28.05.2025 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা - এখন ড্রামার চক্র সম্পূর্ণ হচ্ছে, তোমাদের ক্ষীরখন্ড হয়ে নূতন দুনিয়াতে আসতে হবে, সেখানে সকলে হলো ক্ষীরখন্ড, এখানে হলো নুনজল"

প্রশ্নঃ -
বাচ্চারা, তোমরা কোন্ নলেজকে জেনে ত্রিকালদর্শী হয়ে গেছো?

উত্তরঃ  
তোমাদের এখন সমগ্র ওয়ার্ল্ডের হিস্ট্রি জিওগ্রাফির নলেজ প্রাপ্ত হয়েছে, সত্যযুগ থেকে শুরু করে কলিযুগের শেষ পর্যন্ত হিস্ট্রি-জিওগ্রাফি তোমরা জানো। তোমাদের জ্ঞানের তৃতীয় নেত্র প্রাপ্ত হয়েছে যে, আত্মা এক শরীর ত্যাগ করে দ্বিতীয় শরীর ধারণ করে। সংস্কার আত্মার মধ্যে থাকে। এখন বাবা বলেন - বাচ্চারা, নাম-রূপের থেকে ডিট্যাচ হও। নিজেকে আত্মা অশরীরী মনে করো।

গীতঃ-
ধীরজ ধর রে মন (মনুয়া)...

ওম্ শান্তি ।
প্রতি কল্পে বাচ্চাদের বলা হয় আর বাচ্চারা জানতে পারে, হৃদয় চায় যে শীঘ্র যেন সত্যযুগ হয়ে যায়, তাহলে এই দুঃখ দূর হয়ে যাবে। কিন্তু ড্রামা খুবই ধীরে ধীরে চলার। বাবা ধৈর্য ধরতে বলেন, বলেন আর অল্প সময়ই বাকি । বড়ো-বড়ো লোকেরও আওয়াজ শোনা যেতে থাকে দুনিয়া পরিবর্তন হবে। বড়- বড় যারাই আছে, যেমন পোপের মতো- তারাও বলেন দুনিয়া পরিবর্তিত হতে চলেছে। আচ্ছা! এবার পীস (শান্তি) হবে কীভাবে? এই সময় সব হলো নুনজল। এখন আমরা ক্ষীরখন্ড হচ্ছি। ওই দিকে প্রতিনিয়ত নুনজল হয়ে চলেছে। নিজেদের মধ্যে লড়াই-ঝগড়া করে শেষ হতে চলেছে, প্রস্তুতি চলছে। ড্রামার এই চক্র এখন সম্পূর্ণ হচ্ছে। পুরানো দুনিয়া সম্পূর্ণ হচ্ছে। নূতন দুনিয়ার স্থাপনা হচ্ছে। নূতন দুনিয়াই পুরানো, পুরানোই আবার নূতন হয়ে উঠবে। একে দুনিয়ার চক্র বলা হয়, যা আবর্তিত হতে থাকে। এরকম নয় যে লক্ষ্য বছর পরে পুরানো দুনিয়া নূতন হবে। না। বাচ্চারা, তোমরা ভালো করে জেনে গেছো যে, ভক্তি একদমই আলাদা। ভক্তির কানেক্শন হলো রাবণের সাথে। জ্ঞানের কানেক্শন রামের সাথে। এটা তোমারা এখন বুঝতে পারছো। এখন বাবাকে ডাকেও- হে পতিত-পাবন এসো, এসে নূতন দুনিয়া স্থাপন করো। নতুন দুনিয়াতে অবশ্যই সুখ হতে হবে। এখন বাচ্চারা ছোটো অথবা বড় সবাই জেনে গেছে যে এখন গৃহে ফিরে যেতে হবে। এই নাটক সম্পূর্ণ হচ্ছে। আমরা আবার সত্যযুগে যাবো, আবার ৮৪ জন্মের চক্রে আবর্তিত হবো। স্ব-আত্মা দর্শন হয়, সৃষ্টি চক্রের অর্থাৎ আত্মার জ্ঞানের তৃতীয় নেত্র প্রাপ্ত হয়, তাদের বলা হয় ত্রিনেত্রি। তোমরা এখন হলে ত্রিনেত্রি আর সব মানুষের হলো এই স্থূল নেত্র। জ্ঞানের নেত্র কারোর নেই। ত্রিনেত্রি হলে তবে ত্রিকালদর্শী হবে, কারণ আত্মার যে জ্ঞান প্রাপ্ত হয় না! আত্মাই এক শরীর ত্যাগ করে দ্বিতীয় শরীর ধারণ করে। সংস্কার আত্মার মধ্যে থাকে। আত্মা হলো অবিনাশী। বাবা এখন বলেন নাম-রূপের থেকে বিচ্ছিন্ন হও। নিজেকে অশরীরী মনে করো। দেহ মনে করো না। এটাও জানো যে আমরা অর্ধ-কল্প ধরে পরমাত্মাকে স্মরণ করে এসেছি। এর মধ্যে যখন বেশী দুঃখ হয় তখন বেশী স্মরণ করা হয়। এখন কতো দুঃখ। আগে এতো দুঃখ ছিলো না। যেদিন থেকে বহিরাগতদের প্রবেশ হয়েছে সেইদিন থেকে এই রাজারাও নিজেদের মধ্যে লড়াই করেছে। আলাদা-আলাদা হয়ে গেছে। সত্যযুগে তো একই রাজ্য ছিলো। এখন আমরা সত্যযুগ থেকে শুরু করে কলিযুগের শেষ পর্যন্ত হিস্ট্রি- জিওগ্রাফি বোধগম্য করে চলেছি। এরকম একটাই ডিনায়েস্টি কারোর থাকে না। খ্রীষ্টানদের নিদর্শন দেখো, তারাও বিভক্ত। সেখানে তো সমগ্র বিশ্ব একজনের হাতেই থাকে। ওটা শুধু সত্যযুগ - ত্রেতাতেই হয়। এই অসীম জগতের হিস্ট্রি-জিওগ্রাফি এখন তোমাদের বুদ্ধিতে আছে। আর কোনো সৎসঙ্গে হিস্ট্রি-জিওগ্রাফি শব্দটি শুনবে না। তারা তো রামায়ণ, মহাভারত ইত্যাদি শোনায়। এখানে সেই সব কথা থাকে না। এখানে হলো ওয়ার্ল্ডের হিস্ট্রি-জিওগ্রাফি। তোমাদের বুদ্ধিতে আছে যে উচ্চতমের চেয়েও উচ্চ হলেন আমাদের বাবা। বাবা অর্থাৎ যিনি সমগ্র জ্ঞান শুনিয়েছেন, তাঁকে ধন্যবাদ। এক হলো আত্মাদের বৃক্ষ, দ্বিতীয় হলো মানুষের বৃক্ষ। মানুষের বৃক্ষের উপরে কে আছেন? গ্রেট-গ্রেট গ্র্যান্ড ফাদার ব্রহ্মাই বলা হবে। এটা জানে যে ব্রহ্মা মুখ আছে কিন্তু ব্রহ্মার পিছনে কি হিস্ট্রি - জিওগ্রাফি আছে, এটা কেউ জানে না। এখন তোমাদের বুদ্ধিতে আছে- উচ্চতমের চেয়েও উচ্চ বাবা থাকেন পরমধামে। আবার সূক্ষ্মবতনের কথাও তোমাদের জানা আছে। মানুষই ফরিস্তায় পরিণত হয়, সেইজন্য সূক্ষ্মবতন দেখানো হয়েছে। তোমরা অর্থাৎ আত্মারা যাও, শরীর তো সূক্ষ্মবতনে যাবে না। কীভাবে যায়, সেটাকে বলা হয় তৃতীয় নেত্র, দিব্য-দৃষ্টি অথবা ধ্যানও বলা হয়। তোমরা ধ্যানে ব্রহ্মা-বিষ্ণু-শঙ্করকে দেখো। লোকেরা দেখায়- শঙ্করের চোখ খুললে বিনাশ হয়ে যায়। এখন এটা তো কেউ বুঝতে পারে না। এখন তোমরা জানো যে বিনাশ তো ড্রামা অনুসারে হওয়ারই আছে। নিজেদের মধ্যে লড়াই করে বিনাশ হয়ে যাবে। তাছাড়া শঙ্কর কি করে! এটা ড্রামা অনুসারে নাম রেখে দিয়েছে। তাই বোঝাতে হয়। ব্রহ্মা-বিষ্ণু-শঙ্কর তিন জন আছেন। স্থাপনার জন্য ব্রহ্মাকে রাখা হয়েছে, পালনার জন্য বিষ্ণুকে, বিনাশের জন্য শঙ্করকে রেখে দিয়েছে। বাস্তবে এটা হলো পূর্ব নির্ধারিত ড্রামা। শঙ্করের কোনো পার্ট নেই। ব্রহ্মা আর বিষ্ণুর পার্ট তো সমগ্র কল্প জুড়ে থাকে। যিনি ব্রহ্মা তিনিই বিষ্ণু, যিনি বিষ্ণু তিনিই ব্রহ্মা। ব্রহ্মার ৮৪ জন্ম সম্পূর্ণ হলে তা বিষ্ণুরও সম্পূর্ণ হয়। শঙ্কর তো জন্ম-মরণ থেকে আলাদা, সেই কারণে শিব আর শঙ্করকে আবার মিলিয়ে দিয়েছে। বাস্তবে তো শিবের অনেক পার্ট রয়েছে, তিনি (আমাদের) পড়ান।

ভগবানকে বলা হয় নলেজফুল। তিনি যদি প্রেরণার দ্বারা কার্য করাতেন তো সৃষ্টি চক্রের জ্ঞান কীভাবে দিতেন ! সেইজন্য বাবা বোঝান - বাচ্চারা, প্রেরণার তো কোনো ব্যাপারই নেই। বাবাকে তো আসতে হয়। বাবা বলেন - বাচ্চারা, আমার মধ্যে সৃষ্টি চক্রের জ্ঞান আছে। আমার এই পার্টই প্রাপ্ত হয়েছে, সেই কারণে আমাকেই জ্ঞান সাগর নলেজফুল বলে। নলেজ কাকে বলে, সেটা তো যখন প্রাপ্ত হয় তখন জানা যায়। প্রাপ্তি না হলে আর জানা যাবে কীভাবে! আগে তোমরাও বলতে ঈশ্বর প্রেরণা যোগান। তিনি সর্বজ্ঞ। আমরা যা পাপ করি, ঈশ্বর দেখেন। বাবা বলেন এই ধান্ধা আমি করি না। এক্ষেত্রে তো যে যেমন কর্ম করে তাকে নিজেকেই শাস্তি ভোগ করতে হয়, আমি কাউকে দিই না। না কোনো প্রেরণার দ্বারা শাস্তি দেবো। আমি প্রেরণা থেকে করবো তো যেন আমিই শাস্তি দিই। কাউকে বলা যে একে মারো, এটাও হলো দোষ। যে বলবে সেও ফেঁসে যাবে । শঙ্কর প্রেরণা দিলে সেও ফেঁসে যাবে । বাবা বলেন বাচ্চারা আমি তো তোমাদের সুখ প্রদান করি। তোমরা আমার মহিমা করো- বাবা এসে দুঃখ হরণ করো। আমি কি আর দুঃখ দিই!

বাচ্চারা, তোমরা এখন বাবার সম্মুখে বসে আছো বলে কতো খুশী হওয়া উচিত। এখানে ডাইরেক্ট সেটা ফিল করা যায় । বাবা আমাদের পড়ান। একে মেলা বলা হয়। তোমরা যে সেন্টারে যাও, সেটাকে আত্মাদের আর পরমাত্মার মেলা বলা হবে না। আত্মাদের সাথে পরমাত্মার মেলা এখানে (মধুবনে) হয়। তোমরা এটাও জানো যে মেলা শুরু হয়ে গেছে। বাবা বাচ্চাদের মাঝে এসেছেন। আত্মারা সকলে এখানে আছে। আত্মাই স্মরণ করে যে বাবা এসেছেন। এটা হলো সব থেকে ভালো মেলা। বাবা এসে সকল আত্মাদের রাবণ রাজ্য থেকে ছাড়িয়ে আনেন। এই মেলা ভালো হলো যে না! এই মেলার কারণে মানুষ পবিত্র বুদ্ধি সম্পন্ন হয়। ওই মেলা থেকে তো মানুষ ময়লা হয়ে যায়। পয়সা নষ্ট করতে থাকে, প্রাপ্তি কিছুই হয় না। ওটাকে মায়াবী, আসুরিক মেলা বলা হয়। এটা হলো ঈশ্বরীয় মেলা। রাত-দিনের তফাৎ । তোমরাও আসুরিক মেলাতে ছিলে। এখন আছো ঈশ্বরীয় মেলাতে। তোমরাই জেনেছো যে বাবা এসে গেছেন। সবাই জেনে গেলে কতো যে ভীড় হবে তা জানা নেই। থাকতে দেওয়ার জন্য বাবা এতো বাড়ী ইত্যাদি কোথা থেকে পাবেন! পরিশেষে গান করে যে না- অহো প্রভু তোমার লীলা। কোন লীলা? সৃষ্টিকে পরিবর্তন করার লীলা। এটা হলো সব থেকে বড় লীলা। পুরানো দুনিয়া শেষ হওয়ার পূর্বে প্রথমে নূতন দুনিয়ার স্থাপনা হয়, সেইজন্য কাউকে বোঝানোর সময় আগে স্থাপনা, বিনাশ তারপর প্রতিপালনের কথা বলতে হয়। স্থাপনা যখন সম্পূর্ণ হয় তখন আবার বিনাশ শুরু হয়, তারপর প্রতিপালন হবে। তাই তোমাদের অর্থাৎ বাচ্চাদের খুশী থাকে যে - আমরা হলাম স্বদর্শন চক্রধারী ব্রাহ্মণ। আবার আমরা চক্রবর্তী রাজা হই। এটা কারোরই জানা নেই, এই দেবতাদের রাজ্য কোথায় গেল। নাম - চিহ্নটুকুও লুপ্ত হয়ে গেলো। দেবতার পরিবর্তে নিজেদের হিন্দু বলে দেয়। হিন্দুস্থানে বসবাসকারী হলো হিন্দু। লক্ষ্মী-নারায়ণকে তো কখনো এইরকম বলা হবে না। তাদের তো দেবতা বলা হয়। এখন তো ড্রামা অনুসারে তোমরা এই মেলাতে এসেছো। এটা ড্রামাতে নির্ধারিত হয়ে আছে। ধীরে-ধীরে বুদ্ধি হতে থাকে। তোমাদের যা কিছু পার্ট চলছে সেটা আবার পরবর্তী কল্পে চলবে। এই চক্র আবর্তিত হতে থাকে। এরপর রাবণ রাজ্যে আসুরিক প্রতিপালন হবে। তোমরা এখন হলে ঈশ্বরীয় বাচ্চা, এরপর দৈবী বাচ্চা আবার ক্ষত্রিয় হবে। তোমরা যে অপবিত্র প্রবৃত্তি সম্পন্ন হয়ে গিয়েছিলে তারাই আবার পবিত্র প্রবৃত্তি সম্পন্ন হয়ে ওঠো। এরাও তো হলো দৈব গুণ সম্পন্ন মানুষ। এছাড়া এতো ভূজ ইত্যাদি দিয়ে দিয়েছে, বিষ্ণু কে, এটা কেউ বলতে পারবে না। মহালক্ষ্মীরও পূজা করা হয়। জগত অম্বার থেকে কখনো ধন চাওয়া হয় না। ধন অতিরিক্ত প্রাপ্ত হলে তো বলা হয় লক্ষ্মীর পূজা করেছিলো সেইজন্য তিনি কোষাগার ভরে দিয়েছেন। এখানে তো তোমাদের প্রাপ্তি হচ্ছে জগত অম্বার থেকে পরমপিতা পরমাত্মা শিব দ্বারা, দিতে সক্ষম একমাত্র তিনিই। তোমরা অর্থাৎ বাচ্চারা হলে বাপদাদার থেকেও বেশী লাকী। দেখো, জগদম্বার কতো মেলা হয়, ব্রহ্মার এতো হয় না। ব্রহ্মাকে তো একই জায়গায় বসিয়ে দেওয়া হয়েছে, আজমেরএ বড় মন্দির আছে। দেবীদের মন্দির অনেক আছে কারণ এই সময় তোমাদের অনেক মহিমা থাকে। তোমরা ভারতের সেবা করো। পূজাও তোমাদের বেশী হয়। তোমরা লাকী। জগৎ অম্বার জন্য এরকম কখনো বলা হবে না কি তিনি সর্বব্যাপী। তোমাদের মহিমা সুখ্যাত হতে থাকে। ব্রহ্মা-বিষ্ণু-শঙ্করকে কখনো সর্বব্যাপী বলে না, আমাকে বলে দেয় প্রতি কণায় কণায় বিদ্যমান, কতো গ্লানি করে।

আমি তোমাদের মহিমা কতো বাড়িয়ে দিই। ভারত মাতার জয় বলা হয় তাই না। ভারতমাতা তো হলে তোমরা তাই না! ধরনী নয়। ধরনী ইত্যাদি এখন হলো তমোপ্রধান, সত্যযুগে সতোপ্রধান হয়ে যায় সেইজন্য বলা হয় দেবতাদের পদ যুগল পতিত দুনিয়াতে আসে না। যখন ধরনী সতোপ্রধান হয় তখন আসে। তোমাদের এখন সতোপ্রধান হতে হবে। শ্রীমতে চলে বাবাকে স্মরণ করতে থাকলে তবে উচ্চ পদ প্রাপ্ত হবে। এই সচেতনতা থাকা দরকার। স্মরণ করলে বিকর্ম বিনাশ হবে। শ্রীমত প্রাপ্ত হতে থাকে। সত্যযুগে তো তোমাদের আত্মা কাঞ্চন হয়ে যায় তো শরীরও কাঞ্চন প্রাপ্ত হয়। সোনাতে খাদ পড়লে তো আবার গহনাও সেরকমই তৈরী হয়। আত্মা মিথ্যে তো শরীরও মিথ্যে। খাদ পড়লে আবার সোনার মূল্যও কমে যায়। তোমাদের মূল্য এখন কিছুই নেই। প্রথমে তোমরা ২৪ ক্যারেট বিশ্বের মালিক ছিলে। এখন ৯ ক্যারেট বলা হবে। এটা বাবা বাচ্চাদের সাথে বার্তালাপ করেন। বাচ্চাদের বসে বলতে থাকেন, যাতে তোমরা শুনতে-শুনতে চেঞ্জ হয়ে যাও। মানুষ থেকে দেবতায় পরিণত হও। সেখানে হীরে জহরতের মহল থাকবে, স্বর্গ তো ওরকমই। সেখানকার খুবীরস ইত্যাদিও তোমরা পান করে আসো। সেখানকার ফলই অনেক বড়-বড় হয়। এখানে তো পাওয়া যায় না। সূক্ষ্মবতনে তো কিছুই নেই। এখন তোমরা সেখানে প্র্যাকটিক্যালি যাও । এটা হলো আত্মা আর পরমাত্মার মেলা, এর দ্বারা তোমরা সুউজ্জ্বল হয়ে ওঠো।

বাচ্চারা তোমরা যখন এখানে আসো তো ফ্রি থাকো, বাড়ী-ঘর, ব্যবসাপত্রের কোনো চিন্তা ভাবনা থাকে না। তাই এখানে তোমাদের স্মরণের যাত্রাতে থাকার চান্স বেশি । সেখানে তো বাড়ী-ঘর সব কিছু স্মরণ হতে থাকে। এখানে তো কিছু নেই। রাত্রে ২ টার সময় উঠে এখানে বসে যাও। সেন্টারে তো তোমরা রাত্রে যেতে পারো না। এখানে তো সহজ হয়। শিববাবার স্মরণে এসে বসো, আর কোনো কিছুই স্মরণে আসবে না। এখানে তোমাদের সহায়তাও প্রাপ্ত হবে। তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়ো আবার খুব সকালে ওঠো। ৩ টের থেকে ৫ টা পর্যন্ত বসো। বাবাও এসে যাবেন, বাচ্চারা খুশী হবে। বাবা - যিনি যোগ শেখান। ইনিও (ব্রহ্মা) শেখেন, তো দুইজন বাপ আর দাদা এসে যাবেন, তারপর ওখানে আর এখানে যোগে বসার পার্থক্যও বুঝতে পারা যায়। এখানে কিছু মনে পড়ে না, এতে অনেক লাভ আছে। বাবা রায় দেন - এটা খুবই ভালো হতে পারে। এখন দেখো বাচ্চারা উঠতে পারো কিনা? অনেকেরই ভোর বেলাতে ওঠার অভ্যাস আছে। তোমাদের সন্ন্যাস হলো ৫ বিকারের আর বৈরাগ্য হলো সমগ্র পুরানো দুনিয়ার প্রতি। আচ্ছা!

মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) এখন সৃষ্টি পরিবর্তনের লীলা চলছে, তাই নিজেকে বদলাতে হবে। ক্ষীরখন্ড হয়ে থাকতে হবে।

২ ) ভোর বেলা উঠে একমাত্র বাবার স্মরণে বসতে হবে, ওই সময় যেন আর কিছু স্মরণে না আসে। পুরানো দুনিয়ার প্রতি অসীম জগতের বৈরাগী হয়ে ৫ বিকারের সন্ন্যাস করতে হবে।

বরদান:-
বেহদের (অসীমের) স্থিতিতে স্থিত হয়ে, সেবার বন্ধন থেকে ডিট্যাচ আর প্রিয় বিশ্ব সেবাধারী ভব

বিশ্ব সেবাধারী অর্থাৎ অসীমের স্থিতিতে স্থিত থাকা আত্মা। এইরকম সেবাধারী সেবা করেও পৃথক আর সদা বাবার প্রিয় থাকে। সেবার বন্ধনে আসে না কেননা সেবার বন্ধনও হল সোনার শিকল। এই বন্ধন অসীম থেকে সীমাবদ্ধের মধ্যে নিয়ে আসে। এইজন্য দেহের স্মৃতি থেকে, ঈশ্বরীয় সম্বন্ধ থেকে, সেবার সাধনের বন্ধন থেকে ডিট্যাচ আর বাবার প্রিয় হও তাহলে বিশ্ব সেবাধারীর বরদান প্রাপ্ত হয়ে যাবে আর সদা সফলতা প্রাপ্ত হতে থাকবে।

স্লোগান:-
ব্যর্থ সংকল্পকে এক সেকেন্ডে স্টপ করার রিহার্সাল করো তাহলে শক্তিশালী হয়ে যাবে।


অব্যক্ত ঈশারা :- আত্মিক রয়্যাল্টি আর পিওরিটির পার্সোনালিটি ধারণ করো

তোমাদের সকলের প্রথম প্রবৃত্তি হল নিজের দেহের প্রবৃত্তি, তারপর হলো দেহের সম্বন্ধের প্রবৃত্তি। তো প্রথম প্রবৃত্তি - দেহের প্রতিটি কর্মেন্দ্রিয়কে পবিত্র বানানো। যতক্ষণ দেহের প্রবৃত্তিকে পবিত্র না বানাবে ততক্ষণ দেহের সম্বন্ধের প্রবৃত্তি, সেটা লৌকিকের হোক বা অসীম জগতের, তাকেও পবিত্র বানাতে পারবে না। তাই প্রথমে নিজেকে জিজ্ঞেস করো যে নিজের শরীর রূপী ঘরকে অর্থাৎ সংকল্পকে, বুদ্ধিকে, দৃষ্টিকে আর মুখকে আত্মিক অর্থাৎ পবিত্র বানিয়েছো? এইরকম পবিত্র আত্মারাই হলো মহান।