজেদের
রাজ্য স্থাপন করো । তাই তোমরাই হলে সেই আননোন ওয়ারিয়র্স যারা বাবাকে স্মরণ করো ।
এই যুদ্ধে তোমরা হাত - পা কিছুই চালাও না । এই স্মরণের জন্য বাবা অনেক যুক্তি বলে
দেন । চলতে - ফিরতে তোমরা এই স্মরণের যাত্রা করো, আমার এই ঈশ্বরীয় পাঠও করো । এখন
তোমরা বুঝতে পারো যে, আমরা কি ছিলাম আর এখন কি হয়েছি । আর বাবা এখন আমাদের কি তৈরী
করছেন । তিনি কতো সহজ যুক্তি বলে দেন । তোমরা যেখানেই থাকো না কেন, বাবাকে স্মরণ করো,
তো তোমাদের জং দূর হয়ে যাবে । বাবা কল্প - কল্প এই যুক্তি বলে দিতে থাকেন ।
নিজেদের আত্মা মনে করে বাবাকে যদি স্মরণ করো তাহলে তোমরা সতোপ্রধান হবে, এখানে আর
কোনো বন্ধন নেই । বাথরুমে গিয়েও যদি নিজেকে আত্মা মনে করে বাবাকে স্মরণ করো তো
আবর্জনা দূর হয়ে যাবে । আত্মাকে কোনো তিলক লাগাতে হয় না, এ সব তো ভক্তিমার্গের
নিদর্শন । এই জ্ঞান মার্গে এর কোনো দরকার নেই, এক পয়সারও খরচ নেই । তোমরা ঘরে বসে
স্মরণ করতে থাকো । এ কতো সহজ । ওই বাবা আমাদের যেমন বাবা, আবার শিক্ষক এবং সদ্গুরুও
।
প্রথমে বাবাকে স্মরণ,
তারপর শিক্ষক এবং গুরুকে, নিয়ম এমনই বলে । শিক্ষককে তো অবশ্যই স্মরণ করবে, তাঁর থেকে
শিক্ষা পাওয়া যায় আর বাণপ্রস্থ অবস্থাতে গুরু করা হয় । বাবা তো সব হোলসেলে দিয়ে
দেন । তোমাদের ২১ জন্মের রাজত্ব তিনি হোলসেলে দিয়ে দেন । বিয়েতে মেয়েকে পণ তো
গুপ্তভাবে দেওয়া হয়, তাই না । প্রদর্শন করানোর প্রয়োজন হয় না । বলা হয় গুপ্ত দান
। শিববাবাও তো গুপ্ত, তাঁর মধ্যে অহংকারের কোনো কথাই নেই । কারোর কারোর অহংকার থাকে
যে, সবাই সব জানুক । এখানে হলো সবই গুপ্ত । বাবা তোমাদের যৌতুকে এই বিশ্বের বাদশাহী
দেন । কতো গুপ্তভাবে তোমাদের এই শৃঙ্গার হচ্ছে । তোমরা কতো বড় যৌতুক পাও । বাবা কি
করে যুক্তি দিয়ে তা দেন, কেউই তা জানতে পারে না । এখানে তোমরা ভিখারি, পরের জন্মে
সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মাবে । তোমরা তো স্বর্ণ যুগে যাও, তাই না । ওখানে সবকিছুই
সোনার থাকবে । বিত্তবানদের মহল সোনায় খচিত হবে । তফাৎ তো অবশ্যই থাকবে । তোমরা এও
বুঝতে পারো - মায়া তোমাদের উল্টো ঝুলিয়ে দেয় । এখন বাবা যখন এসেছেন তখন বাচ্চাদের
মধ্যে কতো উৎসাহ থাকা উচিত তবুও মায়া সব ভুলিয়ে দেয় - এ বাবার ডাইরেকশন নাকি
ব্রহ্মার ? ভাইয়ের নাকি বাবার ? এতেই অনেক দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে যায় । বাবা বলেন, ভালো
বা খারাপ যাই হোক - তোমরা বাবার ডাইরেকশনই মনে করো । এই ডায়রেক্শনে তোমাদের চলতে
হবে । এতে কোনো ভুল হয়ে গেলেও নির্ভুল করে দেবে । তাঁর মধ্যে শক্তি তো আছে, তাই না
। তোমরা দেখো যে, ইনি কিভাবে চলছেন, এনার মাথার উপরে কে বসে আছে । একদম পাশেই বসে
আছেন । গুরুরা তো পাশে বসিয়েই শেখান, তাই না । তাও এনাকে পরিশ্রম করতে হয় ।
তমোপ্রধান থেকে সতোপ্রধান হতে পুরুষার্থ করতে হয় ।
বাবা বলেন, তোমরা
আমাকে স্মরণ করে ভোজন প্রস্তুত করো । শিববাবার স্মরণে প্রস্তুত ভোগ আর কেউই পেতে
পারে না । এখনকার ভোগেরও অনেক মহিমা । ওই ব্রাহ্মণরা যদিও অনেক স্তুতি করে কিন্তু
অর্থ কিছুই বোঝে না । যা মহিমা করে, তা কিছুই বোঝে না । তবে এটা বোঝা যায় যে, এরা
ধর্মপ্রাণ কেননা এরা পূজারী । আর ওখানে তো ধর্মপ্রাণের বিষয়ই থাকে না কেননা ওখানে
ভক্তিই থাকে না । এও কেউ জানে না যে, ভক্তি কি জিনিস । মানুষ বলে - জ্ঞান, ভক্তি,
বৈরাগ্য । একনম্বর কথা । জ্ঞান হলো দিন আর ভক্তি রাত । রাত থেকে তো আবার বৈরাগ্য
দিনে চলে যায় । এ কতো পরিষ্কার কথা । এখন তোমরা যখন বুঝতে পেরেছো তখন তোমাদের আর
ধাক্কা খেতে হয় না ।
বাবা বলেন - তোমরা
আমাকে স্মরণ করো, আমি তোমাদের এই বিশ্বের মালিক বানাই । আমি তোমাদের এই অসীম জগতের
পিতা, এই সৃষ্টির চক্র জানাও কতো সহজ । তোমরা বীজ আর বৃক্ষকে স্মরণ করো । এখন
কলিযুগের অন্তিম সময় এরপর সত্যযুগকে আসতে হবে । এখন তোমরা এই সঙ্গম যুগে ফুলে
পরিণত হও । আত্মা যখন সতোপ্রধান হয়ে যাবে তখন থাকার জন্যও সতোপ্রধান মহল পাবে । এই
দুনিয়াই নতুন হয়ে যায় । তাই বাচ্চাদের কতটা খুশীতে থাকা উচিত । আচ্ছা ।
মিষ্টি - মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা - পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত ।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মারূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) সদা
এই নেশা যেন থাকে যে, আমরা শ্রীমতে চলে নিজেদের পরীস্থান স্থাপন করছি । অবান্তর
আবর্জনা মূলক বিষয়কে ত্যাগ করে খুবই উল্লাসে থাকতে হবে ।
২ ) নিজের চিন্তাধারা
খুব রয়্যাল রাখতে হবে । খুব ভালো রয়্যাল ইউনিভার্সিটি এবং হোস্টেল খোলার ব্যবস্থা
করতে হবে । বাবার গুপ্ত সাহায্যকারী হতে হবে, নিজেকে শো করবে না ।
বরদান:-
নিমিত্ত হয়ে যেকোনও সেবা করার সময় অসীম জগতের বৃত্তির দ্বারা ভায়ব্রেশন ছড়িয়ে দিয়ে
অসীম জগতের সেবাধারী ভব
এখন অসীম জগতের
পরিবর্তনের সেবাতে তীব্র গতি নিয়ে এসো। এতই বিজি থাকছো যে টাইম-ই পাচ্ছো না - এরকম
তো করছো না! কিন্তু নিমিত্ত হয়ে যেকোনও সেবা করার সময় অসীম জগতের সহযোগী হতে পারো,
শুধু বৃত্তি অসীম জগতে থাকবে তাহলে ভায়ব্রেশন ছড়িয়ে পড়তে থাকবে। যতই অসীম জগতে বিজি
থাকবে, ততই, যে ডিউটি পেয়েছো সেটা আরোই সহজ হয়ে যাবে। প্রত্যেক সংকল্প, প্রত্যেক
সেকেণ্ড শ্রেষ্ঠ ভায়ব্রেশন ছড়িয়ে দেওয়ার সেবা করাই হল অসীম জগতের সেবাধারী হওয়া।
স্লোগান:-
শিব
বাবার সাথে কম্বাইন্ড থাকা শিবশক্তিদের শৃঙ্গার হলো জ্ঞানের অস্ত্র-শস্ত্র।