28.09.2024
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
যখন তোমরা নম্বরানুসারে সতোপ্রধান হয়ে উঠবে, তখন ন্যাচারাল ক্যালামিটিজ বা বিনাশের
ফোর্স (তীব্রতা) বাড়বে আর এই পুরানো দুনিয়া সমাপ্তি হবে"
প্রশ্নঃ -
কোন্
পুরুষার্থীদের বাবার অবিনাশী উত্তরাধিকার সম্পূর্ণ রূপে প্রাপ্ত হয়?
উত্তরঃ
সম্পূর্ণ
উত্তরাধিকার নিতে হলে প্রথমে বাবাকে নিজের উত্তরাধিকারী বানাও অর্থাৎ তোমাদের কাছে
যা কিছু আছে, সে সমস্ত কিছু বাবাকে সমর্পণ করো । বাবাকে নিজের সন্তান বানিয়ে নাও
তবেই সম্পূর্ণ উত্তরাধিকারী হতে পারবে । ২) সম্পূর্ণ পবিত্র হও তবেই পুরো
উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হবে । সম্পূর্ণ পবিত্র না হলে সাজা (মোচরা) খেয়ে ছোটখাটো
পুরস্কার টুকুই (রুটি) প্রাপ্ত হবে ।
ওম্ শান্তি ।
বাচ্চাদের
শুধুমাত্র একজনের স্মরণে বসলেই হবে না । তিনজনের স্মরণে বসতে হবে । যদিও তিনি একজনই
কিন্তু তোমরা জানো যে তিনি যেমন পিতা, তেমনি শিক্ষক এবং সদ্গুরু। তিনি আমাদের সবাইকে
নিয়ে যেতে এসেছেন, এই নতুন কথা তোমারই বুঝেছো । বাচ্চারা জানে ওরা যারা ভক্তি শেখায়,
শাস্ত্র শোনায়, তারা সবাই মানুষ । এনাকে তো মানুষ বলা যায় না, তাই না ! ইনি হলেন
নিরাকার, নিরাকার আত্মাদের বসে পড়াচ্ছেন । আত্মা শরীর দ্বারা শুনছে । এই জ্ঞান
বুদ্ধিতে থাকা উচিত, এখন তোমরা অসীম জগতের বাবার স্মরণে বসেছো । অসীম জগতের পিতা
বলেন ‐ আত্মা রূপী বাচ্চারা, আমাকে স্মরণ করলে তোমাদের পাপ বিনষ্ট হবে। এখানে
শাস্ত্র ইত্যাদির কোনও প্রশ্নই নেই । তোমরা জানো বাবা আমাদের রাজযোগ শেখাচ্ছেন ।
তিনি একজন মহান শিক্ষক, উচ্চ থেকেও উচ্চতর, সুতরাং পদও উচ্চই প্রাপ্ত করান । যখন
তোমরা নম্বরানুসারে পুরুষার্থ অনুযায়ী সতোপ্রধান হয়ে উঠবে, তখনই আবার লড়াই হবে,
প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসবে । স্মরণ অবশ্যই করতে হবে । বুদ্ধিতে সম্পূর্ণ জ্ঞান থাকা
উচিত । শুধু একবারই বাবা পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগে এসে বোঝান, নব নির্মিত দুনিয়ার জন্য।
ছোট বাচ্চারাও বাবাকে স্মরণ করে । তোমরা তো বিচক্ষণ, তোমরা জানো যে বাবাকে স্মরণ
করলে বিকর্ম বিনাশ হবে আর উচ্চ পদও প্রাপ্ত করতে পারবে । তোমরা এটাও জানো যে এই
লক্ষ্মী-নারায়ণ নতুন দুনিয়াতে যে পদ প্রাপ্ত করেছে তা শিববাবার কাছ থেকেই পেয়েছে ।
এই লক্ষ্মী-নারায়ণই আবার ৮৪ জন্ম পরিক্রমা করে এখন ব্রহ্মা - সরস্বতী হয়েছে । এরাই
আবার লক্ষ্মী-নারায়ণ হবে । এখন পুরুষার্থ করছে । সৃষ্টির আদি, মধ্য, অন্তের জ্ঞান
তোমাদের আছে । এখন তোমরা অন্ধ শ্রদ্ধা নিয়ে দেবতাদের সামনে মাথা নত করবে না ।
দেবতাদের সামনে মাথা নত করে মানুষ নিজেকে পতিত বলে প্রমাণ করে । ওরা বলে তুমি
সর্বগুণ সম্পন্ন, আমি পাপী বিকারী, আমার কোনও গুণ নেই । তোমরা যাদের মহিমা করতে,
এখন তোমরা নিজেরাই সেটা হয়ে উঠছো । বাচ্চারা জিজ্ঞাসা করে ‐- বাবা, এই শাস্ত্র
ইত্যাদি কবে থেকে পড়া শুরু হয়েছে? বাবা বলেন - যখন থেকে রাবণ রাজ্য শুরু হয়েছে । এ
সবই হলো ভক্তি মার্গের সামগ্রী । তোমরা যখন এখানে এসে বসেছ, সুতরাং সম্পূর্ণ জ্ঞান
বুদ্ধিতে ধারণ হওয়া উচিত। আত্মা এই সংস্কার নিয়ে যাবে ( জ্ঞানের)। ভক্তির সংস্কার
নিয়ে যাবে না । ভক্তির সংস্কার নিয়ে জন্মানো মানুষ পুরানো দুনিয়াতে মানুষের কাছেই
জন্ম নেবে । এরও প্রয়োজন আছে । তোমাদের বুদ্ধিতে এই জ্ঞানের চক্র ঘোরা উচিত । সাথে
সাথে বাবাকেও স্মরণ করা উচিত । উনিই আমাদের পিতা । বাবাকে স্মরণ করলে বিকর্ম বিনাশ
হবে । বাবা আমাদের শিক্ষক, সুতরাং ঈশ্বরীয় পাঠ বুদ্ধিতে ধারণ হবে আর সৃষ্টি চক্রের
জ্ঞানও বুদ্ধিতে আছে, যার জন্য তোমরা চক্রবর্তী রাজা হতে পারবে । ( স্মরণের যাত্রা
চলছে)
ওম্ শান্তি । ভক্তি
আর জ্ঞান । বাবাকে বলা হয় জ্ঞানের সাগর । উনি ভক্তি সম্পর্কে সম্পূর্ণ জ্ঞাত যে -
ভক্তি কবে থেকে শুরু হয়েছে, কবে সম্পূর্ণ হবে, মানুষ এসব কিছুই জানে না । বাবা এসেই
বুঝিয়ে বলেন । সত্যযুগে তোমরা দেবী-দেবতা বিশ্বের মালিক ছিলে। ওখানে ভক্তির
নামটুকুও নেই । একটাও মন্দির ছিল না । সব দেবী-দেবতারাই ছিল । পরবর্তী সময়ে যখন
অর্ধেক দুনিয়া পুরানো হয়ে যায় অর্থাত্ ২৫০০ বছর সম্পূর্ণ হয়ে যায় অথবা ত্রেতা আর
দ্বাপরের সঙ্গম শুরু হয় তখনই রাবণের প্রবেশাধিকার ঘটে । সঙ্গম তো অবশ্যই প্রয়োজন ।
ত্রেতা আর আর দ্বাপরের সঙ্গমে রাবণের আবির্ভাব হয় আর তখনই দেবী-দেবতারা বাম মার্গে
নামতে থাকে । তোমরা ছাড়া এ বিষয়ে আর কেউ-ই জানে না । বাবাও আসেন কলিযুগের অন্তে আর
সত্যযুগ শুরুর সঙ্গমে আর রাবণ আসে ত্রেতা আর দ্বাপরের সঙ্গমে। ঐ সঙ্গমকে কল্যাণকারী
বলা হয় না । তাকে তো অকল্যাণকারী-ই বলা হবে । বাবার নাম-ই হলো কল্যাণকারী । দ্বাপর
থেকে অকল্যাণকারী যুগ শুরু হয় । বাবা হলেন চৈতন্য বীজরূপ । বাবার সম্পূর্ণ বৃক্ষের
নলেজ রয়েছে । ঐ বীজ যদি চৈতন্য হতো তবে বোঝাতে পারতো যে ‐ আমার থেকে এই গাছ কিভাবে
নির্গত হয় । কিন্তু জড় হওয়ার কারণে বলতে পারেন না । আমরা বুঝতে পারি বীজ বপন করার
পরে গাছ ছোটই বের হয় । তারপর বড় হয়ে ফল দেওয়া শুরু করে । কিন্তু চৈতন্য যিনি,
তিনিই সবকিছু বলতে পারেন । দুনিয়াতে দেখো মানুষ আজকাল কত কি করছে । কত কি আবিষ্কার
করছে । চাঁদে যাওয়ারও চেষ্টা করছে । এই সব কথাই তোমরা এখন শুনছ । কত লক্ষ মাইল
উচ্চতায় চাঁদ, সেখানে চলে যাচ্ছে, পরীক্ষা করে দেখার জন্য চাঁদ বস্তুটি প্রকৃতপক্ষে
কি? সমুদ্রেও চলে যাচ্ছে, পরীক্ষা করছে। কিন্তু অন্ত পাওয়া সম্ভব নয়, শুধু জল আর জল
। এরোপ্লেনে চড়ে অনেক উচ্চতায় উঠে যাচ্ছে, তার মধ্যে এতটাই পেট্রোল ঢালা হয় যাতে সে
আবার ফিরে আসতে পারে । আকাশ অনন্ত তাই না, সাগরও অনন্ত । যেমন বাবা অনন্ত জ্ঞানের
সাগর, আর সেটা হলো জলের অনন্ত সাগর । আকাশ তত্ত্ব অনন্ত, ধরিত্রীও অনন্ত, চলতেই থাকো।
সাগরের নীচে ধরিত্রী । পাহাড় কার উপর দাড়িয়ে আছে? ধরিত্রীর উপর । এই ধরিত্রী খনন
করলে পাহাড় বেড়িয়ে আসে, তার নীচ থেকে আবার জলও বেড়িয়ে আসে । সাগরও ধরিত্রীর উপরে ।
সাগরের অন্ত পাওয়া সম্ভব নয় যে কতদূর পর্যন্ত জল আছে, কতদূরে ধরিত্রী আছে? পরমপিতা
পরমাত্মা যিনি অসীম জগতের পিতা, ওঁনাকে অন্তহীন বলা যাবে না । মানুষ যদিও বলে থাকে
ঈশ্বর অন্তহীন, মায়াও অন্তহীন । কিন্তু তোমরা বাচ্চারা জানো যে, ঈশ্বর কখনোই
অন্তহীন হতে পারেন না । এই আকাশ অনন্ত, ৫ তত্ত্ব, আকাশ, বায়ু, অগ্নি, জল, মাটি
তমোপ্রধান হয়ে পড়ে । আত্মাও তমোপ্রধান হয়ে যায় । তারপর বাবা এসে সতোপ্রধান করে
তোলেন । কত ছোট্ট আত্মা, ৮৪ জন্ম ভোগ করে । এই চক্র ক্রমান্বয়ে ঘুরতেই থাকে । এ হলো
অনাদি নাটক, এর কোনও শেষ নেই । পরম্পরা ধরে চলে আসছে । কবে থেকে শুরু হয়েছে জিজ্ঞাসা
করলে বলো, এর অন্তও আছে । এইসব কথাই বোঝাতে হবে যে ‐ কবে থেকে নতুন দুনিয়া শুরু হয়,
কিভাবে পুরানো হয় । এই ৫ হাজার বছরের চক্র ঘুরতেই থাকে । এখন তোমরা জেনেও যে, ওরা
তো নানা গল্প জুড়ে দিয়েছে । শাস্ত্রেও লিখেছে সত্যযুগের আয়ু লক্ষ বছরের । মানুষ এসব
শুনতে শুনতে একেই সত্য বলে স্বীকার করে নিয়েছে । তারা এটা জানেই না যে ‐ ভগবান কবে
এসে নিজের পরিচয় দেবেন? না জানার কারণে বলে থাকে কলিযুগের আয়ু ৪০ হাজার বছর এখনও
বাকি আছে । যতক্ষণ তোমরা না বুঝিয়ে বলবে । এখন তোমরা নিমিত্ত হয়েছো বোঝাবার জন্য যে
কল্পের আয়ু ৫ হাজার বছরের, লক্ষ বছরের নয় ।
ভক্তি মার্গে কতরকম
সামগ্রী, পয়সা থাকলেই মানুষ খরচ করে। বাবা বলেন, আমি তোমাদের কত ধন ঐশ্বর্য দিয়ে
যাই । অসীম জগতের পিতা যখন নিশ্চয়ই অনন্ত উত্তরাধিকারই দেবেন । এর দ্বারা সুখও
প্রাপ্তি হয়, আয়ুও বৃদ্ধি হয় । বাবা বাচ্চাদের বলেন ‐ আমার প্রিয় বাচ্চারা,
আয়ুষ্মান ভব (দীর্ঘজীবী হও)। ওখানে তোমাদের আয়ু ১৫০ বছরের হয়, কখনও কাল খায় না (অকালে
মৃত্যু হয় না) । বাবা বর দেন, তোমাদের দীর্ঘজীবী করে তোলেন । তোমরা অমর হও । ওখানে
কখনও অকাল মৃত্যু হয় না । ওখানে তোমরা খুব সুখে থাকো তাই বলা হয় সুখধাম । ওখানে
আয়ুও বৃদ্ধি হয়, ধন সম্পদও অগাধ থাকে, সবাই খুব সুখে থাকে । কাঙাল থেকে মুকুটধারী
হয়ে ওঠো । তোমাদের বুদ্ধিতে আছে যে ‐ বাবা আসেন দেবী-দেবতা ধর্মের স্থাপনা করতে।
নিশ্চয়ই ছোট বৃক্ষ হবে । ওখানে এক ধর্ম, এক রাজ্য, এক ভাষা । তাকেই বলে বিশ্বে
শান্তি বিরাজ করছে । সম্পূর্ণ বিশ্বে আমরাই পার্ট প্লে করে থাকি । এই দুনিয়া সেটা
জানে না। যদি জেনেই থাকে তবে বলুক কবে থেকে আমরা আমাদের ভূমিকা পালন করে আসছি? এখন
বাচ্চারা বাবা তোমাদের বোঝাচ্ছেন । গীতও আছে না যে ‐ বাবার থেকে যা পাওয়া যায়, তা
আর কারোর থেকে পাওয়া যায় না । পৃথিবী, আকাশ, সম্পূর্ণ বিশ্বের রাজধানী তিনি দিয়ে
থাকেন । এই লক্ষী-নারায়ণও বিশ্বের মালিক ছিলেন, তারপর যে রাজারা এসেছে তারা ভারতের
ছিল । গীতও আছে বাবা যা দিয়ে থাকেন, তা আর কেউ দিতে পারেনি । বাবা এসেই প্রাপ্তি
করান । সুতরাং এই সমস্ত জ্ঞান বুদ্ধিতে থাকা উচিত যাতে তোমরা যে কোনও আত্মাকে বোঝাতে
পার । এটাই ভালো করে বুঝতে হবে। কে বোঝাতে পারবে? যে বন্ধনমুক্ত হবে । বাবার কাছে
যখন কেউ আসে বাবা জিজ্ঞাসা করেন ‐ ক'টি সন্তান? উত্তরে বলে ৫ টি সন্তান নিজের আর
ষষ্ঠ সন্তান শিববাবা, সুতরাং সবচেয়ে বড় সন্তান হবে, তাই না । শিববাবার হয়ে গেলে
উনিও নিজের সন্তান বানিয়ে বিশ্বের মালিক করে তোলেন । বাচ্চারা উত্তরাধিকারী হয়ে যায়
। এই লক্ষ্মী-নারায়ণও শিববাবার সম্পূর্ণ উত্তরাধিকারী । পূর্বজন্মে শিববাবাকে সবকিছু
সমর্পণ করে দিয়েছিলেন । সুতরাং উত্তরাধিকার তো বাচ্চাদের অবশ্যই পাওয়া উচিত । বাবা
বলেন - আমাকেই উত্তরাধিকারী বানাও, দ্বিতীয় কেউ নয় । বাচ্চারা বলে - বাবা এই
সবকিছুই তোমার, আর যা কিছু তোমার, সবই আমাদের । তুমি আমাদের সম্পূর্ণ বিশ্বের
বাদশাহী উত্তরাধিকারী হিসেবে দিয়ে থাক। কেননা আমাদের যা কিছু ছিল সব তোমাকে দিয়েছি
(তন,মন,ধন )। ড্রামায় নির্ধারিত রয়েছে, তাইনা । অর্জুনকে যেমন বিনাশের দৃশ্য দেখানো
হয়েছে, তেমনই চতুর্ভুজও দেখানো হয়েছে । অর্জুন তো অন্য কেউ নয়, ব্রহ্মাবাবার
সাক্ষাৎকার হয়েছিল । তিনি দেখেছিলেন, রাজত্ব প্রাপ্তি হচ্ছে, তবে কেন শিববাবাকে
উত্তরাধিকারী করব না । তারপর উনিও আমাকে তাঁর উত্তরাধিকারী বানান । এই লেনদেন খুব
ভালো । কখনও কাউকে কিছু জিজ্ঞাসা করেননি । গুপ্ত ভাবে সবকিছু দান করেছেন । একেই বলে
গুপ্ত দান । কেউ জানতেই পারলো না, এর কি হয়েছে। কেউ কেউ ভাবল বৈরাগ্য এসেছে, তাই
সন্ন্যাসী হয়ে গেছে । সুতরাং এই বাচ্চারাও বলে - ৫ সন্তান নিজের, আরেকটি সন্তান হলো
আমাদের শিববাবা। ব্রহ্মা বাবাও সবকিছুই বাবার কাছে দান করেছেন, যাতে অনেক আত্মার
সেবা হয় । বাবাকে দেখে সবারও একই ইচ্ছে হয় আর তারাও ঘরবাড়ি ছেড়ে চলে আসে । তখন
থেকেই হাঙ্গামা শুরু হয় । ওরা ঘরবাড়ি ছেড়ে চলে আসার মতো সাহস দেখিয়েছে । শাস্ত্রেও
লেখা আছে, ভাট্টি তৈরি হয়েছিল। কেননা তাদের একান্তে থাকা প্রয়োজন ছিল । বাবা ছাড়া
আর কেউ যেন স্মরণে না আসে, মিত্র-সম্বন্ধী ইত্যাদি কেউ-ই যেন স্মরণে না আসে। কেননা
আত্মা পতিত হয়ে গেছে, তাকে পবিত্র হতে হবে। বাবা বলেন গৃহস্থ পরিবারে থেকেও পবিত্র
হও । পবিত্র থাকাতেই যত বিঘ্ন সৃষ্টি হয় । বলা হয় এই জ্ঞান স্ত্রী-পুরুষের মধ্যে
বিবাদ সৃষ্টি করে। কেননা একজন যদি পবিত্র হয় আর অপরজন যদি না হয় তবে মারামারি লেগে
যায় । অনেকেই মার খেয়েছে, কেননা হঠাৎ-ই নতুন কথা বাবা এসে বলেছেন । সবাই অবাক হয়ে
গেল, ভাবতে লাগল কি এমন ঘটেছে যে সবাই সেখানে ছুটে ছুটে যাচ্ছে । মানুষের মধ্যে তো
বিচক্ষণতা নেই, শুধু বলতো - নিশ্চয়ই কোনো শক্তি আছে! এমন তো এর আগে কখনও হয়নি যে
নিজের ঘরবাড়ি ছেড়ে ছুটে চলে যাবে । অবিনাশী ড্রামায় এসবই শিববাবার ঈশ্বরীয়
কার্যকলাপ। কেউ তো একেবারে খালি হাতেই চলে গেছে, এও একটা খেলা । ঘরবাড়ি সব ছেড়ে চলে
এসেছে, পিছনের আর কিছুই স্মরণে থাকে না । অবশিষ্ট রইলো এই শরীর, যার উপরেই কাজ করতে
হবে (কর্মেন্দ্রিয়কে কন্ট্রোলে আনা, সংযমী হওয়া)। আত্মাকে স্মরণের যাত্রা দ্বারাই
পবিত্র করে তুলতে হবে, তবেই পবিত্র আত্মারা ফিরে যেতে পারবে । স্বর্গে অপবিত্র
আত্মারা ফিরে যেতে পারে না । নিয়ম নেই । মুক্তিধামে যেতে পবিত্রতা প্রয়োজন । পবিত্র
থাকার জন্য কতরকম বিঘ্ন আসে । কোনো সৎসঙ্গ ইত্যাদি স্থানে যেতে হলে কোনও রকম বাধা
নিষেধ থাকে না । যেখানে খুশি চলে যেতে পারে। এখানে পবিত্রতার কারণে বিঘ্ন আসে । এটা
তো বোঝা গেছে - পবিত্র হওয়া ছাড়া পরমধাম ঘরে ফেরা যাবে না । ধর্মরাজের সাজা খেতে হবে
। তারপর অল্প-স্বল্প পদ প্রাপ্ত হবে । সাজা না খেয়ে গেলে পদও ভালো প্রাপ্তি হবে ।
এই সবকিছুই বোঝার বিষয় । বাবা বলেন - মিষ্টি বাচ্চারা, তোমাদের আমার কাছে আসতে হবে
। এই পুরানো শরীর ছেড়ে পবিত্র আত্মা হতে হবে । তারপর ৫ তত্ত্ব যখন সতোপ্রধান হয়ে
যাবে, তখন তোমরাও সতোপ্রধান শরীর ধারণ করতে পারবে । সমস্ত কিছুই উথাল-পাতাল হয়ে
নতুন হয়ে যাবে । যেমন বাবা ব্রহ্মা বাবার মধ্যে এসে বসেন, তেমনি আত্মাও কোনও কষ্ট
ছাড়াই গর্ভ মহলে প্রবেশ করবে । তারপর যখন সময় হবে বাইরে বেড়িয়ে আসবে। ঠিক যেন
বিচ্ছুরিত আলোর মতো, কেননা আত্মা পবিত্র । এইসব কিছুই ড্রামায় নির্ধারিত । আচ্ছা!
মিষ্টি মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত ।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
আত্মাকে পবিত্র করে তোলার জন্য একান্তে ভাট্টিতে যোগ যুক্ত হতে হবে । এক বাবা ছাড়া
দ্বিতীয় কোনও মিত্র-সম্বন্ধী যেন স্মরণে না আসে ।
২ ) বুদ্ধিতে
সম্পূর্ণ জ্ঞান ধারণ করে, বন্ধনমুক্ত হয়ে অন্যদের সার্ভিস করতে হবে । বাবার সাথে
প্রকৃত লেনদেন করা উচিত । যেমন বাবা সবকিছু গুপ্ত ভাবে করেছেন, তেমনই গুপ্ত ভাবে
দান করতে হবে ।
বরদান:-
মায়ার
ভয়ংকর রূপের খেলাকে সাক্ষী হয়ে দেখে মায়াজীৎ ভব
মায়াকে ওয়েলকাম যারা
করে, তারা মায়ার ভয়ংকর রূপকে দেখে ঘাবড়ে যায় না। সাক্ষী হয়ে খেলা দেখতে দেখতে মজা
আসে, কেননা মায়ার বাইরের রূপ বাঘের মতো হলেও তার মধ্যে শক্তি বিড়ালের মতোও নেই।
শুধুমাত্র তোমরা ঘাবড়ে গিয়ে তাকে বড় বানিয়ে দাও - কি করবো... কিভাবে হবে... কিন্তু
এই পাঠ স্মরণে রাখো - যেটা হচ্ছে সেটা ভালোই হচ্ছে আর যেটা হতে চলেছে সেটা আর-ই ভালো
হবে। সাক্ষী হয়ে খেলা দেখো তো মায়াজীৎ হয়ে যাবে।
স্লোগান:-
যে
সহনশীল হয়, সে কারোর ভাব-স্বভাবে উত্তেজিত হয় না, ব্যর্থ কথা এক কান দিয়ে শুনে অন্য
কান দিয়ে বের করে দেয়।