28.01.2025
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
পাশ উইথ অনার হতে যদি চাও তবে শ্রীমতের আধারে চলতে থাকো, কুসঙ্গ আর মায়ার
ঝড়ঝাপটার থেকে নিজেকে সামলে রাখো"
প্রশ্নঃ -
বাবা
বাচ্চাদের প্রতি কি সেবা করেছেন, যেটা বাচ্চাদেরও করতে হবে?
উত্তরঃ
বাবা আদরের
বাচ্চা বলে হীরেতুল্য তৈরী করার সেবা করেছেন। সেইরকম আমাদের অর্থাৎ বাচ্চাদেরও
মিষ্টি ভাইদের হীরে তুল্য তৈরী করতে হবে। এর মধ্যে কোনো কষ্টকর ব্যাপার নেই,
শুধুমাত্র বলতে হবে যে বাবাকে স্মরণ করলে হীরে তুল্য হয়ে যাবে।
প্রশ্নঃ -
বাবা তাঁর
বাচ্চাদের কোন্ হুকুম দিয়েছেন?
উত্তরঃ -
বাচ্চারা,
তোমরা সত্যিকারের উপার্জন করো আর করাও। তোমাদের কারোর থেকেই ধার নেওয়ার হুকুম নেই।
গীতঃ-
এই পাপের
দুনিয়া থেকে দূরে কোথাও নিয়ে চলো...(ইস পাপ কি দুনিয়া সে..)
ওম্ শান্তি ।
নতূন দুনিয়াতে
যেতে চলেছে মিষ্টি-মিষ্টি আত্মা রূপী বাচ্চাদের প্রতি বাবা গুডমর্ণিং করছেন। আত্মা
রূপী বাচ্চারা নম্বর অনুযায়ী পুরুষার্থ অনুসারে জানে যে নিশ্চিত ভাবেই আমরা এই
দুনিয়ার থেকে দূরে চলে যাচ্ছি। কোথায়? নিজেদের সুইট সাইলেন্স হোমে। শান্তিধাম হলো
দূরে, যেখান থেকে আমরা আত্মারা এসেছি সেটা হলো মূলবতন, এটা হলো স্থূল বতন। ওটা হলো
আমাদের আত্মাদের গৃহ। সেই গৃহে তো বাবা ব্যতীত আর কেউ নিয়ে যেতে পারে না। তোমরা এই
সকল ব্রাহ্মণ-ব্রাহ্মণীরা আধ্যাত্মিক সার্ভিস করছো। কে শিখিয়েছেন? দূরে নিয়ে যেতে
পারেন বাবা। কতো জনকে দূরে নিয়ে যাবেন? অগণিত। এক পান্ডার বাচ্চারা, তোমরা সকলেই হলে
পান্ডা। তোমাদের নামই হলো পান্ডব সেনা। তোমরা বাচ্চারা প্রত্যেককে দূরে নিয়ে যাওয়ার
যুক্তি বলে দাও - মন্মনাভব, বাবাকে স্মরণ করো। বলেও যে - বাবা, এই দুনিয়ার থেকে
দূরে কোথাও নিয়ে চলো। নতুন দুনিয়াতে এমন বলবে না। এখানে হলো রাবণ রাজ্য, তাই বলে
থাকে যে এর থেকে দূরে নিয়ে চলো, এখানে সুখ শান্তি নেই। এর নামই হলো দুঃখধাম। এখন
বাবা তোমাদের কোথাও কোনো ধাক্কা খাওয়ান না। ভক্তি মার্গে বাবাকে খুঁজে পেতে তোমরা
কতো ধাক্কা খাও। বাবা নিজেই বলেন আমি হলামই গুপ্ত। এই চোখের দ্বারা (চর্মচক্ষে) কেউ
আমাকে দেখতে পায় না। কৃষ্ণের মন্দিরে মাথা ঠোকার জন্য কাঠের খড়ম রাখে, আমার তো পা
নেই যে তোমাদের মাথা ঠুকতে হবে। তোমাদের তো শুধু বলি - আদরের বাচ্চারা, তোমরাও
অন্যান্যদের বলো - মিষ্টি ভাইয়েরা, পারলৌকিক বাবাকে স্মরণ করলে তবে বিকর্ম বিনাশ
হবে। ব্যস্ আর কোনো কষ্ট নেই। বাবা যেমন হীরে তুল্য করে তোলেন, বাচ্চারাও অন্যদের
হীরে তুল্য করে তোলেন। এটাই শেখার আছে যে - মানুষকে হীরে তুল্য কীভাবে তৈরী করবে?
ড্রামা অনুসারে পূর্ব কল্পের মতো প্রত্যেক কল্পের সন্ধিকালে বাবা এসে আমাদের শিখিয়ে
দেন। আমরা আবার অন্য সকলকে শেখাই। বাবা হীরে তুল্য গড়ে তুলছেন। তোমাদের জানা আছে
ইসলাম ধর্মের খোজোঁ গুরু আগা খাঁকে সোনা, রূপা, হীরে দিয়ে ওজন করা হয়েছিলো।
নেহেরুকে সোনা দিয়ে ওজন করেছিলো। এখন তারা তো কাউকে হীরে তুল্য গড়ে তুলতে পারে না।
বাবা তো তোমাদের হীরে তুল্য করে গড়তে তুলছেন। ওনাকে তোমরা কিসে ওজন করবে? তোমাদের
তো দরকারই নেই। কিছু লোক তো রেসে অনেক পয়সা ওড়ায়। অট্টালিকা, প্রপার্টি ইত্যাদি
তৈরী করতে থাকে। বাচ্চারা, তোমরা তো সত্যিকারের উপার্জন করছো। তোমরা কারোর থেকে ধার
করলে তা আবার ২১ জন্ম ধরে দিতে হবে। তোমাদের কারোর থেকে ধার নেওয়ার হুকুম নেই।
তোমরা জানো যে এই সময় হলো মিথ্যা উপার্জন, যা বিনষ্ট হয়ে যাবে। বাবা দেখেছেন এসব
হলো কড়ি, আমাদের হীরে প্রাপ্তি হয়, তবে আবার এই কড়ি কি করবে? বাবার থেকে কেন
অসীম জগতের উত্তরাধিকার নেবে না। দু'মুঠো খাবার তো তুমি পাবেই। কথায় বলে - যাদের
হাত ক্রমাগত দিয়ে যায়, তারা প্রথম নম্বর অর্জন করে। বাবাকে শেয়ারের দালালও (শরফ)
বলা হয় তাই না । বাবা তাই বলেন তোমাদের পুরানো জিনিস এক্সচেঞ্জ করি। কেউ মারা গেলে
তো পুরানো জিনিস শ্মশানের ব্রাহ্মণকে (করনীঘোরকে) দিয়ে দেয়, তাই না! বাবা বলেন,
তোমাদের থেকে কি নিই তার স্যাম্পল দেখো। দ্রৌপদীও একজন ছিল না। তোমরা সকলে হলে
দ্রৌপদী। অনেক ডাকতো বাবা আমাকে নগ্ন হওয়ার থেকে বাঁচাও। বাবা কতো ভালোবেসে বোঝান -
বাচ্চারা, এই অন্তিম জন্ম পবিত্র হও। বাবা বাচ্চাদের বলেন যে, আমার দাঁড়ির সম্মান
রাখো, কুলে কলঙ্ক লাগিও না। তোমাদের অর্থাৎ মিষ্টি-মিষ্টি বাচ্চাদের কতো নিশ্চিন্ত
হওয়া উচিত। বাবা তোমাদের হীরে তুল্য করে তোলেন, এনাকেও (ব্রহ্মাবাবা) সেই বাবা (শিববাবা)
হীরে তুল্য করে তুলছেন। স্মরণ ওনাকে করতে হবে। এই ব্রহ্মা বাবা বলেন আমাকে স্মরণ
করলে তোমাদের বিকর্ম বিনাশ হবে না। আমি তোমাদের গুরু নই। তিনি আমাকে শেখান, আমি
আবার তোমাদের শেখাই। হীরে তুল্য হতে গেলে বাবাকে স্মরণ করো।
বাবা বুঝিয়েছেন যে
ভক্তি মার্গে যদি কেউ দেবতাকে ভক্তিও করে, তবুও বুদ্ধি দোকান, ব্যবসা ইত্যাদির দিকে
পালাতে থাকে, কারণ সেখানে প্রাপ্তি হয়। বাবা নিজের অনুভবও শোনান যে, যখন বুদ্ধি
এদিক ওদিক পালাতো তো নিজেকে চাঁটি মারতেন যে - এ'সব কেন মনে আসছে? এখন আমাদের অর্থাৎ
আত্মাদের এক বাবাকে স্মরণ করতে হবে, কিন্তু মায়া ক্ষণে-ক্ষণে ভুলিয়ে দেয়, ঘুঁষি
মারে। মায়া বুদ্ধিযোগ ছিন্ন করে দেয়। নিজের সাথে এইরকম ধরনের কথা বলা উচিত। বাবা
বলেন - এখন নিজের কল্যাণ করলে তবে অন্যদেরও কল্যাণ করো, সেন্টার খোলো। এইরকম অনেক
বাচ্চা বলে - বাবা, অমুক জায়গায় সেন্টার খুলবো? বাবা বলেন আমি তো হলাম দাতা। আমার
কিছু দরকার নেই। বাচ্চারা, এই অট্টালিকা ইত্যাদিও তোমাদের জন্যই তৈরী হচ্ছে। শিববাবা
তো তোমাদের হীরে তুল্য করে তুলতে এসেছেন। তোমরা যা কিছু করো সেটা তোমাদেরই কাজে আসে।
এখানে কোনো গুরু নেই যে চেলা ইত্যাদি তৈরী করবে, বাড়ী তৈরী করে বাচ্চারাই, নিজেদের
থাকার জন্য। হ্যাঁ, যারা তৈরী করে তারা যখন আসে তো তাদের আদর আপ্যায়ন করা হয়, আপনি
উপরে নতুন বাড়ীতে থাকুন। কেউ কেউ বলে আমি কেন নতুন বাড়ীতে থাকবো, আমার তো পুরানোই
ভালো লাগে। আপনি যেমন থাকেন, আমিও থাকবো। আমি দাতা বলে আমার এমন কোনো অহঙ্কার নেই।
বাপদাদাই থাকবেন না তো আমি কেন থাকবো? আমাকেও আপনার সাথে রাখুন। যত আপনার সান্নিধ্যে
থাকবো তত ভালো।
বাবা বোঝান - যত
পুরুষার্থ করবে তবে সুখধামে উচ্চ পদ প্রাপ্ত করতে পারবে। স্বর্গে তো সবাই যাবে তাই
না! ভারতবাসী জানে, ভারত পূণ্য আত্মাদের দুনিয়া ছিল, পাপের লেশ মাত্রও ছিল না। এখন
তো পাপ আত্মা হয়ে গেছে। এটা হলো রাবণ রাজ্য। সত্যযুগে রাবণ হয় না। রাবণ রাজ্য হয়ই
অর্ধ-কল্প পরে। বাবা এতো বোঝান তাও বোঝে না। কল্প-কল্প এমনই হয়ে এসেছে। নতুন কথা নয়।
তোমরা প্রদর্শনী করো, কতো-শতো লোক আসে। প্রজা তো অনেক হবে। হীরে তুল্য হতে তো টাইম
লাগে। প্রজা হয়ে যাবে সেটাও ভালো। এখন হলোই প্রলয়ের সময়। হিসাব-নিকাশ চুকে যায়। ৮
এর মালা যাঁরা হয়েছেন তাঁরা হলেন পাশ উইথ অনার্সের। ৮ দানাই নম্বর ওয়ানে যায়,
যাঁদের লেশ মাত্রও সাজা প্রাপ্তি হয় না। কর্মাতীত অবস্থাকে প্রাপ্ত করে নেন। এরপর
হলো ১০৮, নম্বর অনুযায়ী তো বলা হবে তাই না। এ হলো পূর্ব- নির্ধারিত হয়ে আসা অনাদি
ড্রামা, যেটার সাক্ষী হয়ে দেখতে হবে যে কে ভালো পুরুষার্থ করছে? কোনো কোনো বাচ্চা
পরে এসে, শ্রীমতে চলতে থাকে। এইরকমই শ্রীমত অনুযায়ী চলতে থাকলে তো পাশ উইথ অনার্স
হয়ে ৮ এর মালাতে আসতে পারে। হ্যাঁ, চলতে-চলতে কখনো খারাপ লক্ষণ দেখা যায়। এই
চড়াই-উতরাই সকলের সামনেই আসে। এটা হলো উপার্জন। কখনো অনেক খুশীতে থাকবে, কখনো কম।
মায়ার ঝড়ে অথবা কুসঙ্গ পিছু হঠিয়ে দেয়। খুশী লোপ পেয়ে যায়। কথায় আছে সাধু সঙ্গে
স্বর্গবাস, কুসঙ্গে নরক বাস। এখন রাবণের সঙ্গ ডুবিয়ে মারে, রামের সঙ্গ পার করে দেয়।
রাবণের মত অনুযায়ী তোমরা এইরকম হয়েছো। দেবতারাও বামমার্গে বা পাপের পথে যায়। তাদের
কিরকম নোংরা চিত্র দেখায়। এটা হলো বামমার্গে যাওয়ার চিহ্ন। ভারতেই রাম রাজ্য ছিলো,
ভারতেই এখন রাম রাজ্য। রাবণ রাজ্যে ১০০ পার্সেন্ট দুঃখী হয়ে পড়ে। এটা হলো খেলা।
এই নলেজ যে কাউকেই বোঝানো কতো সহজ।
(এক নার্স বাবার সামনে
বসে আছে) বাবা এই কন্যাকে বললেন, তুমি হলে নার্স, ওই সার্ভিসও করতে থাকো, সাথে-সাথে
এই সার্ভিসও করতে পারো। পেশেন্টকেও এই জ্ঞান শোনাতে থাকো যে বাবাকে স্মরণ করলে
বিকর্ম বিনাশ হবে। আবার ২১ জন্মের জন্য তোমরা রোগী হবে না। যোগের দ্বারাই হেল্থ আর
এই চুরাশি জন্মের চক্রকে জানার ফলে ওয়েল্থ (অবিনাশী ধন) প্রাপ্ত হয়। তোমরা তো অনেক
সার্ভিস করতে পারো, অনেকের কল্যাণ করবে। পয়সাও যা প্রাপ্ত করবে, ব্যস্ - এই আত্মিক
সেবাতে নিয়োজিত করতে পারবে। বাস্তবে তো তোমরা সকলে হলে নার্স তাই না! ছিঃ ছিঃ নোংরা
মানুষদের দেবতায় পরিণত করা - এটা নার্সের মতো সেবাই তো হলো তাই না! বাবাও বলেন
আমাকে পতিত মানুষ ডাকে যে, এসে পবিত্র করে তোলো। তোমরাও রোগীদের এই সেবা করো, তোমার
প্রতি নিজেকে সঁপে দেবে। তোমাদের দ্বারা সাক্ষাৎকারও হতে পারে। যদি যোগ-যুক্ত থাকো
তো বড়-বড় সার্জেন ইত্যাদি সবাই তোমাদের চরণে এসে পড়বে। তোমরা করে দেখো। এখানে
বাদল আসে রিফ্রেস হতে। আবার গিয়ে (জ্ঞান) বর্ষণ করে অন্যদের রিফ্রেস করবে। কোনো কোনো
বাচ্চাদের তো এটাও জানা থাকে না যে এই বর্ষণ কোথা থেকে হচ্ছে? মনে করে ইন্দ্র বর্ষণ
করায়। ইন্দ্র-ধনু বলে তাই না! শাস্ত্রে তো কতো কথা লিখে দিয়েছে। বাবা বলেন এটা
আবার হবে, যা ড্রামাতে পূর্ব নির্ধারিত হয়ে আছে। আমি কারোর গ্লানি করি না, এটা তো
হলো যা হয়েছিলো সেই পূর্ব নির্ধারিত অনাদি ড্রামা। বোঝানো হয় যে এটা হলো ভক্তি
মার্গ। বলেও থাকে জ্ঞান, ভক্তি, বৈরাগ্য।বাচ্চারা, তোমাদের হলো এই পুরানো দুনিয়ার
প্রতি বৈরাগ্য । আমি মরলে আমার কাছে এই দুনিয়াও মৃত। আত্মা শরীর থেকে পৃথক হয়ে গেলে
তো সেখানেই দুনিয়া সমাপ্ত।
বাবা বাচ্চাদের বোঝান
- মিষ্টি বাচ্চারা পড়াশুনার প্রতি গাফিলতি ক'রো না। সব কিছু নির্ভর করে পড়াশুনার
উপরে। কোনো ব্যারিস্টার তো লক্ষ টাকা উপার্জন করে আবার কোনো ব্যরিস্টারের তো পড়ার
জন্য কোট পর্যন্ত থাকে না। পড়াশুনার উপর সম্পূর্ণ নির্ভর করে। এই ঈশ্বরীয় পাঠ তো
খুবই সহজ। স্বদর্শন চক্রধারী হতে হবে অর্থাৎ নিজের ৮৪ জন্মের আদি-মধ্য-অন্তকে জানতে
হবে। এখন এই বৃক্ষের সমস্তটাই জরাজীর্ণ হয়ে আছে, ফাউন্ডেশন নেই, এছাড়া সমস্ত বৃক্ষ
দাঁড়িয়ে আছে। সেরকম এই আদি সনাতন দেবী-দেবতা ধর্ম যেটা ছিলো, গোঁড়া ছিলো, সেটা এখন
নেই। ধর্ম ভ্রষ্ট, কর্ম ভ্রষ্ট হয়ে গেছে। মানুষ কারোর সদ্গতি দিতে পারে না। বাবা বসে
এইসব কথা বোঝাচ্ছেন, তোমরা চিরকালের জন্য সুখী হয়ে যাও। কখনো অকাল মৃত্যু হয় না।
অমুকে মরে গেছে, এই রকম ধরনের কথা সেখানে থাকে না। বাবা তাই রায় দেন যে, অনেককে
রাস্তা বলে দেবে তো তারা তোমার কাছে নিজেকে সঁপে দেবে। কারো কারো সাক্ষাৎকারও হতে
পারে। সাক্ষাৎকার হলো শুধুমাত্র এইম অবজেক্ট। তার জন্য পড়াশোনা করতে হয় না যে।
বিনা পড়াশুনায় কি কখনো ব্যারিস্টার হওয়া যায় ! এইরকম নয় যে, সাক্ষাৎকার হলো মানে
মুক্ত হয়ে গেলে, মীরার সাক্ষাৎকার হয়েছিল, তাই বলে সে কৃষ্ণ পুরীতে চলে যায়নি। নৌধা
ভক্তি (নয়টি পর্যায়ে পরিপূর্ণ ভক্তি) করলে সাক্ষাৎকার হয়। এখানে হলো আবার নৌধা
স্মরণ। সন্ন্যাসী আবার ব্রহ্ম জ্ঞানী, তত্ত্ব জ্ঞানী হয়ে যায়। ব্যস্ ব্রহ্মতে লীন
হতে হবে। এখন ব্রহ্ম তো পরমাত্মা নয়।
এখন বাবা বোঝান যদিও
নিজের ধান্ধা ইত্যাদি শরীর নির্বাহ করার জন্য করো কিন্তু নিজেকে ট্রাস্টি মনে করে,
তবে উচ্চ পদ প্রাপ্ত হবে। আবার মায়া-মমতা ঘুচে যাবে। বাবা এসব নিয়ে কি করবেন? ইনি
তো সব কিছু ছেড়ে ছিলেন যে। পরিবার বা মহল ইত্যাদি তো তৈরী করার নেই। এই বাড়ী তৈরী
করা হয় কারণ অনেক বাচ্চারা আসবে। আবু রোড থেকে এখান পর্যন্ত কিউ লেগে যাবে। তোমাদের
এখন প্রভাব বিস্তার হলে মাথাই খারাপ করে দেবে। বড় মানুষেরা এলে ভীড় হয়ে যায়।
তোমাদের প্রভাব শেষের দিকে বের হবে, এখন না। বাবাকে স্মরণ করার অভ্যাস করতে হবে,
যাতে পাপ খন্ডন হয়। এই প্রকার স্মরণে শরীর ছাড়তে হবে। সত্যযুগে শরীর ছাড়বে, মনে
হবে একটা ছেড়ে দ্বিতীয় নূতন নেব। এখানে তো কতো দেহ-অভিমান থাকে। পার্থক্য আছে যে
না। এই সব কথা নোট করতে আর করাতে হবে। অন্যান্যদেরও নিজের সমান হীরে তুল্য করে তুলতে
হবে। যতো পুরুষার্থ করবে, ততই উচ্চ পদ প্রাপ্ত করবে। এই বাবা বোঝান, এখানে কোনো
সাধু-মহাত্মা নেই।
এই জ্ঞান হলো বড়ই
মজার, একে ভালো মতো ধারণ করতে হবে। এইরকম নয় যে বাবার থেকে শুনে, আবার যেমনকার
তেমনই রইল। গানেও তো শুনলে যে, বলছে সাথে করে নিয়ে যাও। তোমরা এই কথা আগে বুঝতে না,
এখন বাবা বুঝিয়েছেন তাই বুঝেছো। আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
পড়াশোনার প্রতি কখনো গাফিলতি করবে না । স্বদর্শন চক্রধারী হয়ে থাকতে হবে। হীরে
তুল্য বানানোর সেবা করতে হবে।
২ ) সত্যিকারের
উপার্জন করতে হবে আর করাতে হবে। নিজের সমস্ত পুরানো জিনিস এক্সচেঞ্জ করতে হবে।
কুসঙ্গ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে হবে।
বরদান:-
জগতের
নক্ষত্র হয়ে ভক্তদেরকে দৃষ্টি দিয়ে ভরপুর করে দেওয়া দর্শণীয় মূর্তি ভব
সমগ্র বিশ্বের মানুষ
তোমাদের জাগতিক চোখের দ্বারা দৃষ্টি নেওয়ার জন্য অপেক্ষায় আছে। যখন তোমরা জগতের
নক্ষত্ররা নিজের সম্পূর্ণ স্টেজ পর্যন্ত পৌঁছাবে অর্থাৎ সম্পূর্ণতার চোখ খুলবে তখন
সেকেন্ডে বিশ্ব পরিবর্তন হয়ে যাবে। তারপর তোমরা দর্শনীয় মূর্তি আত্মারা নিজেদের
দৃষ্টির দ্বারা ভক্ত আত্মাদেরকে ভরপুর করে দিতে পারবে। দৃষ্টির দ্বারা ভরপুর হওয়ার
জন্য আত্মাদের লম্বা লাইন আছে এইজন্য সম্পূর্ণতার চোখ যেন খোলা থাকে। চোখ রগড়ানো আর
ব্যর্থ সংকল্প করা বন্ধ করো তাহলে দর্শনীয় মূর্তি হতে পারবে।
স্লোগান:-
নির্মল
স্বভাব হল নির্মাণতার লক্ষণ। নির্মল হও তাহলে সফলতা প্রাপ্ত হবে।
নিজের শক্তিশালী
মন্সার দ্বারা সকাশ দেওয়ার সেবা করো :-
মন-বুদ্ধিকে একাগ্র
করার জন্য মন্মনা ভব-র মন্ত্রকে সদা স্মৃতিতে রাখো। মন্মনা ভব-র মন্ত্রের
প্র্যাক্টিক্যাল ধারণার দ্বারা প্রথম নম্বরে আসতে পারো। মনের একাগ্রতা অর্থাৎ এক-এর
স্মরণে থাকা, একাগ্র হওয়া - এটাই হল একান্তে থাকা। যখন সকল আকর্ষণগুলির ভায়ব্রেশন
থেকে অন্তর্মুখী হবে তখন মন্সা দ্বারা সমগ্র বিশ্বকে সকাশ দেওয়ার সেবা করতে পারবে।